বাংলাদেশের উপন্যাসে বৈচিত্র্য কম: আহমাদ মোস্তফা কামালের সাথে অনলাইন আলাপ

Post date: Sep 7, 2013 11:13:03 AM

১. একলা থাকার গল্প, গল্পগ্রন্থ, প্রকাশক : নান্দনিক।

২. অন্য কোথাও অন্য কোনোখানে, উপন্যাস, প্রকাশক : সন্দেশ।

৩. বর্ষামঞ্জরি, উপন্যাস, প্রকাশক : শুদ্ধস্বর।

৪. বাংলা গল্পের উত্তরাধিকার, প্রবন্ধগ্রন্থ, প্রকাশক : শুদ্ধস্বর।

৫. আমরা একটি গল্পের জন্য অপেক্ষা করছি, গল্পগ্রন্থ, প্রকাশক : সন্দেশ।

৬. ঘরভরতি মানুষ অথবা নৈঃশব্দ্য, গল্পগ্রন্থ, প্রকাশক : সন্দেশ।

৭. অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না বলে, গল্পগ্রন্থ, প্রকাশক: শুদ্ধস্বর।

৮. আগন্তুক, উপন্যাস, প্রকাশক : সন্দেশ।

৯. অন্ধ জাদুকর, উপন্যাস, প্রকাশক : সন্দেশ।

১০. কান্নাপর্ব, প্রকাশক: শুদ্ধস্বর।

১১.পরম্পরা, সন্দেশ

১২. শিল্পের শক্তি, শিল্পের দায়, আ্যাডর্ন

১৩. সংশয়ীদের ঈশ্বর, অডর্ন

১৪. বাংলাদেশের ছোটগল্প, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র

১৫. ছোটগল্পে ছোটরা, মূর্ধণ্য

১৬. ভোর ও সন্ধ্যারা নামছে বেদনায়, ঐতিহ্য

১৭. আমরা একটি গল্পের জন্য অপেক্ষা করছি, সন্দেশ

১৮. বাংলাসাহিত্যের সেরা গল্প, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র

১৯. রৌদ্র ছায়ার খেলা, শুদ্ধস্বর

২০. অশ্রু ও রক্তপাতের গল্প, শুদ্ধস্বর

২১. দ্বিতীয় মানুষ, দিব্য প্রকাশ

ম্পাদিত গ্রন্থ :

১. হিরন্ময় কথকতা (মাহমুদুল হকের একগুচ্ছ সাক্ষাৎকারের সংকলন), প্রকাশক: শুদ্ধস্বর।

২. রৌদ্র ছায়ার খেলা (রবীন্দ্রনাথের কিশোর উপযোগী গল্পের সংকলন), প্রকাশক : শুদ্ধস্বর।

পুরস্কার:

এইচএসবিসি কালি ও কলম পুরস্কার

প্রথম আলো বর্ষ সেরা বই

`ycyi wgÎ : আপনি কত বছর থেকে লেখালেখি শুরু করেছেন ?

আহমাদ মোস্তফা কামাল : লিখছি তো সেই ছোটবেলা থেকেই, মানে স্কুলে পড়ার বয়স থেকে। একটানা চার-পাঁচ বছর খাতার পাতা ভরিয়ে ফেলেছি লিখে লিখে। প্রকাশের কথা ভাবিনি কখনো। লেখালেখিই করবো, আর কিছু করি না করি Ñ এরকম করে ভাবতে শুরু করি ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময়। সেটা বোধ হয় ১৯৯০ সালের কথা। এবং এরপর আর কখনো বিরতি নিইনি।

`ycyi wgÎ : ঠিক কি ভেবে বা কোন ধরনের ভাললাগা বা উদ্দেশ্য থেকে আপনি এখনও লেখালেখি করছেন?

আহমাদ মোস্তফা কামাল : কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে লেখালেখি করি না। লেখালেখি করে কোনো উদ্দেশ্য পূরণ হয় বলেও মনে করি না। লিখতে ভালো লাগে, দুঃসহ সময়গুলো ভালো কাটে, অস্তিত্বের যন্ত্রণা সাময়িকভাবে ভুলে থাকি, সময়টা কেটে যায় Ñ এসবই তো! হয়তো না লিখলেও চলে, তবু সময়টা কোনো একটা কাজে ব্যয় হলো, এরকম একটা তৃপ্তি বোধ হয় কাজ করে মনের ভেতর।

`ycyi wgÎ : বাংলা সাহিত্যে অনেক মাধ্যম থাকা সত্ত্বেও আপনি কেন উপন্যাস বা গল্পে কাজ করলেন?

আহমাদ মোস্তফা কামাল : গল্প বা উপন্যাসে আমি সাচ্ছন্দ্য বোধ করি বলেই এই মাধ্যমে লিখি। যখন মনে হয় এই মাধ্যমে সম্ভব হচ্ছে না, তখন অন্য ধরনের গদ্য লিখি। এর বাইরে অন্য কোনো মাধ্যমের করণ-কৌশল আমাকে ধরা দেয়নি, দিলে হয়তো ওইসব মাধ্যমেও লিখতাম।

`ycyi wgÎ : উপন্যাস বা গল্পে আপনার বিশেষ অবদান বা কনট্রিবিউশন যদি বলা হয়, তাহলে কোনগুলোকে ধরা হবে এবং কেন?

আহমাদ মোস্তফা কামাল : নিজের অবদান নিয়ে আমি আর কী বলতে পারি? আদৌ কিছু কন্ট্রিবিউট করতে পেরেছি কী না, সেই সংশয়ই তো এখনো দূর হলো না!

