কঠিন কথা আসলেই কঠিন। তাই বলে কঠিন জিনিসের জন্য মানুষ বসে থাকে না কখনো।তাকে সহজভাবে বুঝার চেস্টা করে এগিয়ে নিয়ে যায় নতুনের দিকে। বিজ্ঞানীরা অনেক বিষয়েই এড়িয়ে যান, এমন না যে তিনিতা জানেননা, কিন্তু ব্যাপারটা হলো এমন যে জিনিসটা জানলেও এটা কতটুকু সত্য সেটা সম্পর্কে সন্দিহান। জীবনটাকে অনেকে একটা পাজলের মতো বর্ণনা করেন, আসলেই জীবনটা একটা বড় গোলক ধাধা। আর এই ধাধার উত্তর কিন্তু আছে মানুষের কাছে। তবু মানুষ পারে না এসব ধাধার উত্তর দিতে কারন মানবজাতী খুবই কনফিউজড। সে সত্যের কাছে এসেও দেখা যায় দিশেহারা।
সেদিন এক বালকের সাথে দেখা যায়। তুখোড় বলবো না, তবে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে সে ৪র্থ অর্ডার সিমলটেনিয়াস ইকোয়েশনের সলভ করতে পারে, রেসিডিউ দিয়ে কন্ট্যুরের ব্যাখ্যা দিতে পারে।আমি অবশ্য এখনও ওতে কাচা। তার সাথে বসেছিলাম লিনিয়ার আর ননলিনিয়ার ওয়ার্ল্ডের ক্যারেকটারিস্টিকস নিয়ে কথা বলতে। অনেকটা এমন যে আমি নিজেই গিয়েছি জানতে ওর কাছে।
ওর ধরনাটা ছিলো অনেকটা এরকম: আমাদের পৃথিবীটা মোটেও লিনিয়ার ওয়ার্ল্ডের মধ্যে পরে না, তাই এখানকার ডাইমেনশন গুলো খুব বেশী চেন্জ্ঞ হয়। আর চেন্জ্ঞের সাথে সামন্জস্য রেখেই আমাদের গ্রোথ গুলো ডিপেন্ড করছে! ট্রানজিশনে যদি কেউ পড়ে হকিং যেটা বলে গেছেন, যে জীবিত বস্তুর জন্য ওখানে বেচে থাকা মূলত অসম্ভব হয়ে যাবে।
তবে এখানে মূল বিষয় হচ্ছে এ বিশ্বটাকে সামগ্রীকভাবে যদি একটা ইকোয়েশনে দেখানো যেতে পারে তাহলে বোঝা যেতো আসলেই এই মহাবিশ্ব কতটুকু স্ট্যাবল আর যেহেতু এটা ননলিনিয়ার সেহেতু এটার বক্রতা কত! তবে এই বক্রতা আর আলোর বক্রতা নিয়ে কনফিউজড হবার কোনো উপায় নেই!
তখন আমার মনে হলো যদি বিগ ব্যাং এর পূর্ব থেকে চিন্তা করা যায়, এবং ধরে নেয়া যায় তখন সব কিছু লিনিয়ারলীই ঘটবে, সেখানে তাহলে একটা জীবিত বস্তুর অবস্হা হবে অনেকটা গ্রোথহীন অথবা অপরিবর্তনশীল!আমাদের বর্তমান অবস্হায় গতি বলতে সময়ের সাথে পরিবর্তনকেই বুঝি নিউটনীয় বিশ্বে। সেখানে ঐ অবস্হায় তখন একটা জীবিত বস্তুর অনুভূতি বলতে কিছুই থাকবে না আশা করা যায়!
হঠাত করে মনে হলো এসব কথা গুলো আসলেই অতটা বিশ্বাস যোগ্য নয় কারন অধিকাংশ এ্যাজম্পশনই ধারনার উপর হতে পারে বা হবে হয়তো টাইপ!
তবে আশার কথা হলো এখন সারা বিশ্বই পড়ে আছে লার্জ হেড্রন কোলাইডার আর ইন্টারন্যাশনাল লিনিয়ার কোলাইডারের দিকে।সবাই উৎসুক হয়ে আছে এর দ্বারা সম্পাদিত পরীক্ষার উপাত্তগত দিক গুলো জানার জন্য! আসলে কি আছে এটার মধ্যে যার জন্য সবাই তাকিয়ে আছে:
এর প্রথম কাজটা হবে নতুন কিছু নয় বরং পুরোনো ধারনাগুলোকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা।এই কোলাইডারের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমানে প্রয়োজনীয় চার্জ এবং শক্তি সম্পন্ন মৌলিক কণার (উদহরন স্বরূপ নির্দিস্ট পরিমাণের দশা সম্বিলিত কোয়ার্ক পার সেকেন্ড) উৎপাদন করা এবং তারপর এগুলোকে পর্যবেক্ষন করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষার যার মাধ্যমে প্রাপ্ত উপাত্ত গুলো নানা যাচাই বাছাইয়ের পর উদাহরন হিসেবে রাখা হবে।এই মেশিনের লক্ষ্য শুধুই পরীক্ষা বা পর্যবেক্ষনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে না বরংচ এমনকিছু বেন্ঞ্চমার্ক প্যারামিটারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া যার মাধ্যমে বোঝা যাবে আসলেই নতুন কোনো মাত্রা (ডাইমেনশন) বা নতুন কোনো মৌলিক ইউনিটের প্রয়োজন আছে কিনা!
