মাইলের পর মাইল হেঁটে কিছু লিখলেই তা নিম্নবর্গ বা গরীব মানুষদের লেখা হয়ে উঠবে এমনটি নয়: পাপড়ি রহমানের সাথে অনলাইন আলাপ

Post date: Jun 18, 2012 6:29:54 AM

উপন্যাসঃ পালাটিয়া (২০১১,মাওলা ব্রাদার্স ), বয়ন (২০০৮, মাওলা ব্রাদার্স ), পোড়ানদীর স্বপ্নপুরাণ (২০০৪, মাওলা ব্রাদার্স ), মহুয়া পাখির পালক ( কিশোর, ২০০৪)

ছোটগল্পঃ মৃদু মানুষের মোশন পিকচার (২০১২ ), ধূলিচিত্রিত দৃশ্যাবলি (২০১০), অষ্টরম্ভা (২০০৭), হলুদ মেয়ের সীমান্ত (২০০১), লখিন্দরের অদৃষ্টযাত্রা (২০০০)

গবেষণাঃ ভাষা শহীদ আবুল বরকত (২০১০,বাংলা একাডেমী )

সম্পাদনাঃ- বাংলাদেশের ছোটগল্পঃ নব্বইয়ের দশক (২০১১,বাংলা একাডেমী), ধূলিচিত্র (ছোটকাগজ), গাঁথাগল্প (যৌথ)

দুপুর মিত্র: নব্বই দশকের গল্প নিয়ে সংকলন গ্রন্থের সম্পাদনার কাজ করেছেন। সে হিসেবে নব্বই দশকের গল্পগুলোর নানান বিষয়ে নিখুঁত একটা বিশ্লেষণ আপনার কাছ থেকেই পাব বলে আশা করি। কিছু কি জানাবেন?

পাপড়ি রহমান: বাংলাদেশের গল্পঃ নব্বইয়ের দশক নামে আমার এই সম্পাদনা গ্রন্থটি বাংলা একাডেমী থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। শুধু নব্বইয়ের গল্প কেন যে কোনো দশকের গল্প নিয়েই নিখুঁত বিশ্লেষণ দেয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। কারণ ছোটগল্পেরই কি নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা আজ আর আছে? কোনটিকে আমরা ছোটগল্প বলব এ নিয়েই তো নিরন্তর ধাঁধার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছি। তবে সাহিত্যের এই মহার্ঘ মাধ্যমে মানে ছোট গল্পে কাজ করা আমার কাছে বরাবরই দুরহ মনে হয়েছে। আর দশক ওয়ারী বিভাজনও খুব কাজের কিছু নয়। তবুও একজন লেখকের উত্থানকাল জানতে চাইলে দশকের উল্লেখ সহজতর হয়। নব্বইয়ের গল্প লেখকেরা সর্বদাই স্বাতন্ত্র্য নিয়ে লিখে যাচ্ছেন। এই দশকের লেখকরা কেমন গল্প লিখেছেন তা জানতে হলে নিশ্চয়ই তাদের লেখাপত্র পড়তে হবে এবং এক্ষেত্রে পাঠককেও প্রগতিশীল হতে হবে। আসলে নব্বইয়ের গল্প নিয়ে বলতে গেলে অনেক বিস্তৃত করে বলতে হয় যা এখানে সম্ভবপর নয়। তবে এ দশকের গল্প লেখকরা একেকজন একেক স্বরে কথা বলেছেন; তার নিজের মত করে বলেছেন। ফলে প্রত্যেক লেখকের বৈশিষ্ট্যকে আলাদা করে চেনা যায়, চিনে নিতে হয়। তাদের গতি, প্রকৃতি, ভঙ্গিকে আলাদা করে ধরা যায়। এ দশকের লেখকরা আঞ্চলিক ভাষার উপর ঝুঁকেছেন কম বেশী সবাই। নব্বইয়ের লেখকদের অনেক বেশি গতিশীলও বলা যেতে পারে- কারণ এদের প্রায় সকলেই ধর্মান্ধতা থেকে মানুষের মুক্তি দেখাতে চেয়েছেন। এ সময়ের লেখকদের লেখায় রাজনীতি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো এসেছে একেবারে সমসাময়িক ঘটনাবলী থেকে। ফলে এদের গল্প হয়ে উঠেছে বাস্তবধর্মী যা চলচ্ছবির মতই দৃশ্যমান। কোনো কোনো লেখকের লেখায় মিথ বা পুরাণ ব্যবহারের ঝোঁক লক্ষণীয়। নব্বইয়ের গল্পকারদের গল্পে ঘুরেফিরেই আসছে সমাজব্যবস্থার অসম বিন্যাস, রাজনীতিবিদদের স্বার্থপরতা, জটিল-কুটিল মানসিকতা, বেকারত্ব, সন্ত্রাস, অশিক্ষা, ধর্ষণ, ফতোয়াবাজদের রক্তাক্ত জিহ্বা, খেটে খাওয়া মানুষের স্বপ্ন নিয়ে এনজিওদের ব্যবসা, সমাজ, রাজনীতি। দুই একজন বাদে চটুল প্রেমের আবেগি গল্প নব্বইয়ের কেউই লিখেননি বললেই চলে। আসলে এ দশকের লেখকরা তাঁদের গল্পে ধিরস্থির- শুধু তাই নয় এরা অনেকটা পুরনো পুকুরের মত গভীর আর নির্জনও বটে। মোদ্দাকথা আমার সময়ের লেখকরা সবাই সিরিয়াস কর্মী এবং স্বলেখার প্রতি ভীষণভাবে যত্নবানও বটে।

