এ উরসের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে ‘শাদী’ । এ জন্যই বর-কনেকে আরবী ভাষায় উরস বলা হয়। বুযুর্গানে দ্বীনের ওফাত দিবসকে এ জন্যই উসর বলা হয় যে, মিশকাত শরীফে -اثبات عذاب القبر শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে যখন মুনকার-নাকির কবরবাসির পরীক্ষা নেয় এবং যখন সে সেই পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়, তখন তাকে বলেন- نَمْ كَنَوْمَةِ الْعُرُوْسِ الَّتِىْ لَا يُوْقِظُهَ اِلَّااَحَبُّ اَهْلِه اِلَيْهِ আপনি সেই কনের মত শুয়ে পড়ুন, যাকে ওর প্রিয়জন ছাড়া আর কেউ উঠাতে পারে না। তাই মুনকার নকীর ফিরিশতাদ্বয় যেহেতু ওই দিনকে উরুস বলেছেন, সেহেতু উরস বলা হয়। অথবা এজন্য যে, ওই দিন জামালে মুস্তাফা (দ:) দেখার দিন। মুনকার নকির হুযুরকে দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করবেন, ওনার সম্পর্কে আপনার কি ধারণা? তিনিই তো সৃষ্টিজগতের দুলহা, সারা জগত তাঁরই ছোঁয়াছের প্রতিফলন। সেই মাহবুবে খোদার সাক্ষাতের দিন নিশ্চয় উরসের দিন। নিশ্চয় এ দিনকে ওরসের দিন বলা হয়। বাস্তব অর্থে প্রতি বছর ওফাত দিবসে কবর যিয়ারত করা, কুরআনখানি ও সদকা ইত্যাদি ছওয়াব পৌছানোকে উরস বলা হয়। উরসের উৎস হাদীছে পাক ও ফকীহগণের বিভিন্ন উক্তি থেকে প্রমাণিত আছে। ফতওয়ায়ে শামীর প্রথম খণ্ড زيارت القبورশীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে- رَوَى اِبْنِ اَبِىْ شَيْبَةَ اَنَّ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْةِ وَسَلَّمَ كَانَ يَاتِىْ قُبُوْرَ الشهَدَاءِ بِاُحُدٍ عَلى رَأسِ كُلِّ حَوْلٍ ইবনে আবি শাইবা (রা:) বর্ণনা করেছেন যে হুযুর আলাইহিস সালাম প্রতি বছর উহুদ যুদ্ধের শহীদদের কবরে তশরীফ নিয়ে যেতেন। তফসীরে কবীর ও তফসীরে দুর্রে মনসুরে উল্লেখিত আছে- عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْةِ وَسَلَّمَ اَنَّهُ كَانَ يَاتِىْ قُبُوْرَ الشُّهَدَاءِ عَلى رَأسِ كُلِّ حَوْلٍ فَيَقُوْلُ سَلَام عَلَيْكُمْ بِمَا صَبَرْ تُمْ فنعمَ عُقْبى الدَّارِ وَالْخُلَفَاءِ الْاَرْبَعَةُ هكَذَا كَانُوْا يَفْعَلُوْنَ হুযুর আলাইহিস সালাম থেকে প্রমাণিত আছে যে তিনি প্রতি বছর শহীদদের কবরে তশরীফ নিয়ে যেতেন এবং ওদেরকে সালাম দিতেন। চার খলিফাগণও অনুরূপ করতেন। শাহ আব্দুল আযীয ছাহেব ফতওয়ায়ে আযীযিয়ার ৪৫ পৃষ্ঠায় বলেছেন-
