চরিত্র হিসেবে আমি আল মাহমুদ আর আহমদ ছফাকে আলাদা করে দেখতে চাই: কবি সাখাওয়াত টিপুর সাথে অনলাইন আলাপ

Post date: May 12, 2012 8:19:27 AM

সাখাওয়াত টিপু, কবি

প্রকাশিত বই:

'রাখে আল্লা মারে কে রে' 'এলা হি বরষা' বুদ্ধিজীবী দেখ সবে' (২০০৯), 'শ্রী চরণে সু' (২০০৭), 'যাহ বে এই বাক্য পরকালে হবে' (২০০৪)

দুপুর মিত্র: মার্কসবাদী সাহিত্য বলে কিছু থাকতে পারে?

সাখাওয়াত টিপু: পারে।

দু: কিরকম সেটা?

সা: আইডিয়া নির্ভর। মার্কসের কোনও চিন্তা যদি কাউকে তাড়িত করে। তা থেকে সাহিত্য হতে পারে না কি?

দু: মার্কসের চিন্তা থাকলেই কেন তা মার্কসিয় সাহিত্য হবে। এরকম তো অনেকের লেখায় নানান জনের চিন্তা আছে ; সেসবকে কি ধরেন কান্টিয় সাহিত্য বা এইজাতীয় কিছু বলা হয়?

সা: বলা যাবে না কেন? পাউরুটি খাইলে কি বলা যাবে না, ভাত খাইছি। দুইটা এক জিনিস না।

দু: আচ্ছা অনেকে বলেন মার্কসীয় সাহিত্য মানেই প্রোপাগান্ডা আপনিও কি তাই মনে করেন?

সা: অনেক কারা কারা আমি জানি না, আইডিওলজি আর প্রোপাগান্ডা এক পদার্থ না তো।

দু: একটু বিশ্লেষণ করবেন?

সা: ধর, প্রোপাগান্ডা জিনিস মাঠের কাজ, আর আইডিওলজি আত্মস্থ করার জিনিস।

দু: বেশ ভাল বলেছেন, আপনার কবিতায় একটা বিশেষ ভাষার দেখা পাওয়া যায়। এই চর্চাটা কেন? বাংলাভাষায় কি আধিপত্যবাদী ভাষার দেখা পাওয়া যায়? এর ধরণটা কেমন?

সা: তাই নাকি? আমি তো অই ভাবে ভাবি নাই। আমি যেই বর্ণমালায় লেখি, সবাই তো সেই বর্ণমালায় লিখেন বা লিখেছেন বা লিখবেন। বাংলাদেশের সংবিধানও তো বাংলা বর্ণমালায় লেখা! এতে তো কোন সমস্যা দেখি না। দেখ, সব ব্যক্তিই তো মানুষ। মানুষ, এটাকে বলা যাবে ব্যক্তিবর্গের সামাজিক নাম। কোন ব্যক্তিকে ‘মানুষ’ নামে ডাকলে তো কেহই সাড়া দিবে না। মানে সব মানুষের আলাদা নাম দিতে হয়। নাম দিলেই তো সেই মানুষ ব্যক্তি অর্থে আত্মপরিচয় লাভ করে। মানে ব্যক্তি নামটাই ব্যক্তির ভাবার্থ হাজির করে। লেখার কাজটাও সেই অর্থে আলাদা নামের অর্থ বহন করে। তাতে নতুন অর্থ লাভ হয়। অনেক নামের ভিতর মানুষ ভাবটা সামাজিক হয়ে ওঠে। হয়ত, আমার কবিতার ভাষা তাই। প্রথাগত কবিতার ভাষার কথা বললে আমার কবিতার ভাষা খানিকটা অ-সামাজিক। এইখানে ‘অ’ ধ্বনি অভাববাচক। যা অভাব তা দেখানোই তো দর্শনের কাজ। নাকি?

