‘শব্দ আর অক্ষর ... কী সাঙ্ঘাতিক তাদের যৌথ সেক্স-অরগাজম’রত্নদীপা দে ঘোষের নিরীক্ষার যৌনজুঁই

Post date: Sep 5, 2017 4:36:27 AM

শব্দ আর অক্ষর ... কী সাঙ্ঘাতিক তাদের যৌথ সেক্স-অরগাজম। আমি এভাবে ভাবিনি। রত্নদীপা দে ঘোষ যে রাস্তা ধরে এগিয়েছেন, নিরীক্ষা; কবিতার ধীরলয় গতি বা অস্থির অথবা মন্থর গতি যে এভাবে নিয়ে যায় গহীন বনে ভেবে দেখিনি। নিরীক্ষা কী আশ্চর্য নদী, ভরাট যৌবন, কেঁপে কেঁপে ওঠে বিছানায়, রত্নদীপা দে ঘোষের কথা ধরে এগুনো যাক পাঠক। নানা রঙের কবিতা দেখতে দেখতে বড় হয়ে উঠেছি। কেউ কাঁথাকাজ। কেউ কলমকারি। কেউ পেন্সিলস্কেচ । কেউ স্কচহুইস্কির তরবারি। টারমারিক আলোর বৃত্তে যখন পৌঁছলেম নিজে , দেখি সবচাইতে বেশি টানলো যৌনমশালের জুঁইপ্রবণ কবিতাগুলি-

আমি যৌনপর্যটকের মত দূর থেকে গন্ধ শুঁকি,ঘ্রান দোলাই ... দুলতে থাকি সেই সেক্সসলতের প্রদীপে ,শিস দিয়ে সুর তুলি অলীক ভাটিয়ালি ...

যে যৌনতা হারিয়ে গিয়েছিল , ঝিঁ ঝিঁ ঝিমধরানো ,ভালুক গজানো বাতিল থালাবাসন ... সেক্সপেখম তুলে তারা আজকাল সরে সরে আসছে কাছে। কবিতা হতে চাইছে, সুগভীর রাত্রির লয় , ডাহুকের অচেনা ট্রেন... আহা ... কে যেন তারাদের পপমিউজিক , কবিতায় যৌনতা আসবে না , তা কি হয় ? যে রাস্তার শুরু সকলের জানা ... যে রাস্তার শেষ ঠিক যেন ছোটগল্প ।। শেষ হয়েও হইল না শেষ , সেই কংক্রিটের অতলান্তিকে কবিতাকে যে ডুবতেই হবে । শব্দ আর অক্ষর ... কী সাঙ্ঘাতিক তাদের যৌথ সেক্স-অরগাজম ... কবি জানে কবি চেনে কতদূর এলে অথবা চলে গেলে যৌনআরামের কেদারাকে মুদারায় পরিবর্তন করা যায় ...

দায় নেই আমার। কবির কোন দায় থাকতে নেই। শ্লীলতার কি রেলঅশ্লীল আছে কোন?

নেই। এবং নেই। সময় চলে যায় চাকা বেঁকে যায়। মন জুড়ে পড়ে থাকে চুপিচুপি শালবন , সেগুনের রঙ্গন। ফুল ফোটে । তারাবাতি জ্বলে। রেখাপুরুষ থেকে নারীশিরিষের ডালে ডালে , পাতায় পাতায় লেগে থাকে আগুনের রিদিম । কবি সেই রিদিমটুকু নিয়ে ঝাপ দেবেন যৌনপুকুরের সুন্দরবনে । তবে না , কবিতার যৌনপ্রাপ্তি হবে । সাবালক হবে কবিতা ।

মাস্টারবেশনের অদ্ভুত উন্মাদনা শেলফ ভেঙে, বুদ্ধদেব চৌচির করে ঢুকে পড়বে সটান বোধিসত্রে।

হে আমার ঘরছুট কুঁড়েঘর , আমি তোমার কারণে হোমের অট্টালিকা ছেড়েছি । তোমারি কারণে আমি দিবানিদ্রার বিষম জানালাটি বন্ধ রেখেছি ... সাদাসেক্সের চাইতেও উত্তম একটি যৌনপ্রস্তাব আমি আনতে পেরেছি ... অন্তত চেয়েছি আনতে । এই চাওয়াটি আসল অরগাজম।

‘অদ্ভুত জন্তু তুমি

হ্যাঁ

জন্তুই বলা যায় তোমাকে

দু’হাত

দু’পা

পিছমোড়া বেঁধে

গোখরোর হ্যাঙ্গারে ঝোলানো

বুক

নিচ্ছ

তুমি

আমাকে

যখন তখন

লবন খুবলে

দুধের সিরিজ চাকুম

হাতে আমার অর্গাজমের রেকাবি

ধরিয়ে

তোমার পশুপনার প্রতিটি সংখ্যাই

আরও উজ্জ্বল আরও দৃঢ়

বারো ফর্মার বাঁড়া

সংকলন ””

