"কথোপকথন"
পহেলা শ্রাবণ,১৪২৪ বঙ্গাব্দ..
পদ্ম অনেকক্ষণ ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে!বেশ কিছু চিন্তা তার মাথায় গন্ডগোল পাকাচ্ছে।গন্ডগোল পাকানোটাই তো স্বাভাবিক!যেই মানুষটির জন্য সে অপেক্ষা করছে সে তো তাকে কোনো দিন দেখেনি।বেচারার বোধ হয় খুঁজতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।ইশ!বললেই হতো আমি "সাদা শাড়িতে তোমার অপেক্ষায় থাকবো।" তাহলে বুঝতে সুবিধে হতো।এমন অবস্থায় পদ্মের নিজের কর্মকান্ডে নিজের উপরই ভীষণ রাগ হচ্ছে..
:এই যে শুনছেন?
:জ্বি আমাকে বলছেন?
:জ্বি আপনাকেই বলছি!আপনাকে অনেকক্ষণ দাঁড়া করিয়ে রাখার জন্য আমি দুঃখিত!
:ছি!আপনি কেন দুঃখিত হতে যাবেন? আমিই তো আপনাকে কোনো কিছু ঠিক করে বলিনি।
:আমিও তো বলতে পারতাম..তাই না বলেন?
:আচ্ছা যেহেতু দু'জনেরই ভুল ছিল তাই কাটাকাটি।
:হুম
চলুন সামনে যাওয়া যাক।আপনি কোথায় যেতে পছন্দ করবেন?কোনো রেস্টুরেন্টে নাকি অন্য কোথাও?
:না।রেস্টুরেন্টে বসে গল্প করতে আমার ভালো লাগেনা।বরং চলুন আমার প্রিয় জায়গায় হাঁটা যাক।
:আচ্ছা।
:আপনার প্রিয় রং কি সেটা আমাকে বলা যাবে?মানুষের প্রিয় রং জানতে আমার খুব ভালো লাগে।
:সাদা
এবং আপনারো।আমি কি ঠিক বললাম?
:হুম।কিন্তু কি করে বুঝলেন?
:এই যে আপনি আজকের দিনের জন্য সাদা রং ঠিক করেছেন।আর আজকে তো আমাদের প্রথম দেখা!প্রথম দেখা করার দিন তো আর অন্যান্য দিনের মতো হয় না।একটু স্পেশাল হয়।"সাদা" প্রিয় না হলে তো আর পরতেন না।কি বলেন?
:হ্যাঁ ঠিক বলেছেন।
:বাহ্!দেখলেন আমার আপনার পছন্দের কত মিল!
:আমার প্রচন্ড রাগ লাগছে।
:কেনো রাগ লাগছে?
:"আপনার পছন্দের রং কেন সাদা হবে" সেই জন্যে!
:ওমা
এতো আরো ভালো
:উঁহু
'এই পৃথিবীতে প্রায় সবাই,তার থেকে বিপরীত স্বভাবের মানুষের প্রেমে পড়ে!'
এবার বুঝলেন?
:আপনি দেখি ভয়ংকর রেগে যাচ্ছেন।আচ্ছা শুনুন আপনাকে একটা কথা বলি
:শুনছি
:আমার পছন্দের রং আসলে "লাল"
:তখন মিথ্যে বলার কারণ জানতে পারি?
:ভাবলাম সাদা বললে আপনি খুশি হবেন তাই।
:মিথ্যা বলে কখনো কাউকে খুশি করানোর চেষ্টা করবেন না।
:জ্বি ম্যাডাম!
আমার মনে থাকবে।
:মনে থাকলে ভালো
:এই যে! আপনাকে একটা কথা বলতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু কি করে যে বলি!
:বলে ফেলুন
:আপনি এমনিতেই আমার উপর রেগে আছেন।বলার পর যদি আরো রেগে যান?(!)
:আহা বলে ফেলেন তো
:একটা সিগারেট ধরাতে ইচ্ছে করছে।
আপনি কি রাগ করবেন?
:হুম করবো
:সরি!ধরাবো না
:না ধরান
আজকের জন্য পারবেন।প্রথম দিন বলে কথা!
:ধন্যবাদ
:অন্য কোনো দিনে করলে কিন্তু ভালো লাগবেনা বলে রাখলাম
:আপনি আজ এক কাজ করবেন।বাসায় গিয়ে একটা চিঠি লিখবেন যেখানে 'আপনার পছন্দ অপছন্দ,কি করলে আপনার রাগ করেন ইত্যাদি' সব লিখে রাখবেন।পরেরবার মনে করে আমার জন্য চিঠিটা নিয়ে আসবেন।
:পারবো না।চিঠি লিখার কি আছে!আপনি আমাকে বুঝার চেষ্টা করবেন তাহলেই তো হয়!
:জ্বি আচ্ছা করব
আমরা বোধ হয় কথা বলতে বলতে অনেক দূরে চলে এসেছি।একটা বেঞ্চে বসা যাক।হাপিয়ে গেছি।তারপর
না হয় রওনা দেওয়া যাবে।
:এই এতটুকু তেই হাপিয়ে গেলেন!তাহলে বাকি পথ কিভাবে একসাথে হাঁটবেন?
