Page 278

চক্রীয় চক্র ও ভক্তগণের অগ্নি পরীক্ষা

প্রভুর ইচ্ছায় বাধা কেবা দিতে পারে?

জাতির মঙ্গল তবে আনিল মীডেরে।।

মীড যাহা বলে প্রভু সেই কাজ করে।

ভাব যেন প্রভু করে আজ্ঞা অনুসারে।।

আপনার কাজ প্রভু মীডে দিয়া।

নর নারী কেহ তাহা পারেনা বুঝিয়া।।

ওড়াকান্দী হা্ইস্কুল হইল গঠন।

পরীক্ষার আজ্ঞা তথা পেল ছাত্রগণ।।

দাতব্য চিকিৎসা হয় মীডের আবাসে।

দলে দলে দীন দুঃখী তাঁর কাছে আসে।।

মীডের ঔষধে গুণ সবে জানে তাই।

স্নানাহার বন্ধ হলে আর রক্ষা নাই।।

রোগ ব্যাধি দেশ মধ্যে যত কিছু হয়।

প্রায়শঃ মীডের কাছে সবে ছুটে যায়।।

মীডের ঔষধে যার রোগ সারে নাই।

সবে বলে “তোর আর রক্ষা নাই ভাই।।”

আশাহীন- সেই দীন আর কোথা যায়?

শেষ-আশা গুরুচাঁদ, পড়ে তাঁর পায়।।”

Page 279 start

পরম দয়াল বলে ‘কিবা তোর ভয়?”

শ্রীমুখের আজ্ঞা মাত্রে রোগ সেরে যায়।।

এবে শুন এক কথা সত্য পরিচয়।

“টিকাদার” বংশ আছে ওড়াকান্দী গাঁয়।।

সেই বংশে এক ব্যক্তি রোগে কষ্ট পায়।

রোগ মুক্তি তরে গেল ডাক্তার খানায়।।

বহু দিন ঔষধাদি করিল সেবন।

কিছুতে সে রোগ নাহি হইল মোচন।।

দিনে দিনে তনু ক্ষীণ খর্ব্ব হল বল।

রোগ যন্ত্রনায় ক্রমে হইল অচল।।

আত্মীয় স্বজন সবে ছেড়ে দিল আশা।

গলা হবে রক্ত পড়ে ক্ষত কর্ণ, নাসা।।

আজি মরে কালি মরে সবে ভাবে মনে।

হেন কালে শুন কথা দৈবের ঘটনে।।

মৃত্যু-যাত্রী এক প্রাতেঃ কহে সবাকারে।

আমাকে লইয়া চল বড়-কর্তা-ধারে।।

জীবনের আশা বটে মোর কছিু নাই।

একবার গুরুচাঁদে দেখিবার চাই।।

শুনেছি তাঁহার নামে কত মরা বাঁচে।

এ-মরা সকলে ফেল নিয়ে তাঁর কাছে।।

ডুবু-তরী যদি রক্ষা গুরুচাঁদ করে।

চিরকাল রব বন্ধী চরণ নখরে।।

এই কথা তার মুখে শুনিয়া সকলে।

অতি কষ্টে ধরাধরি করে নিয়া চলে।।

মনে হয় পথিমধ্যে যাইবে পরাণ।

বেঁচে মাত্র রহিল সে দয়ার কারণ।।

কতক্ষণে উপনীত ঠাকুরের স্থান।

রাগিয়া ঠাকুর বলে “এ নাকি শ্মশান?

টানা টানি করে কেন মরা আন’ হেথা?

এক দেশে বাস বলে এক কি শত্রুতা?

যার যার মরা তার বাড়ী নিয়া রাখ।

মরা যে বাঁচাতে পারে তারে গিয়া ডাক।।

কৌশলে আমার বাড়ী এ মরা ফেলিবে।

একেবারে মরে গেলে মামলা বাধাবে।।

এ সব ভঞ্ঝাটে বাপু কোন কার্য্য নাই।

মরা নিয়ে বাড়ী যাও আমি তাই চাই।।”

এতেক বলিলা যদি প্রভু গুরুচন্দ্র।

তারা বলে “মোরা নাহি বুঝি কোন মর্ম্ম।।

সত্য বটে বাস করি এই ওড়াকান্দী।

তুমি যে কে কোন দিন করি নাই সন্ধি।।

ইহা সত্য জানি যদি ভাল না বাসিবে।

তবে কেন ওড়াকান্দী আপনি আসিবে?

