Milu coaching centre
বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ
1. পৃথিবীর বৃহত্তম গিরিখাত বা ক্যানিয়ন কোনটি?
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নদীর গ্র্যাণ্ড ক্যানিয়ন।
2. পলি, কাদা প্রভৃতি হালকা পদার্থ কীভাবে বাহিত হয়?
উঃ ভাসমান প্রক্রিয়ায় বহন করে।
3. পৃথিবীর উচ্চতম জলপ্রপাতের নাম কী?
উঃ ভেনিজুয়েলার কারাও নদীর শাখাপথে অবস্থিত অ্যাঞ্জেল জলপ্রপাত।
4. ভারতের উচ্চতম জলপ্রপাত কোনটি?
উঃ কর্র্ণাটক রাজ্যের অন্তর্গত সরাবতী নদীর গেরসোপ্পা বা যোগ জলপ্রপাত।
5. নদীর গতিপথে সৃষ্ট পৃথিবীর বৃহত্তম চর বা দ্বীপ কোনটি?
উঃ অসম সমভূমিতে অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে মাজুলি দ্বীপ।
6. পৃথিবীর দীর্ঘতম নদীটির নাম কী?
উঃ নীলনদ।
7. পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহ উপত্যকা ও নদী উপত্যকার আকৃতি কী হয়?
উঃ হিমবাহ উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি ‘U’ অক্ষরের মত, নদী উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি ‘I’ এবং ‘V’ অক্ষরের মত হয়।
8. বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ব্যাঙের ছাতার মত আকৃতি বিশিষ্ট ভূমিরূপকে কী বলে?
উঃ গৌর।
9. রাজস্থানের মরুঅঞ্চলের চলমান বালিয়াড়িকে কী বলে?
উঃ ধ্রিয়ান।
10. পৃথিবীর কোথায় লোয়েস সমভূমি দেখা যায়?
উঃ হোয়াংহো নদীর অববাহিকায়।
11. নদীর কোন প্রবাহে জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়?
উঃ পার্বত্য প্রভাবে।
12. নদীপ্রবাহ পরিমাপের একককে কী বলে?
উঃ কিউসেক।
13. পার্বত্য অঞ্চলে নদীর প্রধান কাজ কী?
উঃ ক্ষয়কার্য।
14. নদীখাত খুব সঙ্কীর্ণ ও গভীর হলে তাকে কী বলে?
উঃ গিরিখাত।
15. নদীর গতিপথ খুব আঁকাবাঁকা হলে তাকে কী বলে?
উঃ আঁকা-বাঁকা গতিপথ বা মিয়েণ্ডার।
16. হিমবাহ গলিত জল করিতে জমা হলে তাকে কী বলে?
উঃ করিহ্রদ।
17. হিমবাহের দুপাশে যখন পাহাড়, নুড়ি ইত্যাদি সঞ্চিত হয় তখন তাকে কী বলে?
উঃ পার্শ্ব গাবরেখা।
18. তির্যক বালিয়াড়ির আর এক নাম কী?
উঃ বার্খান।
19. পৃথিবীর উচ্চতম বালিয়াড়ি কোথায় অবস্থিত?
উঃ উত্তর আফ্রিকার আলজিরিয়ায় অবস্থিত।
20. বায়ু বাহিত পলি নিম্নভূমিতে সঞ্চিত হয়ে যে সমতলভূমির সৃষ্টি করে তাকে কী বলে?
উঃ লোয়েস সমভূমি।
21. গঙ্গা নদীর পার্বত্য প্রবাহ কতদূর বিস্তৃত?
উঃ গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত বিস্তৃত।
22. নদীর গতিপথের কোন অংশে সঞ্চয়কার্য বেশি হয়?
উঃ তৃতীয় অংশ অর্থাৎ নিম্নগতিতে।
23. হিমরেখা কী?
উঃ পর্বতের গায়ে যে সীমারেখার ওপর সারাবছর তুষার বা বরফ জমে থাকে তাকে হিমরেখা বলে।
24. উপনদী কাকে বলে?
উঃ প্রধান নদীর গতিপথে পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে অনেক ছোট ছোট নদী এসে প্রধান নদীতে মেশে, এদের উপনদী বলে। যেমন- গঙ্গার উপনদী যমুনা।
25. বালিয়াড়ি কাকে বলে?
উঃ বালিপূর্ণ বায়ুর গতিপথে গাছপালা, প্রস্তরখন্ড, ঝোপঝার বা অন্য কোন বাধা থাকলে তাতে প্রতিহত হয়ে বায়ুবাহিত বালির কিছু অংশ সেখানে সঞ্চিত হয় এবং উঁচু ঢিবির মত অবস্থান করে, একে বালিয়ারি বলে।
26. হিমশৈল কাকে বলে?
উঃ সমুদ্রে ভাসমান বিশাল আকৃতি বরফের স্তূপকে বলে হিমশৈল।
27. ভারতের একটি আদর্শ নদীর নাম লেখ।
উঃ গঙ্গা।
28. হিমবাহ বলতে কী বোঝ?
উঃ স্থলভাগের তুষার ও জমাট বাঁধা কঠিন বরফের স্তূপ যখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ধীরগতিতে উচ্চভূমি থেকে নিম্নভূমিতে নেমে আসে তখন তাকে বলে হিমবাহ।
29. মন্থকূপ কী?
উঃ পার্বত্য অঞ্চলে নদীর প্রবল স্রোতের সঙ্গে বাহিত বড় বড় পাথর ও নদীখাতের সংঘর্ষের ফলে নদীর বুকে মাঝে মাঝে গর্ত সৃষ্টি হয়, এগুলিকে বলে মন্থকূপ।
30. আহরণ ক্ষেত্র কাকে বলে?
উঃ একটি নদী এবং তার বিভিন্ন উপনদী সমূহ যে সব অঞ্চলের জল সংগ্রহ করে সেইসব অঞ্চলকে একসঙ্গে প্রধান নদীটির আহরণ ক্ষেত্র বলে।
31. কিউসেক কী?
উঃ নদীর একটি নির্দিষ্ট অংশ দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যত ঘনফুট জল প্রবাহিত হয় তাকেই বলে কিউসেক। সুতরাং নদীপ্রবাহ পরিমাপের একককে বলে কিউসেক।
32. বার্খান কী?
উঃ যেসব বালিয়াড়ি প্রবহমান বায়ুর গতিপথের সঙ্গে আড়াআড়ি ভাবে একেবারে আধখানা চাঁদের মত গড়ে ওঠে সেগুলিকে বলে বার্খান।
33. লোয়েস সমভূমির একটি উদাহরণ দাও।
উঃ চীনের উত্তরাংশে অবস্থিত হোয়াংহো অববাহিকার মধ্যভাগে লোয়েস সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে।
34. হামাদা কী?
উঃ কোন কোন সময় মরুভূমির যেসব স্থান বন্ধুর ও শিলাগঠিত বা পাথুরে সেখানে বায়ুপ্রবাহ অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় ক্ষয়কার্যের জন্য স্থানটি সমতল ও মসৃণাকার ধারণ করে। সাহারা মরুভূমিতে এই ধরনের শিলাগঠিত সমতলভূমিকে হামাদা বলে।
35. ইনসেল বার্জ কী?
উঃ অনেক সময় প্রায় সমতল মরুভূমির মধ্যে স্বল্প উচ্চতা বিশিষ্ট কিছু টিলাকে বিক্ষিপ্ত ভাবে অবস্থান করতে দেখা যায়, এগুলিকে বলে ইনসেল বার্জ।
36. হিমবাহ সৃষ্ট উপত্যকার আকৃতি কেমন হয়?
উঃ ইংরেজি অক্ষর ‘U’ এর মত হয়।
37. কোন কোন অঞ্চলে বালিয়াড়ি দেখা যায়?
উঃ উষ্ণ মরু অঞ্চলে, শুষ্ক অঞ্চলে এবং সমুদ্র উপকূলে।
38. বায়ু কয়টি পদ্ধতিতে ক্ষয়কার্য করে?
উঃ তিনটি পদ্ধটিতে। ক্ষয়সাধন, অপসারণ এবং অবক্ষেপণ।
39. বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট কয়েকটি ভূমিরূপের নাম লেখ।
উঃ গৌর, জিউগেন, ইনসেল বার্জ, ইয়ার্দাঙ প্রভৃতি।
40. ভারতের কোথায় ধান্দ দেখা যায়?
উঃ রাজস্থানের মরুঅঞ্চলে।
41. বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট কয়েকটি ভূমিরূপের নাম লেখ।
উঃ বালিয়াড়ি, বার্খান।
42. ভারতের বৃহত্তম হিমবাহের নাম কী?
উঃ সিয়াচেন।
43. পৃথিবীর দ্রুততম হিমবাহের নাম কী?
উঃ গ্রীণল্যাণ্ডের জ্যাকোভসাভোঁ ইসব্রে।
44. পৃথিবীর দীর্ঘতম হিমবাহের নাম কী?
উঃ ল্যামবার্ট।
45. হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট কয়েকটি ভূমিরূপের নাম লেখ।
উঃ গাবরেখা, কেম, এসকার, ড্রামলিন।
নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ (Work of Rivers, Glaciers and Winds)
প্রশ্ন:- নদী (River) কাকে বলে ?
উত্তর:- বৃষ্টির জল, তুষার-গলা জল, হ্রদ বা ঝর্ণার জল ভূমির ঢাল অনুসারে গড়িয়ে এসে স্বাভাবিক যে জলধারা বা জলস্রোতের সৃষ্টি করে তাকে নদী বলে ।
প্রশ্ন:- শুষ্ক অঞ্চলে কোমল শিলার ওপর গঠিত নদী উপত্যকাকে কী বলে ?
উত্তর:- শুষ্ক অঞ্চলে কোমল শিলার ওপর গঠিত নদী উপত্যকাকে ক্যানিয়ন (Canyon) বলে ।
প্রশ্ন:- একটি পৃথিবী বিখ্যাত ক্যানিয়নের (Canyon) নাম কী ?
উত্তর:- উত্তর আমেরিকার কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়নএকটি পৃথিবী বিখ্যাত ক্যানিয়ন ।
প্রশ্ন:- পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ (Delta) কোনটি ?
উত্তর:- পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ হল গঙ্গা নদীর মোহনা ।
প্রশ্ন:- সঞ্চয় কাজ সর্বাধিক হয় নদীর কোন গতিতে ?
উত্তর:- সঞ্চয় কাজ সর্বাধিক হয় নদীর নিম্নগতিতে ।
প্রশ্ন:- ড্রামলীন (Drumlin) কী ?
উত্তর:- ড্রামলীন (Drumlin) হল হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট একপ্রকার ভূমিরূপ । ভূ-পৃষ্ঠের ওপর এদের দেখতে অনেকটা উলটানো চামচের মত ।
প্রশ্ন:- হিমবাহ কী ?
উত্তর:- চলমান বরফের স্তুপকে হিমবাহ (Glacier) বলে ।
প্রশ্ন:- ধ্রিয়ান কী ?
উত্তর:- চলমান বালিয়াড়িকে ধ্রিয়ান বলে ।
প্রশ্ন:- গিরিখাত কাকে বলে ?
উত্তর:- নদী উপত্যকা গভীর হলে তাকে গিরিখাত বলে ।
প্রশ্ন:- নদীর কোন স্থলে পলিশঙ্কু গঠিত হয় ?
উত্তর:- নদীর উচ্চ ও মধ্যগতির সংযোগ স্থলে পলিশঙ্কু গঠিত হয় ।
প্রশ্ন:- রসে মোতানে (Roche Moutonne) কী ?
উত্তর:- রসে মোতানে (Roche Moutonne) হল হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট একপ্রকার ভূমিরূপ ।
প্রশ্ন:- বায়ুপ্রবাহের দ্বারা সুক্ষ্ম বালিকণা বহুদুরে বাহিত ও সঞ্চিত হয়ে যে ভূমিরূপ গঠন করে তাকে কী বলে ?
উত্তর:- বায়ুপ্রবাহের দ্বারা সুক্ষ্ম বালিকণা বহুদুরে বাহিত ও সঞ্চিত হয়ে যে ভূমিরূপ গঠন করে তাকে লোয়েস (Loess) বলে ।
প্রশ্ন:- প্রবাহমান বায়ুর গতিপথের সঙ্গে সমান্তরালভাবে গড়ে ওঠা বালিয়াড়িকে (Sandune) কী বলে ?
উত্তর:- প্রবাহমান বায়ুর গতিপথের সঙ্গে সমান্তরালভাবে গড়ে ওঠা বালিয়াড়িকে অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি (Longitudinal Dune) বলে ।
প্রশ্ন:- মন্থকূপ সৃষ্টি হয় কীভাবে ?
উত্তর:- নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে মন্থকূপ সৃষ্টি হয় ।
প্রশ্ন:- এরিটি (Arete) বা অ্যারেৎ কী ?
উত্তর:- এরিটি বা অ্যারেৎ হল হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট একপ্রকার ভূমিরূপ ।
প্রশ্ন:- পার্বত্য অঞ্চলে নদী উপত্যকার দু'পাশে থাকা ধাপযুক্ত ভুমিরূপকে কী বলা হয় ?
উত্তর:- পার্বত্য অঞ্চলে নদী উপত্যকার দু'পাশে থাকা ধাপযুক্ত ভুমিরূপকে নদীমঞ্চ বলা হয় ।
প্রশ্ন:- পর্বতের গায়ে যে সীমারেখার ওপর সারা বছর বরফ জমে থাকে তাকে কী বলে ?
উত্তর:- পর্বতের গায়ে যে সীমারেখার ওপর সারা বছর বরফ জমে থাকে তাকে হিমরেখা (Snow Line) বলে ।
প্রশ্ন:- বহিঃবিধৌত সমভূমি (Out-wash-Plain) হিমবাহের কোন কাজের ফলে গঠিত হয় ?
উত্তর:- বহিঃবিধৌত সমভূমি (Out-wash-Plain) হিমবাহের সঞ্চয় কাজের ফলে গঠিত হয় ।
প্রশ্ন:- হিমবাহ থেকে নিঃসৃত জলস্রোতের মাধ্যমে হিমবাহ উপত্যকায় যে সমস্ত পলি সঞ্চিত হয় তাকে কী বলে ?
উত্তর:- হিমবাহ থেকে নিঃসৃত জলস্রোতের মাধ্যমে হিমবাহ উপত্যকায় যে সমস্ত পলি সঞ্চিত হয় তাকে ভ্যালি ট্রেন বলে ।
প্রশ্ন:- বায়ু ও জলধারার যৌথ ক্ষয় ও সঞ্চয় কাজের ফলে কী গঠিত হয় ?
উত্তর:- বায়ু ও জলধারার যৌথ ক্ষয় ও সঞ্চয় কাজের ফলে পেডিমেন্ট (Pediment) গঠিত হয় ।
প্রশ্ন:- প্রায়-সমতল মরুভুমির মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকে কঠিন শিলা গঠিত টিলাগুলিকে কী বলে ?
উত্তর:- প্রায়-সমতল মরুভুমির মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকে কঠিন শিলা গঠিত টিলাগুলিকে ইনসেলবার্জ(Inselberg) বলে ।
প্রশ্ন:- বৃষ্টিহীন শুষ্ক মরুপ্রায় অঞ্চলের নদী উপত্যকা যখন খুব গভীর হয় তখন তাকে কী বলে ?
উত্তর:- বৃষ্টিহীন শুষ্ক মরুপ্রায় অঞ্চলের নদী উপত্যকা যখন খুব গভীর হয় তখন তাকে ক্যানিয়ন (Canyon) বলে ।
প্রশ্ন:- হিমবাহে ঢাকা নদীখাতে হিমবাহ বাহিত নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে যে দীর্ঘ, স্বল্প উঁচু আঁকাবাঁকা শৈলশিরার মত ভূমিরূপ গঠিত হয় তাকে কী বলে ?
উত্তর:- হিমবাহে ঢাকা নদীখাতে হিমবাহ বাহিত নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে যে দীর্ঘ, স্বল্প উঁচু আঁকাবাঁকা শৈলশিরার মত ভূমিরূপ গঠিত হয় তাকে এসকার (Esker) বলে ।
প্রশ্ন:- হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে প্রান্ত গ্রাবরেখায় (Terminal Moraine) সৃষ্টি হওয়া ত্রিকোণাকার ভূমিকে কী বলে ?
উত্তর:- হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে প্রান্ত গ্রাবরেখায় (Terminal Moraine) সৃষ্টি হওয়া ত্রিকোণাকার ভূমিকে কেম (Kame) বলে ।
প্রশ্ন:- রাজস্থানের মরুভূমি অঞ্চলে চলন্ত বালিয়াড়িকে (Sabdune) কী বলে ?
উত্তর:- রাজস্থানের মরুভূমি অঞ্চলে চলন্ত বালিয়াড়িকে (Sabdune) ধ্রিয়ান বলে ।
প্রশ্ন:- উচ্চগতিতে নদীর প্রধান কাজ কী ?
উত্তর:- উচ্চগতিতে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় ।
প্রশ্ন:- উচ্চগতিতে নদীর প্রধান কাজ কী ?
উত্তর:- উচ্চগতিতে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় ।
প্রশ্ন:- ইয়ার্দাং ভূমিরূপ কোথায় দেখা যায় ?
উত্তর:- ইয়ার্দাং ভূমিরূপ দেখা যায় শুষ্ক অঞ্চলে ।
প্রশ্ন:- সমপ্রায় ভূমিতে অবস্থিত গোলাকার অনুচ্চ টিলাকে কী বলে ?
উত্তর:- সমপ্রায় ভূমিতে অবস্থিত গোলাকার অনুচ্চ টিলাকে মোনাডন্ক বলে ।
প্রশ্ন গৌর ভূমিরূপটি কিসের তরঙ্গের দ্বারা গঠিত হয় ?
উত্তর:- গৌর ভূমিরূপটি বায়ুর তরঙ্গের দ্বারা গঠিত হয় ।
প্রশ্ন:- পার্বত্যপ্রবাহে নদী উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি কোন অক্ষরের মতো হয় ?
উত্তর:- পার্বত্যপ্রবাহে নদী উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি ' V ' অক্ষরের মতো হয় ।
প্রশ্ন:- পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহ উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি কোন অক্ষরের মতো হয় ?
উত্তর:- পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহ উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি 'U'অক্ষরের মতো হয় ।
প্রশ্ন:- হিমশৈল কাকে বলে ?
উত্তর:- সমুদ্রে ভাসমান বিশালাকৃতি হিমবাহকে হিমশৈল বলে ।
প্রশ্ন:- ফিয়র্ড কী ?
উত্তর:- সমুদ্রোপকূল সংলগ্ন আংশিক জলপূর্ণ গিরিখাতকে ফিয়র্ড বলে ।
প্রশ্ন:- প্যাটানস্টার কিভাবে সৃষ্টি হয় ?
উত্তর:- হিমসিঁড়ির মধ্যে হিমবাহ-গলা জল জমে প্যাটানস্টারসৃষ্টি হয় ।
প্রশ্ন:- ক্রেভাসেস কী ?
উত্তর:- হিমবাহের উপরের পৃষ্ঠের ফাটলগুলিকে ক্রেভাসেসবলে ।
প্রশ্ন:- হামাদা কী ?
উত্তর:- প্রস্তরময় অমসৃণ মরুভুমিকে হামাদা বলে ।
প্রশ্ন:- বার্খান (Barkhan) কী ?
উত্তর:- তির্যক বালিয়াড়িকে বার্খান বলে ।
প্রশ্ন:- বায়ুর কোন কাজের ফলে বার্খান (Barkhan) সৃষ্টি হয় ?
উত্তর:- বায়ুর সঞ্চয় কাজের ফলে বার্খান সৃষ্টি হয় ।
প্রশ্ন:- রাপিড কী ?
উত্তর:- কঠিন শিলাযুক্ত অঞ্চলে কম ঢালযুক্ত ছোটো ছোটো জলপ্রপাতকে রাপিড বলে ।
প্রশ্ন:- প্লায়া কাকে বলে ?
উত্তর:- মরুভূমি অঞ্চলে সৃষ্ট হ্রদকে প্লায়া বলে ।
প্রশ্ন:- মোহানা কালে বলে ?
উত্তর:- নদী যেখানে এসে সমুদ্রে মেশে তাকে নদীর মোহানাবলে ।
প্রশ্ন:- জলপ্রপাত কোথায় বেশি দেখা যায় ?
উত্তর:- নদীর পার্বত্যগতিতে জলপ্রপাত বেশি দেখা যায় ।
বায়ুমণ্ডল
প্রশ্ন:- ভূপৃষ্ঠের স্বাভাবিক বায়ুর চাপ কত ?
উত্তর:- ভূ-পৃষ্ঠে (সমুদ্রপৃষ্ঠে) বায়ুর চাপ, প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে ১.০৩ বা ১ কিলোগ্রাম ওজনের সমান । অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠে বায়ুর চাপ ৭৬০ মিলিমিটার বা ১,০১৩.২ মিলিবার ।
প্রশ্ন:- একটি সাময়িক বায়ুপ্রবাহের উদাহরণ দাও ।
উত্তর:- স্থলবায়ু অথবা সমুদ্রবায়ু অথবা মৌসুমি বায়ু হল সাময়িক বায়ুপ্রবাহের উদাহরণ ।
প্রশ্ন:- কোন পদ্ধতিতে সৌরতাপ ভূপৃষ্ঠে পৌছায় ?
উত্তর:- বিকিরণ পদ্ধতিতে সৌরতাপ ভূ-পৃষ্ঠে পৌঁছায় ।
প্রশ্ন:- কোন যন্ত্রের সাহায্যে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উত্তাপ পরিমাপ করা হয় ?
উত্তর:- গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ তাপমান যন্ত্রের সাহায্যে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উত্তাপ পরিমাপ করা হয় ।
প্রশ্ন:- বায়ুমণ্ডলের তাপ পরিমাপের একক কী কী ?
উত্তর:- সেন্টিগ্রেড ও ফারেনহাইট হল বায়ুমণ্ডলের তাপ পরিমাপের একক ।
প্রশ্ন:- ৩২০ ফারেনহাইট উষ্ণতার সঙ্গে কত ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সমান হয় ?
উত্তর:- ৩২০ ফারেনহাইট উষ্ণতার সমান হয় ০০ সেন্টিগ্রেড ।
প্রশ্ন:- কোন গোলার্ধে সমোষ্ণরেখাগুলির বক্রতা বেশি ?
উত্তর:- উত্তর গোলার্ধে সমোষ্ণরেখাগুলির বক্রতা বেশি ।
প্রশ্ন:- কোন গোলার্ধে সমোষ্ণ রেখাগুলির বক্রতা কম ?
উত্তর:- দক্ষিণ গোলার্ধে সমোষ্ণরেখাগুলির বক্রতা কম ।
প্রশ্ন:- সমুদ্রপৃষ্ঠে প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারের বায়ুচাপ কত ?
উত্তর:- সমুদ্রপৃষ্ঠে প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারের বায়ুচাপ হল ৭৬০ মিলিমিটার বা ১০১৩.২ মিলিবার ।
প্রশ্ন:- সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি ১১০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর চাপ কত হ্রাস পায় ?
উত্তর:- সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি ১১০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর চাপ ১ সেমি. হ্রাস পায় ।
প্রশ্ন:- অ্যানিমোমিটার কী ?
উত্তর:- বায়ুপ্রবাহের বেগ নির্ণয়ের যন্ত্রকে অ্যানিমোমিটারবলা হয় ।
প্রশ্ন:- কোন অঞ্চলকে গর্জনশীল চল্লিশা বলে ?
উত্তর:- ৪০০- ৫০০ দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলকেগর্জনশীল চল্লিশা বলা হয় ।
প্রশ্ন:- সমুদ্র বায়ু কোন সময়ে প্রবাহিত হয় ?
উত্তর:- সমুদ্রবায়ু দিনের বেলায় প্রবাহিত হয় ।
প্রশ্ন:- স্থলবায়ু কোন সময়ে প্রবাহিত হয় ?
উত্তর:- স্থলবায়ু রাত্রে প্রবাহিত হয় ।
প্রশ্ন:- কোন মৌসুমি বায়ু দ্বারা বৃষ্টি হয় না ?
উত্তর:- শীতকালীন মৌসুমি বাতাসের দ্বারা বৃষ্টি হয় না ।
প্রশ্ন:- কোন বায়ু সমুদ্র বায়ু ও স্থলবায়ুর ব্যাপক সংস্করণ ?
উত্তর:- মৌসুমিবায়ু হল সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর ব্যাপক সংস্করণ ।
প্রশ্ন:- চিন, জাপান প্রভৃতি দেশে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু কোন দিক থেকে প্রবাহিত হয় ?
উত্তর:- চিন, জাপান প্রভৃতি দেশে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয় ।
প্রশ্ন:- টাইফুন কি ?
উত্তর:- চিন সাগরের ঘূর্ণবাত টাইফুন নামে পরিচিত ।
প্রশ্ন:- হ্যারিকেন কি ?
উত্তর:- পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের ঘূর্ণবাত হ্যারিকেন নামে পরিচিত ।
প্রশ্ন:- বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ঘূর্ণবাত কী কী নামে পরিচিত ?
উত্তর:- বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ঘূর্ণবাত কালবৈশাখী ও আশ্বিনের ঝড় নামে পরিচিত ।
প্রশ্ন:- সিরক্কো কি ?
উত্তরঃ সিসিলিতে প্রবাহিত এক প্রকার স্থানীয় বায়ুপ্রবাহের নাম হল সিরক্কো ।
প্রশ্ন:- লু বাতাস কোন সময়ে প্রবাহিত হয় ।
উত্তর:- লু বাতাস গ্রীষ্মকালে প্রবাহিত হয় ।
প্রশ্ন:- বায়ুর আদ্রতা কোন যন্ত্রের সাহায্যে নিরূপণ করা হয় ?
উত্তর:- বায়ুর আদ্রতা শুষ্ক ও আদ্র কুণ্ডযুক্ত হাইগ্রোমিটারের সাহায্যে নিরূপণ করা হয় ।
প্রশ্ন:- নিয়ত বায়ু কাকে বলে ?
উত্তর:- ভূ-পৃষ্ঠে সারাবছর ধরে নিয়মিতভাবে একটি নির্দিষ্ট দিক থেকে আর একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত বায়ুকে নিয়ত বায়ু প্রবাহ বলে ।
প্রশ্ন:- ফন কি ?
উত্তর:- রাইন নদীর উপত্যকার উপর দিয়ে প্রবাহিত স্থানীয় বায়ুপ্রবাহকে ফন বলে ।
প্রশ্ন:- খামসিন কি ?
উত্তর:- মিশরের উপর দিয়ে প্রবাহিত স্থানীয় বায়ুপ্রবাহকে খামসিন বলে ।
প্রশ্ন:- প্রতি ১ হাজার মিটার উচ্চতায় কত তাপমাত্রা হ্রাস পায় ?
উত্তর:- প্রতি ১ হাজার মিটার উচ্চতায় ৬.৪o ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস পায় ।
প্রশ্ন:- নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে উভয় মেরুর দিকে সাধারণত প্রতি ১o অক্ষাংশের ব্যবধানে কত ডিগ্রী তাপমাত্রার পার্থক্য ঘটে ?
উত্তর:- নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে উভয় মেরুর দিকে সাধারণত প্রতি ১o অক্ষাংশের ব্যবধানে ০.২৮o সেলসিয়াস তাপমাত্রার পার্থক্য ঘটে ।
প্রশ্ন:- পৃথিবীতে আগত সূর্যরশ্মির কত শতাংশ বায়ুমন্ডলকে উত্তপ্ত করে ?
উত্তর:- পৃথিবীতে আগত সূর্যরশ্মির ৬৬% বায়ুমন্ডলকে উত্তপ্ত করে ।
প্রশ্ন:- অ্যালবেডো কি ?
উত্তর:- সূর্যকিরণ থেকে পৃথিবীতে মোট যে পরিমাণ তাপ আসে তার ৩৪% উত্তাপ মেঘ, ধুলিকণা দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যায়, — এই ঘটনাকে অ্যালবেডো বলে ।
প্রশ্ন:- কোন অঞ্চলে সূর্য প্রায় সারাবছর লম্বভাবে কিরণ দেয় ?
উত্তর:- নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্য প্রায় সারাবছর লম্বভাবে কিরণ দেয় ।
প্রশ্ন:- কোন যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুর চাপ মাপা হয় ?
উত্তর:- ব্যারোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুর চাপ মাপা হয় ।
প্রশ্ন:- ভূপৃষ্ঠে বায়ুচাপ বলয়ের সংখ্যা কয়টি ?
উত্তর:- ভূপৃষ্ঠে বায়ুচাপ বলয়ের সংখ্যা ৭টি ।
1. বায়ুমণ্ডল কাকে বলে?
উঃ ভুপৃষ্ঠ থেকে ক্রমশ ওপরের দিকে যে গ্যাসীয় আরবণ পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে তাকেই বলে বায়ুমণ্ডল।
2. বায়ুমণ্ডলে শতকরা কত ভাগ নাইট্রোজেন থাকে?
উঃ ৭৮.০৮৪ ভাগ।
3. বায়ুমণ্ডলে শতকরা কত ভাগ অক্সিজেন থাকে?
উঃ ২০.৯৪৬ ভাগ।
4. বায়ুমণ্ডলে প্রধান গ্যাসীয় উপাদানটির নাম কী?
উঃ নাইট্রোজেন।
5. ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমার নাম কী?
উঃ ট্রপোপজ।
6. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরের মধ্যে মেঘ, ঝড়-ঝঞ্ঝা ইত্যাদি সৃষ্টি হয়?
উঃ স্ট্রাটোস্ফিয়ারে।
7. রাসায়নিক গঠন অনুসারে বায়ুমণ্ডলকে কী কী ভাগে ভাগ করা যায়?
উঃ দুই ভাগে। হোমোস্ফিয়ার ও হেটরোস্ফিয়ার।
8. ট্রপোস্ফিয়ারের ওপরে বায়ুর যে স্তর আছে তার নাম কী?
উঃ স্ট্রাটোস্ফিয়ার।
9. ওজোন গ্যাসের স্তর কোথায় দেখতে পাওয়া যায়?
উঃ স্ট্রাটোস্ফিয়ার –এ।
10. স্ট্রাটোস্ফিয়ারের ওপরে বায়ুর যে স্তর আছে তার নাম কী?
উঃ মেসোস্ফিয়ার।
11. মেসস্ফিয়ারের ওপরে বায়ুর যে স্তর আছে তার নাম কী?
উঃ থার্মোস্ফিয়ার।
12. মেরু অঞ্চলে ট্রপোস্ফিয়ারের বিস্তৃতি কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত?
উঃ ৮ কিমি।
13. গ্যাসীয় উপাদান ছাড়া বায়ুমণ্ডলের অপর একটি উল্লেখযোগ্য উপাদানের নাম কর।
উঃ ধূলিকণা।
14. বায়ুমণ্ডলের সর্বশেষ স্তরের নাম কী?
উঃ এক্সোস্ফিয়ার।
15. বায়ুমণ্ডল ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত?
উঃ ওপরের দিকে প্রায় ১০,০০০ কিমি।
প্রশ্ন:- বায়ুমণ্ডলের ঊর্ধসীমা কত ?
উত্তর:- বায়ুমণ্ডলের ঊর্ধসীমা হল ১০,০০০ কি.মি. ।
প্রশ্ন:- হোমোস্ফিয়ার বায়ুস্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে কত দূর উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত ?
উত্তর:- হোমোস্ফিয়ার বায়ুস্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৯০ কি.মি উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত ।
প্রশ্ন:- হেটেরোস্ফিয়ার বায়ুস্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে কত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত ?
উত্তর:- হেটেরোস্ফিয়ার বায়ুস্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৯০ কিমি উপরে ও ১০,০০০ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত ।
প্রশ্ন:- ট্রপোস্ফিয়ার বায়ুস্তরটির ঊর্ধসীমা ভূপৃষ্ঠ থেকে কত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত ?
উত্তর:- ট্রপোস্ফিয়ার বায়ুস্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিমি.উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত ।
প্রশ্ন:- উভয় মেরু অঞ্চলে ট্রপোস্ফিয়ারের উচ্চতা কত ?
উত্তর:- উভয় মেরু অঞ্চলে ট্রপোস্ফিয়ারের উচ্চতা হল ৮ কিমি. ।
প্রশ্ন:- ভূপৃষ্ঠের স্বাভাবিক বায়ুর চাপ কত ?
উত্তর:- ভূ-পৃষ্ঠে (সমুদ্রপৃষ্ঠে) বায়ুর চাপ, প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে ১.০৩ বা ১ কিলোগ্রাম ওজনের সমান । অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠে বায়ুর চাপ ৭৬০ মিলিমিটার বা ১,০১৩.২ মিলিবার ।
প্রশ্ন:- একটি সাময়িক বায়ুপ্রবাহের উদাহরণ দাও ।
উত্তর:- স্থলবায়ু অথবা সমুদ্রবায়ু অথবা মৌসুমি বায়ু হল সাময়িক বায়ুপ্রবাহের উদাহরণ ।
প্রশ্ন:- কোন পদ্ধতিতে সৌরতাপ ভূপৃষ্ঠে পৌছায় ?
উত্তর:- বিকিরণ পদ্ধতিতে সৌরতাপ ভূ-পৃষ্ঠে পৌঁছায় ।
প্রশ্ন:- কোন যন্ত্রের সাহায্যে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উত্তাপ পরিমাপ করা হয় ?
উত্তর:- গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ তাপমান যন্ত্রের সাহায্যে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উত্তাপ পরিমাপ করা হয় ।
প্রশ্ন:- বায়ুমণ্ডলের তাপ পরিমাপের একক কী কী ?
উত্তর:- সেন্টিগ্রেড ও ফারেনহাইট হল বায়ুমণ্ডলের তাপ পরিমাপের একক ।
প্রশ্ন:- ৩২০ ফারেনহাইট উষ্ণতার সঙ্গে কত ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সমান হয় ?
উত্তর:- ৩২০ ফারেনহাইট উষ্ণতার সমান হয় ০০ সেন্টিগ্রেড ।
প্রশ্ন:- কোন গোলার্ধে সমোষ্ণরেখাগুলির বক্রতা বেশি ?
উত্তর:- উত্তর গোলার্ধে সমোষ্ণরেখাগুলির বক্রতা বেশি ।
প্রশ্ন:- কোন গোলার্ধে সমোষ্ণ রেখাগুলির বক্রতা কম ?
উত্তর:- দক্ষিণ গোলার্ধে সমোষ্ণরেখাগুলির বক্রতা কম ।
প্রশ্ন:- সমুদ্রপৃষ্ঠে প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারের বায়ুচাপ কত ?
উত্তর:- সমুদ্রপৃষ্ঠে প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারের বায়ুচাপ হল ৭৬০ মিলিমিটার বা ১০১৩.২ মিলিবার ।
প্রশ্ন:- সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি ১১০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর চাপ কত হ্রাস পায় ?
উত্তর:- সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি ১১০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর চাপ ১ সেমি. হ্রাস পায় ।
প্রশ্ন:- অ্যানিমোমিটার কী ?
উত্তর:- বায়ুপ্রবাহের বেগ নির্ণয়ের যন্ত্রকে অ্যানিমোমিটারবলা হয় ।
প্রশ্ন:- কোন অঞ্চলকে গর্জনশীল চল্লিশা বলে ?
উত্তর:- ৪০০- ৫০০ দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলকেগর্জনশীল চল্লিশা বলা হয় ।
প্রশ্ন:- সমুদ্র বায়ু কোন সময়ে প্রবাহিত হয় ?
উত্তর:- সমুদ্রবায়ু দিনের বেলায় প্রবাহিত হয় ।
প্রশ্ন:- স্থলবায়ু কোন সময়ে প্রবাহিত হয় ?
উত্তর:- স্থলবায়ু রাত্রে প্রবাহিত হয় ।
প্রশ্ন:- কোন মৌসুমি বায়ু দ্বারা বৃষ্টি হয় না ?
উত্তর:- শীতকালীন মৌসুমি বাতাসের দ্বারা বৃষ্টি হয় না ।
প্রশ্ন:- কোন বায়ু সমুদ্র বায়ু ও স্থলবায়ুর ব্যাপক সংস্করণ ?
উত্তর:- মৌসুমিবায়ু হল সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর ব্যাপক সংস্করণ ।
প্রশ্ন:- চিন, জাপান প্রভৃতি দেশে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু কোন দিক থেকে প্রবাহিত হয় ?
উত্তর:- চিন, জাপান প্রভৃতি দেশে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয় ।
প্রশ্ন:- টাইফুন কি ?
উত্তর:- চিন সাগরের ঘূর্ণবাত টাইফুন নামে পরিচিত ।
প্রশ্ন:- হ্যারিকেন কি ?
উত্তর:- পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের ঘূর্ণবাত হ্যারিকেন নামে পরিচিত ।
প্রশ্ন:- বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ঘূর্ণবাত কী কী নামে পরিচিত ?
উত্তর:- বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ঘূর্ণবাত কালবৈশাখী ও আশ্বিনের ঝড় নামে পরিচিত ।
প্রশ্ন:- সিরক্কো কি ?
উত্তরঃ সিসিলিতে প্রবাহিত এক প্রকার স্থানীয় বায়ুপ্রবাহের নাম হল সিরক্কো ।
প্রশ্ন:- লু বাতাস কোন সময়ে প্রবাহিত হয় ।
উত্তর:- লু বাতাস গ্রীষ্মকালে প্রবাহিত হয় ।
প্রশ্ন:- বায়ুর আদ্রতা কোন যন্ত্রের সাহায্যে নিরূপণ করা হয় ?
উত্তর:- বায়ুর আদ্রতা শুষ্ক ও আদ্র কুণ্ডযুক্ত হাইগ্রোমিটারের সাহায্যে নিরূপণ করা হয় ।
প্রশ্ন:- নিয়ত বায়ু কাকে বলে ?
উত্তর:- ভূ-পৃষ্ঠে সারাবছর ধরে নিয়মিতভাবে একটি নির্দিষ্ট দিক থেকে আর একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত বায়ুকে নিয়ত বায়ু প্রবাহ বলে ।
প্রশ্ন:- ফন কি ?
উত্তর:- রাইন নদীর উপত্যকার উপর দিয়ে প্রবাহিত স্থানীয় বায়ুপ্রবাহকে ফন বলে ।
প্রশ্ন:- খামসিন কি ?
উত্তর:- মিশরের উপর দিয়ে প্রবাহিত স্থানীয় বায়ুপ্রবাহকে খামসিন বলে ।
প্রশ্ন:- নিরক্ষরেখার উপরে ট্রপোস্ফিয়ারের উচ্চতা কত ?
উত্তর:- নিরক্ষরেখার উপরে ট্রপোস্ফিয়ারের উচ্চতা হল ১৮ কিমি. ।
প্রশ্ন:- ট্রপোপজের অবস্থান বায়ুমন্ডলের কোথায় ?
উত্তর:- বায়ুমন্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের সংযোগস্থল হল ট্রপোপজের অবস্থান ।
প্রশ্ন:- হেটেরোস্ফিয়ারের সর্বোচ্চ স্তর কোনটি ?
উত্তর:- হেটেরোস্ফিয়ারের সর্বোচ্চ স্তরটি হল হাইড্রোজেন স্তর ।
প্রশ্ন:- বায়ুমন্ডলের সর্বোচ্চ স্তর কোনটি ?
উত্তর:- বায়ুমন্ডলের সর্বোচ্চ স্তরটি হল ম্যাগনেটোস্ফিয়ার ।
প্রশ্ন:- বায়ুমন্ডলের প্রধান গ্যাসীয় উপাদান কোনটি ?
উত্তর:- বায়ুমন্ডলের প্রধান গ্যাসীয় উপাদানটি হল নাইট্রোজেন ।
প্রশ্ন:- বায়ুমন্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ কত ?
উত্তর:- বায়ুমন্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ হল ২০.৯ % ।
প্রশ্ন:- বায়ুমন্ডলে নাইট্রোজেনের স্বাভাবিক পরিমাণ কত ?
উত্তর:- বায়ুমন্ডলে নাইট্রোজেনের স্বাভাবিক পরিমাণ হল ৭৮.১ % ।
প্রশ্ন:- বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের স্বাভাবিক পরিমাণ কত ?
উত্তর:- বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের স্বাভাবিক পরিমাণ হল ০.০০৩ % ।
প্রশ্ন:- পৃথিবীর আবহাওয়া গঠনকারী বেশিরভাগ ঘটনা বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে ঘটে থাকে তার নাম কী ?
উত্তর:- পৃথিবীর আবহাওয়া গঠনকারী বেশিরভাগ ঘটনা বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে ঘটে থাকে ।
প্রশ্ন:- স্বাভাবিক উষ্ণতা হ্রাস বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে দেখা যায় ?
উত্তর:- স্বাভাবিক উষ্ণতা হ্রাস বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ারস্তরে দেখা যায় ।
প্রশ্ন:- ওজোন গ্যাসের স্তর বায়ুমন্ডলের কোন স্তরে রয়েছে ?
উত্তর:- ওজোন গ্যাসের স্তর বায়ুমন্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে রয়েছে ।
প্রশ্ন:- পৃথিবীর রেডিও তরঙ্গগুলি বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে বাধা পেয়ে পৃথিবীতে আবার ফিরে আসে ?
উত্তর:- পৃথিবীর রেডিও তরঙ্গগুলি বায়ুমণ্ডলের আয়নোস্ফিয়ার স্তরে বাধা পেয়ে পৃথিবীতে আবার ফিরে আসে ।
প্রশ্ন:- আকাশকে নীল দেখায় কেন ?
উত্তর:- বায়ুমন্ডলে ধুলিকণার অবস্থিতির জন্য আকাশকে নীল দেখায় ।
প্রশ্ন:- বায়ুমন্ডলের কোন গ্যাস সৌরতাপের বন্টনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ?
উত্তর:- বায়ুমন্ডলের কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস সৌরতাপের বন্টনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ।
প্রশ্ন:- জেট বিমানগুলি বায়ুমন্ডলের কোন স্তর দিয়ে যাতায়াত করে ?
উত্তর:- জেট বিমানগুলি বায়ুমন্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তর দিয়ে যাতায়াত করে ।
প্রশ্ন:- বায়ুদূষণকারী পদার্থগুলি প্রধানত বায়ুমন্ডলের কোন স্তরে অবস্থান করে ?
উত্তর:- বায়ুদূষণকারী পদার্থগুলি প্রধানত বায়ুমন্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে অবস্থান করে ।
প্রশ্ন:- বায়ুমন্ডলের কোন স্তর মূলত সৌরতাপ শোষণ করে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে তাপ বিকিরণে বাধা দেয় ?
উত্তর:- বায়ুমন্ডলের জলীয় বাস্পের স্তর মূলত সৌরতাপ শোষণ করে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে তাপ বিকিরণে বাধা দেয় ।
প্রশ্ন:- বায়ুমন্ডলের কোন স্তর সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিকে ভূপৃষ্ঠে আসতে বাধা দেয় ?
উত্তর:- বায়ুমন্ডলের ওজোন গ্যাসের স্তর সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিকে ভূপৃষ্ঠে আসতে বাধা দেয় ।
প্রশ্ন:- বায়ুমন্ডলের কোন গ্যাস জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভুমিকা পালন করে ?
উত্তর:- বায়ুমন্ডলের কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভুমিকা পালন করে ।
বারিমণ্ডল
প্রশ্ন:- পৃথিবীর বৃহত্তম ও গভীরতম মহাসাগর কোনটি ?
উত্তর:- পৃথিবীর বৃহত্তম ও গভীরতম মহাসাগরের নাম হল প্রশান্ত মহাসাগর ।
প্রশ্ন:- বেঙ্গুয়েলা স্রোত কোথায় দেখা যায় ?
উত্তর:- বেঙ্গুয়েলা স্রোত দেখা যায় আটলান্টিক মহাসাগরে ।
প্রশ্ন:- হিমপ্রাচীর কোথায় দেখা যায় ?
উত্তর:- হিমপ্রাচীর দেখা যায় আটলান্টিক মহাসাগরে ।
প্রশ্ন:- চাঁদের একবার পৃথিবী পরিক্রমণ করতে কত সময় লাগে ?
উত্তর:- চাঁদের একবার পৃথিবী পরিক্রমণ করতে ২৭১/২ দিন সময় লাগে ।
প্রশ্ন:- ভূপৃষ্ঠের জলভাগের প্রতিটি স্থানে ২৪ ঘন্টায় ক-বার জোয়ার ও ক-বার ভাটা হয় ?
উত্তর:- ভূপৃষ্ঠের জলভাগের প্রতিটি স্থানে ২৪ ঘন্টায় দু-বারজোয়ার ও দু-বার ভাটা হয় ।
প্রশ্ন:- মরা কোটাল কখন দেখা যায় ?
উত্তর:- যখন চন্দ্র ও সূর্য পরস্পরের সমকোণে অবস্থান করে তখন মরা কোটাল দেখা যায় ।
প্রশ্ন:- সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির প্রধান কারণ কি ?
উত্তর:- সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির প্রধান কারণ হল নিয়ত বায়ুপ্রবাহ ।
প্রশ্ন:- ভরা কোটাল কোথায় হয় ?
উত্তর:- অমাবস্যার দিনে পৃথিবীর যে অংশ চন্দ্রের সামনে আসে সেখানে ভরা কোটাল কোথায় হয় ।
প্রশ্ন:- ভারত মহাসাগরীয় স্রোত কোন বায়ুপ্রবাহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় ?
উত্তর:- ভারত মহাসাগরীয় স্রোত সাময়িক বায়ুপ্রবাহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় ।
প্রশ্ন:- কোন স্রোতের প্রভাবে জাপান উপকূল উষ্ণ থাকে ?
উত্তর:- উষ্ণ কুরোশিয়ো স্রোতের প্রভাবে জাপান উপকূল উষ্ণ থাকে ।
প্রশ্ন:- মগ্নচড়ার সৃষ্টি কোথায় হয় ?
উত্তর:- শীতল ও উষ্ণ স্রোতের মিলনস্থলে মগ্নচড়ার সৃষ্টি হয় ।
প্রশ্ন:- গ্র্যান্ড ব্যাঙ্ক অঞ্চলটি কিসের জন্য বিখ্যাত ?
উত্তর:- গ্র্যান্ড ব্যাঙ্ক অঞ্চলটি বাণিজ্যিক মত্স্য চাষের জন্য বিখ্যাত ।
প্রশ্ন:- জোয়ারভাটা খেলে এমন একটি নদীর নাম কি ?
উত্তর:- জোয়ারভাটা খেলে এমন একটি নদীর নাম হল টেমস্।
প্রশ্ন:- শৈবাল সাগর কি ?
উত্তর:- উত্তর আটলান্টিক ও উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত ভাসমান আগাছা ও শৈবালপূর্ণ বিস্তৃত স্রোতহীন জলভাগকে 'শৈবাল সাগর' বলে ।
1. পৃথিবীর বৃহত্তম মহাসাগরের নাম কী?
উঃ প্রশান্ত মহাসাগর।
2. পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগরের নাম কী?
উঃ আটলান্টিক মহাসাগর।
3. ভূ-পৃষ্ঠের শতকরা কত ভাগ স্থান জলভাগ অধিকার করে আছে?
উঃ ৭০ ভাগ।
4. আটলাণ্টিক মহাসাগরের দুটি উষ্ণ স্রোতের নাম লেখ।
উঃ উপসাগরীয় স্রোত ও ব্রেজিল স্রোত।
5. আটলাণ্টিক মহাসাগরের কোন অংশে হিমপ্রাচীর সৃষ্টি হয়?
উঃ উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিমাংশে হিমপ্রাচীর সৃষ্টি হয়।
6. সমুদ্রস্রোত বলতে কী বোঝ?
উঃ সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয়। সমুদ্র জলরাশির এই প্রবাহকেই বলে সমুদ্রস্রোত।
7. শৈবাল সাগর কী?
উঃ উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত, উপসাগরীয় স্রোত, ক্যানারী স্রোত প্রভৃতি মিলে একটি জলাবর্তের সৃষ্টি করে যার মধ্যভাগ স্রোতবিহীন। ফলে মধ্যভাগে নানারকম আগাছা, শৈবাল ও জলজ উদ্ভিদ জন্মায়। এইজন্য এই অংশের নাম শৈবাল সাগর।
8. ব্রেজিল স্রোত কাকে বলে?
উঃ দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের পূর্বাংশে ব্রেজিলের পূর্ব উপকূল বরাবর যে উষ্ণ স্রোতটি উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয় তাকে ব্রেজিল স্রোত বলে।
9. বেঙ্গুয়েলা স্রোত কাকে বলে?
উঃ এটি আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তের একটি শীতল স্রোত। দক্ষিণ মহাসাগর থেকে শীতল কুমেরু স্রোতের একটি শাখা আফ্রিকার পশ্চিম উপকূল বরাবর উত্তরদিকে প্রবাহিত হয়। এরই নাম বেঙ্গুয়েলা স্রোত।
10. হিমপ্রাচীর কী?