আর প্রথাগত সামাজিকতাই একসময় আইনে পরিণত হয়। অন্যকে মানতে বাধ্য করে। এটা তো বল প্রয়োগের সংস্কৃতি। এই বল প্রয়োগের সংস্কৃতিতে মানুষ বাস করে না। তাই সমাজে মানুষ বিদ্রোহ করে। পুরানো আইনের লুপ্তি চায়। ‘আধিপত্যশীল ভাষা’ কি জিনিস সেটা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। যদি বলা হয়, ক্ষমতার প্রশ্নে ভাষার ভূমিকা সেইটা নিয়া বলা যেতে পারে। যেমন, পাক আমলে একসময় ‘উর্দু ভাষা’কে ক্ষমতার ভাষা হিসেবে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তারা চরমভাবে পরাজিত হয়েছিল। আজ বাংলাদেশ আমলে ‘প্রমিত বাংলা’ ভাষাটাকে ‘উর্দুভাষা’র মতন হাজির করতে চাচ্ছেন একদল ক্ষমতাভোগী বুদ্ধিজীবী। বাংলা ভাষা কি ‘প্রমিত বাংলা’? আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, আমাদের সংবিধানের ভাষা ‘সাধু বাংলা’। সেই অর্থে প্রমিত বাংলাকে কওন যায় ‘অসাধু বাংলা’, নাকি? সংবিধানের ভাষা নিয়া তো কোন সমস্যা নাই। কিন্তু প্রমিত ভাষা নিয়া সমস্যা কেন?

একটা জিনিস মনে রাইখো, আধিপত্য দিয়া ‘সত্য’ স্বল্প সময়ের জন্য লুকানো যায় কিন্তু হত্যা করা যায় না। চাপা ইতিহাসকে সত্যের মুখোমুখি খাড়াইতে হয়। আজ না হোক, কাল সেই প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা তারে তাড়া করবেই।

দু: অধিপতিশীল ভাষার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্যই কি আপনি কবিতায় এই ধরণের ভাষার আশ্রয় নিয়েছেন? আপনি কি মনে করেন আপনার এই ভাষা চর্চা অধিপতিশীল ভাষার বিরুদ্ধে আঘাত করছে? যদি করে সেটা কেমন? যদি না করে তাহলে এই চর্চাটা কেন?

সা: তা না! এই রকম ভাইবা আমি কবিতা লিখি নাই। কেমনে জানি কি হইয়া গেল! আহারে আমারই বাংলা ভাষা। বড়ই মধুর। শুধু ভাষার কথা বললে ‘চিন্তা’ নামে যে ভাব সেইটা খাটো হয়। চিন্তা যদি দেহ হয়, ভাষাটা হইল দেহের রক্ত। মানুষ রক্তপাতটা খালি দেখে, কিন্তু দেহটা দেখতে চায় না। দেহ না থাকলে রক্ত জিনিসটাই তো নাই হইয়া আছে। আর রক্ত না থাকলে দেহ তো চলে না। তবে অচল দেহ তো থাকে! খালি ভাষা ভাষা করলে কিন্তু চিন্তার ভাবখানা গায়েব হয়ে যায়। চিন্তাই ভাষার প্রকাশকে চিহ্নিত করে। মানে চিন্তার স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশের ভাবই ভাষা। দেখ না, মানুষ আঘাত করে দেহে কিন্তু দেহ থেকে বেরোয় রক্ত। ফলে চিন্তা রক্তারক্তিটা আগে ঘটে। তারপর বাইরের রক্তপাত দেখা যায়। চিন্তার রক্তারক্তিটাই আমি এইভাবে প্রকাশ করতে ভালবাসি। এইটা খানিক দেহের সমান রক্তের ব্যাপার।

