একই সাথে বিনয়ের সাথে তোমাদেরকে আমি একথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে এ বছর এসএসসিতে প্লাস পেয়েছে ১,৮২,১২৯ জন This is a huge number. আমি আমার বাপ দাদাদের কাছে গল্প শুনছি যে একটা সময় ছিল যখন এসএসসি পাস করলে কেউ কাউকে দেখতে যেত অমুক পরিবারের ছেলেটি এসএসসি পাস করেছে। At that time এসএসসিতে পাস করাকে অনেক বড় মনে করত। আর এখন তোমাদের কোথায় এই অভিজ্ঞতা হয়েছে এ প্লাস পাওয়ার পর কেউ আসলে খুব বেশি একটা চোখ তুলে তাকায় না যে এ প্লাস পেয়েছে। কারণ এত বেশি এ ক্লাসের ভি যে হাটতে গেলে কোন জায়গায় যে গায়ে ধাক্কা লাগে এরকম কোন হিসাব কিতাব নাই। বরং এ প্লাস না পাইলে তোমার দিকে এমন দৃষ্টিতে তাকাবে তুমি একটা গাধা গরু টাইপের কিছু একটা ,এ প্লাস পাও নাই। You must understand এখন এ প্লাস পাওয়াটা এটাও একটা সিম্পল জায়গায় এসে নেমেছে। তোমার জীবনে এটা মাত্র শুরু এর পরে আরও লম্বা সময় আছে, আমাদের ভালো শিক্ষান প্রতিষ্ঠানগুলোতে, বুয়েটে, মেডিকেলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টোটাল ছাত্রদের যে সিট সংখ্যা তার তুলনায় এ প্লাসের সংখ্যাটা অনেক বেশি। কাজেই তোমরা যদি কেউ মনে কর তোমার জীবনের এই সফলতা মানে তুমি একেবারে হিমালয় পর্বতের চূড়ায় পৌঁছে গেছো, কিংবা জান্নাতের একেবারে কাছাকাছি চলে গেছে তাহলে তোমার এ ধরনের ধারণাটা একেবারে ঠিক হবে না। তুমি মাত্র একটা এস্টাগাল শুরু করলা , তোমার সামনে এখন একটা মহাসমুদ্র পড়ে আছে, এই সমুদ্র একটু একটু করে তোমাকে পাড়ি দিতে হবে।
তোমার নষ্ট হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা সব সময় থাকবে। একটা ছেলে এসেছে এ প্লাস পাইছে তার মানে এই না যে সেই ইন্টারমিডি তে ফেল করতে পারবে না। বা ইন্টারমেডিতে টু পাইতে পারবে না থ্রি পাইতে পারবে না। একটু পড়াশুনা না করলেই হবে। খুব ইজিলিসে কিন্তু এটা হতে পারে। কিন্তু তুমি যদি আবার ইন্টারমিডিয়েটে এ প্লাস পাইতে চাও তোমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। ইন্টারমিডিয়েটে এ প্লাস পাওয়ার পর তোমাকে ভর্তি পরীক্ষায় আরো বেশি পরিশ্রম করতে হবে।
আমরা এমন অনেক উদাহরণ দেখেছি যে একটা ছেলে এসেছে তো অনেক ভালো রেজাল্ট করেছে but he lost himself in HSC . একটা ছেলের এসএসসি এবং ইন্টারমিডিয়েটের background excellent , but ভর্তি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে নাই। অথবা ভর্তি পরীক্ষায় অনেক ভালো সাবজেক্টে চান্স পেয়েছে তারপরে সে নষ্ট হয়ে গেছে।
প্রত্যেকটা সময় তোমাকে নতুন একটা stagol শুরু করতে হবে। তুমি যখন খুবই আনন্দিত হচ্ছো, তখন তুমি উত্বেলিত হচ্ছো। এটা মানুষের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। আবার যখন তুমি ডাকতে হচ্ছ, তখন তুমি কষ্ট পাচ্ছ। এটাও মানুষের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। অসাধারণউত্তর হচ্ছে এই জায়গায়, কোন আনন্দই তোমাকে সীমানা ছাড়া উত্বেলিত করবে না, আবার কোন ব্যর্থতায় তোমাকে এতটা হতাশ করে দিবে না যে তুমি শেষ হয়ে গেছে। কারণ প্রত্যেকটা