উঃ উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপকূলে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিমাংশে দক্ষিণমুখী শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের প্রায় সবুজ জল এবং উত্তরমুখী উষ্ণ মহাসাগরীয় স্রোতের ঘন নীল জলের মাঝখানে যে বিভাজন রেখা দেখা যায় তাকে হিমপ্রাচীর বলে।
11. হিমশৈল কাকে বলে?
উঃ সমুদ্রে ভাসমান বিশাল আকৃতির বরফের স্তূপকে বলে হিমশৈল।
12. আটলাণ্টিক মহাসাগরের নিরক্ষীয় প্রতিস্রোত কী?
উঃ আটলান্টিক মহাসাগরের প্রায় মধ্যাংশে পশ্চিমমুখী উত্তর ও দক্ষিন নিরক্ষীয় স্রোত দুটির ঠিক মাঝখানে একটি স্রোত বিপরীত মুখে অর্থাৎ পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়। একে বলে আটলান্টিকের নিরক্ষীয় প্রতিস্রোত।
13. কুরেশিয়ো স্রোত বা জাপান স্রোত কাকে বলে?
উঃ প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাংশে বিশেষত জাপানের পূর্ব উপকূল বরাবর দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবাহিত উষ্ণ স্রোতের নাম কুরেশিয়ো স্রোত বা জাপান স্রোত।
14. জাপান উপকূল কোন স্রোতের প্রভাবে উষ্ণ থাকে?
উঃ কুরেশিয়ো স্রোত বা জাপান স্রোতের প্রভাবে।
15. বেরিং স্রোত কাকে বলে?
উঃ উত্তরের সুমেরু মহাসাগর থেকে একটি শীতল স্রোত মেরুবায়ুর প্রভাবে বেরিং প্রণালীর মধ্য দিয়ে দক্ষিণদিকে প্রবাহিত হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে প্রবেশ করে। একেই বলে বেরিং স্রোত।
16. মালাগাসি দ্বীপের পূর্ব উপকূল দিয়ে প্রবাহিত স্রোতটির নাম কী?
উঃ মালাগাসি স্রোত।
17. হিমপ্রাচীর কোন মহাসাগরে দেখা যায়?
উঃ আটলাণ্টিক মহাসাগরে।
18. কী কী কারণে জোয়ার-ভাটা হয়?
উঃ পৃথিবীর আবর্তন গতিএবং পৃথিবীর ওপর চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণজনিত বলের কারণে।
19. চান্দ্র জোয়ার কাকে বলে?
উঃ চন্দ্রের আকর্ষণে পৃথিবীতে যে জোয়ার হয় তাকে চান্দ্র জোয়ার বলে।
20. সৌর জোয়ার কাকে বলে?
উঃ সূর্যের আকর্ষণে পৃথিবীতে যে জোয়ার হয় রাকে সৌর জোয়ার বলে।
21. কোন স্থানে একটি জোয়ার ও একটি ভাটার মধ্যে সময়ের ব্যবধান কত থাকে?
উঃ ৬ ঘণ্টা ১ মিনিট।
22. কোন স্থানে মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কত থাকে?
উঃ ১২ ঘণ্টা ২৬ মিনিট।
23. পৃথিবীর একটি স্থানে দিনে কত বার জোয়ার-ভাটা হয়?
উঃ দু-বার জোয়ার ও দু-বার ভাটা হয়।
24. কোন স্থানে যখন মুখ্য জোয়ার হয়, তার প্রতিপাদ স্থানে তখন কী অবস্থা বিরাজ করে?
উঃ গৌণ জোয়ার।
25. কোন স্থানে দু-বার মুখ্য জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কত থাকে?
উঃ ২৪ ঘণ্টা ৫২ মিনিট।
26. প্রত্যহ কতবার জোয়ার ভাটা হয়?
উঃ প্রত্যহ দু-বার জোয়ার ভাটা ও দু-বার ভাটা হয়।
27. ভরা কোটাল কোন দিনে হয়?
উঃ অমাবস্যা ও পূর্ণিমার দিনে।
28. দুই মুখ্য বা গৌণ জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কত?
উঃ ২৪ ঘণ্টা ৫২ মিনিট।
29. জোয়ার-ভাটা খেলে এমন একটি নদীর নাম কর।
উঃ হুগলী নদী।
30. একটি স্বাদু জলের হ্রদের নাম লেখ।
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সুপিরিয়র।
31. ভারতের একটি সুপেয় জলের হ্রদের নাম লেখ।
উঃ ডাল হ্রদ।
32. একটি লবনাক্ত জলের হ্রদের নাম লেখ।
উঃ জর্ডন-ইস্রায়েল সীমান্তের মরুসাগর।
33. চিল্কা কী জাতীয় হ্রদ?
উঃ লবণাক্ত জলের হ্রদ।
34. পৃথিবীর বৃহত্তম হ্রদের নাম কী?
উঃ কাস্পিয়ান।
35. পৃথিবীর বৃহত্তম সুপেয় জলের হ্রদের নাম কী?
উঃ আমেরিকার সুপিরিয়র।
36. পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা লবণাক্ত হ্রদ কোনটি?
উঃ জর্ডন-ইস্রায়েল সীমান্তের মরুসাগর।
37. পৃথিবীর গভীরতম হ্রদের নাম কী?
উঃ রাশিয়ার বৈকাল।
38. পৃথিবীর সর্বোচ্চ হ্রদের নাম কী?
উঃ দক্ষিণ আমেরিকার টিটিকাকা।
39. পৃথিবীর নিম্নতম হ্রদ কোনটি?
উঃ জর্ডন-ইস্রায়েল সীমান্তের মরুসাগর।
40. হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে কোন হ্রদ সৃষ্টি হয়?
উঃ করি হ্রদ।
41. ভারতের পূর্ব উপকূলের একটি উপহ্রদের নাম কর।
উঃ চিল্কা, পুলিকট।
42. একটি উপহ্রদের নাম লেখ।
উঃ চিল্কা।
1. পৃথিবীর বৃহত্তম মহাসাগরের নাম কী?
উঃ প্রশান্ত মহাসাগর।
2. পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগরের নাম কী?
উঃ আটলান্টিক মহাসাগর।
3. ভূ-পৃষ্ঠের শতকরা কত ভাগ স্থান জলভাগ অধিকার করে আছে?
উঃ ৭০ ভাগ।
4. আটলাণ্টিক মহাসাগরের দুটি উষ্ণ স্রোতের নাম লেখ।
উঃ উপসাগরীয় স্রোত ও ব্রেজিল স্রোত।
5. আটলাণ্টিক মহাসাগরের কোন অংশে হিমপ্রাচীর সৃষ্টি হয়?
উঃ উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিমাংশে হিমপ্রাচীর সৃষ্টি হয়।
6. সমুদ্রস্রোত বলতে কী বোঝ?
উঃ সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয়। সমুদ্র জলরাশির এই প্রবাহকেই বলে সমুদ্রস্রোত।
7. শৈবাল সাগর কী?
উঃ উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত, উপসাগরীয় স্রোত, ক্যানারী স্রোত প্রভৃতি মিলে একটি জলাবর্তের সৃষ্টি করে যার মধ্যভাগ স্রোতবিহীন। ফলে মধ্যভাগে নানারকম আগাছা, শৈবাল ও জলজ উদ্ভিদ জন্মায়। এইজন্য এই অংশের নাম শৈবাল সাগর।
8. ব্রেজিল স্রোত কাকে বলে?
উঃ দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের পূর্বাংশে ব্রেজিলের পূর্ব উপকূল বরাবর যে উষ্ণ স্রোতটি উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয় তাকে ব্রেজিল স্রোত বলে।
9. বেঙ্গুয়েলা স্রোত কাকে বলে?
উঃ এটি আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তের একটি শীতল স্রোত। দক্ষিণ মহাসাগর থেকে শীতল কুমেরু স্রোতের একটি শাখা আফ্রিকার পশ্চিম উপকূল বরাবর উত্তরদিকে প্রবাহিত হয়। এরই নাম বেঙ্গুয়েলা স্রোত।
10. হিমপ্রাচীর কী?
উঃ উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপকূলে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিমাংশে দক্ষিণমুখী শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের প্রায় সবুজ জল এবং উত্তরমুখী উষ্ণ মহাসাগরীয় স্রোতের ঘন নীল জলের মাঝখানে যে বিভাজন রেখা দেখা যায় তাকে হিমপ্রাচীর বলে।
11. হিমশৈল কাকে বলে?
উঃ সমুদ্রে ভাসমান বিশাল আকৃতির বরফের স্তূপকে বলে হিমশৈল।
12. আটলাণ্টিক মহাসাগরের নিরক্ষীয় প্রতিস্রোত কী?
উঃ আটলান্টিক মহাসাগরের প্রায় মধ্যাংশে পশ্চিমমুখী উত্তর ও দক্ষিন নিরক্ষীয় স্রোত দুটির ঠিক মাঝখানে একটি স্রোত বিপরীত মুখে অর্থাৎ পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়। একে বলে আটলান্টিকের নিরক্ষীয় প্রতিস্রোত।
13. কুরেশিয়ো স্রোত বা জাপান স্রোত কাকে বলে?
উঃ প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাংশে বিশেষত জাপানের পূর্ব উপকূল বরাবর দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবাহিত উষ্ণ স্রোতের নাম কুরেশিয়ো স্রোত বা জাপান স্রোত।
14. জাপান উপকূল কোন স্রোতের প্রভাবে উষ্ণ থাকে?
উঃ কুরেশিয়ো স্রোত বা জাপান স্রোতের প্রভাবে।
15. বেরিং স্রোত কাকে বলে?
উঃ উত্তরের সুমেরু মহাসাগর থেকে একটি শীতল স্রোত মেরুবায়ুর প্রভাবে বেরিং প্রণালীর মধ্য দিয়ে দক্ষিণদিকে প্রবাহিত হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে প্রবেশ করে। একেই বলে বেরিং স্রোত।
16. মালাগাসি দ্বীপের পূর্ব উপকূল দিয়ে প্রবাহিত স্রোতটির নাম কী?
উঃ মালাগাসি স্রোত।
17. হিমপ্রাচীর কোন মহাসাগরে দেখা যায়?
উঃ আটলাণ্টিক মহাসাগরে।
18. কী কী কারণে জোয়ার-ভাটা হয়?
উঃ পৃথিবীর আবর্তন গতিএবং পৃথিবীর ওপর চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণজনিত বলের কারণে।
19. চান্দ্র জোয়ার কাকে বলে?
উঃ চন্দ্রের আকর্ষণে পৃথিবীতে যে জোয়ার হয় তাকে চান্দ্র জোয়ার বলে।
20. সৌর জোয়ার কাকে বলে?
উঃ সূর্যের আকর্ষণে পৃথিবীতে যে জোয়ার হয় রাকে সৌর জোয়ার বলে।
21. কোন স্থানে একটি জোয়ার ও একটি ভাটার মধ্যে সময়ের ব্যবধান কত থাকে?
উঃ ৬ ঘণ্টা ১ মিনিট।
22. কোন স্থানে মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কত থাকে?
উঃ ১২ ঘণ্টা ২৬ মিনিট।
23. পৃথিবীর একটি স্থানে দিনে কত বার জোয়ার-ভাটা হয়?
উঃ দু-বার জোয়ার ও দু-বার ভাটা হয়।
24. কোন স্থানে যখন মুখ্য জোয়ার হয়, তার প্রতিপাদ স্থানে তখন কী অবস্থা বিরাজ করে?
উঃ গৌণ জোয়ার।
25. কোন স্থানে দু-বার মুখ্য জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কত থাকে?
উঃ ২৪ ঘণ্টা ৫২ মিনিট।
26. প্রত্যহ কতবার জোয়ার ভাটা হয়?
উঃ প্রত্যহ দু-বার জোয়ার ভাটা ও দু-বার ভাটা হয়।
27. ভরা কোটাল কোন দিনে হয়?
উঃ অমাবস্যা ও পূর্ণিমার দিনে।
28. দুই মুখ্য বা গৌণ জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কত?
উঃ ২৪ ঘণ্টা ৫২ মিনিট।
29. জোয়ার-ভাটা খেলে এমন একটি নদীর নাম কর।
উঃ হুগলী নদী।
30. একটি স্বাদু জলের হ্রদের নাম লেখ।
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সুপিরিয়র।
31. ভারতের একটি সুপেয় জলের হ্রদের নাম লেখ।
উঃ ডাল হ্রদ।
32. একটি লবনাক্ত জলের হ্রদের নাম লেখ।
উঃ জর্ডন-ইস্রায়েল সীমান্তের মরুসাগর।
33. চিল্কা কী জাতীয় হ্রদ?
উঃ লবণাক্ত জলের হ্রদ।
34. পৃথিবীর বৃহত্তম হ্রদের নাম কী?
উঃ কাস্পিয়ান।
35. পৃথিবীর বৃহত্তম সুপেয় জলের হ্রদের নাম কী?
উঃ আমেরিকার সুপিরিয়র।
36. পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা লবণাক্ত হ্রদ কোনটি?
উঃ জর্ডন-ইস্রায়েল সীমান্তের মরুসাগর।
37. পৃথিবীর গভীরতম হ্রদের নাম কী?
উঃ রাশিয়ার বৈকাল।
38. পৃথিবীর সর্বোচ্চ হ্রদের নাম কী?
উঃ দক্ষিণ আমেরিকার টিটিকাকা।
39. পৃথিবীর নিম্নতম হ্রদ কোনটি?
উঃ জর্ডন-ইস্রায়েল সীমান্তের মরুসাগর।
40. হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে কোন হ্রদ সৃষ্টি হয়?
উঃ করি হ্রদ।
41. ভারতের পূর্ব উপকূলের একটি উপহ্রদের নাম কর।
উঃ চিল্কা, পুলিকট।
42. একটি উপহ্রদের নাম লেখ।
উঃ চিল্কা।
ভারতের ভূ-প্রকৃতি
1. হিমালয় কী জাতীয় পর্বত?
উঃ ভঙ্গিল পর্বত।
2. হিমালয়ের দৈর্ঘ্য কত?
উঃ ২৫০০ কিমি।
3. হিমালয় যেখানে অবস্থিত সেখানে আগে কী ছিল?
উঃ টেথিস সাগর।
4. টেথিস সাগরের অবস্থান কোথায় ছিল?
উঃ হিমালয় পর্বতশ্রেণি যে অঞ্চলে অবস্থিত।
5. টেথিস সাগরের উত্তরে ও দক্ষিণে আগে কী ছিল?
উঃ টেথিস সাগরের উত্তরে আঙ্গারাল্যাণ্ড ও দক্ষিণে গণ্ডোয়ানাল্যাণ্ড।
6. হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ মাউন্ট এভারেস্ট (৮৮৪৮ মিটার)।
7. কারাকোরাম পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ গডউইন অস্টিন (৮৬১১ মিটার)।
8. পৃথিবীর ছাদ কাকে বলে?
উঃ পামীর মালভূমি।
9. হিমালয় পর্বতমালার বিস্তার কত?
উঃ ১৫০ কিমি থেকে ৫০০ কিমি।
10. ভারতের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের নাম কী?
উঃ গডউইন অস্টিন।
11. হিমালয়ের উৎপত্তি কবে হয়েছে?
উঃ ভূ-তাত্ত্বিক সময়ের হিসাবে টারসিয়ারি যুগে অর্থাৎ প্রায় ৭ কোটি বছর আগে হিমালয় ওপরে ওঠা শুরু করে। তারপর বহু যুগ ধরে সেই উত্থানপর্ব চলে।
12. ভারতের প্রাচীনতম পর্বত কোনটি?
উঃ আরাবল্লী।
13. ভারতের মধ্যে অবস্থিত হিমালয় পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি?
উঃ গডউইন অস্টিন।
14. দুন কাকে বলে?
উঃ কুমায়ুন হিমবাহ অঞ্চলে মধ্য হিমলয় পর্বতশ্রেণি এবং শিবালিক পর্বতশ্রেণির মধ্যবর্তী অংশে যে দীর্ঘ উপত্যকা আছে তাকে দুন বলে।
15. শিবালিক পর্বতশ্রেণির গড় উচ্চতা কত?
উঃ ৬০০ মিটার থেকে ১৫০০ মিটার।
16. পশ্চিম হিমালয়ের একটি উষ্ণ প্রস্রবনের নাম কর।
উঃ কাশ্মীরের ভেরনাগ।
17. পশ্চিম হিমালয়ের একটি গিরিপথের নাম কর।
উঃ জোজিলা।
18. পূর্ব হিমালয়ের একটি গিরিপথের নাম কর।
উঃ নাথুলা।
19. ভারতের সর্বোচ্চ মালভুমি কোনটি?
উঃ লাদাখ মালভূমি।
20. ভারতের একটি ভঙ্গিল পর্বতের নাম কর।
উঃ হিমালয়।
21. বসুধার ধবল শীর্ষ কাকে বলে?
উঃ কারাকোরাম পর্বতশ্রেণিকে।
22. ভারতের দীর্ঘতম হিমবাহ কোনটি?
উঃ সিয়াচেন।
23. ভারতের একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরির নাম কী?
উঃ ব্যারেন।
24. ভারতের উচ্চতম পর্বতের নাম কী?
উঃ হিমালয়।
25. ভারতের সর্বোচ্চ জলপ্রপাতের নাম কী?
উঃ গেরসোপ্পা।
26. দক্ষিণ ভারতের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গটির নাম কী?
উঃ আনাইমোদি (২৬৯৫ মিটার)।
27. পূর্বাচলের অন্তর্গত কয়েকটি পর্বতশ্রেণির নাম কর।
উঃ পাটকাই, নাগা, লুসাই।
28. কাশ্মীর কোন হিমালয়ে অবস্থিত?
উঃ কাশ্মীর পশ্চিম হিমালয়ে অবস্থিত।
29. সিঙ্গলীলা পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ সান্দাকফু (৩৬৩০ মিটার)।
30. সিপকি-লা, লিপুলেক ও নাথুলা কী?
উঃ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের তিনটি গিরিপথ।
31. পশ্চিমবঙ্গ-নেপাল সীমান্তে কোন পর্বত অবস্থিত?
উঃ সিঙ্গলীলা।
32. ভূস্বর্গ বা প্রাচ্যের নন্দনকানন কাকে বলে?
উঃ কাশ্মীর উপত্যকাকে।
33. ভারতের একটি স্তূপ পর্বতের নাম লেখ।
উঃ সাতপুরা পর্বত।
34. ভারতের একটি ক্ষয়জাত পর্বতের নাম লেখ।
উঃ আরাবল্লী।
35. সিয়াচেন হিমবাহ কোন পর্বতে অবস্থিত?
উঃ কারাকোরাম পর্বতে।
36. ভারতের একমাত্র উষ্ণ মরুভূমিটি কোন রাজ্যে অবস্থিত?
উঃ রাজস্থান রাজ্যে।
37. ভারতের উষ্ণ মরুভূমি কী নামে পরিচিত?
উঃ মরুস্থলি।
38. রাজস্থান সমভূমি বা মরুস্থলির উল্লেখযোগ্য নদী কোনটি?
উঃ লুনি।
39. রাজস্থানের পশ্চিমাংশের চলমান বালিয়াড়িকে কী বলে?
উঃ ধ্রিয়ান।
40. রাজস্থানের উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণিটির নাম কী?
উঃ আরাবল্লী।
41. গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলে প্রাচীন পলি দ্বারা গঠিত ভূমিকে কী বলে?
উঃ ভাঙ্গর।
42. গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলে নতুন পলি দ্বারা গঠিত ভূমিকে কী বলে?
উঃ খাদর।
43. হিমালয় পাদদেশের নুড়ি-বালি পূর্ণ সছিদ্র ভূমিকে কী বলে?
উঃ ভাবর।
44. ভাবরের দক্ষিণের জঙ্গলে ঢাকা জলাভূমিকে কী বলে?
উঃ তরাই।
45. পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশে অবস্থিত তরাই ভূমিকে কী বলে?
উঃ ডুয়ার্স।
46. পৃথিবীর বৃহত্তম নদীদ্বীপ বা নদীচর কোনটি?
উঃ মাজুলী দ্বীপ।
47. ভারতের শস্য ভাণ্ডার কাকে বলে?
উঃ উত্তর ভারতের সমভূমিকে।
48. মেঘালয় মালভূমি কোন মালভূমির অংশ?
উঃ দাক্ষিণাত্য মালভূমির অংশ।
49. আরাবল্লীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ গুরুশিখর (১৭২২ মিটার)।
50. মধ্য ভারতের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণিটির নাম কী?
উঃ বিন্ধ্য পর্বতশ্রেণি।
51. সাতপুরা কী জাতীয় পর্বত?
উঃ স্তূপ পর্বত।
52. সাতপুরার সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ ধূপগড় (১৩৫০ মিটার)।
53. মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ অমরকণ্টক (১০৫৭ মিটার)।
54. পশ্চিমঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ কলসুবাই (১৬৪৬ মিটার)।
55. পশ্চিমঘাট পর্বতের দুটি গিরিপথের নাম লেখ।
উঃ থলঘাট ও ভোরঘাট।
56. নীলগিরি পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ দোদাবেতা (২৬৩৭ মিটার)।
57. দক্ষিণ ভারতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোন পর্বতে অবস্থিত?
উঃ আনাইমালাই পর্বতে অবস্থিত।
58. মালনাদ কাকে বলে?
উঃ কানাড়া ভাষায় মালনাদ কথার অর্থ পাহাড়ী দেশ। কর্ণাটক মালভূমির পশ্চিমভাগের পশ্চিমঘাট পর্বত সংলগ্ন পাহাড়ী ভূমিকে বলে মালনাদ।
59. ময়দান কী?
উঃ মালনাদের পুর্বে অর্থাৎ কর্ণাটক মালভূমির পূর্বভাগে যে উন্মুক্ত সমতলভূমি আছে তাকে ময়দান বলে।
60. করমণ্ডল উপকূল কাকে বলে?
উঃ বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন পূর্ব উপকূলের দক্ষিণাংশ, বিশেষত কৃষ্ণা নদীর দক্ষিণে কন্যাকুমারী পর্যন্ত উপকূলকে করমণ্ডল বলে।
61. উত্তর সরকারস উপকূল কাকে বলে?
উঃ উত্তরে সুবর্ণরেখা নদীর মোহনা থেকে শুরু করে দক্ষিণে কৃষ্ণা নদীর ব-দ্বীপ পর্যন্ত পূর্ব উপকূলকে উত্তর সরকারস উপকূল বলে।
62. ভারতের পশ্চিম উপকূলের কোন অংশে অনেক হ্রদ আছে?
উঃ মালাবার উপকূলে অনেক হ্রদ আছে।
63. ভারতের পূর্ব উপকূলের দুটি হ্রদের নাম লেখ।
উঃ চিল্কা এবং পুলিকট।
64. চিল্কা কী জাতীয় জলের হ্রদ?
উঃ লবণাক্ত জলের হ্রদ।
65. কোঙ্কণ উপকূল কাকে বলে?
উঃ মহারাষ্ট্রের উত্তর সীমা থেকে গোয়া পর্যন্ত আরবসাগর পর্যন্ত আরবসাগর সংলগ্ন পশ্চিম উপকূলকে কোঙ্কণ উপকূল বলে।
66. কেরালার উপকূলভূমির নাম কী?
উঃ মালাবার উপকূল।
67. রাণ কী?
উঃ গুজরাটের কচ্ছ উপদ্বীপকে বেষ্টন করে আছে যে লবণাক্ত কর্দমময় অগভীর জলাভূমি তাকে বলে রাণ।
68. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ স্যাডল পিক (৭৫০ মিটার)।
69. ভারতের একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরির নাম কর।
উঃ ব্যারেন দ্বীপ।
70. লক্ষ, মিনিকয় প্রভৃতি আরব সাগরের দ্বীপগুলি কী জাতীয়?
উঃ প্রবাল গঠিত দ্বীপ।
71. বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জের নাম লেখ।
উঃ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
72. ত্রিপুরার সর্বোচ্চ পাহাড় শ্রেণিটির নাম কী?
উঃ জাম্পুইটাং।
73. ব্যাক ওয়াটার্স কী?
উঃ কেরালা রাজ্যের মালাবার উপকূলে বহু উপহ্রদ আছে, এগুলিকে ব্যাক ওয়াটার্স বলে।
74. পূর্বাচল কাকে বলে?
উঃ উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্তর্গত নাগাল্যাণ্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, অসম প্রভৃতি রাজ্যে পাটকাই, নাগা, লুসাই প্রভৃতি নামে যেসব পর্বতশ্রেণি উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত হয়েছে সেগুলিকে একসঙ্গে পূর্বাচল বলে।
ভারতের নদনদী
1. উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের জলবিভাজিকা কাকে বলে?
উঃ বিন্ধ্য পর্বতকে।
2. ভারতের প্রধান নদীর নাম কী?
উঃ গঙ্গা।
3. গঙ্গা নদীর দৈর্ঘ্য কত?
উঃ ২৫১০ কিমি।
4. গঙ্গার গতিপথকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায়? কী কী?
উঃ তিন ভাগে। উচ্চগতি, মধ্যগতি ও নিম্নগতি।
5. গঙ্গার উৎপত্তি কোথায়?
উঃ কুমায়ন হিমালয়ের অন্তর্গত গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে গঙ্গার উৎপত্তি।
6. গঙ্গার উচ্চগতি কোথা থেকে কোথা পর্যন্ত বিস্তৃত?
উঃ গোমুখ তুষার গুহা থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত।
7. গঙ্গার মধ্যগতি কোথা থেকে কোথা পর্যন্ত বিস্তৃত?
উঃ হরিদ্বার থেকে বিহারের রাজমহল পর্যন্ত।
8. গঙ্গার নিম্নগতি কোথা থেকে কোথা পর্যন্ত বিস্তৃত?
উঃ বিহারের রাজমহল থেকে মোহনা পর্যন্ত।
9. দেবপ্রয়াগের কাছে কোন নদী গঙ্গায় এসে মিশেছে?
উঃ অলকানন্দা।
10. ভাগীরথী ও অলকানন্দার মিলিত প্রবাহের নাম কী?
উঃ গঙ্গা।
11. পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের নাম কী?
উঃ গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের মোহনার ব-দ্বীপ।
12. গঙ্গার প্রধান উপনদীর নাম কী?
উঃ যমুনা।
13. যমুনার উৎপত্তি কোথায়?
উঃ কুমায়ুন হিমালয়ের যমুনোত্রী হিমবাহ থেকে।
14. যমুনার তিনটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ চম্বল, বেতোয়া, কেন।
15. গঙ্গার বামতীরের উপনদী গুলির নাম লেখ।
উঃ রামগঙ্গা, গোমতী, ঘর্ঘরা, গণ্ডক, কোশী।
16. গঙ্গার ডানতীরের উপনদী গুলির নাম লেখ।
উঃ যমুনা শোন
17. গঙ্গার তীরে অবস্থিত চারটি শহরের নাম লেখ।
উঃ কোলকাতা, পাটনা, এলাহাবাদ, কানপুর।
18. উত্তর-পশ্চিম ভারতের প্রধান নদীর নাম কী?
উঃ সিন্ধু নদ।
19. সিন্ধুর উৎপত্তি কোথায়?
উঃ তিব্বতের সিন-খা-বাদ হিমবাহ থেকে।
20. সিন্ধুর পাঁচটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ শতদ্রু, বিপাশা, বিতস্তা, চন্দ্রভাগা, ইরাবতী।
21. কাশ্মীর উপত্যকার মধ্য দিয়ে কোন নদী প্রবাহিত হয়েছে?
উঃ ঝিলাম বা বিতস্তা নদী।
22. কোন নদীর তীরে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা গড়ে উঠেছিল?
উঃ সিন্ধু নদের তীরে।
23. উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রধান নদীর নাম কী?
উঃ ব্রহ্মপুত্র।
24. ব্রহ্মপুত্রের উৎপত্তি কোথায়?
উঃ তিব্বতের রাক্ষসতাল মানস সরোবরের কাছে চেমায়ুং দুং হিমবাহ থেকে।
25. তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের নাম কী?
উঃ সাংপো।
26. কোন কোন নদীর মিলিত ধারার নাম ব্রহ্মপুত্র?
উঃ ডিবং, ডিহং ও লোহিত নদীর মিলিত ধারার নাম ব্রহ্মপুত্র।
27. ব্রহ্মপুত্রের দুটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ সুবনশিরি ও ভরলী।
28. লুনি কোথায় পড়েছে?
উঃ কচ্ছের রাণ অঞ্চলে।
29. রাজস্থানের প্রধান নদীর নাম কী?
উঃ লুনি।
30. প্রবাহের দিক অনুসার দক্ষিণ ভারতের নদী গুলিকে প্রধান কী কী ভাগে ভাগ করা যায়?
উঃ পূর্ববাহিনী নদী ও পশ্চিমবাহিনী নদী।
31. কয়েকটি পূর্ববাহিনী নদীর নাম লেখ।
উঃ সুবর্ণরেখা, মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী প্রভৃতি।
32. কোন নদীর গতিপথে বিখ্যাত হুড্রু জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে?
উঃ সুবর্ণরেখা নদীর গতিপথে।
33. দক্ষিণ ভারতের প্রধান নদীর নাম কী?
উঃ গোদাবরী।
34. শিবসমুদ্রম জলপ্রপাত কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ কাবেরী নদীর গতিপথে।
35. সবরমতী নদী কোথা থেকে উৎপন্ন হয়ে কোথায় পড়েছে?
উঃ আরাবল্লী পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে গুজরাটের কাম্বে উপসাগরে পড়েছে।
36. ভারতের সর্বোচ্চ জলপ্রপাত গেরসোপ্পা কোন নদীতে অবস্থিত?
উঃ কর্ণাটকের সরাবতী নদীর গতিপথে।
37. গঙ্গার নদী অববাহিকার আয়তন কত?
উঃ ৮.৩৮ লক্ষ বর্গ কিমি।
38. ভারতের দুটি হ্রদের নাম লেখ।
উঃ রাজস্থানের সম্বর ও কাশ্মীরের ডাল।
39. গঙ্গা ছাড়া ভারতের আর চারটি নদীর নাম লেখ যাদের মোহনায় ব-দ্বীপ আছে?
উঃ মহানদী, গদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী নদীর মোহনায় ব-দ্বীপ আছে।
40. ব্রহ্মপুত্র নদ কোন অঞ্চলে সাংপো নামে পরিচিত?
উঃ তিব্বতে।
41. ভারতের একটি অন্তর্বাহিনী নদীর নাম লেখ।
উঃ লুনি।
42. দক্ষিণ ভারতের দীর্ঘতম নদী কোনটি?
উঃ গোদাবরী।
43. ভারতের বৃহত্তম নদী কোনটি?
উঃ গঙ্গা।
44. ভারতের সর্বোচ্চ জলপ্রপাতটির নাম কী? এটি অন্য কী নামে পরিচিত?
উঃ গেরসোপ্পা। একে মহাত্মা গান্ধী প্রপাত বা যোগপ্রপাতও বলে।
45. নর্মদা নদীর উৎস কোথায়?
উঃ মধ্যপ্রদেশের মহাকাল বা মৈকাল পর্বতের অমরকণ্টক শৃঙ্গ থেকে নর্মদা নদীর উৎপত্তি হয়েছে।
46. অন্তর্বাহিনী নদী কাকে বলে?
উঃ যেসব নদী কোন দেশ বা মহাদেশের উচ্চভূমি বা পার্বত্য অঞ্চলে উৎপন্ন হয়ে ঐ দেশ বা মহাদেশরই কোন হ্রদ, সাগর বা জলাভূমিতে গিয়ে পড়ে অথবা মরুভূমিতে গিয়ে শুকিয়ে যায় সেগুলিকে বলে অন্তর্বাহিনী নদী।
ভারতের প্রধান নদনদী
●সিন্ধু●
•মোট দৈর্ঘ্য-2880 কিমি,ভারতে 709কিমি
•উৎপত্তিস্থল-তিব্বতের মানস সরোবরের নিকট সিন কা বাব নামক জলধারা,লাদাখের কাছে দিয়ে ভারতে প্রবেশ
•উপনদী-শতুদ্র,বিপাশা,বিতস্তা,চন্দ্রভাগা,ইরাবতী,চেনা
•পতিত হয়েছে-আরব সাগর
●গঙ্গা(ভারতের দীর্ঘতম)●
•মোট দৈর্ঘ্য-2510 কিমি, ভারতে 2017 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রি হিমবাহের গোমুখ গুহা
•বামতীরের উপনদী-রামগঙ্গা,গোমতী,ঘর্ঘরা,গন্ডক,কোশী
•ডানতীরের উপনদী-যমুনা ও শোন
•পাশে অবস্থিত-হরিদ্বার;কানপুর,এলাহাবাদ,বারানসী,পাটনা,ভাগলপুর,কলকাতা(হুগলী নদী)
•মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের কাছে ভাগ হয়েছে
•অলকানন্দা ও ভাগিরথী মিলেছে দেবপ্রয়াগে
•পতিত হয়েছে-বঙ্গোপোসাগরে
●ব্রহ্মপুত্র(উৎপত্তিস্থলে সাংপো)●
•মোট দৈর্ঘ্য-2580 কিমি(ভারতে 885 কিমি)
•উৎপত্তিস্থল-চেমায়ুং দুম হিমবাহ
•উপনদী-সুবর্ণষিড়ি,মানস,তিস্তা,তোর্সা
•পাশে অবস্থিত-ডিব্রুগড়,তেজপুর,গৌহাটি,
• পৃথিবীর উচ্চতম নদী বা Sky River নামে পরিচিত
•পতিত হয়েছে-যমুনা নাম নিয়ে গঙ্গায়(বাংলাদেশ)
●যমুনা●
•মোট দৈর্ঘ্য- 1376কিমি
•উৎপত্তিস্থল-যমুনেত্রী হিমবাহ
•উপনদী-চম্বল,কেন,বেতোয়া
•পাশে অবস্থিত-দিল্লী,মথুরা,আগ্রা
•পতিত হয়েছে-এলাহাবাদের কাছে গঙ্গায়
•গঙ্গার দীর্ঘতম উপনদী
●চেনাব●
•উৎপত্তিস্থল-হিমাচল প্রদেশের কুলু
•পাশে অবস্থিত-সালাল প্রোজেক্ট
•পতিত হয়েছে-সিন্ধু(সিন্ধুর বৃহত্তম উপনদী)
●শতুদ্র●
•মোট দৈর্ঘ্য - ভারতে 1060 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-তিব্বতের রাকা হ্রদ
•পাশে অবস্থিত-ভাকরা নাঙ্গাল,লুধিয়ানা
•পতিত হয়েছে-সিন্ধু
•শিপকিলা গিরিপথ দিয়ে ভারতে প্রবেশ
●ঝিলম/বিতস্তা●
•মোট দৈর্ঘ্য-424 কিমি, ভারতে 400 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-পীরপঞ্জালের পাদদেশে ভেরানাগ এ
•পাশে অবস্থিত - শ্রীনগর
•পতিত হয়েছে-সিন্ধু(চেনাব)
●বিপাশা●
•মোট দৈর্ঘ্য-460 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-কুলু পর্বতের কাছে রোটাং পাস
•পাশে অবস্থিত-মানালী
•পতিত হয়েছে-হারিকের কাছে শতুদ্রতে
●ইরাবতী●
•মোট দৈর্ঘ্য-725 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-রোটাংপাস
•পতিত হয়েছে-চেনাব(সিন্ধু)
●শোন●
•উৎপত্তিস্থল-অমরকন্টক
•পতিত হয়েছে-গঙ্গা
•উত্তর বাহিনী
●দামোদর●
•মোট দৈর্ঘ্য-514 কিমি
উপনদী-বরাকর
•উৎপত্তিস্থল-ঝাড়খন্ডের পালামৌ জেলার ছোটোনাগপুরের মালভূমি
•পতিত হয়েছে-ভাগীরথী
•বাংলার দুঃখ
●সূবর্নরেখা●
•মোট দৈর্ঘ্য-477 কিমি
•উৎপত্তিস্থল- ছোটোনাগপুর মালভূমি
•পাশে অবস্থিত-জামশেদপুর
•পতিত হয়েছে-বঙ্গোপোসাগর
•হুড্রু জলপ্রপাত(ঝাড়খন্ড) অবস্থিত
●লুনী(অন্তর্বাহিনী নদী)●
•মোট দৈর্ঘ্য-450 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-আজমীরের নিকট আনাসাগর হ্রদ
•পতিত হয়েছে-কচ্ছের রন
●সবরমতী●
•মোট দৈর্ঘ্য-416 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-আরাবল্লী
•পাশে অবস্থিত-আমেদাবাদ,গান্ধীনগর
•পতিত হয়েছে-কাম্বে উপসাগর
●ব্রাহ্মনী●
•মোট দৈর্ঘ্য-705 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-ছুটোনাগপুর মালভূমি
•পাশে অবস্থিত-রাউরকেল্লা
•পতিত হয়েছে-বঙ্গোপোসাগর
●মহানদী●
•মোট দৈর্ঘ্য-885 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-দন্ডকারন্যের কাছে সিয়াগার পাহাড়
•পাশে অবস্থিত-- কটক,হিরাকুদ প্রজেক্ট
•পতিত হয়েছে-বঙ্গোপোসাগর
●কৃষ্ণা●
•মোট দৈর্ঘ্য-1290 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-পশ্চিমঘাট পর্বতের মহাবালেশ্বর
•উপনদী-সীমা,ভীমা , তুঙ্গাভদ্রা,মুসী,ঘাটপ্রভা,মালপ্রভা,কয়না
•পাশে অবস্থিত-নাগার্জুন সাগর,বিজয়ওয়াড়া
•পতিত হয়েছে-বঙ্গোপোসাগর
●কাবেরী(পবিত্র নদী)●
•মোট দৈর্ঘ্য-805 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-ব্রহ্মগিরি পর্বত(কর্ণাটক)
•উপনদী-হেরাঙ্গী,হেমবতী,সিমলা,ভবানী
•পাশে অবস্থিত-
মেত্তুর প্রজেক্ট(তামিলনাডু),
শিবসমুদ্রম(কর্নাটক),তিরুচিরাপল্লী,
মাইসোর
•পতিত হয়েছে-বঙ্গোপোসাগর
●গোদাবরী(দক্ষিন ভারতের গঙ্গা)●
•মোট দৈর্ঘ্য-1465 কিমি
•উৎপত্তিস্থল- নাসিকের কাছে ত্রিম্বক মালভূমি
•উপনদী-প্রংহিতা,ইন্দ্রাবতী,
•পাশে অবস্থিত-নাসিক
•পতিত হয়েছে-বঙ্গোপোসাগর
●নর্মদা(পশ্চিমবাহিনী)●
•দৈর্ঘ্য-1310 কিমি
•উৎপত্তি-মহাকালপর্বতের অমরকন্টক(মধ্যপ্রদেশ)
•উপনদী-তাওয়া,হিরণ
•পাশে অবস্থিত--জব্বলপুর,সর্দার সরোবর প্রজেক্ট, ধুয়াধুর জলপ্রপাত
•পতিত হয়েছে-কাম্বে উপসাগর
●তাপ্তি(পশ্চিমবাহিনী)●
•মোট দৈর্ঘ্য- 724 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-মহাদেব পর্বতের মূলতাই শৃঙ্গ
•উপনদী-পূর্ণা,ভোগর,বেতুল
•পাশে অবস্থিত-সুরাট,কাকড়াপাড়া,উকাই(গুজরাট)
•পতিত হয়েছে-কাম্বে উপসাগর
ভারতের আবহাওয়া ও জলবায়ু
1. ভারতের জলবায়ু কী প্রকৃতির?
উঃ মৌসুমী প্রকৃতির।
2. ভারতের উপর দিয়ে প্রধানত কোন কোন বায়ু প্রবাহিত হয়?
উঃ গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু এবং শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু।
3. ভারতের জালবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
উঃ ঋতু পরিবর্তন।
4. গ্রীষ্মকালে ভারতের কোন অঞ্চল গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়?
উঃ রাজস্থানের মরু অঞ্চলে।
5. ভারতের জলবায়ুকে কটি ঋতুতে ভাগ করা যা? কী কী?
উঃ ভারতের জবায়ুকে চারটি ঋতুতে ভাগ করা যায়। যথা – গ্রীষ্মকাল, বর্ষাকাল, শরৎকাল, শীতকাল।
6. ‘লু’ কী?
উঃ গ্রীষ্মকালে উত্তর-পশ্চিম ভারতের বহু স্থানে দিনের বেলায় অত্যন্ত উষ্ণ বাতাস প্রবাহিত হয়। একে বলে লু।
7. কালবৈশাখী কী?
উঃ পশ্চিমবঙ্গে গ্রীষ্মকালে কোন কোন অপরাহ্নের দিন যে ঝড়ো বাতাস ও বর্জ্র বিদ্যুৎসহ অল্প বৃষ্টিপাত বা শিলাবৃষ্টি হয়, তাকে কালবৈশাখী বলে।
8. ভারতের সর্বাধিক বৃষ্টিপাত কোথায় হয়?
উঃ মেঘালয়ের মৌসিনরামে।
9. ভারতের একটি বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলের নাম কর।
উঃ খাসি পাহাড়ের উত্তরদিকে অবস্থিত শিলং পাহাড়সহ মেঘালয় মালভূমির উত্তরাংশ বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল।
10. পশ্চিমঘাটের বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল কোনটি?
উঃ পশ্চিমঘাট পর্বতের পূর্ব ঢালে অবস্থিত দাক্ষিণাত্য মালভূমির অভ্যন্তর ভাগ।
11. আশ্বিনের ঝড় কাকে বলে?
উঃ শরৎকালে পূর্ব উপকূলে দক্ষিণের বঙ্গোপসাগর থেকে মাঝে মাঝে প্রবল ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোনের আবির্ভাব ঘটে। একে পশ্চিমবঙ্গে আশ্বিনের ঝড় বলে।
12. ভারতে শীতকালের স্থায়িত্ব কত?
উঃ তিন মাস। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি।
13. মৌসুমী বায়ুর প্রত্যাগমন বা বিদায়কাল বলতে বছরের কোন সময়টিকে বোঝায়?
উঃ অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসকে।
14. ভারতের উপকূল অঞ্চলের জলবায়ু সমভাবাপন্ন কেন?
উঃ সমুদ্র সান্নিধ্যের জন্য।
15. ভারতের কোন অঞ্চলে বছরে দুবার বৃষ্টিপাত হয়?
উঃ তামিলনাড়ুতে, বিশেষত উপকূল অঞ্চলে। (করমণ্ডল উপকূলে)।
16. ভারতের বৃষ্টিপাতকে কোন বায়ু নিয়ন্ত্রণ করে?
উঃ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু।
ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ
1. তিনটি চিরসবুজ গাছের নাম লেখ।
উঃ শিশু, গর্জন ও তুন,
2. পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিমঢালে কী জাতীয় অরণ্য আছে?
উঃ চিরহরিৎ বা চিরসবুজ অরণ্য।
3. কয়েকটি পর্ণমোচী বৃক্ষের নাম লেখ।
উঃ শাল, সেগুন, পলাশ, শিরীষ, কুসুম, মহুয়া প্রভৃতি।
4. কী থেকে গালা উৎপন্ন হয়?
উঃ লাক্ষা থেকে।
5. ভারতের পর্ণমোচী অরণ্যের অপর নাম কী?
উঃ মৌসুমী অরণ্য।
6. পশ্চিমবঙ্গের সমভূমি অঞ্চলে কী জাতীয় বৃক্ষ জন্মায়?
উঃ পর্ণমোচী বৃক্ষ।
7. পাইন গাছের বিস্তৃত অরণ্য ভারতের কোন অঞ্চলে আছে?
উঃ ভারতের পশ্চিম হিমালয়ের ৯০০ থেকে ২০০০ মিটার উচ্চতায়।
8. ভারতের মোট কত শতাংশ জমিতে অরণ্য আছে?
উঃ ২৪.১৬ শতাংশ।(২০১৫)
9. ভারতের জ্বালানীর প্রধান উৎস কী?
উঃ কাঠ।
10. বনভূমি সংরক্ষণের প্রধান উপায় কী?
উঃ যথেচ্ছভাবে বন সংহার রোধ এবং বনসৃজন বা বৃক্ষরোপণ।
11. ভারত সরকারের অরণ্য গবেষণাগারটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ উত্তরপ্রদেশের দেরাদুনে।
12. দাবানল কী?
উঃ গাছে গাছে ঘর্ষণের ফলে উৎপন্ন অরণ্য ধ্বংসকারী আগুন।
13. ভারতের সরলবর্গীয় অরণ্য কোথায় দেখতে পাওয়া যায়?
উঃ পূর্ব হিমালয়ে ২৫০০ থেকে ৪০০০ মিটার উচ্চতায় এবং পশ্চিম হিমালয়ের ২০০০ থেকে ৩২০০ মিটার উচ্চতায়।
14. সুন্দরী গাছের অরণ্য ভারতের কোথায় দেখতে পাওয়া যায়?
উঃ পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ অঞ্চলের সুন্দরবন অরণ্যে।
15. ভারতের কোন রাজ্যে বনভূমির পরিমাণ সর্বাধিক?
উঃ মধ্যপ্রদেশে।
16. ম্যানগ্রোভ অরণ্য ভারতের কোন অঞ্চলে দেখা যায়?
উঃ গাঙ্গেয় ব-দ্বীপে সুন্দরবন অঞ্চলে।
17. ভারতের মরু অঞ্চলে কী ধরণের উদ্ভিদ জন্মায়?
উঃ ঘাস, ক্যাকটাস, ফণিমনসা, বাবলা প্রভৃতি জেরোফাইটিক প্ল্যান্টস।
18. ভারতের একটি ম্যানগ্রোভ অরণ্যের নাম কর।
উঃ গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের দক্ষিণপ্রান্তে অবস্থিত সুন্দরবন।
ভারতের জলসেচ ব্যবস্থা
1. ভারতে কী কী পদ্ধতিতে জলসেচ করা হয়?
উঃ তিনটি পদ্ধতিতে। যথা কূপ ও নলকূপ, জলাশয় এবং সেচখাল।
2. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির শতকরা কত ভাগে জলাশয়ের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উঃ ১৫ ভাগ।
3. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির শতকরা কত শতাংশে কূল ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উঃ ৩৮ ভাগ।
4. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির কত ভাগে সেচখালের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উঃ ৪০ ভাগ।
5. সেচখাল কত ধরণের ও কী কী?
উঃ দুই ধরণের। যথা প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খাল।
6. প্লাবন খাল বলতে কী বোঝ?
উঃ যেসব নদী কেবল বর্ষার প্লাবনে জলপূর্ণ হয় এবং বছরের অন্য সময় ক্ষীণকায়া সেসব নদী থেকে খনন করা খালগুলিকে বলে প্লাবন খাল।
7. নিত্যবহ খাল কাকে বলে?
উঃ যেসব নদীতে সাআবছর জল থাকে সেসব নদী থেকে খনন করা খালগুলিকে বলে নিত্যবহ খাল।
8. দুটি নিত্যবহ খালের উদাহরণ দাও?
উঃ উত্তরপ্রদেশের উচ্চগঙ্গা খাল এবং পূর্ব সমুনা খাল।
9. ভারতের কোন অঞ্চলে নিত্যবহ খাল দ্বারা জলসেচ বেশি প্রচলিত?
উঃ গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলে ও পাঞ্জাব ও হরিয়ানায়।
10. বহুমুখী নদী-উপত্যকা পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্য কী?
উঃ বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলসেচ ব্যবস্থার প্রসার, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, জলপথে পরিবহন, মাছচাষ, পানীয় জল সরবরাহ।
11. একটি বহুমুখী নদী-উপত্যকা পরিকল্পনার নাম লেখ।
উঃ দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা।
12. দামোদর নদ অন্য কী নামে পরিচিত?
উঃ দুঃখের নদ।
13. কত সালে দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়?
উঃ ১৯৪৮ সালে।
14. ভারতে কোন রাজ্যের কৃষিজমিতে জলসেচের সর্বাধিক সুবিধা আছে?
উঃ পাঞ্জাব রাজ্যের।
15. ভারতের বৃহত্তম নদী-উপত্যকা পরিকল্পনাটির নাম কী?
উঃ ভাকরা-নাঙ্গাল পরিকল্পনা।
16. উত্তর ভারতের একটি জলসেচ প্রকল্পের নাম কর।
উঃ ভাকরা-নাঙ্গাল বা কংসাবতী প্রকল্প।
17. পশ্চিমবঙ্গের একটি নিত্যবহ খালের নাম কর।
উঃ মেদিনীপুর খাল।
18. ভারতের কোন রাজ্যে সেচ-সেবিত কৃষিজমির পরিমাণ সর্বনিম্ন?
উঃ ত্রিপুরা রাজ্যে।
19. বিঘাপ্রতি ফলন কোন রাজ্যের সর্বোচ্চ?
উঃ তামিলনাড়ুতে।
20. ভারতে কটি শস্য-ঋতু দেখা যায় ও কী কী?
উঃ দুটি। খারিফ শস্য এবং রবি শস্য।
21. দুটি খারিফ শস্যের নাম লেখ।
উঃ ধান, তুলো।
22. দুটি রবি শস্যের নাম লেখ।
উঃ গম, যব।
23. খারিফ শস্য কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উঃ দকশিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু আসার সময় অর্থাৎ বর্ষার শুরুতে।
24. রবি শস্য কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উঃ শীতের শুরুতে।
25. কয়েকটি বাগিচা ফসলের নাম লেখ।
উঃ চা, কফি, রবার।
26. ভারতের প্রধান খাদ্যশস্য কী?
