সামজীর আহমেদ
হিঁয়াল লাগে বুকে
সামজীর আহমেদ
হিঁয়াল লাগে বুকে
খিলি করা পানের মতোন
রস-রাঙা ঐ মধুর বচন
শুনবো বলে পরান বান্ধি;
কিন্তুক তোর চলন ভরা
হেয়ালি খালি।
পোড়ামুখি,
সেইকথা তুই রাখিস ঢেকে
কথার ভিতর কথার বাঁকে।
ছলাকলার দারুণ কাজে
আছিস দেখি বড়ই সুখে
বুঝবি তুই কবে, সেই
কথাডার খুব অভাবে
আমার হিঁয়াল লাগে বুকে।
শব্দ
শব্দ এক প্রতারক সিঁড়ি
চূড়াতেই নিশ্চিত পতন তোমার
জালের মতো টান দিলে
উঠে আসবে আর্তনাদ,
রঙিন মুখোশ
গভীরে বিষাদ।
রূপান্তর
প্রাকৃতিক কানুন গুণে পাগারের মেঠোজল
সঞ্চয়ী হিসেবে জমে আকাশের গায়ে
থমথমে প্রতীক্ষায় মাটির টানে।
ফসলের জীবন জমে কৃষকের গোলায় শস্যের রূপান্তরে
পরবর্তী বীজ মৌসুমে আমাদের বোধিতে জন্মায়-
অনেক ভাঙন, আস্বাদ কিংবা অপচয়, মৃত্যু নয়।
গাণিতিক
বাদামের খোসায় লেগে থাকা সময়
একদিন ফিরায় পোড়াসম্বিত
ঝরাব কুলে হাসে পৃথিবীর গণিত
আমরা গণিতমূর্খ; চেয়ে বসি
এক আর একে তিন।
জল, চুম্বক আর আশিক জানে
এক শুধু একেই বিলীন।
অব্যয়
ধূলার পাহাড়ে ঝাপটে উঠা পাখির ডানার বাতাসে উড়ে ধুলোচাপা কথাগুলো সব কাহিনি হতে থাকে
আর কাহিনি মানে তো ঠিকানাহীন রাস্তা যার দু'পাশে সারিসারি কৃষ্ণচূড়া, আর রাধাচূড়া।
এসব কথা ভাবতে ভাবতে বুকের একপাশ লাল আর একপাশ হলুদ হতে থাকে।
তবু পূজার সময় শেষ হয় না বলে ধূপ আর কুয়াশার চত্বর হয়ে থাকে হৃদয়।
জিজ্ঞেস করার মতো পড়ে থাকে না কিছুই।
নীরবতার নিজস্ব ভাষায় টের পাই জল আর জলজ জীবন প্রবাহের ধারা।
নির্জন পুকুরের ধারে শিকারের ধ্যানে অথবা শীতনিদ্রার ঘোরে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে নির্বোধ মাছরাঙা;
ধ্যান ভাঙলে পরে মাছের লোভ যার হৃদয়ে বাঁচে না।