সফলতার পর আবার নতুন একটা সফলতার জন্য যাত্রা শুরু করবা এবং প্রত্যেকটা ব্যর্থতার পরে তুমি আবার নতুন করে সফলতা স্বপ্ন দেখবা। মানুষের জীবনে ব্যর্থতা আসবে না এমন কোন মানুষ নাই, আবার এমন কোন মানুষ নাই যে পরিশ্রম না করলে সফলতা পাবে না। But you have to try at each and every step in your life. SSC is a stage of life. That's a very important stage. তুমি এ জায়গাতে অনেক ভালো করেছো এ জন্য তোমাকে congratulations. But you must mind it this is the beginning, must mind it, this is the beginning, this the very very beginning. তোমার সামনে অনেক লম্বা একটা রাস্তা আছে, এ রাস্তার প্রত্যেকটি ধাপে তোমাকে আরো বেশি কষ্ট করতে হবে, অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে, অনেক দূর সামনে পথ যেতে হবে যদি তুমি তোমার জীবনে সফলতার যে দ্বারপ্রান্ত সেটিকে স্পর্শ করতে চাও।
কাজেই এসএসসির এ প্লাস টা তোমার মনে যেন কোনো প্রকার অহংকারের জন্ম না দেয়, যেটি পরবর্তীতে তোমার পরিশ্রমকে কিংবা পরবর্তীতে তোমার ফলাফল কে অনেকটা নেগেটিভলি ইন্টারফেক্ট করে।
একটা জিনিস দেখো মানুষের জীবনে বড় হতে অনেক কষ্ট করতে হয়, কিন্তু নষ্ট হইতে মানুষের জীবনে কষ্ট করতে হয় না। Science ও এই থিওরিটা বলে, নিউটনের গল্পটা সবারই জানা, উনি একদিন আপেল বাগানে বসেছিলেন , হঠাৎ টুপ করে একটি আপেল তার মাথায় পড়ল , তুমি চিন্তা করতেছিলেন আপেলটা নিতে পড়ল কেন? উপরে গেল না কেন? অনেক চিন্তা করে উনি পাইলেন এটা একটা গ্রাভিটেশন কারণ যে গ্র্যাভিটেশন একটা ফোর্স আছে। নিউটন আবিষ্কার না করলেও আমরা বুঝতাম, আপেল যেহেতু নিচে পড়ে নিশ্চয়ই নিচে একটা ফোর্স আছেই, এত কষ্ট করে নিউটনের এটা আবিষ্কার না করলেও হইত। তো এই যে গ্রাবিটেশনাল ফোর্স নিচের দিকে টানতেছে, ঠিক মানুষের প্রবৃত্তির মধ্যে একটি নেগেটিভ ফোর্স আছে। এই নেগেটিভ ফোর সব সময় তোমাকে নিচের দিকে টানে, তোমাকে এখন পড়াশোনা না করলে ভালো, তুমি নষ্ট হয়ে গেলে ভালো, তুমি আনন্দ করলে ভালো, তুমি ফুর্তি করলে ভালো। এই নেগেটিভ দিকগুলো সব সময় তোমাকে নিচের দিকে interact করে। তার বিপরীতে নিজেকে কন্ট্রোল করে একটা ভালো ফলাফলের দিকে এগিয়ে যাওয়া এটি কিন্তু খুব কষ্টকর। তুমি যদি ভালো করতে চাও তোমাকে এসএসসিতে ভালো করতে হবে, ইন্টারমিডিয়েটে ভালো করতে হবে, ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে হবে, university তে গিয়ে ভালো করতে হবে, পিএইচডি করতে গিয়ে ভালো করতে হবে। আর তুমি যদি খারাপ করতে চাও তাহলে সব ভালো করার পর হঠাৎ করে নষ্ট হয়ে যেতে পারো, তুমি অ্যাডিক্টেড হয়ে গেলে হবে তোমাকে নষ্ট হওয়ার জন্য খুব বেশি কষ্ট করতে হবে, তুমি একটা পরীক্ষা না দিলেই হবে তোমাকে পরীক্ষায় ফেল করার জন্য এর বেশি কষ্ট করতে হবে না।
এখন ধরো দুইটা লোক- একজন এসএসসি পরীক্ষায় খারাপ করলো আর একটা লোক এসএসসিতে ভালো করলো , ইন্টারমিডিয়েটে ভালো করলো, তারপর ভর্তি পরীক্ষায় যে খারাপ করলো। এই দুইয়ের মধ্যে বেশি সফল কে? আর বেশি ব্যর্থ কে? That's a very confusing question.