এই কোলাইডার প্রথমে হিগস বোসনকে পর্যবেক্ষন করবে এবং এর প্রোপার্টিজগুলোকে প্রাকটিক্যালি নির্ণয় করে প্রচলিত থিওরীর সাথে মিলিয়ে দেখা হবে।হিগস বোসন হচ্ছে এক ধরনের হাইপোথ্যটিক্যল পার্টিক্যাল যেটা দিয়ে ভরহীন ফোটন আর অপেক্ষাকৃত বড় ডব্লিউ এবং জেড বোসনের মধ্যকার পার্থক্যকে ব্যাখ্যা করা যায়!ডাব্লিউ আর জেড বোসন পার্টিক্যালই মূলত দুর্বল তড়ীৎশক্তির জন্য দায়ী বলে ধরে নেয়া হয়!
এই কোলাইডার মূলত যে প্রশ্নটা খুজবে সেটা হলো হিগস পার্টিক্যাল কি শুধুমাত্র ডাব্লিউ এবং জেড পার্টিক্যালের ভরের জন্য দায়ী নাকি কোয়ার্ক আর লেপটনের জন্যও সমভাবে এর ব্যাখ্যাগুলো প্রযোজ্য?
নির্দিস্ট পরিমান বলসম্পন্ন নতুন পার্টিক্যাল যেগুলো আনবিক বিন্যাস বা সংঘর্ষের উপজাত হিসেবে তৈরী হয়, সেগুলো খুব দ্রুত ক্ষয় হতে হতে ইলেক্ট্রন এবং অন্যান্য এ্যান্টিম্যাটার পার্টিক্যাল পজিট্রনে রূপ নেয়!এরকম বল সমূহ প্রকৃতিতে নতুন কোনো বল বা শক্তির সিম্যাট্রীর খোজ দিতে পারে এবং পদার্থবিদেরা হয়তো খুজে পেতে পারে কোনো এক একীভূত চিন্তার মিথস্ক্রীয়া!
এসবগুলো পর্যবেক্ষনই করা হবে সেই সব নিরপেক্ষ স্হির কণাসমূহকে ঘিরে যেগুলোর সৃস্টি কৃত্রিম ভাবে ঘটানো কোনো এক উচ্চ শক্তির সংঘর্ষের মাধ্যমে, যার ফলে হয়তোবা জানা যাবে এস্ট্রোনমির সবচেয়ে বড় পাজল বিগ ব্যাং এর পর পরই আসলে কি হয়েছিলো, যেটা মূলত ব্যাখ্যা করা হয়েছে আপাতত প্রথম তিন মিনিটের পর!
এই কোলাইডারে সম্পাদিত পরীক্সাগুলোর মাধ্যমে খুজে বের করা যাবে লুকায়িত সেই স্হান-কাল ডাইমেনশনের মিথসমূহ যার জন্য লেখা হয়েছে হাজার গল্প অথবা দেখা হয়েছে কত না স্বপ্ন! অথবা নতুন শক্তিশালী অন্য কোনোমিথস্ক্রিয়া (যেখানে হয়তো বা কেউ হাতের কাছে গড়ে তুলবে কোনো শক্তিশালী ব্লাক হোল) অথবা সুপার সিমেট্রি অথবা এমন কিছু যা প্রত্যাশীত নয় মানে কল্পবিজ্ঞানের বাস্তব উদাহরন!
এখন গঠন নিয়ে কিছু কথা বলা যায়:
এলএইচসি বা লার্জ হেড্রন কোলাইডার হলো ইন্টারন্যশনাল লিনিয়ার কোলাইডারের উত্তরসুরী যেখানে মূলত একটা সুযোগ বা জায়গা করে দেয়া হয়েছে ইলেক্ট্রন আর পজিট্রনের প্রচন্ড সংঘর্ষ নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষন চাক্ষুসভাবে!এই আইএলসি ডিজাইনে উল্লেখযোগ্য ব্যাপারটা হলো ১১.৩ কিলোমিটার বিস্তৃত বিশাল দুটি লিনিয়ার এক্সিলারেটর যেটার মধ্যে প্রচন্ড শক্তিশালী ইলেক্ট্রিক ফিল্ড ব্যাবহার করার সুবিধা রয়েছে এবং এটার মাধ্যমে পার্টিক্যালগুলোকে একটা ক্যাভীটি বা বায়ূশুন্য স্ট্রিং আকৃতির চেম্বারের মাধ্যমে ত্বরনায়িত করা চালিত করা হবে।এই ক্যাভিটি গুলো মূলত তৈরী এক মিটার লম্বা নিওবিয়ামের মেটাল (সংকেত Nb এবং এর এ্যাটমিক নম্বর হলো ৪১) যা দেখতে অনেকগুলো ছোট ছোট চেম্বারের এর মতো যেটা অনেকটা ছোট বলের আকৃতির এবং এর মধ্যে অনেকগুলো ছিদ্রের মতো করে গর্ত করা।যখন খুব নিম্ন তাপমাত্রায় এই চেম্বারগুলোকে ঠান্ডা করা হয়, তখন এগুলো সুপার কন্ডাক্টরের মতো কাজ করে এবং তখন বেশ শক্তিশালী ইলেক্ট্রিক ফিল্ডের সৃস্টি হয় যেটা দরকার মূলত ইলেক্ট্রন আর পজিট্রন কনাগলোকে ত্বরনায়িত করার জন্য!
