Page 338

রথযাত্রা উৎসব

গ্রন্থ পে’ল সুখী হ’ল ভকত নিচয়।

ভক্তগনে ডাকি তবে বলে দয়াময়।।

“পরম পবিত্র হয় হরিলীলামৃত।

ঘরে ঘরে এই গ্রন্থ হউক পূজিত।।

শিখ জাতি করে পূজা শ্রীগ্রন্থ সাহেবে।

স্বর্ণচূড়া মন্দিরেতে রাখিয়াছে এবে।।

“অমৃত সহর” হয় পাঞ্জাব প্রদেশে।

শিখ জাতি গ্রন্থ-পূজা’ করে তথা এসে।।

আমার পিতার গ্রন্থ র’বে ঘরে ঘরে।

নিত্য পূজা পাবে তাহা বিবিধ প্রকারে।।

বড় বীর শিখ জাতি ভারত ভিতরে।

বীর আর সাধু ভাব আছে একত্তরে।।

“বাঙ্গালার শিখ” হবে এই নমঃশূদ্র।

ধর্ম্মে কর্ম্মে হবে শ্রেষ্ঠ নাহি রবে ক্ষুদ্র।।

শুন বলি ভক্তগণ নিগূঢ় বারতা।

সর্ব্ব-ধর্ম্ম ওড়াকান্দী করিবে একতা।।

তারক লিখেছে গ্রন্থে দেখ মনে করি।

এবাড়ীর নাম ছিল “উড়িয়া নগরী।।”

শ্রীক্ষেত্রে প্রসাদ নিত্য পায় সব জন।

সে প্রসাদ ওড়াকান্দী দেয় কি কারণ?

দৈবযোগে প্রভু বলে “আছি ওড়াকান্দী।”

ভবনাথ, শিবনাথ এল কান্দি কান্দি।।

জগন্নাথ-ক্ষেত্র শক্তি ওড়াকান্দী রয়।

সেই হেতু শ্রীপ্রসাদ পাঠাইয়া দেয়।।

যেখানের যেই লীলা হবে হেথা।

মোর এই বাক্য কভু নাহি হবে বৃথা।।

এই ইচ্ছা ভক্তগণ উঠিয়াছে মনে।

রথযাত্রা মহোৎসব করিব এখানে।।

জগন্নাথ-শক্তি হেথা আছে আমি জানি।

তাঁর ক্ষেত্রে তাঁর রথ এসো মোরা টানি।।”

এই কথা প্রভু যদি করিল প্রস্তাব।

আনন্দেতে ভক্তগণে সায় দিল সব।।

বারুণীর কালে এই কথাবার্ত্তা হল।

স্বদেশী মেস্তরী আসি রথ নির্ম্মাইল।।

দেশে দেশে ভক্তগণে পায় সমাচার।

শুনি কাণে ভক্তগণে আনন্দ অপার।।

রথযাত্রা দিনে সবে উপস্থিত হল।

পরম আনন্দে সবে রথকে টানিল।।

লোক সমারোহ তাহে বহুত হইল।

ভক্ত সবে নেচে নেচে বলে হরি বল।।

প্রভু কহে ‘রথযাত্রা প্রতি বর্ষে হবে।

ভক্ত সবে সে-উৎসবে অবশ্য আসিবে।।”

তদবধি ভক্তগণ রথযাত্রা কালে।

ওড়াকান্দী ধামে সবে যায় কুতূহলে।।

Page 339 start

শ্রীবারুণী, দূর্গাপূজা আর রথযাত্রা।

তিন কালে করে প্রভু উৎসবের মাত্রা।।

পরবর্তী কালে যবে রাসযাত্রা হয়।

চার উৎসবের কেন্দ্র করে দয়াময়।।

রাজ-ভাবে রাজাচার প্রভুজী শিখায়।

প্রভু হতে নমঃশূদ্র সর্ব্ব শিক্ষা পায়।।

শুধু নমঃশূদ্র কিবা অনুন্নত জাতি।

ওড়াকান্দী হ’তে শিক্ষা পেয়েছে সম্প্রতি।।

তুলিয়া ভবের ঢেউ হরে মনপ্রাণ।

সুকর্ম্ম চিনায়ে করে জীবের কল্যাণ।।

গুরুচাঁদ-কৃপা পেয়ে সবে ধন্য হল।

ছিনিমিনি করে করে মহানন্দ মল।।

---০---