সকাল সকাল অনুভুতি:
জাপানি লোকজন গাড়ির হর্ন বাজায় না বললেই চলে৷
জাপান এসে পৌছলাম গতকাল স্থানীয় সময় ২টার একটু পর৷ বাকি সময়টা বাসে চড়ে ৫ টার দিকে ডরমিটরি তে পৌঁছাতে যতক্ষণ বাসে ছিলাম কোন হর্ন শুনি নাই।
আজকে সকাল এ ঘুম থেকে উঠে দেখি টুথপেষ্ট নিয়ে আসছি কিন্তু ব্রাশ আনি নাই। পরে বের হয়ে মোবাইল টিপতে হাটতেছি আর সামনে দেখি নাই অতটা। এখানে আমরা যে এলাকাটাতে আছি সেটা বলা চলে কোনো হইচই নাই। পরিবেশ টা বেশ সুন্দর, নদীর-পাড় দাড়িয়ে থাকলে যেরকম ঠান্ডা বাতাস বইতে থাকে, ঠিক তেমন ই পরিবেশ।
এটা ভাবতে ভাবতে দেখি সামনে গাড়িটা প্রায় থেমে যাচ্ছে। ঠিক তক্ষনি আমি রাস্তা ছেড়ে একপাশে আসি আর গাড়ি ভু- দৌড়।
হর্ন তো সে দিবেই না বরং গাড়ি দাড় করিয়ে ফেলছিলাম।
ঢাকায় হইলে যাবার সময় ২ টা গালি টাইপ কিছু বলে যাইত।
বুঝলাম তারা যত ই হোউক হর্ন বাজাতে একদম পছন্দ ই করে না।
পরে একটা সুপারশপ এ ঢুকে ব্রাশ খুজতেছি। দেখি ভদ্রমহিলা ঘুরছে আর গুজাইমাস-গুজাইমাস কিছু বলতেছে সারা দুকানের করিডর গুলাতে।
একটা মুটামুটি টাইপ ব্রাস নিয়ে কাউন্টার এ দিলে কিছু বলতে নিল আর গুড মর্নিং অনুমান করে বুঝিয়ে দিলাম, প্লিজ ইংরেজি...
উনিও ততক্ষন সুন্দর হাসি দিয়ে গুডমর্নিং বলে কম্পিউটার স্ক্রিন দেখিয়ে বলল ২১৩ ইয়েন। তার আগেই বো -ডাউন দিয়ে মোটামুটি ভাবে নুইয়ে টেবিলের কাছে। আমি আর কি করবো টাকা দিয়ে থ্যাংক আর গুড মর্নিং বলে আসতে ই দেখি অনেক গুলা কয়েন দিয়ে দিছে। দোকান থেকে বের হতে ২ জন এর সামনে দিয়ে যেতেই আরিগাতো গুযাই মাসিতা শুনতে শুনতে আশতেছি। আর আমি যতটুক বুঝি/অনুমান করি ইংরেজিতে ধন্যবাদ, মর্নি বলে আসি।
আর সবার হাসি মুখ দেখে চিরাচরিত আমি ও হাসি দিয়ে দিয়ে তাকিয়ে থাকি।
জাপানিজ লোকজন এখন পর্যন্ত অনেকটা আমাদের মত অতিথিপরায়ণ মনে হয়েছে ৷ সহজ, হাসি খুসি। তবে মনে হয় না সুযোগে খুজে বাশ দেয়ার।
বুড়া মানুষ রা সাইকেল চালাচ্ছে, জগিং করছে৷ বাড়ির সামনে গাড়ি, সাইকেল আরামছে পার্ক করে রাখে। জানালায় গ্রিল নাই৷ সম্ভবত চুরির ভয় নাই।
এদিকে ডরমিটরিতে টয়লেট ব্যাবহার নিয়ে চলছে মোটামুটি গবেষনা। এখানে হ্যন্ড শাওয়ার নাই। বাটন প্রেস করলে আপনার বাট পরিস্কার করে দিবে ওয়াটার প্রেসার। এটা নিয়ে পরে বলা যাবে।
আমরা বসে ভাবতেছি তাদের এই নির্ভার কালচার নিয়ে৷ আর ব্রাশ কিনে আনার সময় ৭১৩ ইয়েন সব গুলা ই কয়েন এ দিছে। এগুলা গুনতে গিয়ে এখন আমি আর Rakibul Hasan Rony ভাই মিলে জাপানি শতকিয়া শিখি ইচি, নি, সান, ইওন, গো, রুকু, নানা, হাচি, কু, জু...