`ycyi wgÎ : আপনি কোন লেখা লিখে সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি পেয়েছিলেন এবং কেন?

আহমাদ মোস্তফা কামাল : খুব তৃপ্ত হবার মতো লেখা এখনো লিখে উঠতে পারিনি। আন্তরিকভাবে ভালো কিছু লেখার চেষ্টা করেছি সবসময়, কিন্তু অতৃপ্তিটা রয়েই গেছে। উপন্যাসগুলোর মধ্যে কান্নাপর্ব লিখে খানিকটা তৃপ্তি পেয়েছিলাম, কিন্তু আরো অনেক কাজ করা যেত ভেবে সেই তৃপ্তিও আর থাকেনি। কয়েকটা গল্প, দু-তিনটে প্রবন্ধ লিখেও কিছুটা তৃপ্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু এই সংখ্যা এত নগণ্য যে উল্লেখ করতেও অস্বস্তি লাগে।

`ycyi wgÎ : বাংলাদেশে কোন ধারার উপন্যাস বেশি লেখা হচ্ছে? সাম্প্রতিক দশকগুলোতে কোন ধারার উপন্যাস চর্চা বেশি হচ্ছে এবং কেন?

আহমাদ মোস্তফা কামাল : প্রশ্নটি ঠিক পরিষ্কার হলো না। ধারা বলতে ঠিক কী বোঝায়? বাংলাদেশের উপন্যাসে বৈচিত্র্য কম। একটা আখ্যানকে কেন্দ্র করে সামাজিক বাস্তবতার উপস্থাপন Ñ এই হচ্ছে বাংলা উপন্যাসের সর্বাধিক চর্চিত রীতি। গত কয়েক বছরে কিছু ডকু-ফিকশন ধরনের লেখা চোখে পড়ছে। কিন্তু এগুলোতে প্রধানত ডকুমেন্টেশনটাই হচ্ছে, উপন্যাস পড়ার আনন্দ তাতে পাওয়া যাচ্ছে না।

`ycyi wgÎ : বাংলা গল্পে অনেক পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করেন কি? কেন?

আহমাদ মোস্তফা কামাল : তা তো এসেছেই। জীবন-যাপনে, চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন এলে সাহিত্যে তার প্রতিফলন তো ঘটবেই। একশ বছর আগের বাস্তবতা আর এখনকার বাস্তবতা যেমন এক নয়, গল্পও এক নয়। বিষয়ে পরিবর্তন এসেছে, উপস্থাপন ভঙ্গিতে পরিবর্তন এসেছে, প্রকরণে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। পাশাপাশি রেখে পড়লে পরিবর্তনগুলো চোখে পড়বে সহজেই। এবং এই পরিবর্তন অনিবার্য।

`ycyi wgÎ : কোন ধরনের উপন্যাস লেখার প্রতি তরুণ লেখকদের ঝোঁকা উচিত বলে আপনি মনে করেন?

আহমাদ মোস্তফা কামাল : তরুণদের কোন ধরনের উপন্যাস লেখার প্রতি ঝোঁকা উচিত সেটা আমি বলার কে? আমি তো কোনো মাস্টারের ভূমিকা পালন করি না, করতে চাইও না। তারা যে ধরনের লেখায় সাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন, যেটাকে প্রয়োজনীয় মনে করবেন সেই ধরনের লেখাই লিখবেন।

`ycyi wgÎ : বাংলা উপন্যাসে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক পরিবর্তন এসেছে বরে মনে করেন কি? পরিবর্তন হলে সেগুলো কেমন? এই পরিবর্তনকে আপনি কিভাবে দেখছেন? পজিটিভলি না নেগেটিভলি?

আহমাদ মোস্তফা কামাল : না, বাংলা উপন্যাসে এমন উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন আসেনি। সুনীলের পূর্ব-পশ্চিম প্রকাশের পর সেটির অনুকরণে ডকুমেন্ট-ভিত্তিক কিছু উপন্যাস লেখা হয়েছে, নানা কারণে সেগুলো বেশ প্রচারও পেয়েছে, কিন্তু ওগুলোকে এমন কোনো উল্লেখযোগ্য কাজ বলে মনে হয়নি আমার। আর সব ধরনের কাজের প্রতিই আমার দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। শত ফুল ফুটুক না! সে-সবের ভেতর থেকে একটা-দুটোও যদি খুব সৌরভময় হয়ে ওঠে সেটিই আনন্দদায়ক ঘটনা হবে।

`ycyi wgÎ : বিশ্বের সাথে বাংলা উপন্যাসের কি তুলনা করা যায়? করলে কিভাবে? সাম্প্রতিক সমযে বাংলা উপন্যাস আর বিশ্বের উপন্যাস আপনি কিভাবে দেখছেন?

আহমাদ মোস্তফা কামাল : বাংলা গল্পের ক্ষেত্রে আমি খুব দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারিÑ বিশ্ব সাহিত্যের যে-কোনো ভাষার গল্পের সঙ্গে একই কাতারে দাঁড়াতে পারে আমাদের গল্প। সেই তুলনায় উপন্যাস ততটা নয়। এখনো পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের সেরা উপন্যাসগুলোর খোঁজ করলে আমাদেরকে গত শতকের তিরিশ-চল্লিশ-পঞ্চাশ দশকে ফিরে যেতে হয়। এরপর উপন্যাসের অগ্রগতি খুব আশাব্যঞ্জক নয়। বাংলাদেশে বিশ্বমানের উপন্যাস খুব বেশি লেখা হয়নি। কেন লেখা হলো না, সেটা এক দীর্ঘ আলোচনার বিষয়।