শুন্য দশকের কবিরা তাদের উদ্দেশ্য সাধনে সফলকাম হয়েছেন: কবি শিবলী শাহেদের সাথে অনলাইন আলাপ

Post date: Jun 25, 2012 6:32:09 AM

দুপুর মিত্র: আপনি কেন কবিতা লিখেন?

শিবলী শাহেদ: আসলে আমি যা ভাবি যা দেখি সবকিছু একসময় কবিতা হয়ে ধরা দেয় আমার কাছে । কবিতাকে আমার কাছে সবসময় জীবন্ত মনে হয় । কবিতার এই জীবন্ত সত্ত্বাটি আমাকে প্রভাবিত করছে প্রতিনিয়ত ফলে নিজের ভেতরে তার অস্তিত্ব টের পাই । কবিতা আমাকে উড়তে শেখায় কল্পনায় তাই এই সুযোগ মিস করতে চাইনি বলেই হয়তো কবিতার সাথে আছি ,কবিতা লিখছি।

দু: কবিতা লেখার জন্য একজন কবির কি ধরণের প্রস্তুতি দরকার?

শি: আমার মতে কবিতা লিখতে হলে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে । সমসাময়িক লেখা সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে । আর ছন্দ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অপরিহার্য না হলেও এর প্রয়োজন আছে বৈকি । ছন্দ কবিকে একটা সুবিন্যস্ত পথ বাতলে দেয় । আর চর্চা চালিয়ে যেতে হবে নিরন্তর ।

দু: সমসাময়িক কাদের কবিতাকে আপনার ভাল লাগে এবং কেন?

শি: সমসাময়িক অনেকের লেখাই ভালো লাগে বিশেষ করে সায়ক চক্রবর্তী, জাফর আহমেদ রাশেদ, পলাশ দত্ত, জুবিন ঘোষ এবং আরো অনেকে। আসলে বলে শেষ করা যাবে না । তদের অনেকের কবিতায় আমি তীব্র জীবনবোধের সন্ধান পাই ।

দু: সমসাময়িক কাদের কবিতাকে আপনার খারাপ লাগে এবং কেন?

শি: খারাপ লাগা কবির সংখ্যা কম তবে তাদের নাম উল্লেখ করতে চাইনা । আমি এমন কিছু কবির কবিতায় কাব্যগুণ ও শিল্পবোধের অভাব দেখেছি ।

দু: নব্বই ও শূন্য এই দুই দশককে আপনি খুব কাছে থেকে দেখেছেন। এ বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?

শি: নব্বই দশকের অনেক কবির কথা আমি জানি যারা একটা পথ তৈরি করে গেছেন এবং পরবর্তীতে শুন্য দশকের অনেক কবি সেই পথ অনুসরন করতে গিয়ে আরো নতুন নতুন পথের জন্ম দিয়েছেন । অনেকেই বলতেন - যতই দিন যাবে কল্পনার ব্যবহার কমবে কারণ প্রজুক্তির ব্যবহার বাড়বে। অথচ দেখা গেছে তা হয়নি। শুন্য দশকের কবিরা সময়কে অস্বীকার করেননি বরং সময়কে কবিতার উপাদান করে নিয়েছেন । এদিক দিয়ে আমি বলব শুন্য দশকের কবিরা তাদের উদ্দেশ্য সাধনে সফলকাম হয়েছেন ।

দু: পশ্চিমবঙ্গের কবিতা আর বাংলাদেশের কবিতার ফারাকটা কোথায়?

শি: এককথায় পশ্চিমবঙ্গের কবিতা বেশি সাবজেক্টিভ আর বাংলাদেশের কবিতা শেকড়কেন্দ্রিক ।

দু: ব্লগ সাহিত্যকে কি বিশেষ কিছু দিচ্ছে?

শি: অবশ্যই ব্লগ সাহিত্য চর্চার পথকে আরো সুগম করে দিচ্ছে । এখন একজন লেখক ব্লগের মাধ্যমে নিজেকে সহজেই প্রকাশ করতে পারছেন ফলে সাহিত্য চর্চার প্রতি তার আগ্রহ বাড়ছে, সাহিত্য ভান্ডার আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে ।

দু: লিটলম্যাগের চাইতে ব্লগ গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনার মনে হয় কি? হলে কেন না হলে কেন নয়?

শি: বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি বলব ব্লগের চেয়ে লিটলম্যাগ বেশি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এ কথা ঠিক যে আমাদের দেশে এখনও অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি , ইন্টারনেট তো দূরের কথা । কিন্তু সেসব অঞ্চলে সাহিত্যচর্চা আছে । সুতরাং ব্লগের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও তা লিটলম্যাগের গুরুত্বকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি এখনও ।

দু: দৈনিকে সাম্প্রতিক সাহিত্য বিষয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কি?

শি: দৈনিকে সাহিত্যের জন্য নির্ধারিত স্থান খুব কম-ই থাকে। কলেবর আরো বাড়ানো উচিৎ। আর নতুনদেরকে সুযোগ দেয়ার ব্যাপারটি খুব কম-ই দেখা যায়। সবমিলিয়ে খুব কম সংখ্যক দৈনিক পত্রিকা সাহিত্যের পাঠকের চাহিদা পুরন করতে পারছে ।