বুদ্ধিজীবী
আজকাল পপুলার কালচারে বুদ্ধিজীবী আর সুবিধাবাদী সমার্থক বলা হয় কিন্তু আমাদের সাধারণ বাঙ্গালী বিচারে এটা ঠিক সেরকম ছিল না পরন্তু বাংলায় তথাকথিত বুদ্ধিজীবী বলতে তাদেরই বোঝাত যাঁদের একটা মডারেট অবস্থান থাকত কিন্তু তাতেও অসুবিধা ছিল, সেই অবস্থানে যাঁরা সাপের মুখেও চুমু খায় আবার ব্যাঙের মুখেও আরও যথাযত বললে যাঁরা দিনে গৃহস্থকে বলে সাবধানে থেকো আবার রাতে চোরকে বলে ওই বাড়িতেই চুরি কর গিয়ে তাদেরই বুদ্ধিজীবী হিসাবে সর্বত্র গ্রহণযোগ্যতা ছিল। যেখানে বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞা হওয়া উচিৎ "যেথা তুচ্ছ আচারের মরুবালুরাশি বিচারের স্রোতঃপথ ফেলে নাই গ্রাসি, পৌরুষেরে করে নি শতধা"
ভারতীয় সংস্কৃতিতে এই বিচার শুদ্ধ রাখা আর রাখার প্রচেষ্টাকে অসম্ভব গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে , কারণ এটা বিনা চেষ্টা আর সাধনায় পাওয়া বা রক্ষা সম্ভব নয়। কারণ এই জগতে কোন স্থানই শূন্য থাকে না , আমাদের মনের অন্তর্জগৎ ও তাই। অন্তর জগত কে সত্যম শিবম সুন্দরম দিয়ে পূর্ণ করার প্রচেষ্টা না থাকলে, আমরা বুঝে ওঠার আগেই তা অপ্রয়োজনীয় আর অবাঞ্ছিত ভাবধারায় পূর্ণ হতে থাকে। অচিরেই তার প্রতিফলন ব্যক্তির বিচারে প্রকাশিত হতে শুরু হয়। মোহের মেঘ যখন সত্যকে দেখতে দেয় না সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াও অসম্ভব হয়ে ওঠে।
কিন্তু নিজে কী করে বুঝব আমার বিচার ধোঁয়ায় ঢাকা নয়। যখন নিজের কর্তব্য সিদ্ধান্ত তৎপরতার সঙ্গে নিতে পারব , সারা পৃথিবীর সমস্ত বিষয়ে বিদগ্ধ মত দেবার চেয়ে নিজের কর্তব্য স্থির করতে যদি দেরী না হয়, তখনই বুঝতে পারব আমাদের বুদ্ধি-বিচক্ষণতা আছে , বিচার শুদ্ধ আছে আর প্রত্যেকের জীবনে সেটাই কাম্য আর অভিপ্রেত।