যখন ক্লাস টেন এ বায়োলজি ক্লাশের প্রাকটিক্যাল রুমে গেলাম তখন প্রথমে চোখে পড়ে মাইক্রোস্কোপ। আগে শুধু জানতাম এটা দিয়ে অতি ক্ষুদ্র জিনিস চাক্ষুস দেখা যায়। পরে জানতে পারলাম এগুলো আসলে অতটা শক্তিশালী নয়, কারন যখন হাবল টেলিস্কোপ অথবা ন্যানোস্কেলের মাইক্রোস্কোপের কথা আসে তখন দেখা যায় এগুলো তাদের কাছে নাদান বলেই মনে হয়। তবে যত শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপই হোক না, একসময় দেখা যায় এগুলো সেন্সর ডিপেন্ডেড ডিজাইন হয়ে যায়। হয়তোবা এমন যে এতো ক্ষুদ্র জিনিস দেখতে হলে প্রথমে ওতে সূক্ষ্য তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো ফেলা হয়। যখন সে ঐ অনুর ভিতর দিয়ে প্রবেশ করবে তখন সে বাধাপ্রাপ্ত বা প্রতিসরিত বা এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে সামান্য পরিবর্তন হবে যার ফলে দেখা যাবে ঐ পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে সমস্ত ক্যালকুলেশন সম্পন্ন হয়ে ভিজ্যুয়ালাইজড কিছু আসবে। খুবই ক্ষদ্র পর্যায়ে গিয়ে দেখা যাবে আসলে সেন্সর সার্কিটারি ডিপেন্ডেড হয়ে পড়ে এবং এসব উপাত্তের ক্যালকুলেশনের জন্য একটা শক্তিশালী কম্পি্উটার যার থাকবে প্রচুর পরিমান ক্যাশ এবং স্ট্যাটিক মেমোরি!
আমরা লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারকে সেরকমই একটা তাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপ (কারন এখানে ন্যানোর ন্যানো মিটার স্কেলে উকিঝুকি মারার ক্ষমতা রাখে) চিন্তা করতে পারি যেটা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জেনেভা শহরের পাশে গ্রামের লোকালয় হতে একটু দূরে অবস্হিত এবং দুঃখের ব্যাপার হলো আমার ওখানে নিজে গিয়ে দেখার সৌভাগ্য আদৌ হয়নি! যাই হোউক এখানে যেসব পরীক্ষা গুলো হবে সেখানে প্রচুর এনার্জি নিয়ে কাজ করা হবে খুব ছোট স্কেলের ভরের উপর। এনার্জি স্কেলটা হবে টেরা ইলেক্ট্রন ভোল্টের সমান মান এক ট্রিলিয়ান ইলেক্ট্রন ভোল্ট। এটা মূলত হিগস পার্টক্যালকে ফাদে ফেলার জন্য ই হতে পারে এবং সাথে সাথে দেখা যাবে অতি উত্তেজিত বা অতি চার্জায়িত কণাগুলোর সংঘের্ষ এই স্কেলে ডার্ক ম্যাটারেরও জন্ম দিতে পারে তৎক্ষনাত।
টেরাস্কেলের এই কোলাইডার আগের যত কোলাইডারে বেসিক প্যারামিটারের রেন্জ্ঞ ছিলো সবগুলোকেই ছাড়িয়ে গেছে। এটা শুরু হয়েছে এভাবে যে প্রথমে একটা প্রোটন বীমের সৃস্টি করা হবে যার এনার্জী লেভেল আগে তৈরী কৃত যত বীমগুলো ছিলো তার চাইতে অনেক বেশী। এই প্রোটনকে আলোর কাছাকাছি স্পীডে চালনা করার জন্য ব্যাশার করা হয়েছে 7000 শক্তিশালী ম্যাগনেটের পথ যেগুলো তরল হিলিয়াম দ্বারা ঠান্ডা করে রাখা হয়েছে: মোটামুটি দুই ক্যালভিনের কম তাপমাত্রায় যার ফলে এগুলো সুপার কন্ডাক্টরের মতো কাজ করে, যার ফলে সৃস্টি তড়িৎচৌম্বকিয় বল এই দুটো বীমকে নির্দিস্ট ডিরেকশনে আলোর গতির কাছাকাছিতে চালনা করতে পারে।প্রতিটা প্রোটনের চার্জ হবে 7 টেরাইলেক্ট্রন ভোল্টের মতো যার এ্যানর্জি লেভেল হবে 7000 গুন বেশী (আইনস্টাইনের E=mc2 অনুসারে)। তবে এখানে একটা জিনিস খেয়াল রাখা হবে এই মেশিনটা এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে একটা বীম তৈরীর সময় এর ল্যুমিনোসিটি আর উজ্জলতার তীব্রতা 40 গুন বেশী রাখা হবে ফার্মিল্যাবের টেভাট্রন কোলাইডারের থেকে।যখন প্রোটন গুলো তার সর্বোচ্চ এনার্জি লেভেলে আর ম্যাগনেট গুলো সম্পূর্ন রূপে প্রস্তুত হবে, তখন সমস্ত ঘর্নায়মান কণাসমূহের এনার্জি লেভেল বা গতিশক্তি এতটাই প্রবল থাকবে যে এটাকে তুলনা করা যেতে পারে ধরা যাক 900 টা গাড়ির প্রতিটাই ভ্রমন করছে 100 কিলোমিটার পার ঘন্টায় অথবা ঐ পারিমান শক্তি যার মাধ্যমে 2000 লিটার পানি গরম যাবে কফি খাবার জন্য!
