সিলেট ভ্রমনে সতর্কতা
১. বর্ষাকালে আসলে অবশ্যই ছাতা বা রেইনকোর্ট নিয়ে আসবেন। এখানে বৃষ্টি আপুর মন একদম নরম। হ্যাঁ আপনাকে দেখেই কান্না শুরু করে দিতে পারে।
২. সি.এন.জি ড্রাইভারদের কথায় কখনো বিশ্বাস করবেননা। এরা পযর্টক পেলে সোনার খনি হাতে পায়। চেষ্টা করবেন রিজার্ভ সি.এন.জি তে না চড়তে। দামাদামী করলে যাচাই করবেন। সিন্ডিকেট ভয়ানক।
৩. লোকাল চা-পাতা বলে যারা চা-পাতা বিক্রি করে ওইগুলো আসলে নিন্মমানের তাই না কেনাই উত্তম।
৪. বৃহস্পতি আর শুক্রবারে হোটেলে ভিড় একটু বেশি থাকে। অনেকে আসে মাজার জিয়ারতে। তাই এই দুটো দিনে আসলে একটু হোটেলটা কনফার্ম করে আসবেন যদি সাথে মহিলা থাকে।
৫. সিলেটে মনিপুরি মার্কেট হচ্ছে লামাবাজার। যদি মনিপুরি কাপড় কিনতে হয় তবে সেখান থেকে কিনবেন অন্যকোথাও থেকে নয়।
৬. ফকিরদের অত্যাচার মারাত্মক রকম। ট্রেন/বাস থেকে নেমেই শুরু। ওলেকাম টু লন্ডন ! একদম পাত্তা দেওয়া চলবেনা। একজনকে দিলেন তো আপনার পকেট খালি হতে আর সময় লাগবেনা।
৭. রাতে পরিবার নিয়ে কীন ব্রিজ বেড়াতে যাবেননা। এর বদলে সেলফী ব্রিজ (কাজির বাজার সেতু) যান। কীন ব্রিজে পরিবেশটা দিন দিন খারাপ থেকে আরো খারাপ হচ্ছে।
৮. কীন ব্রিজে রিক্সা নিয়ে আসলে সাবধান। বিশেষ করে ব্যাগ/পরনের গয়না ইত্যাদি নিয়ে প্রায়ই দৌড় প্রতিযোগীতা হয় এখানে।
৯. রিক্সা চড়লে অবশ্যই সাথে ভাংতি টাকা রাখবেন। নতুবা ১০ টাকার ভাড়া ২০ টাকাও দিতে হতে পারে।
১০. জাফলং/লালাখাল/বিছনাকান্দি এইসব জায়গায় বালুর মধ্যে সতর্ক থাকবেন। প্রায়ই শোনা যায় চোরাবালির কথা।
১১. যেহেতু অধিকাংশ পযর্টন স্পটে পানি সুতরাং সাতার না জানলে লাইফ জ্যাকেট সাথে নিয়ে আসতে পারেন অতিরিক্ত সতর্কতা হিসাবে।
১২. পযর্টন স্পটের হোটেলে না খাওয়াই উত্তম। যদি খেতেই হয় তবে অবশ্যই দামটা একটু কনফার্ম হয়ে বিসমিল্লাহ বলবেন। মনে রাখবেন ওরা জবাই দিতে কে সিলেটি আর কে পযর্টক সেটা দেখে না।
১৩. অধিকাংশ পযর্টনস্পটের রাস্তা চরম খারাপ। আর তাই সাথে প্যারাসিটামল অবশ্যই রাখবেন। বাংলার লন্ডন তো ভাই তাই উপরওয়ালাদের চোখ উপরেই থাকে।
১৪. ট্রেনে হিজারাদের অত্যাচার সহ্য করতে হবে। একটা ১০ টাকার নোট আর একটা ফুল সাথে রাখবেন। ১০ টাকাটা হিজরাদের আর ফুলটা ট্রেনের পুলিশকে দিবেন।
১৫. জাফলং এ প্যাকেজ থেকে সাবধান, ১০মিনিটের রাস্তা ৫ টাকার নৌকা ভাড়া দিয়ে পার হয়ে হাটলেই পেয়ে যাবেন। যতো ধরনের প্যাকেজ আছে সবগুলো থেকেই সাবধান নাহলে নিজেই প্যাকেজের অংশ হয়ে যেতে পারেন।
১৬. জাফলং মামার দোকান হতে মেইন স্পটের দূরত্ব মাত্র কয়েক মিনিটের সেখান গাড়ি নিয়ে মেইন স্পটে যাওয়ার কোন দরকার পড়েনা। সুতরাং হেটেই যান। গাড়িতে উঠলেই ২০০/৩০০ টাকা হাওয়া হয়ে যাবে।
১৭. যদি ট্রেনে করে সিলেট আসেন তবে প্লাটফর্মে থাকা রেস্টুরেন্টে খেতে যাবেননা। ওরা সব কিছুর দাম প্রায় ডাবল রাখে। এমনকি প্লাটফর্মে থাকা দোকান থেকে আপনাকে ১৫ টাকার পানির বোতল ২০ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। তাই সাবধান।
১৮. দুই ঈদের পরের কয়েকদিন এবং মে দিবসে সিলেটের ভাল ভাল সব খাবার রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ থাকে। একটু কনফার্ম হয়ে আসবেন।
১৯. শাহজালালের মাজারে কোন অনুষ্ঠান থাকলেও সমস্যা। বিশেষ করে ওরসের সময় সিলেটে হোটেলগুলোতে রুম পাওয়া দুষ্কর। তাই ওরসের আগের দিন থেকে শুরু করে ওরস শেষ হবার পরের দিন পযর্ন্ত না আসাই ভাল।
২০. মাজারে গেলে কখনো শিরনী খেতে যাবেননা। মানুষ দোকান থেকে শিরনী কিনে মাজারে দেয়। মাজার কর্তৃপক্ষ সুন্দর করে সেই শিরনী আবার দোকানে বিক্রি করে। অর্থাৎ শিরনী মাজার টু দোকান ঘুরতে থাকতে। এই লুপ কবে শেষ হয় তা একমাত্র উপরওয়ালাই ভাল জানে।
২১. মাজারে টাকা দিবেন না। এট টাকা মাজার কর্তৃপক্ষের পকেটে যায়। যদি একান্তই টাকা দিতে চান তবে আমি গরিব কি দোষ করলাম।
একবার আওয়াজ দেন। বান্দা আপনার সামনে এসে হাজির হবে।