কেন RG কর ঘটনাটা ব্যাতিক্রমী ?
প্রতিবাদী একটা মেয়ে যার পলিটিক্যাল ব্যানার নেই নেই প্রভাবশীল বাবা মা , সংখ্যালঘু কার্ড নেই , নিদেন পক্ষে SC ST পরিচয়ও নেই , মহিলা ভিকটিম কার্ড খেলারও কোন মনভাব ওনার ছিল না , সে কিভাবে এরকম অবাধ্য হয় ? কিন্তু খুনটা মনেহয় প্ল্যান মাফিক হয় নি বা হয়ত স্ক্রিপ্টেই ছিল না। তার কারণ ঘটনা বাইরে আসার আগে থেকেই যে ভাবে প্রশাসনিক ভাবে সব কিছু ঘেটে দেবার সর্বোচ্চ লেবেল থেকে চেষ্টা চলছে, এই রকম একজন নন কানেক্টেড কাউকে প্ল্যান করে খুন করে সরিয়ে দেওয়া তো এদের কাছে কিছুই নয়। আমার মনে হয় , অবাধ্য মেয়েটার উপর চাপ টা একটু একটু করে বাড়ানো হচ্ছিল, সেটাই পরিকল্পনাতে ছিল। সেটা ধর্ষণ পর্যন্তই হয়ত যেত কিন্তু তার পরের অংশটা, খুনটা আনচার্টেট। আর তারথেকেও প্রশাসনের কাছে বড় ধাক্কা , ঘটনাটা নিয়ে এত মানুষের রাস্তায় নেমে যাওয়া। কিন্তু সত্যি কী বিচার হবে ? যে কোনো এডমিস্ট্রেশনে এই সিচুয়েশনে হাতিয়ার হচ্ছে সময় .... সেটাই কেনা হচ্ছে নানা ভাবে । হয়ত এই সময়ে প্রকৃত আপরাধী অনেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে রাজ্য এমনকি হয়ত দেশের বাইরে।
নির্ভয়া কাণ্ডের বিচার আমরা এনে দিয়েছি , একজনকে তো পিটিয়েই মারা গেছে জেলে কিন্তু নিষ্পাপ শিশু সবথেকে বীভৎস অত্যাচার করেছিল , তাকে অন্য পরিচয় আর্থিক সহযোগ আর NGO প্রটেকশন দিয়ে কেরালায় রাখা সে তো কবেই ভুলে গেছি .....
একজন স্বেচ্ছাচারী শাসক একদিনে তৈরী হয় না, সমাজের প্রশ্রয়েই হয়। এডমিস্ট্রেশন যখন ভেবে নিতে পারে আমি যাই করি ধরাছোঁয়ার বাইরে তখনি এইধরনের একটা ব্যবস্থা তৈরি হয় । কিন্তু এই পাপে পাপী শুধু রাজা বা তার সাঙ্গপাঙ্গ নয় সমাজের যারা প্রত্তক্ষ পরোক্ষ মদত দেওযার সঙ্গে যারা হাতে কিছু করার থাকলেও এড়িয়ে যায়, দায় সেই সমাজের ও ।
পার্কস্ট্রিট হাই সোসাইটি প্রব্লেম, কামদুনী নিম্নবিত্ত এরিয়ার প্রব্লেম বলে ভুলে যাওয়া গেছে , দুটো ঘটনাতেই কিন্তু অন্যায় অত্যাচার করার ক্ষমতার জাত চিনিয়ে দিয়েছিল। তথাকথিত মধ্যবিত্ত সমাজ জীবনের চাপে ছেলে মেয়ে বড় করার চাপে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এবারের আঘাত দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের সেই জায়গাতেই নেমে এসেছে। প্রব্লেম শুধু নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ১০০০ টাকা পাবার কারণে ভোট দিয়ে আসে তারা নয়। আসল সমস্যার বীজ হচ্ছে যারা নিজেদের বিচার করতে পারার ক্ষমতা রাখি মনে করি আমারা সত্যিই কি করতে পারি।
CBI কী সমাধান করবে জানা নেই। আজ মানুষ আর সোশ্যাল মিডিয়াই সত্যিকারের ইনভেস্টিগেশন করছে, তারাই নিজ উৎসাহে দায়িত্ব নিয়ে সাহস করে কী ঘটেছিল তা বাইরে আনছে আর প্রচার করছে ....আর এটা হচ্ছে জাগ্রত মানুষ আর তাদের সংযোগের মাধ্যম থাকার জন্য। আজ মমতার সবথেকে বড় ভয় জাগ্রত জনসাধারণের এই জাগরণকে। মানুষের আবেগ নিয়ন্ত্রণের তার জানা কোন অস্ত্রই আর কাজ করছে না , এতে জনসমর্থন না টোল খায়। নয়ত এই রকম আন্দোলন কী ভাবে নিজের দিকে আনতে হয় না পারলে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় তা এর চেয়ে ভাল কোন বাঙ্গালী কোন রাজনৈতিক নেতা জানে না। কিন্তু এই আবেগ ভূল হাতে না চলে যায় বা রাষ্ট্র বিরোধী আন্দোলনে পরিণত না হয়, বাংলাদেশের মত , সেটাই প্রার্থনা .... যদি সেটা সম্ভব হয় সব রাষ্ট্র বিরোধী শক্তি এবং গণতন্ত্রের সব স্থম্ভেরই দম্ভ কিছুটা প্রশমিত হবে ... তাদের অ্যাকাউন্টেবিলিটি মানুষের কাছেই আর দেশের মানুষ জাগ্রত হয়ে উঠছে এটার একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হবে ...সেটা যদি হয় সেটাই হবে আসল প্রাপ্তি।