Page 416

ডক্টর মীডের ওড়াকান্দী হইতে চির বিদায় গ্রহণ

তেরশ’ আঠাশ সালে মার্গশীর্ষ গত হলে

শীত ঋতু ধীরে ধীরে করে আগমন।

সাধক, সন্ন্যাসী, ধীর মহামতি মীড বীর,

বঙ্গ হতে করিলেন বিদায় গ্রহণ।।

হেথা কার্য্য শেষ হয় ফিরে নিজ দেশে যায়,

ওড়াকান্দী পরে স্মৃতি রহিল বাঁচিয়া।

তাঁহার জীবন কথা সংক্ষেপে বলিব হেথা

শুনিবেন ভক্তগণে আগ্রহ করিয়া।।

আঠার শ’ ছিষট্টি সালে মধুর শরৎ কালে

এডিলেড শহরেতে জন্ম হ’ল তাঁর।

পিতা তার পুরোহিত মহামতি শুদ্ধ চিত

মধুর মূরতি তার শুদ্ধ ব্যবহার।।

একাদশ বর্ষকালে পিতা তারে দীক্ষা দিলে

সেই হতে প্রাণে তাঁর এল নবনল।

শিক্ষাতে অগ্রহণী ছিল রাজবৃত্তি লাভ হল

অস্ত্র ও ভৈষজ্য বিদ্যায় ফলে সেই ফল।।

দীনের লাগিয়া প্রাণে ব্যথা তাঁর সর্ব্বক্ষণে

জাগাতে পতিত জনে করিল মনন।

মাতৃ-আজ্ঞা অনুসারে আসিল ভারত পরে

পতিত-তারণ বৃত্তি করিল গ্রহণ।।

কিভাবে আসিয়া বঙ্গে মিশে গুরুচাঁদ সঙ্গে

পূর্ব্ব ভাগে সেই সব করেছি বর্ণন।

এবে বলি কোন ভাবে মীড চলিলেন তবে

করিল জীবন তরে বিদায় গ্রহণ।।

কিছুকাল পূর্ব্ব হতে পত্নী তরে নানামতে

বলে ‘‘পতি নিজ দেশে চলহে এখন।

তাঁর তাড়নাতে তাই মীড ভাবে ‘‘দেশে যাই’’

সেই ভাবে পরে করে বিদায় গ্রহণ।।

পত্নী সহ গেল চলি সবে মিষ্ট কথা বলি

সকলের প্রাণে বাজে বিদায়ের সুর।

বিদায় সভায় কর ‘‘কহিলাম সুনিশ্চয়

ওড়াকান্দী স্মৃতি প্রাণে রবে ভরপুর।।’’

মীড নিজদেশে গিয়ে মনে বহুসুখী হয়ে,

ওড়াকান্দী ভালবাসে তার স্মৃতি প্রাণে ভাবে

ওড়াকান্দী দেখে যেন শয়নে স্বপনে।।

Page 417 start

প্রভুজীর কাছে এসে বিদায় মাগিতে শেষে

বাক্য রুদ্ধ হল তাঁর নয়নেতে বারি।

অঞ্চল সিন্ধু নড়ে প্রভুর নয়ন ঝরে

দুই প্রভু করে করে রহিলেন ধরি।।

যাত্রার কিঞ্চিৎ আগে মীড গাঢ় অনুরাগে

মরমের কৃতজ্ঞতা জানা’ল প্রভুরে।

পত্র লিখি নিজ হাতে সব কথা লিখি তাতে

প্রভু হস্তে দিয়া গেল আপনার করে।।

অনুবাদ করি তাই এইখানে দিতে চাই

ইংরাজী ভাষায় মীড লিখিলেন যাহা।

মীডের ধারণা কিবা কোন ভাবে ঋণী কেবা

বর্ণনা করিব সুখে এবে আমি তাহা।।

---০---