দু: সংকলন করতে গিয়ে আপনার অভিজ্ঞতার বিষয়টিও জানতে আমরা আগ্রহী। আপনার অভিজ্ঞতার বিষয়ে বলুন।

পা: আমি মনে করি কোনো সম্পাদনাই বিতর্কের উর্ধ্বে নয়। একেবারে নিউট্রাল ভিউ থেকে এ সম্পাদনাটি করা আমার জন্য সহজসাধ্য ছিল না। এখানে প্রায়ই তো দলাদলি বা গোষ্ঠীবদ্ধতাকে মেনে চলা হয়। আমি কিন্তু কোন দল বা গোষ্ঠীর নই। হলেও আমি নিউট্রাল জায়গা থেকে সরে দাঁড়াতাম না। যারা সত্যিকার অর্থেই ভালো লিখছে আমি তাঁদের একসাথে করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। তবে অনেকেই চেয়েছেন আমাকে ইনফ্লুয়েন্স করতে। যারা নব্বইতে লিখতে শুরু করেননি বা একেবারেই ভালো লিখছেন না- তাদের এই সংকলনভুক্ত না করার বিষয়ে আমি অনড় থেকেছি। আর এজন্য আমাকে যাতনাও কম পোহাতে হয়নি। আমার কৃতজ্ঞতা বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এর কাছে। তাঁর হস্তক্ষেপ না থাকলে এ সম্পাদনা গ্রন্থটি ফাইলের নিচেই চাপা পড়ে থাকতো। তবে সর্বোপরি অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর নয়। আসলে অনেকে জানেনই না সম্পাদনা কি জিনিস? একটা সংকলন যখন কেউ সম্পাদনা করবে তখন তো সম্পাদকের নির্বাচন বা রুচিই সেখানে প্রাধান্য পাওয়া উচিত, নয়কি? সেখানে অন্যের মাতব্বরি করার কারণ কি? এবং এই মাতব্বরি কোনো কোনো লেখককে তোয়াজ করা ছাড়া আর কি? আর আমিই যে নব্বইয়ের সব ট্যালেন্টদের একীভূত করেছি তেমনও নয় কিন্তু। আমি কি জানি আমার অগোচরে কোথায় কেউ কি লিখে যাচ্ছেন? এবং তা একদিন কালজয়ী সাহিত্য হয়ে উঠবে না! কেউ লিখে যে যাচ্ছেন না সে গ্যারাণ্টি কি আমি দিতে পারি? পারি না। আসলে সময় হলো বড় ফ্যাক্টর। তাই নয় কি?