:জীবন তো "সরলরেখার" মতো না ম্যাডাম!মাঝে অনেক বাধা আসবে তখন ধৈর্য ধরতে হবে।সময় দিতে হবে।এবার বুঝলেন আপনি?
:হুম
:তাহলে আসুন এখানে বসা যাক।
হঠাৎ পদ্মের কেন যেনো মন খারাপ হয়ে গেলো।সে আকাশের দিকে তাকিয়ে "সূর্য অস্ত" যাওয়া খুব আয়োজন করে দেখছে।তার বেশ ভালো লাগছে।সে মনে মনে বলতে লাগলো 'প্রকৃতির নিয়ম এত অদ্ভুত কেনো?মানুষের জীবনের সুন্দর মুহূর্তের স্থায়ীত্বকাল এত কম কেনো হয়?'
"টিপ"
২২ই মাঘ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ..
আজকে সেই বিশেষ দিন!
বহুদিন ধরে অতন্দ্রিলা কে বলে আসছিলাম 'এইবার তোমার জন্মদিনে তোমার জন্য বেশ অদ্ভুত উপহার আছে।' আচ্ছা উপহারটা কি সেই সম্পর্কে অতন্দ্রিলা আন্দাজ করতে পেরেছে? উঁহু,ও ধরতে পারবেনা।আর যদি বুঝে ফেলে(?)
ধুর তাহলে তো সব বৃথা হয়ে যাবে!
আচ্ছা উপহার দেখার পর ওর মুখের ভঙ্গি কেমন হবে কল্পনা করতে করতে কখন যে পথ ফুরিয়ে দরজার ধারে পৌছালাম টেরই পেলাম না! বেল চাপতেই অতন্দ্রিলা সামনে হাজির হল।
:ধরো তোমার উপহার।
গত ৯৩ দিন ধরে তোমাকে অপেক্ষায় রাখার জন্য দুঃখিত!
:উফ্ শুভ্রত তুমি এখনো বোকাই রয়ে গেলে।মানুষকে এত কেন যে বিশ্বাস কর আমি বুঝিনা।
:কেন কি হয়েছে?
:একটা টিপের মধ্যেও আঠা নেই!
:হা হা হা
:কি আশ্চর্য! হাসির কি বললাম?
:আসলে তুমি মূল ব্যাপারটা এখনো ধরতে পার নাই যে প্রিয়তমা তাই।
:ঝেড়ে কাশো
:শোনো প্রতিবার তোমার কপালে চুমু খাওয়ার অজুহাত ধরে আমি এক এক করে যত কালো টিপ ছিল তা জমিয়ে রেখেছি!
:বলো কি! (?) আমি তো একদিনও টের পেলাম না।
:কারণ সেই সময়ে তুমি আমার স্নেহে নিজেকে এতটাই আগলিয়ে রাখো যে অন্য কোন কিছুতে তোমার ধ্যান থাকেনা।বিশ্বাস না হলে এখনই আয়নায় তোমার প্রতিচ্ছবি দেখতে পারো!
পুনশ্চ:কেন আমি শুভ্রত কে এত এত এত পছন্দ করি আমি জানিনা!এবং এই উত্তর আদৌ পাবো কি না সন্দেহ! !
"ঠোঁট"
২৫শে আশ্বিন, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ..
বাহিরে প্রচন্ড শব্দ হচ্ছে।বিকট শব্দের কারণে অতন্দ্রিলার ঘুম ভেঙ্গে গেল।এই অবেলায় ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় বেশ মেজাজ খারাপ হল তার।চারদিক খুব অন্ধকার বলে এই ঘুম জড়ানো চোখে এত শব্দের কারণ টা সে ধরতে পারছে না।
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার এখন অতন্দ্রিলার এই শব্দ শুনতে ভালো লাগছে।শুধু ভালো লাগছে বললে ভুল হবে।"বেশ ভালো লাগছে"! আধো আলো আধো আঁধারে "বৃষ্টিতে স্নানরত প্রকৃতি" কত যে সুন্দর দেখাচ্ছে আহা! সে মনে মনে ভাবলো 'এই সৌন্দর্য কে বৃদ্ধি করার জন্য এক কাপ চায়ের তুলনা হয় না'।চা বানানোর উদ্দেশ্যে রান্না ঘরে যেতেই অতন্দ্রিলার দৃষ্টি সামনে অবস্থিত বস্তুতে যেয়ে ঠেকলো..
কাপ ভর্তি চা সঙ্গে চিরকুট যেখানে গোটা গোটা অক্ষরে লিখা
"প্রিয়তমা আমি তো আজকের দিনে তোমার পাশে বসে এই ভয়ংকর সুন্দর সকাল টা কাটাতে পারছি না তাই তোমার জন্য রেখে গেলাম কাপ ভর্তি ভালোবাসা!
কাপে তোমার ঠোঁট স্পর্শ করো এবং আমার শূন্যতা অনুভব করো"!
অতন্দ্রিলা সেই কাপ তার ঠোঁটে স্পর্শ করল এবং বলে উঠলো 'বাহ্ আজ সকাল টা বেশ মিষ্টি তো'!
"স্নেহকুঞ্জ"
পহেলা শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ..