এ-মরা তোমার মরা দিলাম তোমায়।

মার কাট যাহা ইচ্ছা কর দয়াময়।।

ভক্তি শক্তি কোন কিচু আমাদের নাই।

এক দেশে বাস করি বল মাত্র তাই।।

বিনামূল্যে ওড়াকান্দী বাসিয়াছ ভাল।

ওড়াকান্দী বাসী জানে সেই মহাবল।।

দয়া যদি হল মনে বাঁচাও মরারে।

যা হোক তা হোক মরা দিলাম তোমারে।।”

দাবী করে কথা কয় সঙ্গীসাথী যারা।

দাবী শুনে হাসে প্রবু সর্ব্ব-দুঃখ-হারা।।

তাদের ডাকিয়া বলে “ওড়াকান্দী বাসী!

আমি বুঝি দায়-ঠেকা এই দেশে আসি।।

দায় ঠেকে আমি বুঝি বাঁচাব মরারে।

এই কথা কোন দুষ্ট বলেছে তোমারে?

ওড়াকান্দী বাসী বলে কেন এত গর্ব্ব।

এক দিনে ওড়াকান্দী হতে পারে খর্ব্ব।।

যাক যাক সে কতায় কাজ কিছু নাই।

তোমাদের জিৎ হোক আমি ঠকে যাই।।

এত বলি প্রভু দিল রোগের ব্যবস্থা।

এক দিনে ফিরে গেলে রোগের ব্যবস্থা।।

‘কাঁচা লঙ্কা পান্তভাত তেলে জলে স্নান।

দিবারাতি বসে কর হরি নাম গান।।

Page 280 start

সপ্তাহ মধ্যেতে রোগী আরোগ্য হইল।

মীড সেই কথা শুনি আশ্চর্য্য মানিল।।

এই ভাবে যত মরা গুরুচাঁদে ধরে।

দয়াময় রক্ষা করে শুধু দয়া করে।।

কঠিন কর্ম্মের বর্ম্মে প্রভু ঢাকা রয়।

ফল্গু সম ধর্ম্ম-ধারা তলে তলে বয়।।

ঐশ্বর্য্যের ভক্ত তাতে পড়ে গেল ভুলে।

তারা সবে ক্রমে ক্রমে দুরে গেল চলে।।

কেবলার-রীতি মানে সেই ভক্ত গণ।

তাঁরা হ’লাগ্রসর বীরের মতন।।

সংক্ষেপে বিস্তার তাই করিব এখন।

কোন ভাবে প্রভু কিবা করিল তখন?

