লেখকদের প্রধান শর্ত তারে মানবিক হইতে হবে: মুরাদুল ইসলামের সাথে অনলাইন আলাপ

Post date: Jan 5, 2014 4:58:40 AM

প্রকাশিত অনুবাদ: দ্য কিউরিয়াস ইনসিডেন্ট অব দ্য ডগ ইন দ্য নাইট টাইম – মার্ক হ্যাডন (আদী প্রকাশনি)

প্রকাশিতব্য গল্প সংকলণ: মার্চ করে চলে যাওয়া একদল কাঠবিড়ালী- সৃষ্টিসুখ প্রকাশন (কলকাতা বইমেলা ২০১৪)

দুপুর মিত্র: আপনি কবে থেকে লেখালেখি শুরু করেছেন?

মুরাদুল ইসলাম : ২০০৯ এর দিকে। ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমেই শুরু হয়। দুয়েকটা গল্প লেখছিলাম। ভাবলাম এইগুলা প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু জায়গা তো নাই। সেই সময়ে আমার এক বন্ধু আলিম আল রাজি ব্লগের লিংক দিয়া বলল এইখানে লেখ। সেই থেকে ব্লগে লেখতেছি। তারপর অনলাইন সাহিত্য পত্রিকা গুলাতে। “সময়ের ধ্বনি” নামে একটা অনলাইন পত্রিকায় লেখা দিছিলাম প্রথম। এরপর “নতুনদেশে” অনুগল্প লেখছি। “সৃষ্টিতে” লেখছি। আরো অনেক যাদের নাম মনে নেই। এদের কথা বললাম কারণ এদের কাছে কৃতজ্ঞ আমি। এরা যখন আমার লেখা প্রকাশ করছিল হয়ত আমার লেখা তখন খুব একটা ভালো ছিল না, কিন্তু আমি অনেক অনেক অনুপ্রেরণা পাইছি। যা একেবারে অসাধারণ পর্যায়ের।

দুপুর মিত্র: আপনার সবচেয়ে সফল কাজ কোনটা?

মুরাদুল ইসলাম : সবচেয়ে সফল বলে কোন কাজ নাই। তবে প্রথমদিকের লেখাগুলোকে আমি ফালতু মনে করি। তারপর “রাস্তার পাশের ছবিটিকে কেন্দ্র করে একটি গল্প” নামের গল্প থেকেই মূলত আমি মনে করি আমার মূল গল্পগুলো লেখা শুরু হয়। এই গল্পে আসার পর একটা পথ দেখতে পাইছি। যেইটারে মনে হইছে আমার নিজস্ব পথ। আমি এইরকম গল্প লেখতেই পছন্দ করি।

দুপুর মিত্র: উপন্যাস লেখায় আপনি সুনির্দিষ্টভাবে কোন সমস্যায় বেশি পড়েন?

মুরাদুল ইসলাম : উপন্যাস লেখি নাই এখনো। তবে মনে হয় উপন্যাসের ক্ষেত্রে ধৈর্য্য, রিসার্চ ইত্যাদি দরকার হতে পারে যা গল্পের ক্ষেত্রে সাধারণত হয় না।

দুপুর মিত্র: লেখার সময় আপনি কি শিডিউল করেন?

মুরাদুল ইসলাম : না। আমার কোন কিছুর নির্দিষ্ট কইরা কোন শিডিউল থাকে না, লেখার ও নাই। যখন ভালো লাগে লেখি। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ গল্প লেখা হইছে সন্ধ্যারাতে বা শেষরাতে।

দুপুর মিত্র: আপনি কি কম্পিউটারে লিখেন?

মুরাদুল ইসলাম : হ্যা। কম্পিউটারে লেখি।

দুপুর মিত্র: গল্প আর উপন্যাসের ভেতর আপনার পছন্দ কোনটাতে বেশি?

মুরাদুল ইসলাম : এখন গল্প বেশি ভালো লাগতেছে লেখার ক্ষেত্রে। পড়ার ক্ষেত্রে গল্প উপন্যাস এইসব আলাদা কইরা পড়ি না। যেইটা ভালো লাগে সেইটাই পড়ি। তবে ইট সাইজের উপন্যাস পড়া শুরু করার আগে একটু ভয় লাগে।

দুপুর মিত্র: উপন্যাস লেখার সাথে ধৈর্য্যের সম্পর্ক আছে কি?