তবে চিন্তাটা দাঁড়ালেই ভাষা তখন বুলেটের মত কাজ করে। তখন কোন কার দিকে তাকাইয়া লেখকের আর ট্রিগার টিপার দরকার নাই। বা কারো কাঁধে বন্দুক রাখার দরকার পড়ে না। আর ভাষা তো পুলিশ না যে সব দেইখা শুইনা রাখবে। আমার কবিতার ভাষাটা ‘অধিপতিশীল’ নাকি ‘দুর্গতিশীল’ আঘাত পেল তা নিয়া চিন্তিত নই। কবিতায় চিন্তা যদি তর্ক তুলতে পারে, পাঠককে নাড়া দেয়, জিজ্ঞাসার মধ্যে ফেলে সেইটা খারাপ হবে কেন? এটা প্রশ্ন আকারে আসুক বা প্রথাগত চিন্তাকে খণ্ডানোর জন্য আসুক সেটা নিয়ে সমাজ কথা বলতে বাধ্য। আমি খালি খালি শান্তির জন্য কবিতা লিখি না। যেইটা নোবেল প্রাইজ আইনা দিবে! এইটা আমার রাজনীতি-দর্শন। সাহিত্য-দর্শনের ইতিহাস নিয়ে আমরা যে অল্প-বিস্তর জানি তা তো, যে কোন চিন্তাশীল লেখা কখনো কোন অধিপতিশীলদের জন্য সুখকর ছিল না। ব্রিটিশ কলোনির দিকে তাকাইলে তো সেটা স্পষ্ট হয়।

দু: অনেকের মতে, আপনি শুধুমাত্র একটা কাব্যশৈলী তৈরির জন্যই এই ভাষার কাজটা করছেন। বা এটা আরোপিত। ঠিক জোর করে আলাদা হবার চেষ্টা। আপনিও কি তাই মনে করেন?

সা: দুপুর মিয়া, তোমার প্রশ্ন খুব বিমূর্ত। মোহাম্মদ কিবরিয়ার ছবির মতো সুন্দর। ‘অনেক কারা’ এইটা তুমি বল নাই। না বলাটাই তো আরোপিত নাকি? কাব্যশৈলী! এইটা খায়, না গায়ে দেয়। আমার মনে হয়, খাইলে খুব একটা সমস্যা হয় না। তবে গায়ে মাখলে সমস্যা হইতে পারে। ছোটবেলায় আমি একবার এইটা খাইছিলাম। আমার আব্বা কবিতাবিরোধী মানুষ ছিলেন। আমার কবিতা রোগ দেইখা একবার বলছিলেন, দেখি তুমি কবিতার মত অনর্গল কথা কাটতে পার কি না? আমি দেখি অনর্গল কথা কাটতে পারি। প্রায় ১৫/২০ মিনিট হবে। আব্বা আশ্চর্য হইয়া কইলেন, তুমি তো এক শব্দ দুইবার একই অর্থে ব্যবহার কর নাই। বাহ্। আব্বা তো নাই আর। তো উনি দুনিয়া ছাড়ার আগমুহূর্তে আমার কবিতার খোঁজ নিছিলেন। মনে হইতেছিল উনি কাব্যশৈলী খাইছেন, গায়ে মাখেন নাই। তো আমি বাংলা ভাষা শিখছিলাম ঠেলায় পড়ে। কারণ বাংলাভাষা আমার দ্বিতীয় মাতৃভাষা। আমার পিতৃভাষা চাটগাঁইয়া আর মাতৃভাষা নোয়াখালির ভাষা। ফলে আমাদের ঘরের ভাষায় অদ্ভুত এক ধরনের ভাষার মিশ্রণ ঘটে যায়। এই মিশ্রণটা প্রকৃতিগত, আরোপিত না। ফলে আমার ভাষাটা অনেকটা চিন্তার শান দেয়া ছুরি। চালাতে জানতে হয়, আনাড়ি হলে নিজের হাত নিজেই কাইটা ফেলার সম্ভাবনা আছে। আরোপ করে ভাষা তৈয়ার করা যায় না। যদি তাই সত্য হতো, প্রায় ২ শত বছরের ব্রিটিশ আর প্রায় দুই যুগের পাক সাম্রাজ্যবাদীদের শাসনের ফলে বাংলা ভাষায় কেউ কথা কহিত না। সেইটা হয় নাই তো।

