আমার মনে হয় লবণপানি একটা সাহসী উপন্যাস: মোশাহিদা সুলতানা ঋতুর সাথে অনলাইন আলাপ

Post date: Jun 1, 2014 5:47:13 PM

প্রকাশিত বই: লবণপানি

 

দুপুর মিত্র: আপনার লেখালেখির শুরুটা কিভাবে ?

 মোশাহিদা সুলতানা ঋতু: আমি তো লিখি ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু কখনো কোথাও প্রকাশ করিনি। গত ৪-৫ বছর ধরে পত্রিকায় কলাম লেখা দিয়ে শুরু। বেশিরভাগই দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বিষয় যা আমাকে নাড়া দিয়েছে। লিখতে হবে বলে কখনো আমি লিখতে পারিনি।

 আরও পড়ুন 

দুপুর মিত্র: আপনি তো এ বছর উপন্যাস বের করেছেন। উপন্যাস লেখায় আপনি সুনির্দিষ্টভাবে কোন সমস্যায় বেশি পড়েন?

মোশাহিদা সুলতানা ঋতু: আমার ভাষার দুর্বলতা আছে। লেখার সময় আমি এই দুর্বলতাকে মাথায় রাখি না। লেখার সময় কি লিখছি সেটা নিয়ে বেশি ভাবি, কতটা প্রকাশ করতে পারছি সেটা ছেড়ে দেই নিজের গতির উপর। পরে বুঝতে পারি আমি একটু দ্রুত ভাবি, বর্ণনা কম থাকে। সমস্যাটা আমি বুঝতে পারি। আবার অন্যদিকে মনে হয় বেশি বর্ণনা দিতে গেলে বর্ণনাটাই প্রধান হয়ে উঠতে পারে। এই দুই দিক নিয়ে খুব মুশকিলে থাকি। মানে এই দুইটি বিষয় নিয়ে ভারসাম্য আনতে যেয়ে বিপদে থাকি। দুইটি বিষয়ের মধ্যে ভারসাম্য হবে কথাটা। এই যে দেখেন আমার ভাষার বিপদটা কোথায়। এই কারনে আমাকে লেখাটা অনেকবার পড়তে হয়। আমি পরিশ্রম করি বেশি, সময় দেই প্রচুর, তাড়াহুড়াকরি না। কিন্তু গল্প বলার সময় একটা তাড়া থাকে, সেটা বিপদজনক মনে হয়।

 

দুপুর মিত্র: লেখার সময় আপনি কি শিডিউল করেন?

মোশাহিদা সুলতানা ঋতু: না।

 

দুপুর মিত্র: গল্প আর উপন্যাসের ভেতর আপনার পছন্দ কোনটাতে বেশি?

মোশাহিদা সুলতানা ঋতু: লিখতে না পড়তে?

 

দুপুর মিত্র: লিখতে?

মোশাহিদা সুলতানা ঋতু: হা হা হা। আমি তো জীবনে একটা লেখাই লিখেছি। মানে একটা উপন্যাস আর একটা গল্প। গল্পটাও প্রকাশিত হয়েছে, উপন্যাসও।

 

দুপুর মিত্র: ইন্টারেস্টিং। একটা গল্প?

মোশাহিদা সুলতানা ঋতু: হুম। আমি আর কিছু লেখি নাই কোনদিন প্রবন্ধ আর কবিতা ছাড়া।

 

দুপুর মিত্র: কবিতাটা আমার পছন্দের। মাঝে মাঝে নিজের জীবনই মনে হয় ওটাকে আমার। যাই হোক। আপনি সাধারণত কোনও গল্প বা উপন্যাসের কিভাবে শুরু করতে জোর দেন? চরিত্র না বাক্যকে? না কোনও ডায়ালগকে?

মোশাহিদা সুলতানা ঋতু: চরিত্র অবশ্যই। আমি বাক্য গঠনে দুর্বল।

 

দুপুর মিত্র: লবণপানি উপন্যাসটি নিয়ে কিছু বলুন। কিভাবে এর পরিকল্পনা এল। কি করতে চেয়েছিলেন এ উপন্যাসে। কতখানি সন্তুষ্ট। উপন্যাসের প্রিয় চরিত্র এসব নিয়ে।

মোশাহিদা সুলতানা ঋতু: আমাদের দেশের সাহিত্য বোদ্ধারা আমার লেখা পড়ে ব্যথিত হতে পারেন। আবার একই সাথে এর শক্তি দেখে বিষ্মিত হতে পারেন। বিষ্মিত হতে পারেন এই অর্থে যে এত দুর্বল বাক্য দিয়ে কিভাবে এত শক্তিশালী চরিত্র নির্মাণের সাহস পেলাম। আমার মনে হয় লবণপানি একটা সাহসী উপন্যাস। আর কিছু নয়। আর আমার প্রিয় চরিত্র সবগুলিই। কতদিন রাত কেটেছে এই সব মানুষের মনোজগত তৈরি করতে। কাকে রেখে কাকে প্রিয় বলব? আমি চরিত্রগুলিকে খুব ভালবাসি। সবগুলিকেই।

 

দুপুর মিত্র: সাহিত্যের কি সামাজিক বাধ্যবাধকতা আছে? এ নিয়ে আপনার ভাবনা কি?

মোশাহিদা সুলতানা ঋতু:  আমি তো আসলে এতকিছু ভাবিনি। শ্যামাকে নিয়ে আমাকে অনেক ভাবতে হয়েছে। কারন সে এত সরল যে তাকে সামনে আনাই কঠিন। এইসব সরলতা এই সমাজ সহজে বুঝতে চায় না। আমি সমাজের কথা ভাবিনি। শ্যামাকে ভেবেছি।

 

দুপুর মিত্র: বাহ্। লেখালেখিকে কি সংগ্রাম মনে হয় আপনার?

মোশাহিদা সুলতানা ঋতু: জানি না।

 

দুপুর মিত্র: অনেক ধন্যবাদ দিদি। আমাকে আপনার মূল্যবান সময় দেবার জন্য।

মোশাহিদা সুলতানা ঋতু: শেষ কথা। প্রেম এক প্রকার সংগ্রাম, আর লেখা এক প্রকার প্রেম। তাহলে কি দাঁড়ায়?