সুরা ইখলাস পবিত্র কোরআনের ১১২ তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এর রুকু ১, আয়াত ৪। এই সুরায় তওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণার পর আল্লাহর সন্তানসন্ততি আছে বলে যে ভ্রান্ত ধারণা করা হয়, তার প্রতিবাদ করা হয়েছে। আল্লাহ সব অভাবের অতীত এবং তাঁর কোনো তুলনা নেই।
আবু সাঈদ উসমান ইবনে সাঈদ আল কুতুবি প্রদত্ত আঞ্চলিক রীতিতে পাঠ:
بِسۡمِ اِ۬للَّهِ اِ۬لرَّحۡمَٰنِ اِ۬لرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
পরম করুণাময় পরম দয়াময় আল্লাহর নামে
قُلۡ هُوَ ا۬للَّهُ اَحَدٌ
1 কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ্
১.বলো তিনি আল্লাহ (যিনি) অদ্বিতীয়
اَ۬للَّهُ اَ۬لصَّمَدُ
2 আল্লাহুস্ সামাদ্
২.আল্লাহ সবার নির্ভরস্থল
لَمۡ يَلِدۡ وَلَمۡ يُولَدۡ
3 লাম্ ইয়ালিদ্ ওয়ালাম্ ইউলাদ্
৩.তিনি কাউকে জন্ম দেননি ও তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি
وَلَمۡ يَكُن لَّهُۥ كُفُؤًا اَحَدٌۢ
4 ওয়ালাম্ ইয়াকুল্লাহু কুফুআন আহাদ
৪.আর তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।
মুশরিকরা হযরত মুহাম্মদ (স:) - কে আল্লাহ্ তা'আলার বংশ পরিচয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিল , যার জওয়াবে এই সূরা নাযিল হয়। অন্য এক বিবরণে আছে যে , মদীনার ইহুদিরা এ প্রশ্ন করেছিল। আবার কোনো কোনো বর্ণনায় রয়েছে যে , তারা আরও প্রশ্ন করেছিল- "আল্লাহ্ তা'আলা কিসের তৈরি ? স্বর্ণ-রৌপ্য নাকি অন্য কিছুর?" এর জওয়াবে সূরাটি অবতীর্ণ হয়েছে ৷[৮][৯]
অবিশ্বাসীরা হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে আল্লাহর বংশপরিচয় জিজ্ঞেস করেছিল, যার জবাবে এই সুরা নাজিল হয়। কোনো কোনো রেওয়ায়েতে আছে যে তারা আরও প্রশ্ন করেছিল, আল্লাহ তাআলা কিসের তৈরি—স্বর্ণ-রৌপ্য অথবা অন্য কিছুর? এর জবাবে সুরাটি অবতীর্ণ হয়েছে।
হজরত আয়েশা (রা.)–র কাছ থেকে এক রেওয়ায়েতে উল্লেখ আছে, এক যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ (সা.) একজন লোককে নেতা নিযুক্ত করে দেন, তিনি নামাজে ইমামতি করার সময় সুরা ফাতিহা এবং অন্য সুরা শেষে প্রতি রাকাতেই সুরা ইখলাস পড়তেন।
যুদ্ধ থেকে ফিরে লোকেরা এ নিয়ে অভিযোগ করলে তিনি লোকটিকে ডেকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করেন। লোকটি উত্তর দেন যে এই সুরায় তিনি আল্লাহর পরিচয় পান, তাই এই সুরাকে ভালোবাসেন। এ কথা শুনে রাসুল (সা.) বললেন, তাহলে আল্লাহও তোমাকে ভালোবাসেন।
হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.)–র বরাতে বলা হয়েছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তিনটি কাজ ইমানের সঙ্গে করতে পারবে জান্নাতের যেকোনো দরজা দিয়ে সে প্রবেশ করতে পারবে: ১. যে হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেবে। ২. যে গোপন ঋণ পরিশোধ করবে। ৩. যে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ১০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করবে। (তাফসিরে কাসির)