ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নাছিরনগর থানায় অবস্থিত ফান্দাউক দরবার শরীফ। সরাইল থেকে যে রাস্তাটি চলে গেছে নাসিরনগর সে রাস্তা ধরে ৬ কিলোমিটার অতিক্রম করলেই ফান্দাউক পৌঁছা যায়।
একসময় এ ফান্দাউক এলাকা ছিল হিন্দু প্রধান এলাকা। আনুমানিক ১০০ বছর আগে নাছিরনগর থানার নাছিরপুর সাহেব বাড়ী হতে সিপাহসালার সৈয়দ নাছির উদ্দিন (রহঃ) এর বংশীয় সৈয়দ আফতাব উদ্দিন সাহেব ফান্দাউক গ্রামে বসতি স্থাপন করেন।
উপমহাদেশের অন্যতম আধ্যাতিক প্রধান মিলনকেন্দ্র ফান্দাউক দরবার শরীফের মরহুমে আউয়াল পীরে কামেলে মোকাম্মেল হযরত শাহসূফী আলহাজ্ব সৈয়দ আব্দুস সাত্তার নকশেবন্দী, মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রহঃ) ও মরহুমে সানী পীরে কামেলে মোকাম্মেল হযরত শাহসূফী মোজাদ্দেদে জামান রাসূলনামা আলহাজ্ব সৈয়দ নাছিরুল হক মাছুম আল- ক্বাদরী, চিশতী, নকশেবন্দী, মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রহঃ) দ্বয় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অশিক্ষিত ও কুসংস্কারে র্জজরিত জনগোষ্ঠীকে আধ্যাতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা ছাড়াও কুসংস্কার মুক্তকরণে অনন্য অবদান রেখে গেছেন।
দরবার শরীফ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানঃ– অনভিজ্ঞ মুসলমানদেরকে শিক্ষিত করার লক্ষে জাগতিক ও আধ্যাতিক উভয় প্রকারের ইলমের তাৎপর্য অনুভব করে আত্মশুদ্ধির জন্য ফাতেহা শরীফ, মোরাক্বাবা, যিকির শিক্ষা দেওয়ার জন্য খানকা শরীফ প্রতিষ্ঠিত করেন এবং ১৯৫৯ সালে মরহুমে আউয়াল ফান্দাউক মদিনাতুল উলুম আলিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্নথেকে এই পর্যন্ত শতভাগ পাশ ও ছাত্রদের আমল আখলাক সুন্নতে নববীর পূর্ণ অনুসরণে অবদান রেখে যাচ্ছে। ১৯৮৬ সালে মরহুমে সানী ফান্দাউক মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তাছাড়া ফান্দাউক দরবার শরীফ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত আত্মশুদ্ধিমূলক অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আঞ্জুমানে খাদিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ আঞ্জুমানে যুব খাদিমুল ইসলাম ও বাংলাদেশ আঞ্জুমানে ইসলামী ছাত্র মহল ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে নিরলস খেদমত করে যাচ্ছে।
বর্তমান কার্যক্রম –সোনার বাংলার চতুর্দিকে খানকাহ,মাদরাসা ও বিভিন্ন দীনি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত আছে । এছাড়া শিরক বিদআত নাস্তুিক মুক্ত সমাজ গঠন, আল্লাহভোলা লোকদেরকে আলোর পথের পথিক ও বিশ্বনবী মুহাম্মাদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর খাটি আশেক বানানো ও তরিকতের আসল রুপ যেমন শারীয়াত-তারীকাত-হাকীকাত-মারেফাত এর পূর্ণ বাস্তবায়ন প্রকাশের লক্ষ্যে ফান্দাউক দরবার শরীফ প্রতি বছর সারা বাংলা জুড়ে শত শত মাহফিলে তাদের এই দাওয়াতি কাজ পরিচালনা করে থাকেন । এছাড়া প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের শেষ শুক্র ও শনিবার বার্ষিক ঈসালে সাওয়াব মাহফিল এবং প্রতি বৃহস্পতিবার সহ বছরের বরকতময় দিনগুলোতে মীলাদ মাহফিলের আয়োজন করে থাকে ।