'দুলালদের মতো তরুণদের কাছে পরাজিত হতে কোনও গ্লানি নেই': কবি সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলালের সাথে অনলাইন আলাপ

Post date: May 10, 2012 7:24:45 AM

সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল

লেখক, সাহিত্যিক, নাট্যকার, কবি, ও সাংবাদিক

জন্ম : ৩০ মে ১৯৫৮, শেরপুর স্ত্রী: অপি মাহমুদ। সন্তান: দুই কন্যা অনাদি নিমগ্ন, অর্জিতা মাধুর্য পিতা : আলহাজ্ব মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। মা : সারা শহীদুল্লাহ শিক্ষাগত যোগ্যতা : বি.এ. । প্রকাশিত গ্রন্থ : প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ৫০টি।

সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা : অনুস্বর, ছোটকাগজ, প্রচ্ছদ, সূচিপত্র এবং উপদেষ্টা সম্পাদক: বৈঠা। দুলাল মূলত কবি হলেও শিল্প-সাহিত্যের সব শাখায় বিচরণ করছেন। তাঁর কবিতায় গ্রাম বাংলা থেকে শুরু করে নগরায়ন, নাগরিক জীবন, জীবনের জটিলতা, প্রেম, পরবাস, পরাবাস্তব প্রভৃতি প্রতিফলিত হয়। বর্তমান বাংলা কবিতার মূলধারাকে তিনি শাণিত করছেন, বাঁক ও বিবর্তনে ভূমিকা রাখছেন। সব্যসাচী দুলাল সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় অবদান রাখার জন্য তিনি দেশ-বিদেশ থেকে বেশ কিছু পুরষ্কার পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি সপরিবারে কানাডায় বসবাস করছেন।

পেশা : ছাত্রাবস্থায় দৈনিক ইত্তেফাকের মফস্বল সংবাদদাতা হিসেবে সাংবাদিকতার জীবন শুরু। পরে দেশের বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় কাজ করেন। ১৯৮০ সালে সরকারি চাকরিতে যোগদান। ১৯৯৬-এ খালেদা জিয়ার শাসনামলে (মে. জে. আনোয়ার কবীর তালুকদার কর্তৃক) বাধ্যতামূলক অবসর। তারপর স্বাধীনভাবে লেখালেখি, সম্পাদনা ও প্রকাশনার কাজে মনোনিবেশ। প্রবাসী বাঙালিদের জন্য নিউজ এজেন্সি ‘স্বরব্যঞ্জন’ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রবাস থেকে প্রকাশিত (যুক্তরাষ্ট্র থেকে অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক প্রবাসী, সাপ্তাহিক আমার পক্ষে, মাসিক পরিচয়, সাহিত্য পত্রিকা আকার-ইকার, মাসিক অভিমত; কানাডার থেকে সাপ্তাহিক প্রবাস বাংলা, সাপ্তাহিক ঢাকা পোস্ট, পাক্ষিক দেশ দিগন্ত, মাসিক বাংলাদেশ, সাহিত্য পত্রিকা বাংলা জর্নাল; জাপানের মাসিক মানচিত্র, মাসিক আড্ডা টোকিও, বিবেক বার্তা; অস্ট্রেলিয়ার সাপ্তাহিক স্বদেশ বার্তা প্রভৃতি) পত্রিকার সাথে যুক্ত। টরেন্টো থেকে প্রকাশিত অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক বাংলা রিপোর্টারে প্রধান সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে দৈনিক ইত্তেফাকের কানাডার বিশেষ প্রতিনিধি।

