আমাদের চিন্তা ঘোরপাক খায় প্রেমিকার 'ব্রা'-র রং কিংবা 'বউয়ের ঠোঁটের লিপিষ্টিক' দেখে: মোর্শেদ শেখের সাথে অনলাইন আলাপ ও তার গল্প

Post date: Jul 13, 2012 2:50:51 PM

দুপুর মিত্র: বর্তমান সময়ে লেখকরা খুব বেশি দিন ভাল লেখা উপহার দিচ্ছেন না কেন?

মোর্শেদ শেখ: একজন আমি যতই দূরে থেকে ইণ্ডভিজ্যিুয়াল হতে চাই না কেন মূলতঃ কোন ভাবেই আমি কালেক্টিভ থেকে সরে যেতে পারি না। কেননা আসলে সব কিছুই নির্ভর করে বিশ্ব পরিস্থিতির উপর। যা বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতরি সাথে সম্পর্কিত। মুক্তবাজার র্অথনীতির এই সময়ে কিছু মৌলিক মূল দ্বন্দ্ব আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়, আমরা সেগেলো বুঝি বা না বুঝি কিংবা সচেতন ভাবে এড়িয়ে যাই। যেমন:

১. পুঁজিবাদী দেশগুলোতে শ্রম ও পুঁজির দ্বন্দ্ব।

২. বাজার ও প্রভাব বলয় নিয়ে সাম্রাজ্যবাদের আভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব।

৩. সাম্রাজ্যবাদের সাথে নিপীড়িত জাতি ও জনগণের দ্বন্দ্ব।

যার প্রভাব আমরা দেখতে পাচ্ছি ফিলিস্তিন, ইরাক, আফগানস্তিান, পাকিস্তান, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশসহ আমাদের বাংলাদেশে। গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে চেঁচিয়ে আমেরিকা, বৃটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফর্মূলায় নতুন আঙ্গিকে সেনা শাসন চালানো হয়। আর কথিত বুদ্ধজীবীরা উলঙ্গভাবে বিভিন্ন মিডিয়ায় এর গুণর্কীতণ করে চলেছে। অথচ একটু সচেতন ভাবে দেখলেই বোঝা যায় গণতন্ত্রের 'গ' দূরে থাক আমাদের দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার যে রূপ তাতো আধা-সামন্ততান্ত্রিক ও নয়া উপনিবেশিক।

এদিকে শেয়ার বাজার আরো ব্যাপক, আরো বিস্তৃত আরো আন্তর্জাতিকীকরণ করে মুক্তবাজারের নামে দেশে দেশে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়ে ফাটকাবাজির মাধ্যমে রাতারাতি বেপরোয়া লুটপাট চালানো হচ্ছে। চলছে অস্ত্র ব্যবসা বৃদ্ধি -অবৈধ অস্ত্র, মাদক, পর্ণোগ্রাফিতে বিপুল বিনিয়োগ ও মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের তৎপরতা। সেই সাথে কম্পিউটারের ব্যবহার সর্বাত্মক জ্ঞান বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও উৎপাদনে আধুনিকীকরণের ফলে স্যাটেলাইট, ইন্টারনটে, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তির উন্নতি ঘটে। যার সুফল আর কুফল আমরা ব্যাপক ভাবে ভোগ করছি। এই জিনিসগুলো যতটা না আমাদের প্রয়োজনীয় তার চেয়ে বেশি সামর্থের বাইরে এর প্রয়োজনীয়তা আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এই রকম একটা সময়ে দাঁড়িয়ে আইডেন্টিটি তৈরি জন্য যে রকম স্রোতের বিপরীতে দাঁড়াতে হয় তা কি আমরা পারি? হয়তো পারি না। আর এটাই হয়তো কারণ।

দু: লেখালেখিকে কেন টাকা কামানোর হাতিয়ার করা যাবে না?

