Page 509

ভক্তের বল শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ

ঘৃতকান্দিবাসী ভক্ত শ্রীকুঞ্জ বিহারী।

ভাগ্যগুণে দেখে কত লীলার মাধুরী।।

শ্রীমধুসূদন, কুঞ্জ এক গ্রামে বাস।

পূর্ণব্রহ্ম গুরুচাঁদে করেন বিশ্বাস।।

এক সঙ্গে দোহে যায় ওড়াকান্দি বাড়ী।

এক সঙ্গে ওঠে বসে নাহি ছাড়াছাড়ি।।

ইহাদের বিবরণ বলিয়াছি আগে।

বলিলে কুঞ্জ’র কথা মধুরেও লাগে।।

একদিন সেই কুঞ্জ ওড়াকান্দি যায়।

গিয়া দেখে গুরুচাঁদ হাঁটিয়া বেড়ায়।।

জোরে জোরে হাটে প্রভু নাহিক বিরাম।

মনে হয় শরীরেতে বহিতেছে ঘাম।।

কুঞ্জ যবে দণ্ডবৎ করিল চরণে।

প্রভু বলে “চুপ করে বস গে’ সেখানে।।”

হস্ত দিয়া দেখাইল শ্রীনাট মন্দির।

কুঞ্জ সেথা বসে রয় হইয়া গম্ভীর।।

এইভাবে এক ঘণ্টা গত হ’য়ে যায়।

হাঁটা সাঙ্গ করি প্রভু আসিল তথায়।।

দর দর ঘাম ঝরে প্রভুজীর গায়।

কুঞ্জকে তামাক দিতে বলে দয়াময়।।

Page 510 start

তামাক সাজিয়া কুঞ্জ প্রভু হস্তে দিল।

ধীরে ধীরে মহাপ্রভু টানিতে লাগিল।।

করজোড়ে কুঞ্জ তবে কহিছে বচন।

“এত পরিশ্রম প্রভু কিসের কারণ?”

প্রভু কয় “শোন কুঞ্জ প্রকৃত ঘটনা।

কা’র কাছে এই কথা করো না রটনা।।

ব্রহ্মদেশে অদ্য এক ধর্ম সভা হ’ল।

তারিণী সভায় যেতে নিমন্ত্রণ পল।।

তারিণীর বাঞ্ছা মনে করিবে বক্তৃতা।

“হরিচাঁদ পূর্ণব্রহ্ম” কবে সেই কথা।।

যাত্রাকালে তাই মোরে উদ্দেশ্যেতে কয়।

“ধর্ম সভা স্থানে প্রভু থাকিও সহায়”।।

আমি তার সাথে তাই ছিনু এতক্ষণ।

বহু পরিশ্রম হ’ল তাহার কারণ।।

ব্রহ্মদেশে কিবা হ’ল তাহার কারণ।

স্বমুখে তারিণী যাহা করিল কীর্তন।।

প্রভুকে স্মরণ করে সে তারিণী যায়।

উপস্থিত হইলেন সে ধর্ম সভায়।।

বক্তৃতা করিতে বাবু উঠিল যখন।

শূন্যভরে গুরুচাঁদে করে দরশন।।

অপূর্ব ভাবের ঢেউ হৃদয়ে উঠিল।

তারে দিয়ে সব কথা কে যেন বলা’ল।।

সভা অন্তে সবে করে “জয়” “জয়” “জয়”।

এরপরে গুরুচাঁদে দেখা নাহি পায়।।

সেই কথা পত্র যোগে তারিণী লিখিল।

কুঞ্জ দেখে বর্ণে বর্ণে সকলি মিলিল।।

পরে যবে গৃহে এল তারিণী সুজন।

তার কাছে শোনে সবে সেই বিবরণ।।

নিভৃতে তাহারে ডাকি কুঞ্জ সব কয়।

কথা শুনে তারিণীর বক্ষ ভেসে যায়।।

প্রভুর চরণে পড়ি বলে “দয়াময়”!

দুর্বলের বল তুমি বুঝিনু নিশ্চয়।।

এই জন্য বক্তৃতাতে কষ্ট পাই নাই।

এই জন্য “জয় পত্র” সেই দিনে পাই।।”

এইভাবে কান্দে ভক্ত শ্রীতারিণী বল।

দুর্বলের বল প্রভু ভকতের বল।।

গুরুচাঁদ লীলা কথা সুধা হ’তে সুধা।

মহানন্দ বলে খেলে যায় ভব ক্ষুধা।।

---০---