অন্যান্য: বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন, একুশে টিভি, চ্যানেল আইসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে জড়িত। বিটিভির শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘দৃষ্টি ও সৃষ্টি’র উপস্থাপক। তাঁর লেখা বেশকিছু গান ও নাটক বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত নাটকসমূহ সাযযাদ আমিনের কথা, জাকির, সাদিকের জীবন ও সাহিত্য, বৃক্ষ বন্দনা, মুহম্মদ আলির চিঠি, ভালোবাসি ভালোবাসি, ওডারল্যান্ড, শাখা ও শেকড়, বৈশাখী ইত্যাদি। ‘ও ও বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’, ‘এ দেশ আমার মায়ের আরেক নাম’, ‘ঐ পতাকায় তাকিয়ে দেখি আমার মায়ের শ্যামলা মুখ’...সহ বেশ ক’টি জনপ্রিয় গানের রচয়িতা। ‘বর্তমানে কানাডায় ১৯৭১’ নিয়ে গবেষণা করছেন। প্রকাশক: স্বরব্যঞ্জন এবং পাঠশালা।

স্বীকৃতি: প্রবাসে সম্মান ও সংবর্ধনা। ইংরেজি, জাপানি, ডয়েচ, ফ্রান্স, উর্দু, সুইডিশ, হিন্দি ভাষায় তাঁর কবিতা অনুদিত হয়েছে । ভারত-বাংলাদেশের শতাধিক সংকলনে কবিতা-ছড়া-প্রবন্ধ গ্রন্থিত। এছাড়াও বাংলাদেশের স্বধিনতার অকৃত্তিম বন্ধু ওডারল্যান্ড বীরপ্রতীক কে খুজে বের করায় এবং তাকে পুন্সম্মাননা দেয়ার জন্যে তিনি বিশেষ ভাবে সম্মানিত।

পুরষ্কার: সূচিপত্র সাহিত্যপত্রের জন্য তিনবার মুক্তধারা একুশে পুরস্কার ১৯৮৭, ১৯৮৮ এবং ১৯৯২; শিল্প সাহিত্যে শেখ মুজিব গ্রন্থের জন্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র পুরস্কার ১৯৯৭, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু পদক ১৯৯৬ ; জাপান থেকে বিবেক সাহিত্য পুরষ্কার ২০০৫, পশ্চিমবঙ্গ থেকে কাব্যশ্রী খেতাব ১৯৭৭ এবং মাইকেল মধুসূদন পদক ২০০৫ সালে। সূত্র: উইকিপিডিয়া

এই মাসের ৩০ তারিখে তাঁর জন্মদিন। জন্মদিনে তাঁকে অগ্রিম শুভেচ্ছা।

দুপুর মিত্র: দেশের বাইরে যাবার পর বাংলাদেশের কবিতা চর্চার কোন জায়গাগুলোকে বড় দুর্বলতা হিসেবে চোখে পড়েছে?

সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল: (প্রথমেই বলে নেই, দুর্বলতা কিন্তু ভাল বিষয়। যদিও ‘দুর্বলতা’কে নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপনা করা হয়। ইতিবাচকের একটি উদাহরণ দিই, মেয়েটি ছেলেটির প্রতি খুবই দুর্বল। তার মানে, ভালোবাসা-অনুরাগ-আকর্ষণ ইত্যাদি। কিন্তু আমরা ‘দুর্বলতা’ সেভাবে দেখি না। হা হা হা...)

*বাংলাদেশের কবিতার দুর্বলতার বড়-ছোট কোনও দিকই আলাদা ভাবে ভেবে দেখনি। তবে এ মুহূর্তে মনে পড়ছে, আমাদের কবিতা দুর্বলতার দিক-

(ক) আরোপিত আবেগ,

(খ) স্বতঃফুর্ততার চেয়ে সাজানো কবিতা,

(গ) কবিতায় ‘গ্রাম্যতা’,

(ঘ) পরীক্ষা-নিরীক্ষার সংকট,

(ঙ) কবিদের নানান সীমাবদ্ধতা,

(চ) কবিতার ভেতরের নান্দনিক সৌন্দর্য চর্চা নির্মাণের চেয়ে বাইরের ‘শো’টা বেশি,

(ছ) প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে সাহিত্য তথা কবিতা বিষয়ে যা পড়ানো হয়, তা যথার্থ নয়,