এখানে পরীক্ষার মূল উপাদান হচ্ছে কয়েক গুচ্ছ প্রোটনের বীম যার ভ্যালোসিটি হবে আলোর গতির 99.9999991% যাদেরকে বিশেষ পরিবেশে সংঘর্ষে লিপ্ত করানো হবে বিশেষ প্রক্রিয়ায়। এখানে একটা কথা হয়তো না বললেই নয় আগের এক্সিলেটর গুলো যেমন প্রটোন সিন্কট্রন এবং সুপার প্রোটন সিন্কট্রন দ্বারা প্রোটনকে আলোর গতির 99.99975% কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারত যেখানে এই এলএইচসি প্রোটন এ্যানর্জিকে 16 গুন বেশী বাড়িয়ে দেয় এবং সংঘর্ষায়িত করে 300 লক্ষবার পার সেকেন্ড 10 ঘন্টা ধরে সর্বোচ্চ! এরকম 4টা মূল পরীক্ষা মূলত 100টেরাবাইটেরও বেশী সংঘর্ষের উপাত্ত দিতে পারে প্রতি সেকেন্ডে। আর এই কোলাইডারে এসবে ক্ষেত্রে কাজে লাগাবে কিছুসংখ্যক প্রোটনের বীম যার এক গুচ্ছ বীমে প্রোটনের সংখ্যা থাকবে 100 বিলিয়নের মতো যার আকার হবে সুইয়ের মতো, কয়েক সেন্টিমিটার দৈর্ঘের এবং কলিশন পয়েন্টে মানুষের চুলের মতো চিকন হয়ে যাবে আর প্রোটনগুলোর মোট গুচ্ছের সংখ্যা 2808 এবং ভ্রমন করবে কোলাইডারে প্রায় 27 কিলোমিটারের মতো। প্রতিটা বীমের গুচ্ছ 4 টা জায়গায় থেকে 310 লক্ষবার একে অপরকে অতিক্রম করবার সময় সংঘর্ষে লিপ্ত হবে এবং প্রতিটা অতিক্রান্ত মূহুর্তে 20 টা সংঘর্ষ ঘটবে অথবা প্রতি সেকেন্ডে 6000 কণা সংঘর্ষে অংশগ্রহন করবে। আমি আগেই বলেছিলাম এসব সংঘর্ষের জন্য নানা উপাত্তের প্রয়োজন হবে কিন্তু প্রধান সমস্যা হলো এত দ্রুত এবং স্পিডি সেন্সর ডিজাইন করাও খুব ভাবনার ব্যাপার এ যেনো এমন ধান ফলানোর চাইতে ধান কে পাহারা দেবে সেটাই মুখ্য বিষয় হয়ে গেছে। যাই হোউক প্রতিটা সংঘর্ষের জন্য 1.5 মেগাবাইটের ডাটা পাওয়া যাবে আপাতত আর যতটুকু থিওরী জানা আর বিশ্বাস আছে প্রতি 2.5 সেকেন্ডে 1 টা হিগস পার্টিক্যাল পাওয়া যেতে পারে যদি বীমের ল্যুমিনোসিটি 100% আর হিগসের প্রচলিত বা আদর্শ এ্যাসাম্পশনের পরিবেশ অক্ষুন্ন থাকে!
এতশত সংঘর্ষের ফলাফলটা কি? আমাকে একজন জিজ্ঞেস করলো! আমি কিছু বলার আগেই আমার সাথে থাকা একজন বললো,"কিছুই না, কিছু পুলিশের পকেট ভারী, হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ী, কিছু সত্য মিথ্যা কেস, টাকার ছড়াছড়ি, তারপর যে লাউ সে কদু!"
আসলে পদার্থবিজ্ঞানের শাখা প্রশাখায় এরকম করাপশন মানে সবকিছু ধ্বংসের নামান্তর!
