পতেঙ্গা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরের সমুদ্র সৈকত যা কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। পতেঙ্গা চট্টগ্রাম শহরের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এই সৈকতটি ভয়াবহ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে সমুদ্র সৈকতে সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা বেড়ি বাঁধ দেয়া হয়েছে।
বর্ণনা
পতেঙ্গা সৈকতের প্রস্থ খুব বেশি নয় এবং এখানে সমুদ্রে সাঁতার কাটা ঝুঁকিপূর্ণ। সমুদ্র সৈকতজুড়ে ভাঙ্গন ঠেকাতে কংক্রিটের দেয়াল এবং বড় পাথরের খণ্ড রাখা হয়েছে। নব্বইয়ের দশকে সৈকতের আশেপাশে বেশকিছু রেস্টুরেন্ট এবং খাবারের দোকান স্থাপিত হয়েছে। সৈকতে বাতির ব্যবস্থা করায় রাতের বেলা ভ্রমনকারী পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।শহর থেকে বিক্রেতারা তাদের আইসক্রিম, কোমল পানীয় এবং খাবার পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে আগত পর্যটকদের নিকট বিক্রি করে। স্থানীয় লোকজনের মতে, পতেঙ্গা খুব স্বল্প ব্যয়ে সুস্বাদু খাবারের জন্য সেরা জায়গা। খাবারের স্ট্যান্ডগুলির জনপ্রিয় খাবারগুলির মধ্যে একটি হল ভাজা, মশলাদার কাদা মাটির কাঁকড়া। একটি ছোট প্লেট দিয়ে পরিবেশন করা হয় যা কুচি-কুচি শসা এবং পেঁয়াজ দিয়ে সজ্জিত থাকে। সন্ধ্যায় সৈকতে একটি সুন্দর শীতল পরিবেশ থাকে এবং লোকেরা এই শান্ত বাতাস উপভোগ করতে আসে। জোয়ারের সময় ঢেউয়ের আঁচড় যেন নয়নাভিরাম দৃশ্যের অবতারণা করে। চট্টগ্রাম বন্দরের জন্যে অপেক্ষমাণ সারি সারি ছোট বড় জাহাজ এইখানের পরিবেশে ভিন্নতা নিয়ে আসে। পতেঙ্গায় রয়েছে স্পীড-বোটে চড়ে সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ রয়েছে। সমুদ্র তীরে ঘুরে বেড়ানোর জন্যে আছে সী বাইক ও ঘোড়া। কেনাকাটার জন্যে আছে বার্মিজ মার্কেট।
কিভাবে যাবেন এবং কোথায় থাকবেন?
বাংলাদেশের প্রতিটা প্রান্ত থেকেই সড়ক কিংবা রেলপথে পতেঙ্গায় খুব সহজে আসা যায়। সড়কপথে ঢাকা হতে ইউনিক, সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, সোহাগ, এস, আলম প্রভৃতি বাসের এসি/ননএসিতে আসতে পারেন। আর ট্রেনে আসতে চাইলে সুবর্ণ, সোনারবাংলা, তুর্না নিশিথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলি এক্সপ্রেসগুলোতে এসে ঘুরে যেতে পারেন। আর রাতে থাকতে চাইলে কাছেই সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা সংবলিত বাটারফ্লাই রিসোর্ট কিংবা বীচের পাশেই "পি.এফ.সি রিলাক্সো" তে উঠতে পারেন। অথবা যদি আরও সাধারণ মানের কিংবা ভালো মানের কোন হোটেলে উঠতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই চট্টগ্রামের মূল শহরে উঠতে হবে। তন্মধ্যে হোটেল লর্ডস ইন, হোটেল এশিয়ান, ল্যান্ডমার্ক এবং রেডিসন ব্লু’র নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা যায়।