এক বর্ষার বিকেলে ছায়ানগর থেকে বহু দূরে কোনো এক টিনের চালের নিচে দুজনে মুখোমুখি বসে ধোঁয়া ওঠা কাপের চায়ে চুমুক দিবো আর চালের উপর বৃষ্টির শব্দ অনুভব করব।সাথে না হয় তোমার মৃদু স্বরে রবীন্দ্র সংগীত’ও থাকলো|
"অপেক্ষা"
২৭শে আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ..
:কোথায় আছো শুভ্রত?
:এখনো বাসায়।কেনো কিছু বলতে চাচ্ছিলে?
:জ্বি..
একটা কথা বলার ছিল।
:বলে ফেলো
:আজ কিছুটা ব্যতিক্রম করতে ইচ্ছে হচ্ছে।তুমি কি বুঝতে পারছো?
:হুম..বুঝতে পারছি।
তাহলে কোথায় যেতে চাচ্ছো?
:এই ছায়ানগর থেকে বহু দূরে কোথাও!কিংবা প্রকৃতির খুব কাছে!
:কিন্তু আমার যে মনে পড়ছে না এমন কোনো জায়গার কথা!
:আহা তুমি ভুলে গেলে ...?
ওইদিন না বল্লে "অচিনপুর" নামে দারুণ এক জায়গা আছে।এবং বেশ সুন্দর একটা নদীও আছে।উফ্ কি যেন নাম বলেছিলে(?)মনে পড়ছে না!
:"অশ্রুসসিনী" নদের কথা বলছো?
:হ্যাঁ..
:কিন্তু সেখানে গেলে তো বিপদ হবে!
:বিপদের কথা কেনো বলছো?
:তুমি একবার গেলে সেখানের মায়াজালে আটকে যাবে।তখন নিজেকে সেই বন্ধন থেকে আর মুক্ত করতে পারবেনা।
তাই অতন্দ্রিলা,'তোমায় যেতে বারণ করছি'
:শোন শুভ্রত 'তুমি বেশ ভালো করে জানো আমার পক্ষে মায়াজাল কিংবা ইন্দ্রজাল ছিন্ন করা সম্ভব।সেই ইন্দ্রজাল কোনো মানুষের হোক অথবা অন্য কিছুর!
:আচ্ছা।
তবে আমার একটা শর্ত আছে।তা তোমাকে মানতে হবে।
:শর্ত শোনার অপেক্ষায় রইলাম।
:'যাওয়ার পথে সম্পূর্ণ তোমার চোখ বন্ধ থাকবে।একবারের জন্যও তাকাতে পারবেনা।'
:আচ্ছা তোমার শর্ত গুলো এত অদ্ভুত হয় কেনো বলোতো?
:সেই উত্তর তো আমার জানা নেই।আমি যা জানি তা হলো 'তোমাকে পালন করতে হবে'
:আচ্ছা..
বেশ খানিক পর অতন্দ্রিলা নিজেকে অসম্ভব সুন্দর এক জায়গায় আবিষ্কার করল।শীতল হাওয়া বইছে,চারিদিকে সবুজ প্রকৃতির সাথে ভয়ংকর সুন্দর এক নদী।নদীর তীরে সারি সারি কাশফুল।যেন হাত বাড়িয়ে নরম কাশফুলের স্পর্শ পেতে মন চায়।নদীর বুকে কন্যা সুন্দর আলো পড়ছে!এই আলো তে অথৈ জল চিকচিক করছে।সেই জলে অতন্দ্রিলা পা ডুবিয়ে বসাতে তার পাও চকচকে দেখাচ্ছে।
:কেমন লাগছে অতন্দ্রিলা?
:খুব খুব খুব ভালো।তোমাকে বোঝানো আমার পক্ষে কোনো দিনও সম্ভব হবে না 'আজ আমি কতটা খুশি হয়েছি!'
:আমি টের পাচ্ছি।
:জানো আমি কি ভাবছি..?
অশ্রুসসিনী নদে কন্যা সুন্দর আলোর সৌন্দর্য্য এত সুন্দর হলে না জানি পূর্ণিমা রাতের সৌন্দর্য্য কতটা রোমাঞ্চকর হয়!
:সেই রাতে আকাশে থালার মতো বিশাল চাঁদ উঠবে।চারদিকে অবাক জোৎস্না থাকবে।পূর্ণিমার আলোর সৌন্দর্যে সর্বত্র একাকার হয়ে যাবে|সেই আলো তোমার গায়ে মাখতে মন চাবে।প্রবল জোৎস্না তোমার মধ্যে এক ধরনের হাহাকার তৈরি করবে।
এবং সেই রাতে তোমার কন্ঠে "এই চাঁদ তোমার আমার" গান পূর্ণতা পাবে।
:উফ্ শুভ্রত থামো..আমি আর সহ্য করতে পারছি না।কবে পূর্ণিমার এই রাত আসবে?কবে আমি সেই জোৎস্না গায়ে মাখবো?কবে আবার আসা হবে?
:আমি তোমাকে বলেছিলাম না 'তুমি এখানকার মায়াজালে জড়িয়ে যাবে? দেখলে এবার?'
:হুম আমার মনে আছে।কিন্তু আমিও বলেছি, 'সেই জাল ছিন্ন করা আমার দ্বারা সম্ভব!'