তাই আমরা কাজে কথায় ফিরে আসি।
পদার্থবিজ্ঞানীদের মতে এসব সংঘর্ষের ফলাফল স্বরূপ কিছু ক্ষণস্হায়ী কণার উদ্ভব যেগুলো পরে কোয়ার্ক আর গ্লুয়োনের সমন্বয়ে প্রোটনের রূপ নেবে।এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ধ্বংসযজ্ঞে যেটা হবে সেটা হলো 2 TeV চার্জসম্পন্ন প্যারেন্ট প্রোটন (প্রোটন- এ্যান্টি প্রোটন)মুক্ত হবে যেটা টেভাট্রন কোলাইডার থেকে নিদেনপক্ষে 5 গুন বেশী ক্ষমতাসম্পন্ন!
এতসব পরীক্ষাকে পর্যবেক্ষনের জন্য 4টা দৈত্যাকৃতির ডিটেকটরের সাহায্য নেয়া হবে। সবচেয়ে বড় ডিটেকটরটি প্যারিসে অবস্হিত নটরডেম ক্যাথেড্রালের অর্ধেক হবে এবং এতে ব্যাবহ্রত লোহার ওজন আইফেল টাওয়ারের থেকে একটু বেশী হবে এবং এর কাজ হলো কেন্দ্রে সংঘর্ষের কারনে ছিটকে বেরিয়ে পড়া কনাগুলোক অনুসরন করা আর মাপা।কিন্তু সমস্যাটা হলো অন্য জায়গায়। এই ডিটেক্টরে বেহিসেবী ছিটকে যাওয়া কণাগুলোর পরিসংখ্যান এমনভাবে নেয়া হবে যে 50 মাইক্রন দূরত্বের কণাসমূহের পরিসংখ্যান রাখতেও সক্ষম।
এখানে প্রধান সমস্যাটা হচ্ছে হিউজ পরিমানে ডাটা কালেকশন। একটা পরিসংখ্যান দেয়া যাক, সবচেয়ে বড় দুটো ডিটেকটরের প্রত্যেকটার সাথে 1000 লক্ষ ডাটা স্ট্রিমিং চ্যানেল সংযুক্ত যেগুলো প্রতিসেকেন্ডে 1 লক্ষ সিডি লাগবে। তাহলে ছয় মাস পর দেখা যাবে যে সিডির সারিগুলো দিয়ে আমাদের আকাশে দেখা সুন্দরী চাদের পৃষ্ঠ ভরে ফেলা যাবে। তাই এরকম পাগলামী পরিমান ডাটা সংরক্ষন বা রেকর্ড না করে যেটা করা হয়েছে, প্রতিটা পরীক্ষার জন্য ডেভেলপ করা হয়েছে ট্রিগারিং এবং ডাটা এ্যাকুইজিশন সিস্টেম যেগুলো স্প্যাম ফিল্টারের মতো কাজ করবে যার ফলে প্রতি সেকেন্ডে ঘটে যাওয়া 100টা মূল সাংঘর্ষিক ঘটনার বিশেষ মূহুর্ত যেগুলো মনে হবে আসলেই দরকারি সেগুলোকে রেখে বাকি সবগুলোকে ডিসকার্ড করে ফেলবে এবং সংরক্ষন করা হবে LHC এর সেন্ট্রাল কম্পিউটিং সিস্টেমে যেটা সার্নে অবস্হিত। এটা মূলত আর্কাইভ এবং পরে এর এ্যানালাইসিসের জন্য ব্যাবহ্রত হবে।
সার্নে অবস্হিত সেন্টারে কয়েক হাজারের মতো কম্পিউটার আছে যেগুলো এসব 'র' ডাটাকে ফিল্টার করে আরো কম্প্যাক্ট করা হবে স্হান সংকুলানের জন্য, তারপর চিড়ুনি দিয়ে ছেচে নির্দিস্ট ফর্মেটে রাখা হবে পদার্থবিদদের জন্য। এসব এ্যানালাইসিস গুলো একটা সমন্বিত গ্রীড নেটওয়ার্কে রাখা হবে যেটার এক্সেস করতে পারবে তিন মহাদেশের বড় বড় নামজাদা ভার্সিটিসমূহ, গবেষনা প্রতিস্ঠান- যার মধ্যে দুঃখের বিষয় বাংলাদেশের কোনো ভার্সিটি নেই। তবে এজন্য আলাদা ডেডিকেটেড অপটিক্যাল লাইন টানা হয়েছে সার্নের থেকে।
গত নভেম্বরের দিকে এই কোলাইডারের রিং এর মধ্যে থাকা পার্শ্ববর্তী ম্যাগনেট গুলোতে কানেকশন দেয়া হয়ে গেছে। ডিসেম্বর মাঝামাঝি সময়ে আটটা সেক্টরের একটাকে সাইরোগেনিচ টেমপেরাচরে শীতলিকরন করা হয়েছে (এটা মূলত লিকুইড নাইট্রোজেন বা হাইড্রোজেন দিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়া শীতলিকরন যা -180 সেলসিয়াস বা -190 সেলসিয়াসের এর নীচে ঠান্ডা করতে পারে) এবং তার সাথে সাথে দ্বিতীয়টিরও শীতলিকরন শুরু করা হয়েছে। একটা সেক্টরকে পুরোপুরি ঠান্ডা করে এর পাওয়ার কানেকশন সম্পন্ন করে চালু করা হয়েছে 2007 এর শেষের দিকে আর এর পর একে আবারো রুমের আভ্যন্তরীন তাপামাত্রায় আনা হয়েছে।সেক্টরের টেস্ট সম্পন্ন হলে,প্রথমে আলাদাভাবে পরে সমন্বিত ভাবে একে পরীক্ষার জন্য তৈরী করা হবে এবং তারপর একটা প্রোটনের বীম প্রথমে দুইটা বীম পাইপের একটাতে পতিত করানো হবে যার মাধ্যমে উহা মেশিনের 27 কিলোমিটার পথ পরিভ্রমন করবে!
