"অপারেশন কিং প্যালেসঃ ২য় অংশ"
(গল্পটা কল্পনাপ্রসূত। ভুলত্রুটি ক্ষমা করে বিনোদনের স্বার্থে পড়ার অনুরোধ রইলো)
.......................
একটা নির্জন বন, তিন দিকে উঁচু পাহাড়, একপাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট পাহাড়ি নদী। নির্জন জঙ্গলের ভেতরে দিনের বেলায়ও সূর্যের আলো পৌঁছায় না। জঙ্গলটা খুব বেশি বড় নয় , কিন্তু এই জঙ্গলে কেউ আসে না। কারণ? জঙ্গলটা যে সাপের রাজ্য!!! কিলবিল করে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রায় পঞ্চাশেক সাপ, আর সেই সাপেদের জঙ্গলে আছে একটা দুইশ বছরের পুরোনো অভিজাত রাজবাড়ি, বাড়ির সাইনবোর্ডে বড় করে লেখা "দ্যা কিং প্যালেস"...
রাতে দূরের আকাশে চাঁদ উঠেছে, গাছের ছায়ায় সবটা মিলিয়ে কেমন যেন একটা ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি করে। হিকোচগামা কিং Minhazul তার খাস কামড়ায় ছোট একটা বাতি জ্বালিয়েছে। হিল ট্র্যাক্ট ও মিজোরাম রাজ্য মিলিয়ে তৈরি হওয়া নতুন ড্রাগ কার্টেলে সাম্প্রতিক আধিপত্য করা প্রতাপশালী এক ড্রাগলর্ড এই হিকোচগামা কিং। দশ বছর আগে কক্সবাজারের ড্রাগ কার্টেলকে সরিয়ে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ডের রুটের প্রধান ড্রাগ ডিলারের কর্তৃত্বও তার হাতে। হিল ট্র্যাক্টের সবচেয়ে দুর্গম অঞ্চল, যেগুলোতে বাংলাদেশের অন্য জেলার মানুষের পা পড়েনি, সেগুলোতে তার সেইফ হাউস। আর সবচেয়ে অভিজাত সেইফ হাউসটা হলো এই কিং প্যালেস।
হিকোচগামা কিং এই জোনে প্রায় দশ বছর রাজত্ব করলেও, সে কখনো দেশের অন্য ভূখন্ডে যেতে চায়নি। তবে আজই প্রথম তাকে বাধ্য হতে হয়েছে। পূর্বাঞ্চলে নতুন অফিসার আসার পর থেকেই কেন যেন তার লোকেরা ঠিকভাবে কাজ করতে পারছিল না। চট্টগ্রাম থেকে ছদ্মবেশে আসা দুই সদস্যকে খাগড়াছড়ির হাইওয়ে থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে এই অফিসারের টিম। জিজ্ঞাসাবাদ করার আগেই হিকোচগামা কিং তার প্রভাব বোঝাতে দুই পুলিশ সদস্যকে বিস্ফোরণে উড়িয়ে দিয়েছে। শুধু কি তাই? আজ বিকেলেই ঢাকায় বেসরকারি সিভিল ক্রাইম সার্ভিসের একটা পুরনো বিল্ডিং উড়িয়ে দিয়েছে। নিশ্চয়ই সেগুলো আজ টক অফ দা কান্ট্রি। হিকোচগামার আজ তাই খুব আনন্দ। গান গাইতে ইচ্ছে হচ্ছে তার। সে নিজেকে নিয়ে গানও বানিয়েছে দুই লাইনের:
"হিরোইন-কোকেন-চড়স-গাজা-মারিজুয়ানা,
আমিই সেই রাজা, কিং প্যালেস যার ঠিকানা"
গান শেষ হতেই দুইপাশে হর্ষধ্বনি ও হাততালি।
- "ওয়েল ডান বস, এটা খুব দরকার ছিল। আশা করি ওরা বুঝবে কাকে নিয়ে খেলতে যাচ্ছে ওরা"