মুরাদুল ইসলাম : অবশ্যই ধৈর্য্যের সম্পর্ক আছে। ধৈর্য না থাকলে বসে থাকা যাবে না। বসে না থাকতে পারলে লেখা কষ্টসাধ্য। তবে মূল ব্যাপার, কাজটা যদি আপনি ভালোবাসেন তাইলে পরিশ্রম রে পরিশ্রম মনে হয়। ধৈর্য্য ধইরা আপনে কষ্ট কইরা যাইতেছেন এই বোধ রে ভিতরের অনুপ্রেরণা কাটাইয়া দিবে। তখন অনুপ্রেরণা জয়যুক্ত হবে আর আপনি সেই গতিতেই কাজ কইরা যাইবেন।

দুপুর মিত্র: লেখার আগে কি আপনি আউটলাইন করেন?

মুরাদুল ইসলাম : সেরকম আউটলাইন করি না। তবে একটা মূল লাইন থাকে। যেটারে বলা যায় গল্পের সারকথা। গল্প ঐ সারকথা ধইরা আগায়। যেমন, আমার গল্পগুলার মধ্যে একটা “পাখিদের সাথে নুরুন্নবীর ঘুমের নিশ্চয়ই কোন সম্পর্ক আছে” । এই গল্পে একটা পাখি আছে । সেই পাখিটা আসলে সত্যি একদিন আমার ঘরে ঢুকে গেছিল এবং অনেক কষ্ঠে তারে বের করতে হয়। সে ছিল একটা দোয়েল পাখি। এই গল্পের ক্ষেত্রে যেই মূল লাইনটা ধইরা আমি আগাইছি তা হইল – একটা দোয়েল পাখি, যে নুরুন্নবীর ঘরে ঢুকছে এবং তারে বের করা যাইতেছে না।

এরকম কাঠবিড়ালীর গল্পে কাঠবিড়ালীরা আমার বাসার কাছের গাছ গুলাতে থাকে। প্রায়ই এদের লাফাইতে দেখি আমি।

ল্যাম্পপোস্টের গল্পের ল্যাম্প পোস্ট রে আমার জানালা দিয়া দেখা যায় এবং সে একা একা রাত জাগে। তারে শেষ রাইতে নিঃসঙ্গ মনে হয়।

আব্দুল করিম বিষয়ক একটি গল্পের আব্দুল করিম যে গোরস্তানের পাশ দিয়া যায় সেই গোরস্তানের পাশ দিয়া আমি প্রায়ই যাই।

নগরকাকের গল্পের কাকরে আমি একদিন পড়ন্ত বিকালে সিলেটের শাহজালাল(র) এর মাজারে মিনারে নিচের দিকে তাকাইয়া বইসা থাকতে দেখছিলাম।

এই গল্পগুলা আমার প্রথম গল্প সংকলণ “মার্চ করে চলে যাওয়া একদল কাঠবিড়ালী” যেইটা কলকাতা বইমেলা ২০১৪ তে প্রকাশ হইতেছে তার মধ্যে আছে। এই গল্পগুলোর কথা বললাম এইটা বুঝাইতে যে আউটলাইন না থাকলেও একটা মূল লাইন থাকে। যেইটা গল্পের উৎস।

দুপুর মিত্র: আপনার গদ্যশৈলী কি আলাদা?

মুরাদুল ইসলাম : আমি তো আমার মত লেখতেছি। আলাদা হওয়ার কথা যদি না এইরকম কোন এক কালে অন্য কেউ একজন লেইখা গিয়া থাকেন।

দুপুর মিত্র: কিভাবে এটা আলাদা?

মুরাদুল ইসলাম : কিভাবে আলাদা এই প্রশ্নের উত্তরে উপরের কথাই বলা যায়। আমি আমার নিজের মত লেখতেছি। এইখানে আমার অজান্তে কারো কিছু কিছু প্রভাব পইড়া থাকতেও পারে। যারা পড়বেন তারা ভাল বুঝতে পারবেন আসলে আলাদা কি না, আর আলাদা হইলে কীরকম বা কতখানি আলাদা।

দুপুর মিত্র: নিজের কোন কাজটির জন্য খুব তৃপ্ত বোধ করেন?