ছোট ছোট এ্যাক্সিলাটরগুলো অলরেডী চেক করা হয়ে গেছে সেই হিসেবে সে গুলো মূলত LHC এর মেইন রিং এ চালানো হবে তবে এক্ষেত্রে প্রোটনগুলোর চার্জ ছিলো 0.45TeV. প্রথমে বিজ্ঞানীরা LHC এর হার্ডওয়্যারের দিকে লক্ষ্য রেখে অল্প ঘনত্বের বীম নিয়ে কাজ করবে। শুধুমাত্র যখন বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারবে এই পাইলট প্রজেক্টের কাজটা সফল হয়েছে কোনো দুর্ঘটনা ছাড়া তারপরই কেবলমাত্র বীমের তীব্রতা বাড়ানো হবে। পরে যেটা করা হবে এক গুচ্ছ বীমকে তখন 7 TeV চার্জায়িত করে ওটা মেশিনে সার্কুলেট করানো হবে।
যখন আস্তে আস্তে এভাবে কোলাইডারটির কমিশনিং করা হবে তখন বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হবে এবং এগুলোকে সমাধান করা হবে। এসব সমাধান গুলো বের করে আনাই তখন হবে বিজ্ঞানীদের জন্য একটা বড় চ্যালেন্জ্ঞ!
চারটা এক্সপেরিমেন্ট- CMS (Compact Muon Solenoid), LHCb, ATLAS (A Toroidal LHC Aparatus), ALICE (A Large Ion Collider Experiment) এর প্রত্যেকটাই সম্পন্ন করতে অনেক দীর্ঘ প্রসেস ওয়েট করছে এবং এটা শেষ করতে হবে এই বীম কমিশনিং এর আগেই।গত নভেম্বরের মধ্যের দিকে ভার্টেক্স লোকেটর বসানো হয়েছে LHCb এর ভিতরে। ইতিমধ্যে কিছু আন্ডার গ্রাজুয়শন আর পোস্ট ডক্টরটের ছাত্ররা এখানে কাজ করতে গিয়ে কিছু ডাটা সংগ্রহ করেছে যেটা মূলত এসব ডিটেক্টর সে পরিমান কসমিক রে জমা পড়েছে তাদের উপাত্ত আর মিউনের পরিমান নিয়ে। এটাও অবশ্য এক ধরনের টেস্ট হয়ে গেছে এসব ডিটেক্টর ভবিষ্যত কত স্পর্শকাতর ভাবে কাজ করবে!
যখন সব কিছু কাজ করা শুরু করবে আর ডিটেক্টরগুলো সংগৃহিত তথ্য গুলো সার্নে পাঠানো শুরু করবে তখন এই প্রাথমিক ডাটার পরিমান অবিশ্বাস্য পরিমান বড়। এত গুলো ডাটা এত অল্প সময়ে সংগৃহিত করে ওগুলো রিড-রাইটের জন্য প্রচুর পরিমান, ক্যাশ মেমোরি, ক্লক স্পিড দরকার আর দরকার স্হান সংকুলানের জন্য জেটাবাইটের জায়গা! ডিজাইনের উজ্জলতায় 20টা ইভেন্ট ঘটিত হবে মোটামুটি প্রতিটা ক্রসিংএ একটা সুইসাইজের প্রোটনের দ্বারাই। 25 ন্যানোসেকেন্ডে সময় লাগবে পরবর্তি দুইটা অতিক্রমনের এর জন্য। একেকটা ক্রসিং এ সংঘটিত সংঘর্ষে প্রচুর পরিমান কণা ছড়িয়ে পড়বে ডিটেকটরের মধ্যে এবং এর স্তরের বাইরে যখন পরবর্তি অতিক্রমন সংঘটনের সময় হয়ে আসবে। লক্ষ লক্ষ পরিমান ডাটা স্ট্রিমিং চ্যানেল যেগুলো এসব ডিটেক্টরের সাথে সংযুক্ত থাকবে সেগুলো প্রতি ইভেন্টে এক মেগাবাইটের সমান ডাটা তৈরী করবে যেটা হিসেব করলে দেখা যাবে প্রতি সেকেন্ডে এক পেটাবাইট বা এক বিলিয়ন মেগাবাইট প্রতি দু সেকেন্ডে! আসলেই ভয়ন্কর ব্যাপার!