জাপানের টোকিও শহর কমবেশি ঢাকার মতোই। সেখানেও প্রচুর ট্রাফিক জ্যাম আছে। মানুষ নিজেদের মতো ব্যস্ত, অফিসের সময় সড়কে প্রচণ্ড যানজট, মানুষের হুড়োহুড়ি বা তাড়াহুড়া সব কিছুই ঢাকার মতো বরং অনেকাংশে বেশি। এমনকি টোকিওতে ঢাকার চেয়ে বেশি মানুষ একসঙ্গে বের হয়। তবে ওরা কীভাবে এগুলো ম্যানেজ (মানিয়ে নেয়) করে এটাই মূল আকর্ষণ-
চমৎকার অভিজ্ঞতা-
জাপানের শিনজুকু নামে একটি স্টেশন আছে, সেখানে ২০০৭ এর এক হিসাব অনুসারে প্রতিদিন ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন মানুষ (প্রায় ৩৭ লাখ) এই স্টেশন দিয়ে চলাচল করে। একবার চিন্তা করে দেখুন প্রতিদিন স্টেশনে কী পরিমাণ ভিড় হয়। যখন যাত্রীরা ট্রেনে ওঠে তখন তাদের জন্য খুব অল্প সময় বরাদ্দ থাকে। এ সময়ে একদম ঠাসাঠাসি করে ট্রেনে ওঠা এখানকার স্বাভাবিক ঘটনা। এমনকি মানুষের ভিড়ে দরজা যখন বন্ধ করা যায় না তখন যাত্রীদের নামিয়েও দেওয়া হয় না।
প্রতিটি স্টেশনে কিছু গার্ড থাকেন। যখন দরজা বন্ধ করার সময় হয় কিন্তু যাত্রীর চাপ দরজা আটকানো যায় না তখন যাত্রী কাকে নামতে বলবেন? তখন গার্ডরা কাউকে না নামিয়ে যাত্রীদের ভেতরে চাপিয়ে দরজা বন্ধ করতে সহায়তা করেন।
কিছু প্রশ্ন-
কীভাবে সামলে নেয় এত মানুষ?
এত মানুষের ভাড়া কীভাবে নেয়?
এত মানুষ প্রতিদিন কত জনের মাথা ফাটায়?
এক জনের আগে আরেক জন ঢুকে, ট্রেনে সিট নিয়ে হট্টগোল?
সুন্দর সমাধান-
মোটামুটি সবাই ক্রেডিট কার্ডের মতো পাস কার্ড ব্যবহার করেন। কার্ডে টাকা রিচার্জ করা থাকে। অনেকটা ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো। এই কার্ড দিয়ে কেনা কাটাও করা যায়। আপনি যখন এক স্টেশন থেকে কার্ড পাঞ্চ করবেন তখনই কাজ শেষ। উঠে যান ট্রেনে। আর কেউ ভাড়া চাইবে না। আবার যে গন্তব্যে যাবেন সেই স্টেশন থেকে বের হবার পথে একইভাবে কার্ড পাঞ্চ করে বের হয়ে যাবেন। অটোমেটিক আপনার প্রবেশের স্টেশন থেকে বের হবার স্টেশনের দূরত্ব অনুসারে কার্ড থেকে টাকা কেটে যাবে।
কিন্তু আপনার কার্ড না থাকলে? সে ক্ষেত্রেও প্রতিটা স্টেশনে রাখা আছে অটোমেটিক টিকিট কাউন্টার, কম্পিউটার স্ক্রিনে কোন স্টেশনে যাবেন ইনপুট দিলে টিকিট বের হয়ে আসবে, সেই টিকিটটি স্টেশনে প্রবেশের পথে রাখা পাঞ্চ করার যায়গাতে দিলেই হবে।
এত মানুষের ভিড় যেভাবে সামলায়-
খুব সম্ভবত পৃথিবীর সেরা পাবলিক ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম ট্রেন। শহরে মেট্রেরেল। যে যেখানে যেতে চায় বেশিরভাগই ট্রেনে যায়। এতে সড়কে প্রাইভেটকারও কম একই সঙ্গে ভিড়ও কম থাকে। সবাই সময়মতো পৌঁছায় তাই এটাই বেশি গ্রহণযোগ্য। আর যদি ট্রেন ২ থেকে ৩ মিনিট লেট করে তাহলে ডিলে সার্টিফিকেট দেয়। আর কোন ট্রেন লাইনে লেট হচ্ছে সেটা স্টেশনের নিউজ স্ক্রলে দেখায়, কারণসহ।
আর মানুষজন ট্রেনে ঠাসাঠাসি করে প্রবেশ করেই চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। সিটে বসে যাতায়াত করে যে কয়জন তার চেয়ে ২ থেকে ৩ গুণ যাত্রী দাঁড়িয়ে যাতায়াত করে। ট্রেনে চুপচাপ থাকার বিষয়টি সম্ভবত জাপানিদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য। প্রথমে ভেবেছিলাম তারা কম সামাজিক, প্রথমে অবাক লাগলেও এখন লজিক্যাল (যুক্তিসঙ্গত) মনে হয়। এত মানুষ যদি নানা ইস্যুতে কথা বলা শুরু করত তাহলে কি যে হতো।