তবে আমি বরাবরই আমার যে কোনো কাজের প্রতি সৎ থাকি বা থাকতে চাই।

দু: পালাটিয়া উপন্যাস লেখার জন্য আপনি উত্তরবঙ্গকে বেছে নিয়েছিলেন কেন?

পা: উত্তরবঙ্গ কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এ পর্যন্ত যতগুলো বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছে যেমন আধিয়ার, তেভাগা আন্দোলন সবকিছুর সূত্রপাত কিন্তু এই দিনাজপুরে। সেদিক থেকে দিনাজপুর ঐতিহাসিক স্থানও বটে। তবে ‘পালাটিয়া’ কিন্তু দিনাজপুরের নিজস্ব ঐতিহ্য। আমি যখন এই ঐতিহ্যের সন্ধান পাই তখন মনে হয়েছে এই পাদপ্রদীপের আড়ালে থাকা জনগোষ্ঠীকে লোকালয়ে আনতে হবে। এই পালাকারদের ছড়িয়ে দিতে হবে সমগ্র বাংলাদেশে। তবে পালা সংগ্রহ করার কাজটি ভীষণ দুরূহ ছিল- আমাকে তারা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিল না। আমি তাদের বুঝিয়েছি যে, আমি তাদের নিয়ে বই লিখব। তারা যেমন গান বাঁধে আমিও তাদের নিয়ে তেমনই বই বাঁধবো। এবং একেবারে অচেনা ভাষা, সংস্কৃতি ও জনগোষ্ঠী নিয়ে লেখা আমার জন্য কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না। এই উপন্যাসটি লিখে আমি টানা অনেকদিন বিশ্রাম নিয়েছি। লেখা থেকে অনেক দূরে থেকেছি। প্রচণ্ড শ্রম দিয়েছি এই উপন্যাস এর পেছনে।

দু: উপন্যাসটি লিখতে গিয়ে আপনি দিনাজপুর, উত্তরবঙ্গের এসব অঞ্চল ঘুরেছেন। সিরিয়াস উপন্যাস লিখার দিকেই আপনার নজর ছিল। আপনার কি বই প্রকাশের পর মনে হয়েছে আপনি সফল বা আপনি যা চেয়েছেন তা করতে পেরেছেন? পাঠকদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?

