কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস ডিজিজ ২০১৯) একটি নতুন ভাইরাসবাহিত রোগ যা নভেল করোনাভাইরাস নামক ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট।
জ্বর
শুকনো কাশি / গলাব্যথা
স্বাদ / গন্ধের অনুভূতি কমে যাওয়া
শ্বাসকষ্ট (নিউমোনিয়া) / বুকে চাপ ব্যাথা
ক্লান্তি / দুর্বলতা
এছাড়াও রোগীদের ডায়রিয়া, নাক বন্ধ বা সর্দি, এবং বমি বমি ভাব হতে পারে
তবে উপসর্গ না থাকলেও একজন ব্যাক্তি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হতে পারেন। প্রায় ৩৫% ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যাক্তির কোন দৃশ্যমান উপসর্গ দেখা যায় না, যার ফলে রোগী স্বাভাবিক জীবন-যাপন চালিয়ে যেতে পারে এবং অন্য অনেক মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে।
আক্রান্ত হবার পরে উপসর্গ তৈরি হতেও ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে এবং সে সময়েও আক্রান্ত ব্যাক্তি অন্য ব্যাক্তিকে সংক্রমিত করতে পারে।
এই ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে এবং বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়, যেমনঃ
আক্রান্ত ব্যাক্তির হাঁচি/কাশি, কফ/থুতু বা নিঃশ্বাস এর মাধ্যমে নিঃসৃত ভাইরাস বাতাসে ভেসে অন্য মানুষের শরীরে প্রবেশ করার মাধ্যমে
আক্রান্ত ব্যাক্তি বা তার স্পর্শ করা জিনিসপত্রের সরাসরি সংস্পর্শে আসলে (ভাইরাসটি মানবদেহের বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে)
মনে রাখবেন, কোন আক্রান্ত ব্যক্তি যে কোনও লক্ষণ প্রকাশ না করেও এই ভাইরাসের বাহক হতে পারে। এ অবস্থাতেও তাদের হাঁচি, কাশি, কফ বা থুতুর মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে।
অধিকাংশ (৮০%) ক্ষেত্রেই রোগটি নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। তবে শতকরা ২০ ভাগ ক্ষেত্রে এই রোগটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে এবং হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, ২০২০ সালের ৩রা মার্চ পর্যন্ত এই ভাইরাসের কারণে মৃত্যুর হার ছিল শতকরা ৩.৪ ভাগ। এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি রোগীদের বয়স ছিল ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে এবং শতকরা ৭৫ ভাগেরও বেশি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং ক্যানসার-জাতীয় রোগে ভুগছিলেন।
যেহেতু এটি অত্যন্ত সংক্রামক একটি রোগ , তাই এটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই খুব দ্রুত জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। উপরে উল্লেখিত উপসর্গবিহীন সংক্রমণও এর জন্য দায়ী। যুক্তরাষ্ট্রে ২ মাসের মধ্যে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০০ থেকে ১০ লক্ষে দাঁড়িয়েছে ।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে সাধারণ চিকিৎসা ব্যবস্থায় এতো বেশি সংখ্যক রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করাটা দুরূহ হয়ে ওঠে এবং জটিল রোগে আক্রান্ত রোগী সময়মতো চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করতে পারে।
এছাড়া, অন্যান্য গুরুতর রোগে (হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি) আক্রান্ত রোগী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নাও পেতে পারে, ফলে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায় ।
ইতিমধ্যে আমরা বাংলাদেশে দেখেছি যে, হাসপাতালে রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে এবং অনেকক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করছে। কাজেই প্রাথমিক পর্যায়ে বাসায় থেকে এবং এলাকার ভেতরে আপনার সহায়তা নিয়ে যথাযথ প্রাথমিক চিকিৎসা সবার আগে নিশ্চিত করা আবশ্যক।
* উপরের চিত্রগুলো নেওয়া হয়েছে বাডাস-এর অনলাইন কোর্স থেকে: http://diabetes-covid19.org/লক্ষণ-ঝুঁকি-ও-জটিলতা