দ্বিতীয়ত : অনেক লোক একত্রিত হয় এবং খতমে কুরআন পড়া হয় আর খাদ্য দ্রব্য শিরনীর ফাতিহা দিয়ে সমবেত ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এ ধরণের রীতি হুযুর আলাইহিস সালাম ও খুলাফায়ে রাশদীনের যুগে ছিল না। কিন্তু কেউ যদি করে, তাতে কোন ক্ষতি নেই বরং জীবিতগণ কবরবাসির দ্বারা লাভবান হয়। ‘যুবদাতুন নসায়েহ ফি মসায়েলিয যবায়েহ’ গ্রন্থে শাহ আব্দুল আযীয ছাহেব (রহ:) মৌলভী আব্দুল হাকিম ছাহেব শিয়ালকোটির একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন। “মানুষের অবস্থা সম্পর্কে অবগত না হওয়ার কারণেই এ অপবাদ দেয়া হয়। কোন ব্যক্তিই শরীয়তের নির্ধারিত ফরযসমূহ ব্যতীত অন্য কিছুকে ফরয মনে করেনা। তবে নেক বান্দাদের কবরসমূহ থেকে বরকত লওয়া এবং ঈসালে ছাওয়াব, কুরআন তিলাওয়াত, শিরনী ও খাদ্যদ্রব্য বন্টন দ্বারা ওদের সাহায্য করা উলামায়ে কিরামের মতে ভাল। উরসের দিন এজন্য নির্ধারিত করা হয় যে, ওই দিন ওদের ওফাতের কথা স্বরণ করিয়ে দেয়। অন্যথায় এ কাজ কোন দিনই করা হোকনা কেন, উপকার রয়েছে”। হযরত শেখ আব্দুল কুদ্দুস গাঙ্গুহী ১৮২ নং পত্রে মাওলানা জালাল উদ্দিনকে লিখেছেন-
পীরগণের উরস ও তাঁদের তরিকা মতে কাওয়ালী পবিত্রতা সহকারে জারী রাখবেন) মৌলভী রশীদ আহমদ ও আশরাফআলী ছাহেবানের পীর হাজী ইমদাদুল্লাহ ছাহেব স্বীয় রচিত ‘ফয়সালা-এ-হাপ্ত মাসায়েল’ পুস্তিকায় উরস যায়েয হওয়া সম্পর্কে জোরালো অভিমত ব্যক্ত করেছেন এবং স্বীয় আমলের কথা এভাবে বর্ণনা করেন। ফকীরের বিনয় এ যে প্রতি বছর আমি আমার পীর মুর্শিদের পবিত্র আত্মার প্রতি ইসালে ছওয়াব করে থাকি। প্রথমে কুরআনখানি হয়। এর পর যদি সময় থাকে মীলাদ শরীফের আয়োজন করা হয় এবং উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে খাবার পরিবেশন করা ও এর ছওয়াবও বখশিশ করে দেয়া হয়। মৌলভী রশীদ আহমদ ছাহেবও মূল উরসকে জায়েয মনে করেন। যেমন ফতওয়ায়ে রশিদিয়া প্রথম খণ্ড কিতাবুল বিদআতের ৯৬ পৃষ্ঠায় বলেছেন- অনেক জিনিস প্রথমে মুবাহ ছিল কিন্তু পরে কোন এক সময় নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। উরস ও মিলাদ মাহফিলের বেলায়ও তাই হয়েছে। আরববাসী থেকে জানা যায় যে, মক্কা শরীফের লোকেরা হযরত সৈয়দ আহম্মদ বদ্দবী (রহ:) এর উরস অনেক ধুমধাম সহকারে পালন করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে মদীনা মনোয়ারার আলিমগণ হযরত আমীর হামযা (রা:) এর উরস করে থাকেন, যার পবিত্র মাযার উহুদ পাহাড়ে অবস্থিত। মোট কথা হলো, সারা দুনিয়ার মুসলমান, আলেম ও নেকবান্দাগণ বিশেষ করে মদীনাবাসী উরসের প্রতি আস্থাশীল এবং যেটাকে মুসলমানগণ ভাল মনে করে, ওটা আল্লাহর কাছেও ভাল বলে গণ্য। বিবেক ও বলে যে বুযুর্গানেদীনের উরস ভাল কাজ। কেননা,