পা: হ্যাঁ, এটা সত্য যে আমি দিনাজপুর গিয়েছি। দিনাজপুরে আমার কিছু বন্ধু আছেন- উপন্যাস লেখার সময় যে বিষয়টি নিয়েই খটকা লেগেছে আমি পুনঃপুন ফোনে তা ক্লিয়ার করে নিয়েছি। আমি পালাটিয়া দলের প্রায় সবার সাথে কথা বলেছি। জেনেছি তাদের প্রতিদিনের কাজ-বিশ্রাম-আহার। জেনেছি ঘরে তারা নিত্য কোন দেবতার পূজা করে। তারা কিভাবে পালা লেখে। প্রায় খুঁটিনাটি সব জেনেছি। আমি সিরিয়াস উপন্যাস লিখব এমনটি ভাবিনি। শুধু কাজ করার সময় সিরিয়াস ও সৎ থাকার চেষ্টা করেছি। কল্পনাকে কম প্রশ্রয় দিয়েছি। আমি জানি না পালাটিয়া উপন্যাস সফল হয়েছে কিনা। তবে হ্যাঁ আমি সন্তুষ্ট। এর আগে জামদানী তাঁতিদের নিয়ে ‘বয়ন’ উপন্যাসটি লিখেও আমি পরিতৃপ্ত ছিলাম। আমি যা চেয়েছি তা করতে পেরেছি। সফল নাকি বিফল সেটা পাঠক বিচার করবেন। আর পাঠকদের প্রতিক্রিয়াই কিন্তু আমার সত্যিকার পুরষ্কার। বইমেলায় বা কোনো অনুষ্ঠানে প্রায়ই অচেনা কেউ এসে এই দুটি উপন্যাস নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে যায়। তখন আমি বিস্মিত হই। এত পাঠক কিভাবে জানে এ দুটি উপন্যাসের কথা! কোন প্রতিষ্ঠান বা কেউই কিন্তু এ দুটি উপন্যাসকে পুরস্কৃত করেনি, অথচ কত নিম্নমানের বইকে সম্মাননা দেয়া হয় আমাদের এখানে। কেউ আমাকে কিছুই দেয়নি সেজন্য আমি কিন্তু মোটেও বেদনার্ত নই। বরং আমি আনন্দিত এজন্য যে, আমি আমার লেখা অনেক পাঠকের কাছে পৌছে দিতে পেরেছি। এবং আমি তাই চেয়েছি। কারণ শুধু পাঠকের ভালবাসাই আমাকে কাঁদায়-হাসায়। আমাকে নতুন লেখাতে উৎসাহী করে। আর শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতের অনেক লেখক ও পাঠক আমাকে তাদের অভিমত জানিয়েছেন যে, নতুন ধারার এ দুটি উপন্যাস তাঁদের চমকিত করেছে। তাঁরা বলেছে ‘অফবিটের উপন্যাস’। ভারতীয় সংস্করন করার জন্যও অনেকেই আগ্রহ দেখিয়েছেন।

দু: আমাদের দেশে নিম্নবর্গের বা গরীব মানুষকে নিয়ে উপন্যাস লিখা এখনকার একটা ফ্যাশন বা মহাশ্বেতা দেবীর মত মাইলের পর মাইল হেঁটে, সেখানে থেকে কেউ উপন্যাস লিখেন না বা আদিবাসি মানুষের মা হয়ে উঠতে পারেন না। এই বিষয়গুলো নিয়ে আপনার অভিমত কি?

পা: আপনার এই মতামতের সাথে আমি একমত নই। নিম্নবর্গ বা গরীব মানুষকে নিয়ে উপন্যাস লেখা যদি ফ্যাশনই হতো তবে সবাই এদের নিয়েই লিখত। কারণ এখন, এই সময়ে নিম্নবর্গের মানুষদের নিয়ে তেমন ভালো কোনো লেখা প্রায় চোখেই পড়ে না। বেশীর ভাগ লেখকই তো লিখছেন মধ্যবিত্তের শহুরে জীবন বা উচ্চবিত্তদের নিয়ে। এর কারণ হচ্ছে আমাদের অধিকাংশ লেখকই এই দুই শ্রেণীর মধ্যে পড়েন। যে জীবনে আমি অভ্যস্থ সে জীবন নিয়ে লেখা তেমন কঠিন কিছু নয়। আমিও তো পারি আমার জীবনযাপন নিয়ে ঢাউস ঢাউস উপন্যাস নামাতে। কিন্তু আমি তা করতে চাই না। যে লেখা প্রায় বিনা শ্রমে লেখা যায় তা আমি কেন লিখব? আবার মাইলের পর মাইল হেঁটে কিছু লিখলেই তা নিম্নবর্গ বা গরীব মানুষদের লেখা হয়ে উঠবে এমনটি নয়। অথবা আদিবাসীদের নিয়ে লিখলেই তাদের বাবা-মা হওয়া যায়না। আমি মনে করি সবকিছুর পেছনে থাকা উচিৎ মমতা, হৃদয়ের টান। যাদের নিয়ে লিখছেন আপনি তাদের কতটা ভালবাসেন এবং সে ভালবাসা সত্যিকার কিনা। সত্যিকার প্রাণের দায় না থাকলে কোন লেখাই শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকে না বা টিকবেনা। শুধু মোড়ক মুড়ে বসে থাকলে পাঠক ঠিকই টের পেয়ে যাবে অন্তঃসার শূন্যতা। ফাঁকি। লেখকের অসারত্ব। একটা প্রবাদ আছে না কাক যতই ময়ূরপুচ্ছ পরিধান করুক সে কাকই থেকে যায়। ময়ূরের পেখম মেলতে হলে তো মেঘকে ভালো করে চিনতে হবে নাকি? এবং এই মেঘ চেনাটাই হল জরুরি।