(জ) আর আমাদের অগ্রজ বুড়ো কবিদের ভীমরতিধর্মী ‘কবিতা’ও বাংলা কবিতাকে দুর্বল করে দিচ্ছে।

আমি সংক্ষেপে সাত-আটটি পয়েন্ট উল্লেখ করলাম। প্রত্যেকটি পয়েন্ট নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার দাবি রাখে। তবে সার্বিক ভাবে বাংলাদেশের কবিতা পশ্চিমবঙ্গের কবিতার চেয়েও ‘সবল’ এবং বিশ্ব কবিতার চেয়ে ‘দুর্বল’ না বলে আমার মনে করি। উপরে উল্লেখিত বিষয়সমূহ প্রশ্নের খাতিরে বলা হলেও তা গুরত্বপূর্ণ।

দু: বাংলাদেশে কবিতা চর্চার সাম্প্রতিক প্রবণতাগুলো কোনগুলো এবং সেসব আপনি কিভাবে দেখেন?

সা: (তোমার এ প্রশ্ন তো রীতি মতো বাংলা সাহিত্যের পরীক্ষার মতো। আর আমিও বাংলা সাহিত্যের লেখক হলেও বাংলা সাহিত্যের ছাত্র না। পাঠকমাত্র। আর নেতিবাচক ও ইতিবাচক প্রশ্নে ‘প্রবণতা’য় উল্টোটা ঘটেছে। তাই মজাই পেলাম...)

*বাংলাদেশে কবিতা চর্চার সাম্প্রতিক এবং সমকালীন প্রবণতা সম্পর্কে তাত্ত্বিক আলোচনায় যাচ্ছি না। শুধু আমার পয়েন্টগুলো বলছি-

(ক) ভালো কবিতা লেখার চেয়ে, বেশি কবিতা লেখা এবং প্রচারের প্রবণতা,

(খ) কবিতায় অযথা বা অ-প্রয়োজনে একটি অর্থহীন শব্দ বা দুর্বোধ্য বাক্য ‘ঢুকিয়ে’ দেওয়া, এটা অবশ্য তরুণ কবিদের ক্ষেত্রেই বেশি লক্ষণীয়,

(গ) কবিতায় চর্বিতচর্বণ বা পুনরাবৃত্তি থেকে কিছুটা মুক্ত হলেও উত্তারাধুনিকতার নামে জটিলতা তৈরি,

(ঘ) কবিতার ভালো-মন্দ সঠিক সমালোচনার চেয়ে, (বন্ধুত্বপ্রীতির জন্য) বাজে কবিতাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে ‘ভালো-কবিতা’ বানানোর প্রবণতাও সাম্প্রতিক কবিতা চর্চার অংশ বলে আমি মনে করি,

(ঙ) আমাদের সাহিত্য সম্পাদকেরা এই প্রবণতাগুলো রোধে অনেক ভূমিকা নিতে পারেন। কিন্তু তা না করে বরং তাঁদের পাতায় প্রবণতাগুলোর ‘উর্বর খামারে’ পরিণত করছেন।

দু: আপনাদের সময়কার কবিবন্ধুদের ব্যাপারে আপনি কিছু বলতে চান?