বললো Munifa। হিকোচগামার ডান হাত এই ভয়ংকর যোদ্ধা ও ট্যাকটিকাল প্ল্যানার ফিলিপাইনস ও থাইল্যান্ডের বিভিন্ন ড্রাগ কার্টেলে কাজ করেছে, এই রুটের বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ এবং একইসাথে হিল ট্র্যাক্টে হিকোচগামার আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় বড় ভূমিকা রেখে চলেছে। অসম্ভব ধুরন্ধর ও ঠান্ডা মাথার এই যোদ্ধা তলোয়ার ও মেশিনগান একইরকম দক্ষতায় চালাতে পারে। সে নিজের নাম দিয়েছে "কুইন অফ স্নেইকস" তথা সাপেদের রাণী। এটার কারণও আছে। ব্রাজিলের সাও পাওলোর ব্ল্যাক মার্কেট থেকে গোল্ডেন ল্যান্সহেড সাপ আনিয়ে হাইড্রোকিডি গোত্রের বিষাক্ত গোখরার সাথে ব্রিডিং করে তৈরি করেছে এক মাল্টি-ডাইমেনশনাল বিষযুক্ত সাপ, যা বিশ্বের যেকোনো অঞ্চলের মানুষের মৃত্যু ঘটাতে সক্ষম। তবে সে তার মিজোরামের ল্যাবে এগুলোকে ব্রিডিং করানোর সময় জিন এক্সপার্টদের সাথে আলোচনা করে এমনভাবে পোষ মানিয়েছে যে, এগুলো তার আদেশ ছাড়া যেন কাউকে কামড় দেয়না! হিকোচগামার সবচেয়ে নিরাপদ ঘাঁটির জন্য অন্যরকম প্রতিরক্ষায় এটা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। "Queen of Snakes" উপাধিটা তার জন্য পারফেক্ট।
তবে ড্রাগলর্ড, ট্যাকটিকাল প্ল্যানার আর সুপার-এক্সক্লুসিভ যোদ্ধা, এসবের বাইরেও একজন আছে এই টিমে, Muntaha.. বলা হয় এই অন্ধকার জঙ্গলের গত দশ বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী। এই অঞ্চলের যত মাদক পাচারকারী ও অপরাধী ছিল, সবাই তাকে গুরু মনে করে। হিকোচগামা কখনো সামনে আসে নি, এই অঞ্চলের মানুষ তার নামও শুনে নাই, শুধু কিং প্যালেস নিয়ে আর সাপের জঙ্গল নিয়ে নানা কাল্পনিক কাহিনী শুনেছে। তবে মুনতাহাকে এই এলাকার অপরাধীরা সবাই চিনে, তাদের কাছে সে গুরুতুল্য। দশ বছর আগে হিকোচগামার গ্যাংয়ে যোগ দেয়ার সময় নিজের যোগ্যতার পরীক্ষা দিতে গিয়ে অন্য এক কার্টেলের বিশ জনকে দুই মিনিটে ব্রাশফায়ার করে তার কিং প্যালেসে থাকা শুরু। এরপর হিল ট্র্যাক্ট থেকে বার্মা হয়ে থাইল্যান্ড রুট, সব জায়গায় যেখানেই কোনো বাধা এসেছে, সে এবং তার বাহিনী উপড়ে ফেলেছে সবকিছুই। মঙ্গোলিয়ার প্রাচীন রণকৌশল থেকে শুরু করে হিল ট্র্যাক্টের আদিম সব সমর-কৌশল কিংবা আধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল আর মেশিনগান চালানোর ট্রেনিং, সবই আছে তার টিমের সদস্যদের। হিকোচগামার ব্যবসা বড় হওয়ার সাথে সাথে তার টিমেও যোগ হচ্ছে ইজরায়েল আর ভারত থেকে গোপনে কেনা সব সরঞ্জাম।
তবে সে কোনো ছোটখাটো অপারেশনে কাজ করে না। নিজেই তার ভিজিটিং কার্ডে লিখে দিয়েছে, "কিং প্যালেসে কাজ করি, রাজার লোক, ছোটখাটো কাজে যোগাযোগ করতে আইসো না"।
.....
হিকোচগামার হঠাৎ স্যাটেলাইট ফোন বেজে উঠলো। ধরতেই অপর পাশ থেকে, " কিং, এইটা তুমি কি করলা আজকে?
- "কি করসি?"