উঃ ধান।
27. ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতের স্থান কী?
উঃ দ্বিতীয়।
28. কী ধরণের মাটি ধান চাষের পক্ষে উপযোগী?
উঃ উর্বর দোঁয়াশ মাটি এবং নদী উপত্যকার পলিমাটি।
29. ধান চাষের জন্য কত সেমি বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন?
উঃ ১০০ সেমি থেকে ২০০ সেমি।
30. কত ডিগ্রী তাপমাত্রা ধান চাষের পক্ষে উপযোগী?
উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
31. আমন ধান কোন সময়ে ভারতে চাষ হয়?
উঃ বর্ষাকালে লাগানো হয় ও শীতকালে কাটা হয়।
32. আমন ধানকে ‘আঘায়নি’ বলা হয় কেন?
উঃ অগ্রহায়ণ মাসে কাটা হয় বলে।
33. আউশ ধান ভারতে কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উঃ শ্রীষ্মকালে কালবৈশাখীর বৃষ্টিতে লাগানো হয় এবং ভাদ্র-আশ্বিন মাসে কাটা হয়।
34. বোরো ধান কোন সময়ে কাটা হয়?
উঃ গ্রীষ্মকালে।
35. ধান উৎপাদনে কোন রাজ্য ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ পশ্চিমবঙ্গ।
36. ভারতে হেক্টর প্রতি ধানের উৎপাদন কত?
উঃ হেক্টর প্রতি ১,৯২১ কিগ্রা।
37. ভারতে ধান গবেষণাগারটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ উড়িষ্যার কটকে।
38. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল বীজের নাম লেখ।
উঃ জয়া, রত্না, তাইচুং, বিজয়া, গোবিন্দ প্রভৃতি।
39. গম উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ উত্তরপ্রদেশ।
40. ভারতের গম গবেষণাগার কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ দিল্লীর কাছে পুষায়।
41. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল গম বীজের নাম লেখ।
উঃ সোনালিকা, সোনা-২২৭, কল্যাণ-সোনা, লারমা রাজো ইত্যাদি। ।
42. গম উৎপাদনের জন্য কী পরিমাণ উত্তাপ প্রয়োজন?
উঃ গড়ে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
43. গম উৎপাদনের জন্য কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উঃ ৫০ সেমি থেকে ১০০ সেমি।
44. কী ধরণের মাটিতে গম চাষ ভাল হয়?
উঃ উর্বর দোঁয়াশ মাটি।
45. মিলেটস কী?
উঃ জোয়ার, বাজরা, রাগী প্রভৃতি দানা শস্যকে মিলেটস বলে।
46. জোয়ার উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ মহারাষ্ট্র।
47. বাজরা উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ রাজস্থান।
48. রাগী উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ কর্নাটক।
49. ভারতের দুটি প্রধান তন্তুশস্যের নাম লেখ।
উঃ তুলো, পাট।
50. সোনালী আঁশ কাকে বলে?
উঃ পাটকে।
51. পাট চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতা প্রয়োজন?
উঃ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
52. পাট চাষের জন্য কী পরিমাণ বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন?
উঃ ১৫০ সেমি থেকে ২০০ সেমি।
53. পৃথিবীর মধ্যে কোথায় সবচেয়ে ভাল পাট চাষ হয়?
উঃ গঙ্গা ব্রহ্মপুত্রের ব-দ্বীপ অঞ্চলে।
54. ভারতের কোন রাজ্য পাট উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ পশ্চিমবঙ্গ।
55. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল পাট বীজের নাম লেখ।
উঃ জে আর সি -২১২, জে আর সি -৩২১, জে আর ও – ৬২০।
56. চা উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতে স্থান কত?
উঃ প্রথম
57. চা চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতার প্রয়োজন?
উঃ ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
58. কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত চা চাষের উপযোগী?
উঃ ১৫০সেমি থেকে ২৫০ সেমি।
59. কোন রাজ্য ভারতে চা উৎপাদন করে?
উঃ অসম।
60. ভারত কোন কোন দেশে চা রপ্তানি করে?
উঃ রাশিয়া, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, ইরাক, ইরাণ প্রভৃতি দেশে।
61. ভারতের কোন বন্দরের মাধ্যমে সর্বাধিক চা রপ্তানি হয়?
উঃ কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে।
62. কফি চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা এবং ১৫০ সেমি থেকে ২০০ সেমি বৃষ্টিপাত।
63. কফি চাষের জন্য কোন ধরণের মাটি আদর্শ?
উঃ লাভা সৃষ্ট উর্বর মাটি বা লাল মাটি বা ল্যাটেরাইট মাটি।
64. ভারতে কত ধরণের কফি উৎপন্ন হয় ও কী কী?
উঃ দুই ধরণের। যথা আরবীয় কফি ও রোবাস্ট্রা কফি।
65. ভারতের কোন রাজ্য কফি উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করেছে?
উঃ কর্ণাটক।
66. ভারত কোন কোন দেশে কফি রপ্তানি করে?
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ফান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে।
67. কী ধরণের বৃষ্টিপাত এবং উষ্ণতা আখ চাষের উপযোগী?
উঃ গড়ে ১৫০ সেমি বৃষ্টিপাত এবং ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা প্রয়োজন।
68. কী ধরণের ভূমিতে আখ চাষ ভাল হয়?
উঃ উত্তম জলনিকাশী ব্যবস্থাযুক্ত সমতলভূমিতে।
69. ভারতে কেন্দ্রীয় আখ গবেষণাগার কোথায় অবস্থিত?
উঃ উত্তরপ্রদেশের লক্ষনৌতে।
70. কোন জাতীয় মাটিতে তুল চাষ ভাল হয়?
উঃ চুন মেশানো উর্বর দোঁয়াশ মাটি বা কৃষ্ণ মৃত্তিকায়।
71. কী পরিমাণ উত্তাপ তুলো চাষের পক্ষে আদর্শ?
উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
72. তুলো চাষের জন্য কত বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উঃ ৫০ সেমি থেকে ১০০ সেমি।
73. ভারত কোন কোন দেশে তুলো রপ্তানি করে?
উঃ জাপান, জার্মানি প্রভৃতি দেশে।
74. কয়েকটি উচ্চ-ফলনশীল তুলোবীজের নাম লেখ?
উঃ সুজাতা, এম সি ইউ -৫, এম সি ইউ -৪।
75. তেলবীজ কাকে বলে?
উঃ যেসব বীজ থেকে তেল নিষ্কাষণ করা হয় সেগুলিকে বলে তেলবীজ
76. তেলবীজ কত ধরণের ও কী কী?
উঃ দুই ধরণের। যথা –ভক্ষ্য তেলবীজ এবং অভক্ষ্য তেলবীজ।
77. কয়েকটি ভক্ষ্য তেলবীজের উদাহরণ দাও।
উঃ সরষে, তিল, চিনাবাদাম, নারিকেল।
78. দুটি অভক্ষ্য তেলবীজের উদাহরণ দাও।
উঃ তিসি এবং রেড়ি।
79. খারিফ শস্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ গ্রীষ্মকালে, বর্ষার শুরুতেই অর্থাৎ দক্ষি-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু আগমণের সময় যেসব ফসলের চাষ আরম্ভ হয় এবং হেমন্তকালে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলিকে বলে খারিফ শস্য। যেমন ধান, তুলো, পাট, আখ, ভুট্টা, জোয়ার ,বাজরা, রাগী প্রভৃতি।
80. রবি শস্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ শীতের শুরুতেই যেসব ফসলের চাষ শুরু হয় এবং গ্রীষ্মের প্রারম্ভেই সংগ্রহ করা হয় তাদের বলে রবি শস্য। গম, যব।
81. অর্থকরী ফসল বলতে কী বোঝ?
উঃ যেসব ফসল বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জুন করা হয় তাদের অর্থকরী ফসল বলে। যেমন পাট, তুলো, আখ, তামাক।
82. ভারতের দুটি প্রধান অর্থকরী ফসলের নাম লেখ।
উঃ তুলো, পাট।
83. দক্ষিণ ভারতের একটি অর্থকরী ফসলের নাম লেখ।
উঃ আখ।
84. ভারতের সর্বোচ্চ বাঁধ কোনটি?
উঃ হিমাচল প্রদেশের শতদ্রু নদীর ওপর নির্মিত ভাকরা বাঁধ। (২২৬ মিটার)।
85. বাণিজ্য ফসল কাকে বলে?
উঃ প্রধানত রপ্তানি বা বাণিজ্যের জন্য যেসব ফসল উৎপাদন করা হয় সেগুলিকে বাণিজ্য ফসল বলে।
ভারতের জলসেচ ব্যবস্থা
1. ভারতে কী কী পদ্ধতিতে জলসেচ করা হয়?
উঃ তিনটি পদ্ধতিতে। যথা কূপ ও নলকূপ, জলাশয় এবং সেচখাল।
2. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির শতকরা কত ভাগে জলাশয়ের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উঃ ১৫ ভাগ।
3. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির শতকরা কত শতাংশে কূল ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উঃ ৩৮ ভাগ।
4. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির কত ভাগে সেচখালের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উঃ ৪০ ভাগ।
5. সেচখাল কত ধরণের ও কী কী?
উঃ দুই ধরণের। যথা প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খাল।
6. প্লাবন খাল বলতে কী বোঝ?
উঃ যেসব নদী কেবল বর্ষার প্লাবনে জলপূর্ণ হয় এবং বছরের অন্য সময় ক্ষীণকায়া সেসব নদী থেকে খনন করা খালগুলিকে বলে প্লাবন খাল।
7. নিত্যবহ খাল কাকে বলে?
উঃ যেসব নদীতে সাআবছর জল থাকে সেসব নদী থেকে খনন করা খালগুলিকে বলে নিত্যবহ খাল।
8. দুটি নিত্যবহ খালের উদাহরণ দাও?
উঃ উত্তরপ্রদেশের উচ্চগঙ্গা খাল এবং পূর্ব সমুনা খাল।
9. ভারতের কোন অঞ্চলে নিত্যবহ খাল দ্বারা জলসেচ বেশি প্রচলিত?
উঃ গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলে ও পাঞ্জাব ও হরিয়ানায়।
10. বহুমুখী নদী-উপত্যকা পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্য কী?
উঃ বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলসেচ ব্যবস্থার প্রসার, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, জলপথে পরিবহন, মাছচাষ, পানীয় জল সরবরাহ।
11. একটি বহুমুখী নদী-উপত্যকা পরিকল্পনার নাম লেখ।
উঃ দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা।
12. দামোদর নদ অন্য কী নামে পরিচিত?
উঃ দুঃখের নদ।
13. কত সালে দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়?
উঃ ১৯৪৮ সালে।
14. ভারতে কোন রাজ্যের কৃষিজমিতে জলসেচের সর্বাধিক সুবিধা আছে?
উঃ পাঞ্জাব রাজ্যের।
15. ভারতের বৃহত্তম নদী-উপত্যকা পরিকল্পনাটির নাম কী?
উঃ ভাকরা-নাঙ্গাল পরিকল্পনা।
16. উত্তর ভারতের একটি জলসেচ প্রকল্পের নাম কর।
উঃ ভাকরা-নাঙ্গাল বা কংসাবতী প্রকল্প।
17. পশ্চিমবঙ্গের একটি নিত্যবহ খালের নাম কর।
উঃ মেদিনীপুর খাল।
18. ভারতের কোন রাজ্যে সেচ-সেবিত কৃষিজমির পরিমাণ সর্বনিম্ন?
উঃ ত্রিপুরা রাজ্যে।
19. বিঘাপ্রতি ফলন কোন রাজ্যের সর্বোচ্চ?
উঃ তামিলনাড়ুতে।
20. ভারতে কটি শস্য-ঋতু দেখা যায় ও কী কী?
উঃ দুটি। খারিফ শস্য এবং রবি শস্য।
21. দুটি খারিফ শস্যের নাম লেখ।
উঃ ধান, তুলো।
22. দুটি রবি শস্যের নাম লেখ।
উঃ গম, যব।
23. খারিফ শস্য কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উঃ দকশিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু আসার সময় অর্থাৎ বর্ষার শুরুতে।
24. রবি শস্য কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উঃ শীতের শুরুতে।
25. কয়েকটি বাগিচা ফসলের নাম লেখ।
উঃ চা, কফি, রবার।
26. ভারতের প্রধান খাদ্যশস্য কী?
উঃ ধান।
27. ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতের স্থান কী?
উঃ দ্বিতীয়।
28. কী ধরণের মাটি ধান চাষের পক্ষে উপযোগী?
উঃ উর্বর দোঁয়াশ মাটি এবং নদী উপত্যকার পলিমাটি।
29. ধান চাষের জন্য কত সেমি বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন?
উঃ ১০০ সেমি থেকে ২০০ সেমি।
30. কত ডিগ্রী তাপমাত্রা ধান চাষের পক্ষে উপযোগী?
উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
31. আমন ধান কোন সময়ে ভারতে চাষ হয়?
উঃ বর্ষাকালে লাগানো হয় ও শীতকালে কাটা হয়।
32. আমন ধানকে ‘আঘায়নি’ বলা হয় কেন?
উঃ অগ্রহায়ণ মাসে কাটা হয় বলে।
33. আউশ ধান ভারতে কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উঃ শ্রীষ্মকালে কালবৈশাখীর বৃষ্টিতে লাগানো হয় এবং ভাদ্র-আশ্বিন মাসে কাটা হয়।
34. বোরো ধান কোন সময়ে কাটা হয়?
উঃ গ্রীষ্মকালে।
35. ধান উৎপাদনে কোন রাজ্য ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ পশ্চিমবঙ্গ।
36. ভারতে হেক্টর প্রতি ধানের উৎপাদন কত?
উঃ হেক্টর প্রতি ১,৯২১ কিগ্রা।
37. ভারতে ধান গবেষণাগারটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ উড়িষ্যার কটকে।
38. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল বীজের নাম লেখ।
উঃ জয়া, রত্না, তাইচুং, বিজয়া, গোবিন্দ প্রভৃতি।
39. গম উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ উত্তরপ্রদেশ।
40. ভারতের গম গবেষণাগার কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ দিল্লীর কাছে পুষায়।
41. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল গম বীজের নাম লেখ।
উঃ সোনালিকা, সোনা-২২৭, কল্যাণ-সোনা, লারমা রাজো ইত্যাদি। ।
42. গম উৎপাদনের জন্য কী পরিমাণ উত্তাপ প্রয়োজন?
উঃ গড়ে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
43. গম উৎপাদনের জন্য কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উঃ ৫০ সেমি থেকে ১০০ সেমি।
44. কী ধরণের মাটিতে গম চাষ ভাল হয়?
উঃ উর্বর দোঁয়াশ মাটি।
45. মিলেটস কী?
উঃ জোয়ার, বাজরা, রাগী প্রভৃতি দানা শস্যকে মিলেটস বলে।
46. জোয়ার উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ মহারাষ্ট্র।
47. বাজরা উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ রাজস্থান।
48. রাগী উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ কর্নাটক।
49. ভারতের দুটি প্রধান তন্তুশস্যের নাম লেখ।
উঃ তুলো, পাট।
50. সোনালী আঁশ কাকে বলে?
উঃ পাটকে।
51. পাট চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতা প্রয়োজন?
উঃ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
52. পাট চাষের জন্য কী পরিমাণ বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন?
উঃ ১৫০ সেমি থেকে ২০০ সেমি।
53. পৃথিবীর মধ্যে কোথায় সবচেয়ে ভাল পাট চাষ হয়?
উঃ গঙ্গা ব্রহ্মপুত্রের ব-দ্বীপ অঞ্চলে।
54. ভারতের কোন রাজ্য পাট উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ পশ্চিমবঙ্গ।
55. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল পাট বীজের নাম লেখ।
উঃ জে আর সি -২১২, জে আর সি -৩২১, জে আর ও – ৬২০।
56. চা উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতে স্থান কত?
উঃ প্রথম
57. চা চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতার প্রয়োজন?
উঃ ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
58. কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত চা চাষের উপযোগী?
উঃ ১৫০সেমি থেকে ২৫০ সেমি।
59. কোন রাজ্য ভারতে চা উৎপাদন করে?
উঃ অসম।
60. ভারত কোন কোন দেশে চা রপ্তানি করে?
উঃ রাশিয়া, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, ইরাক, ইরাণ প্রভৃতি দেশে।
61. ভারতের কোন বন্দরের মাধ্যমে সর্বাধিক চা রপ্তানি হয়?
উঃ কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে।
62. কফি চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা এবং ১৫০ সেমি থেকে ২০০ সেমি বৃষ্টিপাত।
63. কফি চাষের জন্য কোন ধরণের মাটি আদর্শ?
উঃ লাভা সৃষ্ট উর্বর মাটি বা লাল মাটি বা ল্যাটেরাইট মাটি।
64. ভারতে কত ধরণের কফি উৎপন্ন হয় ও কী কী?
উঃ দুই ধরণের। যথা আরবীয় কফি ও রোবাস্ট্রা কফি।
65. ভারতের কোন রাজ্য কফি উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করেছে?
উঃ কর্ণাটক।
66. ভারত কোন কোন দেশে কফি রপ্তানি করে?
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ফান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে।
67. কী ধরণের বৃষ্টিপাত এবং উষ্ণতা আখ চাষের উপযোগী?
উঃ গড়ে ১৫০ সেমি বৃষ্টিপাত এবং ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা প্রয়োজন।
68. কী ধরণের ভূমিতে আখ চাষ ভাল হয়?
উঃ উত্তম জলনিকাশী ব্যবস্থাযুক্ত সমতলভূমিতে।
69. ভারতে কেন্দ্রীয় আখ গবেষণাগার কোথায় অবস্থিত?
উঃ উত্তরপ্রদেশের লক্ষনৌতে।
70. কোন জাতীয় মাটিতে তুল চাষ ভাল হয়?
উঃ চুন মেশানো উর্বর দোঁয়াশ মাটি বা কৃষ্ণ মৃত্তিকায়।
71. কী পরিমাণ উত্তাপ তুলো চাষের পক্ষে আদর্শ?
উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
72. তুলো চাষের জন্য কত বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উঃ ৫০ সেমি থেকে ১০০ সেমি।
73. ভারত কোন কোন দেশে তুলো রপ্তানি করে?
উঃ জাপান, জার্মানি প্রভৃতি দেশে।
74. কয়েকটি উচ্চ-ফলনশীল তুলোবীজের নাম লেখ?
উঃ সুজাতা, এম সি ইউ -৫, এম সি ইউ -৪।
75. তেলবীজ কাকে বলে?
উঃ যেসব বীজ থেকে তেল নিষ্কাষণ করা হয় সেগুলিকে বলে তেলবীজ
76. তেলবীজ কত ধরণের ও কী কী?
উঃ দুই ধরণের। যথা –ভক্ষ্য তেলবীজ এবং অভক্ষ্য তেলবীজ।
77. কয়েকটি ভক্ষ্য তেলবীজের উদাহরণ দাও।
উঃ সরষে, তিল, চিনাবাদাম, নারিকেল।
78. দুটি অভক্ষ্য তেলবীজের উদাহরণ দাও।
উঃ তিসি এবং রেড়ি।
79. খারিফ শস্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ গ্রীষ্মকালে, বর্ষার শুরুতেই অর্থাৎ দক্ষি-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু আগমণের সময় যেসব ফসলের চাষ আরম্ভ হয় এবং হেমন্তকালে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলিকে বলে খারিফ শস্য। যেমন ধান, তুলো, পাট, আখ, ভুট্টা, জোয়ার ,বাজরা, রাগী প্রভৃতি।
80. রবি শস্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ শীতের শুরুতেই যেসব ফসলের চাষ শুরু হয় এবং গ্রীষ্মের প্রারম্ভেই সংগ্রহ করা হয় তাদের বলে রবি শস্য। গম, যব।
81. অর্থকরী ফসল বলতে কী বোঝ?
উঃ যেসব ফসল বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জুন করা হয় তাদের অর্থকরী ফসল বলে। যেমন পাট, তুলো, আখ, তামাক।
82. ভারতের দুটি প্রধান অর্থকরী ফসলের নাম লেখ।
উঃ তুলো, পাট।
83. দক্ষিণ ভারতের একটি অর্থকরী ফসলের নাম লেখ।
উঃ আখ।
84. ভারতের সর্বোচ্চ বাঁধ কোনটি?
উঃ হিমাচল প্রদেশের শতদ্রু নদীর ওপর নির্মিত ভাকরা বাঁধ। (২২৬ মিটার)।
85. বাণিজ্য ফসল কাকে বলে?
উঃ প্রধানত রপ্তানি বা বাণিজ্যের জন্য যেসব ফসল উৎপাদন করা হয় সেগুলিকে বাণিজ্য ফসল বলে।
ভারতের খনিজ সম্পদ
1. কয়লা কত প্রকার ও কী কী?
উঃ চার প্রকার। অ্যানথ্রাসাইট, বিটুমিনাস, লিগনাইট এবং পিট।
2. ক্রিয়োজোট কী এবং এটি কী কাজে ব্যবহৃত হয়?
উঃ কয়লার উপজাত দ্রব্য। এটি কীটনাশক উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
3. বিটুমিনাস জাতীয় কয়লায় কী পরিমাণ কার্বন থাকে?
উঃ শতকরা ৫০-৮৫ ভাগ।
4. সবচেয়ে উৎকৃষ্ট শ্রেণীর কয়লা কোনটি?
উঃ অ্যানথ্রাসাইট।
5. ভারতের একটি লিগনাইট কয়লাখনির নাম কর।
উঃ তামিলনাড়ুর দক্ষিণে আর্কটে নিভেলি।
6. কয়লা উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতের স্থান কোথায়?
উঃ পঞ্চম।
7. ভারতের প্রাচীনতম তেল উৎপাদক কেন্দ্রটির নাম কী?
উঃ অসমের ডিগবয়।
8. খনিজ তেলের দুটি উপজাত দ্রব্যের নাম লেখ।
উঃ পিচ ও ন্যাপথা।
9. প্যারাফিন কী?
উঃ পেট্রোলিয়ামের উপজাত দ্রব্য।
10. ভারতের দুটি খনিজ তেল উত্তোলক অঞ্চলের নাম কর।
উঃ অসমের ঊর্ধ্ব ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা এবং মুম্বাই দরিয়া বা বোম্বে হাই।
11. সাগর সম্রাট কী?
উঃ মুম্বাই দরিয়া বা বোম্বে হাই অঞ্চলের খনিজ তেল উত্তোলনকারী একটি ভাসমান জাহাজের নাম সাগর সম্রাট।
12. গুজরাটের একটি তেল শোধনাগারের নাম লেখ।
উঃ কয়ালি।
13. ত্রিপুরার একটি তেলখনন ক্ষেত্রের নাম উল্লেখ কর।
উঃ বড়মুড়া।
14. পশ্চিমবঙ্গের তেল শোধনাগারটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ হলদিয়াতে।
15. অসমের একটি তেল খনন ক্ষেত্রের নাম কর।
উঃ নাহারকাটিয়া।
16. ভারতে বিদ্যুৎশক্তির মূল উৎসগুলি কী কী?
উঃ কয়লা, খনিজতেল, খরোস্রোতা নদী, ইউরেনিয়াম ও থোরিয়াম।
17. দুটি অপ্রচলিত শক্তির উৎসের নাম লেখ।
উঃ জোয়ার-ভাটা এবং সৌরশক্তি।
18. তাপবিদ্যুৎ কাকে বলে?
উঃ কয়লা পুড়িয়ে যে বিদ্যুৎ পাওয়া যায় তাকে তাপবিদ্যুৎ বলে।
19. পশ্চিমবঙ্গের দুটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ কোলাঘাট, ব্যান্ডেল।
20. উত্তর ভারতের একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম কর।
উঃ দিল্লীর বদরপুর।
21. জলবিদ্যুৎ শক্তি বলতে কী বোঝ?
উঃ খরোস্রোতা নদীর জলপ্রবাহের সাহায্যে টারবাইন ঘুরিয়ে যে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করা হয় তাকে জলবিদ্যুৎ বলে।
22. দক্ষিণ ভারতের একটি জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নাম কর।
উঃ কর্ণাটকের সরাবতী।
23. ভারতের একটি পারমানবিক উৎপাদন কেন্দ্রের নাম কর।
উঃ মহারাষ্ট্রের তারাপুর।
24. আকরিক লোহার প্রধান ব্যবহার কী?
উঃ লৌহ-ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল হিসাবে।
25. সবচেয়ে উৎকৃষ্ট আকরিক লোহার নাম কী?
উঃ ম্যাগনেটাইট।
26. ভারতের কোন রাজ্য আকরিক লোহা উত্তোলনে প্রথম?
উঃ মধ্যপ্রদেশ।
27. ভারত কোন কোন দেশে আকরিক লোহা রপ্তানি করে?
উঃ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, ইরান প্রভৃতি দেশে।
28. দুই প্রকার আকরিক লোহার নাম লেখ।
উঃ ম্যাগনেটাইট, হেমাটাইট।
29. দুটি ম্যাঙ্গানিজ আকরিকের নাম লেখ।
উঃ সিলোমিলেন এবং ব্রনাইট।
30. ভারতের একটি ম্যাঙ্গানিজ উৎপাদন কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ উড়িষ্যার গাংপুর।
31. ভারত বিশ্বের কোন কোন দেশে ম্যাঙ্গানিজ রপ্তানি করে?
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানী।
32. বক্সাইট কিসের আকরিক?
উঃ অ্যালুমিনিয়াম।
33. ভারতের কোন রাজ্য বক্সাইত উত্তোলনে প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ উড়িষ্যা।
34. অ্যালুমিনিয়াম কোন খনিজ আকর থেকে উৎপন্ন হয়?
উঃ বক্সাইট থেকে।
35. অভ্রের দুটি আকরিকের নাম লেখ।
উঃ মাস্কোভাইট ও বাইওটাইট।
36. অভ্র উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ বিহার।
37. পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অভ্র উৎপাদক দেশটির নাম কী?
উঃ ভারত।
38. অপ্রচলিত শক্তির উৎস বলতে কী বোঝ?
উঃ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যেসব শক্তির উৎস কম ব্যবহৃত হয় সেগুলিকে অপ্রচলিত শক্তির উৎস বলে। যেমন – সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, ভূতাপশক্তি।
39. পারমাণবিক শক্তি বলতে কী বোঝ?
উঃ ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম প্রভৃতি তেজস্ক্রিয় পদার্থের সাহায্যে যে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করা হয় তাকে পারমাণবিক শক্তি বলে।
40. ভারতে সর্বপ্রথম কবে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে?
উঃ ১৯৭৪ সালে।
41. ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ ইনস্টিউট কোথায় অবস্থিত?
উঃ মুম্বাই-এর ট্রম্বেতে।
42. ভারতের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র কোথায় অবস্থিত?
উঃ চেন্নাই-এর কাছে অবস্থিত কালপক্কমে।
43. তরল সোনা কী?
উঃ পেট্রোলিয়ামের গুরুত্ব অন্ত্যন্ত বেশি হওয়ার জন্য একে তরল সোনা বলে অভিহিত করা হয়।
44. অভ্র কোন শিল্পে ব্যবহৃত হয়?
উঃ বিদ্যুৎশিল্পে।
45. অপ্রচলিত শক্তির প্রধান উৎস কী?
উঃ সৌরশক্তি।
46. ভারতের পূর্ব –উপকূলে অবস্থিত একটি খনিজ তেল শোধনাগারের নাম লেখ।
উঃ বিশাখাপত্তনম ও হলদিয়া।
47. বক্সাইটের প্রধান ব্যবহার কী?
উঃ অ্যালুমিনিয়াম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
ভারতের শিল্প
1. ভারতের কোন শিল্পকে সব শিল্পের মূল বলা হয়?
উঃ লৌহ-ইস্পাত শিল্পকে।
2. লোহা-ইস্পাত শিল্পের প্রধান কাঁচামাল কী?
উঃ কয়লা, আকরিক লোহা।
3. লোহা-ইস্পাত শিল্পে ম্যাঙ্গানিজ প্রয়োজন হয় কেন?
উঃ কঠিন ও ক্ষয়রোধকারী ইস্পাত উৎপাদনের জন্য লৌহ-ইস্পাত শিল্পে ম্যাঙ্গানিজ ব্যবহার করা হয়।
4. ভারতের একটি লোহা-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্রের নাম বল।
উঃ পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুর।
5. ভারতের একটি মিশ্র ইস্পাত উৎপাদন কেন্দ্রের কর।
উঃ তামিলনাড়ুর সালেম।
6. উৎপাদন ক্ষমতা অনুসারে বৃহত্তম লোহা-ইস্পাত কারখানার নাম কী?
উঃ বোকারো।
7. কোন নদীর তীরে রাউরকেল্লা লোহা-ইস্পাত কেন্দ্রটি অবস্থিত?
উঃ ব্রাহ্মণী নদীর তীরে।
8. ভারতের বৃহত্তম বেসরকারী লোহা-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্রের নাম কর।
উঃ বিহারের জামশেদপুর।
9. দক্ষিণ ভারতের একটি বৃহদায়তন লোহা-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ কর্ণাটকের ভদ্রাবতী।
10. ভারতের বৃহত্তম লোহা-ইস্পাত কারখানাটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ মধ্যপ্রদেশের ভিলাই।
11. ভারতের রূঢ় কাকে বলে?
উঃ দুর্গাপুরকে।
12. পশ্চিমবঙ্গের দুটি লোহা-ইস্পাত কারখানার নাম কর।
উঃ কুলটি-বার্নপুর ও বোকারো।
13. ভারতের একটি ভারী বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নির্মাণ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ মধ্যপ্রদেশের ভূপাল।
14. ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পকে কী কী ভাগে ভাগ করা যায়?
উঃ দুই ভাগে। যথা – ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প ও হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প।
15. ভারতের একটি ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি নির্মাণ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোর।
16. ভারতের একটি মোটরগাড়ি নির্মাণ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ কলকাতার কাছে অবস্থিত হিন্দমোটর।
17. ভারতের একটি রেলইঞ্জিন নির্মাণ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চিত্তরঞ্জন।
18. ভারতে প্রথম বিমান শিল্প কারখানা কোথায় গড়ে উঠেছে?
উঃ কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোর।
19. ভারতের বৃহত্তম জাহাজ নির্মাণ শিল্পকেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম।
20. একটি সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানার নাম লেখ।
উঃ কলকাতার যাদবপুরের ন্যাশানাল ইনস্ট্রুমেন্টস লিমিটেড।
21. কার্পাস বয়ন শিল্পের প্রধান প্রধান কাঁচামাল কী?
উঃ কার্পাস বা তুলো।
22. ভারতে কার্পাস শিল্পের প্রধান কেন্দ্র কোনটি?
উঃ আমেদাবাদ।
23. ভারতের ম্যাঞ্চেষ্টার কাকে বলে?
উঃ আমেদাবাদকে।
24. ভারতের যেকোন দুটি কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্রের নাম কর।
উঃ মুম্বাই ও কোয়েম্বাটুর।
25. দক্ষিণ ভারতের বৃহত্তম বস্ত্র বয়ন শিল্পকেন্দ্রের নাম কী?
উঃ কোয়েম্বাটুর।
26. সুতি বস্ত্র উৎপাদনে বিশ্বে ভারতের স্থান কোথায়?
উঃ দ্বিতীয়।
27. সুতি বস্ত্র রপ্তানীতে ভারতের স্থান কোথায়?
উঃ দ্বিতীয়।
28. ভারত কোন কোন দেশে সুতি বস্ত্র রপ্তানি করে?
উঃ রাশিয়া, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, ইরাক, ইরান, জার্মানী, ইতালি, বেলজিয়াম প্রভৃতি দেশে।
29. ভারতে কার্পাস বয়ন শিল্পের একটি সমস্যা উল্লেখ কর।
উঃ উৎকৃষ্ট শ্রেণির দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলোর অভাব।
30. ভারতের প্রধান দুটি কার্পাস বয়ন শিল্প অঞ্চলের নাম কর।
উঃ পশ্চিমাঞ্চল-মহারাষ্ট্র ও গুজরাট,
দক্ষিণাঞ্চল-তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক ও কেরালা।
31. পাট শিল্পে বিশ্বে ভারতের স্থান কোথায়?
উঃ প্রথম।
32. পাট শিল্পের প্রধান কাঁচামাল কী?
উঃ কাঁচা পাট, রাসায়নিক দ্রব্য, মোম।
33. পাটজাত দ্রব্যের রপ্তানীতে বিশ্বে ভারতের স্থান কোথায়?
উঃ প্রথম।
34. পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পাট শিল্পাঞ্চল কোনটি?
উঃ হুগলী শিল্পাঞ্চল।
35. পশ্চিমবঙ্গের কোথায় পাটশিল্পের একদেশীভবন ঘটেছে?
উঃ হুগলী শিল্পাঞ্চলে।
36. ভারত কোন কোন দেশে পাট রপ্তানি করে?
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে।
37. ন্যাশানাল ইনস্ট্রুমেণ্ট কারখানাটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ কলকাতার যাদবপুরে।
38. ভারতের কোথায় ডিজেল ইঞ্জিন নির্মাণের কারখানা আছে?
উঃ উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে।
ভারতের জনবণ্টন ও জনঘনত্ব
1. আদমসুমারী কী?
উঃ প্রতি দশ বছর অন্তর ভারতে জনগণনা হয়। জনগণনা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের কাজকে আদমসুমারী বলে।
2. ভারতে কত বছর অন্তর জনগণনা বা আদমসুমারী হয়?
উঃ দশ (১০) বছর অন্তর।
3. ভারতে প্রতি বছর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কত?
উঃ প্রায় ১.৮ শতাংশ।
4. পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ কোনটি?
উঃ ভারত।
5. ভারতের সর্বাধিক জনবিরল রাজ্য কোনটি?
উঃ সিকিম।
6. ভারতের সর্বাধিক জনবিরল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম কী?
উঃ লাক্ষাদ্বীপ।
7. আয়তনের দিক থেকে ভারতের বৃহত্তম রাজ্য কোনটি?
উঃ রাজস্থান।
8. আয়তনের দিক থেকে ভারতের ক্ষুদ্রতম রাজ্য কোনটি?
উঃ গোয়া।
9. ভারতের রাজধানীর নাম কী?
উঃ দিল্লী।
10. ভারতের মোট আয়তন কত?
উঃ ৩২,৮৭,৭৮২ বর্গ কিমি।
11. জনঘনত্বের বিচারে পশ্চিমবঙ্গের স্থান কত?
উঃ প্রথম, প্রতি বর্গ কিমিতে ৭৬৬ জন।
12. ভারতের সবচেয়ে কম জনঘনত্ব সম্পন্ন রাজ্যের নাম কী?
উঃ অরুণাচল প্রদেশ।
13. জনঘনত্বের বিচারে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে প্রথম কোনটি?
উঃ দিল্লী। প্রতি বর্গ কিমিতে ৬৩১৯ জন।
14. জনঘনত্বের বিচারে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে শেষ কোনটি?
উঃ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। প্রতি বর্গ কিমিতে মাত্র ৩৭ জন।
15. আয়তনের বিচারে পৃথিবীতে ভারতের স্থান কত?
উঃ সপ্তম।
16. ভারতের উত্তর-দক্ষিণে সর্বাধিক বিস্তার কত?
উঃ উত্তর-দক্ষিণে বিস্তার ৩২১৪ কিমি।
17. ভারতের পূর্ব-পশ্চিমে সর্বাধিক বিস্তার কত?
উঃ পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তার ২৯৩৩ কিমি।
18. ভারতের স্থলসীমার দৈর্ঘ্য কত?
উঃ ১৫২০০ কিমি।
19. ভারতের দক্ষিণতম প্রান্তের নাম কী?
উঃ ইন্দিরা পয়েন্ট।
20. ভারতের জনসংখ্যা কত?
উঃ প্রায় ১৩২ কোটি।
21. ভারতে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্যগঠন কত সালে হয়?
উঃ ১৯৫৬ সালে।
22. নবীনতম রাজ্য কোনটি?
উঃ তেলেঙ্গানা।
23. ভারতে রাজ্য পুনর্গঠনের মূল ভিত্তি কী ছিল?
উঃ ভাষা।
24. কবে ভারত সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়?
উঃ ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি।
25. রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন কবে গঠিত হয়?
উঃ ১৯৫৩ সালে।
26. কোন বছর ভারতে পুনর্গঠন পরিষদের সুপারিশ রূপায়িত হয়?
উঃ ১৯৫৬ সালের ১লা নভেম্বর।
27. বিহারের রাজধানীর নাম কী?
উঃ পাটনা।
28. তামিলনাড়ুর রাজধানীর নাম কী?
উঃ চেন্নাই।
29. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানীর নাম কী?
উঃ পোর্টব্লেয়ার।
30. কেরালার রাজধানীর নাম কী?
উঃ তিরুবন্তপুরম।
31. নাগাল্যাণ্ডের রাজধানীর নাম কী?
উঃ কোহিমা।
32. বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জের নাম কী?
উঃ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
33. ভারপ্তের সর্বাধিক জনবহুল রাজ্যের নাম কী?
উঃ উত্তরপ্রদেশ।
34. ভারতের কোন রাজ্যে চাকমা জনগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে?
উঃ ত্রিপুরায়।
35. ভারতের কোথায় রেড ইন্ডিয়ানরা বাস করেন?
উঃ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে।
ভারতের জনবণ্টন ও জনঘনত্ব
1. আদমসুমারী কী?
উঃ প্রতি দশ বছর অন্তর ভারতে জনগণনা হয়। জনগণনা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের কাজকে আদমসুমারী বলে।
2. ভারতে কত বছর অন্তর জনগণনা বা আদমসুমারী হয়?
উঃ দশ (১০) বছর অন্তর।
3. ভারতে প্রতি বছর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কত?
উঃ প্রায় ১.৮ শতাংশ।
4. পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ কোনটি?
উঃ ভারত।
5. ভারতের সর্বাধিক জনবিরল রাজ্য কোনটি?
উঃ সিকিম।
6. ভারতের সর্বাধিক জনবিরল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম কী?
উঃ লাক্ষাদ্বীপ।
7. আয়তনের দিক থেকে ভারতের বৃহত্তম রাজ্য কোনটি?
উঃ রাজস্থান।
8. আয়তনের দিক থেকে ভারতের ক্ষুদ্রতম রাজ্য কোনটি?
উঃ গোয়া।
9. ভারতের রাজধানীর নাম কী?
উঃ দিল্লী।
10. ভারতের মোট আয়তন কত?
উঃ ৩২,৮৭,৭৮২ বর্গ কিমি।
11. জনঘনত্বের বিচারে পশ্চিমবঙ্গের স্থান কত?
উঃ প্রথম, প্রতি বর্গ কিমিতে ৭৬৬ জন।
12. ভারতের সবচেয়ে কম জনঘনত্ব সম্পন্ন রাজ্যের নাম কী?
উঃ অরুণাচল প্রদেশ।
13. জনঘনত্বের বিচারে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে প্রথম কোনটি?
উঃ দিল্লী। প্রতি বর্গ কিমিতে ৬৩১৯ জন।
14. জনঘনত্বের বিচারে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে শেষ কোনটি?
উঃ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। প্রতি বর্গ কিমিতে মাত্র ৩৭ জন।
15. আয়তনের বিচারে পৃথিবীতে ভারতের স্থান কত?
উঃ সপ্তম।
16. ভারতের উত্তর-দক্ষিণে সর্বাধিক বিস্তার কত?
উঃ উত্তর-দক্ষিণে বিস্তার ৩২১৪ কিমি।
17. ভারতের পূর্ব-পশ্চিমে সর্বাধিক বিস্তার কত?
উঃ পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তার ২৯৩৩ কিমি।
18. ভারতের স্থলসীমার দৈর্ঘ্য কত?
উঃ ১৫২০০ কিমি।
19. ভারতের দক্ষিণতম প্রান্তের নাম কী?
উঃ ইন্দিরা পয়েন্ট।
20. ভারতের জনসংখ্যা কত?
উঃ প্রায় ১৩২ কোটি।
21. ভারতে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্যগঠন কত সালে হয়?
উঃ ১৯৫৬ সালে।
22. নবীনতম রাজ্য কোনটি?
উঃ তেলেঙ্গানা।
23. ভারতে রাজ্য পুনর্গঠনের মূল ভিত্তি কী ছিল?
উঃ ভাষা।
24. কবে ভারত সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়?
উঃ ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি।
25. রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন কবে গঠিত হয়?
উঃ ১৯৫৩ সালে।
26. কোন বছর ভারতে পুনর্গঠন পরিষদের সুপারিশ রূপায়িত হয়?
উঃ ১৯৫৬ সালের ১লা নভেম্বর।
27. বিহারের রাজধানীর নাম কী?
উঃ পাটনা।
28. তামিলনাড়ুর রাজধানীর নাম কী?
উঃ চেন্নাই।
29. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানীর নাম কী?
উঃ পোর্টব্লেয়ার।
30. কেরালার রাজধানীর নাম কী?
উঃ তিরুবন্তপুরম।
31. নাগাল্যাণ্ডের রাজধানীর নাম কী?
উঃ কোহিমা।
32. বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জের নাম কী?
উঃ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
33. ভারপ্তের সর্বাধিক জনবহুল রাজ্যের নাম কী?
উঃ উত্তরপ্রদেশ।
34. ভারতের কোন রাজ্যে চাকমা জনগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে?
উঃ ত্রিপুরায়।
35. ভারতের কোথায় রেড ইন্ডিয়ানরা বাস করেন?
উঃ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে।
ভারতের নগর ও বন্দর
1. ভারতের বৃহত্তম শহরটির নাম কী? এর লোকসংখ্যা কত?
উঃ মুম্বাই। লোকসংখ্যা – ১২,৪৪২,৩৭৩ জন (২০১১)।
2. কাণ্ডালা শহরের পশ্চাৎভূমিতে অবস্থিত দুটি রাজ্যের নাম লেখ।
উঃ গুজরাত, রাজস্থান।
3. কলকাতা কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ হুগলী নদীর তীরে।
4. মার্মাগাঁও বন্দর কোথায় অবস্থিত?
উঃ আরবসাগরের তীরে জুয়ারি নদীর মোহনায়।
5. ভারতের গভীরতম বন্দরটির নাম কী?
উঃ বিশাখাপত্তনম।
6. পূর্ব ভারতের বৃহত্তম তথা সর্বাধিক গুরুত্বপুর্ণ বন্দরটির নাম কী?
উঃ কলকাতা।
7. পূর্ব উপকূলে অবস্থিত যেকোন দুটি প্রধান বন্দরের নাম কর।
উঃ বিশাখাপত্তনম, চেন্নাই।
8. মহারাষ্ট্রের দুটি উল্লেখযোগ্য বন্দরের নাম কর।
উঃ মুম্বাই ও জওহরলাল নেহেরু বন্দর।
9. ভারতের পশ্চিম উপকূলের কোন বন্দরটি সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ?
উঃ মুম্বাই।
10. কোন বন্দরকে ভারতের প্রবেশ বন্দর বলা হয়?
উঃ মুম্বাই বন্দরকে।
11. মাদ্রাজ বন্দর কোথায় অবস্থিত?
উঃ তামিলনাড়ু রাজ্যে।
12. নগর কাকে বলে?
উঃ যেসব শহরের লোকসংখ্যা ১ লক্ষের বেশি।
13. ভারতের বৃহত্তম নগরটির নাম কী?
উঃ মুম্বাই।
14. মহানগর কাকে বলে?
উঃ যেসব শহরের লোকসংখ্যা ১০ লক্ষের বেশি।
15. ভারতে কয়টি মহানগর আছে?
উঃ ২৩ টি।
16. ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটির নাম কী?
উঃ কলকাতা।
17. কোন শহরকে ভারতের রোম বলা হয়?
উঃ দিল্লীকে।
18. কোন শহরকে হ্রদের শহর বলা হয়?
উঃ হায়দ্রাবাদকে।
19. ভারতের বৃহত্তম বা শ্রেষ্ঠ সামুদ্রিক বন্দরের নাম লেখ।
উঃ মুম্বাই।
20. ভারতের ম্যাঞ্চেস্টার কোন শহরকে বলা হয়?
উঃ আমেদাবাদকে।
21. কোন শহরকে গোলাপী শহর বলা হয়?
উঃ জয়পুরকে।
22. উদ্যান নগরী কোন শহরকে বলা হয়?
উঃ ব্যাঙ্গালোরকে।
23. কোন শহরকে ভারতের প্রবেশদ্বার বলে?
উঃ মুম্বাইকে।
24. ভারতের উচ্চতম শহর কোনটি?
উঃ লে বা লেহ।
25. প্রাচ্যের ভেনিস কাকে বলে?
উঃ কেরালার আলেপ্পী।
26. কেরালার রাজধানীর নাম কী?
উঃ তিরুবন্তপুরম।
27. ভূপাল কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ যমুনার উপনদী বেতোয়ার তীরে।
28. ভারতের কোন শহরের আর এক নাম সবুজ নগর?
উঃ চেন্নাই-এর।
29. ভারতের কেন্দ্রীয় ভেষজ গবেষণাগার কোথায় অবস্থিত?
উঃ লক্ষনৌ।
30. দক্ষিণ ভারতের কাশী কোন শহরকে বলা হয়?
উঃ মাদুরাইকে।
31. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রধান বন্দরের নাম কী?
উঃ পোর্টব্লেয়ার।
32. পারাদীপ বন্দরের প্রধান রপ্তানি দ্রব্য কোনটি?
উঃ লৌহ আকরিক।
33. নিউ ম্যাঙ্গালোর বন্দর কোন রাজ্যে অবস্থিত?
উঃ কর্ণাটক রাজ্যে।
34. ভারতে মোট কয়টি প্রধান বন্দর আছে?
উঃ ১১টি।
35. ভারতের পূর্ব উপকূলের একটি স্বাভাবিক পোতাশ্রয় যুক্ত বন্দরের নাম কর।
উঃ বিশাখাপত্তনম।
36. ভারতের পূর্ব উপকূলের একটি কৃত্তিম পোতাশ্রয় এর নাম কর।
উঃ চেন্নাই।
37. ভারতের শুল্কমুক্ত বন্দরটির নাম লেখ।
উঃ কাণ্ডালা।
38. ভারতের একটি সামরিক শহরের নাম লেখ।
উঃ মীরাট।
39. হুগলী শিল্পাঞ্চলের অপর নাম কী?
উঃ কলকাতা শিল্পাঞ্চল।
40. হুগলী শিল্পাঞ্চল পশ্চিমবঙ্গের কোন কোন জেলায় বিস্তার লাভ করেছে?
উঃ কলকাতা, ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলী, নদীয়া জেলায়।
41. হুগলী শিল্পাঞ্চলের প্রধান শিল্পটির নাম কী?
উঃ পাট শিল্প।
42. হুগলী শিল্পাঞ্চলের কোথায় জাহাজ নির্মাণ কারখানা আছে?
উঃ গার্ডেন রীচ।
43. ত্রিবেণী কোন শিল্পের জন্য বিখ্যাত?
উঃ কাগজ শিল্প।
44. হুগলী শিল্পাঞ্চলের একটি কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্রের নাম কর।
উঃ বেলঘরিয়া।
45. হুগলী শিল্পাঞ্চলের কোথায় অ্যালুমিনিয়াম কারখানা আছে?
উঃ বেলুড়-এ।
46. হুগলী শিল্পাঞ্চলের কোথায় মোটরগাড়ি নির্মাণ কারখানা আছে?
উঃ হিন্দমোটরে।
47. হুগলী শিল্পাঞ্চলের প্রধান দুটি শিল্পের নাম কর।
উঃ পাটশিল্প ও ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প।
48. হুগলী শিল্পাঞ্চল কোথায় অবস্থিত?
উঃ নিম্ন গঙ্গা সমভূমির দক্ষিণাংশে হুগলী শিল্পাঞ্চল অবস্থিত।
49. পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলায় হলদিয়া অবস্থিত?
উঃ পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়।
50. হলদিয়া শিল্পাঞ্চল কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ হুগলী ও হলদি নদীর সংযোগস্থলে।
51. বর্তমানে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের প্রধান শিল্পটির নাম কী?
উঃ খনিজতেল শোধন।
52. হলদিয়া ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের অন্য একটি শিল্পাঞ্চলের নাম কর।
উঃ হুগলী শিল্পাঞ্চল।
53. কোন অঞ্চলকে ভারতের খনিজ ভাণ্ডার বলা হয়?
উঃ ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলকে।
54. ছোটনাগপুর মালভূমির সবচেয়ে উঁচু শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ পরেশনাথ পাহাড় ১৩৬৬ মিটার)।
55. পশ্চিমবঙ্গের কোন অংশ ভূ-গঠনের দিক দিয়ে ছোটনাগপুর মালভূমির অন্তর্গত?
উঃ পুরুলিয়া জেলার মালভূমি।
56. ছোটোনাগপুর মালভূমির মোট আয়তন কত?
উঃ ৮৭,০০০ বর্গ কিমি।
57. করণপুরা কেন বিখ্যাত?
উঃ কয়লাখনির জন্য বিখ্যাত।
58. ছোটনাগপুর মালভূমির শ্রেষ্ঠ অভ্র উত্তোলন ক্ষেত্রটির নাম কী?
