ভ্রমণে গুরুত্বপূর্ণ
১.ব্যাকপ্যাক: যেকোন ভ্রমনে আপনার ব্যাকপ্যাকটি হতে পারে একটি বড় ইস্যু যদি সেটি অতিরিক্ত ওজনের হয় থাকে। ব্যাকপ্যাক এবং ব্যাকপ্যাকের ভিতরের মালামাল যথা সম্ভভ হালকা রাখুন। কিভাবে হালকা রাখবেন? টাওয়ালের বদলেগামছা নিন। শার্টের বদলে টিশার্ট নিন।
২.জুতা: ভ্রমনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ হচ্ছে আপনার জুতা। এমন একটি আরামদায়ক জুতা নির্বাচন করুন যেটি দিয়ে আপনি সহজে জল এবং স্থল উভয় জায়গায় যেতে পারেন। তাছাড়া একটি জুতা ঘরে বাহিরে সব জায়গায় ব্যবহারকরতে পারেন এমনি সিলেক্ট করুন। যদি কেডস নেন তবে সাথে স্যান্ডেল রাখতে হবে ঘরে ব্যবহারের জন।
৩.পোষাক:যথা সম্বভ আরামদায়ক পোষাক নির্বাচন করুন। দামী পোষাক এড়িয়ে চলুন। মেয়েরা অবশ্য গয়না পরিহার করুন।
৪.ওষুধ: খুবই গুরত্বপূর্ণ একটি জিনিস। আপনি যে ওষুধগুলো খাচ্ছেন বা খান সেগুলো অবশ্যই সাথে রাখবেন। নতুন জায়গায় পুরাতন রোগ কিন্তু নতুন করে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে।
৫.চশমা: আপনি যদি সিরিয়াস চশমা ব্যবহারকারী হোন তবে ব্যাকপ্যাকে আরেক জোড়া চশমা দিন। হয়তো দেখা গেল কোন কারনে আপনার চশমা ভেঙ্গে গেল বা হারিয়ে গেল তাহলে পুরো ভ্রমনটা মাটি হয়ে যাবে আপনার জন্য।
যাবার আগে জেনে নিবেন
১.সিজন: যেখানেই যাবেন ওখানে যাবার উপযুক্ত সিজনটা আগেভাগে জেনে নিবেন। পিক সিজনে গেলে অবশ্যই বাড়তি খরচ হবে সেটা মাথায় রাখবেন। আর অফ পিক সিজনে গেলে কি কি সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে তার প্রস্তুতি নিয়েযাবেন।
১.আবহাওয়া: নতুন জায়গায় যাবার আগে আগেভাগেই জেনে নিন সেখানকার আবহাওয়ার অবস্থা । হয়তো দেখা গেল আপনি যেখানে যাচ্ছেন সেখানে তীব্র ঠান্ডা বা পচন্ড গরম।। তাই যাবার আগে সেখানকার বর্তমান আবহাওয়ার অবস্থাজেনে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন। বর্ষার সময় গেলে সাথে অবশ্যই রেইন কোট বা ছাড়া রাখবেন।
২.স্থানীয় খবর: চেষ্টা করবেন সেখানকার স্থানীয় কিছু খবর জেনে যেতে। এমনও হতে পারে হয়তো সেখানে কোন সমস্যা চলছে যেখানে আপনি যাচ্ছেন। তাই জায়গাটি নিরাপদ কিনা তা জেনে যাবেন।
৩.রোগব্যাধী: নতুন জায়গায় কোন রোগের সমস্যা বেশি। সেখানে গেলে কোন রোগে আক্রান্ত হতে পারেন তা আগেভাগে খবর নিয়ে যাবেন। যেমন পার্বত্য চট্রগ্রাম গেলে মশার কামড়ে আপনার ম্যালেরিয়া হতে পারে। তাই যাবার আগেঅবশ্যই ওডোমোস ক্রিম নিয়ে যেতে হবে।
