তথাকথিত সর্ব ধৰ্ম সম্বনয়

সর্ব ধৰ্ম সম্বনয় এর প্রচার তখনি  গ্রহণ যোগ্য যখন তার উদারতার যুক্তি সব ধর্মই সমানেই  শেষ হয়ে যায় না, এটা   মুখে বলা খুবই সোজা যে  আমার উদার মানসিকতায় সব ধর্মই সমান দেখি । বা মুখে বলছি সব ধর্মই সমান এদিকে মনে বিশ্বাস ধৰ্ম মানেই বুজরুকি , এদিকে সময় সুযোগে নিজের ধর্মের কুৎসা গাওয়া। উদারতার যুক্তি তখনই গ্রহণযোগ্য হতে পারে যখন আমার ধর্মের কাছে আমি ঠিক থেকেও, যে যেভাবে যা বিশ্বাস করে তাকে বেঠিক হতে হয় না , সব জীবজগৎ তার বিশ্বাস আর মতের  মধ্যে  সামঞ্জস্যতা  এবং সবাইকে  সমান দেখার রাস্তা পাই আর  আমার বিশ্বাস তাতে অন্তরায় হয় না পরন্তু  তাতে আমাদের উৎসাহিত করে Attheir worst they should Enable it And At their best they should Inspire it

আমার মনে হয়, সাধারণ মধ্যবিত্ত বাঙালীরা  যে  শিক্ষা নিয়েই বড় হই  , তা  কোন মানুষ কেই ধর্মের কারণে ছোট দেখতে প্ররোচিত করে না। কিন্তু অন্য যে ধৰ্ম টা  বার বার আলোচনায় উঠে আসে  , একটা নির্মোহ চিন্তা করে দেখতে গেলে, (সেইটা যেন এখানে থেমে না যায় সব ধর্মেই  অনেক দোষ আছে) ওই ধৰ্ম কি সত্যিই  মনুষত্য বিকাশের প্রচেষ্টা করে  নিজের কমিউনিটি ছাড়া । আবার ব্যাক্তিবিশেষের বাইরে শুধু ধর্মের দিকনিদর্শন এর কথা বলছি। একটা উদাহারন দিলে বোধ হয় আমার কথাটা ঠিক করে বলতে পারবো।ওই ধর্মের অনেক শিক্ষিত হাই সোসাইটির মানুষকে  সারা পৃথিবীতেই দেখেছি হালাল মাংস ছাড়া খায় না। মানুষের খাদ্যাভ্যাস তার নিজের, সে নিয়ে কিছু বলার নেই , কিন্তু একটা প্রাণী কে তিল তিল করে মারার মধ্যে কি মহত্ব থাকতে পারে ? কিন্তু এই ব্যাবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করা অসম্ভব , সেই ধর্মের বাইরেতো নয়ই ভেতরেও সম্ভব নয়। এবার সারা বিশ্বব্যাপী সেই  ধৰ্ম বিশ্বাসের অন্য ধর্মের প্রতি দৃষ্টিভাঙি খুব আশাপ্রদ নয় ।

কিন্তু তার বহিঃপ্রকাশ সবসময়  হয় না কারণ মানবিকতা কাজ করে সবার মধ্যেই।  সেই মানবিকতাকে উৎসাহিত করা নিঃসন্ধেহে ভালো। কিন্তু সেইটা না করে যদি নিজের চিন্তা ভাবনার উৎকর্ষতা দেখাতে সেই মতবাদ টাকেই প্রশ্রয় দিয়ে থাকি সেটা কি ঠিক ? আর তাতে কার সত্যিকারের আর্থিক বা পারমার্থিক ভালো হয়। আর সেটা যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থে হয় সেটা তো আরো ভয়ংকর। আর সেটাই এতদিন বাংলার তথা ভারতের রাজনীতি তে হয়ে এসেছে। যে কোন রাজনৈতিক দল যদি দেখে অন্ধ তোষণ আর বোকা বানানোর সেক্যুলারিজম ভোট ব্যাঙ্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে তারাই এই প্রশ্রয় দেবার রাজনীতির বাইরে আসবে....