উঃ হাজারিবাগ কেলার কোডার্মা।
59. জামশেদপুর কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ সুবর্ণরেখা ও করখাই নদীর মিলনস্থলে।
60. ছোটনাগপুর মালভূমিতে অবস্থিত দুটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ বোকারো ও চন্দ্রপুরা।
61. ছোটনাগপুর মালভূমিতে অবস্থিত দুটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ তিলাইয়া ও মাইথন।
62. ছোটনাগপুর মালভূমির কোথায় ইউরেনিয়াম পাওয়া যায়?
উঃ সিংভূম জেলার যদুগোডায়।
63. ছোটনাগপুর মালভূমির কোথায় তামা পাওয়া যায়?
উঃ সিংভূম জেলার মোসাবনি, ধোবানি, রাকায়।
64. ছোটনাগপুর মালভূমির দুটি আকরিক লৌহ উত্তোলন কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ সিংভুম জেলার গুয়া ও নোয়ামুণ্ডি।
65. ছোটনাগপুর মালভূমির কোথায় বক্সাইট উত্তোলিত হয়?
উঃ বিহারের রাঁচির কাছে লোহারডাগা ও পালামৌ জেলায়।
66. বিহারের ছোটনাগপুর মালভূমির বিখ্যাত সার উৎপাদন কেন্দ্রটির নাম কী?
উঃ সিন্ধ্রি।
67. ছোটনাগপুর মালভূমিতে জন্মায় এরকম কয়েকটি মূল্যবান গাছের নাম কর।
উঃ শাল, শিমূল, পলাশ, মহুয়া, সেগুন, খয়ের, কুসুম প্রভৃতি।
68. ছোটনাগপুর মালভূমির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ লৌহ-ইস্পাত কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ জামশেদপুর।
69. ছোটনাগপুর মালভূমির বনভূমি কী উৎপাদনের জন্য ভারত বিখ্যাত?
উঃ লাক্ষা।
70. গুজরাজ্যের মোট আয়তন কত?
উঃ ১,৯৬,০২৪ বর্গ কিমি।
71. গুজরাট রাজ্যে মোট কয়টি জেলা আছে?
উঃ ৩৩টি জেলা আছে।
72. কত সালে গুজরাট রাজ্যটি গঠিত হয়?
উঃ ১লা মে ১৯৬০ সালে।
73. গুজরাটের সর্বোচ্চ গিরি শৃঙ্গের নাম কী? এর উচ্চতা কত?
উঃ গিরনাথ পাহাড়ের গোরকনাথ শৃঙ্গ। উচ্চতা- ১১১৭ মিটার।
74. নর্মদা ও তাপ্তী নদী কোথায় পড়েছে?
উঃ খাম্বাত উপসাগরে।
75. সবরমতী ও মাহী নদী কোথায় পড়েছে?
উঃ খাম্বার উপসাগরে।
76. গুজরাটের একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের নাম কর।
উঃ খনিজতেল।
77. গুজরাটের দুটি সেচ প্রকল্পের নাম লেখ।
উঃ উকাই ও মাহী প্রকল্প।
78. গুজরাটের দুটি উল্লেখযোগ্য বস্ত্র শিল্পকেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ আমেদাবাদ ও সুরাট।
79. গুজরাটের দুটি বন্দরের নাম লেখ।
উঃ কান্ডালা ও পোরবন্দর।
80. গুজরাটের রাজধানীর নাম কী?
উঃ গান্ধীনগর।
81. গুজরাটের বৃহত্তম শহরটির নাম কী?
উঃ আমেদাবাদ।
82. ভারতের একমাত্র কোন অরণ্যে সিংহ দেখা যায়?
উঃ গুজরাটের গির অরণ্যে।
83. গুজরাটের একটি প্রধান কৃষিজ ফসলের নাম কর।
উঃ তুলো।
84. বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জের নাম কর।
উঃ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
85. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানীর নাম কী?
উঃ পোর্টব্লেয়ার।
86. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ স্যাডেল পিক।
87. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উপজাতিদের প্রধান উপজীবিকা কী?
উঃ মৎস্য শিকার, পশুশিকার।
88. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে কী জাতীয় বনভূমি দেখা যায়?
উঃ ক্রান্তীয় চিরসবুজ বনভূমি।
89. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের একটি শিল্পের নাম লেখ।
উঃ কাঠ শিল্প।
90. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দুটি আগ্নেয়গিরির নাম লেখ।
উঃ ব্যারেন ও নারকোন্দাম।
91. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রধান বন্দরটির নাম কী?
উঃ পোর্টব্লেয়ার।
92. ভারতের দক্ষিণতম স্থলবিন্দুর নাম কী?
উঃ পিগম্যালিয়ান পয়েন্ট বা ইন্দিরা পয়েন্ট।
93. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের মোট আয়তন কত?
উঃ প্রায় ৩ লক্ষ বর্গ কিমি।
94. দাক্ষিণাত্যের লাভা অঞ্চলকে কী বলে?
উঃ ডেকান ট্র্যাপ।
95. দাক্ষিণাত্যের লাভা অঞ্চলটি কী জাতীয় শিলা দিয়ে গঠিত?
উঃ ব্যাসল্ট জাতীয় শিলায়।
96. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত একটি নদীর নাম লেখ।
উঃ গোদাবরী।
97. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের পশ্চিমসীমায় কোন পর্বত শ্রেণি অবস্থিত?
উঃ পশ্চিমঘাট পর্বতশ্রেণি।
98. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নাম লেখ।
উঃ কয়না ও খোপালি।
99. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের দুটি তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের নাম লেখ।
উঃ বল্লারপুর ও ভুসোয়াল।
100. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের দুটি উল্লেখযোগ্য কৃষিজ ফসলের নাম লেখ।
উঃ তুল এবং আখ।
101. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের দুটি উল্লেখযোগ্য শিল্পের নাম লেখ।
উঃ বস্ত্রশিল্প, চিনি শিল্প।
102. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের দুটি উল্লেখযোগ্য খনিজ দ্রব্যের নাম লেখ।
উঃ আকরিক লোহা ও ম্যাঙ্গানিজ।
103. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহরটির নাম কী?
উঃ পুণা।
104. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ও একটি বস্ত্র শিল্প কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পকেন্দ্র – নাসিক
বস্ত্রশিল্পকেন্দ্র – শোলাপুর।
105. ভারতীয় পাটজাত দ্রব্যের একটি প্রধান আমদানীকারক দেশের নাম কর।
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র।
106. ভারতের ম্যাঞ্চেস্টার কাকে বলা হয়?
উঃ আমেদাবাদকে।
107. কোন সামুদ্রিক প্রণালী আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে বিভাজন রেখা হিসাবে চিহ্নিত?
উঃ টেন (১০) ডিগ্রী চ্যানেল।
108. আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কোন দ্বীপে সম্প্রতি অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে?
উঃ ব্যারেন দ্বীপে।
প্রতিবেশী দেশসমূহ
নেপাল
1. নেপালে অবস্থিত পৃথিবীর উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ মাউণ্ট এভারেস্ট (৮,৮৪৮ মিটার)।
2. নেপালে তাল কথার অর্থ কী?
উঃ হ্রদ।
3. নেপালের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ মাউণ্ট এভারেস্ট। (৮.৮৪৮ মিটার)।
4. নেপালের দুটি উপত্যকার নাম লেখ।
উঃ পোখরা ও কাঠমাণ্ডু।
5. নেপালের দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ কালীগণ্ডক।
6. নেপালের অধিকাংশ নদী কোন দিকে প্রবাহিত হয়েছে?
উঃ উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত।
7. নেপালের একটি প্রধান শিল্পের নাম লেখ।
উঃ পাট শিল্প।
8. নেপালের প্রধান শহরের নাম কী?
উঃ কাঠমাণ্ডু।
9. নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটির নাম কী?
উঃ পোখরান।
10. নেপালের রাজধানীর নাম কী?
উঃ কাঠমাণ্ডু।
11. ভারতের কোন সীমান্তে নেপাল অবস্থিত?
উঃ উত্তর সীমান্তে।
12. নেপালের প্রধান কৃষিজ ফসলের নাম কী?
উঃ ধান।
13. কোন দেশের সঙ্গে নেপালের বৈদেশিক বাণিজ্য সবচেয়ে বেশি হয়?
উঃ ভারতের সঙ্গে।
14. বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য নেপাল ভারতের কোন বন্দর বেশি ব্যবহার করে?
উঃ কোলকাতা বন্দর।
ভুটান
1. ভারতের কোন সীমান্তে ভুটান অবস্থিত?
উঃ উত্তর সীমান্তে।
2. ভুটানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ কুলাকাংড়ি (৭৫৩৯ মিটার)।
3. ভুটানের দুটি উপত্যকার নাম লেখ।
উঃ পারো ও থিম্পু।
4. ভুটানের দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ মানস।
5. ভুটানের প্রধান অর্থকরী ফসলের নাম কী?
উঃ বড় এলাচ।
6. ভুটানের একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নাম লেখ।
উঃ চুখা।
7. ভুটানের রাজধানীর নাম কী?
উঃ থিম্পু।
8. সামুদ্রিক বাণিজ্যের জন্য ভুটান কোন বন্দর ব্যবহার করে।
উঃ কোলকাতা বন্দর।
বাংলাদেশ
1. বাংলাদেশ ভারতের কোন দিকে অবস্থিত?
উঃ পূর্বদিকে।
2. বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল বলতে প্রধানত কোন অঞ্চলকে বোঝায়?
উঃ পার্বত্য চট্টগ্রামকে বোঝায়।
3. বাংলাদেশের উচ্চতম শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ কিওক্রাডং (১২৩০ মিটার)।
4. বাংলাদেশের দুটি নদীর নাম লেখ।
উঃ পদ্মা, যমুনা।
5. বাংলাদেশ কবে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করে?
উঃ ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর।
6. বাংলাদেশের প্রধান বন্দরটির নাম কী?
উঃ চট্টগ্রাম।
7. বাংলাদেশের জলবায়ু কী প্রকৃতির?
উঃ ক্রান্তীয় ,মৌসুমী প্রকৃতির।
8. বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসলের নাম কী?
উঃ পাট।
9. ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে বাংলাদেশের স্থান কত?
উঃ চতুর্থ।
10. বাংলাদেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কোথায় অবস্থিত?
উঃ ঢাকায়।
11. বাংলাদেশের রাজধানীর নাম কী?
উঃ ঢাকা।
12. ঢাকা কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে।
13. বাংলাদেশের একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
14. বাংলাদেশের বৃহত্তম বন্দরের নাম কী?
উঃ চট্টগ্রাম।
15. বাংলাদেশের একটি সমুদ্র বন্দরের নাম লেখ।
উঃ কক্সবাজার।
মায়ানমার
1. মায়ানমার ভারতের কোন সীমায় অবস্থিত?
উঃ পূর্বসীমায় অবস্থিত।
2. মায়ানমারের একটি আগ্নেয়গিরির নাম লেখ।
উঃ পেগুইয়োমা পর্বতের মাউন্ট পোপা।
3. মায়ানমারের দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ ইরাবতী।
4. মায়ানমারের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ কাকাবোরাজী (৫৫৮১ মিটার)।
5. ইরাবতী নদীর একটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ চিন্দুইন।
6. মায়ানমারের জলবায়ু কি প্রকৃতির?
উঃ ক্রান্তীয় মৌসুমী প্রকৃতির।
7. মায়ানমারের প্রধান কৃষিজ ফসল কী?
উঃ ধান।
8. দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ধান্যভাণ্ডার কাকে বলে?
উঃ মায়ানমারের ইরাবতী ও সিটাং ব-দ্বীপ অঞ্চলকে।
9. মায়ানমারের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম কী?
উঃ রেঙ্গুন।
10. মায়ানমারের রাজধানীর নাম কী?
উঃ রেঙ্গুন।
11. রেঙ্গুন কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ রেমগুন নদীর তীরে।
12. শান মালভূমি কোথায় অবস্থিত?
উঃ মায়ানমারের সমগ্র মধ্য-পূর্বভাগ জুড়ে যে বিস্তৃত মালভুমি আছে তার নাম শান মালভুমি।
শ্রীলঙ্কা
1. শ্রীলঙ্কা ভারতের কোন দিকে অবস্থিত?
উঃ দক্ষিণ দিকে।
2. শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ পেদ্রুতালাগালা (২৫৩০ মিটার)।
3. শ্রীলঙ্কার দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ মহাবলী গঙ্গা।
4. শ্রীলঙ্কার রাজধানীর নাম কী?
উঃ কলম্বো।
5. কোন প্রণালীর মাধ্যমে শ্রীলঙ্কা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন?
উঃ পক্ প্রণালীর মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন।
6. মান্নান উপসাগর কোথায় অবস্থিত?
উঃ ভারত ও শ্রীলঙ্কার মাঝখানে।
7. শ্রীলঙ্কার জলবায়ু কী প্রকৃতির?
উঃ নিরক্ষীয় প্রকৃতির।
8. শ্রীলঙ্কায় প্রধানত কী জাতীয় অরণ্য দেখা যায়?
উঃ চিরসবুজ অরণ্য।
9. শ্রীলঙ্কার প্রধান কৃষিজ ফসল কী?
উঃ ধান।
10. বিশ্বে চা উৎপাদনে শ্রীলঙ্কার স্থান কত?
উঃ তৃতীয়।
11. দারুচিনি দ্বীপ কাকে বলে?
উঃ শ্রীলঙ্কাকে।
12. শ্রীলঙ্কার দুটি উল্লেখযোগ্য কৃষিজ ফসলের নাম কর।
উঃ ধান, চা।
13. কোন প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভারত স্থলপথে যোগাযোগ করতে পারে না?
উঃ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে।
14. গ্রাফাইট উৎপাদনে বিশ্বে শ্রীলঙ্কার স্থান কত?
উঃ প্রথম।
15. আদম সেতু বা সেতুবন্ধ কাকে বলে?
উঃ ভারতের দক্ষিণ সীমায় পামবান দীপে ধনুষ্কোটি থেকে শ্রীলঙ্কার উত্তর-পশ্চিম কোণে মান্নার দ্বীপের তলাই মান্নার পর্যন্ত মধ্যবর্তী সাগরে সারি সারি প্রবাল দ্বীপ ও বালুচর যেন মালার মত ভেসে থেকে সেতু রচনা করেছে, একেই বলে আদম সেতু বা সেতুবন্ধ।
পাকিস্তান
1. পাকিস্তান ভারতের কোন সীমায় অবস্থিত?
উঃ উত্তর-পশ্চিম সীমায়।
2. পাকিস্তানের উত্তরে কোন পর্বতমালা অবস্থিত?
উঃ হিন্দুকুশ পর্বতমালা।
3. পাকিস্তানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ তিরিচমির (৭৬৯০ মিটার) ।
4. পাকিস্তানের প্রধান/দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ সিন্ধু।
5. পাকিস্তানের রাজধানীর নাম কী?
উঃ ইসলামাবাদ।
6. পাকিস্তানের দুটি গিরিপথের নাম লেখ।
উঃ খাইবার ও বোলান।
7. সিন্ধুর পাঁচটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ বিতস্তা, চন্দ্রভাগা, ইরাবতী, বিপাশা এবং শতদ্রু।
8. পাকিস্তানের জলবায়ু কী প্রকৃতির?
উঃ শুষ্ক ও চরম প্রকৃতির।
9. পাকিস্তানে প্রধানত কী কী উপায়ে জলসেচ করা হয়?
উঃ সেচখাল এবং ক্যারেজ প্রথায় জলসেচ করা হয়।
10. ক্যারেজ প্রথা কী?
উঃ এক ধরণের জলসেচ পদ্ধতি।
11. পাকিস্তানের প্রধান কৃষিজ ফসল কী?
উঃ গম।
12. পাকিস্তানের প্রধান অর্থকরী ফসল কী?
উঃ তুলো বা কার্পাস।
13. পাকিস্তানের প্রধান শিল্পের নাম কী?
উঃ কার্পাস বয়ন শিল্প।
14. পাকিস্তানের প্রধান সমুদ্র-বন্দরের নাম কী?
উঃ করাচী।
15. ইসলামাবাদ শব্দটির অর্থ কী?
উঃ শান্তির শহর।
16. ইতিহাস প্রসিদ্ধ শহর তক্ষশীলা কোথায় অবস্থিত?
উঃ পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের কাছে অবস্থিত।
17. পৃথিবীর বৃহত্তম লবণ খনির নাম কী? সেটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ কেওড়া, পাকিস্তানে অবস্থিত।
18. পাকিস্তানে অবস্থিত পৃথিবীর উষ্ণতম স্থানের নাম কী?
উঃ জেকোবাবাদ।
আফগানিস্তান
1. আফগানিস্তান ভারতের কোন সীমায় অবস্থিত?
উঃ উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে।
2. আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ নোশাক (৭৪৯০ মিটার)।
3. আফগানিস্তানের দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ হেলমন্দ।
4. আফগানিস্তানের রাজধানীর নাম কী?
উঃ কাবুল।
5. আফগানিস্তানের অবস্থানকে কী বলে?
উঃ স্থলবেষ্টিত বা মহাদেশীয় অবস্থান বলে।
6. আফগানিস্তানের জলবায়ু কী প্রকৃতির?
উঃ শুষ্ক মহাদেশীয় ও চরম প্রকৃতির।
7. আফগানিস্তানে প্রধানত কী উপায়ে জলসেচ করা হয়?
উঃ ক্যারেজ প্রথায়।
8. কোন প্রজাতির মেষ পালনের জন্য আফগানিস্তান বিখ্যাত?
উঃ কারাকুল প্রজাতির মেষ পালনের জন্য।
9. আফগানিস্তানের প্রসিদ্ধ শিল্পটির নাম কী?
উঃ কার্পেট বা গালিচা শিল্প।
10. ভারতের ক্ষুদ্রতম প্রতিবেশী দেশটির নাম কী?
উঃ মালদ্বীপ।
চীন
1. চীনের মোট আয়তন কত?
উঃ প্রায় ৯৬ লক্ষ বর্গ কিমি।
2. চীনের উচ্চতম শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ গোঁসাইথান ( ৮,০১৩ মিটার)।
3. চীনের দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াং প্রায় (৬,৩০০ কিমি)।
4. চীনের রাজধানীর নাম কী?
উঃ বেইজিং।
5. ইয়াংসি-কিয়াং নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায়?
উঃ চীনের ছিংহাই প্রদেশের থাংগুলা পর্বতমালার অন্তর্গত গেলাডানডং শৃঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিমদিকের একটি হিমবাহ থেকে ইয়াংসি-কিয়াং নদীর উৎপত্তি।
6. চীনের উত্তরে কোন দেশ অবস্থিত?
উঃ মঙ্গোলিয়া।
7. কোন নদীকে চীনের দুঃখ বলা হয়?
উঃ হোয়াংহো নদীকে।
8. ইয়াংসি-কিয়াং-এর দুটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ য়ুয়ান কিয়াং এবং মিন কিয়াং।
9. চীনের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ হোয়াংহো।
10. হোয়াংহোর দুটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ ফেনহো এবং ওয়েহো।
11. পীত নদী কাকে বলে?
উঃ হোয়াংহোকে।
12. হোয়াংহো কোথায় গিয়ে পড়েছে?
উঃ পোহাই বা পেচিলি উপসাগরে।
13. কুনলুন পর্বতের উত্তরের মরুভূমিটির নাম কী?
উঃ তাকলামাকান মরুভূমি।
14. চীনের একটি বিখ্যাত মালভূমির নাম লেখ।
উঃ তিব্বত মালভূমি।
15. উত্তর ও মধ্য চীনের সীমানায় কোন পর্বত শ্রেণি অবস্থিত?
উঃ সিনলিংসান পর্বত।
16. কুনলুন পর্বতের দক্ষিণের পর্বতশ্রেণির নাম কী?
উঃ হিমালয় পর্বতশ্রেণি।
17. River of Golden Sand বা স্বর্ণরেণুর নদী কাকে বলা হয়?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াংকে।
18. ক্যান্টন নদী কোন নদীকে বলে?
উঃ সিকিয়াংকে।
19. সিকিয়াং – এর দুটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ কোয়েই কিয়াং এবং পি কিয়াং।
20. চীনের বৃহত্তম হ্রদের নাম কী?
উঃ কোকোনর হ্রদ।
21. চীনের একটি অন্তর্বাহিনী নদীর নাম লেখ।
উঃ তারিম নদী।
22. চীনের দুটি উল্লেখযোগ্য খনিজ সম্পদের নাম লেখ।
উঃ কয়লা এবং আকরিক লোহা।
23. চীনের দুটি উল্লেখযোগ্য কৃষিজ ফসলের নাম লেখ।
উঃ ধান এবং গম।
24. চীনের কার্পাস বয়নশিল্পের প্রধান কেন্দ্রটির নাম কী?
উঃ সাংহাই।
25. চীনের ইস্পাত নগরী কাকে বলে?
উঃ আনসানকে।
26. চীনের ম্যাঞ্চেস্টার কাকে বলে?
উঃ সাংহাইকে।
27. চীনের দুটি সিমেন্ট শিল্পকেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ সাংহাই এবং চুংকিং।
28. চীনের দুটি রাসায়নিক শিল্পকেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ নানকিং এবং সাংহাই।
29. চীনের দুটি কাগজ শিল্পের নাম লেখ।
উঃ কানসু এবং ক্যাণ্টন।
30. চীনের বর্তমান লোকসংখ্যা কত?
উঃ ১,৪১৫,২৩১,৬৬৬ জন বা ১৪১ কোটি প্রায়। (জুলাই ২০১৮)
31. চীনের সর্বাপেক্ষা ঘনবসতি পূর্ণ অঞ্চলটির নাম কী?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াং অববাহিকায়।
32. চীনের বৃহত্তম শহর ও বন্দরের নাম কী?
উঃ সাংহাই।
33. চীনের হল্যাণ্ড কোন অঞ্চলকে বলা হয়?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াং নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চলকে।
34. ইয়াংসি-কিয়াং অববাহিকার বৃহত্তম শিল্পকেন্দ্রের নাম কী?
উঃ সাংহাই।
35. ইয়াংসি-কিয়াং নদীর তীরে অবস্থিত একটি বন্দরের নাম লেখ।
উঃ সাংহাই
36. কোন অঞ্চলকে চীনের ধানের গোলা বলা হয়?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াং নদীর অববাহিকাকে।
37. চীনের বৃহত্তম নদী অববাহিকার নাম কী?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াং অববাহিকা।
38. চীন দেশের বৃহত্তম লোহা-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্রটির নাম লেখ।
উঃ আনসান।
39. রেড বেসিন কী?
উঃ চীনের ইয়াংসি-কিয়াং অববাহিকার ঊর্ধ্বপ্রবাহ অঞ্চলের নাম জেচুয়ান অববাহিকা। যেহেতু এই জেচুয়ান অববাহিকার মাতির রঙ লাআ, তাই একে লোহিত অববাহিকা বা রেড বেসিন বলে।
40. চীনের কোন অংশে মৌসুমী জলবায়ু দেখা যায়?
উঃ চীনের দক্ষিণ অংশে।
জলবায়ু অঞ্চল :- কোনোও বিশেষ জলবায়ু অঞ্চল বলতে কোনও দেশ বা মহাদেশের এমন এক বা একাধিক অঞ্চলকে বোঝায়, যেখানের জলবায়ুর প্রকৃতি বিশেষত উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাত মোটামুটি একই ধরনের ।
(১) ভারতের বিভিন্ন জলবায়ু অঞ্চল :-
(২) ভারতের প্রধান ঋতু :-
(৩) ভারতের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য :-
(৪) ভারতের মৌসুমী জলবায়ু:-
বিশাল ভারতের বৈচিত্র্যপূর্ণ ভুপ্রকৃতির জন্য ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত এবং স্বাভাবিক উদ্ভিদের তারতম্যের ওপর ভিত্তি করে আবহাওয়াবিদ কোপেন-এর মত অনুসরণ করে ভারতকে আটটি জলবায়ু অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে, যথা:- (১) শীতল পার্বত্য জলবায়ু অঞ্চল, (২) উষ্ণ মরু অঞ্চল, (৩) ক্রান্তীয় অতি আর্দ্র মৌসুমি অঞ্চল, (৪) উপক্রান্তীয় আর্দ্র মৌসুমি ও শুষ্ক শীতপ্রধান অঞ্চল, (৫) নাতিশীতোষ্ণ স্বল্প গ্রীষ্ম ও শীতল আর্দ্র অঞ্চল, (৬) ক্রান্তীয় সাভানা অঞ্চল, (৭) মরুপ্রায় ক্রান্তীয় অঞ্চল এবং উপক্রান্তীয় স্টেপস অঞ্চল, (৮) ক্রান্তীয় শুষ্ক গ্রীষ্ম ও শীতকালীন বৃষ্টিপাত অঞ্চল ।
(১) শীতল পার্বত্য জলবায়ু অঞ্চল :- হিমালয়ের উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং ও জম্মু-কাশ্মীরের পার্বত্য অঞ্চল; হিমাচল প্রদেশের রোটাংপাস এবং লাহুল ও স্পিটি উপত্যকা; উত্তর প্রদেশের কেদারনাথ, বদ্রী নারায়ণ, গঙ্গোত্রী-গোমুখ অঞ্চল প্রভৃতি শীতল পার্বত্য জলবায়ু অঞ্চলের অন্তর্গত । সারা বছরই এখানে তীব্র শৈত্য থাকে এবং শীতকালে এই অঞ্চলের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে -১ ডিগ্রি থেকে -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায় ।
(২) উষ্ণ মরু অঞ্চল:- পশ্চিম রাজস্থানের মরুস্থলী ও থর মরুভূমি এই অঞ্চলের অন্তর্গত । গ্রীষ্মকালে এই অঞ্চলের উষ্ণতা প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায় । এছাড়া এই অঞ্চলের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১২ থেকে ২০ সেমি । এই জন্য এই অঞ্চলকে শুষ্ক অঞ্চল বলা হয় ।
(৩) ক্রান্তীয় অতি আর্দ্র মৌসুমি অঞ্চল :- এই জলবায়ু অঞ্চলের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি – ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বার্ষিক গড় বৃষ্টি পাতের পরিমাণ ২৫০ থেকে ৩০০ সেমিরও বেশি । ভারতের পশ্চিম উপকূলবর্তী কেরালা, কর্ণাটক এবং গোয়া রাজ্য এই অঞ্চলের অন্তর্গত । এই অঞ্চলগুলি অত্যধিক বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চল ।
(৪) উপক্রান্তীয় আর্দ্র মৌসুমি ও শুষ্ক শীতপ্রধান অঞ্চল:- মৌসুমি বাহুর প্রভাবে এই অঞ্চলে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে অর্থাৎ বর্ষাকালে মাঝারি থেকে ভারী ধরনের বৃষ্টিপাত হয় । এছাড়া এই অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে অত্যন্ত উষ্ণ ও শুষ্ক এবং শীতকালে শীতল আবহাওয়াযুক্ত হয় । উত্তর ভারতের সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে এই জলবায়ু দেখা যায় ।
(৫) নাতিশীতোষ্ণ স্বল্প গ্রীষ্ম ও শীতল আর্দ্র অঞ্চল:- অসমের পূর্বাংশ ও অরুণাচল প্রদেশকে নিয়ে গঠিত এই জলবায়ু অঞ্চলের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অত্যধিক । প্রায় ২৪০ সেমি থেকে ৩০০সেমি । এছাড়া স্বল্প স্থায়ী গ্রীষ্মকাল এবং শীতের কিছু দিন বাদ দিলে সারাবছর ধরে নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু এই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ।
(৬) ক্রান্তীয় সাভানা অঞ্চল :- দক্ষিণবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ুর কিছু অংশ, গুজরাট প্রভৃতি অঞ্চলে এই ধরনের জলবায়ু দেখা যায় । শুকনো শীতকাল এবং অতি উষ্ণ গ্রীষ্মকাল হল ক্রান্তীয় সাভানা জলবায়ু অঞ্চলের প্রধান বৈশিষ্ট্য । এই ধরনের জলবায়ুতে সাভানা তৃণভূমির সৃষ্টি হয়, তাই এই জলবায়ু অঞ্চলের নাম রাখা হয়েছে ক্রান্তীয় সাভানা অঞ্চল ।
(৭) মরুপ্রায় ক্রান্তীয় অঞ্চল এবং উপক্রান্তিয় স্টেপস অঞ্চল :- পূর্ব রাজস্থান, দক্ষিণ-পশ্চিম পাঞ্জাব এবং ভারতের পশ্চিম উপকূলবর্তী পশ্চিমঘাট পর্বতমালার বৃষ্টিচ্ছায়া অঞ্চলে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাঝারি থেকে বেশ কম প্রায় ২০ থেকে ১০০ সেমি । জলবায়ু চরমভাবাপন্ন অর্থাৎ শীত ও গ্রীষ্ম দুই খুব বেশি ।
(৮) ক্রান্তীয় শুষ্ক গ্রীষ্ম ও শীতকালীন বৃষ্টিপাত অঞ্চল:- ভারতের পূর্ব উপকূলের দক্ষিণ অংশে প্রধানত করমণ্ডল উপকূল অবস্থিত এই জলবায়ু অঞ্চলের গ্রীষ্মকাল শুষ্ক প্রকৃতির এবং সাধারণত শীতকালেই বেশি বৃষ্টিপাত হয় ।
গ্রীষ্মকাল [Summer] :-
(১) এপ্রিল থেকে জুন মাসে ভারতের সর্বত্র বেশি তাপমাত্রা অনুভুত হয়, এই সময়টি তাই গ্রীষ্মকাল নামে পরিচিত ।
(২) মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ভারতে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে এবং জুন মাসের শুরুতে উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ হয় । উত্তর পশ্চিম ভারতের রাজস্থানে ৪৫ ডিগ্রি থেকে ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দিল্লি ও মধ্যভারতে ৪০ ডিগ্রি থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দক্ষিণ ভারতে ৩৫ ডিগ্রি – ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা দেখা যায় । এই সময় উচ্চতা এবং সমুদ্রের সমভাবাপন্ন জলবায়ুর প্রভাবে দক্ষিণ ভারতের মালভূমি অঞ্চলে উত্তর ভারতের সমভূমির তুলনায় কিছুটা কম তাপমাত্রা থাকে । মোটামুটি ৩৫ ডিগ্রি থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা থাকে ।
(৩) গ্রীষ্মকালে উত্তর ভারতের থর মরুভূমি থেকে শুরু করে ছোটনাগপুর মালভূমি পর্যন্ত স্থানের বায়ুতে নিন্মচাপের সৃষ্টি হয় । কিন্তু এই সময় উত্তর ভারতের সমভূমির তুলনায় কিছু শীতল হওয়ায় দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চলের বায়ুতে খানিকটা উচ্চচাপ বজায় থাকে যা আরব সাগর থেকে ভারতে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ুপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে ।
(৪) এই সময় পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলো থেকে উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলে মাঝে মাঝে কালবৈশাখীর মতো প্রবল ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসে ।
লু (loo) :- গ্রীষ্মকালে বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে ভারতের উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহার প্রভৃতি অঞ্চলে মাথার উপর লম্বভাবে প্রচন্ড সূর্য কিরণের ফলে ভুপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হওয়ার জন্য শোঁ শোঁ শব্দ করে উত্তপ্ত বায়ু প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়, তাকে লু বলে । এই বায়ুর প্রচন্ড উত্তাপের ফলে প্রতি বছর বহু মানুষ ও গবাদি পশু মারা যায় ।
বর্ষাকাল [Rainy Season] : ভারতে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস হল বর্ষাকাল ।
দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু : গ্রীষ্মকালের শেষের দিকে উত্তর-পশ্চিম ভারতে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হলে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর থেকে আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু আকস্মিকভাবে ভারতে প্রবেশ করে, ফলে বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল বৃষ্টিপাতের সূচনা হয় । এইভাবে প্রবল বর্ষণের মাধ্যমে ভারতে বর্ষাকালের সূচনা ঘটে, তাকে মৌসুমি বিস্ফোরণ বলা হয় ।
(১) ভারতে বর্ষা ঋতুটি জুন মাসে শুরু হয় এবং সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় ।
(২) এই সময় উত্তর ভারতের সমভূমির উপর প্রবল নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়, তখন ভারত মহাসাগরের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের আগমন ঘটে ।
(৩) এই সময় দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে প্রবাহিত দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু যাকে বাণিজ্য বায়ুও বলা হয়, ফেরেলের সুত্র অনুসারে ডান দিকে বেঁকে ভারতীয় উপমহাদেশে দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ু নামে প্রবাহিত হতে শুরু করে ।
(৪) ভারতবর্ষের ত্রিভুজের মতো আকৃতির জন্য দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দুই শাখায় বিভক্ত হয়ে যায় (ক) আরব সাগরীয় শাখা (খ) বঙ্গোপসাগরীয় শাখা ।
(ক) মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা:-
(১) আরব সাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাস্প সংগ্রহ করে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই দক্ষিণ–পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিম উপকূলের পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং এই পর্বত ও আরব সাগরের উপকূলের মধ্যবর্তী গোয়া ( পানাজি) ও কেরালার মালাবার উপকূলে প্রবল শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায় । গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২৫০ সেমির বেশি হয় ।
(২) এর পর এই বায়ুপ্রবাহ পশ্চিমঘাট পর্বত অতিক্রম করে মধ্যপ্রদেশ ও দাক্ষিণাত্য মাল্ভুমিতে প্রবেশ করে । কিন্তু পশ্চিমঘাট পর্বতের অপর দিক বৃষ্টিচ্ছায়া অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় জলীয় বাষ্পের ঘাটতি পড়ে বলে এই সব অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশ কমে যায় । গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৫০ সেন্টিমিটারেরও কম হয় ।
এই বায়ুপ্রবাহ যতই আরও পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে থাকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও ততই কমতে থাকে । যেমন হায়দ্রাবাদে বছরে গড়ে ১০০ সেন্টিমিটারেরও কম বৃষ্টিপাত হলেও পূর্ব দিকে অবস্থিত চেন্নাই -এ বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪০ সেন্টিমিটারেরও কম হয় ।
(৩) এই বায়ুর একটি শাখা উত্তরে রাজস্থানের দিকে অগ্রসর হয়, কিন্তু আরাবল্লী পর্বত এই বায়ুপ্রবাহের গতিপথে সমান্তরালভাবে অবস্থিত হওয়ায় এই বায়ুপ্রবাহের ফলে রাজস্থানে বৃষ্টিপাত খুব কম হয় । বছরে ২৫ সেন্টিমিটারেও কম হয় ।
(খ) মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপ সাগরীয় শাখা:-
বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে মৌসুমিবায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখাটি দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়, যা মায়ানমারের আরাকান ইয়োমা এবং উত্তর–পূর্ব ভারতের গারো, খাসি ও জয়ন্তিয়া পাহাড়ে বাধা পেয়ে দক্ষিণ-পূর্ব মৌসুমি বায়ু হিসেবে ভারতে প্রবাহিত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়, যেমন
(১) দক্ষিণ পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের বদ্বীপ সমভূমি অঞ্চল ও উত্তর–পূর্ব ভারতের পাহাড়ি রাজ্যগুলোতে প্রবল বৃষ্টিপাত হয় । যেমন :- দক্ষিণ–পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে খাসি পাহাড়ের দক্ষিণের বায়ুমুখী ঢালে অবস্থিত চেরাপুঞ্জি–মৌসিনরাম অঞ্চলে পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক প্রায় ১২৫০ সেমি থেকে ১৪০০ সেমি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয় । কিন্তু বৃষ্টিচ্ছায়া অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এই পার্বত্য অঞ্চলের উত্তর ঢালে (যাকে অনুবাত ঢালে বলা হয় ) অবস্থিত শিলং শহরে বছরে মাত্র ২৫০ সেমি বৃষ্টিপাত হয় ।
(২) দক্ষিণ–পূর্ব মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ পূর্ব হিমালয়ে পৌঁছানোর পর পশ্চিমমুখী হয়ে গাঙ্গেয় সমভূমির মধ্য দিয়ে যতই পাঞ্জাব ও রাজস্থানের নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়, বৃষ্টিপাত ততই কমতে থাকে । যেমন:- এই বায়ুপ্রবাহের ফলে নিম্নগাঙ্গেয় সমভূমির কলকাতায় বছরে ২০০ সেমি, মধ্যগাঙ্গেয় সমভূমির পাটনায় বছরে ১৫০ সেমি, এবং উচ্চগাঙ্গেয় সমভূমির হরিদ্বারে বছরে প্রায় ১০০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয় । কিন্তু আরাবল্লী পর্বতের বৃষ্টিচ্ছায়া অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় রাজস্থানের বিকানিরে বছরে খুবই সামান্য বৃষ্টিপাত হয় । আবার কোনও বছরে একেবারেই বৃষ্টিপাত হয় না ।
শরৎকাল [Autumn] :-
(১) ভারতে এই ঋতুটি অক্টোবর মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় ।
(২) এই সময়ে কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর সূর্যের কিরণ লম্বভাবে পড়ে না । ফলে উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে । এর ফলে উত্তর ভারতের নিম্নচাপ বলয়টি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে । তা ভারতে মৌসুমি বায়ু আকর্ষণ করে আনার পক্ষে যথেষ্ট শক্তিশালী নয় ।
(৩) এই কারনে মৌসুমি বায়ু সেপ্টেম্বর মাসের শেষে উত্তর ভারতের পাঞ্জাব পর্যন্ত, মধ্য অক্টোবরে মধ্য ভারত পর্যন্ত এবং নভেম্বর মাসের প্রথমে দক্ষিণ ভারত পর্যন্ত আসতে পারে ।
(৪) এই সময়ের পর সূর্য মকরক্রান্তিয় অঞ্চলে লম্বভাবে কিরণ দেয় । ফলে ভারত মহাসাগরের জলভাগ ভারতের স্থলভাগের তুলনায় বেশি উত্তপ্ত হয় ও ভারত মহাসাগরে নিন্মচাপের সৃষ্টি হয় । ফলে ভারতের স্থলভাগ থেকে উচ্চচাপের বায়ু দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহের বিপরীতে ভারত মহাসাগরের নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে । এই ঘটনাকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাবর্তন বলে ।
(৫) কিন্তু বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সময় কিছু পরিমাণ জলীয় বাস্প সংগ্রহ করে এই বায়ু অন্ধ্র ও করমণ্ডল ( তামিলনাড়ু) উপকূলে শরৎকালে বৃষ্টিপাত ঘটায় । ফলে করমণ্ডল ও অন্ধ্র উপকূলে বছরে দু-বার বৃষ্টিপাত হয় ।
(৬) এই সমর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ভারতের পূর্ব উপকূল ও বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূল অঞ্চলে প্রবল আঘাত হানে এবং জীবন ও সম্পত্তিনাশের কারণ হয় । পশ্চিমবঙ্গে এই ঘূর্ণিঝড় আশ্বিনের ঝড় নামে পরিচিত ।
শীতকাল (Winter) :-
(১) শীত ঋতুটি ভারতে ডিসেম্বর মাসে শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় ।
(২) এই সময় সমুদ্রের সমভাবাপন্ন প্রভাব থেকে বহুদূরে অবস্থিত উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলের পাঞ্জাব, রাজস্থান ও হিমালয় সন্নিহিত স্থানে তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকায় সেখানকার বায়ুমণ্ডলে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয় । অন্যদিকে, সমুদ্রের সমভাবাপন্ন জলবায়ুর প্রভাবে এবং নিরক্ষরেখার নিকটবর্তী হওয়ায় এই সময় দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চলে কিছুটা বেশি উষ্ণতা পরিলক্ষিত হয় ।
(৩) দক্ষিণ ভারতে তামিলনাড়ুতে শীতকালে তাপমাত্রা যখন ২৫° থেকে ২৬° সেলসিয়াস থাকে, তখন ওই একই সময়ে উত্তর ভারতের পাঞ্জাবের তাপমাত্রা থাকে ১৩° থেকে ১৮° সেলসিয়াস । সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনুভূত হয় উত্তর পশ্চিম ভারতে প্রায় ৫° সেলসিয়াস । অথচ এই সময় দাক্ষিণাত্যের উপদ্বীপ অঞ্চলের তাপমাত্রা ২৪° সেলসিয়াসের নিচে নামে না । শীতকালে উত্তর ভারতের পার্বত্য অঞ্চলের উত্তরপ্রদেশ (গোমুখ ও কেদার-বদ্রী), জম্মু-কাশ্মীর ও হিমাচল প্রদেশের ( মানালী, লাহুল ও স্পিতি অঞ্চল) বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা প্রায় -১° সেলসিয়াস থেকে -৪০° সেলসিয়াস পর্যন্ত হিমাঙ্কের নিচে নেমে যায় ।
(৪) শীতকালে ভূমধ্যসাগরীয় পশ্চিমাবায়ু পশ্চিম দিক থেকে কাশ্মীরে ও পাঞ্জাবে প্রবেশ করে । ফলে এই অঞ্চলে কিছু বৃষ্টিপাত ও তুষারপাত হয়, একে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা বলে । এই বৃষ্টিপাতের ফলে বিশেষত পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় গম চাষের সুবিধা হয় । শীতকালে মাঝে মাঝে শৈত্যপ্রবাহ দেখা যায়, এতে তাপমাত্রা খুব কমে যায় । ভোরের দিকে এই কুয়াশা পড়ে ।
(১) ঋতু পরিবর্তন :- বছরের বিভিন্ন সময়ে ঋতু পরিবর্তন হল ভারতের জলবায়ুর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য— (ক) মার্চ মাস থেকে মে মাস গ্রীষ্মকাল (খ) জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস বর্ষাকাল (গ) অক্টোবর মাস ও নভেম্বর মাস শরৎকাল এবং (ঘ) ডিসেম্বর মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাস শীতকাল । এই চারটি প্রধান ঋতু ভারতের জলবায়ুতে চক্রাকারে আবর্তিত হয় । এছাড়া ভারতে (ঙ) শীতের আগে হেমন্ত এবং (চ) শীতের পরে বসন্ত নামে অপর দুটি ঋতুর আভাস পাওয়া যায় ।
(২) মৌসুমি বায়ু বায়ু প্রবাহ :- গ্রীষ্মকালীন দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এবং শীতকালীন উত্তর–পূর্ব মৌসুমি বায়ু প্রবাহের প্রভাবে ভারতের ঋতু পরিবর্তন হয় । মৌসুমি বায়ুর দ্বারা প্রভাবিত হওয়ায় ভারতকে “আন্তঃমৌসুমি বায়ুর দেশ” বলা হয় । গ্রীষ্মকালে ভারতে মৌসুমি বায়ু যে দিক থেকে আসে, শীতকালে ঠিক তার বিপরীত দিক থেকে প্রবাহিত হয় ।
(৩) চরমভাবাপন্ন জলবায়ু :- উত্তর ভারতের জলবায়ু দক্ষিণ ভারতের জলবায়ুর তুলনায় অনেক বেশি চরমভাবাপন্ন, অর্থাৎ উত্তর ভারতের শীত ও গ্রীষ্ম দুটোই খুব তীব্র ।
(৪) গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা :- গ্রীষ্মকালে ভারতের বেশির ভাগ স্থানে মার্চ মাস থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে । এপ্রিল মাসে উষ্ণতা আরো বেশি বেড়ে যায় । এই সময় উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের উষ্ণতা ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায় । গ্রীষ্মকালে মে মাসে উত্তর ভারতের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ হয় । এই সময় মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাটের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায় । গ্রীষ্মকালে মে মাসে উত্তর-পশ্চিম ভারতের শুল্ক অঞ্চল সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত হয় । গ্রীষ্মকালে সময় সময় পশ্চিম ভারতের থর মরুভূমি অঞ্চলের তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসও ছাড়িয়ে যায় ।
(৫) শীতকালীন তাপমাত্রা :- শীতকালে উত্তর ভারতের তাপমাত্রা দক্ষিণ ভারতের তাপমাত্রার তুলনায় বেশ কম থাকে । এই সময় উত্তর ভারতের তাপমাত্রা গড়ে ১০ ডিগ্রি থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয় । শীতকালে দক্ষিণ ভারতের গড় তাপমাত্রা থাকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো ।
(৬) বৃষ্টিপাত :-
(ক) ভারতের মোট বৃষ্টিপাতের ৮৪% বৃষ্টিপাত গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে, ১৩% শরৎকালে, এবং ৩% শীতকালে সংঘটিত হয় ।
(খ) দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গ্রীষ্মকালে ও বর্ষাকালে অর্থাৎ জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সর্বাধিক হয় ।
(গ) উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারতে শীতকালে প্রায় শুকনো থাকে; তামিলনাড়ুর উত্তর পূর্ব দিকে অবস্থিত করমণ্ডল উপকুল ছাড়া ভারতের অন্যত্র শীতকালে তেমন বৃষ্টিপাত হয় না ।
(ঘ) পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এবং বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের ফলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শীতকালে কিছুটা বৃষ্টি হয় ।
(ঙ) ভারতের বৃষ্টিপাত একটানা না হয়ে মাঝে মাঝে বৃষ্টিপাতে বিরতি ঘটে ।
(চ) ভারতের মৌসুমি বৃষ্টিপাতের সঠিক সময় এবং পরিমাণ এক এক বছরে এক এক রকমের হয় । মৌসুমি বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা কোনও কোনও বছর ভারতে খরার অন্যতম প্রধান কারণ এবং অতিরিক্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাত ভারতে বন্যার প্রধান কারণ ।
(ছ) ভারতে আঞ্চলিক বৃষ্টিপাতের অসম বন্টন দেখা যায়— পশ্চিম উপকুল, আন্দামান নিকোবর, উত্তর–পূর্ব রাজ্যসমূহ ও উত্তরবঙ্গে অত্যধিক বৃষ্টিপাত হয়; আবার রাজস্থানের মরুভূমি এবং লাদাখ, কারাকোরাম প্রভৃতি অঞ্চলে বছরে অতি অল্প বৃষ্টিপাত হওয়ায় এদের শুল্ক অঞ্চল বলা হয় ।
ভারতের জলবায়ুতে হিমালয় পর্বতের প্রভাব:- ভারতের সমগ্র উত্তর ভাগ জুড়ে হিমালয় পর্বত শ্রেণি বিস্তৃত থাকায় ভারতের জলবায়ুর উপর হিমালয় পর্বতের অসাধারণ প্রভাব রয়েছে ।