- "কতবার না বলেছি নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিবা না।"
- "এখানে অস্তিত্বের জানান দেয়ার কিছু নাই পার্টনার। কিং প্যালেস নিয়ে আশেপাশে অনেকেই শুনেছে"
- "সেটা তো কানে শুনেছে, মিথ হিসেবে মনে করেছে। চোখে তো দেখেনাই।"
- "আমিও তো দেখাতে চাই নাই। নতুন অফিসার টা এসে এত কয়েক মাসে কি শুরু করে দিয়েছে তুমি কিছু জানো? সব রোডে, সব চেক-পোস্টে রেইড দিচ্ছে। রাতে একটা গাড়ি এদিক থেকে শহরে যাইতে দেয় না। আমার লোকেরা সব ছদ্মবেশে, তাও দুইজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। আমি কোনো অ্যাকশন নিবো না?"
-"গত দশ বছর তোমাকে সবদিক দিয়ে প্যাট্রোনাইজ করে আসতেসি কেন আমি? অ্যাকশন না নিয়ে চুপ করে থাকার জন্যই। তুমি বার্মা হয়ে থাইল্যান্ডের রুটে ড্রাগ কার্টেল চালাও, ওইটা তোমার টেরিটরি। কিন্তু দেশের ভিতরে সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স অনেক বেশি অ্যাকটিভ। ওরা কোনো একটা ক্লু পেয়ে গেলে স্পেশাল অপারেশন চালাতেও এক মিনিট দেরি করবে না।"
- "তুমি আমাকে ভয় দেখাচ্ছো? মনে রাখবা তুমিও ব্যবসায়ী আমিও ব্যবসায়ী। আমার রিস্ক নিয়ে আনা ডায়মন্ড দিয়ে বড় করপোরেট বিগ বস হইসো, বড় বড় মিটিংয়ে স্পিচ দাও। আর আমি এইদিকে সাপের জঙ্গলে মশার কামড় খেয়ে ব্যবসা করি। ব্যবসা শিখাইতে আইসো না আমাকে"
-" কিন্তু কথা ছিল তুমি ডায়মন্ড দিবা আমাকে, আর আমি টাকা। আমি এরপর নেক্সট ইলেকশনের সময় একবার জিতলে পুরা হিল ট্র্যাক্ট অফিশিয়ালি তোমার। কিন্তু ততদিন দেশের ভেতরে যেন কোনো ভায়োলেন্স না হয়। এখন শর্ত তুমি ভেঙ্গে দিচ্ছো। ওইখানে পুলিশের উপর ওপেন হামলা করার কোনো দরকার ছিল? সামনে কেউ অপারেশনে আসলে সামলাইতে পারবা?"
- " তুমি কি আমার সামর্থ্য নিয়ে সন্দেহ করতেসো? তুমি কি মনে করো আমি খেলা বুঝিনা? আরে, তুমি খেলো করপোরেট টেবিলে, আমি খেলি রিয়েল ব্যাটল-গ্রাউন্ডে। টিভিতে দেখো, তোমার সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স এর এক বিল্ডিং উড়ায়ে দিসি। আসতে বইলো ওদেরকে, খেলবো।"
- "কিং, তুমি পাগল হয়ে গেসো। এইভাবে শর্ত ভাঙ্গতে পারো না তুমি। বহু কষ্টে পাহাড়ে শান্তি আসছে। এত বছর পর আবার এখানে অশান্তি তৈরি করতে চাও তুমি?"
- " আমি রাখতেসি। তোমার যদি মনে হয় সিভিল ক্রাইম এজেন্সিগুলো আমার কিছু করতে পারবে, তাহলে টিভি অন করে বসে থাকো। নিউজ আসতেসে"
বলেই ফোনটা কেটে দিলো হিকোচগামা। হতাশ Sadabe বুঝতে পারছেনা কি করবে। তার এত দিনের বিজনেস মাস্টারপ্ল্যান যেটার উপর দাঁড়িয়ে আছে। তার ইলেকশনে জয়ের স্বপ্ন... না, তাকে যেতে হবে চট্টগ্রামে। কালকেই।
....................................
চার্টার্ড বিমানটা ঢাকায় এসে নামলো। আকিব এসেছে। Rima আর Labanya তাকে অভ্যর্থনা জানিয়ে চললো তাদের এজেন্সির হেডকোয়ার্টারের দিকে।
- "ডিটেকটিভ রিমা"
- "ইয়েস, সিভিল ক্রাইম ডিটেকটিভ আকিব। বলুন?"