মো: মুক্তবাজার অর্থনীতির এই সময়ে ব্যবসার মতো চিন্তা চেতনাসহ সব কিছুই মনোপলি। আর এগুলোর সাথে যোগ হয় আমাদের শ্রেণীগত অবস্থান। যেখানে বেশিরভাগই সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী, মধ্যবিত্ত, স্বার্থপর ও দালাল চরিত্র। সবাই ব্যস্ত এলিট হব কি না সে বিষয় নিয়ে। যেখানে আমাদের চিন্তা ঘোরপাক খায় প্রেমিকার 'ব্রা'-র রং কিংবা 'বউয়ের ঠোঁটের লিপিষ্টিক' দেখে। শ'য়ে শ'য়ে ক্রসফায়ার কিম্বা গুম দেখে আমাদের অনুভূতির তেমন কোন পরিবর্তন হয় না। মুখে 'রা ফোটে না দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি দেখে। মজে থাকি হাত তালি দেই কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর নারী স্বাধীনতার নাম নিয়ে বিভিন্ন সুন্দরি তৈরির প্রতিযোগিতায়। ফলশ্রুতিতে আমরাও ডুবে থাকি ফেয়ার এণ্ড লাভলি, লাক্স,পণ্ডস কম্বা গার্ণিয়ার ফ্রুক্টসি-এ। কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপনের টাকায় যে টিভি চ্যানেলগুলো চলে সেগুলো আমাদের কোন দিকে আকৃষ্ট করে চলেছে; একটু সর্তক হলেই বোঝা যায়।

এরকম পরিস্থিতিতিতে শুধু লেখালেখা করে টাকা কামাতে কোথায় নিজেকে বন্ধক রাখতে হবে? কিম্বা কি করতে হবে?

দু: আপনি নিজেকে কেন লেখক বলে পরিচিতি করাতে চান?

মো: আমি নিজেকে লেখক হিসেবে পরচিতি করতে চাই না। “দুখাই-র মা-র জীবদ্দশায় লেখালেখিটা খুবই নির্লজ্জ, বিবেকহীন আর অশ্লীল কাজ।‍– (রণজিৎ দাশ)দদ তবুও লেখি কেননা শ্রেণীগত ভাবে মধ্যবিত্ততো। কারণ আশপাশের অসঙ্গতিগুলোর তো প্রতিবাদ জানানোর সাহস কিম্বা ক্ষমতা তো নাই। তবে কোন না কোন কারণে ভিতরে একটা ক্ষরণ হয়তো থেকে যায়। সে বিষয়গুলো ভুলে থাকার জন্য।

আর আমার তো মনে হয় না কেউ নিজেকে পরিচিত করার জন্য লেখে। আসলে লেখাটাই মূল কথা। আর যদি কোন কারণে লেখা হয়ে যায় বলে কেউ মনে করে তো সেটা ছড়িয়ে দেয়ার একটা প্রচেষ্টা।

দু: কবিতার চেয়ে কথাসাহিত্যকে আপনি কেন বেছে নিলেন?

মো: আসলে বেছে নেওয়া নয়। আসল বিষয়টা হল লেখা। যে ফর্মে কোন একজন লিখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে তারতো সেভাবেই লেখা উচিত। তাতে আর যাই হোক স্বত:র্স্ফূততা হয়তো থাকবে।

দু: কথাসাহিত্যের কোন ধারাকে আপনি বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন এবং কেন?

মো: আগের মতোই বলি যে কোন ধারাতেই যদি লেখাটা হয়ে ওঠে তাই হল। সেটা গল্প হোক, উপন্যাস হোক কিম্বা আখ্যান।

দু: লেখার বিষয়ের ক্ষেত্রে আপনি কোন জায়গাকে বেশি গুরুত্ব দেন এবং কেন?

মো: আসলে একটা লেখার সব কিছুই গুরুত্বপূর্ণ। গল্পের গাথুনি, বলার ধরণ, ভাষা, দর্শন। তবু গল্প বলার ধরণ আর কোন ঘটনাকে দেখার ভঙ্গিই আমার কাছে বেশি গুরুত্ব বহন করে। কারণ মনে হয় বলার ধরনের ভিন্নতায় একই ঘটনা ভিন্ন ভিন্ন আবেদন প্রকাশ করে। কিচ্ছা, কাহিনীও তো এক ধরণের গল্প। বলার ভিন্নতার কারণেই গল্প আর কিচ্ছা আলাদা হয়।

দু: লেখা নিয়ে আপনি কেমন আশা করেন? তার কতটুকু আপনি বাস্তবায়ন করতে পরেছেনে এবং কেন?

মো: এই প্রশ্নটার উত্তর দেয়ার সময় এখনও আমার হয় নি। আমি নিজে অন্তত আরও ১৫ বছর পর এটার উত্তর জানার চেষ্টা করব ।

দু: পশ্চিমবঙ্গের কথাসাহিত্য আর বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের ফারাক কোথায়?