(১) হিমালয় পর্বতের অবস্থান ভারতীয় উপমহাদেশকে মধ্য এশিয়ার হাড় কাঁপানো শীতের হাত থেকে রক্ষা করেছে । হিমালয় পর্বত না থাকলে ভারতেও রাশিয়া ও চিনের মতো তীব্র শীতের প্রাবল্য দেখা যেত ।
(২) সমুদ্র থেকে আগত জলীয় বাস্প পূর্ণ দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ু হিমালয় পর্বতের দক্ষিণ ঢালে বাধা পেয়ে উত্তর ও মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায় । মৌসুমি বায়ু প্রবাহের দ্বারা সংঘটিত বৃষ্টিপাতে হিমালয় পর্বতের অসাধারণ প্রভাব রয়েছে ।
(৩) ভারত এমনিতে উষ্ণ মৌসুমি জলবায়ুর দেশ হলেও উচ্চতার প্রভাবে হিমালয়ের উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে অনেকটা তুন্দ্রা অঞ্চলের মতো অতি শীতল জলবায়ু দেখা যায় ।
‘মৌসিম’ শব্দে এর অর্থ হল ঋতু । ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মৌসুমি বায়ু প্রবাহেরও পরিবর্তন হয় । স্থলভাগ ও জলভাগের উত্তাপের পার্থক্যের ফলে সমুদ্র বায়ু এবং স্থল বায়ুর মতো মৌসুমি বায়ুরও সৃষ্টি হয় । ভারতের জলবায়ু ও বৃষ্টিপাতে মৌসুমি বায়ুর বিরাট প্রভাব পরিলক্ষিত হয় । এইজন্য ভারতকে মৌসুমি বায়ুর দেশ বলা হয় ।
(১) ভারত ‘আন্তঃমৌসুমি জলবায়ুর দেশ হওয়ায় ভারতের অধিকাংশ বৃষ্টিপাত মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঘটে থাকে । বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু, শরৎকালে প্রত্যাবর্তনকারী মৌসুমি বায়ু এবং শীতকালে উত্তর–পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাব ভারতের জলবায়ু ও বৃষ্টিপাতের উপর সবচেয়ে বেশি থাকে । গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পূর্ব এবং শীতকালে উত্তর-পূর্ব এই দুটি বিপরীতমুখী বায়ুপ্রবাহের ফলে ভারতে আর্দ্র গ্রীষ্মকাল এবং শুষ্ক শীতকাল এই দুটি প্রধান ঋতুর সৃষ্টি হয়েছে ।
(২) দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে সমুদ্রের উপর দিয়ে আগত মৌসুমি বায়ুতে প্রচুর জলীয় বাস্প থাকে বলে বর্ষাকালের জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে ।
(৩) বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারতে পশ্চিম উপকূলের উত্তরাংশ, অসম, মিজোরাম, পূর্ব হিমালয়, তরাই অঞ্চল এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় ।
(৪) দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখার প্রভাবে উত্তর–পূর্ব ভারতের গারো, খাসি ও পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশবর্তী অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হলেও এই সব অঞ্চলের দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে বৃষ্টিপাত ক্রমশ কমে যেতে থাকে ।
(৫) দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখার প্রভাবে দক্ষিণ থেকে উত্তর ও উত্তর পশ্চিমে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকে ।
(৬) মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে খাসি, গারো, পূর্ব হিমালয় এবং পশ্চিমঘাট পর্বতের প্রতিবাত ঢালে প্রবল শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত হলেও অনুবাত ঢালে বৃষ্টিহীন বা অল্পবৃষ্টিযুক্ত বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে ।
(৭) অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে শরৎকাল অথবা শীতকালের শুরুতে প্রত্যাবর্তনকারী মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয় এবং করমণ্ডল উপকূলে বৃষ্টিপাত ঘটে ।
(৮) উত্তর–পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে শীতকালে ভারতে বৃষ্টিপাত খুব একটা হয় না, কেবল মাত্র করমণ্ডল উপকূলে ডিসেম্বর মাসে কিছুটা বৃষ্টিপাত হয় ।
(৯) দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারতে গ্রীষ্মকালীন উষ্ণতা কিছুটা কমে যায় ।
(১০) মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে হিমালয় পর্বত সহ ভারতের বিভিন্ন অংশে চিরহরিৎ, পর্ণমোচী এবং সরলবর্গীয় বৃক্ষের গভীর অরণ্যে সৃষ্টি হয়েছে । এইসব অরণ্য থেকে মুল্যবান কাঠ এবং অন্যান্য অরণ্য সম্পদ পাওয়া যায় ।
ভারতীয় কৃষিতে মৌসুমি বায়ুর বিরাট প্রভাব রয়েছে । মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারতে প্রচুর পরিমাণে ধান, গম, পাট, আখ, তুলা বিভিন্ন ধরনের ডাল, নানান রকম তৈলবীজ, চা, কফি তামাক প্রভৃতি উৎপন্ন হয় ।
মৌসুমি বৃষ্টিপাতের অনিশ্চয়তা — খরা ও বন্যার প্রাদুর্ভাব:- ভারতে মৌসুমি বায়ুর ফলেই প্রধানত বৃষ্টিপাত ঘটে । দেশের মোট বৃষ্টি পাতের প্রায় ৯০ শতাংশ দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সংঘঠিত হয় । কিন্তু এই মৌসুমি বায়ু খুবই অনিশ্চিত । কারণ প্রতি বছর এই মৌসুমি বায়ু সমপরিমাণে জলীয় বাস্প নিয়ে আসে না । আবার এই মৌসুমি বায়ুর আগমন ও প্রত্যাগমন প্রতি বছর একই সময়ে ঘটে না । এর ফলে কোন বছর কম জলীয় বাস্প আমদানি ও দেরিতে আসার ফলে ভারতে অনাবৃষ্টি বা খরা দেখা দেয় । আবার কোনও বছর অতিরিক্ত পরিমাণ জলীয় বাস্প আমদানি এবং দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহের খাম খেয়ালিপণার জন্য ভারতে প্রায়ই খরা ও বন্যার প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায় ।
(ক) ভারতে খরার প্রধান কারণ :-
(১) মৌসুমি বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা ভারতে খরার প্রধান কারণ ।
(২) ভারতের কোনও স্থানে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বর্ষা দেরিতে আসা সেই স্থানের খরার অন্যতম কারণ
(৩) স্বাভাবিক সময়ের আগে মৌসুমি বায়ু প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে খরা সৃষ্টি হয় ।
(৪) কোন স্থান বর্ষাকালের মধ্যেও বেশ কিছুদিন বৃষ্টিহীন অবস্থায় থাকলে খরা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ।
(৫) বনভুমির অভাবের জন্য সূর্যের প্রচন্ড তাপে গ্রীষ্মকালে প্রচুর পরিমাণে ভৌম জল বাষ্পীভূত হয়ে যায় এবং মাটি ফেটে চৌচির হয়ে খরার সৃষ্টি করে ।
(৬) পরিবেশ দূষণের জন্য বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে মৌসুমি বায়ু ঘনীভূত না হতে পারলে খরার সৃষ্টি হয় ।
(খ) ভারতে বন্যার প্রধান কারণ :-
(১) কোনও স্থানে একটানা অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ঘটলে সেই স্থানে বন্যার দেখা দেয় ।
(২) মৌসুমি বৃষ্টিপাত দীর্ঘায়িত হলে অতিবৃষ্টির ফলেও বন্যার সৃষ্টি হয় ।
(৩) নদীর বহন ক্ষমতা কমে এলে বা জলনিকাশী ব্যবস্থা বুজে এলে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত না হলেও বন্যার সৃষ্টি হতে পারে । ২০০০ সালে এই কারণে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে বন্যার সৃষ্টি হয় ।
(৪) বর্ষাকালে বাঁধ বা জলাধার থেকে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত জল ছাড়লে বন্যার সৃষ্টি হয় । এটিও পশ্চিমবঙ্গে বন্যা হওয়ায় অন্যতম প্রধান কারণ ।
(৫) কখনও কখনও ভূমিক্ষয়ও বন্যার অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে দেখা দেয় । ভূমিক্ষয়ের ফলে ক্ষয়ে যাওয়া মাটি নদী গর্ভে জমা হয় এবং নদীর গভীরতা কমিয়ে দেয় । এর ফলে নদীর জল বহন ক্ষমতা কমে গিয়ে বন্যার সৃষ্টি করে ।
ভারতে খরা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের উপায় :-
(১) ভারতের বন্যাপ্রবণ অঞ্চলগুলো নির্দিষ্ট ও উপযুক্ত স্থানগুলোতে ছোটো ছোটো বাঁধ ও জলাশয় তৈরি করে, প্রধান নদী ও উপনদীগুলোর ওপর বড়ো বড়ো বাঁধ ও জলাশয় তৈরি করে বন্যার জলকে ধরে রেখে তার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ভারতের বন্যাপ্রবণ অঞ্চলগুলোর অধিবাসীদের রক্ষা করা যায় ।
(২) গ্রীষ্মকালে খরা জনিত পরিস্থিতির সময় বাঁধ ও জলাশয়ে ধরে রাখা জলকে আধুনিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে জলসেচের কাজে লাগিয়ে বন্যাপ্রবণ অঞ্চলের বহুদূরবর্তী খরা প্রবণ অঞ্চলকে খরার প্রকোপ মুক্ত করা সম্ভব ।
(৩) কখনও কখনও ভুমিক্ষয়ও বন্যার অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে দেখা দেয় । ভুমিক্ষয়ের ফলে ক্ষয়ে যাওয়া মাটি নদীগর্ভে জমা হয়ে নদীর গভীরতা কমিয়ে দেয়, ফলে নদীগর্ভ আর বর্ষার জল বহন করতে পারে না বলে বর্ষাকালে নদীতে বন্যা দেখা দেয় । নদীগর্ভ বুঁজে গেলে বর্ষাকালে জল নিকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয় । নদীগর্ভে নিয়মিতভাবে ড্রেজিং করে তাদের নাব্যতা বাড়িয়ে বন্যার প্রকোপ অনেকটা কমানো যায় ।
(৪) বনভুমির অভাবের জন্য বৃষ্টিপাত কম হলে বৃক্ষরোপণ প্রকল্পের সাহায্যে প্রচুর গাছ লাগিয়ে আংশিক ভাবে খরা নিয়ন্ত্রন করা যায় ।
ভূগভৌতবিজ্ঞানভৌতবিজ্ঞাভইতিহাসamik
হিমবাহের কাজের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ
Posted on
May 27, 2021
Author
Author
আআআগআআআগহিমবাহেআআআগআআআগহিমবাহেহিমবাহেআআআের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ:
করি বা সার্ক (Cirque)
পার্বত্য অঞ্চলে দিনের বেলা বরফ গলা জল পর্বত গাত্রে অবস্থিত ফাটলে প্রবেশ করে। রাতের বেলা তাপমাত্রা কমে গেলে ওই জল জমে বরফে পরিণত হয় এবং আয়তনে বৃদ্ধি পায়। এই জমাট বাঁধা বরফ পাথরের ফাটলটি কে ক্রমশ বড় করে তোলে। সময়ের সাথে সাথে ফাটলটি খুব খাড়া ঢাল যুক্ত অর্ধ গোলাকার গর্তের সৃষ্টি করে অনেকটা হাতল-ওয়ালা চেয়ারের মত দেখতে হয়। এই অর্ধ গোলাকার গর্তকে ফরাসি ভাষায় সার্ক (Cirque) এবং স্কটল্যান্ডে করি বলা হয়। সার্ক এর মধ্যে বরফ গলা জল জমে যে হ্রদ সৃষ্টি হয় তাকে করি হ্রদ বা টার্ন বলা হয়।
পৃথিবীর গভীরতম সার্কটি হলো ওয়ালকট সার্ক (3000 মি)।
এরিটি (Arete)
পাশাপাশি অবস্থিত দুটি সার্কের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত উঁচু খাড়া তীক্ষ্ণ শীর্ষ বিশিষ্ট শৈলশিরাকে এরিটি বা অ্যারেট বলা হয়। এরিটির শীর্ষ দেশ করাতের মত এবড়ো খেবড়ো আকৃতির হয়ে থাকে। পাশাপাশি অবস্থিত দুটি সার্ক যখন মস্তক ক্ষয়ের মাধ্যমে প্রসারিত হয় তখন এরিটি গঠিত হয়।
উদাহরণ – হিমালয়ের কারাকোরাম পর্বতে অনেক এরিটি লক্ষ্য করা যায়।
পিরামিড শৃঙ্গ
চারদিক থেকে যখন অনেকগুলো সার্ক মস্তক ক্ষয় এর মাধ্যমে একটি বিন্দুতে মিলিত হয় তখন সেই বিন্দুতে যে শীর্ষ তৈরি হয় হয় তাকে পিরামিড শৃঙ্গ বলা হয়।
উদাহরণ স্বরূপ নেপালের মাকালু, আল্পসের ম্যাটারহর্ন, বদ্রিনাথ এর নীলকন্ঠ ইত্যাদি।
কর্তিত স্পার (Truncated Spur)
হিমবাহ যখন পার্বত্য উপত্যকা দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন উভয় পাশের পর্বতের অবক্ষিপ্ত অংশ বা স্পারের সামনের অংশ গুলি কেটে উপত্যকাকে আরো চওড়া করে তোলে। এই পল কাটা স্পার গুলোকেই কর্তিত স্পার বলা হয়।
ঝুলন্ত উপত্যকা
কোনো মূল বা বড় হিমবাহের উপর অপেক্ষাকৃত ছোট হিমবাহ গুলি এসে মেসে। এই অবস্থায় মূল হিমবাহটি বেশি শক্তিশালী হওয়ায় এর উপত্যকাটি অপেক্ষাকৃত নিচে অবস্থান করে এবং উপ হিমবাহগুলির উপত্যকাগুলি মূল হিমবাহের উপত্যকা থেকে উচুতে অবস্থান করে। হিমবাহ অপসারিত হলে এই উপত্যকাগুলিকে মূল উপত্যকার উপর ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে বলে মনে হয়। এদের ঝুলন্ত উপত্যকা বলা হয়। হিমবাহ গলে গেলে এই ঝুলন্ত অগভীর উপত্যকা গুলির মধ্যে দিয়ে নদী প্রবাহিত হয় এবং মূল হিমবাহ উপত্যকার মিলিত হওয়ার বিন্দুতে জলপ্রপাত এর সৃষ্টি করে। রোটাং পাস এর কাছে এরকম অনেক ঝুলন্ত উপত্যকা দেখা যায়।
দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলি – গণিত | জীবন বিজ্ঞান | ভৌতবিজ্ঞান
U আকৃতির উপত্যকা বা হিমদ্রোণি
পার্বত্য অঞ্চলে উপত্যকা দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার সময় নিম্ন ক্ষয় ও পার্শ্ব ক্ষয় সমান ভাবে করতে থাকে ফলে U আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি হয়। একেই U আকৃতি বিশিষ্ট উপত্যকা বা হিমদ্রোণি বলে। এই উপত্যকার দুই পাশ খুব খাড়া এবং মাঝের অংশ অনেক চওড়া হয়ে থাকে। এই উপত্যকার তলদেশের পাশে সিঁড়ির মত ধাপ দেখা যায়। একে হিম ধাপ বলা হয়। হিম ধাপ এর নিচের অংশে বরফ গলে যে হ্রদ সৃষ্টি হয় তাকে প্যাটারনস্টার হ্রদ বলা হয়।
রসে মতানে (Roche moutonnée)
হিমবাহের প্রবাহ পথে কোন শিলা খন্ড, ঢিবির আকারে অবস্থান করলে হিমবাহের প্রবাহ পথের দিকটি হিমবাহ দ্বারা ঘর্ষণের ফলে মসৃণ হয়ে ওঠে ও অন্য দিকটা অমসৃণ ও এবড়ো খেবড়ো ভাবে অবস্থান করে। সম্পূর্ণ ভূমিরূপটি অপ্রতিসম হয়ে থাকে। একেই রসে মতানে বলা হয়।
এরকম অনেক রসে মতানে নরওয়ের টলমট্রিনজেন পর্বতে দেখা যায়।
ক্রাগ অ্যান্ড টেল (crag and tail)
হিমবাহের প্রবাহ পথে কোন কঠিন শিলা খন্ডের উপস্থিতি থাকলে তা হিমবাহের ক্ষয় থেকে পিছনের কোমল শিলা-কে রক্ষা করে। এর ফলে কঠিন শীলা খন্ডটির পিছনে কোমল শিলা ক্ষয় প্রাপ্ত না হয়ে লেজের আকারে অবস্থান করে ও কঠিন শীলা খন্ডটি উচু ঢিপির মতো অবস্থান করে। এই ঢিপির মত অংশ টিকে ক্র্যাগ ও পিছনের লেজ এর মত অংশ টিকে টেল বলা হয়। স্কটল্যান্ডে এরকম অনেক ভূমিরূপ দেখা যায়।
ফিয়র্ড (Fiord)
হিমবাহ দ্বারা কর্তিত উপত্যকা যখন সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়ে যায় তখন থাকে ফিয়র্ড বা ফিয়ার্ড বলা হয়। উচ্চ অক্ষাংশতে হিমবাহ উপত্যকা কে গভীর ভাবে ক্ষয় করে, সমুদ্র পৃষ্ঠের নিচে অব্দি ক্ষয়কার্য করে থাকে। হিমবাহ যখন উপত্যকা থেকে অপসারিত হয় তখন এই উপত্যকা গুলি জলে ভরে যায়। এই নিমজ্জিত উপত্যকা গুলিই ফিয়র্ড বা ফিয়ার্ড সৃষ্টি করে। ছোট গুলি ফিয়ার্ড ও বড় উপত্যকা গুলি ফিয়র্ড নামে পরিচিত। ফিয়র্ড এর গভীরতা প্রায় 300 মিটার অব্দি হয়ে থাকে। নরওয়েতে এরকম অনেক ফিয়র্ড দেখা যায় তাই নরওয়েকে ফিয়র্ডের দেশ বলা হয়।
গ্রাবরেখা (Moraine)
হিমবাহের প্রবাহ পথের পাশে হিমবাহ দ্বারা বাহিত নুড়ি, কাঁকর, বালি, কাদা হিমবাহের গলনের কারণে হিমবাহের প্রবাহ পথের বিভিন্ন অংশে অসংলগ্ন ভাবে সঞ্চিত হলে তাকে গ্রাবরেখা বা মোরেন বলা হয়। গ্রাবরেখাকে তার অবস্থান অনুযায়ী চার ভাগে ভাগ করা যায়।
হিমবাহের দুই পাশে অবস্থিত গ্রাবরেখাকে পার্শ্ব গ্রাবরেখা বলা হয়।
হিমবাহ দ্বারা বাহিত পদার্থ হিমবাহের অগ্রভাগে সঞ্চিত হলে তাকে প্রান্ত গ্রাবরেখা বলা হয়।
দুটি হিমবাহ পাশাপাশি মিলিত হলে তাদের মাঝে অবস্থিত সরু গ্রাবরেখাকে মধ্য গ্রাবরেখা বলা হয়।
হিমবাহের তলদেশে বরফ গলে সঞ্চিত পদার্থ যে গ্রাবরেখা সৃষ্টি করে তাকে ভূমি গ্রাবরেখা বলা হয়।
এরকম অনেক গ্রাবরেখা নরওয়ে, সুইডেন, উত্তর পশ্চিম ইউরোপ, পোল্যান্ড ও কানাডায় দেখা যায়।
ড্রামলিন (Drumlin)
হিমবাহ দ্বারা বাহিত পাথর, কাঁকর, বালি, কাদা সারিবদ্ধ ভাবে উল্টানো চামচের মতো সঞ্চিত হলে তাকে ড্রামলিন বলা হয়। ড্রামলিন এর হিমবাহের দিকের অংশ মসৃণ ও বিপরীত দিকটা অমসৃণ হয়ে থাকে। একসাথে অনেকগুলো ড্রামলিন অবস্থান করলে ডিম ভর্তি ঝুড়ির মত দেখতে লাগে। তাই একে ডিমের ঝুড়ি ভূমিরূপ ও বলা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরভাগ আয়ারল্যান্ড এর উত্তরভাগে এই রকম ভূমিরূপ দেখা যায়।
রসে মতানে ও ড্রামলিন দেখতে অনেকটা একই রকম হলেও দুটি ভিন্ন উপায়ে সৃষ্টি হয়। রসে মতানে ক্ষয় এর ফলে ও ড্রামলিন সঞ্চয় এর ফলে সৃষ্টি হয়। রসেমতানে পার্বত্য অঞ্চলে গঠিত হয় ও ড্রামলিন পর্বতের পাদদেশে সৃষ্টি হয়।
হিমরেখার নিচে হিমবাহ গলে গিয়ে অনেক ছোট ছোট জলধারা সৃষ্টি হয় যার ফলে হিমবাহ দ্বারা বাহিত পদার্থ গুলি অনেক দূর বিস্তৃত হয়। একেই হিমবাহ ও জলধারার মিলিত সঞ্চয় কার্য বলা হয়। এই মিলিত সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ গুলি নিম্নে আলোচিত হলো।
কেম (Kame)
হিমবাহ গলতে শুরু করলে উপত্যকার নিচের অংশের মাঝখানে হিমবাহ বাহিত পদার্থ গুলি সঞ্চিত হয়ে উচু নিচু ঢিবির সারি সৃষ্টি হয় কেম বলা হয়। কেম দেখতে ত্রিকোণাকার হয়ে থাকে। কেম পরস্পর যুক্ত হয়ে সোপান এর মত ভূমিরূপ এর সৃষ্টি করে একে কেম সোপান বলা হয়। আমেরিকার উচ্চ অক্ষাংশতে এরকম অনেক ভূমিরূপ দেখা যায়।
এসকার (Esker)
পর্বতের পাদদেশে হিমবাহ বাহিত পদার্থ স্তরায়িত হয়ে যে আঁকাবাঁকা শৈলশিরা সৃষ্টি করে তাকে এসকার বলা হয়। সুইডেন ও ফিনল্যান্ডে এরকম অনেক এসকার দেখা যায়। এগুলো লম্বায় 400 কিমি, চওড়ায় 3কিমি ও উচ্চতায় 200 মিটার হতে পারে।
বহিঃবিধৌত সমভূমি (Out-Wash-Plain)
পর্বতের পাদদেশে হিমবাহ গলে হিমবাহ বাহিত পদার্থ যেমন পাথর, কাঁকর, বালি, কাদা নিচু স্থান গুলো ভরাট করে যে সমভূমি গড়ে তোলে তাকে বহিঃবিধৌত সমভূমি বলা হয়। আইসল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে এরকম সমভূমি দেখা যায়।
দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলি – বাংলা | English | ইতিহাস | ভূগোভূগোলভৌতবিজ্ঞানভৌতবিজ্ঞানMadhyamikMadhyaল
কেটল
বহিঃবিধৌত সমভূমি অঞ্চলে বরফের চাঁই চাপা পড়ে যায়, পরে ওই বরফ গলে সেই ফাঁকা অংশে গর্তের সৃষ্টি করে। একেই কেটল বলা হয়। এই গর্তে জল জমে হ্রদ সৃষ্টি হলে তাকে কেটল হ্রদ বলা হয়। কেটলের তলদেশে পলি সঞ্চিত হলে তাকে ভার্ব বলা হয়।
ভারতের উৎপন্ন কৃষিজ ফসল [Production of Agricultural Crops] :- ভারতের উৎপন্ন কৃষিজ ফসলকে দুটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, (ক) ফসল রোপণ ও তোলার সময় অনুসারে এবং (খ) উৎপন্ন ফসলের ব্যবহার অনুসারে ।
(ক) ফসল রোপণ ও তোলার সময় অনুসারে :- চাষের সময় ও ফসল তোলার সময় অনুযায়ী ভারতের কৃষিজ ফসলগুলিকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়; (i) রবি ফসল এবং (ii) খারিফ ফসল ।
(i) রবি ফসল [Rabi Crops]:- রবি শস্যের অর্থ হল ‘শীতকালীন ফসল’ । প্রধানত জলসেচের উপর নির্ভর করে শীতকালে যেসব ফসলের চাষ করা হয় সেইসব ফসল কে রবি ফসল বলে । গম, যব, আলু বিভিন রকমের তৈলবীজ ও ডাল রবি ফসলের উদাহরণ ।
(ii) খারিফ ফসল [Kharif Crops]:- খারিফ শস্যের অর্থ হল বর্ষাকালীন ফসল । বর্ষাকালে বৃষ্টির জলের উপর নির্ভর করে যেসব ফসলের চাষ করা হয়, সেইসব ফসলকে খারিফ ফসল বলে । ধান, পাট, ভুট্টা, আখ, জোয়ার, বাজরা, কার্পাস প্রভৃতি খারিফ ফসলের উদাহরণ ।
(খ) উৎপন্ন ফসলের ব্যবহার অনুসারে :- ব্যবহারের প্রকৃতি অনুসারে ভারতের উৎপন্ন কৃষিজ ফসলকে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা যায়; (i) খাদ্যশস্য, (ii) রোপনাত্মক বাগিচা ফসল (iii) অর্থকরী ফসল ও (iv) অন্যান্য ফসল ।
(i) খাদ্য শস্য [Food grains]:- ধান, গম, ভুট্টা, জোয়ার, বাজরা, রাগী প্রভৃতি ।
(ii) রোপনাত্মক বাগিচা ফসল [Plantation Crops]: একবার রোপণের পর যেসব গাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ফসল পাওয়া যায় তাদের রোপনাত্মক বাগিচা ফসল বলে । যেমন চা, কফি তামাক, নানা রকমের ফল প্রভৃতি ।
(iii) অর্থকরী ফসল [Cash crop] :- যেসব ফসল বিক্রি করে কৃষকদের অর্থাগম হয় তাকে অর্থকরী ফসল বলে । পাট, তুলা প্রভৃতি তন্তু জাতীয় ফসল, ডাল, খাদ্যশস্য বা বাগিচা ফসল বিক্রি করেও অর্থাগম হতে পারে ।
(iv) অন্যান্য ফসল [Other crops]:- আখ, বিভিন্ন রকমের তৈলবীজ প্রভৃতি ।
ভারতের খাদ্যশস্য — ধান [Paddy] :- ভারতের প্রধান খদ্যশস্য হল ধান । পৃথিবীর মোট ধান উৎপাদনের প্রায় শতকরা ২৩ ভাগ ধান ভারতে উত্পন্ন হয় । ধান উত্পাদনে ভারত বর্তমানে পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ও চিন প্রথম স্থান অধিকার করে ।
♦ ধান উৎপাদনের অনুকুল পরিবেশ :
(১) বৃষ্টিপাত : ধান চাষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয় । ১০০ থেকে ২০০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত ধান চাষের পক্ষে আদর্শ । ধান গাছের বৃদ্ধি ঘটাতে গাছের গোড়ায় জল জমে থাকা দরকার । কিন্তু ধান কাটার সময় বৃষ্টি হলে অত্যন্ত ধান উত্পাদনে ক্ষতি হয় । এই সময় শুকনো জলবায়ুর প্রয়োজন । ধান চাষের সময় জমিতে সময় মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে জলসেচের ব্যবস্থা থাকলে তা ধান চাষের পক্ষে অত্যন্ত সহায়ক ।
(২) উত্তাপ : ধান চাষের জন্য পর্যাপ্ত সূর্যের উত্তাপ প্রয়োজন । ১৬° থেকে ৩০° সেলসিয়াস উত্তাপ ধান চাষের পক্ষে অত্যন্ত সহায়ক ।
(৩) জমির প্রকৃতি : গাছের গোড়ায় জমে থাকা জল ধান গাছের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে, তাই নদী অববাহিকা বা বদ্বীপ অঞ্চলের নিচু সমতল জমি ধান চাষের পক্ষে আদর্শ । এছাড়া পাহাড়ের গায়ে ধাপ কেটে সমতল ভুমি তৈরি করেও ধান চাষ করা হয় । বর্তমানে উন্নত কৃষি পদ্ধতি ও উচ্চ ফলনশীল বীজের সাহায্যে প্রতিকুল অবস্থাতেও ধান চাষ করা হয় ।
(৪) মৃত্তিকা : নদী উপত্যকা, বদ্বীপ এবং উপকুল অঞ্চলের নিম্ন সমভূমির পলিমাটি যুক্ত উর্বর দোআঁশ ও এঁটেল মাটি ধান চাষের পক্ষে আদর্শ । মাটিতে কাদার পরিমাণ কিছুটা বেশি থাকলে ধান চাষ ভাল হয় । কারণ এতে মাটির জলধারণ ক্ষমতা বেড়ে যায়, যা ধান গাছের গোড়ায় জল জমিয়ে রাখতে সাহায্য করে ।
(৫) সার ও কীটনাশক বিষ প্রয়োগ : উচ্চ ফলনশীল ধান চাষে গোবর, কম্পোস্ট, ভার্মি কম্পোস্ট প্রভৃতি জৈব সার এবং ইউরিয়া, সুপার ফসফেট, পটাশ প্রভৃতি রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় । এছাড়া বোরন, দস্তা, প্রভৃতি অনুখাদ্য ও ধান চাষের জন্য প্রয়োজন হয় । কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে ধান গাছকে রক্ষা করতে রাসায়নিক কীটনাশক বিষ প্রয়োগের প্রয়োজন হয় । এছাড়া ছত্রাকের আক্রমণ থেকে ধান গাছকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক ছত্রাকনাশক প্রয়োগ জরুরি হয় ।
(৬) সুলভ শ্রমিক : ধান চাষের উপযুক্ত জমি তৈরি করতে ক্ষেতে নাঙল দেওয়া, বীজ ছড়ানো, রোপণ এবং ফসল কাটার বিভিন্ন পর্যায়ে প্রচুর পরিশ্রমী ও দক্ষ সুলভ শ্রমিকের প্রয়োজন হয় ।
(৭) মূলধন ও আধুনিক কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার : বর্তমানে একই জমিতে একাধিকবার ও বেশি পরিমাণে ধান উৎপাদন করার জন্য বেশি মূলধন বিনিয়োগ করে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় ।
♦ ধান চাষ পদ্ধতি:- ভারতে সাধারণত দু'রকম পদ্ধতিতে ধান চাষ হয়ে থাকে, যেমন— (১) রোপণ পদ্ধতি এবং (২) বপন পদ্ধতি ।
(১) রোপণ পদ্ধতি : রোপণ পদ্ধতিতে অল্প খানিকটা জমিতে নাঙল দিয়ে ঘন করে ধানের বীজ ছড়িয়ে দেওয়া হয়, একে বীজ তলা বলে । বীজ থেকে চারা বের হলে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বীজতলা থেকে চারাগুলোকে তুলে মূল ধান ক্ষেতে লাইন করে সম দূরত্বে রোপণ করা হয় । এই রোপনের সময় ক্ষেতে জল দাঁড়িয়ে থাকা প্রয়োজন ।
(২) বপন পদ্ধতি : বপন পদ্ধতিতে আগে থেকে তৈরি করে রাখা ক্ষেতে ধানের বীজ ছড়িয়ে দেওয়া হয় । বীজ থেকে চারা গাছ বেরিয়ে ওই জমিতে ধান পাকলে ধানের পরিপক্ক শিস কেটে নেওয়া হয় ।
♦ ধানের প্রকারভেদ : ভারতে সাধারণত তিন শ্রেণির ধান উৎপন্ন হয়, যেমন— (১) আমন ধান, (২) আউশ ধান ও (৩) বোরো ধান ।
(১) আমন ধান : এই ধান চাষে প্রচুর পরিমাণে জলের প্রয়োজন হয় । সেজন্য এই আমন ধান বর্ষাকালে মে-জুন মাসে বপন হয় ও শীতকালে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ফসল কাটা হয় ।
(২) আউশ ধান : এই ধানের ফসল পাকতে আমন ধানের চেয়ে কম সময় লাগে । আউশ ধান চাষে আমন ধানের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে কম জলের প্রয়োজন হয় । এজন্য অপেক্ষাকৃত ঊঁচু জমিতে অথবা দেশের যে অঞ্চলে অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টিপাত হয় সেই অঞ্চলে এই আউশ ধানের চাষ করা হয়ে থাকে । আউশ ধান মৌসুমি বৃষ্টিপাতের পূর্বে বপন করে মে-জুন মাসে কাটা হয় ।
(৩) বোরো ধান : বোরো ধান চাষে ফসল পাকতে কম সময় লাগলেও এই ধান কিছুটা নিকৃষ্ট শ্রেণির । বোরো ধান বসন্ত কালের শেষে লাগিয়ে গ্রীষ্মকালে কাটা হয় । মাত্র ষাট দিনে ফসল উৎপন্ন হয় বলে বোরো ধানকে ষেটে ধানও বলা হয় ।
উচ্চ ফলন শীল ধান : বর্তমানে ভারতে জয়া, রত্না, তাইচুং, আই আর ৮, ‘গাবিন্দ’ ও ‘আদিত্য’ আই আর ৬৪, প্রভৃতি উচ্চ ফলন শীল ধানের চাষ করা হয় ।
♦ ধান উৎপাদক অঞ্চল : ভারতের মধ্যে বর্তমানে ধান উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গ প্রথম, উত্তরপ্রদেশ দ্বিতীয়, পাঞ্জাব তৃতীয়, এবং তামিলনাড়ু চতুর্থ স্থান অধিকার করে । পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, হুগলী, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম দিনাজপুর ও কুচবিহার জেলায় রাজ্যের অধিকাংশ ধান উৎপন্ন হয় । ধান উৎপাদনে বর্ধমান পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষস্থান অধিকার করে বলে এই জেলাকে পশ্চিমবঙ্গের “ধানের ভান্ডার” বলা হয় । অন্ধ্রপ্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী, উত্তরপ্রদেশের দক্ষিণাংশ, উত্তরাঞ্চল অংশের দেরাদুন অঞ্চলে এবং বিহারের উত্তরাংশের বিস্তীর্ণ সমভূমি অঞ্চলে ব্যাপক হারে ধান উৎপন্ন হয় । এছাড়া ঝাড়খণ্ড, ওড়িশার কটক, পুরী ও সম্বলপুর জেলা, তামিলনাড়ুর চিংলিপুট ও থাঞ্জিভুর জেলা, কর্ণাটকের উত্তর ও দক্ষিণ কানাডা জেলা, সমগ্র অসম রাজ্য, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, সিকিম, ছত্রিশগড় ও হিমাচল প্রদেশের কাংড়া উপত্যকাতে প্রচুর ধান উৎপন্ন হয় ।
♦ ধান উৎপাদন : ধান উৎপাদনে ভারত পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে । পৃথিবীর মধ্যে ধান উত্পাদনে চিনের স্থান প্রথম । পৃথিবীর অন্যান্য ধান উৎপাদক দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় যে, হেক্টর প্রতি ধান উৎপাদনে ভারত বেশ পিছিয়ে আছে । চিনের ধান উৎপাদন প্রতি হেক্টরে ৩৩৫০ কিলোগ্রাম আর জাপানের হেক্টর প্রতি ধান উৎপাদন ৫৭০০ কিলোগ্রাম, আর ভারতে প্রতি হেক্টরে মাত্র ১৯৯০ কিলোগ্রাম ধান উৎপাদিত হয় ।
ভারতের মধ্যে ধান উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গ প্রথম স্থান অধিকার করলেও হেক্টর প্রতি বা বিঘা প্রতি ধান উৎপাদনে পাঞ্জাব রাজ্য ভারতে শীর্ষস্থান অধিকার করে ।
♦ ধান গবেষনা কেন্দ্র : ভারতের উল্লেখযোগ্য ধান গবেষণাকেন্দ্র হল (১) সেন্ট্রাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (কটক), (২) ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ বা পুসা ইনস্টিটিউট (দিল্লি) এবং (৩) এছাড়া ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থিত গবেষণা কেন্দ্র ও রাষ্ট্রীয় খামারে ধান সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণা হয়ে থাকে ।
♦ বাণিজ্য: কয়েক বছর আগেও ভারতকে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করতে হত । কিন্তু ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৯৭৮ সাল থেকে চাল আমদানি প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । বরং ভারতই ১৯৭৯ সাল থেকে অল্প পরিমাণ মিহি চাল বিদেশে রপ্তানি করছে ।
গম [Wheat]:- খাদ্যশস্য হিসাবে ভারতে ধানের পরেই গমের স্থান । বর্তমানে পৃথিবীর মোট গম উৎপাদনের প্রায় শতকরা ১২ ভাগ গম ভারতে উত্পন্ন হয় । গম উৎপাদনে ভারত পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে । চিন পৃথিবীতে প্রথম স্থান অধিকার করে ।
♦ গম উৎপাদনের অনুকুল পরিবেশ :
(১) জলবায়ু :
(i) আর্দ্রতা — পরিমাণ মতো আর্দ্রতার ওপর গম বীজের অঙ্কুরোদ্গমের সংখ্যা নির্ভর করে, এই জন্য গম চাষের প্রথম অবস্থায় আর্দ্র জলবায়ুর প্রয়োজন হয় । কারণ যত বেশি সংখ্যক বীজ থেকে অঙ্কুর বের হবে, হেক্টর প্রতি গম উৎপাদনও ততই বেশি হবে ।
(ii) গম চাষের দ্বিতীয় অবস্থায় অর্থাৎ যখন গাছ থেকে শিষ বের হয় তখন উষ্ণ ও শুষ্ক জলবায়ুর প্রয়োজন হয় । কারণ এই সময় বৃষ্টি হলে গমের শিষ পচে যেতে পারে বা শিষে পোকা লাগতে পারে ।
(iii) গম কেটে নেওয়ার কিছু দিন আগে অর্থাৎ গম চাষের তৃতীয় অবস্থায়, হাল্কা বৃষ্টিপাত হলে ভালো হয়, কারণ এই বৃষ্টিপাতের ফলে গমের শিষ পরিপুষ্ট হয় ।
(iv) গম উৎপাদনে চতুর্থ পর্যায়ে গম পাকার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে সূর্যের তাপের প্রয়োজন হয় ।
(v) উত্তাপ : গম বীজের অঙ্কুরোদগম এবং গম চাষের বৃদ্ধির সময় ১৫° থেকে ১৬° সেন্টিগ্রেট উত্তাপ এবং গম পাকার সময় ১৮° থেকে ২০° সেন্টিগ্রেট উত্তাপ প্রয়োজন । ভারতে এই উত্তাপ কেবলমাত্র শীতকালেই সম্ভব বলে শীতকালে গম চাষ করা হয় ।
(vi) বৃষ্টিপাত : গম চাষের জন্য মাঝারি অর্থাৎ ৫০ থেকে ১০০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয় । এর বেশি বৃষ্টিপাতে গম চারার ক্ষতি হয় । এই জন্য ভারতে শীতকালে সাধারণত জলসেচের সাহায্যে গম চাষ করা হয় ।
(vii) তুষারপাত : তুষারপাত গম চাষের পক্ষে ক্ষতিকর ।
(২) ভূপ্রকৃতি :- গাছের গোড়ায় জল জমে থাকলে তা গম চাষের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর হয় বলে অতিরিক্ত জল জমি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য ভালো জলনিকাশী ব্যবস্থাসম্পন্ন প্রায় সমতল বা অল্প ঢালু জমি গম চাষের পক্ষে আদর্শ । এতে ট্র্যাক্টর বা পাওয়ার টিলার জাতীয় আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি চালাতেও সুবিধা হয় । পার্বত্য অঞ্চলে ধানের মতো ধাপ কেটে গম চাষ খুব অল্পই দেখতে পাওয়া যায় ।
(৩) মৃত্তিকা :- উর্বর ভারী দোআঁশ মাটি বা হাল্কা কাদা মাটি গম চাষের আদর্শ । পলিমাটি ও কৃষ্ণ মৃত্তিকাতেও গম চাষ ভালো হয়, এছাড়া উপযুক্ত সেচ ব্যবস্থা থাকলে উর্বর বেলেমাটি বা খড়িমাটিতেও গম চাষ ভালো হয় ।
(৪) সার প্রয়োগ : গম চাষের জমির উর্বরতা দ্রুত কমে যায় বলে গম চাষের জমিতে বিশেষত নাইট্রোজেন, ফসফেট এবং পটাশ জাতীয় রাসায়নিক সার দেওয়া প্রয়োজন ।
(৫) সুলভ শ্রমিক : গম চাষে প্রচুর দক্ষ ও পরিশ্রমী শ্রমিকের প্রয়োজন হয় । যান্ত্রিক উপায়ে গম চাষে অনেক কম শ্রমিক লাগে ।
(৬) মূলধন বিনিয়োগ ও আধুনিক কৃষিযন্ত্রপাতির ব্যবহার :বর্তমানে একই জমিতে একাধিকবার ও বেশি পরিমাণ গম উৎপাদন করার জন্য বেশি মূলধন বিনিয়োগ করে আধুনিক কৃষিযন্ত্রপাতির ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় ।
♦ ভারতের গম উৎপাদক অঞ্চল :
(১) উত্তরপ্রদেশ : বর্তমানে ভারতে গম উৎপাদনে উত্তরপ্রদেশ প্রথম স্থান অধিকার করে । ভারতের মোট উৎপন্ন গমের প্রায় ৩৭ শতাংশ এই রাজ্যে উৎপাদিত হয় । উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর, মিরাট, মোরাদাবাদ, মজফফরনগর, দেরাদুন, শাহাজানপুর, এটাওয়া, বুদাউন, নৈনিতাল এবং গোরখপুর জেলায় অধিকাংশ গম উৎপন্ন হয় ।
(২) পাঞ্জাব : পাঞ্জাব রাজ্য গম উৎপাদনে ভারতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে । ভারতে মোট উৎপন্ন গমের প্রায় ২৪ শতাংশ গম এই রাজ্যে উৎপাদিত হয় । প্রতি হেক্টরে ২৭১৫ কেজি গম উত্পাদন করে হেক্টর প্রতি গম উৎপাদনে পাঞ্জাব ভারতে শীর্ষস্থান অধিকার করে । এই রাজ্যের লুধিয়ানা, পাতিয়ালা, ফিরোজপুর প্রভৃতি জেলায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গম উত্পন্ন হয় ।
(৩) হরিয়ানা : হরিয়ানা রাজ্য গম উৎপাদনে তৃতীয় স্থান অধিকার করে । হরিয়ানার হিসার, আম্বালা প্রভৃতি জেলায় প্রচুর পরিমাণে গম উত্পন্ন হয় ।
1. ভারতে কী কী পদ্ধতিতে জলসেচ করা হয়?
উঃ তিনটি পদ্ধতিতে। যথা কূপ ও নলকূপ, জলাশয় এবং সেচখাল।
2. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির শতকরা কত ভাগে জলাশয়ের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উঃ ১৫ ভাগ।
3. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির শতকরা কত শতাংশে কূল ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উঃ ৩৮ ভাগ।
4. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির কত ভাগে সেচখালের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উঃ ৪০ ভাগ।
5. সেচখাল কত ধরণের ও কী কী?
উঃ দুই ধরণের। যথা প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খাল।
6. প্লাবন খাল বলতে কী বোঝ?
উঃ যেসব নদী কেবল বর্ষার প্লাবনে জলপূর্ণ হয় এবং বছরের অন্য সময় ক্ষীণকায়া সেসব নদী থেকে খনন করা খালগুলিকে বলে প্লাবন খাল।
7. নিত্যবহ খাল কাকে বলে?
উঃ যেসব নদীতে সাআবছর জল থাকে সেসব নদী থেকে খনন করা খালগুলিকে বলে নিত্যবহ খাল।
8. দুটি নিত্যবহ খালের উদাহরণ দাও?
উঃ উত্তরপ্রদেশের উচ্চগঙ্গা খাল এবং পূর্ব সমুনা খাল।
9. ভারতের কোন অঞ্চলে নিত্যবহ খাল দ্বারা জলসেচ বেশি প্রচলিত?
উঃ গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলে ও পাঞ্জাব ও হরিয়ানায়।
10. বহুমুখী নদী-উপত্যকা পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্য কী?
উঃ বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলসেচ ব্যবস্থার প্রসার, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, জলপথে পরিবহন, মাছচাষ, পানীয় জল সরবরাহ।
11. একটি বহুমুখী নদী-উপত্যকা পরিকল্পনার নাম লেখ।
উঃ দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা।
12. দামোদর নদ অন্য কী নামে পরিচিত?
উঃ দুঃখের নদ।
13. কত সালে দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়?
উঃ ১৯৪৮ সালে।
14. ভারতে কোন রাজ্যের কৃষিজমিতে জলসেচের সর্বাধিক সুবিধা আছে?
উঃ পাঞ্জাব রাজ্যের।
15. ভারতের বৃহত্তম নদী-উপত্যকা পরিকল্পনাটির নাম কী?
উঃ ভাকরা-নাঙ্গাল পরিকল্পনা।
16. উত্তর ভারতের একটি জলসেচ প্রকল্পের নাম কর।
উঃ ভাকরা-নাঙ্গাল বা কংসাবতী প্রকল্প।
17. পশ্চিমবঙ্গের একটি নিত্যবহ খালের নাম কর।
উঃ মেদিনীপুর খাল।
18. ভারতের কোন রাজ্যে সেচ-সেবিত কৃষিজমির পরিমাণ সর্বনিম্ন?
উঃ ত্রিপুরা রাজ্যে।
19. বিঘাপ্রতি ফলন কোন রাজ্যের সর্বোচ্চ?
উঃ তামিলনাড়ুতে।
20. ভারতে কটি শস্য-ঋতু দেখা যায় ও কী কী?
উঃ দুটি। খারিফ শস্য এবং রবি শস্য।
21. দুটি খারিফ শস্যের নাম লেখ।
উঃ ধান, তুলো।
22. দুটি রবি শস্যের নাম লেখ।
উঃ গম, যব।
23. খারিফ শস্য কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উঃ দকশিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু আসার সময় অর্থাৎ বর্ষার শুরুতে।
24. রবি শস্য কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উঃ শীতের শুরুতে।
25. কয়েকটি বাগিচা ফসলের নাম লেখ।
উঃ চা, কফি, রবার।
26. ভারতের প্রধান খাদ্যশস্য কী?
উঃ ধান।
27. ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতের স্থান কী?
উঃ দ্বিতীয়।
28. কী ধরণের মাটি ধান চাষের পক্ষে উপযোগী?
উঃ উর্বর দোঁয়াশ মাটি এবং নদী উপত্যকার পলিমাটি।
29. ধান চাষের জন্য কত সেমি বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন?
উঃ ১০০ সেমি থেকে ২০০ সেমি।
30. কত ডিগ্রী তাপমাত্রা ধান চাষের পক্ষে উপযোগী?
উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
31. আমন ধান কোন সময়ে ভারতে চাষ হয়?
উঃ বর্ষাকালে লাগানো হয় ও শীতকালে কাটা হয়।
32. আমন ধানকে ‘আঘায়নি’ বলা হয় কেন?
উঃ অগ্রহায়ণ মাসে কাটা হয় বলে।
33. আউশ ধান ভারতে কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উঃ শ্রীষ্মকালে কালবৈশাখীর বৃষ্টিতে লাগানো হয় এবং ভাদ্র-আশ্বিন মাসে কাটা হয়।
34. বোরো ধান কোন সময়ে কাটা হয়?
উঃ গ্রীষ্মকালে।
35. ধান উৎপাদনে কোন রাজ্য ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ পশ্চিমবঙ্গ।
36. ভারতে হেক্টর প্রতি ধানের উৎপাদন কত?
উঃ হেক্টর প্রতি ১,৯২১ কিগ্রা।
37. ভারতে ধান গবেষণাগারটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ উড়িষ্যার কটকে।
38. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল বীজের নাম লেখ।
উঃ জয়া, রত্না, তাইচুং, বিজয়া, গোবিন্দ প্রভৃতি।
39. গম উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ উত্তরপ্রদেশ।
40. ভারতের গম গবেষণাগার কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ দিল্লীর কাছে পুষায়।
41. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল গম বীজের নাম লেখ।
উঃ সোনালিকা, সোনা-২২৭, কল্যাণ-সোনা, লারমা রাজো ইত্যাদি। ।
42. গম উৎপাদনের জন্য কী পরিমাণ উত্তাপ প্রয়োজন?
উঃ গড়ে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
43. গম উৎপাদনের জন্য কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উঃ ৫০ সেমি থেকে ১০০ সেমি।
44. কী ধরণের মাটিতে গম চাষ ভাল হয়?
উঃ উর্বর দোঁয়াশ মাটি।
45. মিলেটস কী?
উঃ জোয়ার, বাজরা, রাগী প্রভৃতি দানা শস্যকে মিলেটস বলে।
46. জোয়ার উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ মহারাষ্ট্র।
47. বাজরা উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ রাজস্থান।
48. রাগী উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ কর্নাটক।
49. ভারতের দুটি প্রধান তন্তুশস্যের নাম লেখ।
উঃ তুলো, পাট।
50. সোনালী আঁশ কাকে বলে?
উঃ পাটকে।
51. পাট চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতা প্রয়োজন?
উঃ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
52. পাট চাষের জন্য কী পরিমাণ বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন?
উঃ ১৫০ সেমি থেকে ২০০ সেমি।
53. পৃথিবীর মধ্যে কোথায় সবচেয়ে ভাল পাট চাষ হয়?
উঃ গঙ্গা ব্রহ্মপুত্রের ব-দ্বীপ অঞ্চলে।
54. ভারতের কোন রাজ্য পাট উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করে?
উঃ পশ্চিমবঙ্গ।
55. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল পাট বীজের নাম লেখ।
উঃ জে আর সি -২১২, জে আর সি -৩২১, জে আর ও – ৬২০।
56. চা উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতে স্থান কত?
উঃ প্রথম
57. চা চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতার প্রয়োজন?
উঃ ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
58. কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত চা চাষের উপযোগী?
উঃ ১৫০সেমি থেকে ২৫০ সেমি।
59. কোন রাজ্য ভারতে চা উৎপাদন করে?
উঃ অসম।
60. ভারত কোন কোন দেশে চা রপ্তানি করে?
উঃ রাশিয়া, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, ইরাক, ইরাণ প্রভৃতি দেশে।
61. ভারতের কোন বন্দরের মাধ্যমে সর্বাধিক চা রপ্তানি হয়?
উঃ কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে।
62. কফি চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা এবং ১৫০ সেমি থেকে ২০০ সেমি বৃষ্টিপাত।
63. কফি চাষের জন্য কোন ধরণের মাটি আদর্শ?
উঃ লাভা সৃষ্ট উর্বর মাটি বা লাল মাটি বা ল্যাটেরাইট মাটি।
64. ভারতে কত ধরণের কফি উৎপন্ন হয় ও কী কী?
উঃ দুই ধরণের। যথা আরবীয় কফি ও রোবাস্ট্রা কফি।
65. ভারতের কোন রাজ্য কফি উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করেছে?
উঃ কর্ণাটক।
66. ভারত কোন কোন দেশে কফি রপ্তানি করে?
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ফান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে।
67. কী ধরণের বৃষ্টিপাত এবং উষ্ণতা আখ চাষের উপযোগী?
উঃ গড়ে ১৫০ সেমি বৃষ্টিপাত এবং ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা প্রয়োজন।
68. কী ধরণের ভূমিতে আখ চাষ ভাল হয়?
উঃ উত্তম জলনিকাশী ব্যবস্থাযুক্ত সমতলভূমিতে।
69. ভারতে কেন্দ্রীয় আখ গবেষণাগার কোথায় অবস্থিত?
উঃ উত্তরপ্রদেশের লক্ষনৌতে।
70. কোন জাতীয় মাটিতে তুল চাষ ভাল হয়?
উঃ চুন মেশানো উর্বর দোঁয়াশ মাটি বা কৃষ্ণ মৃত্তিকায়।
71. কী পরিমাণ উত্তাপ তুলো চাষের পক্ষে আদর্শ?
উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
72. তুলো চাষের জন্য কত বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উঃ ৫০ সেমি থেকে ১০০ সেমি।
73. ভারত কোন কোন দেশে তুলো রপ্তানি করে?