পূর্ব্ব ভাগে করিয়াছি সে সব বর্ণণ।

দশভূজা পূজারম্ভ হল কি কারণ।।

কিছু কাল ওড়াকান্দী দূর্গা পূজা হল।

হেন কালে মীড আসি সেথা দেখা দিল।।

কোন ভাবে কি কি কথা মীড বলেছিল।

পূর্ব্ব ভাগে সেই সব বর্ণনা হইল।।

মীড ভাবে গুরু চাঁদে নিব নিজ দলে।

গুরু চাঁদ ইচ্ছে কার্য করাব কৌশলে।।

মীডের আজ্ঞায় যেন সব কাজ করি।

এই ভাবে ভান করে বাঞ্ছাপূর্ণকারী।।

তাতে মীড মহোল্লাসে সব কাজ করে।

মাঝে মাঝে বলে কথা প্রভুর গোচরে।।

খৃষ্ট ধর্ম্ম মহাত্মাদি বলে বারে বার।

প্রভু বলে “এই ধর্ম্ম বড়ই সুন্দর।।

মীডে বলে “তবে কেন করণা গ্রহণ।

প্রভু বলে “আগে জানি সব বিবরণ।।

কথা শুনি মীড তবে ভাবে মনে মন।

‘সবুরে মেওয়া ফলে জ্ঞানীর বচন।।

কিছু দিন দেরী করে ভাব বুঝে লব।

পরে যা করিতে হয় তাহাই করিব।।

ইতি উতি গতি তাঁর কিছুতে না যায়।

দ্বিধাযুক্ত করে কাজ চিন্তা অতিশয়।।

র্প্রভু দেখে মনে মনে মীডের সন্দেহ।

বিশেষতঃ খৃষ্টধর্ম্ম নাহি লয় কেহ।।

চক্রধর চক্রজাল করিল বিস্তার।

চক্রজালে কেহ নাহি পাইল নিস্তার।।

যত ধাতু অগ্নি মাঝে সকলি ফেলিল।

স্বর্ণ ভিন্ন অন্য সব পুড়ে ছাই হল।।

বিশুদ্ধ স্বর্ণেতে বাড়ে বহু উজ্জ্বলতা।

এবে শুন বলি তবে সেই সব কথা।।

দশভূজা মূর্ত্তি পূজা হত ওড়াকান্দী।

বন্ধ করে প্রভু তাহা করে অভিসন্ধি।।

সকলেরে ডাকি বলে শোন সর্ব্বজন।

“মুর্ত্তি পূজা করা দেখি শুধু অকারণ।।

ডক্টর মীডের কথা কিছু মিত্যা নয়।

মেটে-মুর্ত্তি পূজা করা বড়ই অন্যায়।।

আরো আমি দিনে দিনে বুঝিতেছি সার।

খৃষ্টধর্ম্ম তুল্য ধর্ম্ম নাহি কিছু আর।।

হিন্দু থেকে এত কষ্ট বৃথা কেন সই।

মনে বলে খৃষ্টধর্ম্মে আমি দীক্ষা লই।।

এতদিন এই কার্য্য করিতাম শেষ।

শশীর অপেক্ষা মাত্র জানিও বিশেষ।।

এই কথা যবে করিল প্রচার।

দেশবাসী লোক সবে লাগে চমৎকার।।

কাণাকাণি জানাজানি হল ঘরে ঘরে।

জনে জনে বলাবলি করে পরস্পরে।।

“হেন কথা বড়কর্তা কেমনে কহিল?

যদি সত্য হয় তবে নমঃশূদ্র ম’ল।।

ক্রমে কথা শুনিলেন শ্রীবিধু চৌধুরী।

তিনি বুঝে প্রভু শুধু করিছে চাতুরী।।

ক্রমে ক্রমে দলে দলে নরনারী গণে।

সকলে উল্লেখ করে যার যাহা মনে।।

Page 281 start

এদিকে ডক্টর মীড মনেতে উল্লাস।

পূজা-বন্ধ দেখি মনে করিল বিশ্বাস।।

দিবারাত্রি যাতায়াত করে প্রভু-স্থলে।

তাঁর মনোমত কথা প্রভু সদা বলে।।

ধর্ম্ম আলোচনা প্রভু কবে এক মনে।

তাহা দেখি আশা হ’র সে মীডের মনে।।

মাঝে মাঝে বলে প্রভু সে মীডের ঠাঁই।

‘জাতি-শুদ্ধ আমি খৃষ্ট ধর্ম্ম নিতে চাই।।”

এই ভাবে প্রভু তাঁরে করিলেন জয়।

মীড করে সেই কাজ প্রভু যাহা কয়।।

স্কুল হ’ল দূরে গেল চন্ডালত্ব গালি।

নমঃশূদ্র ক্রমে হল প্রতিপত্তিশালী।।

সব কাজ করে মীড মাঝে মাঝে কয়।

“কতকাল বড়কর্তা কাটা’বে সময়।।

প্রভু কহে জান মীড শশী বাড়ী নাই।

তার কাঝে মতামত আমি নিতে চাই।।

অবশ্য তাহারে তুমি জান ভালমতে।

বাধা নাহি দিতে পারে আমার এ-মতে।।

হেন কালে হল এক দুরন্ত ঘটনা।

খৃষ্টধর্ম্মে গেল তবে নমঃ কয়জনা।।

এতকাল চুপ ছিল শ্রীবিধু চৌধুরী।

এই কান্ড দেখে মনে দুঃখ হল ভারী।।

অবিলম্বে উপস্থিত ঠাকুরের ঠাঁই।

বলে কর্তা এই কার্য্যে কৈফিয়ৎ চাই।।

প্রভু হেসে বলে বিধু হইলে পাগল।

আমাকে বকিয়া বল পাবে কোন ফল?

