Page 558

শ্রীশ্রীপ্রমথরঞ্জনের রাজসূয় যজ্ঞ বা মহা বিরাট মহোৎসব

তেরশ চুয়াল্লিশ সালে মাঘের প্রথমে।

হইল বিরাট যজ্ঞ ওড়াকান্দি গ্রামে।।

দুর্গাপূজা রাসোৎসবে আলোচনা হ’ল।

মাঘে যজ্ঞ হ’বে বলি ঘোষণা করিল’।।

বঙ্গদেশে যে যে খানে যত ভক্ত রয়।

সকলে আনন্দ চিত্তে যজ্ঞে যোগ দেয়।।

ওড়াকান্দি, ঘৃতকান্দি, মল্লকান্দি হ’তে।

সহস্র সেবক আসি মেশে এক সাথে।।

যজ্ঞ কর্তা সাজিলেন প্রমথরঞ্জন।

এক সাথে এক মনে মন্মথরঞ্জন।।

চারি হোতা সিদ্ধ বাক্য করিলেন স্থুল।

গোপাল, যাদব আর বিপিন নকুল।।

কর্মাধ্যক্ষ মাধবেন্দ্র সঙ্গে নারায়ণ।

সেবক প্রধান হল ঠাকুর কিরণ।।

ভাণ্ডারী রাজেন্দ্র আর রায় সনাতন।

মল্লকান্দি বাসী দুই ধনী মহাজন।।

Page 559 start

নীরবে করিল কাজ অভিমন্যু নাম।

দোকানী সাজিয়া আছে সেই গুণধাম।।

পাটিকেলবাড়ী বাসী মনোহর নাম।

সঙ্গে শম্ভু দুই ভাই খাটে অবিরাম।।

হরিনগরেতে বাস জানি কাঞ্চিরাম।

ঠাকুর করিল পরে কাশীরাম নাম।।

ধোপড়া, দীঘড়গাতী আর জিকাবাড়ী।

যতেক মতুয়া সবে এল জোট করি।।

শ্রীশশীভূষণ বালা আর মনমোহন।

উদ্ভব চলিল সঙ্গে সে রাম জীবন।।

শীলটীয়াবাসী নাম শ্রীগিরিশচন্দ্র।

বহু কর্মী সঙ্গে এল হইয়ে আনন্দ।।

ঘৃতকান্দিবাসী যত সবে জনে জন।

মহাযজ্ঞ ক্ষেত্রে সদা করে বিচরণ।।

আশ্চর্য কতই কাণ্ড এবে শোনা যায়।

“প্রমথ করিছে যজ্ঞ ওড়াকান্দি গাঁয়।

পাতা চাল নিয়ে তোরা চলে যা’ সেথায়।।”

কত যে পাতার বোঝা এল যজ্ঞ ক্ষেত্রে।

দলে দলে লোক চলে দিবা কিংবা রাত্রে।।

তিন শত মন দধি হ’ল আয়োজন।

ইহা ভিন্ন ভক্তে আনে দধি অগণন।।

আমিষ বিহীন হ’ল যজ্ঞ আয়োজন।

ডাল, ভাজা, শুক্তা, দধি, লাবড়া ব্যঞ্জন।।

সুমধুর টক করি দিল সব পাতে।

সহস্রেক “চিন্তাপাত্র” খাটিল সভাতে।।

প্রমথ আদিত্য দণ্ডে আরম্ভ করিল।

যজ্ঞ শেষে দিবা দণ্ড কিছু মাত্র ছিল।।

লক্ষাধিক লোক যজ্ঞে করিল আহার।

হেন যজ্ঞ বঙ্গভূমে হয় নাই আর।।

যত চায় তত পায় খাদ্য সমুদয়।

পরিতৃপ্তি সহকারে সবে খাদ্য খায়।।

যজ্ঞ শেষে কিছু দধি উদ্বৃত্ত রহিল।

কর্মী দলে মিশে তা’তে কি কার্য করিল?

নাতি দীর্ঘ এক কূপ করিয়া খনন।

তার মধ্যে দধি রেখে করিল মন্থন।।

“শ্রীদধি-সমুদ্র” লীলা করে ভক্ত জনে।

সিনান করা’ল সেথা প্রমথরঞ্জনে।।

দেবী বীণাপাণি সঙ্গে প্রমথরঞ্জন।

এক সঙ্গে স্নান করে ভক্তের কারণ।।

প্রেমের তরঙ্গ যেন নামিল ধরায়।

কি যেন কি দেখি ভক্ত কেঁদে পড়ে পায়।।

গোপাল, বিপিন আর নকুল, যাদব।

শ্রীদধি সমুদ্রে স্নান করিলেন সব।।

আর যত ছিল ভক্ত একে একে সবে।

শ্রীদধি সমুদ্রে স্নান করে মহাভাবে।।

এভাবে বিরাট যজ্ঞ সুসম্পন্ন হ’ল।

“ধন্য যজ্ঞ” “ধন্য যজ্ঞ” সকলে কহিল।।

শ্রীগুরুচাঁদের লীলা নরে বোঝা ভার।

অজ্ঞানান্ধ মহানন্দ চোখে অন্ধকার।।

---০---