উঃ জাপান, জার্মানি প্রভৃতি দেশে।
74. কয়েকটি উচ্চ-ফলনশীল তুলোবীজের নাম লেখ?
উঃ সুজাতা, এম সি ইউ -৫, এম সি ইউ -৪।
75. তেলবীজ কাকে বলে?
উঃ যেসব বীজ থেকে তেল নিষ্কাষণ করা হয় সেগুলিকে বলে তেলবীজ
76. তেলবীজ কত ধরণের ও কী কী?
উঃ দুই ধরণের। যথা –ভক্ষ্য তেলবীজ এবং অভক্ষ্য তেলবীজ।
77. কয়েকটি ভক্ষ্য তেলবীজের উদাহরণ দাও।
উঃ সরষে, তিল, চিনাবাদাম, নারিকেল।
78. দুটি অভক্ষ্য তেলবীজের উদাহরণ দাও।
উঃ তিসি এবং রেড়ি।
79. খারিফ শস্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ গ্রীষ্মকালে, বর্ষার শুরুতেই অর্থাৎ দক্ষি-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু আগমণের সময় যেসব ফসলের চাষ আরম্ভ হয় এবং হেমন্তকালে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলিকে বলে খারিফ শস্য। যেমন ধান, তুলো, পাট, আখ, ভুট্টা, জোয়ার ,বাজরা, রাগী প্রভৃতি।
80. রবি শস্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ শীতের শুরুতেই যেসব ফসলের চাষ শুরু হয় এবং গ্রীষ্মের প্রারম্ভেই সংগ্রহ করা হয় তাদের বলে রবি শস্য। গম, যব।
81. অর্থকরী ফসল বলতে কী বোঝ?
উঃ যেসব ফসল বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জুন করা হয় তাদের অর্থকরী ফসল বলে। যেমন পাট, তুলো, আখ, তামাক।
82. ভারতের দুটি প্রধান অর্থকরী ফসলের নাম লেখ।
উঃ তুলো, পাট।
83. দক্ষিণ ভারতের একটি অর্থকরী ফসলের নাম লেখ।
উঃ আখ।
84. ভারতের সর্বোচ্চ বাঁধ কোনটি?
উঃ হিমাচল প্রদেশের শতদ্রু নদীর ওপর নির্মিত ভাকরা বাঁধ। (২২৬ মিটার)।
85. বাণিজ্য ফসল কাকে বলে?
উঃ প্রধানত রপ্তানি বা বাণিজ্যের জন্য যেসব ফসল উৎপাদন করা হয় সেগুলিকে বাণিজ্য ফসল বলে।
ভারতের ভূপ্রকৃতি:- উত্তর ভারতের জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত পামীর গ্রন্থি থেকে বের হওয়া হিন্দুকুশ, সুলেমান, খিরথর কারাকোরাম, হিমালয় প্রভৃতি কয়েকটি উঁচু পর্বতশ্রেণী ভারতীয় উপমহাদেশকে এশিয়া মহাদেশের বাকি অংশ থেকে আলাদা করে রেখেছে ।
ভূপ্রকৃতিগত পার্থক্য অনুসারে ভারতকে ৭টি প্রধান ভৌগলিক অঞ্চলে ভাগ করা যায় । যথা:-
[১] উত্তরের বিশাল পার্বত্য অঞ্চল,
[২] উত্তর-পূর্ব পাহাড়ি অঞ্চল ও মেঘালয় মালভূমি,
[৩] উত্তর ভারতের বিশাল সমভূমি অঞ্চল,
[৪] ভারতের বিশাল মালভূমি অঞ্চল,
[৫] ভারতের মরুভূমি অঞ্চল,
[৬] ভারতের উপকূলের সমভূমি অঞ্চল,
[৭] দ্বীপ পুঞ্জ
[১] উত্তরের বিশাল পার্বত্য অঞ্চল :- প্রায় নিরবিচ্ছিন্ন পর্বতশ্রেণি নিয়ে গড়ে ওঠা এই অঞ্চলটি পশ্চিমে কাশ্মীর থেকে পূর্বে অসম পর্যন্ত বিস্তৃত । প্রায় ২,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৬০ থেকে ৪৫০ কিলোমিটার চওড়া বিশাল এই পার্বত্য অঞ্চলটি ভারতের উত্তর সীমান্তকে প্রাচীরের মতো রক্ষা করছে ।
দুটি প্রধান পর্বতশ্রেণি নিয়ে উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলটি গঠিত হয়েছে — (ক) কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি (খ) হিমালয় পর্বতশ্রেণি
(ক) কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি : এই পর্বতশ্রেণিটি পামীর মালভূমি থেকে পশ্চিমে সিন্ধু নদী পর্যন্ত প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য জুড়ে অবস্থান করছে । কারাকোরাম পর্বতশ্রেণিতে অনেকগুলো সুউচ্চ পর্বতশৃঙ্গ আছে । এই পর্বতশ্রেণির পশ্চিম অংশে অবস্থিত গডউইন অস্টিন বা K2হল ভারতের সর্বোচ্চ এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ এবং এর উচ্চতা হল ৮৬১১ মিটার । মাউন্ট এভারেস্ট হল পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ, এর উচ্চতা ৮৮৪৮ মিটার । কারাকোরাম পর্বতে অনেকগুলো হিমবাহ দেখা যায় । এদের মধ্যে সিয়াচেন, বালটেরা, বিয়াফো, হিসপার প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য । সিয়াচেন ভারতের দীর্ঘতম হিমবাহ এর দৈর্ঘ্য ৭৬ কিমি. । বালটেরা হিমবাহের দৈর্ঘ্য ৬০ কিমি । বিয়াফো হিমবাহের দৈর্ঘ্য ৬০ কিমি এবং হিসপার হিমবাহের দৈর্ঘ্য ৬২ কিমি ।
(খ) হিমালয় পর্বতশ্রেণি : উত্তর-পশ্চিমের পামীরগ্রন্থি থেকে নির্গত হয়ে এই পর্বতশ্রেণি অর্ধচন্দ্রাকারে পশ্চিমে জম্মু-কাশ্মীরের নাঙ্গা পর্বত থেকে পূর্বে অরুণাচল প্রদেশের নামচা-বারওয়া পর্বত পর্যন্ত প্রায় ২,৫০০ কিমি দীর্ঘ অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করছে ।
♦ হিমালয় পর্বতের ভূপ্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য : হিমালয় পর্বতমালাকে ভূপ্রকৃতিগতভাবে দু-ভাগে ভাগ করা যায়, যথা: (i) প্রস্থ বরাবর হিমালয় পর্বতের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য এবং (ii) দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয় পর্বতের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ।
(i) প্রস্থ বরাবর হিমালয় পর্বতের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য:- প্রস্থ বরাবর হিমালয় দক্ষিণ থেকে উত্তরে চারটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণির সমন্বয়ে গঠিত, যথা: (ক) শিবালিক হিমালয়, (খ) হিমাচল হিমালয়, (গ) হিমাদ্রি হিমালয় এবং (ঘ) টেথিস হিমালয় ।
(ক) শিবালিক হিমালয় :- হিমালয়ের সর্ব দক্ষিণ প্রান্তে কম উচ্চতাযুক্ত ছোটো-ছোটো পাহাড় সারি বেঁধে পশ্চিম থেকে পূর্বে বিস্তৃত রয়েছে, এদের শিবালিক পাহাড় বলে । এদের উচ্চতা ৬০০ থেকে ১,৫০০ মিটার, প্রস্থ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার এবং বিস্তার প্রায় ২,৪০০ কিলোমিটার । শিবালিকের দক্ষিণ ঢাল খাড়া এবং উত্তর ঢাল গড়ানো ।
(খ) হিমাচল হিমালয় :- শিবালিকের উত্তরে এবং হিমাদ্রির দক্ষিণে ৬০ থেকে ৮০ কি.মি. চওড়া এবং ২,০০০ থেকে ৫,০০০ মিটার উঁচু পর্বতশ্রেণিগুলিকে হিমাচল হিমালয় বলে । বহুযুগ ধরে ক্ষয়ের ফলে হিমাচল হিমালয় বহু অংশে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে । হিমাচলের প্রধান পর্বতশ্রেণিগুলি হল : পিরপঞ্জল, ধাওলাধর, মুসৌরী, মহাভারত প্রভৃতি । হিমাচল উত্তরে ক্রমশ ঢালু হয়ে হিমাদ্রিতে মিশেছে ।
(গ) হিমাদ্রি হিমালয় :- হিমাচলের উত্তরে হিমালয় পর্বতের সর্বোচ্চ পর্বতশ্রেণি হিমাদ্রি অবস্থিত । এর উচ্চতা গড়ে প্রায় ৬,০০০ মিটারের বেশি উঁচু । হিমালয় পর্বতের এই অংশটি বছরের সব সময় বরফে ঢাকা থাকে বলে একে হিমাদ্রি বা হিমগিরি বলা হয় । হিমাদ্রি হিমালয়ের বিখ্যাত শৃঙ্গগুলি হল চিরতুষারাবৃত মাউন্ট এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা, মাকালু প্রভৃতি । মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা উচ্চতা ৮৮৪৮ মিটার এবং এটি পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ । কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গের উচ্চতা ৮,৫৯৮ মিটার । মাকালু পর্বতশৃঙ্গের উচ্চতা ৮,৪৮১ মিটার । হিমাদ্রি হিমালয় ক্রমশ ঢালু হয়ে তিব্বতের মালভূমিতে মিশেছে ।
(ঘ) টেথিস হিমালয় :- হিমাদ্রির উত্তরে টেথিস বা তিব্বতীয় হিমালয় অবস্থিত । এটি একটি বিশাল মালভূমি অঞ্চল । ভারতের জম্মু-কাশ্মীর ও হিমাচল প্রদেশের অংশ বিশেষ দেখা যায় ।
(ii) দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয় পর্বতের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য:- দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয় পর্বতমালাকে ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু ও মৃত্তিকার পার্থক্য অনুসারে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়, যথা: (ক) পশ্চিম হিমালয়, (খ) মধ্য হিমালয় এবং (গ) পূর্ব হিমালয় ।
(ক) পশ্চিম হিমালয় : পশ্চিমে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের নাঙ্গা পর্বত থেকে পূর্বে নেপাল সীমান্তে অবস্থিত কালী নদী পর্যন্ত অংশে পশ্চিম হিমালয় পর্বতশ্রেণি বিস্তৃত । ভারতের জম্মু-কাশ্মীর ও হিমাচল প্রদেশ রাজ্যে এই পর্বতশ্রেণিটি বিস্তার লাভ করেছে । এটি ভারতের মধ্যে অবস্থিত হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ও এর উচ্চতা ৮,১২৬ মিটার । ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে পশ্চিম হিমালয়কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা: (১) কাশ্মীর হিমালয়, (২) হিমাচল হিমালয় এবং (৩) কুমায়ুন হিমালয় । প্রধানত তিনটি পর্বতশ্রেণি নিয়ে পশ্চিম হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলটি গঠিত হয়েছে— (i) লাদাখ পর্বতশ্রেণি (ii) জাস্কর পর্বতশ্রেণি এবং (iii) পিরপিঞ্জল পর্বতশ্রেণি । শ্রীনগরের দক্ষিণে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পিরপিঞ্জল পর্বতশ্রেণি বিস্তৃত । এর উচ্চতা ৩,৫০০ থেকে ৫,০০০ মিটার । পিরপিঞ্জল পর্বতশ্রেণি কাশ্মীর উপত্যকাকে ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে । কেবলমাত্র বানিহাল বা জহর পাস, পিরপিঞ্জল পাস, বুলন্দপীর প্রভৃতি গিরিপথগুলো দিয়ে কাশ্মীর উপত্যকায় প্রবেশ করা যায় । কাশ্মীর হিমালয়ের জোজিলা পাস গিরিপথটি দিয়ে কাশ্মীর উপত্যকা থেকে লাদাখের রাজধানী লে-তে যাওয়া যায় । এছাড়া কুমায়ুন হিমালয়ের মানাপাস, নিতিপাস প্রভৃতি গিরিপথগুলি দিয়ে ভারতের উত্তরাঞ্চল রাজ্য থেকে তিব্বত যাওয়া যায় ।
(খ) মধ্য হিমালয় : ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্য এবং নেপালে বিস্তৃত এই পার্বত্য অঞ্চলটিতে মাউন্ট এভারেস্ট, মাকালু, ধবলগিরি, অন্নপূর্ণা, গৌরীশঙ্কর প্রভৃতি পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গগুলি অবস্থিত । মধ্য হিমালয় হল পূর্ব হিমালয় ও পশ্চিম হিমালয়ের সীমানা । এটি নেপালের অন্তর্গত ।
(গ) পূর্ব হিমালয় : পশ্চিমে সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণি থেকে পূর্বে নামচাবারওয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হিমালয়ের পূর্ব দিকের এই অংশটিকে মোটামুটি ভাবে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা:- (১) সিকিম ও দার্জিলিং হিমালয়, (২) ভুটান হিমালয় এবং (৩) অরুণাচল হিমালয় । এই পার্বত্য অঞ্চলটি ভুটান এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যে বিস্তার লাভ করেছে । পূর্ব হিমালয়ের সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণি পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলাকে নেপাল থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে । এছাড়া সিকিম ও নেপাল সীমান্তে পূর্ব হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ বিরাজমান । এটি হিমালয়ের দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ । এর উচ্চতা ৮,৫৯৮ মিটার । কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গটি নেপালের ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে অবস্থিত । সিকিম ও দার্জিলিং হিমালয় প্রায় খাড়াভাবে তরাই -এর সমভূমির ওপর দাঁড়িয়ে আছে । অনুচ্চ শিবালিক পর্বতশ্রেণি এখানে প্রায় নেই বললেই চলে । পূর্ব হিমালয়ের নাথুলা পাস, জেলেপলা পাস প্রভৃতি গিরিপথ্গুলি দিয়ে তিব্বতের চুম্বি উপত্যকায় যাওয়া যায় ।
• ভারতের জনজীবনে হিমালয়ের প্রভাব :-
(i) হিমালয় পর্বত ভারতের উত্তর সীমান্তে দুর্ভেদ্য প্রাচীরের মতো দন্ডায়মান থেকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে ভারতকে রক্ষা করছে ।
(ii) হিমালয় পর্বত না থাকলে শীতকালে ভারতেও সাইবেরিয়ার মতো তীব্র শীতের প্রাবল্য দেখা যেত ।
(iii) হিমালয়ের সুউচ্চ প্রাচীরে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু ভারতে বৃষ্টিপাত ঘটায় ।
(iv) হিমালয়ের বিভিন্ন হিমবাহগুলো হল ভারতের গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি প্রধান নদীগুলোর উত্স । এছাড়া অন্যান্য নদীগুলোও হিমালয়ের বরফগলা জলে পুষ্ট থাকে ।
(v) ভারতের গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি নদীগুলি হিমালয় পর্বত থেকে প্রচুর পরিমাণে পলি বয়ে নিয়ে এসে উত্তর ও পূর্ব ভারতের বিশাল সমভূমি অঞ্চলের সৃষ্টি করেছে ।
২] উত্তর-পূর্ব পাহাড়ি অঞ্চল ও মেঘালয় মালভূমি :
(ক) উত্তর পূর্ব পাহাড়ি অঞ্চল বা পূর্বাঞ্চল :- উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অংশে মেঘালয় বাদে ভারত ও মায়ানমার সীমান্ত বরাবর উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত অনেকগুলি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণি রয়েছে, এদের একসঙ্গে উত্তর-পূর্ব পাহাড়ি অঞ্চল বা পূর্বাচল বলে । এই পর্বতশ্রেণিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মিশমি পাহাড়, পাটকই পাহাড়, বুম, নাগা পাহাড়, কোহিমা পাহাড়, বরাইল পর্বতশ্রেণি, উত্তর কাছাড় পাহাড়, মণিপুর পাহাড়, মিজো পাহাড় ও ত্রিপুরা পাহাড় । এখানকার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত লকটক হ্রদ নিসর্গ সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত ।
(খ) মেঘালয় মালভূমি :- মেঘালয় প্রদেশে অবস্থিত গারো, খাসি, জয়ন্তিয়া ও মিকিরের পাহাড়ি অঞ্চল নিয়ে গঠিত মেঘালয় মালভূমি প্রকৃতপক্ষে দাক্ষিণাত্যের মালভূমিরই একটি বিচ্ছিন্ন অংশ । এই মালভূমির পশ্চিমে অবস্থিত গারো পাহাড়র । গারো পাহাড়রে সর্ব্বোচ্চ শৃঙ্গ নকরেক এবং এর উচ্চতা ১৪১২ মিটার । উত্তরে বিস্তৃত রয়েছে শিলং পাহাড়, উত্তর-পূর্ব দিকে বিস্তৃত রয়েছে মিকির পাহাড়ি অঞ্চল, মধ্যভাগে অবস্থিত রয়েছে খাসি ও জয়ন্তিয়া পাহাড় । এদের উচ্চতা ১৫০০ থেকে ২০০০ মিটার । শিলং মালভূমির দক্ষিণে চেরা মালভূমি অবস্থিত । এটি চুনাপাথরে গঠিত । এই মালভূমিতে চুনাপাথরের বহু গুহা দেখা যায় ।
৩] উত্তর ভারতের বিশাল সমভূমি অঞ্চল :-
অবস্থান :- উত্তরের হিমালয় পর্বতমালা ও দক্ষিণের মালভূমির মধ্যবর্তী অঞ্চলে সিন্ধু, গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদী বিধৌত এই বিশাল সমভূমি অঞ্চলটি হল ভারতের সবচেয়ে উর্বর ও জনবহুল অঞ্চল ।
শ্রেণি বিভাগ :- ভূপ্রকৃতিগতভাবে উত্তর ভারতের বিশাল সমভূমি অঞ্চলটিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় :- যেমন (i) পশ্চিমের সমভূমি (ii) মধ্যভাগের সমভূমি (iii) পূর্ব দিকের সমভূমি ।
(i) পশ্চিমের সমভূমি :- সিন্ধুনদের উপনদী বিপাশা, ইরাবতী, চন্দ্রভাগা ও শতদ্রুর পলি সঞ্চয়ের ফলে গঠিত পশ্চিমের সমভূমি অঞ্চলটি পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের প্রায় ৯৫,৭১৪ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে আছে । পশ্চিমের সমভূমি অঞ্চলের দক্ষিণ অংশ (রাজস্থান সমভূমি) খরা প্রবণ মরুভূমি হলেও উত্তর অংশ পলিগঠিত উর্বর সমভূমি ।
(ii) মধ্যভাগের সমভূমি :- গঙ্গা, যমুনা এবং তাদের বিভিন্ন উপনদীর সঞ্চয় কাজের ফলে মধ্যের সমভূমি অঞ্চলটি গড়ে উঠেছে । এই অঞ্চলের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের পশ্চিম অংশের সমভূমিকে উচ্চগাঙ্গেয় সমভূমি বলা হয় । উত্তরপ্রদেশের পূর্বাংশ এবং বিহারের উত্তরাংশে অবস্থিত সমভূমিটি মধ্য গাঙ্গেয় সমভূমি নামে পরিচিত ।
(iii) পূর্ব দিকের সমভূমি :- পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চল এবং অসম রাজ্যের ব্রহ্মপুত্র সমভূমি নিয়ে পূর্বের সমভূমি অঞ্চল গঠিত হয়েছে ।
গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চল : গঙ্গা-পদ্মা ও ভাগীরথী-হুগলী নদীর মধ্যবর্তী ভূভাগ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপের অংশ বিশেষ ।
ব্রহ্মপুত্র সমভূমি :- গাঙ্গেয় সমভূমির পূর্বদিকে অসম রাজ্যে ব্রহ্মপুত্র নদ এবং তার বিভিন্ন উপনদী যে সমভূমি গঠন করেছে তাকে ব্রহ্মপুত্র সমভূমি বা ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা বলা হয় ।
৪] ভারতের বিশাল মালভূমি অঞ্চল :-
অবস্থান ও উৎপত্তি :- উত্তরের সমভূমি অঞ্চলের দক্ষিণে তিন দিকে সমুদ্রে ঘেরা এক বিশাল মালভূমি অঞ্চল অবস্থান করেছে । পৃথিবীর প্রাচীনতম ভূখণ্ড গান্ডোয়ানাল্যান্ডের অংশ বিশেষ, এই মালভূমিটি অতিপ্রাচীন আগ্নেয় ( গ্রানাইট ) এবং রূপান্তরিত ( নাইস ) শিলা দিয়ে গঠিত ।
শ্রেণিবিভাগ :- নর্মদা নদী এই মালভূমি অঞ্চলকে মোটামুটি দুই অংশে ভাগ করেছে যথা - (ক) (মধ্য ও পূর্ব ভারতের মালভূমি ও উচ্চভুমি এবং (খ) দাক্ষিণাত্যের মালভূমি ।
(ক) মধ্য ও পূর্ব ভারতের মালভূমি ও উচ্চভুমি :- দক্ষিণে বিন্ধ্য পর্বত, পশ্চিমে আরাবল্লী পর্বত এবং পূর্বে ছোটোনাগপুর মালভূমি দিয়ে ঘেরা এই মালভূমি ও উচ্চভূমি অঞ্চলটি উত্তর দিকে ক্রমশ ঢ়ালু হয়ে উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলের সঙ্গে মিশে গিয়েছে ।
(i) মধ্য ভারতের উচ্চভূমি ও মালভূমি:- এই অঞ্চল উত্তর থেকে দক্ষিণে কয়েকটি প্রধান ভুপ্রাকৃতিক অংশে বিভক্ত, যেমন:- (১) আরবল্লি পর্বত শ্রেণি, (২) বুন্দেলখন্ড মালভূমি, (৩) বিন্ধ্য পর্বত, (৪) মালব মানভুমি, (৫) রেওয়া মালভূমি,
(১) আরাবল্লী পর্বত শ্রেণি:- আরাবল্লী ভারতের প্রাচীনতম পর্বত এবং পৃথিবীর প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বত সমুহের অন্যতম । এই পর্বতটি দিল্লি থাকে আমেদাবাদ পর্যন্ত ৮০০ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত । এর গড় উচ্চতা কম বেশি ৭৫০ মিটার । আবু পাহাড়ের কাছাকাছি অবস্থিত গুরু শিখর আরবল্লীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ । এর উচ্চতা ১৭৭২ মিটার ।
(২) বুন্দেলখন্ড মালভূমি:- এই মালভুমি অঞ্চলটি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে উচ্চভূমিতে পরিণত হয়েছে ।
(৩) বিন্ধ্য পর্বত:- বিন্ধ্য পর্বত মধ্যভারতের উচ্চভূমির প্রায় দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এবং পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রসারিত । বিন্ধ্য পর্বতের ওপরটা সমতল এবং ধার গুলো ক্ষয় পেয়ে সিঁড়ির মতো হয়ে গেছে ।
(৪) মালব মানভুমি:- বিন্ধ্য পর্বতের উত্তরে লাভা দিয়ে গঠিত এই মালভূমি অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি উঁচুনীচু ও তরঙ্গায়িত ।
(৫) রেওয়া মালভূমি:- এই মালভূমিটি বিন্ধ্য পর্বতের পূর্ব দিকে অবস্থিত ।
(ii) পূর্বভারতের উচ্চভূমি ও মালভূমি:- মধ্যভারতের মালভূমি অঞ্চলটি পূর্বদিকে প্রসারিত হয়ে পূর্বভারতের উচ্চভুমি ও মালভূমি অঞ্চল গঠন করেছে । (১) ছোটনাগপুরের মালভূমি, (২) বাঘেলখন্ড মালভূমি, (৩) গড়জাত পাহাড় ও দণ্ডকারণ্য মালভূমি ।
(১) ছোটনাগপুরের মালভূমি:- (ক) রাঁচি মালভূমি, (খ) হাজারীবাগ মালভূমি এবং (গ) কোডারমা মালভূমি নিয়ে গঠিত ছোটনাগপুরের মালভূমির । এদের গড় উচ্চতা ৭০০ মিটার ।
(২) বাঘেলখন্ড মালভূমি:- বাঘেলখন্ড মালভূমিটি শোন নদীর দক্ষিণে অবস্থিত এবং এটি গ্রানাইট ও প্রাচীন পাললিক শিলায় গঠিত ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চল ।
(৩) গড়জাত পাহাড় ও দণ্ডকারণ্য মালভূমি:- এই অঞ্চলের বোনাই, কেওনঝাড় ও সিমলিপাল পাহাড়গুলি উল্লেখযোগ্য ।
(খ) দাক্ষিণাত্যের মালভূমি:- নর্মদা নদীর দক্ষিণে অবস্থিত ত্রিভুজ আকৃতির দাক্ষিণাত্য মালভূমিটি পূর্বে পূর্বঘাট পর্বত, পশ্চিমে পশ্চিমঘাট পর্বত এবং উত্তরে সাতপুরা পর্বত দিয়ে ঘেরা । এছাড়া এই মালভূমি অঞ্চলটি পশ্চিম দিকে উঁচু এবং পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ক্রমশ ঢ়ালু হয়ে গেছে । পশ্চিম ঘাট ও পূর্বঘাট পর্বত দুটি ভারতের দক্ষিণে অবস্থিত নীলগিরি পর্বতে পরস্পর মিলিত হয়েছে । মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু ভারতের এই চারটি রাজ্য দাক্ষিণাত্য মালভুমি অঞ্চলের অন্তর্গত ।
(১) পশ্চিমঘাট পর্বত:- পশ্চিমঘাট পর্বত মহারাষ্ট্রে সহ্যাদ্রি নামে পরিচিত । এই পর্বতটি ভারতের পশ্চিমে আরব সাগরের উপকূল বরাবর খাড়াভাবে উঠে গিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় ১৬০০ কিমি দীর্ঘ অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করছে । তামিলনাড়ুতে এই পর্বতের পূর্বদিকে প্রসারিত অংশ নীলগিরি পর্বত নামে পরিচিত । নীলগিরি পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম ডোডাবেট্টা । এর উচ্চতা ২৬৩৭ মিটার । দক্ষিণ ভারতের বিখ্যাত শৈলশহর উটি নীলগিরি পর্বতে অবস্থিত । পশ্চিমঘাট পর্বতটি আরও দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে কেরালা রাজ্যে আনাইমালাই এবং কার্ডামম পর্বত নামে পরিচিত লাভ করেছে । আনাইমালাই পর্বতের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ হল আনাইমুদি । এর উচ্চতা ২৬৯৫ মিটার । এটি দাক্ষিণাত্য মালভূমির সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ ।
(২) পূর্বঘাট পর্বত:- সেভরয়, জাভাদি, নান্নামালাই প্রভৃতি কয়েকটি বিচ্ছিন্ন পর্বতের সমষ্টি হল পূর্বঘাট পর্বতমালা । এটি দাক্ষিণাত্য মালভূমির পূর্ব সীমানা রচনা করেছে । পূর্ব দিকে এই পর্বতমালা ক্রমশ ঢ়ালু হয়ে পূর্ব উপকূলের সমভূমিতে এসে মিশে গেছে । এর উচ্চতা তুলনামুলক ভাবে কম । গোদাবরী, কৃষ্ণা, পেন্নার প্রভৃতি নদী উপত্যকা এই পর্বতমালাকে মাঝে মাঝেই বিছিন্ন করেছে । মহেন্দ্রগিরি হল পূর্বঘাট পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ । এর উচ্চতা ১৫০০ মিটার ।
♣ ডেকান ট্রাপ [Deccan Trap]:- দাক্ষিণাত্যের লাভা মালভূমি অঞ্চলটি ডেকান ট্রাপ নামে পরিচিত । এই অঞ্চলটি পৃথিবীর সুপ্রাচীন ভূখণ্ড গান্ডোয়ানাল্যান্ডের অন্তর্গত একটি মালভূমি । আজ থেকে প্রায় ৬-৭ কোটি বছর আগে ভূত্বকের প্রশস্ত ফাটল পথে ভু-গর্ভস্থ লাভা নিঃসৃত হয়ে এই অঞ্চলটিকে চাদরের মতো ঢেকে দেয়, এই ভাবে ডেকান ট্রাপ অঞ্চলটি সৃষ্টি হয়েছে । লাভা নিঃসরণের ঘটনা থেমে থেমে ঘটায় এখানকার লাভা স্তরে স্তরে সজ্জিত এবং স্থান বিশেসে ১৫০ মিটার থেকে প্রায় ২০০০ মিটার গভীর । পরবর্তীকালের বৃষ্টি, বায়ু প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়িত লাভা স্তরের পার্শ্বদেশ সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে ওপর থেকে নিচে নেমে গেছে, এইজন্য এই লাভায় ঢাকা মালভূমি অঞ্চলটিকে ডেকান ট্রাপ (Deccan Trap) বলে [deccan ] ( দাক্ষিণাত্য ) trap ( সিঁড়ি বা ধাপ ) । দাক্ষিণাত্যের লাভাজাত মৃত্তিকা কালোরঙের, তাই এই অঞ্চলের অন্য নাম দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চল ।
কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের প্রধানত ৪টি ভুপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য দেখা যায়, যথা:-
(১) পুরো কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলটি পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ধাপে ধাপে নেমে গেছে,
(২) এই ধাপগুলোর মাথা সমতল কিন্তু পার্শ্বদেশ একেবারে খাঁড়া,
(৩) এই অঞ্চলের পাহাড়গুলোর মাথা সমতল বা চ্যাপ্টা ;
(৪) সামগ্রিক অঞ্চলটিকে দেখতে ট্রাপ বা সিঁড়ির মতো , তাই একে ডেকান ট্রাপ বলা হয় ।
৫] ভারতের মরুভূমি অঞ্চল :-
অবস্থান :- আরবল্লী পর্বতের পশ্চিমদিকে অবস্থিত রাজস্থান রাজ্যের যোধপুর, বিকানীর জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে আছে শুধু বালি আর বালি । এই অঞ্চলটি বিখ্যাত থর মরুভূমিরঅংশ রূপে ভারতীয় সীমানা ছাড়িয়ে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের খয়েরপুর ও বাহাওয়ালপুর অঞ্চলে প্রবেশ করেছে । মরুভূমির ভয়াল রূপটি এখানে পরিস্ফুট হয়েছে, এই কারণেই ভারতীয় মরুভূমির এই অংশটি ‘মরুস্থলী’ নামে পরিচিত হয়েছে ।
সিমা:- ভারতের মরুভূমি অঞ্চলের উত্তরে পাঞ্জাব সমভূমি, দক্ষিণে গুজরাট সমভূমি, পূর্বে আরবল্লী পর্বতশ্রেণি এবং পশ্চিমে পাকিস্তানের মরু অঞ্চল অবস্থিত ।
ভুপ্রকৃতি:- এই অঞ্চলটি প্রধানত সমতল এবং বালি আর পাথুরে মাটি দিয়ে গঠিত । আরবল্লী পর্বত থেকে যতই পশ্চিমে যাওয়া যায় ভুমির উচ্চতা ততই কমতে থাকে । জয়সলমীরের নিকটবর্তী সমভূমিতে কয়েকটি ছোট ছোট পাহাড় দেখা যায় । সমগ্র মরু অঞ্চলটি একটি শুষ্ক ও খরা প্রবণ অঞ্চল । মরুভূমির মাঝে মধ্যে ছোট নদী বা প্রস্রবণ দেখা গেলেও গ্রীষ্মকালে এরা শুকিয়ে গিয়ে বালির মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যায় । লুনী এই অঞ্চলের একমাত্র বড় নদী । মরুভূমি অঞ্চলে নীচু অংশে বেশ কয়েকটি লবণাক্ত জলের হ্রদ দেখা যায় । এদের মধ্যে আরবল্লী পর্বতের একটি খাঁজের মধ্যে অবস্থিত ভারতের মরুভূমি অঞ্চলের সবচেয়ে বড় লবণাক্ত হ্রদ হল সম্বর হ্রদ ।
৬] ভারতের উপকূলের সমভূমি অঞ্চল :-
ত্রিভুজাকৃতি দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চলের পূর্ব প্রান্তে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম প্রান্তে আরব সাগরের উপকূল বরাবর সংকীর্ণ সমভূমিকে ভারতীয় উপকূলবর্তী সমভূমি অঞ্চল বলা হয় । ভারতীয় উপকূলবর্তী সমভূমি অঞ্চলটি দুই ভাগে বিভক্ত :- (ক) পশ্চিম উপকূলের সমভূমি এবং (খ) পূর্ব উপকূলের সমভূমি ।
(ক) পশ্চিম উপকূলের সমভূমি :- পশ্চিমে আরব সাগরের উপকূলবর্তী সংকীর্ণ ও বন্ধুর সমভূমিটি উত্তর দিকে গুজরাটের সমভূমি অঞ্চলে খানিকটা চওড়া হয়ে গেছে । কচ্ছ উপদ্বীপ এবং কচ্ছের রণ অঞ্চলকে নিয়ে গঠিত গুজরাট উপকূলের সমভূমি একটি প্রশস্ত সমতলভূমি । কোনোও এক সময় কচ্ছের রণ অঞ্চলটি আরব সাগরের একটি প্রসারিত অগভীর অংশ ছিল । কিন্তু বর্তমানে গ্রীষ্মকালে এই সমভূমি অঞ্চলটি সম্পূর্ণ শুষ্ক, উদ্ভিদহীন ও সাদা লবণে ঢাকা বালুকাময় প্রান্তরে রূপান্তরিত হয় । কচ্ছ উপসাগর ও খাম্বাত উপসাগর নামে আরব সাগরের দুটি প্রসারিত অংশ গুজরাট সমভূমির মধ্যে কিছুদূর পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে । কচ্ছ অঞ্চলের কিছুটা দক্ষিণে অবস্থিত কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ অঞ্চলটি সৌরাষ্ট্র নামেও পরিচিত । গিরণর সৌরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পাহাড় । এর উচ্চতা ১১১৭ মিটার । ভারতের পশ্চিম উপকূলের সমভূমি মহারাষ্ট্রে কোঙ্কন উপকূল, কর্ণাটকের কানাড়া উপকূল এবং কেরালায় মালাবার উপকূল নামে পরিচিত । উত্তরে বিভিন্ন নদীর মোহনা এবং দক্ষিণে কেরালা উপকূলে ছোট বড় হ্রদ এবং উপহ্রদ (লেগুন) বা ‘কয়ালের’ উপস্থিতি হল পশ্চিম উপকূলের অন্যতম ভুপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য । প্রায় ৬৩ কিমি লম্বা ‘ভেমবানাদ কয়াল’ এই অঞ্চলের বৃহত্তম উপহ্রদ ।
♣ পশ্চিম উপকূলের সমভূমি :-
(১) এটি ভারতের পশ্চিম দিকে আরবসাগরের উপকূল বরাবর অবস্থিত ।
(২) পশ্চিম উপকূলের ভুমিভাগ সংকীর্ণ, উঁচু, নীচু ও বন্ধুর ।
(৩) এখানে বিভিন্ন নদীর মোহনা ও উপহ্রদ দেখা যায় ।
(৪) এই সমভূমি মহারাষ্ট্রে কোঙ্কন উপকূল, কর্ণাটকে কানাড়া উপকূল এবং কেরালায় মালাবার উপকূল নামে পরিচিত ।
(খ) পূর্ব উপকূলের সমভূমি:- ভারতের পূর্ব প্রান্তে বঙ্গোপসাগর উপকূলের সমভূমি পশ্চিম উপকূলের সমভূমির তুলনায় বেশি চওড়া ও সমতল । সমগ্র পূর্ব উপকূলের সমভূমিটি গোদাবরী বদ্বীপের উত্তরে উত্তর সরকার উপকূল এবং গোদাবরী বদ্বীপের দক্ষিণে করমণ্ডল উপকূল নামে পরিচিত । পূর্ব উপকূলের সমভূমিতে অনেকগুলো হ্রদ আছে এর মধ্যে উড়িষ্যা উপকূলের চিল্কা ও কোলেরু এবং অন্ধ্র উপকূলের পুলিকট উল্লেখযোগ্য হ্রদ ।
♣ পূর্ব উপকূলের সমভূমি:-
(১) এটি ভারতের পূর্ব দিকে বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর অবস্থিত ।
(২) পূর্ব উপকূলের ভুমিভাগ প্রশস্ত ও সমতল ।
(৩) এখানে বিভিন্ন নদীর বদ্বীপ দেখা যায়, যা খুব উর্বর ।
(৪) এই সমভূমি গোদাবরী অববাহিকার উত্তর দিকে উত্তর সরকার উপকূল এবং দক্ষিণ দিকে করমণ্ডল উপকূল নামে পরিচিত ।
[৭] দ্বীপপুঞ্জ :- (ক) পূর্ব উপকূলের বঙ্গোপসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ ও (খ) পশ্চিম উপকূলের আরব সাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ :-
(ক) পূর্ব উপকূলের বঙ্গোপসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ :- ভারতের পূর্ব দিকে কলকাতা থেকে প্রায় ১২৫৫ কিমি ও চেন্নাই থেকে ১১৯১ কিমি দূরত্বে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অবস্থিত প্রায় ৩২৪ টি দ্বীপের মধ্যে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জইপ্রধান । এই অঞ্চলের অন্য সব দ্বীপগুলো আয়তনে খুবই ছোট হওয়ায় ও পানীয় জলের অভাবের জন্য জনবসতিহীন । গোটা আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ দুটি প্রধান অংশে বিভক্ত :- (i) বড়ো আন্দামান ও (ii) ছোট আন্দামান । নিকোরব দ্বীপপুঞ্জের দ্বীপগুলোর মধ্যে দক্ষিণতম প্রান্তে অবস্থিত বৃহৎ নিকবর দ্বীপটি সবচেয়ে বড়ো । এই দ্বীপের দক্ষিণের শেষ প্রান্তটির নাম ইন্দিরা পয়েন্ট, এটি ভারতের দক্ষিণতম স্থল বিন্দু । আন্দামান ও নিকবর দ্বীপপুঞ্জ দুটি ১০ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশে অবস্থিত ১০ ডিগ্রি চ্যানেল নামে গভীর সাগর দ্বারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে । আন্দামান ও নিকবর দ্বীপপুঞ্জ দুটির মোট আয়তন ৮২৯৩ বর্গ কিমি । ভুপ্রাকৃতিক দিক থেকে এরা গভীর সমুদ্রে ডুবে থাকা মায়ানমারের আরাকান ইয়োমা পর্বতের একটি অংশ, যা সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে গিয়ে পূর্ব দিকে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও জাভা দ্বীপ পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে । আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের নারকনদম ও ব্যারেন দ্বীপে দুটি সবিরাম আগ্নেয়গিরি আছে ।
(খ) পশ্চিম উপকূলের আরব সাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ :- ভারতের পশ্চিম দিকে কেরালার মালাবার উপকুল থেকে প্রায় ৩২৪ কিলোমিটার দূরত্বে ৩৬ টি ছোট ছোট প্রবাল দ্বীপ নিয়ে লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জ অবস্থিত । লাক্ষা, আমিনদিভি ও মিনিকয় দ্বীপপুঞ্জের সরকারি নাম রাখা হয়েছে লাক্ষাদ্বীপ । লাক্ষা, আমিনদিভি ও মিনিকয় দ্বীপপুঞ্জের মোট আয়তন ৩২ বর্গকিলোমিটার মাত্র । এই দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে বড়ো দ্বীপ হল মিনিকয় দ্বীপ । এর আয়তন ৪.৫০ বর্গ কিমি । ভুবিজ্ঞানীদের মতে, আরবল্লী পর্বতের সম্প্রসারিত শিলাস্তরের ওপর যুগ যুগ ধরে আরব সাগরের প্রবাল কীটদের মৃত দেহাবশেষ স্তরে স্তরে সজ্জিত হয়ে এই দ্বীপপুঞ্জের সৃষ্টি হয়েছে ।
,ভারতের ভূ-প্রকৃতি
1. হিমালয় কী জাতীয় পর্বত?
উঃ ভঙ্গিল পর্বত।
2. হিমালয়ের দৈর্ঘ্য কত?
উঃ ২৫০০ কিমি।
3. হিমালয় যেখানে অবস্থিত সেখানে আগে কী ছিল?
উঃ টেথিস সাগর।
4. টেথিস সাগরের অবস্থান কোথায় ছিল?
উঃ হিমালয় পর্বতশ্রেণি যে অঞ্চলে অবস্থিত।
5. টেথিস সাগরের উত্তরে ও দক্ষিণে আগে কী ছিল?
উঃ টেথিস সাগরের উত্তরে আঙ্গারাল্যাণ্ড ও দক্ষিণে গণ্ডোয়ানাল্যাণ্ড।
6. হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ মাউন্ট এভারেস্ট (৮৮৪৮ মিটার)।
7. কারাকোরাম পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ গডউইন অস্টিন (৮৬১১ মিটার)।
8. পৃথিবীর ছাদ কাকে বলে?
উঃ পামীর মালভূমি।
9. হিমালয় পর্বতমালার বিস্তার কত?
উঃ ১৫০ কিমি থেকে ৫০০ কিমি।
10. ভারতের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের নাম কী?
উঃ গডউইন অস্টিন।
11. হিমালয়ের উৎপত্তি কবে হয়েছে?
উঃ ভূ-তাত্ত্বিক সময়ের হিসাবে টারসিয়ারি যুগে অর্থাৎ প্রায় ৭ কোটি বছর আগে হিমালয় ওপরে ওঠা শুরু করে। তারপর বহু যুগ ধরে সেই উত্থানপর্ব চলে।
12. ভারতের প্রাচীনতম পর্বত কোনটি?
উঃ আরাবল্লী।
13. ভারতের মধ্যে অবস্থিত হিমালয় পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি?
উঃ গডউইন অস্টিন।
14. দুন কাকে বলে?
উঃ কুমায়ুন হিমবাহ অঞ্চলে মধ্য হিমলয় পর্বতশ্রেণি এবং শিবালিক পর্বতশ্রেণির মধ্যবর্তী অংশে যে দীর্ঘ উপত্যকা আছে তাকে দুন বলে।
15. শিবালিক পর্বতশ্রেণির গড় উচ্চতা কত?
উঃ ৬০০ মিটার থেকে ১৫০০ মিটার।
16. পশ্চিম হিমালয়ের একটি উষ্ণ প্রস্রবনের নাম কর।
উঃ কাশ্মীরের ভেরনাগ।
17. পশ্চিম হিমালয়ের একটি গিরিপথের নাম কর।
উঃ জোজিলা।
18. পূর্ব হিমালয়ের একটি গিরিপথের নাম কর।
উঃ নাথুলা।
19. ভারতের সর্বোচ্চ মালভুমি কোনটি?
উঃ লাদাখ মালভূমি।
20. ভারতের একটি ভঙ্গিল পর্বতের নাম কর।
উঃ হিমালয়।
21. বসুধার ধবল শীর্ষ কাকে বলে?
উঃ কারাকোরাম পর্বতশ্রেণিকে।
22. ভারতের দীর্ঘতম হিমবাহ কোনটি?
উঃ সিয়াচেন।
23. ভারতের একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরির নাম কী?
উঃ ব্যারেন।
24. ভারতের উচ্চতম পর্বতের নাম কী?
উঃ হিমালয়।
25. ভারতের সর্বোচ্চ জলপ্রপাতের নাম কী?
উঃ গেরসোপ্পা।
26. দক্ষিণ ভারতের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গটির নাম কী?
উঃ আনাইমোদি (২৬৯৫ মিটার)।
27. পূর্বাচলের অন্তর্গত কয়েকটি পর্বতশ্রেণির নাম কর।
উঃ পাটকাই, নাগা, লুসাই।
28. কাশ্মীর কোন হিমালয়ে অবস্থিত?
উঃ কাশ্মীর পশ্চিম হিমালয়ে অবস্থিত।
29. সিঙ্গলীলা পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ সান্দাকফু (৩৬৩০ মিটার)।
30. সিপকি-লা, লিপুলেক ও নাথুলা কী?
উঃ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের তিনটি গিরিপথ।
31. পশ্চিমবঙ্গ-নেপাল সীমান্তে কোন পর্বত অবস্থিত?
উঃ সিঙ্গলীলা।
32. ভূস্বর্গ বা প্রাচ্যের নন্দনকানন কাকে বলে?
উঃ কাশ্মীর উপত্যকাকে।
33. ভারতের একটি স্তূপ পর্বতের নাম লেখ।
উঃ সাতপুরা পর্বত।
34. ভারতের একটি ক্ষয়জাত পর্বতের নাম লেখ।
উঃ আরাবল্লী।
35. সিয়াচেন হিমবাহ কোন পর্বতে অবস্থিত?
উঃ কারাকোরাম পর্বতে।
36. ভারতের একমাত্র উষ্ণ মরুভূমিটি কোন রাজ্যে অবস্থিত?
উঃ রাজস্থান রাজ্যে।
37. ভারতের উষ্ণ মরুভূমি কী নামে পরিচিত?
উঃ মরুস্থলি।
38. রাজস্থান সমভূমি বা মরুস্থলির উল্লেখযোগ্য নদী কোনটি?
উঃ লুনি।
39. রাজস্থানের পশ্চিমাংশের চলমান বালিয়াড়িকে কী বলে?
উঃ ধ্রিয়ান।
40. রাজস্থানের উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণিটির নাম কী?
উঃ আরাবল্লী।
41. গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলে প্রাচীন পলি দ্বারা গঠিত ভূমিকে কী বলে?
উঃ ভাঙ্গর।
42. গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলে নতুন পলি দ্বারা গঠিত ভূমিকে কী বলে?
উঃ খাদর।
43. হিমালয় পাদদেশের নুড়ি-বালি পূর্ণ সছিদ্র ভূমিকে কী বলে?
উঃ ভাবর।
44. ভাবরের দক্ষিণের জঙ্গলে ঢাকা জলাভূমিকে কী বলে?
উঃ তরাই।
45. পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশে অবস্থিত তরাই ভূমিকে কী বলে?
উঃ ডুয়ার্স।
46. পৃথিবীর বৃহত্তম নদীদ্বীপ বা নদীচর কোনটি?
উঃ মাজুলী দ্বীপ।
47. ভারতের শস্য ভাণ্ডার কাকে বলে?
উঃ উত্তর ভারতের সমভূমিকে।
48. মেঘালয় মালভূমি কোন মালভূমির অংশ?
উঃ দাক্ষিণাত্য মালভূমির অংশ।
49. আরাবল্লীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ গুরুশিখর (১৭২২ মিটার)।
50. মধ্য ভারতের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণিটির নাম কী?
উঃ বিন্ধ্য পর্বতশ্রেণি।
51. সাতপুরা কী জাতীয় পর্বত?
উঃ স্তূপ পর্বত।
52. সাতপুরার সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ ধূপগড় (১৩৫০ মিটার)।
53. মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ অমরকণ্টক (১০৫৭ মিটার)।
54. পশ্চিমঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ কলসুবাই (১৬৪৬ মিটার)।
55. পশ্চিমঘাট পর্বতের দুটি গিরিপথের নাম লেখ।
উঃ থলঘাট ও ভোরঘাট।
56. নীলগিরি পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ দোদাবেতা (২৬৩৭ মিটার)।
57. দক্ষিণ ভারতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোন পর্বতে অবস্থিত?
উঃ আনাইমালাই পর্বতে অবস্থিত।
58. মালনাদ কাকে বলে?
উঃ কানাড়া ভাষায় মালনাদ কথার অর্থ পাহাড়ী দেশ। কর্ণাটক মালভূমির পশ্চিমভাগের পশ্চিমঘাট পর্বত সংলগ্ন পাহাড়ী ভূমিকে বলে মালনাদ।
59. ময়দান কী?
উঃ মালনাদের পুর্বে অর্থাৎ কর্ণাটক মালভূমির পূর্বভাগে যে উন্মুক্ত সমতলভূমি আছে তাকে ময়দান বলে।
60. করমণ্ডল উপকূল কাকে বলে?
উঃ বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন পূর্ব উপকূলের দক্ষিণাংশ, বিশেষত কৃষ্ণা নদীর দক্ষিণে কন্যাকুমারী পর্যন্ত উপকূলকে করমণ্ডল বলে।
61. উত্তর সরকারস উপকূল কাকে বলে?
উঃ উত্তরে সুবর্ণরেখা নদীর মোহনা থেকে শুরু করে দক্ষিণে কৃষ্ণা নদীর ব-দ্বীপ পর্যন্ত পূর্ব উপকূলকে উত্তর সরকারস উপকূল বলে।
62. ভারতের পশ্চিম উপকূলের কোন অংশে অনেক হ্রদ আছে?
উঃ মালাবার উপকূলে অনেক হ্রদ আছে।
63. ভারতের পূর্ব উপকূলের দুটি হ্রদের নাম লেখ।
উঃ চিল্কা এবং পুলিকট।
64. চিল্কা কী জাতীয় জলের হ্রদ?
উঃ লবণাক্ত জলের হ্রদ।
65. কোঙ্কণ উপকূল কাকে বলে?
উঃ মহারাষ্ট্রের উত্তর সীমা থেকে গোয়া পর্যন্ত আরবসাগর পর্যন্ত আরবসাগর সংলগ্ন পশ্চিম উপকূলকে কোঙ্কণ উপকূল বলে।
66. কেরালার উপকূলভূমির নাম কী?
উঃ মালাবার উপকূল।
67. রাণ কী?