৪.খাবার: যে জায়গায় যাবেন ওই জায়গার কোন কোন খাবার বিখ্যাত তা জেনে যাবেন। ট্রাই করবেন সেই খাবারগুলো স্বাদ উপভোগ করতে। তাছাড়া ওখানকার কোন রেস্টুরেন্টগুলো ভাল তা অবশ্যই জেনে যাবেন।
৫.হোটেল: যাবার আগে অবশ্যই যে জায়গায় যাচ্ছেন সেখানকার কয়েকটি ভাল হোটেলের নাম এবং ঠিকানা আলাদাভাবে লিখে নিয়ে যাবেন। হয়তো আপনি একটি মাত্র হোটেলের নাম নিয়ে গেলেন বা আগে ওখানে থেকেছেন পরে গিয়ে দেখলেনসেখানে কোন সিট খালি নাই তাহলে বিপদে পড়ে যাবেন। অবশ্য আগে থেকে থাকার ব্যবস্থা করে নিলে ভাল হয়।
৬.কেনাকাটা: যে জায়গায় যাচ্ছেন সেখান থেকে কি কি কিনতে পারবেন তা জেনে নিন আগেই। কিভাবে জানবেন? নেট ঘেটে জানবেন। যেমন আপনি সিলেটে আসছেন সিলেটের চা, সাতকরা, আনারস, মনিপুরি কাপড় বিখ্যাত। আপনি তাকিনতে পারেন।
৭.নেটওয়ার্ক: যেখানে যাচ্ছেন সেখানকার কোন মোবাইল অপারেটারের নেটওয়ার্ক ভাল তা জেনে নিবেন।
ভ্রমনকালিন অবস্থায় খাবার
১.পানি/ডাবের পানি: ভ্রমনকালীন অবস্থায় চেষ্টা করবেন বেশি বেশি করে পানি/ডাবের পানি পান করতে। এতে করে সহজে দূর্বল হয়ে পড়বেননা।
২.কলা: ট্রেকিং বা হাইকিং করলে অবশ্যই চেষ্টা করবেন কলা খেতে।
৩.স্থানীয় ফলমূল: যেখানে যাবেন ওখানকার স্থানীয় ফলমূল খাবেন। প্রচুর শক্তির পাশাপাশি ফ্রেস জিনিস খেতে পারবেন।
৪. স্যালাইন/গ্লুকোজ/খেজুর/বাদাম বার: ট্রেকিং বা হাইকিং করলে সাথে স্যালাইন বা গ্লুকোজ এবং খেজুর বা বাদাম বার নিয়ে যাবেন।
সাথে যা মাষ্ট রাখবেন
১.পলিথিন: দু’তিনটা পলিথিনের ব্যাগ অবশ্যই সাথে রাখুন। এই জিনিসটা ভ্রমনে মারাত্বক কাজে লাগে। ভেজা কাপড় বহন করা থেকে শুরু করে, পানিতে আপনার মোবাইলকে নিরাপদ রাখা, বৃষ্টি থেকে মাথাকে বাচাঁনো, কেনাকাটা করলে তাবহন করতে পলিথিনের জুড়ি নাই। তাছাড়া গাড়িতে বমি করলেও পলিথিন লাগবেই।
২.রোদ চশমা: যদি আপনি সানগ্লাস ব্যবহার করেন তবে তা সাথে রাখবেন।
৩.রেইনকোর্ট/ছাতা: যদি বৃষ্টির দিনে কোথাও বেড়াতে যান তবে সাথে রেইনকোট বা ছাড়া অবশ্যই রাখবেন।
৪.জুতা পালিশ: সাথে নিন কাজে দিবে।
৫.পারফিউম: পারফিউমের কথা নতুন করে বলার কিছু নাই। এটা অবশ্যই রাখবেন।
৬.মোবাইল চার্জার + পাওয়ার ব্যাংক: মোবাইল চার্জার সাথে থাকলেও একটা পাওয়ার ব্যাংক নিবেন। বলা তো যায়না স্মার্ট ফোনগুলো কখন আনস্মার্ট হয়ে যায়।
৭.টিস্যু: টিস্যু একটা মারাত্মক কাজের জিনিস। অবশ্যই কয়েক প্যাকেট টিস্যু সাথে রাখবেন।
৮.সাবান: ছোট একটা সাবান সব সময় সাথে রাখবেন। নতুন জায়গায় সাবান নাও পেতে পারেন। তাছাড়া যেকোন সময় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে সাথে সাবান থাকলে নিশ্চিত থাকা যায়।
