মুসলিম শরীফের কিতাবুজ যুহুদ ওয়াররকায়েক অধ্যায়ে ৫৩ পৃষ্টায় বর্ণিত আছে, প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মক্কা ত্যাগ করে মদীনা শরীফের প্রান্ত সীমানায় প্রবেশ করলেন তখন নবী প্রেমে আত্মোত্সর্গীত সাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুম) এবং মদীনার শিশু,যুবক,বৃদ্ধ,বণিতা সকলেই প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে প্রাণঢালা সম্বর্ধনা ও অভ্যর্থনা জ্ঞাপনের জন্য এগিয়ে আসেন।হাদীস শরীফের এরশাদ হয়েছে তখন মদীনার নারী পুরুষ ঘরের ছাদ সমূহের উপর আরোহণ করেন ছোট ছোট ছেলে ও ক্রীতদাসগণ মদীনার অলিতে গলিতে ছড়িয়ে পড়েন,সকলে সমবেত কণ্ঠে “ইয়া মুহাম্মাদ”, “ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)” ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত করে তোলেন।
এ হাদীসের আলোকে নারায়ে রিসালাত,ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) শ্লোগান তোলার বৈধতাও সুস্পষ্ঠরূপে প্রমাণিত।উপরন্ত সাহাবায়ে কেরামগণের জুলুস বের করার প্রমাণ অত্র হাদীসে বিধৃত হয়েছে।তাছাড়া নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’এর হিজরতের সময় “সানিয়াতুল বিদা” নামক স্থান থেকে সাহাবায়ে আনছারগণ “আল্লাহু আকবার” “ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)” শ্লোগাণ দিয়ে প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন,প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’এর জন্মক্ষণে ও মিরাজের ঐতিহাসিক রজনীতে ফেরেস্তাগণ প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’এর সম্মানার্থে “জশনে জুলুস” বের করেছিলেন এছাড়া হিজরতের প্রাক্কালে মদীনার মুসলমানগণ ঐক্যবদ্ধভাবে রাহমাতুল্লিল আলামীন (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে অভ্যর্থনা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে “জাহরুল হারা” নামক স্থানে গমন জশনে জুলুসের এক অভ্রান্ত দলীল এবং সুদৃঢ় ভিত্তি।
(বুখারী শরীফ ১ম খন্ড ১৫৪ পৃষ্ঠা) হাদীসের বর্ণনাতে প্রতি মুহুর্তে সত্তর হাজার নূরানী ফেরেস্তা মদীনা মনোয়ারায় পবিত্র রওজা শরীফের চতুর্দিকে প্রদক্ষিন করছে এবং সালাত ও সালামের সওগাত ও নজরানা পেশ করছে এবং করতে থাকিবে।জশনে জুলুসের বৈধতা প্রমানে এটি ও এক নির্ভরযোগ্য সূত্র।এতে প্রতীয়মান হলো জশনে জুলুসে ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম) পালন করা বিদআত নয় বরং সুন্নাতের অন্তর্ভূক্ত এবং সর্বকালের প্রচলিত প্রথাসিদ্ধ সর্বজন গ্রাহ্য পুন্যময় আমল,এর বিরোধীকারীরা গোস্তাখে রাসূল ছাড়া কিছুই নয়।
আল্লাহপাকের প্রিয় হাবীব (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’এর জীবনাদর্শ অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন।আমীন!