আমি আগেই বলেছি এই ভয়াবহ পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য ট্রিগার সিস্টেম থাকবে যেটা এই পরিস্হিতিকে নিয়ন্ত্রনে আনবে। প্রথম লেভেলটা হবে ডাটা গুলো রিসিভ করবে এবং শুধুমাত্র ডিটেক্টরের সাবসেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য গুলো পর্যবেক্ষন করে সেসব তথ্যগুলোকেই গ্রহন যেটাতে একটা এ্যানরজেটিক মিউওন বীমের স্হানাংকের সাথে নির্দিস্টে কোণে চলন্ত অবস্হায় পাওয়া যাবে। এই লেভেল 1 ট্রিগারিং পরিচালনা করা হবে 100টা ডেডিকেটেড কম্পিউটারের মাধ্যমে যার লজিক গুলো হার্ডওয়ারেই এমবেড করা থাকবে। তারা 1 লক্ষ ডাটার গুচ্ছ প্রতিসেকেন্ডে বেশ সতর্ক ভাবে নির্বাচন করবে পরবর্তী উচ্চতর ট্রিগারিং এর জন্য!
উচ্চতর লেভেলের ট্রিগারিং এর ফলে অন্যান্য ডিটেক্টরের লক্ষাধিক ডাটা চ্যানেল হতে এভাবে ডাটা রিসিভ করবে। এর সফটওয়্যার কয়েখাজার কম্পউটারে চলবে এবং গড়পড়তায় 10 মাইক্রোসেকেন্ডে প্রত্যেক গুচ্ছের ডাটাগুলোকে লেভেল 1 ট্রিগারিং দ্বারা এ্যাপ্রুভ করবার পরই একে প্রয়োজনীয় সময় দেয়া হবে একটা ইভেন্টের রিকনস্ট্রাক্ট করার ব্যাপারটা! উচ্চতর ট্রিগার লেভেল প্রতি সেকেন্ডে 100 এর মতো ইভেন্ট প্রতি সেকেন্ডে পাঠিয়ে দেয় LHC এর গ্লোবাল কম্পিউটার নেটওয়ার্কের হাব এ!
LHC এর গ্রিড সিস্টেম টাইয়ার দ্বারা সাজানো। টায়ার 0 CERN নিজেই এবং এটা কয়েক হাজার ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পিউটার প্রোসেসর দ্বারা তৈরী কৃত যেগুলো দেখতে বাসার ডেস্কটপ পিসির মতো আমার কতগুলোর পুরো CPU casing সিস্টেম পিজাবক্সের মতো শেলফে সজ্জিত একটার পর একটা ইন্টারনেটওয়ার্কিং সমৃদ্ধ।
ডাটা প্রথমে টায়ার 0 তে পাঠানো হবে LHC এর চারটা পরীক্ষার ডাটা এ্যাকুইজিশন সিস্টেমের মাধ্যমে যেগুলো সংরক্ষিত হবে ম্যাগনেটিক টেপে। আসলে ম্যাগনেটিক টেপ যতই ওল্ড মডেল হোক না এগুলো এখনো এগুলোর চেয়ে অনেক রিলায়েবল এবং কস্ট ইফেক্টিভ।টায়ার 0 এই ডাটা গুলোকে 12 টা টায়ার 1 সেন্টারে পাঠিয়ে দেবে যেগুলো CERN এ অবস্হিত এবং 11 নম্বরটা হলো পৃথিবীর তাবৎ নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষনা প্রতিষ্ঠান যেমন ফার্মিল্যাব এবং আমেরিকার বুকহ্যভেন ন্যাশনাল ল্যাব, ইউরোপ, এশিয়া, কানাডা। এইভাবে এসব আনপ্রসেসড ডাটা গুলো দুজায়গায় সংরক্ষিত হবে একটা CERN এ আরেকটা হলে পুরো বাকি দুনিয়ায়!প্রত্যেকটা টায়ার 1 নিজেই কাজ করবে হোস্ট হিসেবে যেখানে সংরক্ষিত থাকবে পদার্থবিজ্ঞানীদের জন্য বিশেষ ভাবে স্ট্রাকচারড ডাটা।
পুরো LHC কম্পিউটার গ্রিডের নিজস্ব টায়ার 2 সেন্টার আছে যেগুলো মূলত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আর রিসার্চ ইনস্টিউটের ক্ষুদ্রতর কম্পিউটার সিস্টেম।এই সেন্টারের কম্পিউটারগুলো গ্রিডে প্রসেসিং পাওয়ার বন্টন করে দেয় প্রয়োজন মতো!