উঃ গুজরাটের কচ্ছ উপদ্বীপকে বেষ্টন করে আছে যে লবণাক্ত কর্দমময় অগভীর জলাভূমি তাকে বলে রাণ।
68. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ স্যাডল পিক (৭৫০ মিটার)।
69. ভারতের একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরির নাম কর।
উঃ ব্যারেন দ্বীপ।
70. লক্ষ, মিনিকয় প্রভৃতি আরব সাগরের দ্বীপগুলি কী জাতীয়?
উঃ প্রবাল গঠিত দ্বীপ।
71. বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জের নাম লেখ।
উঃ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
72. ত্রিপুরার সর্বোচ্চ পাহাড় শ্রেণিটির নাম কী?
উঃ জাম্পুইটাং।
73. ব্যাক ওয়াটার্স কী?
উঃ কেরালা রাজ্যের মালাবার উপকূলে বহু উপহ্রদ আছে, এগুলিকে ব্যাক ওয়াটার্স বলে।
74. পূর্বাচল কাকে বলে?
উঃ উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্তর্গত নাগাল্যাণ্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, অসম প্রভৃতি রাজ্যে পাটকাই, নাগা, লুসাই প্রভৃতি নামে যেসব পর্বতশ্রেণি উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত হয়েছে সেগুলিকে একসঙ্গে পূর্বাচল বলে।
●সিন্ধু●
•মোট দৈর্ঘ্য-2880 কিমি,ভারতে 709কিমি
•উৎপত্তিস্থল-তিব্বতের মানস সরোবরের নিকট সিন কা বাব নামক জলধারা,লাদাখের কাছে দিয়ে ভারতে প্রবেশ
•উপনদী-শতুদ্র,বিপাশা,বিতস্তা,চন্দ্রভাগা,ইরাবতী,চেনা
•পতিত হয়েছে-আরব সাগর
●গঙ্গা(ভারতের দীর্ঘতম)●
•মোট দৈর্ঘ্য-2510 কিমি, ভারতে 2017 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রি হিমবাহের গোমুখ গুহা
•বামতীরের উপনদী-রামগঙ্গা,গোমতী,ঘর্ঘরা,গন্ডক,কোশী
•ডানতীরের উপনদী-যমুনা ও শোন
•পাশে অবস্থিত-হরিদ্বার;কানপুর,এলাহাবাদ,বারানসী,পাটনা,ভাগলপুর,কলকাতা(হুগলী নদী)
•মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের কাছে ভাগ হয়েছে
•অলকানন্দা ও ভাগিরথী মিলেছে দেবপ্রয়াগে
•পতিত হয়েছে-বঙ্গোপোসাগরে
●ব্রহ্মপুত্র(উৎপত্তিস্থলে সাংপো)●
•মোট দৈর্ঘ্য-2580 কিমি(ভারতে 885 কিমি)
•উৎপত্তিস্থল-চেমায়ুং দুম হিমবাহ
•উপনদী-সুবর্ণষিড়ি,মানস,তিস্তা,তোর্সা
•পাশে অবস্থিত-ডিব্রুগড়,তেজপুর,গৌহাটি,
• পৃথিবীর উচ্চতম নদী বা Sky River নামে পরিচিত
•পতিত হয়েছে-যমুনা নাম নিয়ে গঙ্গায়(বাংলাদেশ)
●যমুনা●
•মোট দৈর্ঘ্য- 1376কিমি
•উৎপত্তিস্থল-যমুনেত্রী হিমবাহ
•উপনদী-চম্বল,কেন,বেতোয়া
•পাশে অবস্থিত-দিল্লী,মথুরা,আগ্রা
•পতিত হয়েছে-এলাহাবাদের কাছে গঙ্গায়
•গঙ্গার দীর্ঘতম উপনদী
●চেনাব●
•উৎপত্তিস্থল-হিমাচল প্রদেশের কুলু
•পাশে অবস্থিত-সালাল প্রোজেক্ট
•পতিত হয়েছে-সিন্ধু(সিন্ধুর বৃহত্তম উপনদী)
●শতুদ্র●
•মোট দৈর্ঘ্য - ভারতে 1060 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-তিব্বতের রাকা হ্রদ
•পাশে অবস্থিত-ভাকরা নাঙ্গাল,লুধিয়ানা
•পতিত হয়েছে-সিন্ধু
•শিপকিলা গিরিপথ দিয়ে ভারতে প্রবেশ
●ঝিলম/বিতস্তা●
•মোট দৈর্ঘ্য-424 কিমি, ভারতে 400 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-পীরপঞ্জালের পাদদেশে ভেরানাগ এ
•পাশে অবস্থিত - শ্রীনগর
•পতিত হয়েছে-সিন্ধু(চেনাব)
●বিপাশা●
•মোট দৈর্ঘ্য-460 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-কুলু পর্বতের কাছে রোটাং পাস
•পাশে অবস্থিত-মানালী
•পতিত হয়েছে-হারিকের কাছে শতুদ্রতে
●ইরাবতী●
•মোট দৈর্ঘ্য-725 কিমি
•উৎপত্তিস্থল-রোটাংপাস
•পতিত হয়েছে-চেনাব(সিন্ধু)
●শোন●
ভারতের নদ নদী থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
1. উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের জলবিভাজিকা কাকে বলে?
উঃ বিন্ধ্য পর্বতকে।
2. ভারতের প্রধান নদীর নাম কী?
উঃ গঙ্গা।
3. গঙ্গা নদীর দৈর্ঘ্য কত?
উঃ ২৫১০ কিমি।
4. গঙ্গার গতিপথকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায়? কী কী?
উঃ তিন ভাগে। উচ্চগতি, মধ্যগতি ও নিম্নগতি।
5. গঙ্গার উৎপত্তি কোথায়?
উঃ কুমায়ন হিমালয়ের অন্তর্গত গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে গঙ্গার উৎপত্তি।
6. গঙ্গার উচ্চগতি কোথা থেকে কোথা পর্যন্ত বিস্তৃত?
উঃ গোমুখ তুষার গুহা থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত।
7. গঙ্গার মধ্যগতি কোথা থেকে কোথা পর্যন্ত বিস্তৃত?
উঃ হরিদ্বার থেকে বিহারের রাজমহল পর্যন্ত।
8. গঙ্গার নিম্নগতি কোথা থেকে কোথা পর্যন্ত বিস্তৃত?
উঃ বিহারের রাজমহল থেকে মোহনা পর্যন্ত।
9. দেবপ্রয়াগের কাছে কোন নদী গঙ্গায় এসে মিশেছে?
উঃ অলকানন্দা।
10. ভাগীরথী ও অলকানন্দার মিলিত প্রবাহের নাম কী?
উঃ গঙ্গা।
11. পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের নাম কী?
উঃ গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের মোহনার ব-দ্বীপ।
12. গঙ্গার প্রধান উপনদীর নাম কী?
উঃ যমুনা।
13. যমুনার উৎপত্তি কোথায়?
উঃ কুমায়ুন হিমালয়ের যমুনোত্রী হিমবাহ থেকে।
14. যমুনার তিনটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ চম্বল, বেতোয়া, কেন।
15. গঙ্গার বামতীরের উপনদী গুলির নাম লেখ।
উঃ রামগঙ্গা, গোমতী, ঘর্ঘরা, গণ্ডক, কোশী।
16. গঙ্গার ডানতীরের উপনদী গুলির নাম লেখ।
উঃ যমুনা শোন
17. গঙ্গার তীরে অবস্থিত চারটি শহরের নাম লেখ।
উঃ কোলকাতা, পাটনা, এলাহাবাদ, কানপুর।
18. উত্তর-পশ্চিম ভারতের প্রধান নদীর নাম কী?
উঃ সিন্ধু নদ।
19. সিন্ধুর উৎপত্তি কোথায়?
উঃ তিব্বতের সিন-খা-বাদ হিমবাহ থেকে।
20. সিন্ধুর পাঁচটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ শতদ্রু, বিপাশা, বিতস্তা, চন্দ্রভাগা, ইরাবতী।
21. কাশ্মীর উপত্যকার মধ্য দিয়ে কোন নদী প্রবাহিত হয়েছে?
উঃ ঝিলাম বা বিতস্তা নদী।
22. কোন নদীর তীরে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা গড়ে উঠেছিল?
উঃ সিন্ধু নদের তীরে।
23. উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রধান নদীর নাম কী?
উঃ ব্রহ্মপুত্র।
24. ব্রহ্মপুত্রের উৎপত্তি কোথায়?
উঃ তিব্বতের রাক্ষসতাল মানস সরোবরের কাছে চেমায়ুং দুং হিমবাহ থেকে।
25. তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের নাম কী?
উঃ সাংপো।
26. কোন কোন নদীর মিলিত ধারার নাম ব্রহ্মপুত্র?
উঃ ডিবং, ডিহং ও লোহিত নদীর মিলিত ধারার নাম ব্রহ্মপুত্র।
27. ব্রহ্মপুত্রের দুটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ সুবনশিরি ও ভরলী।
28. লুনি কোথায় পড়েছে?
উঃ কচ্ছের রাণ অঞ্চলে।
29. রাজস্থানের প্রধান নদীর নাম কী?
উঃ লুনি।
30. প্রবাহের দিক অনুসার দক্ষিণ ভারতের নদী গুলিকে প্রধান কী কী ভাগে ভাগ করা যায়?
উঃ পূর্ববাহিনী নদী ও পশ্চিমবাহিনী নদী।
31. কয়েকটি পূর্ববাহিনী নদীর নাম লেখ।
উঃ সুবর্ণরেখা, মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী প্রভৃতি।
32. কোন নদীর গতিপথে বিখ্যাত হুড্রু জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে?
উঃ সুবর্ণরেখা নদীর গতিপথে।
33. দক্ষিণ ভারতের প্রধান নদীর নাম কী?
উঃ গোদাবরী।
34. শিবসমুদ্রম জলপ্রপাত কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ কাবেরী নদীর গতিপথে।
35. সবরমতী নদী কোথা থেকে উৎপন্ন হয়ে কোথায় পড়েছে?
উঃ আরাবল্লী পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে গুজরাটের কাম্বে উপসাগরে পড়েছে।
36. ভারতের সর্বোচ্চ জলপ্রপাত গেরসোপ্পা কোন নদীতে অবস্থিত?
উঃ কর্ণাটকের সরাবতী নদীর গতিপথে।
37. গঙ্গার নদী অববাহিকার আয়তন কত?
উঃ ৮.৩৮ লক্ষ বর্গ কিমি।
38. ভারতের দুটি হ্রদের নাম লেখ।
উঃ রাজস্থানের সম্বর ও কাশ্মীরের ডাল।
39. গঙ্গা ছাড়া ভারতের আর চারটি নদীর নাম লেখ যাদের মোহনায় ব-দ্বীপ আছে?
উঃ মহানদী, গদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী নদীর মোহনায় ব-দ্বীপ আছে।
40. ব্রহ্মপুত্র নদ কোন অঞ্চলে সাংপো নামে পরিচিত?
উঃ তিব্বতে।
41. ভারতের একটি অন্তর্বাহিনী নদীর নাম লেখ।
উঃ লুনি।
42. দক্ষিণ ভারতের দীর্ঘতম নদী কোনটি?
উঃ গোদাবরী।
43. ভারতের বৃহত্তম নদী কোনটি?
উঃ গঙ্গা।
44. ভারতের সর্বোচ্চ জলপ্রপাতটির নাম কী? এটি অন্য কী নামে পরিচিত?
উঃ গেরসোপ্পা। একে মহাত্মা গান্ধী প্রপাত বা যোগপ্রপাতও বলে।
45. নর্মদা নদীর উৎস কোথায়?
উঃ মধ্যপ্রদেশের মহাকাল বা মৈকাল পর্বতের অমরকণ্টক শৃঙ্গ থেকে নর্মদা নদীর উৎপত্তি হয়েছে।
46. অন্তর্বাহিনী নদী কাকে বলে?
উঃ যেসব নদী কোন দেশ বা মহাদেশের উচ্চভূমি বা পার্বত্য অঞ্চলে উৎপন্ন হয়ে ঐ দেশ বা মহাদেশরই কোন হ্রদ, সাগর বা জলাভূমিতে গিয়ে পড়ে অথবা মরুভূমিতে গিয়ে শুকিয়ে যায় সেগুলিকে বলে অন্তর্বাহিনী নদী।
,নেপাল
1. নেপালে অবস্থিত পৃথিবীর উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ মাউণ্ট এভারেস্ট (৮,৮৪৮ মিটার)।
2. নেপালে তাল কথার অর্থ কী?
উঃ হ্রদ।
3. নেপালের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ মাউণ্ট এভারেস্ট। (৮.৮৪৮ মিটার)।
4. নেপালের দুটি উপত্যকার নাম লেখ।
উঃ পোখরা ও কাঠমাণ্ডু।
5. নেপালের দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ কালীগণ্ডক।
6. নেপালের অধিকাংশ নদী কোন দিকে প্রবাহিত হয়েছে?
উঃ উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত।
7. নেপালের একটি প্রধান শিল্পের নাম লেখ।
উঃ পাট শিল্প।
8. নেপালের প্রধান শহরের নাম কী?
উঃ কাঠমাণ্ডু।
9. নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটির নাম কী?
উঃ পোখরান।
10. নেপালের রাজধানীর নাম কী?
উঃ কাঠমাণ্ডু।
11. ভারতের কোন সীমান্তে নেপাল অবস্থিত?
উঃ উত্তর সীমান্তে।
12. নেপালের প্রধান কৃষিজ ফসলের নাম কী?
উঃ ধান।
13. কোন দেশের সঙ্গে নেপালের বৈদেশিক বাণিজ্য সবচেয়ে বেশি হয়?
উঃ ভারতের সঙ্গে।
14. বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য নেপাল ভারতের কোন বন্দর বেশি ব্যবহার করে?
উঃ কোলকাতা বন্দর।
ভুটান
1. ভারতের কোন সীমান্তে ভুটান অবস্থিত?
উঃ উত্তর সীমান্তে।
2. ভুটানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ কুলাকাংড়ি (৭৫৩৯ মিটার)।
3. ভুটানের দুটি উপত্যকার নাম লেখ।
উঃ পারো ও থিম্পু।
4. ভুটানের দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ মানস।
5. ভুটানের প্রধান অর্থকরী ফসলের নাম কী?
উঃ বড় এলাচ।
6. ভুটানের একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নাম লেখ।
উঃ চুখা।
7. ভুটানের রাজধানীর নাম কী?
উঃ থিম্পু।
8. সামুদ্রিক বাণিজ্যের জন্য ভুটান কোন বন্দর ব্যবহার করে।
উঃ কোলকাতা বন্দর।
বাংলাদেশ
1. বাংলাদেশ ভারতের কোন দিকে অবস্থিত?
উঃ পূর্বদিকে।
2. বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল বলতে প্রধানত কোন অঞ্চলকে বোঝায়?
উঃ পার্বত্য চট্টগ্রামকে বোঝায়।
3. বাংলাদেশের উচ্চতম শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ কিওক্রাডং (১২৩০ মিটার)।
4. বাংলাদেশের দুটি নদীর নাম লেখ।
উঃ পদ্মা, যমুনা।
5. বাংলাদেশ কবে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করে?
উঃ ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর।
6. বাংলাদেশের প্রধান বন্দরটির নাম কী?
উঃ চট্টগ্রাম।
7. বাংলাদেশের জলবায়ু কী প্রকৃতির?
উঃ ক্রান্তীয় ,মৌসুমী প্রকৃতির।
8. বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসলের নাম কী?
উঃ পাট।
9. ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে বাংলাদেশের স্থান কত?
উঃ চতুর্থ।
10. বাংলাদেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কোথায় অবস্থিত?
উঃ ঢাকায়।
11. বাংলাদেশের রাজধানীর নাম কী?
উঃ ঢাকা।
12. ঢাকা কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে।
13. বাংলাদেশের একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
14. বাংলাদেশের বৃহত্তম বন্দরের নাম কী?
উঃ চট্টগ্রাম।
15. বাংলাদেশের একটি সমুদ্র বন্দরের নাম লেখ।
উঃ কক্সবাজার।
মায়ানমার
1. মায়ানমার ভারতের কোন সীমায় অবস্থিত?
উঃ পূর্বসীমায় অবস্থিত।
2. মায়ানমারের একটি আগ্নেয়গিরির নাম লেখ।
উঃ পেগুইয়োমা পর্বতের মাউন্ট পোপা।
3. মায়ানমারের দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ ইরাবতী।
4. মায়ানমারের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ কাকাবোরাজী (৫৫৮১ মিটার)।
5. ইরাবতী নদীর একটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ চিন্দুইন।
6. মায়ানমারের জলবায়ু কি প্রকৃতির?
উঃ ক্রান্তীয় মৌসুমী প্রকৃতির।
7. মায়ানমারের প্রধান কৃষিজ ফসল কী?
উঃ ধান।
8. দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ধান্যভাণ্ডার কাকে বলে?
উঃ মায়ানমারের ইরাবতী ও সিটাং ব-দ্বীপ অঞ্চলকে।
9. মায়ানমারের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম কী?
উঃ রেঙ্গুন।
10. মায়ানমারের রাজধানীর নাম কী?
উঃ রেঙ্গুন।
11. রেঙ্গুন কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ রেমগুন নদীর তীরে।
12. শান মালভূমি কোথায় অবস্থিত?
উঃ মায়ানমারের সমগ্র মধ্য-পূর্বভাগ জুড়ে যে বিস্তৃত মালভুমি আছে তার নাম শান মালভুমি।
শ্রীলঙ্কা
1. শ্রীলঙ্কা ভারতের কোন দিকে অবস্থিত?
উঃ দক্ষিণ দিকে।
2. শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ পেদ্রুতালাগালা (২৫৩০ মিটার)।
3. শ্রীলঙ্কার দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ মহাবলী গঙ্গা।
4. শ্রীলঙ্কার রাজধানীর নাম কী?
উঃ কলম্বো।
5. কোন প্রণালীর মাধ্যমে শ্রীলঙ্কা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন?
উঃ পক্ প্রণালীর মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন।
6. মান্নান উপসাগর কোথায় অবস্থিত?
উঃ ভারত ও শ্রীলঙ্কার মাঝখানে।
7. শ্রীলঙ্কার জলবায়ু কী প্রকৃতির?
উঃ নিরক্ষীয় প্রকৃতির।
8. শ্রীলঙ্কায় প্রধানত কী জাতীয় অরণ্য দেখা যায়?
উঃ চিরসবুজ অরণ্য।
9. শ্রীলঙ্কার প্রধান কৃষিজ ফসল কী?
উঃ ধান।
10. বিশ্বে চা উৎপাদনে শ্রীলঙ্কার স্থান কত?
উঃ তৃতীয়।
11. দারুচিনি দ্বীপ কাকে বলে?
উঃ শ্রীলঙ্কাকে।
12. শ্রীলঙ্কার দুটি উল্লেখযোগ্য কৃষিজ ফসলের নাম কর।
উঃ ধান, চা।
13. কোন প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভারত স্থলপথে যোগাযোগ করতে পারে না?
উঃ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে।
14. গ্রাফাইট উৎপাদনে বিশ্বে শ্রীলঙ্কার স্থান কত?
উঃ প্রথম।
15. আদম সেতু বা সেতুবন্ধ কাকে বলে?
উঃ ভারতের দক্ষিণ সীমায় পামবান দীপে ধনুষ্কোটি থেকে শ্রীলঙ্কার উত্তর-পশ্চিম কোণে মান্নার দ্বীপের তলাই মান্নার পর্যন্ত মধ্যবর্তী সাগরে সারি সারি প্রবাল দ্বীপ ও বালুচর যেন মালার মত ভেসে থেকে সেতু রচনা করেছে, একেই বলে আদম সেতু বা সেতুবন্ধ।
পাকিস্তান
1. পাকিস্তান ভারতের কোন সীমায় অবস্থিত?
উঃ উত্তর-পশ্চিম সীমায়।
2. পাকিস্তানের উত্তরে কোন পর্বতমালা অবস্থিত?
উঃ হিন্দুকুশ পর্বতমালা।
3. পাকিস্তানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ তিরিচমির (৭৬৯০ মিটার) ।
4. পাকিস্তানের প্রধান/দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ সিন্ধু।
5. পাকিস্তানের রাজধানীর নাম কী?
উঃ ইসলামাবাদ।
6. পাকিস্তানের দুটি গিরিপথের নাম লেখ।
উঃ খাইবার ও বোলান।
7. সিন্ধুর পাঁচটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ বিতস্তা, চন্দ্রভাগা, ইরাবতী, বিপাশা এবং শতদ্রু।
8. পাকিস্তানের জলবায়ু কী প্রকৃতির?
উঃ শুষ্ক ও চরম প্রকৃতির।
9. পাকিস্তানে প্রধানত কী কী উপায়ে জলসেচ করা হয়?
উঃ সেচখাল এবং ক্যারেজ প্রথায় জলসেচ করা হয়।
10. ক্যারেজ প্রথা কী?
উঃ এক ধরণের জলসেচ পদ্ধতি।
11. পাকিস্তানের প্রধান কৃষিজ ফসল কী?
উঃ গম।
12. পাকিস্তানের প্রধান অর্থকরী ফসল কী?
উঃ তুলো বা কার্পাস।
13. পাকিস্তানের প্রধান শিল্পের নাম কী?
উঃ কার্পাস বয়ন শিল্প।
14. পাকিস্তানের প্রধান সমুদ্র-বন্দরের নাম কী?
উঃ করাচী।
15. ইসলামাবাদ শব্দটির অর্থ কী?
উঃ শান্তির শহর।
16. ইতিহাস প্রসিদ্ধ শহর তক্ষশীলা কোথায় অবস্থিত?
উঃ পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের কাছে অবস্থিত।
17. পৃথিবীর বৃহত্তম লবণ খনির নাম কী? সেটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ কেওড়া, পাকিস্তানে অবস্থিত।
18. পাকিস্তানে অবস্থিত পৃথিবীর উষ্ণতম স্থানের নাম কী?
উঃ জেকোবাবাদ।
আফগানিস্তান
1. আফগানিস্তান ভারতের কোন সীমায় অবস্থিত?
উঃ উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে।
2. আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ নোশাক (৭৪৯০ মিটার)।
3. আফগানিস্তানের দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ হেলমন্দ।
4. আফগানিস্তানের রাজধানীর নাম কী?
উঃ কাবুল।
5. আফগানিস্তানের অবস্থানকে কী বলে?
উঃ স্থলবেষ্টিত বা মহাদেশীয় অবস্থান বলে।
6. আফগানিস্তানের জলবায়ু কী প্রকৃতির?
উঃ শুষ্ক মহাদেশীয় ও চরম প্রকৃতির।
7. আফগানিস্তানে প্রধানত কী উপায়ে জলসেচ করা হয়?
উঃ ক্যারেজ প্রথায়।
8. কোন প্রজাতির মেষ পালনের জন্য আফগানিস্তান বিখ্যাত?
উঃ কারাকুল প্রজাতির মেষ পালনের জন্য।
9. আফগানিস্তানের প্রসিদ্ধ শিল্পটির নাম কী?
উঃ কার্পেট বা গালিচা শিল্প।
10. ভারতের ক্ষুদ্রতম প্রতিবেশী দেশটির নাম কী?
উঃ মালদ্বীপ।
চীন
1. চীনের মোট আয়তন কত?
উঃ প্রায় ৯৬ লক্ষ বর্গ কিমি।
2. চীনের উচ্চতম শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ গোঁসাইথান ( ৮,০১৩ মিটার)।
3. চীনের দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াং প্রায় (৬,৩০০ কিমি)।
4. চীনের রাজধানীর নাম কী?
উঃ বেইজিং।
5. ইয়াংসি-কিয়াং নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায়?
উঃ চীনের ছিংহাই প্রদেশের থাংগুলা পর্বতমালার অন্তর্গত গেলাডানডং শৃঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিমদিকের একটি হিমবাহ থেকে ইয়াংসি-কিয়াং নদীর উৎপত্তি।
6. চীনের উত্তরে কোন দেশ অবস্থিত?
উঃ মঙ্গোলিয়া।
7. কোন নদীকে চীনের দুঃখ বলা হয়?
উঃ হোয়াংহো নদীকে।
8. ইয়াংসি-কিয়াং-এর দুটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ য়ুয়ান কিয়াং এবং মিন কিয়াং।
9. চীনের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
উঃ হোয়াংহো।
10. হোয়াংহোর দুটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ ফেনহো এবং ওয়েহো।
11. পীত নদী কাকে বলে?
উঃ হোয়াংহোকে।
12. হোয়াংহো কোথায় গিয়ে পড়েছে?
উঃ পোহাই বা পেচিলি উপসাগরে।
13. কুনলুন পর্বতের উত্তরের মরুভূমিটির নাম কী?
উঃ তাকলামাকান মরুভূমি।
14. চীনের একটি বিখ্যাত মালভূমির নাম লেখ।
উঃ তিব্বত মালভূমি।
15. উত্তর ও মধ্য চীনের সীমানায় কোন পর্বত শ্রেণি অবস্থিত?
উঃ সিনলিংসান পর্বত।
16. কুনলুন পর্বতের দক্ষিণের পর্বতশ্রেণির নাম কী?
উঃ হিমালয় পর্বতশ্রেণি।
17. River of Golden Sand বা স্বর্ণরেণুর নদী কাকে বলা হয়?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াংকে।
18. ক্যান্টন নদী কোন নদীকে বলে?
উঃ সিকিয়াংকে।
19. সিকিয়াং – এর দুটি উপনদীর নাম লেখ।
উঃ কোয়েই কিয়াং এবং পি কিয়াং।
20. চীনের বৃহত্তম হ্রদের নাম কী?
উঃ কোকোনর হ্রদ।
21. চীনের একটি অন্তর্বাহিনী নদীর নাম লেখ।
উঃ তারিম নদী।
22. চীনের দুটি উল্লেখযোগ্য খনিজ সম্পদের নাম লেখ।
উঃ কয়লা এবং আকরিক লোহা।
23. চীনের দুটি উল্লেখযোগ্য কৃষিজ ফসলের নাম লেখ।
উঃ ধান এবং গম।
24. চীনের কার্পাস বয়নশিল্পের প্রধান কেন্দ্রটির নাম কী?
উঃ সাংহাই।
25. চীনের ইস্পাত নগরী কাকে বলে?
উঃ আনসানকে।
26. চীনের ম্যাঞ্চেস্টার কাকে বলে?
উঃ সাংহাইকে।
27. চীনের দুটি সিমেন্ট শিল্পকেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ সাংহাই এবং চুংকিং।
28. চীনের দুটি রাসায়নিক শিল্পকেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ নানকিং এবং সাংহাই।
29. চীনের দুটি কাগজ শিল্পের নাম লেখ।
উঃ কানসু এবং ক্যাণ্টন।
30. চীনের বর্তমান লোকসংখ্যা কত?
উঃ ১,৪১৫,২৩১,৬৬৬ জন বা ১৪১ কোটি প্রায়। (জুলাই ২০১৮)
31. চীনের সর্বাপেক্ষা ঘনবসতি পূর্ণ অঞ্চলটির নাম কী?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াং অববাহিকায়।
32. চীনের বৃহত্তম শহর ও বন্দরের নাম কী?
উঃ সাংহাই।
33. চীনের হল্যাণ্ড কোন অঞ্চলকে বলা হয়?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াং নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চলকে।
34. ইয়াংসি-কিয়াং অববাহিকার বৃহত্তম শিল্পকেন্দ্রের নাম কী?
উঃ সাংহাই।
35. ইয়াংসি-কিয়াং নদীর তীরে অবস্থিত একটি বন্দরের নাম লেখ।
উঃ সাংহাই
36. কোন অঞ্চলকে চীনের ধানের গোলা বলা হয়?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াং নদীর অববাহিকাকে।
37. চীনের বৃহত্তম নদী অববাহিকার নাম কী?
উঃ ইয়াংসি-কিয়াং অববাহিকা।
38. চীন দেশের বৃহত্তম লোহা-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্রটির নাম লেখ।
উঃ আনসান।
39. রেড বেসিন কী?
উঃ চীনের ইয়াংসি-কিয়াং অববাহিকার ঊর্ধ্বপ্রবাহ অঞ্চলের নাম জেচুয়ান অববাহিকা। যেহেতু এই জেচুয়ান অববাহিকার মাতির রঙ লাআ, তাই একে লোহিত অববাহিকা বা রেড বেসিন বলে।
40. চীনের কোন অংশে মৌসুমী জলবায়ু দেখা যায়?
উঃ চীনের দক্ষিণ অংশে।
ভারতের জলসেচ ব্যবস্থা [Irrigation System of India]:-কৃষিকাজের জন্য জল অপরিহার্য্য । কৃষিকাজ করার জন্য নদী, পুকুর, খাল, জলাশয় থেকে যে জল এনে কৃষি জমিতে দেওয়া হয় বা সেচন করা তাকে জলসেচ বলে ।
☼ ভারতের কৃষিকাজে জলসেচের গুরুত্ব :-
☼ বিভিন্নপ্রকার সেচ ব্যবস্থা :-
ভারতবর্ষের কৃষিতে জলসেচ ব্যবস্থার গুরুত্ব [Importance of Irrigation System in India ]:- পৃথিবীর সবচেয়ে বৃষ্টি বহুল অঞ্চল মঁওসিরাম ( চেরাপুঞ্জি) ভারতে অবস্থিত হলেও ভারতের কৃষিকাজে জলসেচ ব্যবস্থার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । নিম্নলিখিত কারণগুলোর জন্য ভারতের কৃষিকাজে জলসেচ ব্যবস্থার প্রয়োজন ।
(১) মৌসুমি বৃষ্টিপাতের অনিশ্চয়তা [Uncertainity of Rainfall] :- ভারতের প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ বৃষ্টিপাত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে হলেও এই বৃষ্টিপাত অত্যন্ত অনিশ্চিত । কোনও বছরে প্রচুর মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যার সৃষ্টি হয় । আবার কোনও বছর মৌসুমি বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ার জন্য খরা দেখা দেয় । মৌসুমি বৃষ্টিপাতের এই অনিশ্চয়তার জন্য ভারতের কৃষি জমিতে জলসেচের প্রয়োজন হয় ।
(২) শীতকালীন বৃষ্টিপাতের অভাব [Scarcity of Rainfall in Winter Season] :- দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর বৈশিষ্ট্য অনুসারে শীতকালে তামিলনাড়ু উপকুল এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের কোনও কোনও অংশ ছাড়া ভারতে বৃষ্টিপাত হয় না । সেই জন্য শীতকালীন রবিশস্য চাষের জন্য ভারতে জলসেচের প্রয়োজন হয় ।
(৩) বৃষ্টিপাতের অসম বন্টন [Unequal Distribution of Rainfall] :- ভারতের সর্বত্র মৌসুমি বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সমান নয়, উত্তর-পশ্চিম ভারত ও দাক্ষিণাত্য মালভূমির মধ্যভাগে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম হওয়ায় এই সব অঞ্চলে কৃষি কাজের জন্য জলসেচের প্রয়োজন হয় ।
(৪) উচ্চ ফলনশীল শস্যের চাষ [Cultivation of High Yielding Variety ] :- বর্তমানে ভারতে প্রচলিত নানারকম উচ্চ ফলনশীল শস্যের চাষে হয় । উচ্চ ফলনশীল শস্যের চাষে প্রচুর জলের প্রয়োজন হওয়ায় ব্যাপক ভাবে জলসেচের প্রয়োজন হয় ।
(৫) মৃত্তিকার অসম ধারণ ক্ষমতা [Water Holding Capacity of Soils]:- ভারতের সব অঞ্চলে মৃত্তিকার জল ধারণ ক্ষমতা সমান নয় । যেসব অঞ্চলের মৃত্তিকার জল ধারণ ক্ষমতা কম, সেখানকার কৃষি কাজের জন্য জলসেচের প্রয়োজন হয় ।
(৬) বহু ফসলী চাষ [Multiple cropping] :- আজকাল বৈজ্ঞানিক কৃষি পদ্ধতিতে একই জমিতে বহু বার ফসল ফলানো যায় । একই জমিতে বছরে বহুবার ফসল ফলানোর জন্য কৃষি জমিতে সারা বছর ধরে সেচের জলের যোগান রাখা অপরিহার্য ।
(৬) ভারতে কৃষি জমির প্রয়োজন বৃদ্ধি [Extension of Agricultural Land] :- কৃষিজ দ্রবের চাহিদা পূরণের জন্য কৃষি যোগ্য জমির সম্প্রসারণ প্রয়োজন হয়ে পড়ছে । অসেচ সেবিত জমিতে আজকাল বৈজ্ঞানিক কৃষি পদ্ধতিতে সেচের ব্যবস্থা করে ফসল ফলানো হচ্ছে । এর জন্য এই সব কৃষি জমিতে সারা বছর ধরে সেচের জলের যোগান রাখা অপরিহার্য ।
ভারতের জলসেচের বিভিন্ন পদ্ধতি [Irrigation System of India] :- ভারতে সাধারণত তিনটি পদ্ধতির সাহায্যে জলসেচ করা হয়, যথা: (১) কুপ ও নলকূপ (২) পুকুর ও জলাশয় এবং (৩) সেচখাল ।
(১) কুপ ও নলকূপ [Wells and Tube-wells]:- ভারতের যেসব অঞ্চলে ভৌম জলের প্রাচুর্য বেশি, অর্থাৎ যে সব অঞ্চলে বৃষ্টির জল পাললিক শিলাস্তর ভেদ করে মাটির নিচে জমা হতে পারে, সাধারণত সেইসব অঞ্চলে কুপ ও নলকুপের সাহায্যে জলসেচ করা হয়ে থাকে । উত্তর ও পূর্ব ভারতের বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, অসম, পশ্চিমবঙ্গ প্রভৃতি রাজ্যে কুপ ও নলকূপের সাহায্যে জলসেচ করা হয়ে থাকে ।
(২) পুকুর ও জলাশয় [Ponds and Lakes] বর্ষাকালে বৃষ্টির জল প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম জলাধার অথবা পুকুরে সঞ্চয় করে রেখে সেচের কাজে লাগানো হয় । পাথুরে ভূমি এবং কঠিন ও অপ্রবেশ্য শিলায় গঠিত দাক্ষিণাত্য মালভূমির অপ্রবেশ্য শিলাস্তর ভেদ করে বৃষ্টির জল মাটির নিচে সঞ্চিত হতে পারে না, তাই দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পুকুর বা জলাশয় তৈরি করে তা থেকে সেচ করা হয় ।
(৩) সেচ খাল [Irrigation Canal]:- প্রধানত নদনদী বহুল অঞ্চলে সেচখালের সাহায্যে জলসেচ করা হয় । সাধারণত সেচখাল গুলো দু-রকমের হয়, যেমন— (ক) নিত্যবহ খাল ও (খ) প্লাবন খাল ।
(ক) নিত্যবহ খাল :- সারাবছর জল থাকে এমন নদী থেকে কাটা খালকে নিত্যবহ খাল বলে । নদিতে বাঁধ দিয়ে জল উঁচু করে রাখবার ফলে নিত্যবহ খালে সারা বছর জল থাকে । আর এই জল সেচের কাজে লাগানো হয় । পাঞ্জাব, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে প্রধানত নিত্যবহ খালের সাহায্যে জলসেচ করা হয় ।
(খ) প্লাবন খাল :- প্লাবন খাল সাধারণত বর্ষার প্লাবনে জলপূর্ণ হয় । তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে অনেক প্লাবন খাল দেখা যায় ।
বহুমুখী নদী পরিকল্পনা [Multi-purpose River Project]:- নদী বহুল ভারতবর্ষের নদীগুলোর মোট জল প্রবাহের কেবলমাত্র ৬ শতাংশ জলসেচের জন্য এবং ১.৫ শতাংশ জল বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়, বাকি অংশ অব্যবহৃত থাকে । এছাড়া ভারতের নদীগুলো বিশেষ করে বর্ষাকালে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করে । স্বাধীনতা লাভের পর সরকার এই জল সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্য বহুমুখী নদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন । এই পরিকল্পনা গুলোর নদী গুলোর ওপর বাঁধ দিয়ে জলাশয় বা কৃত্রিম হ্রদ সৃষ্টি করা হয় ।
সংজ্ঞা [Definition]:- যে পরিকল্পনার সাহায্যে নদীগুলোর উপর বাঁধ দিয়ে একই সঙ্গে বিভিন্ন উদ্দেশ্য সাধন, বিশেষ করে নদীর অববাহিকা অঞ্চলের অধিবাসীদের জীবন যাত্রার মানের সর্বাঙ্গীণ উন্নতির জন্য নদী প্রবাহকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়, তাকে ‘বহুমুখী নদী পরিকল্পনা’ বলা হয় ।
যেমন :-দামোদর নদী পরিকল্পনা, ভাকরা নাঙ্গাল নদী পরিকল্পনা ।
মৃত্তিকা [ Soil ]:- ভু-ত্বকের ওপরের স্তরে অবস্থিত এবং সূক্ষ্ম শিলাখ্ন্ড দিয়ে গঠিত নরম ও শিথিল স্তরভাগকে মৃত্তিকা বা মাটি বলে । সূর্যতাপ, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, জলস্রোত প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ভূত্বকের শিলা চূর্ণবিচূর্ণ ও ক্ষয়ীভূত হয়ে গাছপালা ও জীবজন্তুর দেহাবশেষের সঙ্গে মিশে মৃত্তিকায় পরিণত হয় । জলবায়ু, উদ্ভিদ ও শিলাস্তরের প্রকৃতির ওপর মাটির গঠন নির্ভর করে । তাই বিভিন্ন স্থানের মাটি বিভিন্ন রকমের হয় ।
☼ ভারতের মৃত্তিকা:- মাটির রং, বুনোন [Texture], খনিজ পদার্থ ও জৈব পদার্থের পরিমাণ জলধারণ ক্ষমতা প্রভৃতির তারতম্যের ওপর নির্ভর করে ভারতীয় ভারতের মাটিকে নিম্নলিখিত ছয় ভাগে ভাগ যায় । যথা :-
(১) পলল মাটি বা পলিমাটি :
(২) কৃষ্ণ মৃত্তিকা বা রেগুর :
(৩) লোহিত মৃতিকা বা লাল মাটি :
(৪) পার্বত্য মৃত্তিকা :
(৫) মরু অঞ্চলের মাটি :
(৬) উপকূলীয় মৃত্তিকা :
১) পাললিক মৃত্তিকা [Alluvial soil] :- ভারতের বিশাল সমভূমি অঞ্চলে এই মৃত্তিকা দেখা যায়। সাধারনভাবে এই মৃত্তিকা নদী-সঞ্চিত, তবে উপকূল অংশে সমুদ্রবাহিত পলিও এই মৃত্তিকার সৃষ্টি করে থাকে । এই পলি মৃত্তিকা ভারতের প্রায় অর্ধেক ভূভাগে বিস্তৃত রয়েছে । পাললিক মৃত্তিকাকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় । (ক) খাদার মৃত্তিকা (খ) ভাঙ্গর মৃত্তিকা ।
(ক) খাদার মৃত্তিকা :- নদীর প্লাবন ভুমিতে নবীন পলি দ্বারা খাদার মৃত্তিকা গঠিত হয় । খাদার মৃত্তিকায় বালির ভাগ বেশি থাকে । খাদার মৃত্তিকা প্রতিবছর পলি আচ্ছাদিত হয় বলে এর উর্বরতা ভাঙ্গর মৃত্তিকা থেকে বেশি । সাধারণত গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও অন্যান্য নদী তীরবর্তী অঞ্চলে খাদার মৃত্তিকা দেখা যায় ।
(খ) ভাঙ্গর মৃত্তিকা :- নদী-দূরবর্তী উচ্চভূমিতে প্রাচীন পলি দ্বারা ভাঙ্গর মৃত্তিকা গঠিত হয় । ভাঙ্গর মৃত্তিকায় কাদার ভাগ বেশি । ভাঙ্গর মৃত্তিকা প্রতিবছর পলি আচ্ছাদিত হয় না বলে এর উর্বরতা খাদার মৃত্তিকার থেকে কম । পশ্চিমবঙ্গের রাঢ় অঞ্চলে ভাঙ্গর মৃত্তিকা পরিলক্ষিত হয় ।
কৃষ্ণ মৃত্তিকা [Black soil]:- দাক্ষিণাত্যের লাভা মালভূমি অঞ্চলে এই বিশেষ মৃত্তিকা দেখা যায় । এই মাটি রেগুর [Regur] বা কৃষ্ম কার্পাস মৃত্তিকা নামেও পরিচিত । লাভা গঠিত ব্যাসল্ট শিলা থেকে এই মৃত্তিকা উৎপন্ন হওয়ার জন্য এই মৃত্তিকার রঙ কালো । তামিলনাড়ুর অংশ বিশেষে নাইস ও শিস্ট জাতীয় শিলাও এই মৃত্তিকা সৃষ্টি করেছে । এই মৃত্তিকায় চুন ও কাদার ভাগ বেশি থাকায় এর জলধারণের ক্ষমতা বেশি । এই মৃত্তিকার প্রধান উৎপন্ন ফসল হল কার্পাস ।
লোহিত মৃত্তিকা [Red soil]:- আর্কিয়ান যুগের গ্র্যানিট–নাইস প্রভৃতি প্রাচীন শিলা ক্ষয়ীভূত হয়ে লোহিত মৃত্তিকার সৃষ্টি করেছে । লোহিত মৃত্তিকা কৃষ্ম মৃত্তিকার আশপাশে উপদ্বীপের অনেকাংশে বিস্তৃত রয়েছে । এই মৃত্তিকায় বালির ভাগ বেশি থাকায় এর জল ধারণের ক্ষমতা কম । চুনের ভাগও কম থাকায় এই মৃত্তিকা কৃষ্ণ মৃত্তিকার তুলনায় অনুর্বর ।
ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা [ Laterite Soil ]:- লোহিত মৃত্তিকার একটি বিশেষ শ্রেণি হল ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা । সাধারণত গ্র্যানিট শিলার আবহবিকারের ফলেই ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে এই মৃত্তিকার সৃষ্টি হয় । ইটের মত শক্ত ও লাল রঙের বলে এই মৃত্তিকার নাম ল্যাটেরাইট । কর্ণাটক, কেরালা, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, অসম এবং ঝাড়খন্ড রাজ্যের ছোটোনাগপুরের মালভুমিতে এই বিশেষ ধরনের মৃত্তিকা দেখা যায় । এই মৃত্তিকা অত্যন্ত অনুর্বর এবং এখানে কৃষিকাজ খুব একটা হয় না ।
পার্বত্য মৃত্তিকা [Hill soil]:- হিমালয়ের বিভিন্ন উচ্চতায় বিশেষ বিশেষ ধরনের মৃত্তিকা পাওয়া যায় । হিমবাহ বাহিত প্রস্তরময় মৃত্তিকা ও অরণ্য অঞ্চলের অনুর্বর পডসল মৃত্তিকা এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য । এর অধিকাংশ মৃত্তিকা গভীর, প্রস্তরময় ও অনুর্বর হওয়ার জন্য এই মৃত্তিকা ফসল উৎপাদনের পক্ষে একেবারে উপযোগী নয় ।
পডসল মৃত্তিকা :- রুশ শব্দ পডসল এর মানে হল ধূসর । সরলবর্গীয় বনভুমির লতাপাতা, কান্ড, ফুল, ফল প্রভৃতি জমে একধরণের অম্ল প্রকৃতির ধূসর রঙের অনুর্বর মাটির সৃষ্টি হয়, একে পডসল মৃত্তিকা বলা হয় । পশ্চিম হিমালয় ও নীলগিরি পর্বতের উঁচু পার্বত্য অংশে পডসল মৃত্তিকা দেখা যায় ।
বালুকাময় মরু মৃত্তিকা [Sandy desert soil]:- এই মৃত্তিকায় বালি, নুড়ি ও কাঁকর এবং পাথরের ভাগ বেশি, কিন্তু জৈব পদার্থের ভাগ কম । ফলে মৃত্তিকাটি কিছু পরিমাণে অনুর্বর । তাছাড়া এখানে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় মৃত্তিকার উপরের খনিজ লবণ দ্রবীভূত হয়ে নিচে নেমে যায় না । সেজন্য এই মৃত্তিকায় লবণের ভাগ তুলনামূলকভাবে বেশি । রাজস্থান, গুজরাট ও কচ্ছের অংশ বিশেষে এই মৃত্তিকা দেখা যায় ।
উপকূলীয় মৃত্তিকা [Coastal soil]:- পূর্ব-উপকূলের বদ্বীপ অঞ্চলে এবং নদী-মোহনায় এই পলি মৃত্তিকার সৃষ্টি হয়েছে । সমুদ্রের কাছাকাছি অঞ্চলের মৃত্তিকা সাধারণত লবণাক্ত হয় । এই মৃত্তিকায় বালির ভাগ বেশি থাকে । নারিকেল, সুপারি প্রভৃতি গাছ এই মৃত্তিকায় ভালো জন্মায় । উপকূল অঞ্চলের জলাভূমিতে ও শুষ্ক হ্রদে লবণ ও জৈব পদার্থ যুক্ত পিট জাতীয় কালো মৃত্তিকা দেখা যায় । কেরালা, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল অংশে এই মৃত্তিকা দেখা যায় ।
ভারতের মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণ [Cause of Soil Erosion in India ]:- মৃত্তিকা ক্ষয় ভারতের একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা । ভারতে ভুমি ক্ষয় সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে । যথা (ক) প্রাকৃতিক কারণে ভূমিক্ষয় (খ) মানবিক কারণে ভূমিক্ষয় ।
(ক) (ক) প্রাকৃতিক কারণে ভূমিক্ষয় :- (১) বায়ুপ্রবাহ, (২) ঝড়, (৩) বৃষ্টিপাত, (৪) নদী-প্রবাহ, (৫) বন্যা, (৬) নদী ও সমুদ্র স্রোতের পরিবর্তন প্রভৃতি প্রাকৃতিক কারণের ফলে ভূমিক্ষয় হয় ।
(খ) মানবিক কারণে ভূমিক্ষয় :-
(১) নির্বিচারে গাছপালা কাটা:- নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে মাটি আলগা হয়ে যায় এবং সহজেই মৃত্তিকা ক্ষয় প্রাপ্ত হয়;
(২) অতিরিক্ত পশুচারণ:- কোনও স্থানে অতিরিক্ত পশুচারণের জন্য সেই স্থানের মাটি আলগা হয়ে যায় এবং সহজেই মৃত্তিকা ক্ষয় প্রাপ্ত হয়;
(৩) অবৈজ্ঞানিক ঝুম চাষ:- অবৈজ্ঞানিক ঝুমচাষের ফলেও বনভূমি পরিষ্কার হয়ে মৃত্তিকা ক্ষয় প্রাপ্ত হয় ।
উপরোক্ত কারণগুলি মানবিক কারণে ভূমিক্ষয় -এর উদাহরণ ।
ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ:- যে সমস্ত গাছ বা উদ্ভিদ কোনও স্থানের জলবায়ু ও মৃত্তিকা সহ স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশে মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই জন্মায় ও বড়ো হয়, তাদের ওই স্থানের স্বাভাবিক উদ্ভিদ বলা হয় । দেশের জলবায়ুর সঙ্গে স্বাভাবিক উদ্ভিদের সম্পর্ক খুব নিবিড় । জলবায়ু ছাড়া ভূমির প্রকৃতি ও মাটির উর্বরতার ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন রকমের স্বাভাবিক উদ্ভিদ জন্মায় । ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু ও মৃত্তিকার বিভেদের উপর নির্ভর করে ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদকে ছয়ভাগে ভাগ করা যায়; যথা:-
(১) হিমালয়ের বনভূমি :-
(২) চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভূমি :-
(৩) পর্ণমোচী বৃক্ষের বনভূমি :-
(৪) গুল্ম ও তৃণ অঞ্চল :-
(৫) মরু অঞ্চলের উদ্ভিদ,
(৬) ম্যানগ্রোভ বনভূমি :-
হিমালয়ের বনভূমি [Himalayan Forest]:- হিমালয়ের বিভিন্ন উচ্চতায় বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রার পার্থক্যের জন্য বিভিন্ন ধরনের বনভূমি দেখতে পাওয়া যায় ।
(ক) পূর্ব হিমালয় অঞ্চলের পাদদেশ থেকে ১০০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত শিশু, চাপলাস, মেহগনি, গর্জন, রোজউডপ্রভৃতি শক্ত কাঠের চিরহরিৎ বনভূমি দেখা যায় । পশ্চিম হিমালয়ে এই বনভূমি দেখা যায় না ।
(খ) পূর্ব হিমালয়ের ১০০০ মিটার থেকে ২৫০০ মিটার উচ্চতায় ও পশ্চিম হিমালয়ের ৫০০ মিটার থেকে ২০০০ মিটার উচ্চতায় পপলার, ওক, ম্যাপল, ওয়ালনাট, বার্চ প্রভৃতি পর্ণমোচী বৃক্ষের অরণ্য দেখা যায় ।
(গ) পূর্ব হিমালয়ের ৩০০০ মিটার থেকে ৪০০০ মিটার উচ্চতায় এবং পশ্চিম হিমালয়ের ২০০০ মিটার থেকে ৩০০০ মিটার উচ্চতায় পাইন, দেবদারু, ফার, স্প্রুস, এলম প্রভৃতি নরম কাঠের সরলবর্গীয় বৃক্ষের অরণ্য দেখা যায় ।
(ঘ) আরো ওপরের দিকে জুনিপার, রডোডেনড্রন, ন্যাক্সভমিকা প্রভৃতি আল্পীয় তৃণভূমি দেখা যায় । শক্ত কাঠ আসবাবপত্র ও গৃহনির্মাণ এবং নরম কাঠ দেশলাই প্রস্তুত ও জ্বালানির কাজে ব্যবহার করা হয় ।
চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভূমি [Evergreen Forest]:- ভারতের যে সমস্ত অঞ্চলে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২০০ সেন্টিমিটারের বেশি, সেখানে চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভুমি দেখা যায় । অত্যাধিক বৃষ্টিপাতের জন্য এখানকার গাছপালা সারাবছরই সবুজ পাতায় ভরা থাকে । চিরহরিৎ শব্দের অর্থ হল চির সবুজ । শিশু, গর্জন, রোজউড, মেহগিনি, চাপলাস, বোগানোমা, নাহার, লোহাকাঠ ইত্যাদি প্রধান বৃক্ষ ছাড়া মাঝে মাঝে রবার, বাঁশ ও আবলুস বৃক্ষও দেখা যায় । এসব কাঠ খুবই শক্ত ও ভারি । এগুলি গৃহনির্মাণ ও আসবাবপত্রের জন্য ব্যবহৃত হয় । পশ্চিম ঘাট ও পূর্ব ঘাট পর্বতমালা, পূর্বাঞ্চল, অরুণাচল, অসম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ওড়িশার বৃষ্টিবহুল অংশে এই বনভুমি দেখা যায় । পশ্চিমঘাট পর্বতাঞ্চল বা হিমালয় পর্বতাঞ্চল হল ভারতের একটি চিরহরিৎ অরণ্য অঞ্চল ।
পর্ণমোচী বৃক্ষের বনভূমি [Deciduous woodland]:- ভারতের যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১০০ সেন্টিমিটার থেকে ২০০ সেন্টিমিটার, সেখানে পর্ণমোচী বৃক্ষের অরণ্য দেখা যায় । এই সব বৃক্ষ তার পাতাগুলি নির্দিষ্ট সময়ে মোচন করে অর্থাৎ পাতাগুলি ঝরে যায় আবার নতুন পাতা জন্মায় । শাল, সিমুল, সেগুন, জারুল, মহুয়া, পলাশ, শিরিস, বট, অশ্বত্থ, কুসুম, আম, কাঁঠাল প্রভৃতি পর্ণমোচী বৃক্ষের উদাহরণ । এদের মধ্যে কোনও কোনও গাছের ফল খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয় । উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমঘাট পর্বতমালা প্রভৃতি অঞ্চলে পর্ণমোচী বৃক্ষের বনভুমি দেখা যায় ।
গুল্ম ও তৃণ অঞ্চল [Shrub and Grass Areas] :- ভারতের যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৫০ সেন্টিমিটার থেকে ১০০ সেন্টিমিটার, সেখানে বড় গাছ না জন্মে তৃণ বা গুল্মের জন্ম হয় । ভারতে সাবাই, কাশ, মঞ্জু ইত্যাদি জাতীয় ঘাস কাগজ প্রস্তুত করতে প্রযোজন হয় এবং অন্যান্য ঘাস ঘর ছাওয়ার কাজে লাগে । আরাবল্লীর পূর্বাংশ, গুজরাট, পশ্চিমঘাট পর্বতমালার বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে এই বনভুমি দেখা যায় ।
মরু অঞ্চলের উদ্ভিদ [Desert plant]:- ভারতের যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৫০ সেন্টিমিটারের কম এবং উত্তাপ খুব বেশি, সেখানে জলের অভাবে ক্যাকটাস বা কাঁটাজাতীয় গাছ জন্মায় । বাবলা, ফনিমনসা, তেশিরা প্রভৃতি হল ভারতের উল্লেখযোগ্য কাঁটা জাতীয় গাছ । অপেক্ষাকৃত আর্দ্র অঞ্চলে বুনো খেজুর, তাল, বেবি প্রভৃতি উদ্ভিদ দেখা যায় ।
ম্যানগ্রোভ বনভুমি [Mangrove Forest] :- নদীর বদ্বীপ অঞ্চল ও অন্যান্য নিচুস্থান, যেখানে সমুদ্রের লোনা জল প্রবেশ করে, সেইসব অঞ্চলে যে বনভুমির সৃষ্টি হয় তাকে ম্যানগ্রোভ বনভুমি বলে । ম্যানগ্রোভ জাতীয় গাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল— এই সব গাছের শিকড় নদীর জোয়ারের সময় শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার জন্য মাটি ফুঁড়ে উপরে ওঠে, একে শ্বাসমূল বলে । এছাড়া কান্ডকে সোজাভাবে ধরে রাখার জন্য এইসব গাছে ঠেসমূলও দেখা যায় । পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণে অবস্থিত সুন্দরবন হল ভারতের একটি উল্লেখযোগ্য ম্যানগ্রোভ অরণ্যের উদাহরণ । এছাড়া ভারতের গঙ্গা, মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা প্রভৃতি নদীর বদ্বীপ অঞ্চল, আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নিম্নউপকূল ভাগ, কাম্বে উপসাগরের নিম্ন জলাভূমিতে ম্যানগ্রোভ অরণ্য দেখা যায় । ম্যানগ্রোভ অরণ্যের গাছগুলোর মধ্যে সুন্দরী, গরান, গেঁও, ক্যাওড়া, হোগলা, গোলপাতাপ্রভৃতি উল্লেখযোগ্য । এই বনের কাঠ সাধারণত নৌকো ও গৃহনির্মাণের প্রধান কাঁচামাল অথবা জ্বালানিরূপে ব্যবহৃত হয় । তাছাড়া এই বনভূমিতে মধু ও মোম পাওয়া যায় ।
ভারতে বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা [Requirements of Preservation of Indian Forest]:- জনজীবনে বনভূমির প্রভাব অপরিসীম । প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নান রকম উপকার বনভূমি থেকে পাওয়া যায়— যেমন
(১) আবহাওয়া ও জলবায়ুর ভারসাম্য [Balance between Weather and climate ]:- বনভূমি আবহাওয়া ও জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষা করে । দিনের বেলা গাছেরা নিজেদের সালোকসংশ্লেষের প্রয়োজনে প্রাণীজগতের পক্ষে দূষিত বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড শোষন করে এবং প্রাণীজগতের অশেষ কল্যান সাধন করে । বনভূমি পরিবেশকে দুষণ মুক্ত রাখতে সাহায্য করে । শহরাঞ্চলে প্রধানত এই কারণেই বৃক্ষ রোপন করা হয় ।
(২) ভূমিক্ষয় রোধ [Prevention of Land Erosion]:- বনভূমি ভূমিক্ষয় প্রতিরোধ করে । গাছেরা নিজেদের শিকড়ের সাহায্যে মাটিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে বৃদ্ধি পায় । এতে ভূমিক্ষয় নিরারণ হয় ।
(৩) মরুভূমির প্রসার রোধ [Prevention of the spread of the Desert] :- বনভূমি মরুভূমির প্রসার রোধে সাহায্য করে । বনভূমির উপস্থিতির ফলে ভূমিক্ষয় বন্ধ হয়ে মরুভূমির প্রসার রোধ করে ।
(৪) মৃত্তিকার উর্বরতা বৃদ্ধি [Enrichment of Soil fertility] :-বনভূমি মৃত্তিকার উর্বরতা বৃদ্ধি করে । বনভূমির গাছেদের পাতা, ফুল, মূল, কান্ড প্রভৃতি পচে মৃত্তিকার উর্বরতা বাড়ায় ।
(৫) বৃষ্টিপাত [ Rainfall ] :- বনভূমি বৃষ্টিপাতে সাহায্য করে । গাছের প্রস্বেদন প্রক্রিয়ার ফলে বাষ্পীভবনের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বনভূমি অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে ।
(৬) অর্থকরী দিক [Economic aspects ] :- বনভূমি মানুষের অর্থকরী দিক থেকেও লাভজনক । বনভূমি থেকে আহরণ করা ফলমূল, মধু, কাঠ এবং বিভিন্ন ধরনের বনজ সম্পদ মানুষকে জীবিকা নির্বাহ করতে সাহায্য করে ।
(৭) জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষা [Maintain the balance of Species]:- বনভূমি জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষা করে । বিভিন্ন জীবজন্তুর আশ্রয় স্থল ও বাসভূমি হওয়ায় বনভূমি জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষা করে ।
এই সব কারণের জন্য ভারতবাসীদের নিজেদের স্বার্থেই ভারতে বনভূমি সংরক্ষণ করা একান্ত প্রয়োজন ।
সামাজিক বন সৃজন [Social Forestation] :- সমাজের মঙ্গলের জন্য, অর্থাৎ পরিবেশের সুস্থতা, জীব জগতের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং জনসাধারণের চাহিদা পূরনের জন্য জনগণের সহায়তায় বন সৃজন করা হলে, তাকে সামাজিক বন সৃজন বলে ।
সামাজিক বন সৃজন তথা বৃক্ষরোপণে ভারতের সাধারন মানুষকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে । কারণ — বনভূমির বৃদ্ধির ফলে পরিবেশের সুস্থতা, জীবজগতের কল্যাণমূলক উদ্দেশ্য সাধিত হয় । কিন্তু ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, কৃষিজমির পরিমাণ বৃদ্ধি, শিল্পের প্রসার, অবৈজ্ঞানিক বৃক্ষচ্ছেদন, ব্যাপক পশুচারণ, ঝুমচাষ প্রভৃতির ফলে বনভুমির পরিমাণ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে, ফলে পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে । এই কারণে সরকার দূষণমুক্ত, নির্মল পরিবেশ বৃদ্ধির জন্য বৃক্ষরোপণের ওপর জোর দিয়েছেন । বর্তমানে সরকার বিভিন্ন পৌরসভা ও পঞ্চায়েতগুলির মাধ্যমে বৃক্ষরোপণের ওপর ব্যাপক গুরুত্ব আরোপ করেছেন । এই উদ্দেশ্যে প্রতিবছর বন মহোৎসব কর্মসূচি, ‘একটি শিশু—একটি গাছ’ প্রকল্প প্রভৃতি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে । অর্থাৎ সাধারন মানুষকে বৃক্ষরোপণে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে ।
ভারতের সামাজিক বন সৃজনের ঘোষিত কর্মসূচীগুলো হল —
(১) পতিত ও অব্যবহৃত জমিতে গাছ লাগানো,
(২) গ্রামবাসীদের রান্না ও অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যবহার্য কাঠ সরবরাহকারী বৃক্ষরোপণ,
(৩) জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের দু-পাশে ছায়াপ্রদায়ী বৃক্ষরোপণ,
(৪) রেললাইন, খাল, হ্রদ ও পুকুরের ধারে ধারে বৃক্ষরোপণ এবং
(৫) জনসাধারণের দৃষ্টি নন্দন বৃক্ষরোপণ ।
ভারতের অরণ্য গবেষণাগার [ Indian Forest Research Institution ] ভারতের অরণ্য গবেষণাগারটি উত্তরপ্রদেশের দেরাদুনে অবস্থিত । বনভুমির উন্নতি ও বনজ সম্পদের সঠিক ব্যবহারের জন্য এখানে নানান ধরনের গবেষণা করা হয় ।
1. তিনটি চিরসবুজ গাছের নাম লেখ।
উঃ শিশু, গর্জন ও তুন,
2. পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিমঢালে কী জাতীয় অরণ্য আছে?
