পুরানো শব্দ, নতুন মানে ...


অর্থতত্ত্ব / নিরুক্তজ্ঞান (ইং semantics) আমাদের শেখায় যে শব্দের অর্থ তার অন্তরনিহিত নয়, এটা বাহ্যিক। দশের ব্যাবহার থেকে আর চেতনা থেকে এইটা তৈরি হয়। পরিভাষা নিয়ে আমার অনুসন্ধানে আমি তর্ক করেছি যে মানুষের চিন্তা ভাবনা যতো তীক্ষ্ণ হয়, বিষয়-বিষয়ে প্রভেদ করতে, আর ধারণা থেকে আরো সূক্ষ্মতর ধারণা নেমে যেতে যতোই অভ্যস্ত হয়, তার প্রধাণ হাতিয়ার হয়ে ওঠে তার ভাষা। সে তার ভাষার শব্দাবলীর প্রতিকায়ণ শক্তি আরো বেশি করে কাজে লাগাতে শেখে। এতে তার নিজের ধ্যান-ধারণা আরো সঠিক ভাবে আর পরিপুষ্ট ভাবে আকার পায়, ভাষাও আরো নতুন শক্তি অর্জন করে। এই পাতায় ভাষা আর জ্ঞানচর্চার পথে আমার নিজস্ব হাঁটাহাঁটি থেকে পাওয়া কিছু আবিস্কার সামনে আনছি, পুরোনো শব্দের মধ্যে নতুন গভীরতর অর্থ আর ব্যাবহারের মধ্যে দিয়ে।

এর মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই শব্দসন্ধানের অনুপ্রেরণা হচ্ছে ইংরাজি ভাষা। উচ্চতর জ্ঞানচর্চা আমি মূলত পেয়েছি ইংরাজিতে, তাই সাধারণ ভাষাকে তীক্ষ্ণতর হতে দেখেছি ইংরাজিতেই। শব্দ-সন্ধানের সময় আক্ষরিক অর্থকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করেছি, ব্যাবহারিক অর্থ আর সাংস্কৃতিক তাদপর্যকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। এর ফলে দেখেছি আমাদের চলতি বাংলার নানান নিরীহ শব্দবন্ধের মধ্যে নয়া শক্তিমত্তা খুজে পেয়েছি।

১) exercise = চলাফেরা : ইংরাজিতে exercise কথাটা শুধু ব্যায়াম বলতে বলা হয় না। এর আরো একটা মানে আছে যেটা সম্পূর্ণ ধারণাগত - এর মানে হলো এমন কোনো কাজ যাতে একটা খাটুনি আছে, কিছুটা অনির্দ্দিষ্টতা আছে, কিছুটা নিরীক্ষণ আছে, হাতড়িয়ে দেখা আছে। যেমন নৌমহড়াকে "নেভাল এক্সারসাইজ" বলে, অথবা কোনো গাণিতিক মারপ্যাচ নিয়ে কায়দা-কসরৎ করা কেও "মেন্টাল একসারসাইজ" বলে। এই অর্থের ব্যাবহারের সমার্থক বাংলা চলন কিছু ক্ষেত্রে হবে - চলাফেরা। বিশেষ করে সেটা যদি মনোজাগতিক কোনো ব্যাপার হয়। যেমন - "গণিতে নানান চলাফেরা থেকে খুজে পাওয়া কিছু বোধ ", অথবা এখানে

২) interpolation, extrapolation, extension, continuation : এই ক্রিয়গুলি নিয়মিত ব্যাবহার হয়, গণিত আর বিজ্ঞানে, আর সাধারণ জীবনেও। প্রথম দুইটা শব্দের একটা শব্দমৌল হলো "পল", যার মানে - জিজ্ঞাসা, আন্দাজ, অথবা আঁচ পাওয়া। কোন জানা-জগতের ভিতরকার অজানা কোনো ফাঁক-ফোকর আন্দাজ বশত ভরাট করাকে ইন্টারপলেশান বলে। আর এই জগতের বহিঃস্থ কোনো এলাকা বা স্থানে জানা জগতের ভিত্তিতে জ্ঞানের প্রসারণ কে বলে এক্সট্রাপলেশান। কন্টিনুএশান মানে কোনো জিনিসকে একটা নির্দিষ্ট পরিধির বাইরে প্রসারিত করা বা বিছানো, এমন ভাবে যাতে সেই পরিধির মধ্যেকার ধর্মগুলি অব্যাহত থাকে।

