বাংলাদেশ অগ্নিবীর ডিজিটাল গ্রন্থাগার

আরণ্যক

‘অরণ্যে উক্তমিতি ইতি আরণ্যকম্’ অর্থাৎ যাহা অরণ্যে উক্ত হয় তাহা আরণ্যক। যাগযজ্ঞাদি কর্মকাণ্ড ব্রাহ্মণ গ্রন্থের প্রতিপাদ্য এবং অধ্যাত্ববিদ্যা, আত্মতত্ত্ব, ব্রহ্মতত্ত্ব, সৃষ্টিরহস্য প্রভৃতি জ্ঞানকাণ্ড আরণ্যক ও উপনিষদের প্রতিপাদ্য। ক্রিয়াকাণ্ডের যাগযজ্ঞের বিবরণাদি আরণ্যক ও উপনিষদে পাওয়া যায় না। ‘দ্রব্যযজ্ঞ’ আরণ্যকে জ্ঞানযজ্ঞের রূপ নিয়েছে। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। 

বাহ্যক্রিয়াকাণ্ড বহুল ‘অগ্নিহোত্র’ যজ্ঞকে ঋগবেদের শাংখ্যায়ন/কৌষীতকি আরণ্যক নিম্নলিখিত রূপে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সম্পূর্ণ দশম অধ্যায়টি বাহ্য অগ্নিহোত্রযাগের আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা মাত্র । এই যাগকে ‘আধ্যাত্মিক আন্তর অগ্নিহোত্র’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে । ‘আধ্যাত্মিকম্ আন্তরম্ অগ্নিহোত্র- মিত্যাচক্ষতে।’ আহ্বনীয়, গার্হপত্য অগ্নিকুণ্ড দুটি মনুষ্যশরীরাশ্রিত প্রাণ ও অপান বায়ুরূপে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং অগ্নিহোত্রের দুগ্ধ, সমিধ, আহুতি সম্বন্ধে বলা হয়েছে, ‘শ্রদ্ধাই দুগ্ধ, বাক্যই সমিধ, সত্যই আহুতি এবং প্রজ্ঞাই আত্মা’। এই প্রবচনে স্পষ্ট প্রমাণ হচ্ছে যে ক্রিয়াবহুল বাহ্যযজ্ঞ আরণ্যকে লুপ্ত হয়ে জ্ঞানযজ্ঞে আন্তরযাগে রূপান্তরিত হয়েছে; উপাসনা ও জ্ঞানের প্রাধান্য দুন্দুভিত হয়েছে। 

এই অধ্যাত্মবিদ্যা প্রকৃত অধিকারী ব্যতীত অন্যকে দান করা হতো না । শান্তদান্ত, মুমুক্ষু, বৈরাগ্যশীল ব্যক্তিকে ব্রহ্মবিদ আচার্য এই বিদ্যা দান করতেন। পুরাকালে আচার্যগণ বা তত্ত্বদ্রষ্টা ঋষিগণ লোকালয় হতে দূরে বিজন বিপিনে বাস করতেন এবং সেই অরণ্যেই সঙ্গোপনে ব্রহ্মজিজ্ঞাসু শিষ্যকে এই আধ্যাত্মবিদ্যা দান করতেন। সেজন্য এই বিদ্যা যে গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে তাকে আরণ্যক বলা হয়। অরণ্য অর্থাৎ যাহা নিবিড়, গভীর ; ব্রহ্মতত্ত্বও অত্যন্ত নিবিড় ও দূরবহগাহ্য । সেই অরণ্য অর্থাৎ ব্রহ্মসম্বন্ধীয় জ্ঞান যে শাস্ত্রে আছে তা আরণ্যক। কেউ কেউ আরণ্যককে উপাসনাকাণ্ড ও উপনিষদকে জ্ঞানকাণ্ড বলেছেন। 

বর্তমানে কেবল ৭ টি আরণ্যকই প্রাপ্য। যথাঃ ঋগ্বেদীয় আরণ্যক (ঐতরেয় আরণ্যক, কৌষিতকী/শাঙ্খ্যায়ন আরণ্যক); সামবেদীয় আরণ্যক (তল্বাকার আরণ্যক অথবা জৈমিনীয়-উপনিষদ্ আরণ্যক, ছান্দোগ্য আরণ্যক); যজুর্বেদীয় আরণ্যক (বৃহদারণ্যক, তৈত্তিরীয় আরণ্যক , মৈত্রেয়ণী আরণ্যক) । 

বিঃদ্রঃ অথর্ববেদের অন্তর্গত কোনো আরণ্যক বর্তমানে প্রাপ্য নয়।


ঐতরেয় আরণ্যক

ভাষ্যকার : সায়নাচার্য

ভাষা: সংস্কৃত

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৩০৮

সাইজ: ৬৯.৩ এমবি

তৈত্তিরীয় আরণ্যক

ভাষ্যকার : সায়নাচার্য

ভাষা: সংস্কৃত

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৯৪০

সাইজ: ৪৩.৭ এমবি

কৌষিতকী/শাঙ্খ্যায়ন আরণ্যক

ভাষ্যকার

ভাষা: সংস্কৃত

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৮১

সাইজ: এমবি

তল্বাকার/জৈমিনীয়-উপনিষদ্ আরণ্যক অথবা ব্রাহ্মণ (মূল)

ভাষা: সংস্কৃত

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২০০

সাইজ: ২২.৩ এমবি