ছবি তোলার টিপস
ছবি তোলার আগে
১.লক্ষ্য রাখতে হবে আলোর প্রতি। আলোটা কিসের? এটা কি প্রাকৃতিক আলো নাকি আর্টিফিসিয়াল লাইট। যদি প্রাকৃতিক আলো সূর্য মামা হয় তবে দেখতে হবে উনি কোন ডাইরেকশনে আলো ছড়াচ্ছেন। সূর্য মামার সাধারণত তিনটাডাইরেকশনে আলো ছড়ান। উনি যখন উদিত হন, ঠিক মাথার উপর থাকেন আবার অস্ত যান। ছবি তোলার জন্য পারফেক্ট সময় হল প্রথম এবং শেষটা। সূর্য যখন মাথার উপর থাকে তখন কারো ছবি তুলে দেখেন সাবজেক্টের চোখের নিচেছায়া থাকবে। আর তাই এই সময়ে ছবি তুলতে ফ্লাসের ব্যবহার করতে হবে। যদি ক্যামেরাটা এস. এল. আর হয় তবে ফ্লাসের সাথে অতিরিক্ত আলো নিয়ন্ত্রনের জন্য ফিল্টার অবশ্যই রাখতে হবে।
২.আবহাওয়ার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। সাধারনত প্রচন্ড গরমের সময় অর্থাৎ টেম্পারেচার যখন হাই থাকে তবে ছবিতে সাবজেক্টে লালটে ভাব চলে আসে। শীতের সময় একটু একটু ব্লু কালার পাওয়া যায়। শীতের দিনে যারা ছবি তুলেন তারানিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন তখন প্রকৃতি একটু মনমরা থাকে। এস. এল. আর ব্যবহারকারীরা সেই সময় ফিল্টার ব্যাবহার করতে হবে প্রকৃতির এই মনমরা ভাব দূর করতে।
৩.বৃষ্টির দিনেও ছবি তেমন ভাল আসবেনা যদি আকাশ অন্ধকার থাকে। তখন ফ্লাস ব্যাবহার করতে হবে। তবে বৃষ্টির পর যখন রোদ উঠে তখন কিছু সময় প্রকৃতির ১০০% কালার পাওয়া যায়।
৪.কালার মেচিং এ লক্ষ্য রাখতে হবে। সাদার মাঝে সাদা কোন সাবজেক্টের ছবি তোলা কঠিন। ফটোগ্রাফির ভাষায় যাকে হাইকি বলে। আবার অন্ধকারে কাল কিছুর ছবিও তোলাও কঠিন। একে লোকি বলা হয়।
৫.যেকোন নতুন জায়গায় ছবি তুলতে হলে প্রথমেই গিয়েই ওই জায়গার ছবি তুলা যাবেনা। এক্ষেত্রে কিছু সময় কাটাতে হবে পারফেক্ট ভিউ খুজে বের করার জন্য। কথা বলতে হবে মানুষের সাথে। সম্পর্ক তৈরী করতে হবে। বিশ্বাস জন্মাতে হবে।তাদের ইন্টারেষ্টিং বিষয় নিতে জানতে হবে।তারপর তাদের ইন্টারেষ্টিং বিষয় নিয়ে ছবি তুলতে হবে।
ছবি তোলার সময়
১. ছবি তোলার সবচেয়ে গুরুত্বপূ্র্ণ বিষয় হচ্ছে আমি কার ছবি তুলছি বা আমার সাবজেক্ট কে। বেশিরভাগ মানুষ এই জায়গাই বেশি ভুল করে। উদাহরণ দেওয়া যাক। ধরি পাহাড় এবং একজন মানুষের একটি সম্মিলিত ছবি তুললাম। সেখানেপাহাড়কে অনেক বড় দেখাচ্ছে আর মানুষটাকে একদম ছোট। তাহলে ওই ছবিতে আমার সাবজেক্ট কে? অবশ্যই পাহাড়। কেননা তাকে বড় করে এবং ফোকাস করে দেখানো হচ্ছে। চোখ ঘুরে ফিরে পাহাড়ের দিকেই নিবদ্ধ হবে। তাহলে মানুষটাসেখানে কি হলে? অবজেক্ট। যার কিনা সাবজেক্ট হওয়ার কথা ছিল। সহজ কথায় একটি ছবিতে আমার চোখ যেখানে বেশি যাবে সেটাই ওই ছবির সাবজেক্ট। এখন আপনি কাকে সাবজেক্ট রাখবেন সেটা আপনার বিষয়।
২. মাথার উপর বেশি স্পেশ রাখা যাবেনা। দেখা যায় অধিকাংশ ছবির ফ্রেমে একজন মানুষের মাথার উপর অনেক স্পেশ রাখা। এতে করে ওই ছবি তার সৌন্দয্য হারায়।
৩. সাবজেক্টের মুখ যদি সামনের দিকে না থাকানো থাকে এবং পাশের কোন কিছু দেখছে এমন হয় তবে যে দিকে তাকাচ্ছে সেদিক কাভার করতে হবে।