আর সিটে বসার ক্ষেত্রে এরা বৃদ্ধ, মহিলা, প্রতিবন্ধীদের প্রাধান্য দেয়। কিন্তু তবে নিজে বসার চেয়ে অন্যদের একটু সুবিধা দেয়। আমিও সে দিন একজনকে বসতে দিয়েছিলাম, অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে বসেছিল, কিন্তু আরেকদিন যখন একজনকে বসতে বলি সে তখন আমাকেই বসতে দেয়।
ঢাকার বুকে মেট্রোরেল-
আমাদেরও আশার বিষয় হচ্ছে ঢাকাতেও মেট্রোরেলের কাজ চলছে। ওটা নিয়ে অনেকের মতো আমারও সন্দেহ ছিল ঢাকার মেট্রোরেলে শহরের যানজট কমাবে কি না। কিন্তু জাপানের মতো দেখলে আসলে ঢাকাতে মেট্রোরেল ছাড়া বিকল্প নেই।
দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় ট্রেনই একমাত্র মুক্তি-
অনেক দূরের পথ থেকেও অফিস করে বাসায় ফেরা যায়। চিন্তা করে দেখেন- কুমিল্লা, ময়মনসিং, গাজীপুর, টাঙ্গাইলের লোকজন ঢাকায় অফিস করে দিনেই বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। তখন ঢাকায় বাসা ভাড়া কমে যাবে একই সঙ্গে কমবে ট্রাফিকের চাপ। জাপানিদের আবর্জনা ব্যবস্থাপনা কত সুন্দর সেটা আরেকদিন বলা যাবে। শুধু বলে রাখি- বায়ু দূষণ মাত্রায় AQI ইনডেক্স ১৫০ সহনীয় মাত্রা। সেখানে কিছুদিন আগে দিল্লিতে ৮০০ হয়েছিল আর ঢাকায় সচরাচর ৩৫০ এর মতো থাকে। সেখানে জাপানে ছিল ২০। এগুলোর সঙ্গে আবর্জনা, সুয়ারেজ, বাসা বাড়ির ময়লার খুব নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
লেখক :
মো. মাজহারুল ইসলাম
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক থেকে জাপানে মেশিন লার্নিং ও ডাটা সাইন্স বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরিত প্রশিক্ষণার্থী।
লেকচারার- সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।
IPvision Canada Inc. এর ডাটা সেন্টার এন -আর -বি টেলিকম এর অফিস মহাখালী, তাদের তথ্য মতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ডাটা সেন্টার। যেহেতু ডাটা সেন্টার তাই ২৪ ঘন্টাই ই সচল রাখতে হয় ।
জানা মতে কিছুদিন আগে ছোট একটি ভুলের জন্য কয়েক ঘন্টা সার্ভার অফ ছিল ,যা তাদের বড় রকমের ক্ষতি হয় ।
তাদের আরো একটি সেবা ইন্টার কানেকশন এক্সচেঞ্জ, ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (ICX, IGW) । মানে দেশি, বিদেশি এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটর কল গুলা সুইচিং করে, সুতরাং অফ থাকা মানে কল ড্রপ ।
তাদের ডাটা সেন্টার এর কোন ডিভাইস কত লোড ,লোড লাইন এর তাপমাত্রা ,কখন ভল্টেজ ,কারেন্ট আপ ,ডাউন হচ্ছে এটা জানা খুব ই গুরুত্বপুর্ন । তাই ৩০ মিনিট পর পর এক জন অপারেটর গিয়ে সব কিছু মেপে এক্সেল ফাইল এ রাখে ।
কিন্তু অই কিছুদিন আগের সার্ভার অফ থাকার দরুন উনারা চিন্তা করলেন আর স্মার্ট করা যায় কিভাবে । সয়ংক্রিয়ভাবে কিভাবে এসব ডাটা দেখা যায় ?