সাধারণে যাহা বুঝে তাহা বুঝে থাক।

শুনিয়া তোমার কথা আমি যে অবাক।।

শোন বিধু শুধু শুধু করিও না গোল।

ইচ্ছা হয় হাটে হাটে দেও গিয়ে ঢোল।।

শ্রীহরির পুত্র আমি কিছু ভুলি নাই।

কিবা করি চুপ করে বসে দেখ তাই।।

মনো কথা সব আজি বলিব না খুলে।

কথাতে কি হবে বাপু কাজে সব পেলে।।

প্রভুর বচনে বিধু উত্তর না দেয়।।

মনে মনে হল তার বিষম সংশয়।।

বিদেশেতে শশী বাবু করিছে চাকুরি।।

তাঁহারে লিখিল চিঠি শ্রীবিধু চৌধুরী।।

শশীবাবু গৃহে এসে কোন কার্য করে।

বলিব সে সব কথা কিছুকাল পরে।।

এবে শুন ভক্তগণ কোন ভাবে চলে।

প্রভুর মননে তারা কেবা কি কি বলে।।

দেবীচাঁদ, মহানন্দ গেছে পরাপারে।

শ্রীতারক আছে বটে জীর্ণ-দেহ ধরে।।

নির্ব্বিকার-চিত্ত তাঁর স্তুব্ধ-সিন্ধু প্রায়।

কভু নাহি অন্যভাবে প্রভুর কথায়।।

প্রভুর মঙ্গল-ইচ্ছা হইবে মঙ্গল।

যাহা বলে তাহা করে নাহি কোন গোল।।

সবভাবে ওড়াকা্ন্দী করে যাতায়াত।

সমভাবে প্রভুপদে করে প্রণিপাত।।

সমভাবে চোখে তাঁর বহে বারিধারা।

এক প্রাণ একটান নহে কিছু হারা।।

মহাসিন্ধু পূর্ণ যথা রহে চির দিন।

সিন্ধু নহে জোয়ার-ভাটা খেলার অধীন।।

সেই মত রসরাজ একভাবে চলে।

“প্রভুর মঙ্গল ইচ্ছা” সবাকারে বলে।।

ঐশ্বর্য্যের লোভে যত ভক্ত এসেছিল।

প্রভুর মনন শুনি বহুত কহিল।।

কেহ বলে “এই কার্য মন্দ অতিশয়।

হিন্দু হয়ে শেষে যাব খৃষ্টের আলয়?

যাবে যাক উনি একা মোরা কেন যাব?

ভক্ত হলে ঘরে বসে হরিচাঁন্দ পাব।।

আভাষ অবশ্য মোরা পূর্ব্বে বুঝিয়াছি।

বিধবার বিয়া দিয়া সব দেখিয়াছি।।

Page 282 start

এ সব খৃষ্টানী-কর্ম্ম করা ভাল নয়।

যা করে করুক উনি যাহা মনে লয়।।

মনে বুঝে দেখি বৃথা আসি ওড়াকান্দী।

ঠাকুর পেতেছে সব জাত-মারা ফন্দী।।”