- "দেখুন, আমি অফিশিয়াল আলাপে বেশি বিশ্বাসী না। আমাকে ব্যাপারটা সোজা বাংলা ভাষায় বুঝিয়ে বলুন। শর্ট, বাট ক্লিয়ার"
এরপর ডিটেকটিভ রিমা আর ডিটেকটিভ লাবণ্য আকিবকে বুঝিয়ে বললো বিস্তারিত। ব্যাপারটা সিরিয়াস। বিশ বছর আগে আকিব যখন প্যারাট্রুপার ট্রেনিংয়ে একবার খাগড়াছড়ি যায়, তখনো ওখানে কিছু হাতেগোনা ড্রাগ পাচারকারী চক্র সম্পর্কে শুনেছে, তবে কখনোই তারা বড় কোনো ইনসিডেন্ট ঘটাতে পারেনি। অবশ্য বিভিন্ন দেশের সিক্রেট সার্ভিস এজেন্সির অপারেশনে মেন্টর হিসেবে থাকতে গিয়ে আকিবের অভিজ্ঞতা হয়েছে আঞ্চলিক অনেক গোপন বাহিনীর বিরুদ্ধে অপারেশন দেখার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছিল, কোনো দেশের ল ইনফর্সমেন্ট অথোরিটির হস্তক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় তারা তাদের অবস্থানের জানান দিয়েছে। অন্যথায় তারা তাদের কাজ করে গেছে নীরবে। আকিবের ক্রিমিনাল মাইন্ড রিডিং থেকে যেটা পাওয়া যাচ্ছে, সেটা দুইরকমঃ
১) প্যাকেটের গায়ে "কেবল পুলিশ সদস্যরাই এটি খুলতে পারবেন" এমনটা লেখা ছিল কেন? তাহলে কি পুলিশের সাথে তাদের আগে কোনো শত্রুতা আছে?
২) ঢাকায় সিভিল ক্রাইম এজেন্সির অফিসের কাছেই বিস্ফোরণ ও এর আগে রিমার কাছে মেসেজে এক সাংকেতিক নামের ব্যক্তি ও সাংকেতিক কিং প্যালেসের নাম উল্লেখ করার কারণ কি? তারা কি নিজেই নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চায়?
যদি প্রথমটা হয়, তাহলে ব্যাপারটা হয়তো আঞ্চলিক। আর যদি ২য় টা হয়, তাহলে ব্যাপারটা সিরিয়াস। এরা সামনে এমন আরো কিছু করতে পারে। এবং এদের সাথে যোগসাজশ থাকতে পারে দেশের কোনো প্রভাবশালী বেসামরিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের। কোনদিকে যেতে পারে ঘটনাটি?
........
রাত ২.৩০ টা। চ্যানেল ফোরটি এইটের নিউজরুমে এখনো Labiba বসে আছে। কফি শেষ হয়ে গেছে আগেই। কিন্তু সে এখনো সমীকরণ মেলতে পারছে না। সাদাবী কেন তখন ওভাবে উঠে চলে গেলো? কি ছিল তার সেই ফোন কলে? লাবিবা সিদ্ধান্ত নেয়, আগামীকাল সকালেই সাদাবীর বাসায় গিয়ে সরাসরি ইন্টারভিউ নিবে। Labiba's Live Cast এর স্পেশাল মর্নিং সেশন হিসেবে আসবে সেটা, সবার কাছে চমক হিসেবে। ফোন টা নিয়েই গুলশান-২ এ দায়িত্বরত তার সোর্সকে কল করে। শুধু এইটুকুই বলে, "কালকে ভোরে আসছি, বিজনেস ম্যাগনেট সাদাবীর বাসায় সিক্রেট ইন্টারভিউ। ক্যামেরা নিয়ে রেডি থাকবা।"
অপর পাশ থেকে উত্তর, "ম্যাডাম, সাদাবী তো একটু আগেই বেরিয়ে গেলেন। তার বাসার চিফ সিকিউরিটি জানিয়েছে, শহরের বাইরে যাচ্ছেন তিনি।"
...
