সূর্য
সৌরজগতের কেন্দ্রের খুব কাছে অবস্থিত তারাটির নাম সূর্য।পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব আনুমানিক ১৪.৯৬ কোটি কিলোমিটার যাকে ১ নভো-একক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।তারার শ্রেণীবিভাগের একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। সেই অনুযায়ী G2V বিভাগে পড়ে।
প্রায় 5 বিলিয়ন বছর আগে মহাকাশে ভাসমান মৃত নক্ষত্র বা মৃত নক্ষত্রের কিছু গ্যাসীয় কণা এবং মৃত নক্ষত্রের অবশিষ্ট তরঙ্গ শক্তি থেকে সূর্য গঠিত হয়েছিল।
সূর্যের ভর সৌরজগতের মোট ভরের শতকরা ৯৯.৮৬৩২ ভাগ। সূর্যের ব্যাস প্রায় 13 লাখ 92 হাজার কিলোমিটার যা পৃথিবীর ব্যাসের 109 গুণ, ভর প্রায় 2×1030 কিলোগ্রাম যা পৃথিবীর ভরের 3 লাখ 30 হাজার গুণ। সূর্যের পরম মান ৪.৮m , পরিধি ৪.৩৭৩×১০৬ কিমি , পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল ৬.০৯×১০১৮ মি² , আয়তন ১.৪১×১০২৭ মি³ , ঘনত্ব১,৪০৮ কেজি/মি³ , পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫৭৮৫ কেলভিন। সূর্যের বয়স ৪৬০ কোটি বৎসর।
সূর্যের অবস্থান মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে ২৫,০০০ - ২৮,০০০ আলোক বর্ষ। আর এই দূরত্বে থেকেই এটি অবিরত ছায়াপথের কেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করছে। একবার ছায়াপথের কেন্দ্রের চারদিক দিয়ে সমগ্র পথ ঘুরে আসতে সূর্যের সময় লাগে ২২৫ - ২৫০ মিলিয়ন বছর। এর কক্ষপথীয় দ্রুতি ২১৭ কিমি/সে.। এ থেকে দেখা যায় সূর্য ১,৪০০ বছরে এক আলোক বর্ষ দূরত্ব এবং ৮ দিনে এক জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক (AU) দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে।
সূর্যের মধ্যে হাইড্রোজেন ৭৩.৪৬ %, হিলিয়াম ২৪.৮৫ %, অক্সিজেন ০.৭৭ %, কার্বন ০.২৯%, লোহা ০.১৬ %, নিয়ন ০.১২ %, নাইট্রোজেন ০.০৯%, সিলিকন ০.০৭ %, ম্যাগনেসিয়াম ০.০৫ %, সালফার ০.০৪ % রয়েছে ।
সূর্যের কেন্দ্র থেকে মোট ব্যাসার্ধের 20-25% পর্যন্ত অঞ্চলকে কোর বলা হয়। এই অঞ্চলের ঘনত্ব হল 150 গ্রাম/সেমি 3 (পানির ঘনত্বের 150 গুণ) এবং তাপমাত্রা প্রায় 136 লক্ষ কেলভিন। কিন্তু সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা মাত্র ৫৮০০ ডিগ্রি কেলভিন।
সূর্যে ভারী মৌলগুলোর মধ্যে রয়েছে অক্সিজেন, কার্বন, নিয়ন, লোহা ইত্যাদি।
সূর্যের হিলিয়ামের সাথে হাইড্রোজেনের অনুপাত নির্ণয় করে জানা যায় যে এটি তার জীবনের মাঝখানে রয়েছে। কিছু সময়ে এটি মূল স্রোত থেকে সরে যাবে এবং ক্রমশ বড়, উজ্জ্বল, শীতল এবং লাল হয়ে যাবে। এইভাবে, এটি 5 বিলিয়ন বছরের মধ্যে একটি লাল দানব হয়ে উঠবে। তখন এর আলোকিত শক্তি বর্তমানের তুলনায় কয়েক হাজার গুণ বেশি হবে।