এই ক্রীয়াত্মক পরিচয় ব্যাবহার করেই আমরা বলব
interpolation = ভিতরান্দাজ
extrapolation = বাহিরান্দাজ
continuation = অব্যাহতি, সটান বিছানো

৩) mechanism :

৪) attractor = টানুনি

৫) correspondence = মিলান্তি,
one-to-one correspondence = একে-একে মিলান্তি
:

৬) function = ছাপাই
domain = গোড়া-জমিন
codomain = আগা-জমিন

গণিতের "ফাংশন" শব্দটায় গণিতের এতোটাই মূলদেশীয় একটা ধারণা ধরা আছে যে শব্দটার আক্ষরিক বা কথ্য ভাষাগত মানে এর সাথে আর যুক্ত হয়, "ফাংশন" বলতে সরাসরি ওই বিমূর্ত গাণিতিক বস্তুটার কথাই ভাবি, ফাংশনের সাধারণ মানের সাথে সাদৃশ্য খোজার চেষ্টা করি না। বস্তুত, "ফাংশন"-এর সাধারণ মানের সাথে তার গাণিতিক মানের কোন সাদৃশ্যই নেই।

ফাংশনের একটা জতসুই প্রতিশব্দ বের করতে হলে প্রচুর যত্নের প্রয়োজন। দুইটা উপায় এগোনো যায়, ফাংশনের ক্রীয়ার বিবরণি করে এমন শব্দ দিয়ে, অথবা তার অন্য গাণিতিক ধর্মের বিবরণ করে এমন শব্দ দিয়ে।

ফাংশন এক ধরণের নামকরণ বা লেবেল-করণ। একটা সমূহের প্রত্যেক সদস্যের সাথে আরেক সমূহের এক এবং শুধু একজন সদস্যকে যুক্ত করা হয়। সেই ক্ষেত্রে "নাম" , "বিধি", "নিয়ম", "রূপান্তর" অথবা "লেবেল" যথাযত প্রতিশব্দ। আমার প্রস্তাব হলো "ছাপাই"।

"নাম" আর "লেবেল" শব্দগুলির সাথে একটা গণনিয়তা যুক্ত আছে। নাম বা লেবেল সাধারণত সেই সব সমূহকে দেওয়া হয় যার সদস্যরা একে অপরের থেকে পৃথক ভাবে চেনা যায়। কিন্তু ফাংশন প্রায়সই চালানো হয় সংখ্যাক্ষেত্র বা দিকরাশি-ক্ষেত্রের ওপর। এইগুলি অগণনিয় সমূহ, সদস্যরা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে সাজানো। সংখ্যারাজিদের আলাদা করে "নাম" বা "লেবেল" দেওয়া কল্পনা করা কঠিন।

গণনিয় এবং অগণিনয়, সুই ক্ষেত্রেই জুতসই করবে, এমন শব্দ হলো "বিধি", "নিয়ম", আর "ছাপ"। ফাংশনের একটা বিশেষ ধর্ম হলো এদের আগা-গোড়া জোড়া যায় - একটা ফাংশন f-এর আগা-জমিন, আর আরেক ফাংশন g-র গোড়া-জমিন যদি এক হয়, তাহলে তাদের জুড়ে একটা নতুন ফাংশন তৈরি করা যায়। ফাংশন এক ধরণের রূপান্তর। দুইখানা রূপান্তরকে যেমন পরপর প্রয়োগ করা যায়, তেমনই ফাংশনদের পরপর জোড়া যায়।