মুরাদুল ইসলাম : কোন কাজের জন্যই তৃপ্ত বোধ করি না। আমি এখনো কিছুই লেখতে পারি নাই। একটা পুকুরের লগে তুলনা দেয়া যাইতে পারে। আমার লক্ষ্য এর নিচে যাওয়া। ডুব দিয়া মাটি আনা। কিন্তু আমি এখনো পানির উপরের দিকটাতেই আছি । ডুব দেয়াই শিখি নাই।

দুপুর মিত্র: আপনি কি বিশেষ কোনও পাঠককে সামনে রেখে লিখেন না বিশেষ অডিয়েন্সকে?

মুরাদুল ইসলাম : বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেরকম বিশেষ কোন পাঠক বা অডিয়েন্স কে সামনে রেখে লেখি না। গল্পের প্লট পাইলে যদি লেখতে ইচ্ছা হয় তখন লেখি।

দুপুর মিত্র: সাহিত্যের কি সামাজিক বাধ্যবাধকতা আছে?

মুরাদুল ইসলাম : সাহিত্য তো সমাজ থেকে আসছে। বাধ্যবাধকতা বলতে যদি সমাজের মানুষের প্রতি দায় দায়িত্ব বুঝায় তাইলে তা থাকবে না কেন! আপনার দেশে ককটেল ফুইটা বা ভবন ধ্বসে মানুষ মরতেছে আর আপনে গা বাঁচাইয়া ফুল পাখি আর জ্যোস্না নিয়া উৎকৃষ্ট শিল্প বানাইবেন এইটা হয় না। লেখকদের প্রধান শর্ত তারে মানবিক হইতে হবে। মানবিক হইলে সামাজিক দায় টা আসবে। তবে এই সামাজিক বাধ্যবাধকতা বলতে যদি বুঝায় সমাজের বেঁধে দেয়া নির্দিষ্ট শেপের ভিতরে থাকতে হবে, সমাজের যেই নীতি আছে সেগুলার ভিতরে থাকতে হবে তাইলে বলা যায় এমন কোন বাধ্যবাধকতা নাই। বরং এইটা স্বাধীন সাহিত্য সৃষ্টির অন্তরায়।

দুপুর মিত্র: এ নিয়ে আপনার ভাবনা কি?

মুরাদুল ইসলাম : এ নিয়ে ভাবনা হইল লেখকেরা আলাদা কোন প্রজাতি না। আমি একবার একটা আঞ্চলিক পত্রিকায় দেখছিলাম চল্লিশটা পঞ্চাশ টা নাম আর সবার আগে কবি লাগানো। কবি অমুক কবি তমুক ইত্যাদি ইত্যাদি। এইটা হাস্যকর লাগছিল। আমার কাছে তখন মনে হইছিল “মোল্লা” টাইটেল যেমন লাগায় তেমনি কবি লাগানো হইছে। আলাদা প্রজাতি যেন। যেন আমাদের এইখানে একটা গাছ আছে। সেইখান থেকে কবি জন্মে। জন্মের পর তার নাম হয় “কবি অমুক”!

এই কবি দিয়া অনেকেই নিজেদের আলাদা করতে চায়- আলাদা প্রমাণ করতে চায়। চূড়ান্ত বাজে চিন্তা এসব।

জ্যোস্নার চশমা চক্ষে দিয়া যারা লেখেন আমি সেই দলে নাই। গল্পে বা লেখায় সমাজ থাকবে, মানুষ থাকবে, তাইলে এইসবের হাত ধইরা আসতে পারে সমাজ বিপ্লবের কথা, শোষন বঞ্চনার কথা। অথবা শহীদুল জহিরের কাটা গল্পের মত সাম্প্রদায়িকতার চিত্র। তবে জোর কইরা এসব ঢুকাইতে হবে এরকম না। স্বাভাবিকভাবেই আসবে।

আর সমাজের নির্দিষ্ট শেপ বা নীতির বাইরে যাওয়া যাবে না এরকম বাধ্যবাধকতা হইলে তো হাত পা বেঁধে দেয়া হইল। এই অবস্থায় আর কি সাহিত্য হইবে!