উনি বলছেন-বড় কোনো লন্ঠন ভেঙে ফেলবার আগে , ভেসে যাক আমার মেয়েলি হিজাব। উত্তেজনাপ্রবন এলাকায় সদর্পে ঢুকে পড়ুক আর্মিকবি । অ্যাশট্রে ছাড়াই ছাই হোক রক্ষণশীল ধুতিপ্রান্ত। সাপ্তাহিক ক্লিওপেট্রায় মুছে ফেলা যাক কাচের খরগোস । খুলে ফেলি নিজেকে । আরও অনেকটা যৌনসেক্সসঞ্চয় কবিতার কাছে বলেই ফেলি ।

“ সাদা /কালো

ফরসা / ফলসা

মাইযুক্ত

শক্ত বোঁটা / মাঝারি মোটা

দুধেল / সেমি এঁটেল

গ্রীলড গ্রীন / চিলড ক্রিম

ঝাল / ঝোলের লাক্সারি

সব

সবকুছ

তবে

থপথপে / থলথলে মাইগুদ

সবকিছুই যাদের অ্যাসিডিক

আর ঢিলেঢালা কামিজঝোলা

তারা বিক্রয়যোগ্য নহে ”

রত্নদীপা দে ঘোষ কর্ণাটকের প্রত্যন্ত গ্রাম তোরনাগাল্লুরের বাসিন্দা । তার প্রকাশিত বই "আমি ঈশ্বর হতে চাই "-২০১২ এবং " মৃত্যুকে নিষিদ্ধ করো "-২০১২ । ২০১৩ তে তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ' ব্লাশ on’। পড়াশুনা করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে । উনি লুকোতে রাজি না। বলবার তো আছে বটেই। তার ভাষায়-লুকোবার কি আছে ... লুকবোই কেন ? বেঁচে থাকা প্রাণায়াম বই তো নয় । আর যৌনতাই যে শ্রেষ্ঠ আরাধনা , কে না জানে ... সফেদ স্বরে এবং সরাসরি সম্প্রচারিত হোক যৌনজুঁইয়ের ঝাড়বাতি । কনডমের ছিদ্র ভরুক সিরিয়ালের সবুজ বারান্দা । নগ্ন হোক মগ্ন হোক বেহাগের বেরাদরি । লাজুক ব্রেক দাউন ঠেলে বাইলেনের বিভ্রান্তি থেকে সেরে উঠুক কবিতার যৌনরোগ । হত্যাকারির হাতে সাজাধিন না থাকুক সিফিলিসের দূরভাষ । গ্যালাক্সি ফেরত আদুরে যৌনদুষ্টুমিগুলো মন খুলে আদর করুক একে অন্যকে । কোথাও কোনো গনোরিয়া ... হিষ্টিরিয়াগ্রস্ত না হোক ...

আইনবিশারদরা ঠিক করুক , তারা কবিতায় থাকবে নাকি আইনি-মাশরুমের মাংসমজ্জায় হাড়কাঠি বেচবে ...

নাকি কবিতাকে আশ মিটিয়ে খেয়ে খাইয়ে বারোটা বাজিয়ে অবসরপ্রাপ্তর তকমা সাজাবে ।

আমি বলি কি , রোজ দু বেণী দুলিয়ে স্কুলে যায় যে কবিতাকিশোরী তার রাইটুকু আটকে রেখো না। তাকে অন্ধ রেখো না। সে কথা বলুক যজ্ঞের নিয়নে। সে কোমর দোলাক , দুলুক তার ভ্রূ-ছন্দ। কথায় কথায় বইতে শিখুক তার প্রথম ঋতু। সে সমগ্র গানভর। সে দিনান্তে দিনভর।

তার টলটলে প্রথম যৌনাকাঙ্খা , তার প্রথম লিলায়িত বুক হরষিত থাকুক ... কিশোরী সে আমার রাধাজগতের প্রথম জ্যোতির্ময়ী হরিণী এমনই চঞ্চল থাকুক ... হামা দিক ... হামা টানুক , চিনে নিক গির্জার চার্চবেল , গুণে নিক গেঁদাফুলের ক্যাপশন ... কবিতার যৌনপলেস্তরায় আঁকা হোক প্রথম নির্ভার প্রতিকৃতি ... তার প্রথম ব্রেসিয়ারে লেখা হোক আদম ইভ আর তাদের যৌথ যৌনভিলা ... কারণ ...

“ সোজাসুজি জাতকের গস্পেল থেকে উঠে আসছি

সতীবেহুলা আর সীতামাইয়ার ইনবাক্স থেকে

গোসল সেরে আজানে রমণে চ্যাটসেক্সের

ফিনকি ছাপিয়ে দাপিয়ে

আমি হে

দ্রৌপদীর চাইতে থেকে কম কিসে

তার দুই বুক এক গাঁড় পাঁচ ভাতার

আমি দুই বুক এক গর্ত বারো ভাতার ”

আর কিছু কি বলার অপেক্ষা রাখে ... কি বলো পাঠক ...