এই আগা-গোড়া জোড়া দেওয়ার ধর্মটা "বিধি" শব্দটার মধ্যে গ্রথিত নেই। "নিয়ম", "ছাপ" আর "রূপান্তর"-এর মধ্যে আছে। আরো তিনটা বিষয় ধর্তব্যের মধ্যে আনলে "ছাপ"-কেই বাছাই করতে হবে।

প্রথমটা হলো ফাংশনের দৃশ্যমান চেহারায়। ফাংশন প্রায়সই তার গ্রাফ / রেখাচিত্র দিয়ে বোঝানো হয়। এই দৃশ্যমানতা "ছাপ"এর মধ্য আছে, "নিয়ম" আর "রূপান্তর"-এ নেই।

দ্বিতীয়ত, ফাংশন ধারণাটার মধ্যে একটা কার্য-কারণ সম্পর্ক আছে। একটা চলরাশি x অন্য আরেক চলরাশি y-র ফাংশন হওয়া মানে, x সম্পূর্ণ ভাবে y-কে দিয়ে নির্ধারিত হবে, আর শুধুমাত্র -কে দিয়েই। এই কার্য-কারণ সম্পর্ক ফাংশনের ধারণা থেকেই প্রতিষ্ঠা হয়। আমরা একই রকম ভাবে বলতে পারি যে -
"x হলো y-এর ছাপ"
লক্ষণীয় যে এই শব্দচয়ন থেকে কার্য-কারণ সম্পর্ক স্পষ্টতই প্রতিভাত হচ্ছে।

তৃতীয়ত, "নিয়ম" আর "রূপান্তর" শব্দদুলি তাদের সাধারণ মানে নিয়েই খুবই ব্যাবহারযোগ্য, গণিতের আলোচনাতেও। এইগুলিকে পরিভাষা বানিয়ে দিল সাধারণ ভাষ্য ব্যাহত হতে পারে।

৭) vector = দিকরাশি
vector space = দিকরাশি-ক্ষেত্র

৮) basis =

৯) system = জগত

১০) dynamical = বদলায়মান
dynamics = নিয়ম
dynamic = নিয়ম

১১) matrix =

১২) eigenvector =
eigen =
eigenvalue =

১৩) fractal = চালি, চালী ( নৌকার বাঁশের পাটাতন; ছোট চাল বা মাচান; প্রতিমার চালচিত্র)

১৪) manifold = চাঁদোয়া
ম্যানিফোল্ড মানে যা আঞ্চলিক ভাবে / সীমিতি স্থানে ইউক্লীডিও ক্ষেত্র, কিন্তু সামগ্রিক ভাবে নাও হতে পারে। আরেক রকম ভাবে, ম্যানিফোল্ড মানে হইল একটা নির্দিষ্ট মাত্রার ইউক্লিডিও ক্ষেত্রের নানান টুকরা জুইড়া জুইড়া বানানো কোনো সমূহ। ইংরাজি "ম্যানিফোল্ড" নামটা ব্যুতপত্তিগত ভাবে একদম আকস্মিক। ম্যানিফোল্ডের সাথে সদৃষ বা ম্যানিফোল্ড ভাব-বাহি একটা জিনিস হলো চাঁদোয়া।

১৫) amplitude = বহর

) morphism = ধাঁচানুগ রূপান্তর, endomorphism, epimorphism, isomorphism, automorphism,

) limit = আখেরাত , limiting = আখেরি

) network = জালখেলা

) input, output, throughput

২০) infimium = মাটি, তল
supremium = ছাত,
minimum = সর্বনিম্ন
maximum = সর্বোচ্চ

block bottleneck Charge Compensation Concrete, concreteness configuration constant deadline Decreasing extension Feed Feedback flowchart flux focus function gradient Increasing invariant mapping Over-compensation overflow Plug in scan set spectrum undo Vortex manifold local localized locality kernel bivariate overlap combinatorics norm optimize