عن ابي هريرة رضي الله عنه في حديث فضيلة الذكر قال رسول الله صلي الله عليه وسلم فيقول ملك منهم فلان عبد خطاء ليس منهم انما مر لحاجة فجلس فيقول وله قد غفرت هم القوم لا يشقي جليسهم (اخرجه الشيخان)
অনুবাদ: হযরত আবু হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে যিকিরের ফযিলত সম্পর্কে এক হাদীসে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, একজন ফেরেশতা বললেন, (হে আল্লাহ) তাদের (যিকিরকারীদের) মধ্যে অমুক বান্দাহ বড় অপরাধী, সে তাদেরদলভূক্ত নয়। সে তার কোন প্রয়োজনে তাদের সাথে উপবিষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি তাকেও ক্ষমা করে দিলাম। আর তারা এমন সম্প্রদায় যাদের সঙ্গে উপবেশনকারী সকল ব্যক্তিই সৌভাগ্যবান। (মুত্তাফাকুন আলাইহি)
অধিকাংশ মাশায়েখকে দেখা যায় যে, তারা তাদের সিলসিলায় এমন ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভূক্ত করে নেন যারা যিকির আযকারে মনোনিবেশ করার বা নিজেদের ত্র“টি বিচ্যুতিকে সংশোধন করার ব্যাপারে উদাসীন। বাহ্যিক দৃষ্টিতে তাদেরকে সিলসিলায় অন্তর্ভূক্ত করা বেকার বাঅনর্থক মনে হয়। কিন্তু গভীরভাবে চিন্তা করলে এ বিষয়টি উপলব্ধি করা যায় যে, এই ব্যক্তি সিলসিলায় অন্তর্ভূক্ত হওয়ার কারণে তার বরকত ও কল্যাণ দ্বারা কোন না কোন ভাবে উপকৃত হন। কাজেই এ ধরণের সিলসিলায় অন্তর্ভূক্তি বা বাইয়াত কেবলমাত্র বরকত বাকল্যাণ লাভের নিমিত্তেই হতে পারে। বর্ণিত হাদীস এ বিষয়টিকে জোরদার করছে যে, আল্লাহর প্রিয়ভাজন বান্দাহদের সাথে উপবেশনকারী ব্যক্তিগণও বঞ্চিত হন না। প্রকাশ থাকে যে, যদি কোন ব্যক্তি কোন কামিল মুরশিদের সিলসিলার অন্তর্ভূক্ত হন তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেতার সাথে উঠা-বসা, চলাফেরা ও তার সাহচর্যের কারণে অন্ততপক্ষে সেই মুরশিদের সাথে এক ধরণের সম্পর্ক সৃষ্টি হয় যার ভিত্তিতে তার ‘ইসলাহে নফস’ বা আত্মশুদ্ধির সুযোগ তৈরী হয়।
এ প্রসঙ্গে ইমামে তরীকত হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর একটি ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে।
একজন মদপায়ীর তাওবাহঃ মখযনে আহমদীয়্যায় দ্বিতীয় আরেকটি ঘটনা বর্ণনা করেন- কলকাতায় ্ একজন সার্বক্ষনিক মদপায়ী ধনাঢ্য মুসলমান ছিল। তার শিরা-উপশিরায় মদ প্রবিষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সে হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এরখিদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করল- হযরত! মদপান আমার এমন অভ্যাসে পরিনত হয়েছে যে, আমি এক মুহুর্ত মদপান ছাড়া থাকতে পারব না। আমি সকল মন্দ কাজ থেকে বেঁচে থাকার জন্য আপনার কাছে তাওবাহ করছি; কিন্তু মদপান ছাড়তে পারব না। হযরত সায়্যিদআহমদ শহীদ বেরলবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি জবাব দিলেন কোন অসুবিধা নেই, তবে তুমি আমার সামনে মদপান করতে পারবে না।’ ঐ ব্যক্তি শর্ত মেনে নিয়ে সকল মন্দ কাজ হতে তাওবাহ করে তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করল। বাড়িতে গিয়ে তার মদপানের ইচ্ছে হলেচাকরকে মদ নিয়ে আসতে বলল। চাকর একটি পাত্রে মদ নিয়ে আসলে সে তা হাতে নিল। এমন সময় দেখল, হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি দাঁত দিয়ে আঙুল কামড়ে ধরে তার সামেন দাঁড়িয়ে আছেন। সাথে সাথে সে মদের পাত্র ফেলে দিয়ে তাঁরকাছে তাওবাহ করতে দাঁড়িয়ে গেল। কিন্ত্র দাঁড়িয়ে আর তাঁকে দেখতে পেল না। ভাবল এটা তার মনের ভ্রান্তি হবে। এই ভেবে আবার তার চাকরকে মদ নিয়ে আসতে বলল। চাকর মদ নিয়ে আসলে যেই মাত্র সে তা হাতে ধরল অমনি পূর্বের ন্যায় হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদবেরলবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে দেখতে পেল। সে মদের পাত্র ফেলে দিয়ে তাঁর কাছে তাওবাহ করতে তাঁর দিকে দৌড়ে গেল; কিন্ত্র তাঁকে দেখতে পেল না। এরপর সে ঘরের সকল দরজা বন্ধ করে দিয়ে মদ হাতে নিল । এবারও পূর্বের অবস্থা হল। অবশেষে বাথরুমে প্রবেশকরে মদ পান করনে চাইলেও সে পূর্বের ন্যায় হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে দেখতে পেল। ফলে সে মদের সকল পাত্র ফেলে দিয়ে মদপান একেবারে পরিত্যাগ করল। (হায়াতে সাইয়্যদ আহমদ শহীদ র.: পৃষ্টা-১২৯)