Page 430 start

যাদবের ওড়াকান্দী গমন ও শ্রীশ্রীগুরুচাঁদের চতুর্ভুজ মুর্তি দর্শন

তারকের সঙ্গে সঙ্গে যাদব আসিল।

শ্রীধাম ওড়াকান্দী আসি পঁহুছিল।।

বারুণীর তীর্থক্ষেত্রে শান্তির আশায়।

দলে দলে কত লোক আসিতেছে হায়।।

দিকে দিকে শোনা যায় সোর শব্দ গোল।

আর কিছু নয় শুধু ‘‘বল হরিবোল।।’’

প্লাবনে বন্যার স্রোতে যথা বারি ধায়।

ধাম প্রতি সেই মত সবে ধেয়ে যায়।।

শ্রীধামের প্রতি যত হ’ন অগ্রসর।

গোস্বামীর ভাবে ক্রমে ঘটে ভাবান্তর।।

অবিরল নেত্র জল বক্ষ বাহি ধায়।

ভাবের তরঙ্গে যেন ঢলে পড়ে যায়।।

মনে হয় এইবার হইবে পতন।

প্রতিবারে সে যাদব করেন ধারণ।।

প্রেমের আগুণে যারা তারকের প্রাণ।

আরো জ্বলে শ্রীধামের যত কাছে যান।।

তারকের পরশনে যাদবের দেহ।

অসাড় অবশ যেন করি দিল কেহ।।

কেটে যেন গেল তার নয়নের ঘোর।

কেহ যেন কোন দুঃখে প্রাণ হ’ল ভোর।।

এই ভাবে ক্রমে তবে ধামে উপস্থিত।

যাদবের চিত্ত হ’ল প্রেমে পুলকিত।।

সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করি ধুলিতে পড়িল।

দয়া করে সে তারক তাহারে ধরিল।।

ডাক দিয়া যাদবেরে গোস্বামীজী কয়।

‘‘মানুষ দেখিবি যদি মোর সাথে আয়।।’’

এত বলি করে ধরি টানিয়া চলিল।

শ্রীগুরুচাঁদের ঠাঁই উপস্থিত হল।।

তারক সাষ্টাঙ্গে তাঁরে করিল প্রণাম।

চোখ ভরে জল তাঁর বহে অবিরাম।।

যাদব ভুমেতে পড়ি প্রণাম করিল।

আপনার অগোচরে নয়ন ঝরিল।।

মস্তক উঠায়ে যবে করে দরশন।

মহাভাবে যাদবের পূর্ণ হল মন।।

কি যে কি দেখিল তাহা বলিবার নয়।

যে দেখেছে যে বুঝেছে তাঁরে কিবা কয়।।

যাদব চাহিয়া দেখে গুরুচাঁদ কই?

চতুর্ভূজ মুর্তিধারী কেবা বসে অই।

কনক বরণ ছবি চতুর্ভুজ ধারী।

শঙ্খচক্র গাদা পদ্ম চারি হস্তে তাঁরি।।

মূর্তি দেখি যাদবের দেহে নাই বল।

অঝোরে তাঁহার চোখে ঝরিতেছে জল।।

ক্ষণমাত্র দেখা দিয়ে রূপ লুকাইল।

ফুকারিয়া সে যাদব কাঁদিয়া উঠিল।।

গুরুচাঁদ ডাকি তবে তারকেরে কয়।

‘‘সামাজিক কারে ধরে আনিলে হেথায়?’’

তারক কহিল ‘‘বাবা সকলি তোমার।

দয়া করে যাদবেরে করহে নিস্তার।।’’

গুরুচাঁদ ডাকি বলে যাদবের প্রতি।

‘‘ওড়াকান্দী মান্য করো’’ যাদব সুমতি।।’’

এই ভাবে যাদবের হল পরিচয়।

ভক্তি বলে চতুর্ভুজ মুর্তি দেখা পায়।।

বহুভাবে তাঁরে দয়া করে গুরুচাঁন।

আরে কিছু বলি আমি তাঁহার আখ্যান।

---০---