তাকলীদের পরিচয়
শাব্দিক বিশ্লেষণ
তাকলীদ শব্দটিও আরবী । অভিধানে এর অর্থ হলো- অনুসরণ করা, নকল করা, অনুকরণ করা, বেড়ী লাগানো, গলায় তরবারি ঝুলানো, কুরবানির জন্তুর গলায় মালা পড়ানো, হার পড়ানো ইত্যাদি ।
ফিকাহ্ বিশ্বকোষে তাকলীদের চারটি পরিভাষায় তাকলীদ শব্দ ব্যবহারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে,
ক) অভিভাবক বা বিচারক এর তাকলীদ । অর্থাৎ কাজে ও কর্মে তাঁদের অভিভাকত্ব গ্রহণ করা ।
খ) হাদী বা কুরবানির পশুর তাকলীদ অর্থাৎ হাদীর গলায় কিছু বেঁধে দেওয়া যাতে করে বুঝা যায় যে, তা কুরবানির পশু
গ) তাবীজ তাকলীদ করা বা তাবীজ কবজ বাঁধা
ঘ) দ্বীনের ক্ষেত্রে তাকলীদ করা অর্থাৎ দলীল প্রমাণ না জেনে দ্বীনের কোন ব্যাপারে অন্যের কথা গ্রহণ করা ।
পারিভাষিক বিশ্লেষণ
ক) আল্লামা শামসুদ্দিন কুরতুবী (ওফাত ৬৭১ হি)
উলামায়ে কিরামের নিকট তাকলীদ এর অর্থ হলো- কোন দলিল প্রমাণ ব্যতিরেকে কোন কথাকে গ্রহণ করে নেয়া । আর এ কথার উপর ভিত্তি করে বলা যায়- যে ব্যক্তি নবী করিম (সঃ) এর কথাকে তাঁর মু’জিযার ক্ষেত্রে কোনো যুক্তি-তর্ক ছাড়াই গ্রহণ করবে, সে মুকাল্লিদ বলে গণ্য হবে । আর যে এক্ষেত্রে সামান্য চিন্তা-ভাবনার আশ্রয় নিবে সে মুকাল্লিদ গণ্য হবে না । (কুরতূবী, আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনি আহমাদ (৬৭১ হিঃ), তাফসীরুল কুরতুবী
খ) আল্লামা ইসমাইল হাক্কী (রহঃ) এর তাক্বলীদের সংজ্ঞায় বলেন
তাকলীদ মানে মানুষের জন্য অন্য কাউকে, তিনি যা বলেন বা করেন সঠিক হওয়ার ধারনা নিয়ে কোনরূপ দলিলের অপেক্ষা না করে তাঁকে অনুসরণ করা । যেমন বলা যেতে পারে, এই অনুসরণকারী ব্যক্তি অন্যের কথা ও কাজকে দলিল-প্রমাণ ব্যতীত নিজের গলার হার স্বরূপ নেনে নিয়েছে ।
গ) আল্লামা ইবনে মালিক মিসরী (রহঃ) বলেন
অন্যের কথা বা কাজকে সঠিক বা সত্য জেনে, বিশ্বাস করে দলীলের চিন্তা ব্যতিরেকে অনুসরণ করে যাওয়াকে তাক্বলীদ বলে ।
তাক্বলীদের প্রকারভেদ
মূলতঃ তাক্বলীদ দু’প্রকারঃ
এক) তাক্বলীদ মুতলাক বা একই সময়ে অনেক মুজতাহিদ ইমামের অনুসরণ
দুই) তাক্বলীদে শাখসী বা নির্ধারিত একজন মুজতাহিদকে মান্য করা