ঝানু সাংবাদিক লাবিবার মাথা ততক্ষণে বুঝে গেছে, তার এক্ষুণি চট্টগ্রাম যেতে হবে। Labiba's Live Cast এর ইতিহাসে যদি শেষ এপিসোডও এটা হয়ে থাকে, সে এটা নিয়েই ছাড়বে...
.........
ঢাকা থেকে সরাসরি ফ্লাইটে চট্টগ্রাম। আকিব, রিমা, লাবণ্য ও সিক্রেট সার্ভিসের দুইজন জুনিয়র মেম্বার। সেখান থেকে গাড়িতে খাগড়াছড়ির স্থানীয় বাজার।
রিমাঃ - "গোটা দেশে এটা নিয়ে তোলপাড়। আমরা কাউকে না জানিয়ে সিক্রেট মিশনে যাওয়া কি ঠিক হচ্ছে?"
আকিবঃ - "কাউকে না জানিয়ে অপারেশন করতে যাচ্ছি বলেই এটা সিক্রেট মিশন"
রিমাঃ -"তাহলে প্ল্যান ফাইনাল করা দরকার।"
লাবণ্যঃ -"অফিসার রাহাতের সাথে কথা হয়েছে। তিনি ওখানে আমাদের রিসিভ করবেন। অবশ্যই ছদ্মবেশে।"
খাগড়াছড়ি পৌঁছে দুপুরের খাবার খেয়ে তৈরি হয়ে বিকেলে তাদের ৫ জনের টিমটা একটা চাঁদের গাড়ি নিলো। টুরিস্টের ছদ্মবেশ নিয়েছে তারা, ছদ্মবেশী গাইড + ড্রাইভিংয়ের দায়িত্বে আছে অফিসার Rahat। প্রত্যেকের ব্যাগে সব প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, রাহাতের সামনে জিপিএস ট্র্যাকার। সন্ধ্যার আকাশ এসে অন্ধকারে পুরো পৃথিবীটা ঢেকে দিতেই, কেমন যেন অদ্ভুত হিমশীতল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সারি সারি পাহাড়, মাঝে আঁকাবাঁকা পথে চলেছে চাঁদের গাড়ি। হঠাৎ কিছুদূর সামনে দুইটা বড় গাছের টুকরো, আর অন্ধকারে কালো চাদর পড়ে কয়েকজন যেন হেঁটে যাচ্ছে। রাহাত সতর্ক দৃষ্টিতে পিস্তলটা বের করলো। অন্যদেরকে বললো নেমে যেতে। "আমি দেখছি, আপনারা পেছনে থাকেন, কিছু হলে ব্যাক-আপ দিয়েন।"
আকিব, রিমা, লাবণ্য গাড়ি থেকে নেমে পেছনে এলো। এখন রাহাত খালি গাড়িটা সামনে নিয়ে যাচ্ছে, ওরা পেছনে নেমে দাঁড়িয়েছে। রাহাত হর্ণ দিচ্ছে, হঠাৎ দুইটা বড় ঢিল ছুড়ে কেউ যেন হেডলাইট ভেঙ্গে দিল। রাহাত জোরে এক্সিলেটরে চাপ দেয়ার চেষ্টা করতেই, ডান পাশে রাস্তার পাশ থেকে একটা নারী অবয়বের কেউ যেন দড়ি দিয়ে তাকে জোরে টেনে দরজা খুলে বাইরে ছিটকে ফেললো। আর দড়ির সাথে একই দিক থেকে একটা সাপ এগিয়ে আসছে, দড়িটা তার গলা পেঁচিয়ে ধরেছে...
রাহাতের দম বন্ধ হয়ে আসছে, আর ঠিক কয়েক হাত দূরেই সাপটা, নিঃশব্দে, আসছে তার দিকেই...
................
অপারেশন কিং প্যালেস, দ্যা আল্টিমেট ব্যাটলফিল্ড স্টার্টস!!!
___________________
লেখাঃ রাহবার-ই-দ্বীন
পরবর্তী অংশের লিংকঃ অপারেশন কিং প্যালেস (৩য় অংশ)
আগের অংশের লিংকঃ অপারেশন কিং প্যালেস (১ম অংশ)
গল্পগুলো পর্যায়ক্রমে আমার ওয়েবসাইটেও যুক্ত করা হচ্ছে। ধন্যবাদ)