প্রথমত: উরস হচ্ছে যিয়ারতে কবর ও সদকা খয়রাতের সমষ্টি এবং উভয়টা সুন্নাত। তাই দুই সুন্নাতের সমষ্টি (উরস) কিভাবে হারাম হতে পারে? মিশকাত শরীফে - زيارت القبور শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে যে, হুযুর আলাইহিস সলাম ইরশাদ ফরমান, আমি তোমাদেরকে যিয়ারতে কুবুর থেকে বারণ করেছিলাম اَلَافَزَوْرُهَا এখন থেকে নিশ্চয় যিয়ারত করবে। এর দ্বারা প্রত্যেক প্রকারের কবর যিয়ারতের বৈধতা বোঝা গেল, হয় প্রতিদিন বা বছরের পরে অথবা একাকী বা সমবেতভাবে যিয়ারত করা যায়। তাই নিজের পক্ষ থেকে এব্যাপারে শর্তারোপ করে সমবেতভাবে ও বছরের পর নির্ধারিত দিনে যিয়ারত করাকে নিষেধ বলাটা বাতুলতা মাত্র। নির্ধারিতভাবে হোক বা অনির্ধারিতভাবে হোক প্রত্যেক প্রকারের যিয়ারত জায়েয।
দ্বিতীয়ত: উরসের তারিখ নির্ধারিত থাকলে, লোকেরা সহজে জমায়েত হতে পারে এবং লোকেরা একত্রিত হয়ে কুরআনখানী, কলেমা তৈয়্যেবা, দরূদ শরীফ ইত্যাদি পাঠ করতে পারে এবং এতে অনেক বরকতের সমন্বয় ঘটে।
তৃতীয়ত: পীরের উরসের দিন মুরিদানেরা আপন পীর ভাইদের সাথে অনায়াসে সাক্ষাত করতে পারে এবং পরস্পরের অবস্থাদি সম্পর্কে অবগত হতে পারে। এর ফলে পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা বৃদ্ধি পায়।
চতুর্থত: এটা পীর অনুসন্ধান করার সুবর্ন সুযোগ। কোন উরসে গিয়ে দেখবেন যে ওখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক বুযুর্গানেদ্বীন, উলামায়ে কিরাম ও সুফিয়ানে ইজাম সমবেত হয়েছেন। সবাইকে দেখে, যার প্রতি আকৃষ্ট হবেন তার কাছে বাইয়াত হবেন। হজ্জ ও মদীনা শরীফের যিয়ারতও নির্ধারিত তারিখে হয়ে থাকে। এতেও উপরোক্ত ফায়দাসমূহ নিহিত রয়েছে। আমি দেওবন্দী গুরুদের অনেক কবর দেখেছি, যেখানে নেই কোন সমাগম, নেই কোন ফাতিহাখানি বা ঈসালে ছাওয়াব, না তাদের থেকে বা তারা কারো থেকে ফয়েয লাভ করে। এটা হচ্ছে ভাল কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পরিণামফল। -সুত্রঃ জা’আল হক ২য় খন্ড-
আসসালামুয়ালাইকুম। ভাই, প্রথমে আমি এমন কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করছি যে বিষয়ে সকল মুসলিমই একমত। পরে তার উপর ভিক্তি করে আমার মতামত জানাব।
১. ইসলামী শরিয়তের উৎস আল্লাহর বানী ও রাসুল (সঃ) এর হাদিস। ইজমা ও কিয়াস সেই বিষয়ে প্রযোজ্য যখন কোন উদ্ভূত সমস্যার বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সঃ) থেকে কোন নির্দেশ পাওয়া যায় না।
“আর একজন মুমিনের পক্ষে উচিত নয় বা একজন মুমিন নারীরও উচিত নয় যে যখন আল্লাহ ও তার রাসুল কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তখন সে ব্যাপারে তাদের কোনো মতামত থাকে। আর যে কেউ আল্লাহকে ও তার রাসুলকে অমান্য করে, সে নিশ্চয়ই বিপথে গেছে, স্পষ্ট বিপথ গমনে।”(সুরাহ- আল আহযাব, আয়াত ৩৬)