আজকের  বাঙালি সমাজ রামকৃষ্ণের "যত মত তত পথ" উপদেশ একরকম নিজের দুর্বলতা আর  অকর্মতাকে ঢাকার জন্য মায়ের আঁচলের মতো ব্যবহার করে।  যেই রামকৃষ্ণ পানের দোকানীর কাছে দু পয়সা ঠকে আশা শিষ্য কে তিরস্কার করেছিলেন। তিনি কোন মজবের মত যদি হয় আমার ধর্মের হানি করা, তাকে ধংস করা - যত মত তত পথ বলে হাত গুটিয়ে থাকার উপদেশ দিতেন ? যদি কোন ধর্মমতের পথ হয় আমার ধর্মকে আঘাত করা তাকে প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ দুটোকেই আমার ধর্ম নির্দেশিত কর্ম। কিন্তু আজ বাঙালী কমুনিজম , গান্ধীবাদিতে আপ্লুত হয়ে বলে ওঠে আমি সব ধর্মকে সমান চোখে দেখি , স্বয়ং রামকৃষ্ণ দেব বলেছেন যত মত তত পথ। 

সব ধর্মই সমান বলার তৎপরতার সঙ্গে একটা বিচার করার দৃষ্টিভঙ্গি অন্ধ করে রাখার প্রবণতা থেকে যায় সেটা ঠিক  বাঞ্ছনীয়  বা  শুভ  নয়। তার একটা কারণ অপরের ধর্মবিশ্বাসের সাথে সহমত না হতে পারাকে সেই ব্যক্তির বিপক্ষে যাওয়া বলে ভাবতে শেখার এক অগ ভীর মানসিকতা কাজ করে ।  আমার একটা ধর্মবিশ্বাস আছে  এবং তোমার ধর্মবিশ্বাস এর অনেক কিছুই আমার বিচারে ঠিক মনে হয় না কিন্তু তাও আমি তোমাকে ব্যক্তি শত্রূ তো মনে করিইনা বরং মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি প্রয়োজনে দুজনে একসাথে অনেক সৃষ্টিশীল কাজ করা সম্ভব, তাতে আমাদের দুজনেরই শুধু পার্থিব নয় আত্বিক উন্নতিও ( যাকে সহজ ভাষায় বললে আর্থিক এবং পারমার্থিক )  হতে পারে । এই রকম একটা অবস্থান যে সম্ভব তা আমাদের তথাকথিত সেকুলার ভাবধারার ধারণার বাইরে। আর এখানেই ভারতীয় অধ্যাত্বিকতার সর্বধর্ম সমন্নয়ের  শক্তি , সেটা শুধু এটাকে  সম্ভব বলে না তার আঁধারে আবহমান ধারায় , এটাই মানব জগতে একই স্থান , কাল পাত্রে দুই ধর্মমতের  স্বাভাবিক সহ অবস্থান, অন্যথা সংঘাত অবশ্যাম্ভাবী।  এবং  সমস্ত সঙ্গবদ্ধ ধর্মই হচ্ছে  কালের প্রবাহে  এক সময়িক সমষ্টিগত ভাবধারা , তা কোন বিপরীত শক্তির বিরুদ্ধের  কারণেও  হাতে পারে বা অন্য্ কোন কারণেও হতে পারে কিন্তু আবহমান প্রবাহ হতে পারে না।

এখানে আবার বিবেকানন্দের শিকাগো speech এর খানিকটা  অংশ নেব  :

"The present convention, which is one of the most august assemblies ever held, is in itself a vindication, a declaration to the world of the wonderful doctrine preached in the Gita: "Whosoever comes to Me, through whatsoever form, I reach him; all men are struggling through paths which in the end lead to me." Sectarianism, bigotry, and its horrible descendant, fanaticism, have long possessed this beautiful earth. They have filled the earth with violence, drenched it often and often with human blood, destroyed civilization and sent whole nations to despair. Had it not been for these horrible demons, human society would be far more advanced than it is now. But their time is come; and I fervently hope that the bell that tolled this morning in honor of this convention may be the death-knell of all fanaticism, of all persecutions with the sword or with the pen, and of all uncharitable feelings between persons wending their way to the same goal.....

….Much has been said of the common ground of religious unity. I am not going just now to venture my own theory. But if any one here hopes that this unity will come by the triumph of any one of the religions and the destruction of the others, to him I say, "Brother, yours is an impossible hope." Do I wish that the Christian would become Hindu? God forbid. Do I wish that the Hindu or Buddhist would become Christian? God forbid.....

....If the Parliament of Religions has shown anything to the world, it is this: It has proved to the world that holiness, purity and charity are not the exclusive possessions of any church in the world, and that every system has produced men and women of the most exalted character. In the face of this evidence, if anybody dreams of the exclusive survival of his own religion and the destruction of the others, I pity him from the bottom of my heart, and point out to him that upon the banner of every religion will soon be written in spite of resistance: "Help and not fight," "Assimilation and not Destruction," "Harmony and Peace and not Dissension."....