৪. সাবজেক্টকে ক্রপ করতে হলে হয় কাধ থেকে কনুই অথবা কনুই থেকে হাতের মধ্যে ক্রপ করতে হবে। কোন জয়েন্টে ক্রপ করা যাবেনা।
৫. ল্যান্ডসক্যাপে সবকিছু কাভার করা যাবেনা। এতে করে কোন কিছুই ভাল আসবেনা। ভাল হয় কোন স্পেশিফিক সাবজেক্ট ধরে ছবি তুলা।
৬. ল্যান্ডসক্যাপে সেন্টার লাইন কোথায় রাখবো এটা একটা প্রশ্ন। এক্ষেত্রে আমরা সেন্টার লাইন মাঝামাঝি রাখছি পারি। অথবা আকাশ যদি আকর্ষণীয় হয় তবে আকাশকে গুরুত্ব দিতে পারি। যদি ভূমি বা নদী/সাগর আকর্ষণীয় হয় তবে তাকেপ্রাধান্য দিতে পারি।
৭. পোট্রেট ছবি বা স্পেশিফিক কোন ব্যাক্তি বা ব্যাক্তিবর্গের ছবি তুলতে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে তাদের চোখের দিকে। চোখ কিন্তু একটা ইন্টারেষ্টিং সাবজেক্ট।
৮. ফ্রেমিং এর ক্ষেত্রে সব সময় খেয়াল রাখতে হবে ছবিতে যাতে অবাঞ্চিত বা ডিষ্টার্বিং ইলিমেন্ট না থাকে। ডিষ্টার্বিং ইলিমেন্ট কি? ধরুন আপনি কারো স্পেশিফিক হাতের ছবি তুললেন। ছবি তোলার পর দেখা গেল হাতের সাথে সামনে একটাগাছের পাতার ছবি চলে আসছে। আমাদের চোখ তখন আর স্পেশিফিক হাতে থাকলোনা। হাতের সাথে গাছের পাতাতে চোখ চলে যাবে ছবি তার সৌন্দর্য হারাবে।
#photography #DSLR #photography course #photography tips #photography shikte #dslr kinte
ছবি তোলার পর
১.ছবি তোলার পর প্রথম কাজটা হচ্ছে বাঁছাই পর্ব। এক্ষেত্রে আপনার কাছে যে ছবিগুলো আকর্ষনীয় মনে হবে না সেইগুলো ডিলেট করে দিবেন। ওয়েট !! কেন আকর্ষনীয় মনে হচ্ছেনা সেটা খুজে বের করতে হবে। যদি দেখা যায় আলো ঠিক মতআসেনি তবে তো আপনি ছবিটাকে ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট করে দিতে পারেন। ট্রাই ইট। যদি দেখেন এঙ্গেল পারফেক্ট হয়নি তবে এডিটরে ক্রপ করে ঠিক করে নিন। একটা ছবি ডিলেট করার আগে বেশ কয়েকবার ভাবুন। এডিটর দিয়ে কিন্তুঅন্ধকার ছবিকে আলোকিত করা যায়। আবার আলোকিত ছবিকেও অন্ধকার করা যায় সহজে।
২.এডিটরে নিয়ে মেটা ডাটা এড করুন। ছবিটার কপিরাইট পাবলিক নাকি প্রাইভেট রাখতে চান সিলেক্ট করে দিন।
৩. এডিটর কোনটা ব্যববহার করবেন? মোবাইল হলে Snapseed টা ট্রাই করুন। গুগলের প্রোডাক্ট এটা। এর চেয়ে ভাল এডিটর মোবাইলের জন্য আর হয়না। আর পিসি হলে লাইটরুম এবং ফটোশপ।
৪. লাইটরুমটা হল প্রাইমারী স্টেপের জন্য। এই যেমন ছবিকে একটু আলোকিত করা বেসিক এডিটিং ইত্যাদির জন্য। তবে লাইটরুমের সবচেয়ে পাওয়ারফুল দিক হল এটা দিয়ে ছবিগুলো অর্গানাইজড করে রাখতে পারবেন এবং এডিটিং করাছবি আপনার পিসিতে জায়গা দখল করবেননা।
৫. ফটোশপ হল এডভান্স এডিটিং এর জন্য। ছবি অর্গানাইজড করে রাখার জন্য নয়। বলে রাখা ভাল ফটোশপ দিয়ে এডিট করার ছবি কিন্তু ভাল একটা জায়গা দখল করবে আপনার হার্ডড্রাইভের।
৬. শেষ কথা হল যার ছবি তুলবেন অবশ্যই থাকে ছবিটা দিবেন। তার সাথে সম্পর্ক রাখবেন যাতে নেকস্ট টাইম আরো ভাল ছবি নেওয়া যায়।