দুপুর মিত্র: আপনার লেখার কক্ষ নিয়ে কিছু বলুন?

মুরাদুল ইসলাম : লেখার কক্ষ তো সাধারণ রুম যেইখানে একটা কম্পিউটার, বুক শেলফ ,বই ইত্যাদি আছে।

দুপুর মিত্র: আপনি কি বেশি পড়া পছন্দ করেন?

মুরাদুল ইসলাম : খুব বেশি না। তবে পড়তে পছন্দ করি। বেশিরভাগ প্রবন্ধ টাইপ লেখা, ইতিহাস, রাজনীতি, কবিতা এইসব। অনলাইনেই পড়া হয় বেশি।

দুপুর মিত্র: আপনি কি গল্প খুব দ্রুত শেষ করতে পছন্দ করেন?

মুরাদুল ইসলাম : সময় ঠিক করে তো লেখি না। তাই যতক্ষণ আমার মনে হয় গল্প শেষ হয় নাই ততক্ষণ লেখি। আমি একবারেই গল্প লেখি। আর পরে এডিট ও করি না তেমন। এই পর্যন্ত “চিত্রশিল্পী” নামের একটা গল্প খুব বড় এডিট করছি লেখার কিছুদিন পরে। এছাড়া আর কোন লেখা তেমন এডিট করি নাই। সেই জন্যে প্রথম লেখাই যেহেতু শেষ লেখা তাই তাড়াহুড়া থাকে না বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। তবে অনেকসময় যে তাড়াহুড়া হয় না তা বলছি না। পরিস্থিতির উপর অনেকটাই নির্ভর করে।

দুপুর মিত্র: উপন্যাস লিখতে আপনি সাধারণত কতটুকু সময় নেন?

মুরাদুল ইসলাম : আমি লেখি নাই। যদি লেখি তবে সময় নিয়েই লেখব। অন্তত এক বছর। উপন্যাস তো বড় পরিসরের লেখা। এতে সময় দেয়া এবং গবেষনার প্রয়োজন আছে।

দুপুর মিত্র: আপনি সাধারণত কোনও গল্প বা উপন্যাসের কিভাবে শুরু করতে জোর দেন? চরিত্র না বাক্যকে? না কোনও ডায়ালগকে?

মুরাদুল ইসলাম : সাধারণ একটা ধারণা আছে শুরুর লাইনটা হইতে হবে আগ্রহউদ্দীপক। যেমন – “পুতুল নাচের ইতিকথায় মানিক বন্দোপাধ্যায়ের “খালের ধারে প্রকান্ড বটগাছের গুড়িতে ঠেস দিয়া হারু ঘোষ দাঁড়াইয়া ছিল। আকাশের দেবতা সেইখানে তাহার দিকে চাহিয়া কটাক্ষ করিলেন।”

তারাশঙ্করের কবি তে – “শুধু দস্তুরমত একটা বিস্ময়কর ঘটনাই নয়, রীতিমত এক সংঘটন। চোর ডাকাত বংশের ছেলে হঠাৎ কবি হইয়া গেল।”

তো এইরকম ভালো লাগে বলে আমার গল্পেও এইরকম দেখবেন আপনে অনেকসময় - “শামসোজ্জোহা বাসায় এসেই খবর পেয়েছে তার স্ত্রী ও কন্যা একসাথে কাক হয়ে উড়ে গেছে”। (নগরকাকের গল্প)

গল্পের বা উপন্যাসের ক্ষেত্রে এই ধারাটা চমৎকার। এইটা আমার ভালো লাগে।

চরিত্র না বাক্যকে এইরকম সঠিক আসলে বলা যায় না। কখনো দেখা যায় বাক্য দিয়া আবার কখনো চরিত্র দিয়া বা চরিত্রের কোন বিশেষ দিক দিয়া শুরু করতে ভালো লাগে। লেখার ক্ষেত্রে ডায়লগ দিয়া শুরু করা ভালো লাগে না। তবে পড়ার ক্ষেত্রে এইটা কোন প্রভাব ফেলে না। এই ক্ষেত্রে আহমদ ছফার একজন আলী কেনানের উত্থান পতন উপন্যাসের কথা বলা যায় – যেইটা আমার ভালো লাগছিল। শুরু হইছে এরকম –

“দে তর বাপরে একটা ট্যাহা”

দুপুর মিত্র: লেখে ফেলার পর কি আপনার কখনও এমন হয়েছে যে পুরো লেখাই মানে গল্প বা উপন্যাসকে আপনাকে নতুন করে লিখতে হয়েছে?