ধরো একটা লোক পাহাড়ে উঠতেছে, একজন ৫০০ ফিট উঠার পর পা পিছলে পড়ে গেল, আর একজন ১০০০ ফিট উঠার পর পাব এখানে পড়ে গেল, এখন তোমার কাছে মনে হবে যে এক হাজার ফুট উপরে উঠছে সে more সফল more সাকসেসফুল। কিন্তু সাইন্স বলে যে বেশি উপর থেকে পড়বে তার পা একটা বেশি ভাঙবে। ৫০০ থেকে পড়লে যদি একটা হাত ভাঙে ১০০০ ফিট টিকে পড়লে একটা হাত ভাঙবে একটা পাও ভাংবে । কারণ তার গ্রাভিটির force বেশি হয়।
তার মানে একটা মানুষ ভালো করার পর কিন্তু তার ব্যাপারে প্রত্যাশাটা বেড়ে যায়, expectations টা বেড়ে যায়। তুমি যখন এসএসসিতে এ প্লাস পেয়েছ তখন দেশের expectation তোমার প্রতি বেড়ে গেছে। তোমার বাবা-মার expectation তোমার প্রতি বেড়ে গেছে, তোমার টিচারদের expectation বেড়ে গেছে, তোমার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের expectation বেড়ে গেছে। কাজেই এই সময়ের পরে গিয়ে যদি তুমি খারাপ করে ফেলো তাহলে এই বড় এক্সপেক্টেশন এর জায়গা থেকে যে আঘাতটা তুমি পাবে বা তোমার অভিভাবকরা পাবে সেই আঘাতটা অনেক বেশি বড় হবে, তুমি এর চেয়েও অনেক আগে নষ্ট হয়ে যাওয়াটা ভালো ছিল, পরে নষ্ট হয়ে যাওয়াটা অনেক বেশি খারাপ।
এ কারণে এসএসসির এ প্লাস এটা সেলিব্রেট করার কোন বিষয় না। এসএসসির এ প্লাস তোমার রেসপন্সিবিলিটি দেয়ার বিষয়। SSC a+ হচ্ছে তোমার মধ্যে একটি confidence জন্ম নিল যে তুমি পারবা, তুমি এ দেশের টপমোস্ট মেধাবীদের একটি অংশ, তুমি যদি পরিশ্রম করো, তুমি যদি যোগ্যতা প্রমাণের জন্য চেষ্টা করো তাহলে তুমি তোমার জীবনের শেষ পর্যন্ত এ প্লাস পেয়ে যেতে পারবা। এই কনফিডেন্সটাকে সামনে রেখে তোমরা তোমাদের সামনের একাডেমিক দিকগুলো, পড়াশোনার দিকগুলো, এগুলোর সামনে অগ্রসর হবা এটি আমরা আশা করছি।