তবে কাব্যশৈলীরে মাঝে মাঝে পায়ে চাপা ঘাসের মত মনে হয়। পায়ে চাপা খাইবার পরও আলোবাতাস পাইলে মাথা খাড়া কইরা আবার খাড়াইয়া যায়। বাড়তে থাকে আকাশের দিকে। কবিতার অনেক জিনিসের মতন কাব্যশৈলীও কম গুরুত্বের জিনিস না। এইটাকে স্বর বলা যাইতে পারে। কাব্যশৈলীকে খাটো করলে কবিতার একটা অঙ্গ খাটো হয়। একটা জিনিস ঠিক, মুখের ভাষার সাথে লেখার ভাষার সাথে দৈহিক সম্পর্ক আছে। মানে অঙ্গের সাথে অঙ্গের সম্পর্ক। একটা একই দেহের ডান-বামের ব্যাপার আছে। লিখার ভাষা মুখের ভাষার কাছাকাছি হইলে মনে হয় ভাষাটা অনেক দিন বাঁচব। দূরে থাকলে ভাষা পর হইয়া হারাইয়া যাইবে।

দু: কর্পোরেট পালিত বা রাষ্ট্রীয় বুদ্ধিজীবিদের প্রতি আপনার কি কোনও গোস্বা আছে? যদি থাকে তা মোকাবেলা কিভাবে করেন বা আদৌ তার মোকাবেলা করছেন কিনা বা এই মোকাবেলাটা স্পষ্ট কিনা যে সবাই এটা ধরতে পারছে? বা আপনি একেবারে বিরোধিতার কাতারে দাঁড়িয়ে আছেন বলে মনে হচ্ছে?

সা: ‘বুদ্ধিজীবী’ মালটাই সংশয়জনক। সম্ভবত, বাংলাভাষায় উনিশশতক নাগাদ ‘ইন্টেলেক্টচুয়াল’ শব্দ ‘ধুরন্ধর’ অর্থে ব্যবহার হইত। বিংশ শতাব্দীতে আইসা এইটা ‘বুদ্ধিজীবী’ এস্তেমাল হইছে। যদি বলা যাইত মানুষ মাত্র বুদ্ধিজীবী তাইলে কেল্লা ফতে। আর কোন কিছুর দরকার পড়ত না। সমাজে অনেক কিছুর সমাধান এমনে এমনে হইয়া যাইত বোধ হয়। হ, ‘বুদ্ধিজীবী’ নামে কিছু একটা জিনিস সমাজে আছে। তারা কি তারে-বেতারে বেবুনের মত ঝুইলা থাকে? আমার কোন কিছুর উপর গোস্বা নাই। গোস্বা কেন করমু? তুমি যে কইলা ‘কর্পোরেট পালিত বা রাষ্ট্রীয় বুদ্ধিজীবী’ এইটা জিনিস? যদি আমি ভুল না বুঝি তাইলে তোমার এই বুদ্ধিজীবীরে আন্তেনিয় গ্রামসির তকমায় ভাগ করা যাইতে পারে। গ্রামসি সাহেব দুই ধরনের বুদ্ধিজীবীর কথা কইছেন। ট্রেডিশনাল বা পরজীবী আর অর্গানিক বা জাত বুদ্ধিজীবী। তুমি যে ধুরন্ধরের কথা কইলা ওইটা মনে হয় পরজীবী বুদ্ধিজীবী। আমিতো অপরজীবী!

একবার কিন্তু গ্রামসির বুদ্ধিজীবী তকমার বাংলায় অনুবাদ করতে চাইছিলাম এইভাবে- অর্গানিক বা জাত আর ট্রেডিশনাল বা বজ্জাত বুদ্ধিজীবী। সব সময় সব দেশে বজ্জাত বুদ্ধিজীবীরা সংখ্যায় বেশি ছিল। বজ্জাত বুদ্ধিজীবীদের কদরও বেশি। রাষ্ট্র তার যন্ত্রকে সচল রাখতে এইসব ধুরন্ধরদের কাজে লাগায়। এইসব ধুরন্ধরি ব্যবসায় শোষক বা রাষ্ট্রেরই কাজে লাগে, মানুষের কি কামে লাগে তা আমি জানি না। তবে একজন জাত বুদ্ধিজীবী কোন কিছুর তোয়াক্কা করেন না। নিজের স্বাধীন যুক্তিশীল চিন্তাকে কখনো ব্যক্তি স্বার্থে নয়, সামাজিক স্বার্থে কোরবান দেন। এইটা পরিষ্কার লড়াইয়ের জায়গা। লড়াইটা তো মান-অভিমান না যে ‘গোস্বা’ বলে চিহ্নিত করা যাবে। এইটা বরং ইতিহাসে একটা শ্রেণী সংঘাতের ভিতর থিকা উইঠা আসে। নাকি কও?