দু: সমসাময়িক কাদের লেখাকে আপনার বেশি ভাল লাগে এবং কেন?

পা: সমসাময়িক বলতে আসলে কি বুঝিয়েছেন? যারা আমার সময়ে লিখতে শুরু করেছে তাদের? আমি তো সমসাময়িক বলতে বুঝি এখনও যারা অবিশ্রাম লিখে চলেছেন। যাদের লেখা আমি পাচ্ছি তারাই তো আমার সমসাময়িক। আমার সময়ের কথা যদি জানতে চান তাহলে বলব যে ৯০ সর্বদাই সক্রিয় এবং আমাদের এই নব্বই ঝাঁকের পর তেমন উল্লেখ করার মত গদ্যকার আমি এখনো পাইনি। হয়তো আছেন- আমার পাঠ্য তালিকার বাইরে থেকে গেছেন। এটা আমারই অক্ষমতা। কিন্তু যার লেখা পড়ে চমকে উঠবো বা যার লেখার জন্য অপেক্ষা থাকে তেমন লেখক আমার নজরে পড়ে নি। আর এখনো যাঁরা লিখছেন তাঁদের মাঝে হাসান আজিজুল হক এর গদ্য আমার ভীষণ ভালো লাগে। আছেন সৈয়দ শামসুল হক, আনোয়ারা সৈয়দ হক, সেলিনা হোসেন, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম প্রমুখ। আমার প্রমুখ অগ্রজ কিন্ত অবিশ্রাম লিখে যাচ্ছেন। অর্থাৎ তাঁরাও আমার সময়ের লেখক। আর যদি জানতে চান কেন তাঁদের লেখা ভাল লাগে? তাঁদের সবারই লেখার নিজস্ব স্টাইল আছে এ কারণেই ভালো লাগে। একজন লেখকের যদি নিজস্বতাই গড়ে না ওঠে তবে তার আর লেখার দরকার কি?

দু: আমি উপন্যাস লিখতে চাইলে কি করার পরামর্শ দিবেন?

পা: শুধু আপনি কেন যে কেউ যে কোনো বিষয় নিয়ে উপন্যাস লিখতে পারেন। আর আমাদের এখানে অর্থাৎ বাংলাদেশে এতসব আনকোরা ও ভালো ভালো বিষয় বিস্তৃত রয়েছে যে, আমি সেসব লিখে শেষ করতে পারব কিনা সন্দেহ। অর্থাৎ আমার সবকিছু লেখার মত আয়ু হবে কিনা।

শুধু উপন্যাস কেন যেকোনো বিষয়ে লিখতে গেলেই ভেতরের তাগিদটা জরুরি। এবং তাগিদ হওয়া চাই ভেজালহীন। লোক দেখানোর জন্য নয়, নাম-যশের জন্য নয়, পুরষ্কার প্রাপ্তির জন্য নয়। যে কোনো লেখকের কাছেই আমার অনুরোধ তিনি যেন লেখালেখির জন্য তার সত্যিকার মমতা ঢেলে দেন।নিজের সর্বোচ্চ শ্রম ঢেলে দেন। তবেই সেটা হয়ে উঠতে পারে কালজয়ী সাহিত্য। আর যে বিষয় নিয়েই আপনি লিখবেন বা লিখেন না কেন, সে বিষয়টি ভালোভাবে না জেনে-বুঝে কিছুতেই লেখা উচিত নয়। জেনে-বুঝে তবেই আগানো ভালো।