কোনকিছুই কলম এড়াচ্ছে না কবিদের: সুমন গুণের সাথে অনলাইন আলাপ

Post date: Oct 12, 2012 6:55:42 AM

প্রকাশিত বই: অভিমতহীন,একটি আহত রূপকথা,বান্ধবনগরে বাড়ি

দুপুর মিত্র: পশ্চিমবাংলার কবিতা আর বাংলাদেশের কবিতা এই দুইটা জায়গাকে সামনে নিয়ে আসলে কোন মিল আর অমিলগুলো বেশি সামনে আসে?

সুমন গুণ: এই মুহূর্তে দুই বাংলার কবিতার ভাষা বা বিষয়ে স্বাভাবিক অমিল যেটুকু আছে, তা খুব তাৎপর্যপূর্ণ কিছু নয়। দুই জায়গার কবিতাই নতুন সময়কে, নতুন বিষয়কে নিজের মত করে ধরতে চাইছে।

দুপুর মিত্র: আরও একটু বিস্তারিত বলা যাবে কি?

সুমন গুণ: আসলে পশ্চিমবাংলার দুজন কবির মদ্যে বা বাংলাদেশের দুজন কবির মধ্যে যে অমিল, ভাষায় বা বিষয়ে দুই বাংলার দুজন কবির মধ্যে তারচেয়ে বেশি কিছু না থাকাই স্বাভাবিক এখন। সবাই এখন একই আগ্রাসী পৃথিবীর বাধ্যতামূলক নাগরিক। কয়েক দশক আগেও এই ব্যাপারটা ছিল না। তখন বাংলাদেশের কবিতার একটা নির্দিষ্ট প্রসংগ ছিল, ৭১ এবং তারপরের ঘটনা; যা বাংলাদেশের কবিদের তুমুলভাবে স্পর্শ করেছিল।

দুপুর মিত্র: তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন, আমরা এখন একই আগ্রাসী পৃথিবীর মানুষ। সেক্ষেত্রে কবিতাতেও একটা বিশ্বায়ন ঘটে গেছে। যা বিষয়ের ক্ষেত্রে একটা বিশেষ জায়গা তৈরি করেছে। সেক্ষেত্রে কবিতার বিষয় বৈচিত্র্য কমে যাচ্ছে ।এরকম কিছু বলা হলে আপনি আপনি একমত হবেন?

সুমন গুণ: বৈচিত্র্য বরং বেড়েছে। এই সময়ের কবিদের লেখার মধ্যে নিজের নিজের অভিজ্ঞতা দারুণভাবে ঢুকে পড়েছে। যেহেতু এই সময়ের কবিদের অভিজ্ঞতাও বৈচিত্র্যময়, তাদের কবিতাও তাই।

দুপুর মিত্র: এই সময়ের প্রবণতা তাহলে মোটা দাগে কোনগুলোকে বলা যেতে পারে?

সুমন গুণ: সেভাবে বলা মুশকিল। তবে অনেকগুলিই বলা যেতে পারে, যেমন সম্পর্কের জটিল শ্বাসহীনতা, আদর্শ বা আস্থার সাথে ভাঙন, পাশের বাড়ির অন্ধকার- সবই কবিতার বিষয় এখন। এমন কি মানুষের বেঁচে থাকার মহাজাগতিক অনিশ্চয়তা, নানা পরিবেশিক সংক্রমণ, কোনকিছুই কলম এড়াচ্ছে না কবিদের।

দুপুর মিত্র: কবিতায় আপনি কোন জিনিসটিকে বেশি আশা করেন? কিন্তু পান না।

সুমন গুণ: কবিতায় যে কোনও পাঠকই বোধহয় চান কবির নিজের উচ্চারণ, এমন এক দুর্মূল্য মৌলিকতা যা তার কথাকেও স্মরণীয় করে তুলবে। এটা যে সবসময় সবার লেখায় পাওয়া যায় তা নয়, তবে মাঝে মাঝেই এইসব লেখার বিদ্যুৎচমক আমাদের লেখালেখির, আমাদের বেঁচে থাকার চর্চা চিনিয়ে দেয়।