এ সব বলিয়া তারা বিদায় হইল।

ভাব জেনে মনে মনে প্রভুজী হাসিল।।

সেই সব ভক্ত যারা বিদ্রোহ করিল।

দেশে গিয়ে নিজ নিজ দল গড়ে নিল।।

ওড়াকান্দী নাহি আসে না দেয় হাজত।

ব্যাভিচারে মত্ত হয়ে ডুবাল জগত।।

মায়াচক্রে সে প্রকৃতি পিষে জীব দলে।

সবে চুর্ণ হয় পড়ে মায়া-চক্র তলে।।

চতুর যে জন রহে কীলক ধরিয়া।

সেই মাত্র রক্ষা পায় মরে না পিযিয়া।।

যে জন কীলক ছাড়ে তার রক্ষা নাই।

এই সব দুষ্ট-ভক্তে ঘটিলও তাই।।

তাহাদের নাম দিয়ে কোন কার্য্য নাই।

দেশবাসী জনে জনে জানিবে সবাই।।

প্রকৃতি-নিয়মে এই আছে শুদ্ধ ধারা।

সর্ব্বদা সকল স্থান রহিবেক ভরা।।

শূণ্য বলে কোন কিছু প্রকৃতিতে নাই।

একে গেলে অন্যে এস পূর্ণ করে তাই।।

বিদ্রোহ করিয়া কত ভক্ত চলে গেল।

শূণ্য স্থান পূরাইতে অন্য দল এল।।

এ সব প্রভুর ইচ্ছা বুঝিলাম সার।

কল্যাণের পথ প্রভু করে পরিস্কার।।

কর্ম্ম অনুসারে হয় শক্তি ব্যবহার।

শক্তি অনুসারে লোকে পায় কর্ম্ম ভার।।

যতটুকু যাকে দিয়া হয় প্রয়োজন।

সে কাজ করায় তারে শ্রীমধুসুদন।।

সকলি প্রভুর ইচ্ছা তিনি ইচ্ছাময়।

রশি ধরি যেন সব পুতুল নাচায়।।

আদি পর্ব্বে যেই সব ভক্ত দল ছিল।

প্রেম-ভক্তি নিয়ে তাঁরা শুধু কেন্দে গেল।।

কঠিন মরুর মত জীবের হৃদয়।

ভক্ত অশ্রুবারি পেয়ে দ্রবীভুত হয়।।

সরস হইল ক্ষেত্রে কৃষি উপযুক্ত।

জ্ঞান-কর্ম্ম সম্মিলনে সৃষ্ট হল ভক্ত।।

ভক্তি রসে ক্ষেত্রে যারা সিক্ত করেছিল।

এইখানে তাঁহাদের কার্য শেষ হল।।

কৃষিকর্ম্মে সুনিপুণ আসে সেই দল।

যাঁহাদের দেহে মনে অবিনাশী বল।।

ত্রিবেণী-সঙ্গমে যথা মিশে তিন ধারা।

ওড়াকান্দী মিশে তিন ভক্তের ফোয়ারা।।

মহানন্দ দেবী চাঁদ আর শ্রীতারক।

তিন শক্তি মাতাইল বিশ্ববাসী লোক।।

ওড়াকান্দী এবে যারা করে যাতায়াত।

আদি মূল এই তিন প্রধান মহৎ।।

ইহাদের শক্তি প্রাণে পেয়েছিল যারা।

বিশ্ববাসী জীবগণে উদ্ধারিছে তাঁরা।।

ত্রিশক্তি করিল পূজা প্রভুগুরুচাঁদে।

অর্ঘ্য ছলে ভক্ত দলে দিল তাঁর পদে।।

মহাহৃষ্ট জগদিষ্ট হাতে ধরি লয়।

অপূর্ব্ব ভাবের খেলা জগতে খেলায়।।

তারকের অর্ঘ্য হল যাদব নকুল।

হরিবল মনোহর প্রেমেতে আকুল।।

রমণী নামেতে এক মহাশক্তিশালী।।

গুরুচাঁদ পদে তাঁর এ সব অঞ্জলি।।

মহানন্দ প্রেমানন্দ নাচিয়া বেড়ায়।

তারকের একযোগে পদে অর্ঘ্য দেয়।।

অশ্বিনী গোঁসাই যিনি সঙ্গীত-আচার্য্য।

মহানন্দে গুরুপদে করিলেন ধার্য্য।।

তাঁরে আশীর্ব্বাদ করে তারক রসনা।

গীত রচি পূরাইল মনের বাসনা।।

Page 283 start

সেই ভাবে হরিবর পেল আশীর্ব্বাদ।

এক সঙ্গে শিরে ধরে দোঁহাকার পদ।।

দেবীচাঁদ আনে অর্ঘ্য বহুদূর হতে।

পবিত্র কুসুম কাটী আনে এক সাথে।।

গোপাল বিপিন আর নেপাল গোঁসাই।

মাধব তপস্বীরাম সবে ভাই ভাই।।

ত্রিশক্তির অর্ঘ্য মধ্যে আছিল যাঁহারা।

‘মতুয়া সঙ্ঘের স্তম্ভ” সকলি তাঁহারা।।

পূর্ব্বের বৃত্তান্তে এবে আসিলাম ফিরে।

প্রভুর মনন জানি ইহারা কি কর?

এক বাক্যে এই সব ভক্ত দলে কয়।

“যাহা কর তাতে মোরা আছি দয়াময়।।

জাতি মান ধন জন দেহ প্রাণ মন।

রাঙ্গা পায় করিয়াছি সব মমর্পণ।।

তোমারে চিনি না মোরা এই জানি সার।

অক্ষয় মঙ্গলে ভরা ইচ্ছা যে তোমার।।

তুমি যাহা আজ্ঞা কর মোরা তাই করি।

জাতি মান সব তুমি বাঞ্ছাপূর্ণকারী।।”

একনিষ্ঠ এই সব ভক্ত আসি মিলে।

আপনারে ধরা প্রভু দেয় কুতুহলে।।

পরীক্ষা করিয়া প্রবু ভক্ত বাছি নিল।

আপনার ভাবে প্রভু আপনি ফিরিল।।

ধর্ম্ম অর্থ কাম মোক্ষ সর্ব্ববিধ নীতি।

দেখাইল গুরুচাঁদ সত্যভামা-পতি।।

ক্রমে ক্রমে সেই ভাব করিব লিখন।

গুরুচাঁদ প্রীতে হরি বল সর্ব্বজন।।

---০---