পরে Ashraful Islam, Salah Uddin ভাই এর মাধ্যমে আমাদের কাছে দায়িত্ব পরে ।
ল্যাব এ ১৫-৩০ ভোল্ট আর কয়েক এম্পিয়ার রেঞ্জ এর কারেন্ট নিয়ে কাজ করি ,স্বাভাবিক ভাবেই ১০০-২০০ এম্পিয়ার শুনলে বেশ কৌতুহল থাকে 😀
১৫০ হাজার ভোল্ট-এম্পিয়ার সিস্টেম , উনারা আমাদের উপর আস্থা রাখাবে কিনা সেটাও চিন্তা , আর আমরা পারবো কিনা সেটাও ভাবনা । ভালো লাগার বিষয় হচ্ছে খুব সুন্দর মতই ,সফল ভাবে আজকে থেকে রান করছে । উনাদের সিস্টেম এ কানেক্টেড । এবং এই মুহুর্তে একটি ফেজ এ রানিং , পরের ভার্শন এ ৩ ফেজ এ চলবে আশা করি ।
তবে ল্যাব এ টেস্ট করা ও একটা সুন্দর চ্যালেঞ্জ ছিলো , কারন আমাদের ল্যাব তো আর ১৫০কেভিএ না 😛
আমরা এটা নাম দিয়েছি E-Lyser v1.0 (Energy Analyzer) .
IPvision Canada Inc. এর ডাটা সেন্টার এন -আর -বি টেলিকম এর অফিস মহাখালী, তাদের তথ্য মতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ডাটা সেন্টার। যেহেতু ডাটা সেন্টার তাই ২৪ ঘন্টাই ই সচল রাখতে হয় ।
জানা মতে কিছুদিন আগে ছোট একটি ভুলের জন্য কয়েক ঘন্টা সার্ভার অফ ছিল ,যা তাদের বড় রকমের ক্ষতি হয় ।
তাদের আরো একটি সেবা ইন্টার কানেকশন এক্সচেঞ্জ, ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (ICX, IGW) । মানে দেশি, বিদেশি এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটর কল গুলা সুইচিং করে, সুতরাং অফ থাকা মানে কল ড্রপ ।
তাদের ডাটা সেন্টার এর কোন ডিভাইস কত লোড ,লোড লাইন এর তাপমাত্রা ,কখন ভল্টেজ ,কারেন্ট আপ ,ডাউন হচ্ছে এটা জানা খুব ই গুরুত্বপুর্ন । তাই ৩০ মিনিট পর পর এক জন অপারেটর গিয়ে সব কিছু মেপে এক্সেল ফাইল এ রাখে ।
কিন্তু অই কিছুদিন আগের সার্ভার অফ থাকার দরুন উনারা চিন্তা করলেন আর স্মার্ট করা যায় কিভাবে । সয়ংক্রিয়ভাবে কিভাবে এসব ডাটা দেখা যায় ?
পরে Ashraful Islam, Salah Uddin ভাই এর মাধ্যমে আমাদের কাছে দায়িত্ব পরে ।
ল্যাব এ ১৫-৩০ ভোল্ট আর কয়েক এম্পিয়ার রেঞ্জ এর কারেন্ট নিয়ে কাজ করি ,স্বাভাবিক ভাবেই ১০০-২০০ এম্পিয়ার শুনলে বেশ কৌতুহল থাকে 😀
১৫০ হাজার ভোল্ট-এম্পিয়ার সিস্টেম , উনারা আমাদের উপর আস্থা রাখাবে কিনা সেটাও চিন্তা , আর আমরা পারবো কিনা সেটাও ভাবনা । ভালো লাগার বিষয় হচ্ছে খুব সুন্দর মতই ,সফল ভাবে আজকে থেকে রান করছে । উনাদের সিস্টেম এ কানেক্টেড । এবং এই মুহুর্তে একটি ফেজ এ রানিং , পরের ভার্শন এ ৩ ফেজ এ চলবে আশা করি ।
তবে ল্যাব এ টেস্ট করা ও একটা সুন্দর চ্যালেঞ্জ ছিলো , কারন আমাদের ল্যাব তো আর ১৫০কেভিএ না 😛
আমরা এটা নাম দিয়েছি E-Lyser v1.0 (Energy Analyzer) .