:সময় তা দেখিয়ে দিবে।
:ঠিক আছে দেখা যাবে।
:শোনো অতন্দ্রিলা তুমি আজ থেকে 'পূর্ণিমা রাত এবং আমার অপেক্ষায় থাকবে।যে কোনো এক বিশেষ দিনে আমি তোমাকে জোৎস্না বিলাস করাতে নিয়ে আসব।'
:জ্বি আচ্ছা...
হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজে অতন্দ্রিলার ঘুম ভেঙ্গে গেলো!!
এত রাতে বেলের শব্দে তাসলিমা রহমান জেগে উঠলেন।তিনি কোথা থেকে যেন কারো কান্নার শব্দ কানে শুনতে পাচ্ছেন।কিন্তু তার মতে বাসায় অতন্দ্রিলা ছাড়া কেউ তো নেই।তাহলে..?
সাথে সাথে তিনি মেয়ের রুমে হাজির হলেন।
:কি ব্যাপার অতন্দ্রিলা? রাত কয়টা বাজে দেখেছ?এখনো সজাগ?
:হুম ঘুমাবো..
:করছ টা কি তুমি এত রাত জেগে?
:"অপেক্ষা" মা..."অপেক্ষা!!"
পুনশ্চ ১:এই অপেক্ষার প্রহরের কবে অবসান ঘটবে?কিংবা আদৌ কি সম্ভব? আচ্ছা বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি অতন্দ্রিলার সেই বিশেষ মানুষটা না তো?
পুনশ্চ ২:বেশ কয়েক বছর (২০১৫) কেটে গেলো শুভ্রতের সাথে দেখা হওয়ার!সেই সময়ে কি নিয়ে যেন শুভ্রত খুব বিষণ্ণতায় ভুগত।দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী কেটে যাচ্ছে তার সাথে আমার আর দেখা হয়না।সাথে জানাও হয় নি 'তার মন খারাপের রাতের কথা'
আমার বিশ্বাস 'সে এখন ভালো আছে।এবং তমসাচ্ছন্ন রাতের সমাপ্তিও ঘটেছে!!'
পুনশ্চ ৩:হঠাৎ কেন জানি "অশ্রুসসিনী নদের" কথা মনে পড়লো।
"ইচ্ছে কুন্জ"
২৫শে কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ..
প্রিয়তমা,'আমার খুব ইচ্ছা সমুদ্রের কাছাকাছি ছোট একটা ঘর করব।সেই ঘরের ছাদ টা হবে টিনের চালের যেন বর্ষায় বৃষ্টির প্রত্যেকটা ফোটা অনুভব করা যায়।চারিপাশে থাকবে বাহারি ফুলের গাছ।যখনই মন চাইবে তখনই সমুদ্রের পাড়ে খালি পায়ে হাঁটব।খুব করে চাই সেই সময়ে কেউ একজন আমার পাশে থাকুক।
আচ্ছা তুমি কি আমার সাথে আমার "ইচ্ছে কুন্জে" থাকবে?রাত বিরাতে জোৎস্নায় সমুদ্রের তীরে গল্প করবে?
কি হলো প্রিয়তমা উত্তর দিচ্ছনা কেন?বলো প্রিয়তমা বলো?চারিদিকে ভয়ংকর নীরবতা।সব পাখি নীড়ে ফিরে যাচ্ছে!সূর্য আস্তে আস্তে পশ্চিম দিকে হেলে পড়েছে।রক্তিম সূর্যের আভা তে প্রিয়তমার মুখ অন্যরকম দেখাচ্ছে।যা সহ্য করার মতো না।বলা হয় নীরবতা সম্মতির লক্ষণ।কিন্তু সবক্ষেত্রে তা সত্য নয়!সেইদিন প্রিয়তমার নীরবতা অন্য কিছুর জানান দিচ্ছিলো।
মানুষ জীবনের এক পর্যায়ে এসে তার অতীতের কর্মের কথা স্মৃতিচারণ করে এবং আফসোস করে।
অনুতপ্ত কিনা বলতে পারছি না তবে মানুষটি কে মনে পড়ছে।ভীষণ মনে পড়ছে!
"প্রশ্নবিদ্ধ!"
৪ই শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ..
আচ্ছা যতটা না সহজে "আই লাভ ইউ" বলা যায় ততটা সহজে কি "আমি তোমাকে ভালোবাসি" বলা যায়?
মনে হয়না।আসলে কখনো সম্ভবই না।কারণ "আমি তোমাকে ভালোবাসি" বলার জন্য ভয়ংকর সাহসের প্রয়োজন হয়।যাকে তাকে বলে ফেলা যায়না।একটা উদাহরণ বলি-ইংরেজিতে "I have feelings for you" কথাটা কতই না সহজে বলেে ফেলে যায়।আর যদি বাংলায় বলি তাহলে ব্যাপারটা বেশ ভালোই জটিল হয়ে দাঁড়ায়।কারণ বাংলায় বাক্যটির অর্থ দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়।তখন প্রশ্ন উঠে অনুভূতিটা কি "ভালোলাগার?" নাকি "ভালোবাসার?"
"শখ"
২৩ই চৈত্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ..