উঃ চিরহরিৎ বা চিরসবুজ অরণ্য।
3. কয়েকটি পর্ণমোচী বৃক্ষের নাম লেখ।
উঃ শাল, সেগুন, পলাশ, শিরীষ, কুসুম, মহুয়া প্রভৃতি।
4. কী থেকে গালা উৎপন্ন হয়?
উঃ লাক্ষা থেকে।
5. ভারতের পর্ণমোচী অরণ্যের অপর নাম কী?
উঃ মৌসুমী অরণ্য।
6. পশ্চিমবঙ্গের সমভূমি অঞ্চলে কী জাতীয় বৃক্ষ জন্মায়?
উঃ পর্ণমোচী বৃক্ষ।
7. পাইন গাছের বিস্তৃত অরণ্য ভারতের কোন অঞ্চলে আছে?
উঃ ভারতের পশ্চিম হিমালয়ের ৯০০ থেকে ২০০০ মিটার উচ্চতায়।
8. ভারতের মোট কত শতাংশ জমিতে অরণ্য আছে?
উঃ ২৪.১৬ শতাংশ।(২০১৫)
9. ভারতের জ্বালানীর প্রধান উৎস কী?
উঃ কাঠ।
10. বনভূমি সংরক্ষণের প্রধান উপায় কী?
উঃ যথেচ্ছভাবে বন সংহার রোধ এবং বনসৃজন বা বৃক্ষরোপণ।
11. ভারত সরকারের অরণ্য গবেষণাগারটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ উত্তরপ্রদেশের দেরাদুনে।
12. দাবানল কী?
উঃ গাছে গাছে ঘর্ষণের ফলে উৎপন্ন অরণ্য ধ্বংসকারী আগুন।
13. ভারতের সরলবর্গীয় অরণ্য কোথায় দেখতে পাওয়া যায়?
উঃ পূর্ব হিমালয়ে ২৫০০ থেকে ৪০০০ মিটার উচ্চতায় এবং পশ্চিম হিমালয়ের ২০০০ থেকে ৩২০০ মিটার উচ্চতায়।
14. সুন্দরী গাছের অরণ্য ভারতের কোথায় দেখতে পাওয়া যায়?
উঃ পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ অঞ্চলের সুন্দরবন অরণ্যে।
15. ভারতের কোন রাজ্যে বনভূমির পরিমাণ সর্বাধিক?
উঃ মধ্যপ্রদেশে।
16. ম্যানগ্রোভ অরণ্য ভারতের কোন অঞ্চলে দেখা যায়?
উঃ গাঙ্গেয় ব-দ্বীপে সুন্দরবন অঞ্চলে।
17. ভারতের মরু অঞ্চলে কী ধরণের উদ্ভিদ জন্মায়?
উঃ ঘাস, ক্যাকটাস, ফণিমনসা, বাবলা প্রভৃতি জেরোফাইটিক প্ল্যান্টস।
18. ভারতের একটি ম্যানগ্রোভ অরণ্যের নাম কর।
উঃ গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের দক্ষিণপ্রান্তে অবস্থিত সুন্দরবন।
1. ভারতের বৃহত্তম শহরটির নাম কী? এর লোকসংখ্যা কত?
উঃ মুম্বাই। লোকসংখ্যা – ১২,৪৪২,৩৭৩ জন (২০১১)।
2. কাণ্ডালা শহরের পশ্চাৎভূমিতে অবস্থিত দুটি রাজ্যের নাম লেখ।
উঃ গুজরাত, রাজস্থান।
3. কলকাতা কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ হুগলী নদীর তীরে।
4. মার্মাগাঁও বন্দর কোথায় অবস্থিত?
উঃ আরবসাগরের তীরে জুয়ারি নদীর মোহনায়।
5. ভারতের গভীরতম বন্দরটির নাম কী?
উঃ বিশাখাপত্তনম।
6. পূর্ব ভারতের বৃহত্তম তথা সর্বাধিক গুরুত্বপুর্ণ বন্দরটির নাম কী?
উঃ কলকাতা।
7. পূর্ব উপকূলে অবস্থিত যেকোন দুটি প্রধান বন্দরের নাম কর।
উঃ বিশাখাপত্তনম, চেন্নাই।
8. মহারাষ্ট্রের দুটি উল্লেখযোগ্য বন্দরের নাম কর।
উঃ মুম্বাই ও জওহরলাল নেহেরু বন্দর।
9. ভারতের পশ্চিম উপকূলের কোন বন্দরটি সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ?
উঃ মুম্বাই।
10. কোন বন্দরকে ভারতের প্রবেশ বন্দর বলা হয়?
উঃ মুম্বাই বন্দরকে।
11. মাদ্রাজ বন্দর কোথায় অবস্থিত?
উঃ তামিলনাড়ু রাজ্যে।
12. নগর কাকে বলে?
উঃ যেসব শহরের লোকসংখ্যা ১ লক্ষের বেশি।
13. ভারতের বৃহত্তম নগরটির নাম কী?
উঃ মুম্বাই।
14. মহানগর কাকে বলে?
উঃ যেসব শহরের লোকসংখ্যা ১০ লক্ষের বেশি।
15. ভারতে কয়টি মহানগর আছে?
উঃ ২৩ টি।
16. ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটির নাম কী?
উঃ কলকাতা।
17. কোন শহরকে ভারতের রোম বলা হয়?
উঃ দিল্লীকে।
18. কোন শহরকে হ্রদের শহর বলা হয়?
উঃ হায়দ্রাবাদকে।
19. ভারতের বৃহত্তম বা শ্রেষ্ঠ সামুদ্রিক বন্দরের নাম লেখ।
উঃ মুম্বাই।
20. ভারতের ম্যাঞ্চেস্টার কোন শহরকে বলা হয়?
উঃ আমেদাবাদকে।
21. কোন শহরকে গোলাপী শহর বলা হয়?
উঃ জয়পুরকে।
22. উদ্যান নগরী কোন শহরকে বলা হয়?
উঃ ব্যাঙ্গালোরকে।
23. কোন শহরকে ভারতের প্রবেশদ্বার বলে?
উঃ মুম্বাইকে।
24. ভারতের উচ্চতম শহর কোনটি?
উঃ লে বা লেহ।
25. প্রাচ্যের ভেনিস কাকে বলে?
উঃ কেরালার আলেপ্পী।
26. কেরালার রাজধানীর নাম কী?
উঃ তিরুবন্তপুরম।
27. ভূপাল কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ যমুনার উপনদী বেতোয়ার তীরে।
28. ভারতের কোন শহরের আর এক নাম সবুজ নগর?
উঃ চেন্নাই-এর।
29. ভারতের কেন্দ্রীয় ভেষজ গবেষণাগার কোথায় অবস্থিত?
উঃ লক্ষনৌ।
30. দক্ষিণ ভারতের কাশী কোন শহরকে বলা হয়?
উঃ মাদুরাইকে।
31. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রধান বন্দরের নাম কী?
উঃ পোর্টব্লেয়ার।
32. পারাদীপ বন্দরের প্রধান রপ্তানি দ্রব্য কোনটি?
উঃ লৌহ আকরিক।
33. নিউ ম্যাঙ্গালোর বন্দর কোন রাজ্যে অবস্থিত?
উঃ কর্ণাটক রাজ্যে।
34. ভারতে মোট কয়টি প্রধান বন্দর আছে?
উঃ ১১টি।
35. ভারতের পূর্ব উপকূলের একটি স্বাভাবিক পোতাশ্রয় যুক্ত বন্দরের নাম কর।
উঃ বিশাখাপত্তনম।
36. ভারতের পূর্ব উপকূলের একটি কৃত্তিম পোতাশ্রয় এর নাম কর।
উঃ চেন্নাই।
37. ভারতের শুল্কমুক্ত বন্দরটির নাম লেখ।
উঃ কাণ্ডালা।
38. ভারতের একটি সামরিক শহরের নাম লেখ।
উঃ মীরাট।
39. হুগলী শিল্পাঞ্চলের অপর নাম কী?
উঃ কলকাতা শিল্পাঞ্চল।
40. হুগলী শিল্পাঞ্চল পশ্চিমবঙ্গের কোন কোন জেলায় বিস্তার লাভ করেছে?
উঃ কলকাতা, ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলী, নদীয়া জেলায়।
41. হুগলী শিল্পাঞ্চলের প্রধান শিল্পটির নাম কী?
উঃ পাট শিল্প।
42. হুগলী শিল্পাঞ্চলের কোথায় জাহাজ নির্মাণ কারখানা আছে?
উঃ গার্ডেন রীচ।
43. ত্রিবেণী কোন শিল্পের জন্য বিখ্যাত?
উঃ কাগজ শিল্প।
44. হুগলী শিল্পাঞ্চলের একটি কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্রের নাম কর।
উঃ বেলঘরিয়া।
45. হুগলী শিল্পাঞ্চলের কোথায় অ্যালুমিনিয়াম কারখানা আছে?
উঃ বেলুড়-এ।
46. হুগলী শিল্পাঞ্চলের কোথায় মোটরগাড়ি নির্মাণ কারখানা আছে?
উঃ হিন্দমোটরে।
47. হুগলী শিল্পাঞ্চলের প্রধান দুটি শিল্পের নাম কর।
উঃ পাটশিল্প ও ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প।
48. হুগলী শিল্পাঞ্চল কোথায় অবস্থিত?
উঃ নিম্ন গঙ্গা সমভূমির দক্ষিণাংশে হুগলী শিল্পাঞ্চল অবস্থিত।
49. পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলায় হলদিয়া অবস্থিত?
উঃ পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়।
50. হলদিয়া শিল্পাঞ্চল কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ হুগলী ও হলদি নদীর সংযোগস্থলে।
51. বর্তমানে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের প্রধান শিল্পটির নাম কী?
উঃ খনিজতেল শোধন।
52. হলদিয়া ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের অন্য একটি শিল্পাঞ্চলের নাম কর।
উঃ হুগলী শিল্পাঞ্চল।
53. কোন অঞ্চলকে ভারতের খনিজ ভাণ্ডার বলা হয়?
উঃ ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলকে।
54. ছোটনাগপুর মালভূমির সবচেয়ে উঁচু শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ পরেশনাথ পাহাড় ১৩৬৬ মিটার)।
55. পশ্চিমবঙ্গের কোন অংশ ভূ-গঠনের দিক দিয়ে ছোটনাগপুর মালভূমির অন্তর্গত?
উঃ পুরুলিয়া জেলার মালভূমি।
56. ছোটোনাগপুর মালভূমির মোট আয়তন কত?
উঃ ৮৭,০০০ বর্গ কিমি।
57. করণপুরা কেন বিখ্যাত?
উঃ কয়লাখনির জন্য বিখ্যাত।
58. ছোটনাগপুর মালভূমির শ্রেষ্ঠ অভ্র উত্তোলন ক্ষেত্রটির নাম কী?
উঃ হাজারিবাগ কেলার কোডার্মা।
59. জামশেদপুর কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উঃ সুবর্ণরেখা ও করখাই নদীর মিলনস্থলে।
60. ছোটনাগপুর মালভূমিতে অবস্থিত দুটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ বোকারো ও চন্দ্রপুরা।
61. ছোটনাগপুর মালভূমিতে অবস্থিত দুটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ তিলাইয়া ও মাইথন।
62. ছোটনাগপুর মালভূমির কোথায় ইউরেনিয়াম পাওয়া যায়?
উঃ সিংভূম জেলার যদুগোডায়।
63. ছোটনাগপুর মালভূমির কোথায় তামা পাওয়া যায়?
উঃ সিংভূম জেলার মোসাবনি, ধোবানি, রাকায়।
64. ছোটনাগপুর মালভূমির দুটি আকরিক লৌহ উত্তোলন কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ সিংভুম জেলার গুয়া ও নোয়ামুণ্ডি।
65. ছোটনাগপুর মালভূমির কোথায় বক্সাইট উত্তোলিত হয়?
উঃ বিহারের রাঁচির কাছে লোহারডাগা ও পালামৌ জেলায়।
66. বিহারের ছোটনাগপুর মালভূমির বিখ্যাত সার উৎপাদন কেন্দ্রটির নাম কী?
উঃ সিন্ধ্রি।
67. ছোটনাগপুর মালভূমিতে জন্মায় এরকম কয়েকটি মূল্যবান গাছের নাম কর।
উঃ শাল, শিমূল, পলাশ, মহুয়া, সেগুন, খয়ের, কুসুম প্রভৃতি।
68. ছোটনাগপুর মালভূমির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ লৌহ-ইস্পাত কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ জামশেদপুর।
69. ছোটনাগপুর মালভূমির বনভূমি কী উৎপাদনের জন্য ভারত বিখ্যাত?
উঃ লাক্ষা।
70. গুজরাজ্যের মোট আয়তন কত?
উঃ ১,৯৬,০২৪ বর্গ কিমি।
71. গুজরাট রাজ্যে মোট কয়টি জেলা আছে?
উঃ ৩৩টি জেলা আছে।
72. কত সালে গুজরাট রাজ্যটি গঠিত হয়?
উঃ ১লা মে ১৯৬০ সালে।
73. গুজরাটের সর্বোচ্চ গিরি শৃঙ্গের নাম কী? এর উচ্চতা কত?
উঃ গিরনাথ পাহাড়ের গোরকনাথ শৃঙ্গ। উচ্চতা- ১১১৭ মিটার।
74. নর্মদা ও তাপ্তী নদী কোথায় পড়েছে?
উঃ খাম্বাত উপসাগরে।
75. সবরমতী ও মাহী নদী কোথায় পড়েছে?
উঃ খাম্বার উপসাগরে।
76. গুজরাটের একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের নাম কর।
উঃ খনিজতেল।
77. গুজরাটের দুটি সেচ প্রকল্পের নাম লেখ।
উঃ উকাই ও মাহী প্রকল্প।
78. গুজরাটের দুটি উল্লেখযোগ্য বস্ত্র শিল্পকেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ আমেদাবাদ ও সুরাট।
79. গুজরাটের দুটি বন্দরের নাম লেখ।
উঃ কান্ডালা ও পোরবন্দর।
80. গুজরাটের রাজধানীর নাম কী?
উঃ গান্ধীনগর।
81. গুজরাটের বৃহত্তম শহরটির নাম কী?
উঃ আমেদাবাদ।
82. ভারতের একমাত্র কোন অরণ্যে সিংহ দেখা যায়?
উঃ গুজরাটের গির অরণ্যে।
83. গুজরাটের একটি প্রধান কৃষিজ ফসলের নাম কর।
উঃ তুলো।
84. বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জের নাম কর।
উঃ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
85. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানীর নাম কী?
উঃ পোর্টব্লেয়ার।
86. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
উঃ স্যাডেল পিক।
87. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উপজাতিদের প্রধান উপজীবিকা কী?
উঃ মৎস্য শিকার, পশুশিকার।
88. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে কী জাতীয় বনভূমি দেখা যায়?
উঃ ক্রান্তীয় চিরসবুজ বনভূমি।
89. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের একটি শিল্পের নাম লেখ।
উঃ কাঠ শিল্প।
90. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দুটি আগ্নেয়গিরির নাম লেখ।
উঃ ব্যারেন ও নারকোন্দাম।
91. আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রধান বন্দরটির নাম কী?
উঃ পোর্টব্লেয়ার।
92. ভারতের দক্ষিণতম স্থলবিন্দুর নাম কী?
উঃ পিগম্যালিয়ান পয়েন্ট বা ইন্দিরা পয়েন্ট।
93. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের মোট আয়তন কত?
উঃ প্রায় ৩ লক্ষ বর্গ কিমি।
94. দাক্ষিণাত্যের লাভা অঞ্চলকে কী বলে?
উঃ ডেকান ট্র্যাপ।
95. দাক্ষিণাত্যের লাভা অঞ্চলটি কী জাতীয় শিলা দিয়ে গঠিত?
উঃ ব্যাসল্ট জাতীয় শিলায়।
96. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত একটি নদীর নাম লেখ।
উঃ গোদাবরী।
97. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের পশ্চিমসীমায় কোন পর্বত শ্রেণি অবস্থিত?
উঃ পশ্চিমঘাট পর্বতশ্রেণি।
98. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নাম লেখ।
উঃ কয়না ও খোপালি।
99. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের দুটি তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের নাম লেখ।
উঃ বল্লারপুর ও ভুসোয়াল।
100. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের দুটি উল্লেখযোগ্য কৃষিজ ফসলের নাম লেখ।
উঃ তুল এবং আখ।
101. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের দুটি উল্লেখযোগ্য শিল্পের নাম লেখ।
উঃ বস্ত্রশিল্প, চিনি শিল্প।
102. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের দুটি উল্লেখযোগ্য খনিজ দ্রব্যের নাম লেখ।
উঃ আকরিক লোহা ও ম্যাঙ্গানিজ।
103. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহরটির নাম কী?
উঃ পুণা।
104. দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ও একটি বস্ত্র শিল্প কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পকেন্দ্র – নাসিক
বস্ত্রশিল্পকেন্দ্র – শোলাপুর।
105. ভারতীয় পাটজাত দ্রব্যের একটি প্রধান আমদানীকারক দেশের নাম কর।
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র।
106. ভারতের ম্যাঞ্চেস্টার কাকে বলা হয়?
উঃ আমেদাবাদকে।
107. কোন সামুদ্রিক প্রণালী আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে বিভাজন রেখা হিসাবে চিহ্নিত?
উঃ টেন (১০) ডিগ্রী চ্যানেল।
108. আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কোন দ্বীপে সম্প্রতি অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে?
উঃ ব্যারেন দ্বীপে।
ভারতের শিল্প:-এশিয়া মহাদেশের শিল্পোন্নত দেশগুলির মধ্যে ভারতের স্থান তৃতীয় । ভারতবর্ষ অতি প্রাচীনকাল থেকেই শিল্পসমৃদ্ধ । স্বাধীনতার পরবর্তী যুগে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে ভারতে শিল্পের ক্ষেত্রে নবযুগের সূচনা হয় । ফলে বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত দ্রব্যসামগ্রী বিদেশে রপ্তানি করাও সম্ভব হয়েছে । এখানে শুধুমাত্র (১) কার্পাস বয়ন শিল্প, (২) পাট শিল্প, (৩) লৌহ ও ইস্পাত শিল্প এবং (৪) ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের আলোচনা করা হচ্ছে ।
ভারতের লৌহ-ইস্পাত শিল্প [Iron and Steel Industry of India] :- লৌহ-ইস্পাত শিল্পের উল্লেখযোগ্য কাঁচামাল হল : (i) আকরিক লোহা, (ii) কয়লা, (iii) ম্যাঙ্গানিজ, (iv) চুনাপাথর, (v) ডলোমাইট, (vi) ক্রোমিয়াম, (vii) টাংস্টেন, (viii) নিকেল, (ix) প্রচুর বিদ্যুৎ, (x) অপর্যাপ্ত জল ।
লৌহ-ইস্পাত শিল্পের অনুকূল ভৌগোলিক অবস্থান : কোনও স্থানে বৃহদায়তন লৌহ-ইস্পাত কারখানা স্থাপনের জন্য প্রয়োজন : (i) লৌহ-ইস্পাত শিল্পের প্রধান উপাদান আকরিক লোহা ও কয়লা খনির নৈকট্য, (ii) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ ম্যাঙ্গানিজ, চুনাপাথর, ডলোমাইট, ক্রোমিয়াম, টাংস্টেন ও নিকেল খনির নৈকট্য ও সহজ লভ্যতা, (iii) অপর্যাপ্ত জল সরবরাহ, (iv) অত্যাধুনিক কারিগরি ও প্রযুক্তি জ্ঞান, (v) ভারী কাঁচামাল ও ইস্পাত পরিবহনের উপযোগী ভালো রাস্তাঘাট ও রেল যোগাযোগ, (vi) সুলভ, দক্ষ ও শৃঙ্খলাপরায়ণ শ্রমিকের যোগান, (vii) আমদানি ও রপ্তানির সুবিধার জন্য বন্দরের নৈকট্য, (viii) কঠোর শ্রমের উপযোগী জলবায়ু, (ix) মূলধনের প্রাচুর্য, (x) দক্ষ পরিচালক, (xi) রাজনৈতিক পরিবেশের সুস্থিতি এবং (xii) লৌহ-ইস্পাত শিল্পের চাহিদা ।
♦ প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কালে (১৯৫১ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ) ভারতের লৌহ-ইস্পাত শিল্পে বিশেষ উন্নতি হয় নি । এই সময় বেসরকারি মালিকানাধীন জামসেদপুর ও বার্ণপুর ইস্পাত কারখানা দুটির সম্প্রসারণ এবং উন্নয়ন করা হয়েছিল ।
♦ দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কালে (১৯৫৬ সাল থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত ) ভারতের লৌহ-ইস্পাত শিল্পের প্রকৃত উন্নতি শুরু হয় । এই সময়েই ভারত সরকারের উদ্যোগে সরকারি মালিকানায় (i) পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুর, (ii) ওড়িশার রাউরকেল্লা এবং (iii) ছত্রিশগড়ের ভিলাই কারখানা তিনটি স্থাপিত হয় ।
♦ তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কালে (১৯৬১ সাল থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ) সরকারি উদ্যোগে এবং সোভিয়েত রাশিয়ার সহযোগিতায় ঝাড়খন্ডের রাজ্যের বোকারোতে আরও একটি লৌহ ইস্পাত কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও এই সময়কালের মধ্যে এটির নির্মাণ কার্য শেষ করা সম্ভব হয়নি।
♦ চতুর্থ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কালে (১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত) (i) তামিলনাড়ুর সালেম, (ii) কর্ণাটকের বিজয়নগর এবং (iii) অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে তিনটি নতুন ইস্পাত কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয় । এই সময়ে বোকারো লৌহ-ইস্পাত কারখানায় উৎপাদন শুরু হয় ।
♦ পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কালে (১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ) দুর্গাপুর, ভদ্রাবতী ও সালেমে সংকর ইস্পাতের উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা করা হয় ।
♦ ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কালে (১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ) বোকারো ও ভিলাই ইস্পাত কারখানার সম্প্রসারণের কাজ হাতে নেওয়া হয় । এই সময়কালে ১৯৮২ সালে সালেমের সংকর ইস্পাত ও স্টেনলেস স্টিল কারখানাটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়, এছাড়া এই পরিকল্পনা কালে ওড়িশার দৈতারিতে নতুন একটি ইস্পাত কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও এটি এখনও গড়ে ওঠেনি ।
♦ সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কালে (১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ) বোকারো, ভিলাই ও জামসেদপুরকারখানা তিনটির সম্প্রসারণ এবং বিশাখাপত্তনমকারখানাটির প্রথম পর্যায়ের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয় ।
♦ অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কালে (১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ) সরকারি নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনে দেশে লৌহ-ইস্পাত কেন্দ্র স্থাপনে সরকারি অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তা বাতিল করা হয় এবং বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহিত করা হয় । এই সময় দুর্গাপুর, রাউরকেল্লা এবং জামসেদপুর কারখানা তিনটির আধুনিকীকরণের কাজ হাতে নেওয়া হয় । এছাড়া এই পরিকল্পনা কালে ১৯৯২ সালে বিশাখাপত্তনম লৌহ-ইস্পাত কারখানাটি উৎপাদন শুরু করে ।
ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প বলতে বিদ্যুৎ, কৃষি ও শিল্পে ব্যবহৃত ছোট-বড়ো ও হালকা ও ভারী যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে পরিবহণের যানবাহনসহ সমস্ত শিল্পকে বোঝায় । বিভিন্ন ধরনের সূক্ষ্ম ও ভারী যন্ত্রপাতি, রেল ইঞ্জিন ও ওয়াগন, জাহাজ, মোটরগাড়ি, মোটর সাইকেল ও স্কুটার, সাইকেল, ঘড়ি, পাখা প্রভৃতি ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের উদাহরণ ।
যানবাহন শিল্প: যানবাহন নির্মাণ শিল্প চার ভাগে বিভক্ত, যেমন, (ক) রেল ইঞ্জিন ও রেল বগি নির্মাণ শিল্প, (খ) মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্প, (গ) বিমানপোত (এরোপ্লেন) শিল্প এবং (ঘ) জাহাজ নির্মাণ শিল্প ।
(ক) রেল ইঞ্জিন নির্মাণ শিল্প :- ১৯৪৩ সালে তৎকালীন বিহারের জামসেদপুরে টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লোকোমোটিভ কোম্পানি ভারতের প্রথম রেল ইঞ্জিন তৈরি করে । বর্তমানেও এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রেল ইঞ্জিন তৈরি করা হয় । বর্তমানে দুটো সরকারি সংস্থা ভারতের অধিকাংশ রেল ইঞ্জিন তৈরি করে, যথা:- (১) চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস ও (২) ডিজেল লোকোমোটিভ ওয়ার্কস, বারাণসী
(১) চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস : পশ্চিমবঙ্গের চিত্তরঞ্জনে প্রতিষ্ঠিত এই রেল ইঞ্জিন কারখানায় আগে বাস্পীয় ইঞ্জিন তৈরি হত । ১৯৭১ সালের পর এখানে বাষ্পীয় ইঞ্জিন তৈরি করা হয় না । বর্তমানে এই কারখানায় বৈদ্যুতিক এবং ডিজেল রেল ইঞ্জিন তৈরি হয় ।
(২) ডিজেল লোকোমোটিভ ওয়ার্কস, বারাণসী :- উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে অবস্থিত এই রেল ইঞ্জিন কারখানায় ডিজেল রেল ইঞ্জিন তৈরি হয় ।
রেল বগি নির্মাণ শিল্প :- (i) তামিলনাড়ুর পেরাম্বুরে অবস্থিত সরকারি সংস্থা ‘ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি’ তে ভারতের অধিকাংশ যাত্রিবাহী রেল বগি তৈরি হয় । এছাড়া (ii) কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোরে ‘ভারত আর্থ মুভারস’ এবং (iii) পশ্চিমবঙ্গের ‘জেপস অ্যান্ড কোং’ নামে দুটো সরকারি সংস্থায়ও মালগাড়ি ও যাত্রিবাহী গাড়ি তৈরি হয় । বেসরকারিভাবে পশ্চিমবঙ্গের টেক্সম্যাকো কোম্পানিতেও রেল বগি তৈরি হয় ।
(খ) মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্প:- ভারতে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের মোটর গাড়ি, বাস, মিনিবাস, ট্রাক, জীপ, স্কুটার, মোটর সাইকেল প্রভৃতি তৈরি হয়, যথা: (১) কলকাতার কাছে হিন্দ মোটরে ‘হিন্দুস্থান মোটরস লিমিটেড’ এর কারখানা অ্যামবাসাডার ( পেট্রোল ও ডিজেল) ও কনটেসা গাড়ি এবং ট্রাক বাস, মিনিবাস তৈরি হয় । (২) মুম্বই শহরে “প্রিমিয়ার অটোমোবাইলস লিমিটেড” প্রিমিয়ার পদ্মিনী ( ফিয়াট - পেট্রোল ও ডিজেল) ও NE 118 গাড়ি এবং (৩) মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা লিমিটেড জীপগাড়ি ও ছোট ট্রাক তৈরি করে ; (৪) তামিলনাড়ুর চেন্নাই এ “ অশোক লেল্যান্ড লিমিটেড” বৃহদায়তন ট্রাক ও বাস তৈরি করে । (৫) ঝাড়খন্ডের জামসেদপুরে অবস্থিত “ টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড লোকোমোটিভ কোং” (টেলকো) ভারতের বিখ্যাত ট্রাক ও বাস তৈরির প্রতিষ্ঠান ; সম্প্রতি টেলকো ডিজেল চালিত মোটর গাড়ি ও জীপগাড়িও তৈরি করছে; (৭) হরিয়ানার কেন্দ্রীয় সরকার ও জাপানের সুজুকি কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত মারুতি উদ্যোগে এ মারুতি ৮০০, জেন, অল্টো এস্টিম প্রভৃতি গাড়ি এবং জিপসি নামে দ্রুতগামি জীপ গাড়ি তৈরি হচ্ছে; (৮) এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে ইন্দো জাপান সহযোগিতায় উত্তরপ্রদেশের সুরজপুরে ( ডি.সি.এম. টয়টা লিমিটেড) হালকা ধরনের মালবাহি ট্রাক তৈরি হছে । (৯) উত্তরপ্রদেশের লখনৌ (স্কুটারস ইণ্ডিয়া লিমিটেড) (১০) কানপুর (লোহিয়া লিমিটেড) (১১) হরিয়ানার ফরিদাবাদ (১২) মহারাষ্ট্রের পুনে ( বাজাজ লিমিটেড) (১৩) কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোর এবং (১৪) সরকারি উদ্যোগে অন্ধ্রপ্রদেশে (পি.এল. ১৭০) এবং গুজরাটে (নর্মদা ১৫০) স্কুটার তৈরি হয় । ভারত সরকারের উদার আর্থিক নীতির সুবাদে বর্তমানে ভারতে অত্যাধুনিক বিদেশি প্রযুক্তির সাহায্যে হোন্ডা, ওপেল, ফোর্ড, সিয়েলো, ল্যান্সার, হোন্ডাই, মার্টিজ এমনকি মার্সেডিজ বেঞ্জ গাড়িও তৈরি হছে ।
পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প :-যে শিল্প অশোধিত খনিজ তেল বা পেট্রোলিয়ামের বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য থেকে প্লাস্টিক, পলিথিন, কৃত্রিম সুতো, কৃত্রিম রবার, রং প্রভৃতি নানা ধরনের জিনিস উৎপাদন করা হয় তাকে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প বলে ।
পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের গুরুত্ব :- খনি থেকে যে অপরিশুদ্ধ তেল তোলা হয় তাকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় শোধন করতে হয় । খনিজ তেল পরিশোধনের বিভিন্ন পর্যায়ে ডিজেল, ভারি ডিজেল, পেট্রোল, গ্যাসোলিন, কেরোসিন, ন্যাপথা, মবিল, গ্রিস এবং বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য পাওয়া যায় । পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে খনিজ তেলের বিভিন্ন উপজাত দ্রব্যকে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়, যেমন খনিজ তেলের উপজাত দ্রব্য মোম থেকে মোমবাতি, প্যারাফিন (মোমবাতি তৈরি ও পালিস করার কাজে ব্যবহৃত হয়), অ্যাসফল্ট (রাস্তাঘাট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়), ন্যাপথা (এটি পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের একটি মুল উপজাত উপাদান) এবং ইথিলিন, বেঞ্জিন, প্রপলিন, বুটাডিন প্রভৃতি গুরুত্ব পূর্ণ রাসায়নিক যৌগ, বিটুমেন, কীটনাশক, ওষুধ, কৃত্রিম রবার, প্লাস্টিক, পলিমার, পি.ভি.সি., ফোম, রাসায়নিক আঠা, রাসায়নিক সার, টেরিলিন-পলিয়েস্টার প্রভৃতি কৃত্রিম সুতো, বৈদ্যুতিক দ্রব্য, টায়ার, পাইপ ডিটারজেন্ট, সাবান, রং, বার্নিশ, নান রকম সুগন্ধি দ্রব্য, মলম, ভেসলিন, ক্রিম, মাথার তেল, প্রভৃতি নানা রকম জিনিস তৈরি হয় ।
ভারতে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের অবস্থান :- ১৯৬৬ সালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন কার্বাইড মহারাষ্ট্রের ট্রম্বেতে ভারতের প্রথম পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প স্থাপন করে । এর পর সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গুজরাটের বরোদা, দাহেজ, হাজিরা, গান্ধার, জামনগর (ভারতের বৃহত্তম পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পকেন্দ্র) ও অসমের বঙ্গাইগাঁও, উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের আউরিয়া (সরকারি প্রতিষ্ঠান: গ্যাস অথরিটি অব ইণ্ডিয়া) এবং যৌথ উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় (হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস) একটি বিশাল পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্স গঠন করা হয়েছে । বর্তমানে মহারাষ্ট্রের অন্তত তিনটি অঞ্চলে নতুন পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প গড়ে উঠেছে, এগুলি হল- (১) রায়গড় জেলার নাগোথানে অঞ্চল ( ইণ্ডিয়া পেট্রোকেমিক্যাল কর্পোরেশন ); (২) থানে জেলা- (N.O.C.I.L.) এবং মুম্বাই -এর নিকটবর্তী চেম্বুর অঞ্চল (অসওয়াল অ্যাগ্রো ) ।
1. ভারতের কোন শিল্পকে সব শিল্পের মূল বলা হয়?
উঃ লৌহ-ইস্পাত শিল্পকে।
2. লোহা-ইস্পাত শিল্পের প্রধান কাঁচামাল কী?
উঃ কয়লা, আকরিক লোহা।
3. লোহা-ইস্পাত শিল্পে ম্যাঙ্গানিজ প্রয়োজন হয় কেন?
উঃ কঠিন ও ক্ষয়রোধকারী ইস্পাত উৎপাদনের জন্য লৌহ-ইস্পাত শিল্পে ম্যাঙ্গানিজ ব্যবহার করা হয়।
4. ভারতের একটি লোহা-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্রের নাম বল।
উঃ পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুর।
5. ভারতের একটি মিশ্র ইস্পাত উৎপাদন কেন্দ্রের কর।
উঃ তামিলনাড়ুর সালেম।
6. উৎপাদন ক্ষমতা অনুসারে বৃহত্তম লোহা-ইস্পাত কারখানার নাম কী?
উঃ বোকারো।
7. কোন নদীর তীরে রাউরকেল্লা লোহা-ইস্পাত কেন্দ্রটি অবস্থিত?
উঃ ব্রাহ্মণী নদীর তীরে।
8. ভারতের বৃহত্তম বেসরকারী লোহা-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্রের নাম কর।
উঃ বিহারের জামশেদপুর।
9. দক্ষিণ ভারতের একটি বৃহদায়তন লোহা-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ কর্ণাটকের ভদ্রাবতী।
10. ভারতের বৃহত্তম লোহা-ইস্পাত কারখানাটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ মধ্যপ্রদেশের ভিলাই।
11. ভারতের রূঢ় কাকে বলে?
উঃ দুর্গাপুরকে।
12. পশ্চিমবঙ্গের দুটি লোহা-ইস্পাত কারখানার নাম কর।
উঃ কুলটি-বার্নপুর ও বোকারো।
13. ভারতের একটি ভারী বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নির্মাণ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ মধ্যপ্রদেশের ভূপাল।
14. ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পকে কী কী ভাগে ভাগ করা যায়?
উঃ দুই ভাগে। যথা – ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প ও হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প।
15. ভারতের একটি ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি নির্মাণ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোর।
16. ভারতের একটি মোটরগাড়ি নির্মাণ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ কলকাতার কাছে অবস্থিত হিন্দমোটর।
17. ভারতের একটি রেলইঞ্জিন নির্মাণ কেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চিত্তরঞ্জন।
18. ভারতে প্রথম বিমান শিল্প কারখানা কোথায় গড়ে উঠেছে?
উঃ কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোর।
19. ভারতের বৃহত্তম জাহাজ নির্মাণ শিল্পকেন্দ্রের নাম লেখ।
উঃ অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম।
20. একটি সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানার নাম লেখ।
উঃ কলকাতার যাদবপুরের ন্যাশানাল ইনস্ট্রুমেন্টস লিমিটেড।
21. কার্পাস বয়ন শিল্পের প্রধান প্রধান কাঁচামাল কী?
উঃ কার্পাস বা তুলো।
22. ভারতে কার্পাস শিল্পের প্রধান কেন্দ্র কোনটি?
উঃ আমেদাবাদ।
23. ভারতের ম্যাঞ্চেষ্টার কাকে বলে?
উঃ আমেদাবাদকে।
24. ভারতের যেকোন দুটি কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্রের নাম কর।
উঃ মুম্বাই ও কোয়েম্বাটুর।
25. দক্ষিণ ভারতের বৃহত্তম বস্ত্র বয়ন শিল্পকেন্দ্রের নাম কী?
উঃ কোয়েম্বাটুর।
26. সুতি বস্ত্র উৎপাদনে বিশ্বে ভারতের স্থান কোথায়?
উঃ দ্বিতীয়।
27. সুতি বস্ত্র রপ্তানীতে ভারতের স্থান কোথায়?
উঃ দ্বিতীয়।
28. ভারত কোন কোন দেশে সুতি বস্ত্র রপ্তানি করে?
উঃ রাশিয়া, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, ইরাক, ইরান, জার্মানী, ইতালি, বেলজিয়াম প্রভৃতি দেশে।
29. ভারতে কার্পাস বয়ন শিল্পের একটি সমস্যা উল্লেখ কর।
উঃ উৎকৃষ্ট শ্রেণির দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলোর অভাব।
30. ভারতের প্রধান দুটি কার্পাস বয়ন শিল্প অঞ্চলের নাম কর।
উঃ পশ্চিমাঞ্চল-মহারাষ্ট্র ও গুজরাট,
দক্ষিণাঞ্চল-তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক ও কেরালা।
31. পাট শিল্পে বিশ্বে ভারতের স্থান কোথায়?
উঃ প্রথম।
32. পাট শিল্পের প্রধান কাঁচামাল কী?
উঃ কাঁচা পাট, রাসায়নিক দ্রব্য, মোম।
33. পাটজাত দ্রব্যের রপ্তানীতে বিশ্বে ভারতের স্থান কোথায়?
উঃ প্রথম।
34. পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পাট শিল্পাঞ্চল কোনটি?
উঃ হুগলী শিল্পাঞ্চল।
35. পশ্চিমবঙ্গের কোথায় পাটশিল্পের একদেশীভবন ঘটেছে?
উঃ হুগলী শিল্পাঞ্চলে।
36. ভারত কোন কোন দেশে পাট রপ্তানি করে?
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে।
37. ন্যাশানাল ইনস্ট্রুমেণ্ট কারখানাটি কোথায় অবস্থিত?
উঃ কলকাতার যাদবপুরে।
38. ভারতের কোথায় ডিজেল ইঞ্জিন নির্মাণের কারখানা আছে?
উঃ উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে।