Page 574

শ্রীশ্রী গুরুচাঁদের ভবিষ্যৎ বাণী

পঞ্চাশ বছর পূর্বে গুরুচাঁদ কয়।

ভোট দিয়ে সব কাজ হইবে নির্ণয়।।

ভোটে রাজা প্রজা হবে পৃথিবী ভরিয়া।

ক্রমে ক্রমে সেই বাক্য এসেছে ফলিয়া।।

একদিন ডাকি বলে সে মধুসূদনে।

ঘৃতকান্দিবাসী যিনি সর্ব লোকে জানে।।

“শোন মধু! শোন কুঞ্জ! যাহা দেখা যায়।

‘অবতার’ যেইখানে আসি জন্ম লয়।।

শহর বন্দর সেথা হয় কালে কালে।

এই দেশে যাহা হবে যাই আমি বলে।।

আমি যেন দেখিলাম ঘৃতকান্দি হ’তে।

রাজপথ সমপথ গেছে পশ্চিমেতে।।

তার দুই ধারে যেন বিচিত্র শোভায়।

দালান, মন্দির কত দাঁড়াইয়া রয়।।

মনে হয় কি যেন কি সফলাডাঙ্গায়।

আশ্চর্য হইবে লীলা বাবার দয়ায়।।”

আর দিন কত ভক্তে প্রভু ডেকে কয়।

(গ্যাপ)

“শ্রীহরির বংশে ভগবান অবতীর্ণ হয়।

সেই বংশে ‘রাজশক্তি’ আসিবে নিশ্চয়।।”

মথুরায় জন্মে কৃষ্ণ দেবকী উদরে।

কংস ভয়ে পলাইয়া গেল ব্রজপুরে।।

Page 575 start

করিল মধুর লীলা কৃষ্ণ দয়াময়।

“শত গোলকের তুল্য বৃন্দাবন” কয়।।

অনায়াসে রত্ন পেলে যা’ ঘটে কপালে।

রত্ন নিয়ে ছিনিমিনি করে সবে মিলে।।

দড়ি আনি নন্দরাণী বান্ধে কৃষ্ণধনে।

কৃষ্ণকে পাঠায় নন্দ বনে গোচারণে।।

গরবিনী রাধারাণী মানে’ সীমা নাই।

রাখালে রাখাল ভেবে ডাকিল ‘কানাই’।।

পদ সেবে লক্ষ্মী যার ব্রহ্মা করে ধ্যান।

ব্রজবাসী নরজ্ঞানে করে অপমান।।

গোকুল কান্দায়ে গেল কৃষ্ণ মহাতেজা।

মথুরায় নিজ ঘরে হ’ল মহারাজা।।

লোকাচারে লোকে তাই বলে সর্বদায়।

“রাজকন্যা বলে প্যারী (অত) মান ভাল নয়।।”

সফলানগর হ’তে জমিদার ভয়।

ওড়াকান্দি হরিচাঁদ হইল উদয়।।

আশ্চর্য মধুর লীলা সেইখানে হয়।

তীর্থ শ্রেষ্ঠ ওড়াকান্দি সর্বজনে কয়।।

মহাপ্রভু গুরুচাঁদ ছিল ধামেশ্বর।

ওড়াকান্দিবাসী জনে কত অহংকার!

যাহা কিছু ওড়াকান্দি শুভ কাজ হয়।

শ্রীগুরুচাঁদের হস্ত তার পাছে রয়।।

ক্রমে দেখ ওড়াকান্দিবাসী যত নর।

প্রভুর সঙ্গেতে বাদ করে নিরন্তর।।

শতবার ক্ষমা প্রভু করিল সবারে।

অভিশাপ দিলা শেষে ব্যথিত অন্তরে।।

একদা প্রভাত কালে আসি গদী ঘরে।

জিজ্ঞাসা করিল প্রভু অতি ক্রোধভরে।।

“ওড়াকান্দিবাসী কেহ আছ কি এখানে?

আমি যাহা বলি তাহা রাখ’ সবে শুনে।।”

নিয়তির খেলা দেখ অকাট্য কেমন!

ওড়াকান্দিবাসী কেহ ছিল না তখন।।

একমাত্র বড় বাবু প্রমথরঞ্জন।

নীরবে বসিয়া শোনে প্রভুর বচন।।

লোকাচারে চোখে প্রভু দৃষ্টি নাহি ধরে।

হাতে ধরে তাই কেউ সাথে সাথে ফিরে।।

বারে বারে তিন বার প্রভু ডেকে কয়।

“ওড়াকান্দিবাসী কেহ আছ কি হেথায়?”

উত্তর না পেয়ে প্রভু ক্রোধভরে কয়।

“নাই কেহ থাকিবে না কিছুও হেথায়।।”

সহসা করিল চিন্তা প্রমথরঞ্জন।

ওড়াকান্দিবাসী বটে আমি একজন।।

উর্ধশ্বাসে ছুটে গিয়ে ধরিয়া চরণ।

“বলে ওড়াকান্দিবাসী আমি একজন।।”

হাসিয়া বলিল প্রভু “প্রমথ দা নাকি?

তোরে আর একেবারে নাহি দেব ফাঁকি।।

এক মুঠা খেতে দাদা অবশ্য পাইবে।

শ্রীহরিচাঁদের প্রতি ভরসা রাখিবে।।”

---০---