বাংলাদেশ অগ্নিবীর ডিজিটাল গ্রন্থাগার

ব্রাহ্মণ

ব্রাহ্মণ গ্রন্থ সনাতন ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। পবিত্র বেদের পরেই ব্রাহ্মণ, আরণ্যক, উপনিষদ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে বলে ধরা হয়। বেদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, উপাচার ও এদের বিনিয়োগ সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রদানকারী গ্রন্থসমূহ হল ব্রাহ্মণ গ্রন্থ। ' ব্রহ্মন্ ' শব্দের সাথে অণ্ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে ব্রাহ্মণ শব্দটি তৈরী হয়েছে শতপথ ব্রাহ্মণ ৭।১।১।৫ অনুযায়ী ব্রহ্ম অর্থ মন্ত্র ও ৩।১।৪।১৫ অনুযায়ী ব্রহ্ম অর্থ যজ্ঞ । বেদমন্ত্রসমূহের বিনিয়োগ ও ব্যাখ্যা প্রস্তুতকারক , যজ্ঞের ব্যাখ্যা ও বিবরণ প্রস্তুতকারক গ্রন্থই হলো ব্রাহ্মণ

পূর্ব মীমাংসা ২।১।৩৩ অনুযায়ী মন্ত্র ব্যতীত বৈদিক বাঙ্ময়ের অবশিষ্ট অংশই ব্রাহ্মণ । মন্ত্র নিত্য ও ঈশ্বরোক্ত । পবিত্র ৪ বেদ তথা মন্ত্র সংহিতা হলো ঋক্ , সাম ও যজুর্বেদ যারা পদ্য , গান ও গদ্যাত্মক অপরদিকে ব্রাহ্মণ গ্রন্থ সর্বদাই গদ্যাত্মক । 

বৈদিক যজ্ঞ, উপাচার বিধিসমূহের বর্ণনা ও ব্যাখায় ব্রাহ্মণ গ্রন্থের গুরুত্ব অপরিসীম। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় হিন্দু বিবাহের বিখ্যাত বাক্যটি এই ব্রাহ্মণ গ্রন্থ থেকেই নেয়া- 

যদেতদ্ হৃদয়ং তব তদস্তু হৃদয়ং মম। যদিদং হৃদয়ং মম তদস্তু হৃদয়ং তব।। 

(সামবেদীয় ছান্দোগ্য ব্রাহ্মণ,১ম প্রপাঠক,৩য় সূক্ত,শ্লোক ৯) 

অনুবাদঃ তোমার হৃদয় আমার হোক,আমার হৃদয় তোমার। 

ব্রাহ্মণ গ্রন্থসমূহে নানা যাজ্ঞিক উপাচারের বর্ণনার সাথে সাথে আছে রাজারাজড়াদের ইতিহাস, বিভিন্ন পৌরাণিক গল্প, রূপকথা। মনুষ্য রচিত গ্রন্থ বলে এতে বিভিন্ন রাজাদের জীবনের গল্প, বিভিন্ন ঐতিহাসিক ব্যক্তিদের কথা। তবে দুঃখজনক হলো অধিকাংশ ব্রাহ্মণ গ্রন্থ ই এখন পাওয়া যায় না। ব্রাহ্মণ গ্রন্থসমূহ একেকটি একেক সময়ে, একেকযুগে রচিত হয়েছে। দেখা গেছে কিছু ব্রাহ্মণগ্রন্থ ৯০০ খ্রিষ্টপূর্বে আবার কিছু ব্রাহ্মণগ্রন্থ ৫০০ খ্রিষ্টপূর্বে রচিত। বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্নজন কর্তৃক বিভিন্নসময়ে রচিত হওয়ায় এদের অনেকগুলোই এখন পাওয়া যায়না, অনেকগুলোই বিভিন্ন সময়ে বিকৃত হয়েছে, আবার অনেকগুলোই পাওয়া গেলেও এদের সম্পূর্ণ অংশ পাওয়া যায় না। স্বাভাবিকভাবেই মনুষ্যরচিত হওয়ায় এদের নির্দিষ্ট গাণিতিক ও বিজ্ঞানসম্মত সংরক্ষণপ্রণালী ছিলনা, আর এটিই এদের অনেকগুলোর হারিয়ে যাবার মূল কারণ। 

বর্তমানে এখনো আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে পাওয়া যায় এমন প্রধান প্রধান ব্রাহ্মণ গ্রন্থসমূহ হলো- * ঐতরেয় ব্রাহ্মণ (ঋগ্বেদ সম্বন্ধীয়) * কৌষিতকি ব্রাহ্মণ(ঋগ্বেদ সম্বন্ধীয়) * শতপথ ব্রাহ্মণ(যজুর্বেদ সম্বন্ধীয়) * মহাতাণ্ড্য ব্রাহ্মণ (সামবেদ সম্বন্ধীয়) * ছান্দোগ্য ব্রাহ্মণ (সামবেদ সম্বন্ধীয়, যার একটি অংশ ছান্দোগ্য উপনিষদ নামে পরিচিত) * গোপথ ব্রাহ্মণ (অথর্ববেদ সম্বন্ধীয়)

প্রধান ব্রাহ্মণসমূহ

শতপথ ব্রাহ্মণ (কাণ্ড ১-২)

অনুবাদক : শ্রীবিধুশেখর ভট্টাচার্য্য

ভাষা: বাংলা

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৫৬৪

সাইজ: এমবি

শতপথ ব্রাহ্মণ (কাণ্ড -)

অনুবাদক : রামকৃষ্ণ মিশন

ভাষা: বাংলা

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৪১

সাইজ: ২৪৪ এমবি

শতপথ-ব্রাহ্মণম্

অনুবাদক : পণ্ডিত গঙ্গাপ্রসাদ উপাধ্যায়

ভাষা: হিন্দি

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৭৪৭

সাইজ: ৪৯ এমবি

শতপথ ব্রাহ্মণ (মূল)

 

ভাষা: সংস্কৃত

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৪১৯

সাইজ: এমবি

গোপথ ব্রাহ্মণ

অনুবাদক : রামকৃষ্ণ মিশন

ভাষা: বাংলা

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৩৩৭

সাইজ: ২৫৩ এমবি

গোপথ ব্রাহ্মণ

অনুবাদক : পণ্ডিত ক্ষেমকরণদাস ত্রিবেদী

ভাষা: হিন্দি

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৬০২

সাইজ: ১২৪ এমবি

ঐতরেয় ব্রাহ্মণ

অনুবাদক : শ্রীরামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী

ভাষা: বাংলা

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৭৭৪

সাইজ: ৪১ এমবি

প্রধান ব্রাহ্মণসমূহ

আর্ষেয়-ব্রাহ্মণম্

অনুবাদক : শ্রীমাধবদাস সাংখ্যতীর্থ

ভাষা: বাংলা

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৭৩

সাইজ: এমবি

মন্ত্রব্রাহ্মণম্ (৫৯ পেজ হতে)

অনুবাদক : সত্যব্রত সামশ্রমী

ভাষা: বাংলা

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৯০

সাইজ: ১৫ এমবি