বলা হয় 'শখের জিনিসের মূল্য পৃথিবীর কোনো কিছুর বিনিময়ে দেয়া সম্ভব না।' আসলে সেই নিময়ও নেই।মাঝে মাঝে "শখ" মানুষের মধ্যে ভয়ংকর নেশার সৃষ্টি করে ফেলে।
প্রায় সময়ই মানুষ জিজ্ঞেস করে 'কোন ধরনের সিনেমা তোমার পছন্দ?কিংবা অমুকের তমুক ছবিটা দেখেছো কি?ইশ্ কত যে দারুণ ছিল না!'
তখন খুবই আনন্দের সাথে আমার উত্তর হয় 'জ্বি আসলে কি আমি মুভি দেখি না।'
আমার উত্তর শুনে প্রশ্নকর্তার মধ্যে যতটা না বিভ্রমের সৃষ্টি হয় তারও বেশি বিভ্রান্তি তৈরি করে আমার আনন্দ দেখে!এবং কোনো এক বিচিত্র কারণে 'মানুষের বিভ্রান্ত চেহারা' দেখতে আমার ভালো লাগে।
আচ্ছা আজকের দিনে এই আনন্দের উন্মোচন করা হলে কেমন হয়....?
"শুধুমাত্র আমার শখের স্বার্থকতার কারণে মুভি দেখিনা।"
যথারীতি অনুসারে মানুষ পছন্দের শীর্ষে তাই রাখে যা তার কাছে নিঃসন্দেহে অত্যাধিক প্রিয় হয়।এবং সেই অনুযায়ী আমার সবচেয়ে প্রিয় শখের স্বার্থের জন্য "বই পড়া" শখের তুলনা হয়না।কারণ আমার বিশ্বাস "বই" ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো কিছুর পক্ষে সম্ভব নয়, 'মানুষের কল্পনা শক্তিকে আরো প্রসারিত করা।'
পুনশ্চ:একটা কুইজ "প্রিয় শখটি কি?"
পুনশ্চ:"বই কেনা হলো শখ আর বই পড়া হলো নেশা"
"ভালো থেকো "
সব রহস্য উদঘাটন করার কি প্রয়োজন আছে?কিছু রহস্য তো "রহস্যই" থাকা শ্রেয়!এই পৃথিবীতে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ আছে।এক শ্রেণী 'যারা নিজেদের সম্পূর্ণ জীবনকে উৎসর্গ করেছে রহস্য উন্মোচনে' আর অপর শ্রেণী 'তারা প্রকৃতি, রহস্য, বিজ্ঞান কোনো কিছুতেই মাথা ঘামায় না।' লাবণীর মতে প্রথম শ্রেণীর মানুষের জীবন অনেকটা জিলাপির প্যাঁচের মতো!খুবই জটিল,ভয়ংকর!
আধঘন্টার উপরে হয়ে গেলো লাবণী এই থিওরি কপচাচ্ছে!তার আর ভালো লাগছে না এই 'রহস্য' নিয়ে মাথা ঘামাতে।লাবণী আস্তে আস্তে বিছানার দিকে এগোচ্ছে।কিন্তু তার চোখে ঘুম নেই!খুব ভালো হতো যদি কারো সাথে গল্প করা যেতো!বেশ কয়েকমাস হলো মনের মতো করে লাবণীর কথা বলা হয় না।
হঠাৎ লাবণী ফোন হাতে নিল।খুবই ব্যস্ত হয়ে কল হিসট্রি তন্নতন্ন করে খুঁজছে!আশ্চর্যের ব্যাপার যেই মানুষটিকে লাবণী ঘুম থেকে উঠেই ফোন করত তার কন্ঠে "রুপা" ডাক শুনার জন্য,বিকেলে ১০০ মিনিট টি.এন.টি ধরে দাঁড়িয়ে থাকত....তাকে আজ কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না!
লাবণীর আরো তিনজন প্রিয় মানুষ আছে যাদের মধ্যে একজনের অবস্থান সর্বদা চ্যাট লিস্টের শীর্ষে থাকত!যদি কোনো দিন এমন হতো যে, অন্য কেউ প্রথমে চলে এসেছে তাহলে লাবণীর অস্বস্তির সীমা থাকত না।কিন্তু বাস্তবতা এমন যে 'লাবণী এই অস্বস্তিতে আজ নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে।'
বাকি দু’জনের মধ্যে একজন লাবণীর ভালোবাসা!সব ভালোবাসাই প্রিয় হয় কিন্তু এই ভালোবাসার প্রিয়ত্ব 'ট্যু দ্যি পাওয়ার ইনফিনিটি!" উপন্যাসের মতো লাবণী ও তার ভালোবাসা প্রতিটা দিনের শুরু এবং শেষ তাদের কথোপকথন দিয়ে করত।আর বর্তমান এতটা ভয়ংকর যে 'কথা বলার জন্য এখন তাদের সময় ধার করতে হয়।'
লাবণীর হাত পা কাঁপছে।কখন মনের অজান্তে লাবণী কাঁদা শুরু করল একবারের জন্যও টের পেলো না।বাকি একজনের কথা আর মনে করতে ইচ্ছে হচ্ছে না।
লাবণী হুড়মুড় করে বারান্দার উদ্দেশ্য রওনা হলো এবং নিজেকে বুঝাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল...'একদিন তো সবাই চলে যাবে।শেষ পর্যন্ত কেউ থাকবে না।শুধু যা থাকবে তা হলো "স্মৃতি"
তাই তো কথায় বলেনা 'স্মৃতি,তুমি বড় বেদনার!'
