ধাঁচা - গণিতে বিমূর্তা দিয়ে ইট-কাঠ-পাথর গাঁথার কৌশল

দমদম পার্ক তরুণ সঙ্ঘের দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল ধাঁচা। আমাদের দেশে ধাঁচা বানানো একটা নিত্য-নৈমিত্তিক কাজ। যেকোনো বাড়ি, প্যান্ডেল বানানোর সময় থাকে এই লাগোয়া বাঁশ আর দড়ির ধাঁচা। ধাঁচা-নির্মাণ মানুষের বিমূর্ত ভাবনা ক্ষমতার একটা উত্তম উদাহরণ। আমাদের গরীব গতরজীবী রাজমিস্তিরিরা এতে সারাক্ষণ ঝুলে থাকে বলে বাড়ির ধাঁচা নিয়ে আমরা সচারচর মাথা ঘামাই না। কিন্তু এইগুলি খাড়া করতে অনেক কিছুর প্রয়োজন - প্রথমত নির্মীয়মান ইমারতের ইট, সিমেন্টের, দুয়ার, কুঠুরি, সব কিছুর সামগ্রিক বিন্যাস মাথায় রাখা, দ্বিতীয়ত সেইগুলির মধ্যেকার একটা যৌক্তিক বা গাঠনিক পর্য্যায়ক্রম, এবং সব শেষে এই পর্য্যায়ক্রমের মূর্ত রূপে এই ধাঁচার মনন। প্যান্ডেল-শিল্প পশ্চিম বঙ্গে জীবিকার সাথে সাতে মনন আর সৃজনশীলতার একটা উর্বর ভূমি হয়ে উঠেছে। কোলকাতার বাড়িঘড়গুলির মতো শুধু চৌকোনার না হয়ে সব রকমেরই আকার নেয়। ওপরের প্যান্ডেলটা উদ্দিষ্ট চেহারা মাথায় ধারণ করে তার অন্তঃশরীরি গাথুনিটা আগে তৈরি করে রেখেছেন মিস্তিরিরা। আমার কাছে এও এক গাণিতিক চিন্তার সেরা উদাহরণ। এই অংশে আমরা গণিতে ধাঁচা নিয়ে আলোচনা করবো। বস্তুত, গণিতের কোনো উপপাদ্য নাই যার পিছনে (বা ভিতরে) কোনো কৃত্রিম ধাঁচা-র হাত নেই। মানুষ এবং গণিতের এই অদ্ভুত ক্ষমতাটা বোঝবার চেষ্টা করতে করতে বারে বারে আমাদের এই বাঁশ আর দড়ির ধাঁচাগুলির কথা মনে পড়বে।

আসছে ...