হিজল জোবায়ের, রজত সিকস্তি আর মুহিম সন্ন্যাসীর কবিতা ভালো লাগে: শোয়েব সর্বনামের সাথে অনলাইন আলাপ
Post date: Jun 27, 2012 5:15:25 AM
দুপুর মিত্র: আপনি কেন কবিতা লিখেন?
শোয়েব সর্বনাম: কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকরে একবার জিগাইলাম, সাহিত্য কইরা কি লাভ? উত্তরে তিনি কইলেন, কবিতা শুইনা রাজা যদি খুশি হয়, তাইলে তিনি ফুল ছুইড়া দেন। সেই ফুল টোকাইয়া নিয়া বউরে দেওন যায়। তো, আমার তো কোনো বউ নাই! তাইলে কবিতা লেইখা আমার কী হবে এই ভবে?
যা হোক, কবিতা কেন লেখেন- এই জাতীয় প্রশ্নের কোন সিধা উত্তর কেউ কাউরে দেয় না। কে কেন লেখতে বসে সেটা সে গোপন রাখতে ভালোবাসে, প্রকাশ্যে বানায়া বানায়া কিছু একটা বইলা দেয়। বলে যে, জীবন-সমাজ-সাহিত্য এইসবের উন্নতি ঘটানো মত দায় অনুভব করে তারা তারা। আসলে পাত্তা না দেওয়া মেয়েলোকরে ইমপ্রেস করতে গিয়া কলম হাতে নিছে কিংবা এখনো লেখালেখির ভিতরে আছেন যারা যারা, তারা কি কেউ সত্য কথা বলে?
দু: কবিতা লেখার জন্য একজন কবির কি ধরণের প্রস্তুতি দরকার?
শো: কবিতা লিখতে যে চায়, সে ঠিক করবে কী ধরনের প্রস্তুতি সে নিবে। কে কি ধরনের প্রস্তুতি নিয়া কি করবে, সেই বুদ্ধি আমি দিতে পারি না। সেইটা তারেই ঠিক করতে দেন।
দু: সমসাময়িক কাদের কবিতাকে আপনার ভাল লাগে এবং কেন?
শো: ভালো লাগে হিজল জোবায়ের, রজত সিকস্তি আর মুহিম সন্ন্যাসীর কবিতা। কেন ভালো লাগে, সেইটা কোনো সমালোচক বলতে পারবে, সেই কাম আমার না। আর এই কবিদের অনুকরন কইরাও কবিতা লেখেন কেউ কেউ, তাদের কবিতা খারাপ লাগে।
দু: নব্বই ও শূন্য এই দুই দশককে আপনি খুব কাছে থেকে দেখেছেন। এ বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?
শো: নব্বই বা শুন্য দশক বইলা কিছু ব্যাপার আছে, যেইগুলা সাহিত্য সম্পাদকরা ভালো জানেন। আমার কাছে বিষয়টা এখনো তেমন পরিষ্কার না। পরিষ্কার হইলে পরে কখনো বলবো নে।
দু: পশ্চিমবঙ্গের কবিতা আর বাংলাদেশের কবিতার ফারাকটা কোথায়?
শো: ফারাকটা পরিষ্কার। পশ্চিমবঙ্গঅলারা লিখে পশ্চিমবঙ্গের কবিতা, আর বাংলাদেশের কবিরা লিখে বাংলাদেশের কবিতা। সবার কবিতার মধ্যেই যার যার মাটির গন্ধ টের পাওয়া যায়।
দু: ব্লগ সাহিত্যকে কি বিশেষ কিছু দিচ্ছে?
শো: ব্লগ যেহেতু নতুন একটা মাধ্যম, ফলে এখনি ঠিক মূল্যয়ন করার সময় আসে নাই। এমন কোনো নমুনা আমাদের সামনে নাই যেইটারে দেখাইয়া বলা যাবে যে ব্লগ কইরা কেউ এমন কোনো মহাভারত লেখছেন; বরং ব্লগে যারা যারা জনপ্রিয়তা পাইছেন, তারা সাহিত্যিকের চেয়ে ব্লগার পরিচয় দিতেই বেশি গর্ব অনুভব করে বইলা দেখছি। সাহিত্যের চেয়ে সাংবাদিকতায় ব্লগের ভূমিকা বেশি বইলা এখনও আমার মনে হইতেছে।
দু: লিটলম্যাগের চাইতে ব্লগ গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনার মনে হয় কি? হলে কেন না হলে কেন নয়?
শো: লিটলম্যাগ কোনো মাধ্যম না, এইটা একটা কনসেপ্ট। আর ব্লগ কোন কনসেপ্ট না, একটা মাধ্যম। দুইটা দুই জিনিস। ফলে, একটারে দিয়া আরেকটার উপর গুরুত্ব আরোপ করা অবিবেচকের মত কাজ হবে। বরং, এই দুইটা বিষয় নিয়া আলাদা আলাদা কথা বলা যাইতে পারে।
দু: দৈনিকে সাম্প্রতিক সাহিত্য বিষয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কি? প্রশ্নগুলো পাঠালাম সাক্ষাতকারের অংশ হিসেবে যা পরে ওয়েবম্যাগে প্রকাশিত হবে।
শো: দৈনিক পত্রিকাওলারা সাহিত্যপাতার বাজারমূল্য ধরতে পারছেন। কোনো কোনো সাহিত্যপাতার কারনে ওই কোনো নির্দিষ্ট দিনে ওই পত্রিকার সার্কুলেশন বাড়ে কমে বইলা শুনছি, সত্যি মিথ্যা আল্লায় জানে। কেউ কেউ নাকি দুই টাকা দিয়া খালি সাহিত্য পাতা কিনতে আগ্রহী। সেই বিবেচনা বলা যাইতে পারে, পন্য হিসেবে সাহিত্য দাড়ায়া গেছে এই পত্রিকাওলারাদের কারনে, এইটাই কম কী?