লাবণীর ভালোবাসার মানুষগুলো ভালো থাকুক..
"আধুনিকতা "
১৫শে ফাল্গুন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ..
নতুন যুগের ভালোবাসা গুলো কেমন জানি চার দেয়ালের রেস্টুরেন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ!প্রত্যেক সপ্তাহে অত্যন্ত দুদিন হলেও ডেটে যাওয়া, অমুক জায়গায় 'চেকইন' দেওয়া,এর উপর ক্যাপশনে ফীলিঙ্ লাভ .......আরো নানান কত কি!
আচ্ছা এগুলো কে কি ভালোবাসা বলে? নাকি সাময়িক বিনোদন পাওয়ার জন্য যে খেলাটা খেলা হয়,যার ভদ্র নাম 'প্রেম' তা?
আমার মতে এটা কখনোই ভালোবাসা হতে পারে না।ভালোবাসা টের পাওয়া যায়।লোকে দেখানোর প্রয়োজন টা কোথায় এখানে!
ভালোবাসা হলো তা,"যেখানে প্রেমিকা তার প্রিয়তমের পত্রের অপেক্ষায় দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী পার করে দেয়।কিংবা কবে আসবে সেই মানুষটা!কত কাল ধরে দেখা সাক্ষাৎ হয় না তার সাথে!"
এরপর যখন দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষে মানুষটাকে কাছে পাওয়া হয় তখন আবেগে চোখের পানি ধরে রাখতে না পারা!তারপর হঠাৎ এক বিকালে সাদা শাড়ি আর মানুষটা সাদা পাঞ্জাবি গাঁয়ে দিয়ে একে অপরের হাত ধরে অচিনপুরের উদ্দেশ্যে বিরামহীন পথে হাঁটা শুরু করা !
"মায়া "
:৬০টা গোলাপ দিন তো!
:জ্বি কয়টা বললেন?
:৬০
:একটু অপেক্ষা করুন দিচ্ছি।
:আচ্ছা।
:যদি কিছু মনে না করতেন তবে একটা প্রশ্ন করতাম!
:কি?এতো গোলাপ দিয়ে কি করবো?
:হ্যাঁ,যদি বলতেন আর কি!
:আজ আমার মায়ের ৫৬তম বিবাহ বার্ষিকী!সে জন্য মাকে উপহার হিসেবে ৬০টা গোলাপ দিবো।
:৫৬তম হলে আরো ৪টা বেশি কেন দিচ্ছেন?
:আসলে আপনি যে লজিকে যাচ্ছেন সেই লজিক অনুযায়ী ৫৬টাই দেওয়ার কথা!কিন্তু আমি সেই লজিকে যাচ্ছি না।আমরা ছয় ভাইবোন তো সেই কারণে আমি সবার পক্ষ থেকে ১০টা করে ৬০টা দিচ্ছি!
:ও আচ্ছা বুঝতে পারলাম।
ধরুন আপনার গোলাপ গুলো।
:জ্বি আপনি দোয়া করবেন।আমার মা হাসপাতালে তো।
:আপনি কি তাহলে গোলাপ নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন?
:হুম।
এই ধরুন আপনার টাকাটা।আজ তাহলে আমি আসি।
ঘটনাটির এক বছর হয়ে গেল!সময় কত দ্রুত ই না চলে যায়।সময়ের দ্রুত বয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তখন ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো আমাদের কাছে "স্মৃতি" হয়ে যায়।আবার অনেক ক্ষেত্রে মানুষ গুলোও
ঘটনার চরিত্র টি হলো "আমার বাবা" আর ভদ্র মহিলাটি হলো "দীদা"!
আচ্ছা এই "মায়া" ব্যাপারটা এত ভয়ংকর কেনো?
"তোমাকে"
পহেলা কার্তিক,১৪২৬ বঙ্গাব্দ..
:কেমন আছো?
:হুম বেশ ভালো।আপনি?
:ভালো নেই।
আচ্ছা তুমি আমাকে "আপনি" করে কেন বলছো?
:কারণ আপনার সাথে আমার "তুমি" করে বলার মতো এখন আর সম্পর্ক নেই!
:কোনো সম্পর্কে তুমি,আপনি কিংবা তুই তো শুধুমাত্র সম্বোধনের খাতিরে ব্যবহৃত শব্দ এছাড়া তো কিছু নয়.. তাই না?
:আসলে আমি বলতে চাচ্ছিলাম যে,'আমাদের মধ্যে কোনো প্রকার সম্পর্ক'ই আর নেই!'
:"হঠাৎ হঠাৎ তোমার অদ্ভুত সব কথা বলার সেই অভ্যাস " এখনো আছে দেখি!
:মানুষ অদ্ভুত প্রাণী।
:তা তো বটেই অতন্দ্রিলা..
:এবং পরিবর্তনশীল ও!
:হুম মানুষ পরিবর্তনশীল। তুমি এখন যেরকম আছো; অতীতে সেরকম ছিলেনা এমনকি ভবিষ্যতেও থাকবে না এবং সেটাই স্বাভাবিক তাই না?
আচ্ছা তুমি যে আমাকে বলছো;তুমি কি একটুও পরিবর্তন হও নি?