মুরাদুল ইসলাম : না। এরকম হয় নি। এর কারণ হয়ত আমি অনেক কম লেখছি। একটামাত্র গল্পের বেশকিছু এডিট করতে হইছে। তবে লেখার কিছুদিন পর অনেক লেখারেই মনে হইছে এগুলা ফালতু। যেগুলা ফালতু মনে হয় সেগুলা এডিটঅযোগ্য। তাই নতুন করে লেখি নাই আর ওইগুলারে।

দুপুর মিত্র: লেখার আগে আপনি কি সমাপ্তি ঠিক করে রাখেন? আপনি শেষ পৃষ্ঠা লেখার আগেই কিভাবে গল্প বা উপন্যাসের শেষটা ঠিক করেন?

মুরাদুল ইসলাম : অনেকসময় রাখি। অনেকসময় রাখি না। তবে রাখলেও সেটা থাকে এক লাইনের মত। কিন্তু সেই শেষ জায়গায় যাইতে যে পথ ব্যবহার করতে হয় তা গল্প লেখতে লেখতেই আসে। পুরোপুরি প্ল্যান করে , কীভাবে শেষ হবে, কিভাবে আগাবে – এতসব ভেবে গল্প লেখা এখনো হয় নাই। তবে এটারে আমি খারাপ মনে করি না। হয়ত সামনে যদি আরো লেখি তাইলে প্ল্যান কইরা লেখব কখনো।

একটা গল্প লেখছিলাম ডিমবৃষ্টি নামের। ওইটার পুরাটাই ঠিক করতে হইছিল কারন গাড়িতে ছিলাম তখন। রাস্তার পাশে দেখলাম ডিমভর্তি একটা ট্রাক উল্টায়া খাদে পইড়া আছে। ছোট ছোট বাচ্চারা পানিতে নাইমা ডুব দিয়া ডিম খুইজা বাড়ি নিয়া যাইতেছে। রাস্তায় পইড়া আছে অনেক ভাঙা ডিম। এইটা দেইখা ডিমবৃষ্টি সেইখানে বইসা বইসাই সাজাইতে হইছিল। তখন লেখার সুযোগ আছিল না তাই।

দুপুর মিত্র: লেখালেখিকে কি সংগ্রাম মনে হয় আপনার?

মুরাদুল ইসলাম : জীবনযাপন করাও তো একধরনের সংগ্রাম – যেইটার গালভরা নাম জীবনসংগ্রাম। মানবসভ্যতার ইতিহাসই হইতেছে সংগ্রামের ইতিহাস। সেই ক্ষেত্রে লেখালেখি ক্যান হইবে না। ভালো লেখতে হইলে পরিশ্রম করতে হইবে তো। হেমিংওয়ের একটা কথা আছে না, ফ্লবার্টের মত ডিসিপ্লিনড আর কিপলিং এর মত প্রতিভা থাকতে হইবে...আরো কি কি যেন। তার কথাটা অনেক ভালো লাগছে। আর শিল্পের ক্ষেত্রে সাধনা দরকার আছে। এই সাধনারে বলা যায় এক ধরনের মহৎ সংগ্রাম।

[First, there must be talent, much talent. Talent such as Kipling had. Then there must be discipline. The discipline of Flaubert. Then there must be the conception of what it can be and an absolute conscience as unchanging as the standard meter in Paris, to prevent faking. Then the writer must be intelligent and disinterested and above all he must survive. Try to get all these things in one person and have him come through all the influences that press on a writer. The hardest thing, because time is so short, is for him to survive and get his work done.” - Ernest Hemingway (Book Ernest Hemingway on writing).]

দুপুর মিত্র: লেখার পর আপনি সাধারণত কোন বন্ধুর সাথে শেয়ার করেন?

মুরাদুল ইসলাম : ব্লগে শেয়ার করি প্রায়ই। ধন্যবাদ।