গত বছরের মার্চে এক সংঘর্ষনমুখী এক্সাইটেড প্রোটন বীমের সামনে একটা ম্যাগনেট ধরা হলো (এর নাম ছিলো কোয়াড্রিপল ম্যাগনেট-এটাকে কোনো পার্টিক্যাল বিমকে ফোকস করার জন্য তৈরী হয় এবং এটা ধরেন একজোড়া ম্যাগনেটের একই পোলকে মুখোমুখি আরেকজোড় পোল এদের অভিলম্ব বরাবর বিপরীত একই মেরুকে মুখোমুখি করে রাখা, এবং এর ফোর্সে সূত্র হচ্ছে লরেন্সের ফোর্স:
F= q (E+ v X B)
ফলাফল স্বরুপ দেখা গেলো প্রথমে ঐ ম্যাগনেটের কয়েল বা সলিনয়েড গুলো তাদের সুপার কন্ডাক্টিভিটি হারিয়ে ফেললো (এই অঘটনকে বলে কোয়েন্চিং)এবং তারপর একটা ভয়াবহ বিফলতা দেখা দিলো মানে ঐ ম্যাগনেটের কিছু অংশের সাপোর্ট ভেঙ্গে গেলো ঐ পরিমান বলের অভিমুখে থাকার কারনে এবং একটা উচ্চ বিস্ফোরন ঘটে আর হিলিয়াম গ্যাসে চারিদিক ভরে যায়।
LHC তে এরকম 24 টা কোয়াড্রিপল ম্যাগনেট, এর চারটা ইন্টারেকশন পয়েন্টে অন্তত: একটা ট্রিপলেট বিদ্যমান (1,1,1)। প্রথমে বিজ্ঞানীরা এই সমস্যার কারনে এসব ম্যাগনেট সরিয়ে ফেলতে চেয়েছিলো, কিন্তু একবার সেট করার পর ওগুলো সরিয়ে ফেলা নতুন করে ডিজাইন করা মানে এর উদ্বোধনের সিডিউল আরো কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়া। তাই ফার্মিল্যাব আর CERN বিজ্ঞানীরা এমন ভাবে এটাকে ডিজাইন করলো যাতে পরীক্ষার সময় এসব ম্যাগনেটগুলো অক্ষত থাকে এবং পরে যেসব ট্রিপলেট ক্ষতিগ্রস্হ হয়েছিলো সেগুলো সরিয়ে ফেলাও হয়েছে। তারপরও অতিরিক্ত সতর্কতা আর আরো কিছু মাইনর সমস্যার জন্য কয়েকদফা পিছিয়ে নেয়া হয় এর উদ্বোধনের দিন। এর ফলে অবশ্য উদ্দীপ্ত শ্রমিকরা বেশ খুশীই কারন আরো তারা সময় পাচ্ছে এটা নিয়ে কাজ করার।
আরেকটা সমস্যা গত সেপ্টেম্বরে সামনে আসে সেটা হলো বিজ্ঞানীরা হঠাৎ আবিস্কার করে প্লাগইন মডিউল হিসেবে পরিচিত পিছলে থাকা কপারের পাতগুলো মুচরে যায় যখন এ্যাক্সিলাটর সাইরোজেনিক তাপমাত্রায় শীতল করা হয় অপারশনের জন্য। পরে তৎক্ষনাত রুমের বিদ্যমান তাপমাত্রায় এগুলোকে গরম করে ঠিক করা হয়। প্রথমে এই সমস্যাটা একবারেই অজানা ছিলো। এই পুরো সেক্টরটায় মোট 366 টা প্লাগইন মডিউল বিদ্যমান এবং পরে এগুলো খুলতে গিয়ে সমস্যটা কোথায় খুজতে যাওয়া হলো তখন দেখা এটা আসলে বিশাল ওয়ার্কলোড। পরে পিংপং সাইজের বল ডিজাইন করা হলো যার সাথে লাগানো ছিলো 40 মেগাহার্টজে ট্রান্সমিট করতে পারে এমন ট্রান্সমিটার(অবশ্য এই ফ্রিকোয়েন্সিতেই ফোটন বীম গুচ্ছ গুলো পরিভ্রমন করবে)। এসব বলকে ঐসব বীম পাইপের ভিতর ঢুকানো হলো, এগুলো এতই ছোট ছিলো যে এগুলো পাইপের ভিতর খুব সহজেই চলতে পারতো এবং যেখানে বিকৃতি ঘটেছিলো সেখানেই ওগুলো আটকে যেতো।এই বলসদৃশ্য ট্রান্সমিটার গুলো 50 মিটার অন্তর অন্তর বসানো হয়েছিলো। এর ফলে দেখা গেলো মাত্র ছয়টা সেক্টরে এই সমস্যা দেখা গিয়েছিলো যেখানে ইনস্যুলেশন অন্যান্য বিষয়গুলো ঠিক করার জন্য একটা নির্দিস্ট সংখ্যক টিম ঠিক করে সমাধান করা হয়েছিলো।
যখন এ্যাক্সিলাটরের সর্বশেষ কানেকশন গুলো দেয়া হচ্ছিলো ম্যাগনেটগুলোর মধ্যে নভেম্বরের শেষের দিকে, তখন সব কিছু ঠান্ডা করার প্রক্রিয়া শুরু করে প্রোজেক্ট লিডার লিন ইভানস বলেছিলো," এরকম জটিলতা সম্পন্ন মেশিনের জন্য, সবকিছুই খুব মসৃণভাবে চলছে এবং আমরা তাকিয়ে আছি পরবর্তি গ্রীস্মে যখন আমরা ফিজিক্স দেখবো এই LHCতে।"
Wikipedia:: Large Hadron Collider