:আপনার সাথে কথা বলতে আমার ভালো লাগছে না।প্লিজ চলে যান..
:উঁহু আমার প্রশ্নের জবাব ছাড়া আমি কোথাও যাবো না।
:আপনি কেন আমাকে বিরক্ত করছেন?কি চান আপনি?
:"তোমাকে!"
চারিদিক স্তব্ধ!কোথাও কোনো শব্দ নেই। হঠাৎ করে দক্ষিণ থেকে দমকা হাওয়া বইতে শুরু করেছে।ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা আছে।শুভ্রত দু'চোখ ভর্তি মায়া নিয়ে অতন্দ্রিলার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে!
এবং যে মায়া অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা অতন্দ্রিলাকে দেওয়া হয় নি..
"অদেখা মানুষ"
:তোমাকে ছোট চুলে খারাপ লাগে না তো!
:আপনি কি কখনো আমাকে লম্বা চুলে দেখেছেন?
:তা অবশ্য দেখিনি।
:তাহলে?
:আমি অনুমান করতে পারছি।
:আপনি দেখি ভালোই কথা বলেন!
:হা হা হা
বাই দ্য ওয়ে আমি শুভ্রত!
:তো শুভ্রত মানুষটা কি করে?
:সিইএসসি, বুয়েট।
:ওয় ইন্জিনিয়ার মানুষ তাহলে আপনি!
:বেকার ইন্জিনিয়ার মানুষ।
:আমি হচ্ছি ...
:উহুঁ,তোমার কোনো কিছু বলার প্রয়োজন নেই।তোমার বলার থেকেও আমি বেশ জানি তোমার সম্পর্কে!
:তা কিভাবে?
:সব জেনে ফেললে হয় না কি!জীবনে কিছু কিছু জিনিসের মধ্যে রহস্য থাকা দরকার!
তার কথা মতো সেও আমার জীবনে রহস্য'ই রয়ে গেল!
"হারানোর ভয়"
১৩ই মাঘ, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ..
:তুমি সমুদ্র পছন্দ করো না?
:উঁহু।
:কিন্তু কেন?
:সমুদ্র দেখলে আমার মন খারাপ হয়ে যায়।ঢেউ এর গর্জন আমার মধ্যে ভয় এর সৃষ্টি করে।
:ভয়?তা কিসের?
:হারানোর ভয়!
:হারানোর ভয় ?হা হা প্রিয়তমা তুমি খুব অদ্ভুত!
:আমি অদ্ভুত নাকি তোমার বুঝার ক্ষমতার উর্ধ্বে?
:আমি কিছু বুঝতে পারছি না তুমি কি বলছো! (?) ঝেড়ে কাশো।
:বুঝতে পারছো না নাকি বুঝেও বুঝতে চাচ্ছো না ?
:আমি যে সবে মাত্র বললাম "তুমি খুব অদ্ভুত" দেখলে তার প্রমাণ! তবুও কিন্তু ভালো লাগে বুঝলে!!
:শোনো 'কাউকে যখন আমরা বুঝতে ব্যর্থ হই তখন তাকে আমরা "অদ্ভুত" নামে আখ্যায়িত করি!
:হয়তো
:তোমাকে ভয়ংকর একটা সত্য বলি?
'তুমি আমার মায়া তে পড়ে গিয়েছো।তুমি আমাকে কামনা করো।কাউকে কামনা করা আর কাউকে ভালোবাসা এক না।
তুমি আমার বৈশিষ্ট্য গুলো পছন্দ করো।এবং সেই অনুভূতি থেকে তুমি আমাকে চাও।আমার জন্যে আমাকে চাও না!'
:'তোমার বৈশিষ্ট্যের কারণে তোমাকে চাওয়া' এর মানে কী তোমার কারণে তোমাকে চাওয়া নয়?
:না।ধরো কালকে থেকে হঠাৎ করে আমি পশ্চিমাদের সংস্কৃতি ধারন করা শুরু করলাম কিংবা আমার বাচ্যভঙ্গি পরিবর্তন করে ফেলি
তারপর.......!!
:প্রিয়তমা?
:হুম বলো।
:একটু আগে তুমি যে "হারানোর ভয়" এর কথা বলছিলে না(?) কোন এক অদ্ভুত কারণে এই হারানোর ভয় টা এই মুহূর্তে আমার মধ্যে কাজ করছে!বেশ তীব্র আকারে..
"উৎস কি?"
গোধূলি বেলার দিকে হঠাৎ শুনতে পেলাম অদ্ভুত এক কন্ঠস্বর! যেই কন্ঠস্বর আমার খুব চেনা, বহুকাল ধরে পরিচিত! এবং খুব বেশি প্রিয়। তারপর চোখ ফিরিয়েই দেখি তুমি দাঁড়িয়ে আছো।কন্যা সুন্দর আলোয় সাদা পাঞ্জাবী তে তোমায় অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে।তোমাকে দেখার পর থেকে আমার পুরোটা জুড়ে অজানা এক ভালোলাগা কাজ করছে।
আচ্ছা হঠাৎ এই ভালোলাগার উৎস কি?
"একাকীত্ব !"
:যার সাথে তুমি দিনের আলো এবং আধারের বেশির ভাগ সময় কথা বলো সে কি তোমার প্রিয়?
:হুম বলতে পারো!
