রঙ্গিন পর্দা
একটা সময় ছিল যখন রাস্তাঘাটে তেমন একটা মেয়েদের দেখা যেতনা। কদাচিৎ দু’একজন কে দেখা গেলেও বুঝার সাধ্য ছিলনা তার পরিচয়। বেশি দিন আগের কথা বলছিনা। আমার ছোটবেলার গ্রামের দৃশ্যটা বলছি। জানিনা তখন শহরের দৃশ্য কেমন ছিল। সেই সময়ে প্রেম নামক ব্যাধিটা আমাদের অজানা ছিল। স্কুলে কোন কারনে কোন ছেলে কোন মেয়েকে লক্ষ্য করে চোখ টিপা দিলে সেটা নিয়ে সারা গ্রামে তোলপাড় শুরু হয়ে যেত। অনেক সময় ছেলেটাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার পযর্ন্ত হতে হয়।পরিবার প্রতিবেশীদের কাছে তাকে হেনাস্থা হতে হত। চোখ টিপাটা তখনকার সমাজে মারাত্মক একটা ব্যাধি ছিল।
হারিকেনের আলো যখন বদলে যেতে লাগলো তখন তার সাথে পাল্লা দিয়ে সমাজটাও বদলানো শুরু হল। কারো বাড়িতে একটা সাদাকাল টিভি থাকা মানে বিরাট বড়লোকের পরিচয় ছিল তখন। আর পতনটা শুরু হয় এই বড়লোকের বড় বড় ছেলেমেয়েদেরকে দিয়ে। আস্তে আস্তে হাওয়া বদলালো। বড় লোকের বড় ঘর থেকে বড় বড় টিভিগুলো চলে এল মধ্যবিত্তে সাধ্যের বিত্তে। সমাজের সাদাকাল পর্দাটা কেটে গেল। আমরা তখন রঙ্গিন স্বপ্নে বিভর। আর এই স্বপ্নে মাঝে এসে যোগ দিল সাদা কাল পর্দার আরেক ইতিহাস।না তার অবস্থান ড্রয়িং রুমের বদলে বড় লোকদের পার্সোনাল পকেটের সম্পত্তি হয়ে গেল। বাকী ইতিহাসটা টেলিভিশনের মতোই। রঙ্গিন পর্দার রঙ্গিন স্বপ্নে আমরা এখনো বিভর।
অফিসের বিবাহযোগ্য ছেলেদের প্রায়ই প্রশ্ন করি ভাই বিয়েতো করবেন জানি তা বিয়ের পর ওই মেয়ের অতীত হিষ্টোরি যদি খারাপ শুনেন তখন কি করবেন শুনি। সবার চোখে-মুখে একটা বিষন্নতা লক্ষ্য করি। অনেকটা হতাশাগ্রস্থের মতো উত্তর আসে - ‘ভাই ভাল মেয়ে পাবেন কোথায়?’ সত্যিই কি আমাদের সমাজে ভাল মেয়ের অভাব? আফসোস লাগে। ছেলেরাও মডার্ন মেয়েদের নিয়ে খেলা করে কিন্তু বিয়ের প্রশ্নে সবাই রুবেল হোসেন হয়ে যায়। বোন তুমি কি রুবেল হোসেনের হ্যাপি হতে চাও? কাহিনী দেখে যদি কাহিনী না বুঝার সক্ষমতা তোমার না থাকে তবে তোমার জন্য আফসোস।