Short Story

"নীলাম্বরীর গল্প"

রাকিব রাব্বানী

বির্মষ চিত্তে তোমার বক্ষদেশ ভেদিয়া চিবুকের লোলুপ দৃষ্টিখানা যেন আমার অচেতন মনের করিডোরে এক অদ্ভুত অনুভূতির জন্ম দিল ;

আক্ষেপের দাঁড়িপাল্লা ভারি হয়ে আমাকে ভীষণ খরাতেও সিক্ত করে তুললো তোমার অপলক দৃষ্টিখানা ৷ ক্ষনে ক্ষনে এই মন ভাবতে থাকল তোমার সেই নিখুঁত পদচারণা আর তোমার বিমূর্ত মুখখানার কিন্চিৎ লাজুকতার দৃশ্যপটি ৷

তাই কোন এক অজানা অনুভতির আচড়ে তোমাকে ভেবে ভেবে আজও আমি বিনিদ্র রজনী কাটাই ৷

যদি ভুল করে বৃষ্টি ভেজা শহরের কোন এক গলিরমোড়ে আবার তোমার দেখা পাই, তবে সাহস করে বলেই ফেলব এ মনের লুকনো সব অব্যক্ত কথামালা ৷

না ! এ কোন রূপকথার গল্প নয় , নয় কোন অগাধ প্ৰেমকাব্যের শেষ অন্তরা, এ হচ্ছে আমার কল্পনার জগতে ভেসে আসা কোন এক নীলাম্বরির গল্প ৷৷

" বৃষ্টি "

রাকিব রাব্বানী

আজ বৃষ্টি যেন তার ভরা যৌবনেভিজিয়ে দিল তোমার মন।

আর তোমার নরম দুটি গালে এঁকে দিল অজস্র চুম্বনের চিহ্ন।

তোমার শাড়ির আঁচলে মেখে দিল স্নিগ্ধতার নরম স্পর্শ।

নাকের ডগায় লেগে থাকা বিন্দু কনা জল যেন স্পর্শকাতর

ভোরের শিশির বিন্দুর ন্যায় শিহরন জাগিয়ে তুললো রুক্ষ প্রকৃতিতে।

তোমার ভেজা চুলের ঘ্রাণে মাতিয়ে তুললো আকাশ মাটির বৃষ্টি ভেজা মাতাল নৃত্য।

তৃষ্ণার্ত প্রকৃতিতে অমৃতসুধায় ছড়িয়ে দিল একরাশ সজীবতা আর কদমফুলের সুবাস।

তোমার বৃষ্টিস্নাত তৃষিত হৃদয়ে, নূপুর পায়ের ঝুমুর ঝুমুর তালে ঝরে পড়া অঝোর ধারার বৃষ্টিতে,জুঁই, কেয়া, চামেলী ফুলের গন্ধে যেন মাতোয়ারা হয়ে উঠলো গোটা পৃথিবী।

তাই আবার যখন ভালোবাসতে আসবে,আমাকে বৃষ্টি বলেই সম্বোধন করো

তাতে কলঙ্কের দায়ভার কিছুটা আমিও নিতে সক্ষম হবো ।।


পৃথিবী গোলাকার তাই হয়ত এখানে কেউ হারিয়ে যাবে না । শুধু হারিয়ে যাবে কিছু স্বপ্ন কিছু চিরচেনা আনুভুতি ! একদিন সবাইকেই মরতে হবে কিন্তু বাহ্যিক এই দেহটা বাচিয়ে রেখে যে মানুষটা দিনের পর দিন একাকিত্বের রোশানলে তিলে তিলে নিজেকে প্রতিনিয়ত মরতে দেখে তার কাছে মৃত্যুটা কেবল'ই একটি দৈহিক প্রস্থান মাত্র।

আপনি অন্য কারো হাতে হাত রেখে সূর্যাস্ত দেখা পছন্দ করতেই পারেন!কিন্তু আপনার চলে যাওয়ায় যে মানুষটা দিকবিদিক হারিয়ে মনের অন্ধকারে নিজকে এতটা গুটিয়ে নিয়েছে,সে মানুষটা কষ্টের বুকে মাথা রখে ঠিক কতটা ভালো আছে ?

যে মানুষটা আপনার মুখের এক চিলতে হাসি ধরে রাখার জন্য এতটা পথ পাড়ি দিয়াছে,সেই মানুষটার পায়ে পা মিলয়ে একটি বারও ঐ পথ হেটে দেখের চেষ্টা করে দেখেছেন,তার পথ চলা কতটা কঠিন ছিল ?

ছেড়ে যাওয়ার আগে একটি বারও কি ভেবে দেখেছিলেন ঐ মানুষটার এক একটি দীর্ঘশ্বাসে কতগুলো স্বপ্নের অপমিত্রু হতে পারে ?

প্রশ্ন হাজারটা করা যায়,হয়তো সব প্রশ্নের কোন না কোন একটা উত্তর ও থাকে।কিন্তু যে প্রশ্নের উত্তরে আপনার বিবেক নিজের কাছে প্রতিনিয়ত প্রশ্নবিদ্ধ হয়,আপনি কি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারবেন সে উত্তরগুলো আপনার অসহায়ত্বের কারন হবেনা ?

ভুল সবার’ই থাকে কিন্তু ছেড়ে যাওয়া-ই যদি সব কিছুর সমাধান হতো,তাহলে ছেড়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় আপনিও কোন একদিন পরাজিত হবেন। কারন মানুষ হিসেবে আপনি ও কোনো না কোনো ভাবে অপরিপূর্ন। তাই আপনি আজ যাকে ছেড়ে, অন্য কারো কাছে ভালথাকার জন্য ছুটে জাচ্ছেন,সে ও হয়তো কোন এক দিন আপনাকে ছেড়ে আরও একটু বেশি ভাল থাকার সন্ধান করতেই পারে! আসলে..হয়তো আমরা অন্যকে ভালবাসি নিজকে সুখে রাখার জন্য কিন্তু ভালবাসার ব্যপ্তি কি শুধুই প্রাপ্তি কিংবা পূর্নতার মাফকাঠিতেই সীমাবদ্ধ ? নাকি হাজারও কষ্টের মঝে নিজের ষোলো আনার বিপরীতে গিয়ে ছোট্ট কোন অনুভূতিকে আগলে বেঁচে থাকার মাঝেও ভালবাসা বিদ্যমান ?

সত্যি বলতে ভালবাসাটা একটি আপেক্ষিক বিষয়, চাইলে-ই আপনি কাউকে ভালোবেসে সুখের সাগরে ভাসতে পারবেন না,আবার শত কষ্টের মাঝেও "ভালবাসি " এই কথাটি বুকে লালন করে আপনি বেঁচে থাকেতে পারবেন অনন্তকাল....

"উষ্ণতা "

যে হাত তোমার মৃদু স্পর্শে উষ্ণতা খুজে পেত, সেই হাত আজ নিকটিনের জলন্ত আগুনেও উষ্ণতা খুজে পায় না !

সেদিনও সূর্য ডুবে সন্ধ্যা নামবে, পাখিরা সব নীড়ে ফিরে যাবে,জোনাকির আলোয় তারার মেলা বসবে শুধু বদলে যাওয়া এই আমি আর আমার বেওয়ারিশ স্বপ্নরা পৃথিবীর নিয়ম ভুলে হাটতে থাকবে কোন এক অজানা শূণ্যতার পথে !!