:কিন্তু তার সাথে পরিচয় কাল তো খুব ক্ষীণ?
:তবুও।ঘনিষ্ঠতা তো আর সময়, কাল ভেদে হয় না!
:সে যদি হঠাৎ স্থানচ্যুত করে তবে?
:তবে আর কি!সীমাহীন বিশ্বব্রক্ষান্ডে আমার অস্তিত্ব ঠিক এই পাখিটার মতো হবে।
"ভয়ংকর একা!"
"স্নেহকুন্জ"
০৮ ফাল্গুন,১৪২৬ বঙ্গাব্দ..
আমার কাছে মনে হয় কি "পরম মমতায় প্রিয় মানুষটির হাত ধরে তার অপরাগ চোখে চোখ রাখার মতো সুন্দর অনুভূতি" পৃথিবীর অন্য
আর কিছু হতে পারে না!
"স্নেহকুন্জ"
ভোর ছয়টা,
১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ..
চারিদিকে প্রবল বর্ষণ শুরু হলো!এখন সবে মাত্র ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে।সেই আলোতে “প্রকৃতি” অদ্ভুত সুন্দর দেখাচ্ছে।এরই মধ্যে হঠাৎ আমি একটা ব্যাপার আবিষ্কার করে ফেললাম।'আমার প্রচন্ড ইচ্ছে করছে তোমাকে ছুঁয়ে দিতে!তোমার পাশে দাঁড়িয়ে তোমার আঙ্গুল স্পর্শ করে বৃষ্টি দেখতে।এবং প্রকৃতির এই পরম সৌন্দর্য্য কে আরো বাড়িয়ে দিতে।'
কিন্তু আফসোস প্রকৃতি কখনো পরম সৌন্দর্য্য সহ্য করতে পারে না!
"স্নেহকুঞ্জ"
২৩শে পৌষ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ..
আচমকা তোমার সেই অনাকাঙ্খিত স্পর্শ এবং আমার শিরদাঁড়া দিয়ে বয়ে যাওয়া শিহরণ! !
“ কেউ না”
০৮ ফাল্গুন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ..
হুমায়ুন আহমেদের বেশ প্রচলিত একটা বইয়ের শেষ পাতাটি এমন ছিল; জেলার “লাশ নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে” ভোর থেকে অপেক্ষা করা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করে “উনার কি হন আপনি?” তখন মেয়েটির উত্তর ছিল “কেউ না!”
“তুমি” আমার কাছে ঠিক মেয়েটির উত্তরের মতো “কেউ না!”
তুমি আমার কেউ না।কেউ না..
বি.দ্র. এই অখাদ্য’টা আজ থেকে চার বছর আগের। কেন লিখেছিলাম(?), কার জন্য লিখেছিলাম(?), কিংবা কাকে নিয়ে লিখেছিলাম(?) সবকিছুই কিন্তু রহস্য!
“আয়না”
১৪ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ..
আয়না আমার ভীষণ পছন্দের! ছোট কিংবা মাঝারি আকৃতির কাঠের আয়না; বিশেষ করে “টেরাকোটা” নকশা করা। যখন, যেখানেই দেখি না কেন মার কাছে বায়না ধরে বসে থাকি কিনে দেওয়ার জন্য! তো একবার কী হলো - আমার আর মার “আড়ং” এ একটি আয়না বেশ পছন্দ হলো কিন্তু কোন এক অজানা কারণে সেদিন তা আর কিনা হলো না। ভয়ংকর মন খারাপ নিয়ে পুরো দিনটি কাটিয়েছিলাম এবং মনে তীব্র আক্ষেপ নিয়ে আমি অপেক্ষা করতে শুরু করেছিলাম।
তো এই ঘটনার বেশ কিছুদিন পরে আবার গেলাম সেই আয়নাটি কিনতে কিন্তু সেটি না পেয়ে বরং তার চেয়ে বেশ সুন্দর এবং নান্দনিক অন্য একটি কিনে আনলাম। এবং এই ঘটনায় আমি’ও মহা খুশি!
পরবর্তীতে মা বলেছিল, ভালোই হলো সেদিন না কিনে… না হলে তো আজকে আর এই চমৎকার আয়নাটি কেনা হতো না..
কিন্তু তবুও হঠাৎ করেই আমার “সেই বিশেষ মাঝারি আকৃতির আয়নাটির” জন্য মনের মধ্যে তীব্র হাহাকারের সৃষ্টি হয়! মাঝে মাঝে মনে হয় আমি বোধহয় সেই ছোট কাঠের আয়নাটি’ই চাই সবকিছুর নির্বিশেষে!
পুনশ্চঃ আমি প্রায় সময়ই ভাবি ‘জীবনে আফসোস এর প্রয়োজন আছে! কোনো কিছু "পাওয়ার মূল্য" বুঝার জন্য হলেও "আফসোস" ব্যাপারটা দরকার।’
বি.দ্র. ১/ উপরোক্ত বর্ণনা সম্পূর্ণ কাল্পনিক।
২/ আজ প্রায় তিন বছর পর আমি খাতা, কলম নিয়ে বেশ আয়োজন করে লিখতে বসেছি এবং পৃষ্ঠা সব কাটাকুটি করে একাকার করে ফেলেছি।লিখা আসেনা আর আগের মতো.. আফসোস আর আফসোস..