৯.শ্যাম্পু মিনি প্যাক: দু’তিন প্যাকেট শ্যাম্পু সাথে রাখবেন। কাজে দিবে।
১০.এডোমস ক্রিম: পাহাড়ী অঞ্চলে গেলে সাথে এডোমস ক্রিম রাখবেন। মশার উপদ্রুপ থেকে রক্ষা পাবেন।
১১.পেষ্ট-ব্রাশ: এটা তো অবশ্যই সাথে রাখবেন।
১২.চিরুনী: এটা ও সাথে রাখবেন।
১৩.গ্যাসের ট্যাবলেট, প্যারসিটামল, হিস্টাসিন, স্টিমিটিল, এমোডিস, ব্যান্ডেজ: নতুন জায়গার নতুন খাবার ট্রাই করতে গিয়ে পেটে সমস্যা বাধতে পারে তাই গ্যাসের ট্যাবলেট আর এমোডিস অবশ্যই সাথে রাখুন। যদি বমির সমস্যা থাকে তবে বমির জন্যও ওষুধ নিয়ে যাবেন। আর দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে জ্বর বা শরীর ব্যাথার জন্য প্যারসিটামল তো অবশ্য সাথে রাখবেন। কিছু ব্যান্ডেজও নিয়ে যান বলা তো যায়না কখন কাজে লাগে।
১৪.ক্যামেরা, চার্জার: যদি ক্যামেরা সাথে নেন তবে ব্যাটারী ফুল চার্জ দিয়ে নিবেন। আর মেমোরী কার্ডটা খালি করে নিয়ে যেতে ভুলবেননা কিন্তু। সাথে অবশ্যই চার্জার রাখুন।
১৫.হেডফোন: ভ্রমণে গান শুনার জন্য হেডফোনটা অবশ্যই সাথে রাখুন। ব্যাকপ্যাকের এমন জায়গায় রাখুন যাতে সহজে খুজে পান।
১৬.মাস্ক: ছোট একটা মাস্ক সাথে রাখবেন। কোথাও ধুলা থাকলে কাজে লাগবে।
১৭.পানি: পানি পান করুন আর নাই করুন ভ্রমণে সব সময় একটা পানির বোতল (পানিসহ) সাথে রাখবেন।
১৮.কার্ড: আপনার যদি আইডি কার্ড বা বিজনেস কার্ড থাকে তবে তার কয়েকটি ফটোকপি ব্যাগের মধ্যে এমনিতেই রাখুন। প্রয়োজনে কাজে দিবে। তাছাড়া ব্যাগ হারিয়ে গেলে ফেরত পাবার সম্ভাবনা থাকে।
১৯.লাইফ জ্যাকেট: নদী পথে কোথাও গেলে সাথে লাইফ জ্যাকেট রাখতে পারেন।
২০.ছবি/কলম: আপনার কয়েক কপি ছবি আর একটি কলম সাথে রাখবেন। কাজে লাগতে পারে যেকোন সময়।
লিষ্ট দেখে ভয় পাবেননা। এই জিনিসগুলো ছোট কিন্তু মারাত্বক কাজের। কিছু জিনিস যেমন ওষুধ/রেইনকোট/ছাড়া/সাবান/মাস্ক ব্যবহার করা নাও লাগতে পারে। ব্যবহার করুন আর নাই করুন সাথে রাখুন। বলা তো যায়না বিপদ কখন আসে।
ভ্রমনে যা করবেননা
১.স্থানীয় মানুষ এবং তাদের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি হুমকি এমন কিছু করবেননা।
২.আপনার কারনে কেউ যাতে বিরক্ত না হয় সেটা খেয়াল রাখবেন। অথযা শব্দ করে বা গান বাজিয়ে কাউকে বিরক্ত করবেননা।
৩.ধুমপান থেকে বিরত থাকবেন। আর করতে হলে সেটা যেন নির্জন জায়গায় গিয়ে করবেন।
৪.অপচনশীল দ্রব্য যত্রতত্র ফেলে আসবেননা। অবশ্যই তা ডাষ্টবিনে ফেলুন।
৫. প্রকৃতি দেখেতে যাচ্ছেন প্রকৃতির ক্ষতি হয় এমন কিছু করবেননা।