২. হাদিসের সঠিক মর্ম বুঝতে হলে সেই বিষয়ে সাহাবীগণের মতামত ও আমল অনুসরণ করতে হবে। উম্মতের মধ্যে তারাই সবচেয়ে সঠিকভাবে রাসুলের নির্দেশ অনুধাবন ও অনুসরণ করেছেন।
৩. আল্লাহর দ্বীনে এমন বিষয় উদ্ভাবন করা, যে বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সঃ) থেকে কোন নির্দেশ নেই, তাকেই সাধারণভাবে বিদআত বলা হয়। বিদআত সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য।
বিস্তারিত জানতে দেখুন - http://bit.ly/bidah_bn
৪. যদি কারও কোন বক্তব্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সঃ) এর কথার সাথে কোন ভাবে কনফ্লিক্ট করে, সেটা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। সে ব্যক্তি যেই হওন না কেন।
আসুন, এবার মুল আলোচনায় আসি। প্রথমত, আমি যে বিষয়টা বলতে চাচ্ছি সেটা আপনি নিজেই প্রমাণ করে রেখেছেন। আপনি বলেছেন, "এ ধরণের রীতি হুযুর আলাইহিস সালাম ও খুলাফায়ে রাশদীনের যুগে ছিল না।"। যেহেতু আপনি এই সত্যিটা স্বীকার করলেন এবং রাসুল (সঃ) বলেছেন,
"যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করবে যার প্রতি আমাদের নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত।" (বুখারী ও মুসলিম)
অতএব এই বিষয়টিও প্রত্যাখ্যাত। রাসুল (সঃ) আরও বলেছেন,
" আর সর্বোত্তম আদর্শ হচ্ছে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ। আর ধর্মের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হচ্ছে ধর্মে নতুন সৃষ্টি। (এটা বিদআত) আর সব বিদআতই পথভ্রষ্টতা।" (মুসলিম)
আমার মনে হয়, ওরস যে ইসলামের কোন অনুষ্ঠান নয়, একটা বিদআত, সেটা প্রমাণ করার জন্য এর পর আর কিছু না বল্লেও হত। তারপর ও বুঝার সুবিধার জন্য আমি আপনার ব্যাখ্যা থেকে দুএকটা বিষয়ে কথা বলছি।
প্রথমত, নামের বিষয়টা আপনি একটু খোলা মন নিয়ে খেয়াল করুন। আপনি বলেছেন, "মুনকার নকীর ফিরিশতাদ্বয় যেহেতু ওই দিনকে উরুস বলেছেন...", অথচ ফিরিশতাদ্বয় কোথাও উরস বা বিয়ের কথা বলেননি। অতএব আপনার এই বক্ত্যব্য সত্যি নয়। কাউকে কোন উপমা দিয়ে "কনের মত" বলা মানে অবশ্যই সেটা তার বিয়ের দিন বলা নয়। নামকরণের দ্বিতীয় অংশ আমার কাছে বেশি উদ্ভট মনে হয়েছে। আপনি আল্লাহর হাবীব (সঃ) কে ইচ্ছামত যে কোন নামে ডাকতে পারেন না। আপনি তাঁকে "দুলহা" বলছেন, আবার তাঁর সাথে দেখা হওয়ার দিনকে উরস/শাদী বলছেন... আসলে আপনি কি বোঝাতে চাইছেন? কিছু অসংলগ্ন কথা জোড়াতালি দিয়ে একটা ভিক্তিহীন বিষয়কে প্রমাণের চেষ্টা করার কি দরকার ভাই?