মো: ফারাকতো আছেই। দেশ আলাদা, রাজনীতি আলাদা, সংস্কৃতি আলাদা। এই আলাদাগুলোই তো ফারাক তৈরি করে দেয়। আর শুধু তাই কেন, একই স্থানে একই এলাকায় বেড়ে ওঠা দুইজনের লেখাতেও ফারাক হতে পারে দর্শনগত ভিন্নতার কারণে।

মোর্শেদ শেখের গল্প

গড্ডালিকা প্রবাহ

ভওনি:

সেই দিনই ব্যাপারটা প্রথম টের পাই। অথচ মৃত মানুষ কোনদিন ভালো করে দেখেছি বলে..কিম্বা দেখলেও একবার।

হয়তো মরা মানুষ-লাশ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা না থাকার জন্যই অনেক পরে টের পাই। মূলত: যেদিন শেষবার জেবার সাথে কথা হয়; জেবা বলে; মনু জলধর তুমি যেন কেমন হয়ে গএছে! তোমাকে এমন ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে কেন? আচ্ছা তুমি হঠাৎ এমন লাশ হয়ে যাও কেন? আমি কোন কথা বলি না, জেবার দিকে তাকিয়ে থাকি। জেবা চলে যায়।

অনকেটা- চলে হনহন

ছুটে শনশন ফিরনো।

আর কিছুদিন পরেই আমি বুঝতে পারি আমার নিজের লাশ কাঁধেই আমার ছুটে চলা। এখন আমার গন্তব্য ঠিক করতে হইবো। এই ভাবে মৃত দেহ নিয়ে চলা আমার সম্ভব কি? না কইরা করবা কি? তোমার বোঝা তো তোমার নিজেরই লাশ নাকি?

ফ্লাশব্যাক- শাদাকালোঃ

-ওহঃ আপনি সিপিবি করতেন?

-হ্যাঁ । সিপিবি ভালা না?

-আওয়ামী লীগের বি টিম...

-আরে আমরা তো ফরহাদের সময় করতাম। সেই সময় সিপিবির খুব জোয়ার ছিল।

-আর আপনেও জোয়ারে ভাসছেন।

"কি কবো সেই পড়শির কথা

তার হস্ত পদ স্কন্ধ মাথা নাই রে...

ও সে ক্ষাণেক থাকে শূন্যের উপর

ক্ষাণেক থাকে নীড়ে-"

বুঝছস্ মিনু জলধর এইটা আমার কাছে মনে হয় আসল স্যুররয়িলেজিম।

-আচ্ছা মনু জলধর তুই ক'তো মমতাজরে বুকটা ফাইট্টা যায় আর সেই, কেমনে ধরিবো আমারই বধুয়া আন বাড়ি যায় আমারই আঙিনা দিয়া এর মাঝে দর্শনগত কোন পার্থক্য আছে কীনা?

-মোটেও নাই।

খালি ভাষার রাজনীতির লাইগ্যা...ফাইট্টা যায় যে এলিটের না।

বুঝছনে নি মনু জলধর ভাই-

কী কও মামুন?

'উই ড্যু কালচার' যা কইছে না।

আইচ্ছা মামুন তুমি বুঝি মফস্বলগিরি করো, এতোদিনেও ঢাকা শহরে ডু কালচার করতে পারলানা।

কাট।

লাইভ এ্যকশন: ৩৫ মি. মি. ক্যামেরায়ঃ

জেবা তুমিতো আমারে দিলাই না-

আচ্ছা মনু জলধর তোমার ল্যাঙ্গুয়েজ দিন দিন এতো খারাপ হচ্ছে কেন? নাহ তোমার সঙ্গে চলাই মুশকিল...

ফ্লাশব্যাক; একটু ঘোলাঃ

দেখেছ সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় দেশে দেশে যুদ্ধ বিরোধী বিক্ষোভ।

সিয়াটলে বিক্ষোভের জন্য ডব্লিউটিও সম্মলেন বাতিল খবর জানো।

আরে বাবা ফিলিস্তিনের খবর সরা; অন্য চ্যানলে দে- শালা আরাফাত হইলো বড় দালাল।

মুজইবের নেতৃত্বে একাত্তরে আমাদের বুর্জোয়া বিপ্লব হইয়া গেছে।

বাংলাদশে এখন পুঁজিবাদী রাষ্ট্র।

এখন খালি বিপ্লব হয় হয়। তোমরা গোছাইয়া ওঠো।

দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় এইটা আধা সামন্ততান্ত্রিক ও নয়া উপনবেশিক দেশ।

