যোগদান ও মেয়াদ
রাজভবনের কার্যকাল সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছিলাম যে ওখানে থাকা কালে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ২৪শে জানুয়ারী থেকে আমাকে ছুটিতে যেতে হয়েছিল । সেই ছুটি শেষে ১লা ফেব্রুয়ারী ১৯৯২ সালে আমি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের উপসচিব পদে যোগ দি । ১লা এপ্রিল ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত আমি এখানে কর্ম্মরত ছিলাম ।
কার্য ও দায়িত্ব
স্বাস্থ্য দপ্তরের মেডিকেল সার্ভিস শাখার উপসচিব হিসাবে জেলা ও মহকুমা হাসপাতাল, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইত্যাদির ক্ষেত্রে রাজ্যিক নীতি প্রণয়ন ও রূপায়ন এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন ব্যবস্থার সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম । এই সব বিষয়ে অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় সাধন ও প্রয়োজনে অর্থ দপ্তরের আর্থিক অনুমোদন সংগ্রহ আমার কর্মতালিকার অঙ্গীভূত ছিল । আমি এই দপ্তরে থাকার সময় দুটি প্রধান সিদ্ধান্ত হয়েছিল যার একটি ছিল রোগ নির্ণয়ার্থে তড়িৎচুম্বকীয় প্রতিচ্ছবিকরণ (radio imaging) মূল্যযুক্ত করা, আর দ্বিতীয়টি ছিল হাসপাতালের ওপিডি পরিষেবার জন্য ৫০ পয়সা মূল্যের টিকেট ব্যবস্থা চালু করা । দুটি সিদ্ধান্তই ছিল যুগান্তকারী । পশ্চিমবঙ্গের সরকারী স্বাস্থ্য পরিষেবার ইতিহাসে এই প্রথম কোন পরিষেবা মূল্যযুক্ত হল । এই সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন প্রশান্ত সূর । স্বাস্থ্যসচিব ছিলেন শ্রীমতি লীনা চক্রবর্তী ।
আইএএসে প্রথমবারের পদোন্নতির নির্দেশনামা ও আমার প্রতিক্রিয়া
এই দপ্তরে অবস্থানকালে ১৯৯২ সালে আমাকে আইএএসে প্রমোশন দিয়ে নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে অতিরিক্ত জেলাশাসক ও নদীয়া জেলা পরিষদের অতিরিক্ত নির্বাহী আধিকারিক হিসাবে নিযুক্ত করা হয় । নতুন কার্যভার গ্রহণ করতে কোলকাতা ছেড়ে বাইরে যাওয়ার অসুবিধা থাকায় আমাকে এই প্রমোশন প্রত্যাখ্যান করতে হয়েছিল । কোলকাতা থেকে যাতায়াত করা যায় এমন কোন জায়গায় নিয়োগ করার জন্য আমার আবেদন সরকার গ্রহণ করলেন না । এই সব প্রমোশন প্রাপ্ত অফিসারদের নিয়োগের স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকারের কোন সুনির্দিষ্ট নীতি ছিল না, তদ্বির তদারকি অথবা রাজনৈতিক প্রভাবে নিয়োগ করা হত । আমার মত যাদের দুটোর কোনটাই ছিল না তাদের হয় যা দেয়া হত তাই গ্রহণ করতে হত অথবা প্রমোশন প্রত্যাখ্যান করতে হত । আমি এই দ্বিতীয় শ্রেণীভুক্ত ছিলাম । তাই প্রত্যাখানের পথেই যেতে হল ।