আপনি উল্লেখ করেছেন, "হুযুর আলাইহিস সালাম থেকে প্রমাণিত আছে যে তিনি প্রতি বছর শহীদদের কবরে তশরীফ নিয়ে যেতেন এবং ওদেরকে সালাম দিতেন। চার খলিফাগণও অনুরূপ করতেন।"। প্রথম কথা হলো, কবরে যাওয়া ও সালাম দেয়ার কথা হাদিসে আছে, কিন্তু উরস করার কোন নজির নেই। দ্বিতীয় কথা হলো, এই হাদিসের রেফারেন্স এখানে কেন দিয়েছেন? কারণ উরস করার কোন প্রমাণ আল্লাহর রাসুল (সঃ) ও তাঁর সাহাবাদের কাছ থেকে পাওয়া সম্ভব নয়। তাই অন্যান্য হাদিস যেখানে কবরে যাওয়ার বিষয় আছে সেগুলো উল্লেখ করছেন যদিও তা উরসের সপক্ষে কোন ভূমিকা রাখে না।
আপনি কবর জেয়ারত বৈধ হওয়ার কথা বলেছেন। এটা সঠিক। কিন্তু "প্রত্যেক প্রকারের কবর যিয়ারতের বৈধতা বোঝা গেল" তে আমার একটু ভিন্নমত আছে। "প্রত্যেক প্রকারের" নয়, শুধুমাত্র রাসুলাল্লাহ (সঃ) ও তাঁর সাহাবিদের থেকে যে ধরনের জেয়ারতের বর্ননা পাওয়া যাবে শুধু তাই বৈধ হবে। এখন আপনি ডোল-বাদ্য বাজিয়ে উরস করবেন আর মনে করবেন এটা "এক প্রকারের জেয়ারত", সেটা ঠিক হবে না। আপনারা যেভাবে ওরস করেন, মক্কা মদিনার লোকজনও সেরকম কিছু করে, এটা একটা মিথ্যা তথ্য। আপনি বলেছেন "সারা দুনিয়ার মুসলমান, আলেম ও নেকবান্দাগণ বিশেষ করে মদীনাবাসী উরসের প্রতি আস্থাশীল"। এটি সম্পুর্ন অসত্য অনুমান। ওরস প্রথম প্রচলন হয় ভারতে ও সেখান থেকে দ্রুত আমাদের দেশে সংক্রমিত হয়। আপনিতো এখন মধ্যপ্রাচ্যে আছেন, ভ্রান্তিতে ডুবে না থেকে ইচ্ছা করলেই খোজ নিয়ে দেখতে পারেন। অনেকেই ওরস হক হওয়ার প্রমাণ হিসেবে বিশাল লোকসমাগমের কথা বলেন। তাদের কাছে প্রশ্ন, দুর্গাপুজায় যদি এর চেয়েও বেশি লোকসমাগম দেখেন আপনি কি সেটাকেও হক মনে করবেন?
ভাই, আপনিতো জানেন যে রাসুলাল্লাহ (সঃ) বর্নিত হয়েছে, "আমি তোমাদেরকে এমন কোন কিছুর নির্দেশ দিতে ছাড়িনি যা তোমাদেরকে জান্নাতের নিকটবর্তি করবে আর জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে "। আর এটাও জানেন যে এই ওরসের নির্দেশ আল্লাহর নবী (সঃ) দেননি। তাহলে কেন এই নিছক সত্য-মিথ্যা-অনুমান মিশিয়ে প্রমাণের চেষ্টা? কি আশা করেন আপনি এর থেকে? যদি আল্লাহর রাসুলের কথা বিশ্বাস করেন, জেনে রাখুন যে এটা অন্তত আপনাকে জান্নাতের নিকটবর্তিও করবে না আর জাহান্নাম থেকে দূরেও সরাবে না। বরং এর উলটোটা করার ভয় আছে। কারণ, আল্লাহর নবী আমাদেরকে কবরকে ইবাদাতের স্থান বানানোর বিষয়ে বারবার কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন। (মুসলিম - ৯৬৮, ৫২৮, ৫২৯, ৫৩২। বুখারি - ৪৩৫, ৪২৭, ১৩৯০ ও অন্যান্য )
অন্য এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিজের ব্যাপারেই বলেন,
"আমার কবরকে তোমরা উৎসবের স্থান বানিও না।" (সুনানে আবু দাউদ ১/২৭৯)
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামকে সঠিকভাবে জানার, বোঝার, ও মানার তৌফিক দান করুন। বিদআত ও শির্ক থেকে আমাদের হেফাজত করুন। আমাদের অন্তরকে তৌহিদের আলোয় আলোকিত করুন। আমিন!