সা: (বাংলা কবিতার কথা বললে উভয় বাংলার কবিতার কথাই চলে আসে। কলকাতার বন্ধুদের কথা থাক। প্রকৃত পক্ষে আমার বন্ধুর সংখ্যা প্রায় শূন্য বলাই ভালো। যাঁরা আছেন, তাঁরা আমার সতীর্থ না; সহযাত্রী। তাঁদের মধ্যে রুদ্র, নাসিমা, ত্রিদিব, সৈয়দ হায়দার, আবিদ আজাদেরা চলে গেছেন। অথচ তাঁরা কেউ কেউ আমার হৃদয়ে সজীব হয়ে আছে। আমার যাঁরা এখনও বেঁচে আছেন, তাঁরা আমার হৃদয়ে ‘মৃত’। এটা অত্যন্ত অপ্রিয় সত্য কথা।)

আসলে আমার সহযাত্রী কবিরা অনেকেই (এমন কী তরুণেরাও) আমার চেয়েও ভাল কবিতা লিখেন। আমি তাঁদের অপছন্দ করলেও তাঁদের কবিতার ভক্ত। আবার উল্টোটাও আছে, কেউ কেউ ভাল কবিতা না লিখলেও ব্যক্তিগত ভাবে তাঁরা খুবই গুণী এবং ভাল মানুষ। আমি তাঁদেরকে সম্মান করি।

দু: আপনার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২০টির উপরে। প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে কোন বইটি সবাইকে পড়তে বলতে ইচ্ছুক এবং কেন?

সা: (যদিও গ্রন্থসংখ্যার বিচারে লেখদের মূল্যায়ন করা অনুচিত। তারপরও বলছি, আমাকে এতো লেখক ভেবে বইয়ের সংখ্যা কম উল্লেখ করলে কেন, মিত্র বাবু? আমার বই কুঁড়ির দ্বিগুণ। গদ্য, গবেষণা, গল্প, নাটক, সম্পাদনা ব্যতীত কবিতার বই- ১৭টি, (অনেক বেশি)। আপনি আমার কোনও বই কী পড়েছেন?)

হয়তো দীর্ঘদিন কবিতা লেখার কারণে আমার অনেক অজানা প্রিয় পাঠক আছেন। আমি নানাভাবে তা টের পাই। কিন্তু আমি কখনও কাউকে জোর করে আমার কবিতা পড়তে দেই নি। যারা পড়বেন, তাঁরা সদিচ্ছায় স্বতঃফুর্তভাবে পড়েন। তাই, কবিতার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনও উল্লেখ করা আমি সঠিক মনে করি না। কারণ, কোন প্রেক্ষাপটে কার কাছে কোন কবিতা ভাল লেগে যায়, তা বলা কঠিন। তবে শহরের শেষ বাড়ি, ঐক্যের বিপক্ষে একা, একী কাণ্ড পাতা নেই, নির্জনে কেন এতো কোলাহল, নিদ্রার ভেতর জেগে থাকা, ঘৃণিত গৌরব বইগুলোতে আমি আমার মতো করে নতুন এবং নিরীক্ষামূলক কিছু কবিতা লিখেছি।

আমার গদ্য-গবেষণা আর সম্পাদনার বইগুলোর প্রতি আমি ‘দুর্বল’। যেমন- শিল্প সাহিত্যে শেখ মুজিব, কানাডায় যাবেন কেন যাবেন, বিভিন্ন ভাষায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা, মুক্তিযুদ্ধ : বিভিন্ন ভাষায় নির্বাচিত কবিতা এ সব বইগুলো শুধু পড়ার জন্যই নয়; সংগ্রহ করার মতো বই বলে আমি মনে করি। আর আমি এখন ‘কানাডায় ১৯৭১’ নিয়ে যে গবেষণার কাজ করছি, এই বইটি ঐতিহাসিক কারণে পড়তে অনুরোধ করো।

দু: আপনি আদিবাসীদের ভাষা নিয়ে কাজ করেছেন। বাংলা কবিতায় যে হারে ইউরোপীয় মিথ ঢুকেছে, সে হারে লোকায়ত মিথ বা আদিবাসীদের মিথ দেখা যায় না। এর কারণ কি হতে পারে?