এইটার একটা বিশেষ তাৎর্পয আছে।

বাংলাদেশে এই প্রথম গ্রেনেড ফাটলো। তাও ব্রিটিশ হাইকমশিনারের গায়ে। পার্টিতো এখনো কোনো ব্যাখ্যা এ ব্যাপারে দেয় নাই। দেখা যাক কী হয়।

আখলাকুর রহমান তো আগেই কইছেন এদেশের কৃষিতে ধনতন্ত্র প্রধান।

হ এই কারণেই কৃষি হুতছে আর কৃষকরা সুইসাইট খায়।

লাইভঃ

১ বাথরুমে যামু না বিছানায় শুইয়াই-

আইচ্ছা সীমারে যে দেখলাম আমার তো খাড়াইলো না। আমার চোখে খালি জেবারে লয়। তোরা শালা বুর্জোয়া- টেকা দিয়া শইল লছ।

২ মনু জলধর এইটা তুই খেয়াল করছস কিনা জানি না, ঢাকায় মেয়েদেরকে খুব বেশি মেয়েদের মতো করে ভালোবাসা হয়। দেখ চারদিকে..

৩ কইছি তো। এখন পর্যন্ত বাংলা গানে কফিলের চেয়ে বেশি কাজ কেউ করতে পারে নাই। এই যে মাঠে এই ভাবে ছাড়লাম।

৪ তুমি এখন কও বাবা, ইলইয়াস তো কবেই কইছেন রবীন্দ্রনাথ বাংলা গানেরে মধ্যবিত্তের জন্য আনছেন আর নজরুল তারে সামন্তধারায় নাকি ঘরানায় নিয়া গেছেন।

ফ্লাশব্যাক ও লাইভের মাঝামাঝি

অনেকটা তারকোভস্কির মতোঃ দরকার মতো ভাঙা কাঁচ দেওয়া-

এইটা হইলো পুঁজির যুগ। যদিও পুঁজি ক্রাইসিসের মধ্যে আছে। তবুও আমিতো মধ্যবিত্ত। যদিও বুঝি বিপ্লব হইলে আমারো লাভ আছে। কিন্তু আপাতত পুঁজির গোলাম হই-চাকরিটা ভালো। মার্কেটিং এ। আর এখনতো মার্কেটিং এই পয়সা। টার্গেট পুরা তো...যদিও আর্থার মিলারের ডেথ অফ এ সেলস ম্যান তোমার পড়া। তারপরও গ্রগের সামসা হওয়ার কোন সম্ভাবনা তোমার নাই। কারণ তুমিতো এখনই তোমার লাশ কাঁধে। তবে আর একটা সম্ভাবনা আছে সেলিম মোরশেদের অম্লানদরে গল্পের নায়কের মতো ফিউচার ব্রাইট করবা আর তোমার বউ আর একজনেরে কইবো আপনি যে এতো স্ট্রং আগে জানতাম না। তুমিতো সময়ই পাইবা না। কী আর করবা। জবে তো আর একজনের ঘরে। তবে মাঝে মাঝে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কিছু পুঁজি দিও। আরে তুমি তো জানোই পুঁজি হইলো যৌথ মালিকানা। ঘাবড়াইওনা।

আর্টফিল্ম-বিকল্পধারাঃ

এরপরও তো তোমার ক্রিয়টেভিটি নষ্ট হয় নাই।

কপচানি রাখেন। নিজের লাশ নিয়া এখন আমি কী করবো।

এই লাশ বইবার তৌফিক খোদা তোমারে দেন, রাব্বানা ওয়াতানা ফদ্দিুনিয়া হাসানাতাও... ছুম্মা আমনি।

শোন ঐ দূর পাহাড়ের চূড়ায় একটা গাছ আছে। ঐটা হইলো সঞ্জীবনী গাছ। ঐ গাছের রস তোমার জীবন ফিরাইয়া দিতে পারে। যদি নিজের লাশ বহন কইরা সেখানে যাইতে পারো।

আলিফ লায়লাঃ

আমার লাশ কাঁধে আমি ছুটছি-দৌঁড়াচ্ছি-হাঁটছি, রোদ-জল-নদী

হাঁটু খসে পড়ছে- তৃষ্ণায় গলা কাঠ- জিভ জ্বলে যাচ্ছে- কুকুরের মতো হাঁপাচ্ছি। হাজার বছর ধরে পথ চলে যেই পাহাড়ের কাছে পৌঁছলাম।

হায়

পাহাড়টা নদীর স্রোতে ভাসছে সমুদ্রে ডুববে বলে... ...

অতঃপর শেষ হইল

যদিও হইল না শেষ...