দু: জাতীয় ভাষা বলে কি কিছু আছে? বা বিদ্যমান বা চর্চিত ভাষার বাইরে জাতীয় ভাষা বলে কোনও কিছুকে কি হাজির করা যায়?

সা: জাতি অর্থে জাতীয় ভাষা আছে। বাঙালি জাতির জাতীয় ভাষা বাংলা ভাষা। চাকমাদের জাতীয় ভাষা চাকমা ভাষা। সাঁওতালিদের জাতীয় ভাষা সাঁওতালি ভাষা। এ রকম আরও জাতিগোষ্ঠী নিয়া ভাবা যাইতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা বাংলা ভাষা। অপর জাতিগোষ্ঠীর ভাষা এইখানে নিষ্পেষিত।

দু: আল মাহমুদ বা আহমদ ছফা কেউ কেউ ত্যাগ করছেন চীন বা বিএনপি পন্থির জায়গা থেকে। আল মাহমুদ বা আহমদ ছফাকে এরকম আওয়ামীলীগ-বিএনপি দ্বন্দ্বে নিয়ে আসাটা কি ঠিক হয়েছে? বা কারা নিয়ে এসেছে? বা এর ফায়দাটা কে নেয়?

সা: কারা এইভাবে ভাবে সেটা আমি জানি না। সবকিছুকে খাট কইরা দেখলে বিপদ আছে। কোন বিশেষ রাজনৈতিক কুঠুরি দিয়া বিচার না করাই ভাল। চরিত্র হিসেবে আমি আল মাহমুদ আর আহমদ ছফাকে আলাদা করে দেখতে চাই। চরিত্রগত দিক দিয়ে আল মাহমুদ দ্যোদুল্যমান স্বভাবের। তবে রাজনৈতিক সুবিধাবাদী মনোভঙ্গি সবকিছুরে আগ্রাসীভাবে গিলা খাইতে চায়। এইটাকে কি কবির স্বভাব কওন যাইব? কিন্তু আহমদ ছফা আলাদা চরিত্রের মনীষী। তার চরিত্রে দ্যোদুলমানতা বিশেষ নাই। উনি যা যুক্তি-দর্শন চিন্তায় যা বিশ্বাস করতেন তাই করতেন। বুদ্ধিজীবী হিসেবে উনি সুবিধাভোগী ছিলেন না। উনি নিজের জন্য কিছু করেন নাই। ছফা বিষয়ে এই ধরনের ভাগাভাগিটা তার চিন্তা আর জীবনের উপর অবিচার করা হবে।

দু: ছফাকে একটা বিশেষ শ্রেণীর বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতায় অনেক বেশি প্রোডাক্ট হয়ে যাচ্ছেন বা একটা বিশেষ বুদ্ধিজীবী গোষ্ঠীর ব্র্যান্ড হয়ে যাচ্ছেন, যার ফলে এই গোষ্ঠীর বাইরে এই প্রোডাক্টটি কেউ নিতে চাচ্ছে না আপনার কি এরকম মনে হয়?

সা: কি সেই বিশেষ শ্রেণী? বিশেষ বুদ্ধিজীবীগোষ্ঠীটা কি? বাংলাদেশের মনুষ্যসমাজ আহমদ ছফাকে এখনো আস্থা করতে পারে নাই। এই ধরনের লোক সমাজে ক্ষণে ক্ষণে জন্মায় না। ওনারে বুঝতে আরও অনেকদিন লাগবে মনে হয়। অনেক রাতও লাগতে পারে। তোমার প্রশ্ন শুইনা মনে হইতেছে, মানুষের বুকের উপর ঘাস গজাইতেছে।