..."আমাদের যখন প্রেম হয়, আমি তখন সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। তরুণ বয়স, বন্ধুদের আড্ডায়, চাঞ্চল্যে কেটে যেতো অবসর সময়। রূপকথা তখন মাত্রই নতুন এসেছে ক্যাম্পাসে, প্রথম দেখেছিলাম একটা ফাংশনে, দূরে দাঁড়িয়ে বান্ধবীদের সাথে ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিল। আমি সচরাচর খুব বন্ধুপ্রিয় মানুষ, কাছের বন্ধুদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টায়, হই-হুল্লোড়ে দিব্যি সময় কেটে যেত। কিন্তু সেদিনই কি যেন হলো আমার, প্রথমবার রূপকথাকে দেখেই, আমার মনে হয়েছিল ভেতরে কিছু একটা হয়ে গেছে, লেখার ভাষায় সেটাকে ঠিক কোন শব্দটি দিয়ে বর্ণনা করবো, আমি জানিনা। মেয়েটা যেন ঠিক রংতুলির আলতো আঁচড়ে আঁকা, ঠিক যেন শিল্পীর ক্যানভাসে রাখা কোনো পোর্ট্রেট, যাকে দূর থেকে শুধু দেখেই কাটিয়ে দেয়া যায় অজস্র প্রহর...
কিন্তু মানুষের মন তো আর প্রহর মানে না। সুতীব্র আকর্ষণে, অনন্ত অনুভবে মানুষ ছুটে যেতে যায়। আমার ক্ষেত্রেও সেটিই হয়েছিল। কয়েকদিন দেখেছিলাম তাকে, ক্যাফেটেরিয়ার সামনে কফির কাপ হাতে, সকাল ৯ টার মিষ্টি রোদ যখন তার স্নিগ্ধতায় জড়ানো ঘুম ঘুম চোখে ক্লাস করে আসা চেহারায় এসে পড়তো, যেন মনে হতো কোনো শিল্পী তার রংতুলির ফিনিশিং টাচটা দিয়েছেন সেই ক্যানভাসে। আমার অনুভূতির ছোট্ট জগৎটা ওলট-পালট করে দেয়া সেই স্নিগ্ধ ঘুম ঘুম চোখে জড়ানো মানুষটার কাছে আমি না গিয়ে আর পারিনি। একদিন সাহস করে লাইব্রেরির পাশের সিঁড়িতে তার হাতে ছোট চিরকুটটা গুঁজে দিয়ে শুধু এক নিঃশ্বাসে বলেছিলাম, "হাই, আমি সাদমান। সেকেন্ড ইয়ার। এটা তোমার জন্য। বাসায় গিয়ে দেখো, কেমন?"
_______________________________
গল্পঃ "রূপকথা কিংবা বিচ্ছেদ" (১ম অংশ)
পরবর্তী অংশের লিংকঃ রূপকথা কিংবা বিচ্ছেদ (২য় অংশ)
(আমার ওয়েবসাইটে পর্যায়ক্রমে লেখাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।