সা: (আদিবাসীরা আদি হলেও তাঁরা সংখ্যালঘু। আমি নিজেও নানা কারণে তাদের মতোই ‘সংখ্যালঘু’। সংখ্যাগরিষ্ঠতাদের অনেক কার্যকলাপ আমি পছন্দ করি না। তাঁরা সংখ্যালঘুদের প্রজা ভেবে নিজেদেরকে ‘রাজা’ মনে করেন। আর ‘মিথ’ নিয়ে তো এবারের বইমেলায় ওবায়েদ আকাশ তাঁর শালুকের বিশাল বিশেষ সংখ্যা করেছেন। সেটি পড়লে ৮০% মার্ক উঠত। এখন টাইন্যা-মাইন্যা ৩৩ পাবো কিনা সন্দেহ)

হ্যাঁ, বাংলা ভাষার জন্যই আজ ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে’র স্বীকৃতি এসেছে। অথচ বাতির নিচেই অন্ধকার। আমাদের বাংলাদেশেই যথার্থ স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত আদিবাসীদের ভাষা। তাই আমি তাঁদের বর্ণমালা পশিচমবঙ্গ এবং আমাদের পার্বত্যাঞ্চল থেকে বহু কষ্টে জোগাড় করছি। বিটিভিতে কয়েকটি অনুষ্ঠান ও একটি নাটক লিখেছি। কিন্তু কাজটি শেষ না করেই বিদেশে চলে যাই। সেখানেও কানাডিয়ান আদিবাসী ‘রেড ইন্ডিয়ান’দের নিয়ে কাজ করি, সেটাও অসমাপ্ত।

‘বাংলা কবিতায় যে হারে ইউরোপীয় মিথ ঢুকেছে’ বা অনুপ্রবেশ করেছে, সেটা তো ভাল দিক। আন্তর্জাতিকতার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের আবহমান হাজার বছরের ঐতিহ্য (এখানে আদিবাসীদেরও আমাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ) লোকায়ত মিথ নিয়ে উন্নত বিশ্বের গবেষকেরা আগ্রহের শেষ নেই। বাংলা কবিতায় আমাদের লোকজ মিথ বা আদিবাসীদের মিথ আস্তে-ধীরে মর্যাদা পাবে বলে আমার বিশ্বাস।।

আর কারণ হচ্ছে- এ ব্যাপারে কবিদের অসচেতনতা। সচেতনতা বাড়ালে বাংলা কবিতা আরও সমৃদ্ধ হবে; তবে আরোপিত ভাবে নয়।

দু: নতুন কবিদের কোন জায়গাগুলোকে সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হিসেবে দেখেন, কেন এবং তাদের জন্য আপনি কিছু বলতে চান?

সা: (আমি তরুণ ‘কবিবন্ধু’দের ভয় পাই এবং তাঁদের তারুণ্যকে সব সময় স্যালুট করি। প্রথমত তাঁরা অনেকেই মেধাবী, প্রতিভাবান। দ্বিতীয়ত, আবার কেউ কেউ উদ্যত, বেয়াদব। তৃতীয়ত, তাঁদের সাথে আমাদের সময়ের একটা দূরত্ব আছে। আমরা এনালগে আর ওরা এখন ডিজিটালে। যা প্রজন্মের বিভাজন। তাই আমি তাঁদের ‘বড় দুর্বলতা’ তো দূরের কথা, ‘ক্ষুদ্র দুর্বলতা' নিয়ে বলার সাহস পাই না।)

সৈয়দ আলী আহসান ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮৫-এ আমার আর নাসিমা সুলতানার যৌথ কাব্যগ্রন্থ ‘তবু কেউ কারো নই’এর প্রকাশনা উসবে বলেছিলেন, “দুলালদের মতো তরুণদের কাছে পরাজিত হতে কোনও গ্লানি নেই। কারণ, এরাই শিল্প-সাহিত্যকে প্রবহমান ধারায় অতীত থেকে ভবিষ্যতের দিকে, সুন্দর ও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়”। আমি সেই কথাই বিশ্বাস করি।

saifullahdulal@gmail.com