একটি হাঁসের আত্মকথা
✍️অসীম চন্দ্র বর্মন
চারিদিকে এত অত্যাচার আর সইতে পারি না
মন খুলে ডাক দিতে পারি না প্যাক প্যাক করে,
নদীর জলে সাঁতার দিতে পারি না
ও কাদায় খেলতে আজ বাধা!
কেন এ বাধন?
আমি তো কারো ক্ষতি করিনি
করিনি তো বিরুদ্ধাচরণ
তবে ধুকে ধুকে মরতে হয় কেন?
কেন একটু বাঁচতে পারি না
বাঁচার মতো!
তবে কি এটা আমার আজন্ম পাপ!
আমি তো একটু পাখা তুলে উড়তে চাই
একটু স্বাধীন হয়ে, উদাস দুপুরে
তবে সে দুপুর কেড়ে নাও কেন?
বন্দী বানিয়ে খাঁচায়, খামারে দাও কষ্ট!
ওহে খামারু, রক্ষা কর ছেড়ে দাও
একটু বাঁচতে চাই,বাঁচতে চাই।
আমাকে এভাবে ব্যবহার করো না
আমি একটি হাঁস কিন্তু হাসিতে দাও না তুমি,
তাই আজ পাখা ঝাপটাতে পারি না
তোমার শক্তি আছে বটে, বিবেক নেই।
বিবেক থাকলে বন্দি নয় হে খামারু,
মুক্ত করতে আমায়।
প্রিয় সাইকেল
✍️অসীম চন্দ্র বর্মন
----------------------------
আমার চলার সাথী আজ নেই আমার সাথে
তার সব স্মৃতি রয়েছে হৃদয়ে আমার গেঁথে।
কি করব নিয়তির এই খেলা
তাই চলে গেল আমার চলার একমাত্র ভেলা।
সে কত যে উপকারী,তাকে কেবল আমিই জানি
সে প্রাইভেট,কলেজ ও শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম আমি মানি।
কিন্তু সেই হৃদয়ের যানখানি
একদিন তার হয়ে গেল হানি
হানি ঠিক নয়, হয়েছে চুরি
চোর হয়তো পাপ উপার্জন করল ভুরি ভুরি।
আমার হৃদয় ভঙ্গ হল তার জন্যে
এদিকে বাহিরে ও মনে মনে খুঁজে হচ্ছি হন্যে
কিন্তু এ যেন আমার ভূতের বেগার
আমার সোনার সাইকেল যেন হলো ছারখার।
কোচিংয়ে সাইকেল চুরি
এই রহস্যের অনেক জুরি
কিন্তু আমারটা অনন্য হলো মনে,
কারণ তার ভেদাভেদ হয় যে জনে জনে।
সেই দিন তাড়াহুড়ায় তালা দিই নি সাইকেলে
তাই সে ছিল বুঝি ভীষণ অবহেলে!
তা না হলে সে আমাকে ছাড়ে!
তার কথা এখনো মনে পড়ে বারে বারে
সে কতই সুন্দর ছিল, কতখানেই নিয়ে যেত
যেতে যেতে কতই কষ্ট পেত
কখনো পেরেক ঢুকে যেত তার চাকায়
তখন হয়তো তা বের করতাম সাইকেল বাঁকায়।
কখনো তা মাটিতে আছর খেত
তার গায়ে সে বড্ড কষ্ট পেত
তবু কান্না করত না
আমার উপর কখনো রাগ বা অভিমানও করত না
শুধু নীরবে সহে যেত সব যাতনা
তাই আমার অসুবিধেও কখনো হত না।
কিন্তু যখন তা হারিয়ে গেল
আমারে হৃদয় যেন ভঙ্গ হল
চোর তো সুখ নাহি পেল
শুধু আমার সঙ্গীকে নিয়ে গেল।
আমায় করে দিল একা
তাই এখন আমি বড়ই ফাঁকা,
মনেতে তার ছবি আঁকা
তাই রাস্তা হেঁটে গেলে লাগে বাঁকা বাঁকা।
মায়ের আশীর্বাদ
✍️অসীম চন্দ্র বর্মন
মায়ের শক্তি মহাশক্তি, মা যদি করে আশীর্বাদ
আকাশ ভেঙে পড়লেও মাথায় করতে পারি তার প্রতিবাদ।
অসম্ভবও সম্ভব বনে যায় তখন
তোমার মা তোমার ওপর খুশি থাকে যখন।
ছুটে চলো প্রাণপণ
পুরিতে মায়ের স্বপন
যদি গো তুমি হও মানুষ ও মায়ের সন্তান
তবে সম্মান রেখো তার, করো নিজের উত্থান।
জীবনের এ বয়ে চলা
নহে সে-তো একলা
মায়ের অদৃশ্য অমোঘ শক্তি
পাবে তুমি,করলে ওগো মায়ের প্রতি অচল ভক্তি।
পৃথিবী সমান শক্তি আসবে হৃদয়ে ও বাহুতে
বিশ্বজয় করবে তুমি আর প্রভাবও বাড়বে আয়ুতে
মায়ের আশীর্বাদে যেন কত মরা ছেলেও তো বেঁচে যায়!
মায়ের আশীর্বাদে কষ্টে ও দুঃখেও সন্তান হাসার উপায় পায়।
এ যেন ভাই মায়ের প্রতি ভক্তি ও তার আশীর্বাদের কারসাজি
করলে ভক্তি পেলে আশীর্বাদ, ধন্য হবে তুমি ধরলাম আমি বাজি।