ছোটকাগজের লেখককে পাঠক থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়: উলুখড় প্রকাশক সাগর নীল খানের সাথে অনলাইন আলাপ

Post date: May 24, 2012 7:34:46 AM

দুপুর মিত্র: প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কি প্রচলিত প্রকাশের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে? পারলে কিভাবে?

সাগর নীল খান : বিষয়টা সামগ্রিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে দেখতে হবে। মূলধারার রাজনীতির বাইরে কোন বিকল্প উদ্যোগের সম্ভাবনা কী এখনও আকাঙ্ক্ষার পর্যায়ে নাকি প্রায়োগিক, হলে কতটুকু, অথবা মধ্যবিত্তের মনোজগতে সামাজিক মর্যাদার যে ধারনা যেমন উচ্চশিক্ষা ভালো ক্যারিয়ার সাথে লেখালেখি এবং পুরস্কার আর দৈনিক পত্রপত্রিকায় লেখা ছাপা প্রচার বা টিভিতে টক শো ইত্যাদির মিশেলে এক idol ব্যক্তিত্ব, এখান থেকে কতটা উত্তরণ ঘটছে বা ঘটবে এইসব নানা বিষয় থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখা যাবে না কোন কিছুকে। প্রচলিত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সাথে মিডিয়া থাকে, ব্যক্তিত্ব থাকে, ফলে বাণিজ্যিক সফলতাও থাকে । সেখানে বাণিজ্যিক গণমাধ্যম থেকে সম্পূর্ণ বিযুক্ত লেখকদের নিয়ে প্রকাশনা চালানো একটা স্ট্রাগল এবং কমিটমেন্ট, এই জেদটাই এগিয়ে নিয়ে যাবে মনে করি ।

দু: আপনি অনেকদিন হল উলুখড় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান দিয়ে নির্বাচিত ও একটি বিশেষ শ্রেণীর পাঠকে সামনে আনার চেষ্টা করছেন। এটা কেন?

সা.ন. : আমাদের দেশে ৮০’র দশক থেকে ছোটকাগজের যে পরম্পরা চলছে তার একটা পরিণতি উলুখড়, এই ধারাবাহিকতায় যারা ছিলেন আছেন আর শুধুমাত্র ছোটকাগজেই লেখালেখি করছেন তাদের বই প্রকাশ করছি, কোন ‘বিশেষ শ্রেণী’ অর্থে নয়। ছোটকাগজের স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ওঠা জরুরি মনে করি, একটা বিকল্প মাধ্যম। ছোটকাগজের লেখককে পাঠক থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয় কিংবা শুধুমাত্র ছোটকাগজের লেখকরাই তার পাঠক হন, এই অবস্থা থেকে বের হতে একটা উদ্যোগ এটা ।

দু: বাংলাদেশে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ও তাদের চর্চা বিষয়ে আপনার মতামত কি?

সা.ন. : যেহেতু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তাই মুনাফাটা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র মুনাফাকেন্দ্রিক হতে পারে না, জনগোষ্ঠী বা সংস্কৃতির একটা প্রতিনিধিত্বের দায়ও থাকা দরকার, এরকম কোন চরিত্র প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিতর তেমন ভাবে দাড় হয়নি এখানে । ব্যতিক্রম আছে যদিও কিন্তু ক্ষীণ । প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত ইতোমধ্যে যারা মর্যাদাবান লেখক বা জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব আর দৈনিক পত্রপত্রিকা নির্ভর, কোন অনুসন্ধান নাই ।

দু: আপনি কলকাতার বেশ কয়েকজন প্রতিষ্ঠান বিরোধী লেখকের লেখাকে প্রকাশ করেছেন। এটা কেন?

সা.ন.: কয়েকজন না, শুধু সুবিমল মিশ্র’র বই বের করেছি । ছোট-কাগজ বা প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার প্রশ্নে একটা ঐক্য আছে মনে করি, কলকাতার সুবিধাভোগীও নন তিনি, তাঁর লেখা Inspired করে, যদিও ওখানকার আর এখানকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সারা বিশ্বে যারা নানা ভাবে বিকল্প সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত আছেন বা ছিলেন তাদের অনেকের লেখা প্রকাশ করার পরিকল্পনা আছে। ব্যাপারটা exchange of idea ।

দু: বাংলাদেশের লেখকের জায়গা থেকে অনেকে কলকাতার লেখক এই বিষয়টিকে বড় ধরণের প্রতিষ্ঠান বলে মনে করেন। আপনিও কি তাই মনে করেন? এবং কেন?

সা.ন.: কলকাতার অনেক লেখকের তো ফাইট আছে সেখানকার প্রতিষ্ঠানের সাথে, চমস্কি তো আমেরিকায় বসে সেই রাষ্ট্রের কার্যক্রমের বিরোধিতা করছেন, সবাইকে একই পাল্লায় ফেললে তো অবিচার করা হয় । আসলে প্রতিষ্ঠানতো এখানেও আছে ওখানেও আছে, বিরোধিতাটা সেখানে ।

দু: একটা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের লেখ তৈরি ও তার লেখা বাজারজাত করনের কথাই ভাবে। বাংলাদেশে এমন কোনও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের কি নাম করা যায়। বা নাম করা গেলে তারা কারা, কাজের ধরণটা কেমন বা নাম করা না গেলে কেন?

সা.ন.: আপনার আগের প্রশ্নে মনে হয় কিছুটা বলেছি ।